পেয়ারা খাওয়ার উপকারীতা ও অপকারিতা


পেয়ারা খুবই পরিচিত একটি ফল। প্রায় আমরা অনেকেই পেয়ারা খেয়ে থাকি, তবে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা জানি কি? জানা না থাকলে আমাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিন পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আমাদের আজকের আর্টিকেলের বিষয় হচ্ছে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ন পড়ার মাধ্যমে জেনে যাবেন পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। এছারাও পেয়ারা খাওয়ার সঠিক নিয়ম, পেয়ারা খেলে ওজন বাড়ে কি না, রাতে পেয়ারা খেলে কি হয় এসব গুরুত্বপূর্ন তথ্যগুলো আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জেনে যাবেন

পেইজ সূচিপত্রঃ পেয়ারা খাওয়ার উপকারীতা ও অপকারিতা


পেয়ারার পুষ্টি গুণ
সারা বছর পাওয়া যায় এমন একটা ফল পেয়ারা। দেশীয় এই ফল দামে সস্তা ও সহজলভ্য। পেয়ারা সুমিষ্ট ও পুষ্টিকর একটি ফল। এটি ভিটামিন সি, ক্যারোটিনয়েডস, ফোলেট, পটাশিয়াম, আঁশ এবং ক্যালসিয়াম প্রভূতিতে সমৃদ্ধ ফল। একটি এক'শ গ্রাম পেয়ারায় প্রায় দুই'শ মি:গ্রাম ভিটামিন সি থাকে, যা একটি কমলার চেয়ে ৪গুন বেশি। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল আছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
এক'শ গ্রাম পেয়ারাতে পানি বা জল ৮৬.১০ গ্রাম, শক্তি ৫১ কি.ক্যালোরী, প্রোটিন ২.৫৫ গ্রাম, আঁশ ৫.৪ গ্রা. ফসফরাস ৪০মি.গ্রা. সোডিয়াম ২ মি.গ্রা. ভিটামিন-সি ২২৮.৩ মিগ্রা ভিটামিন-এ ৭৯২ আই ইউ থাকে। পেয়ারাতে ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৩ ইত্যাদি মূল্যবান খনিজ ও ভিটামিন থাকে। বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে পেয়ারার অনেক গুণ রয়েছে। এর বীজে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ পলিআন-সেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ও আঁশ বিদ্যমান।

প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারার পুষ্টিমান
শক্তি ৬৮-kc
শর্করা ১৪.৩২-g
চিনি ৮.৯২-g
খাদ্য আঁশ ৫.৪-g
প্রোটিন ২.৫৫-g

ভিটামিনের পরিমান

ভিটামিন-এ ৩১-μg
বিটা-ক্যারোটিন ৩৭৪-μg
থায়ামিন (বি১) ০.০৬৭-mg
রিবোফ্লাভিন (বি২) ০.০৪-mg
নায়াসিন (বি৩) ১.০৮৪-mg
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড(বি৫) ০.৪৫১-mg
ভিটামিন বি৬ ০.১১-mg
ফোলেট (বি৯) ৪৯ -μg
ভিটামিন-সি ২২৮.৩-mg
ভিটামিন-কে ২.২ -μg

খনিজের পরিমান

ক্যালসিয়াম ১৮-mg
লৌহ ০.২৬-mg
ম্যাগনেসিয়াম ২২-mg
ম্যাঙ্গানিজ ০.১৫-mg
ফসফরাস ৪০-mg
পটাশিয়াম ৪১৭-mg
সোডিয়াম ২-mg
জিংক ০.২৩-mg
লাইকোপেনন ৫২০৪mg

পেয়ারা খাওয়ার নিয়ম

মোসুমি ফলগুলোর মধ্যে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে পেয়ারা। শুধু গরমেই নয় সারাবছার এ ফল আমরা খেতে পাই। পেয়ারা খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এর মধ্যে রয়েছে অসংখ্যা পুষ্টি উপাদান। যা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা পূরন করে এবং আমাদের সুস্থ রাখতে সহায়তা করে থাকে। পুষ্টিগুনে ভরপুর এ ফল আমরা কিবাবে খাবো অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। তো চলুন জেনে নিন পেয়ারা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

