দেশি মৌসুমি ফলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
গ্রীষ্মকালে আমাদের দেশে প্রচুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল পাওয়া যায়। বৈচিত্রপূর্ণ আর রসালো সব মৌসুমি ফলের সমারোহ ঘটে এ সময়। আম, জাম,কাঠাল,লিচু,পেয়ারা,কলা,পেপে ইত্যাদি ফল শুধু সুস্বাদুই নয় বরং পুষ্টি গুণে ভরপুর এসব রসালো ফল। এগুলো পানি,খাদ্য-আঁশ ও প্রাকৃতিক চিনি যেমন সুক্রোজ,গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজের উৎস।
সব মিলিয়ে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল গুলো শরীরের পুষ্টি চাহিদা পুরনের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও বেশ সহায়ক। তাই চেষ্টা করুন গাছ পাকা ফল খাওয়ার। আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল বেশি বেষি খেতে হবে। কারন ভাইরাসের কারনে সৃষ্ট জ্বর,কাশি,শ্বাসকষ্ট,নিউমোনিয়া ইত্যাদি অসুখ দূর করতে কাজ করে এসব ফল।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল
ফল কেবল রসনাকেই তৃপ্ত করে না,যোগায় শক্তিও।পুষ্টিবিদদের মতে,একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ২০০গ্রাম ফল খাওয়া উচিত। বিদেশি ফল দিয়ে এ চাহিদা মিটানো বেশ কঠিন ও ব্যয়বহুল। কিন্তু আমরা যদি দেশি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল পর্যাপ্ত পরিমানে খাই তাহলে শরীরে যেমন পুষ্টি ও ভিটামিনের চাহিদা পূরন হবে তেমনি অর্থেরও সাশ্রয় হবে।
সূচিপত্রঃ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল আমের উপকারিতাঃ
- ওজন কমাতে সহায়তা করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- যকৃতের সমস্যা দূর করে
- এসিডিটির সমস্যা দূর করে
- হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে
- চোখের জন্য উপকারী
- ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী
- মিনারেলের ঘাটতি পূরন করে
- স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
- হজমে সহায়তা করে
জামঃ
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল জামের উপকারিতাঃ
গরমের মৌসুমে জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি হতে পারে। এ সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে জাম খেলে এই রোগগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। কারণ জামে থাকা ভিটামিন সি এবং অন্যান্য উপাদান মৌসুমের আবহাওয়া অনুযায়ী শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম আরও সচল করে তোলে।
গরমের মৌসুমে ত্বকে বিভিন্ন সমস্যার দেখা দিতে পারে। যেমন ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া,সানবার্ন হওয়া ইত্যাদি। জাম খেলে এসব সমস্যার সমাধান হতে পারে। জামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি ত্বকের জ্বালাপোড়া, ব্রনের মত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল করে।
জামে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং মাইক্রো ও ম্যাক্রো মিনারেলস, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। এই দুই ভিটামিন শরীরে জমে থাকা টক্সিন শরীর থেকে বের করে দিয়ে শরীর সুস্থ রাখে।
জাম খেলে পেট ঠান্ডা থাকে এবং হজমশক্তি বাড়ে। বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়ার মতো সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
জামে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফ্যাঙ্গাল উপাদান, যা জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়াজনিত অসুখ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
যাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন কম, তাদের জন্য জাম খাওয়া খুবই উপকারী। জামে থাকা মিনারেলস হিমোগ্লোবিন বাড়ায় এবং সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে।
জামের ডায়াটারি ফাইবার ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা এ ফলটি খেতে পারেন।
জামে আছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে এবং ধমনীগুলোকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। ফলে কার্ডিওভাস্কুলার সমস্যা প্রতিরোধ হয়।
কাঁঠাল
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল কাঠালের উপকারিতাঃ