পেয়ারা সাধরনত আমরা ফল হিসেবে খেয়ে থাকি। তবে এভাবে পেয়ারা টানা খেতে অনেকেই পচ্ছন্দ করেন না, তাই ভিন্ন স্বাদে পেয়ারা খেতে পারেন। পেয়ারা যারা চিবিয়ে সাধারণভাবে খেতে চাইছেন না, তারা পেয়ারার জুস বানিয়ে খেতে পারেন। বাচ্চারা পেয়ারা খেতে না চাইলে, পেয়ারা উপকারিতা বাচ্চাদের দিতে পেয়ারার পুডিং বানিয়ে খাওয়াতে পারেন। এছারাও পেয়ারার স্মুদি বানিয়েও খেতে পারেন। পেয়ারা স্মুদি বানিয়ে খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে আসে, ওজন কমে। আরও খেতে পারেন পেয়ারার ভর্তা, জেলি, পেয়ারার শরবত, মোজিতো ইত্যাদি। এসব বিভিন্ন স্বাদে পেয়ারা খেলেও উপকারিতা পাওয়া যায়।

প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

পেয়ারা খুবই পুষ্টিসমৃদ্ধ একটি ফল। পেয়ারার মধ্যে থেকে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। পেয়ারার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, এ, বি, কে, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিনসহ খনিজ পদার্থ। এসব পুষ্টি উপান পেয়ারার মধ্যে থাকার কারনে প্রতিদিন পেয়ারা খেলে শরীরে বেশ কিছু স্বাস্থ উপকারিতা পাওয়া যায়। তাই স্বাস্থ সচেতন মানুষেরা খাবার তালিকায় পেয়ারা রাখেন। জেনে নিন প্রতিদিন পেয়ার খাওয়ার উপকারিতগুলো কি কি।

রোগপ্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়ায়ঃ পেয়ারাতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করতে সহায়তা করে।দেহের কোথাও কেটে গেলে ক্ষতস্থান শুকানোর জন্য পেয়ারা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধেঃ ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে পেয়ারা খুবই উপকারী।পেয়ারার রসে থাকা বিভিন্ন উপাদান ডায়াবেটিস মেলিটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকরী।নিয়মিত পেয়ারা খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুকি কমে।কারন পেয়ারাতে যে আঁশ থাকে তা শরীরে চিনি শোষন পরিমান কমায়।

ক্যানসার প্রতিরোধেঃ পেয়ারা থেকে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি পাওয়া যায়।ক্যানসার প্রতিরোধে পেয়ারা খুব ভালো কাজ করে। পেয়ারাতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, লাইকোপেন, থাকায় ক্যানসার কোষের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে এই ফল। প্রোস্টেট ও স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে পেয়ারা খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করেঃ কাঁচা পেয়ারায় প্রচুর ভিটামিন-এ রয়েছে।এতে থাকা ভিটামিন-এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি রাতকানা রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পেয়ারা রাখা প্রয়োজন।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনেঃ নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্তচাপ ও রক্তে লিপিড কমে আসে। পেয়ারাতে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে।উচ্চ মাত্রার সোডিয়াম গ্রহণ এবং শরীরে পটাশিয়ামের পরিমান কমে গেলে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে, এতে হাইপারটেনশনের ঝুকি থাকে। পেয়ারা শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালনের প্রবাহ ঠিক রেখে কোলেস্টেরলের মাত্রাও কম রাখে, যা হৃদপিন্ডের জন্য উপকারী।

ত্বক ও চুলের পরিচর্যায়ঃ পেয়ারাতে প্রচুর পরিমানে খনিজ পানি রয়েছে যা ত্বক ও চুলের স্বাস্থ ভালো রাখতে সাহায্য করে।ত্বকের রুক্ষ ভাব দূর করে ও শীতে পা ফাটা রোধ করে। নিয়মিত পেয়ারা খেলে দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখা যায়।