কাঁঠাল পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস। ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পটাশিয়ামের পরিমাণ ৩০৩ মিলিগ্রাম। যারা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এ জন্যে কাঁঠালে উচ্চরক্তচাপের উপশম হয়।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল কাঁঠালে প্রচুর ভিটামিন-এ আছে যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
কাঁঠালের অন্যতম উপযোগিতা হল ভিটামিন-সি। প্রাকৃতিকভাবে মানবদেহে ভিটামিন “সি” তৈরি হয় না। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের মাড়িকে শক্তিশালী করে ভিটামিন “সি”।
কাঁঠালে বিদ্যমান ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস- আলসার, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম।
কাঁঠালে আছে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রির্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও আমাদেরকে সর্দি-কাশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
টেনশন এবং নার্ভাসনেস কমাতে কাঁঠাল বেশ কার্যকরী।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল কাঁঠাল বদহজম রোধ করে।
কাঁঠাল গাছের শেকড় হাঁপানী উপশম করে। শেকড় সেদ্ধ করলে যে উৎকৃষ্ট পুষ্টি উপাদান নিষ্কাশিত হয় তা হাঁপানীর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম।
চর্মরোগের সমস্যা সমাধানেও কাঁঠালের শেকড় কার্যকরী। জ্বর এবং ডায়রিয়া নিরাময় করে কাঁঠালের শেকড়।
কাঁঠালে আছে বিপুল পরিমাণে খনিজ উপাদান ম্যাঙ্গানিজ যা রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
কাঁঠালে বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়ামের মত হাড়ের গঠন ও হাড় শক্তিশালীকরণে ভূমিকা পালন করে।
কাঁঠালে আছে ভিটামিন বি-৬ যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
কাঁঠালে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম কেবল হাড়ের জন্য উপকারী নয় রক্ত সংকোচন প্রক্রিয়া সমাধানেও ভূমিকা রাখে।
ছয় মাস বয়সের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে কাঁঠালের রস খাওয়ালে শিশুর ক্ষুধা নিবারণ হয়। অন্যদিকে তার প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়।
চিকিৎসাশাস্ত্র মতে প্রতিদিন ২০০ গ্রাম তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভধারণকৃত শিশুর সব ধরনের পুষ্টির অভাব দূর হয়। গর্ভবতী মহিলারা কাঁঠাল খেলে তার স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকে এবং গর্ভস্থসন্তানের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়। দুগ্ধদানকারী মা তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল কাঁঠাল আঁশালো হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।কাঁঠালে রয়েছে খনিজ উপাদান আয়রন যা দেহের রক্তাল্পতা দূর করে।
লিচু
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল লিচু প্রায় সবারই পছন্দ। ছোট থেকে বড় সবাই লিচু খেয়ে থাকেন। পুষ্টিগুণে ভরপুর লিচু খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। ভিটামিন ও খনিজ উপাদান থাকায় লিচু শরীরের জন্য অনেক উপকারী। জলীয় অংশ সমৃদ্ধ লিচু খুবই উপকারী একটি ফল। প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট অল্প পরিমাণে রয়েছে। এতে কোনো ফ্যাট নেই। তবে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। খনিজের মধ্যে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ, কপার ক্যালসিয়াম, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম। এছাড়া ডায়েটারি ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে লিচুতে।পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল লিচুর উপকারিতাঃ
ভিটামিন সি থাকায় রক্তে শ্বেত কণিকার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে ফলে শরীরে বাইরের কোন ক্ষতিকারক জীবাণু প্রবেশ করতে পারে না।
লিচুতে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পেট ব্যথার নিরাময় করে।
লিচুতে আছে শক্তিশালী ভাইরাস বিরোধী গুণাবলী। এতে লিচিট্যানিন এ২ শরীরে ভাইরাস ছড়াতে বাধা দেয়।
লিচুতে বেশী পরিমাণে কপার আছে যা শরীরে রক্ত সঞ্চালনের উন্নয়ন করে। আয়রনের মত কপারও শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদনে সহায়তা করে।
লিচু খেলে শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় থাকে ফলে ব্লাড প্রেশার ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে।
লিচু বার্ধক্যের লক্ষণ এবং ব্লেমিশ বন্ধ করতে কাজ করে।
লিচুতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার ওজন কমাতে সাহায্য করে। লিচুতে আছে প্রচুর পানি এবং এতে প্রায় ফ্যাট নেই বললেই চলে। এছাড়া এতে খুব কম ক্যালোরি থাকায় এটা ওজন কমানোর জন্য একটি আদর্শ ফল।
লিচুতে আছে প্রচুর ফ্ল্যাভানল, যা প্রদাহ কমায় এবং প্রদাহের ফলে টিসুর ক্ষত সারাতে ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
লিচুতে অধিক মাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, এবং কপার। এসব মিনারেল হাড়কে সাহায্য করে ক্যালসিয়াম শুষে নিতে, যার ফলে হাড় শক্ত এবং সুস্থ থাকে।
লিচু শরীরের ব্লাড সার্কুলেশন বা রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধি করতের সহায়তা করে। রক্তের পরিসঞ্চালন বৃদ্ধি পাওয়ায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
লিচু শরীরে ওজন কমাতে যথেষ্ট সহায়তা করে। লিচুতে থাকা খাদ্য-আঁশ খাদ্যের পরিপাক এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়া এই খাদ্য-আঁশগুলো দেহের ভেতর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সহায়তা করে।
লিচুর সবচেয়ে বড় উপকারিতা হচ্ছে- এটি ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। লিচুতে থাকা ভিটামিন-সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
এছাড়া লিচু আমাদের হজমে সহায়তা করে। তবে পরিমাণে বেশি খেলে এটি আমাদের শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।
লিচু রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণেও বেশ ভালো ভূমিকা রাখে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। লিচু অ্যাজমা বা হাঁপানি প্রতিরোধে সহায়তা করে।
তরমুজ
তরমুজ একটি গ্রীষ্মকালীন সুস্বাদু ফল। ঠাণ্ডা তরমুজ গ্রীষ্মকালে বেশ জনপ্রিয়। এতে প্রচুর পরিমাণে জল থাকে। এই ফলে ৬% শর্করা এবং ৯২% জল এবং অন্যান্য উপাদান ২%। এটি ভিটামিন-এ সম্বৃদ্ধ ফল। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল তরমুজের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ প্রচুর। তরমুজের পুষ্টিগুণ বেশি থাকায় সকলের কাছে প্রিয় ফল। তরমুজে শতকরা প্রায় ৯২ ভাগ পানি রয়েছে। যা আমাদের দেহের পানির চাহিদা মিটিয়ে শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখে। এতে ভিটামিন এ, সি, বি ও বি-২ থাকায় প্রয়োজনীয় ভিটামিন এখান থেকে পাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালীন ফল হওয়ায় এটি শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করে।প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা তরমুজে রয়েছে পানি- ৯২ থেকে ৯৫ গ্রাম, আঁশ ০.২ গ্রাম, আমিষ ০.৫ গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, ক্যালোরি ১৫ থেকে ১৬ মি.গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ মি.গ্রাম, আয়রণ ৭.৯ মি.গ্রাম, কার্বহাইড্রেট ৩.৫ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.২ গ্রাম, ফসফরাস ১২ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.২ মিলিগ্রাম। তাছাড়া ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ও ভিটামিন বি-২ রয়েছে।পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল তরমুজের উপকারিতাঃ
সকলের কাছে প্রিয় পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল তরমুজ খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এর উপকারিতাও অনেক। গ্রীষ্মকালে নিয়মিত তরমুজ খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়। নিম্নে তরমুজের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হলো।যারা শারীরিকভাবে দুর্বল তাদের জন্য তরমুজ প্রাকৃতিক ওষুধ হিসাবে খুব ভাল কাজ করে। এই ফল শারীরিক শক্তি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। নিয়মিত তরমুজ খেলে শরীরের শক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পায়। বয়স বাড়লে শরীরের শক্তি হ্রাস পায়, তাই মৌসুমে বেশী করে তরমুজ খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
তরমুজে প্রচুর পরিমাণ পানি আছে। গরমের সময় যখন ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়, তখন তরমুজ খেলে শরীরের পানিশূন্যতা দূর হয়। ফলে শরীর সুস্থ ও সতেজ থাকে।
তরমুজে বিদ্যমান ভিটামিন সি ত্বককে সজীব রাখে। পাশাপাশি ত্বকের যে কোন সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায্য করে। লাইকোপিনসহ বিভিন্ন উপাদানে সমৃদ্ধ তরমুজ খাওয়ার অভ্যাসে মুখে সহজে ভাঁজ বা বলিরেখা পড়ে না।
ব্যথা নিরাময় ও শরীরের টিস্যু সুরক্ষায় তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিনি সি, যা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত, ব্যথা নিরাময়ে এবং ত্বক, দাঁত ও মাংসপেশীর সুরক্ষায় প্রতিষেধক। ভিটামিন সি শরীরের জন্য খুব প্রয়োজন। এই ভিটামিন মানব দেহে জমা থাকে না। তাই নিয়মিত তরমুজ খেয়ে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করা যায়।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল তরমুজে আছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম। এটি প্রাকৃতিকভাবে শরীরে ইলেকট্রো পাওয়ার তৈরি করে, যা শরীরের মাংসপেশী ও স্নায়ু সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর।
তরমুজ লাইকোপিনো নামক লাল উপাদান যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। তাই তরমুজ হাড় গঠন ও মজবুত করতে অত্যন্ত সহায়ক।
পেয়ারা
পেয়ারাতে ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৩ ইত্যাদি মূল্যবান খনিজ ও ভিটামিন থাকে। বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে পেয়ারার অনেক গুণ রয়েছে। এর বীজে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ পলিআন-সেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ও আঁশ বিদ্যমান।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল পেয়ারার উপকারিতাঃ
পেপে
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল মানেই গুণাগুণে ভরপুর। চিকিৎসক থেকে শুরু করে পুষ্টিবিদ সবাই মৌসুমি ফল খেতে বলেন। ওজন কমানোর প্রশ্নে অনেকেরই পছন্দের তালিকায় থাকে পেঁপে। এ ছাড়া আরও অনেক গুণে গুণান্বিত পেঁপে। পুষ্টিবিদদের কাছে পেঁপের পরিচয় ‘সুপারফুড’ হিসেবে। স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় বরাবরই ওপরের দিকে থাকে পেঁপের নাম। কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থাতেই পেপে সারা বছর বাজারে পাওয়া যায়। দুই অবস্থাতেই আমাদের শরীরের রোগবালাই প্রতিরোধে সমান কার্যকর।পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল পেয়ারার উপকারিতাঃ
পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, ফ্লেভানয়েডসহ অনেক পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যেগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ক্যারোটিন ফুসফুস ও অন্যান্য রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
চুলের জন্যও পেঁপে খুব উপকারী। যে কারণে পেঁপে মেশানো শ্যাম্পুর প্রচলন বেশি। টক দইয়ের সঙ্গে পেঁপে মিশিয়ে চুলে মাখলে গোড়া শক্ত হয়। মাথায় উঁকুনের সমস্যা দুর করেতেও পেঁপে ভালো কাজ করে।
পেঁপের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। তাই তো প্রতিদিন মুখে পেঁপে লাগালে ত্বকের লাবণ্য বজায় থাকে। এছাড়াও পাকা পেঁপে, মধু, টকদই একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে মাখলে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁচা পেঁপে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে যথেষ্ট আঁশ বা ফাইবার রয়েছে। পেঁপেতে যেমন কম ক্যালোরি আছে, তেমন মেদ কমানোর জন্য বিশেষ কিছু উপাদান রয়েছে।
বদ হজমের রোগিদের পাকা পেঁপে খেলে খুব উপকার মিলবে। পাঁকা পেপে খেলে মুখে রুচি বাড়ে, সাথে সাথে খিদে বাড়ে তাছাড়া পাঁকা পেপে কোষ্টকঠিন্ন্য ভালো করে এবং বায়ু নাস করে। এ ছাড়াও পেপে অর্শ রোগের ক্ষেত্রেও বেশ উপকারি
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url