ওজন কমাতে সহায়তা করেঃ পেয়ারাতে উচ্চমাত্রার লাইকোপেন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে।যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। পেয়ারা কম ক্যালরিযুক্ত ফল, যা ওজন অতিরিক্ত ওজন হ্রাস করকে সহায়তা করে থাকে। প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে এবং শরীর ফিট রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া পেয়ারা পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে, ফলে ওজন কমানো বা ডায়েটের সময় পেয়ারা খেয়ে ক্ষুধা নিবারন করা যায়।

হার্টের স্বাস্থ ভালো থাকেঃ পেয়ারা প্রতিদিন খেলে হার্টের স্বাস্থের উন্নতি হয়। পেয়ারার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম ও ফাইবার হার্টের স্বাস্থকে সুরক্ষিত রাখে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখেঃ মানবদেহে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল স্বাস্থের জন্য ঝুঁকিপূর্ন। প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার ফলে শরীর থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল অনেকটাই কমে আসে এবং শরীর সুস্থ থাকে।

দাঁতের স্বাস্থ ভালো রাখেঃ ভিটামিন সি’ দাঁতের স্বাস্থ সুরক্ষায় খুবই উপকারী। পেয়ারার মধ্য থেকে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন সি’ পাওয়া যায়, যা প্রতিদিন খাওয়ার ফলে দাঁততে বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখে।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখেঃ পেয়ারা থেকে ভিটামিন এ’ পাওয়া যায়। যা নিয়মিত খাওয়ার ফলে চোখকে বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা করে এবং দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ পেয়ারা হলো ফাইবার সমৃদ্ধ ফল। যা প্রতিদিন খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর হয়।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখেঃ পেয়ারা প্রতিদিন খেলে উচ্চরক্তচাপকে নিয়ন্ত্রনে রাখে। পেয়ারার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে।

ত্বক ও চুলের স্বাস্থ ভালো রাখেঃ পেয়ারা থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি পাওয়া যায়। তাই প্রতিদিন যদি পেয়ারা খাওয়া যায় তাহলে ত্বক ও চুলের স্বাস্থ ভালো থাকে।

স্ট্রেস কমায়ঃ পেয়ারার মধ্যে থাকা খনিজ পদার্থ ও পুষ্টি উপদানগুলো শরীরের ক্লান্তি বা স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে। তাই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর করতে প্রতিদিন পেয়ারা খাবেন ।

উপরের বলা স্বাস্থ উপকারিতগুলো প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার ফলে পাওয়া যায়। তাই শরীর ঠিক রাখতে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দিতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পেয়ারা রাখুন।

পেয়ারা খেলে কি ওজন বাড়ে

পেয়ারা একটি স্বাস্থউপকারীগুন সম্পন্ন ফল। তাই আমরা অনেকেই এ ফল খাবার তালিকায় রাখতে পচ্ছন্দ করি। তবে আমাদের খাদ্য তালিকা নির্বাচনের সময় আমাদের মাথায় প্রশ্ন আসে, যে খাবারগুলো আমরা খেতে চাই সেগুলো খেলে আমাদের শরীরের ক্ষতিকর ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না। তাই পেয়ারা যারা নিয়মিত খেতে চাইছেন অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন পেয়ারা খেলে কি ওজন বাড়ে। তো চলুন বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

ওজন নিয়ে আমরা অনেকেই চিন্তিত। ওজনকে স্বাভাবিক রাখার পরামর্শও দিয়ে তাকেন বিশেজ্ঞরা। কারণ অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে পেয়ারা খাওয়ার সময় ওজন নিয়ে চিন্তা করবেন না। পেয়ারা ওজন বাড়ায় না, বরং যাদের অতিরিক্ত ওজন তাদের ওজন কমাতে সহায়তা করে থাকে পেয়ারা। পেয়ারার মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা খাওয়ার ফলে অনেক্ষন পেট ভরা থাকে , খিদে কম পায় এবং অতিরিক্ত ওজনকে কমিয়ে আনে। বিশেজ্ঞদের মতে পেয়ারাকে বলা লো ক্যালরিযুক্ত সম্পন্ন ফুড। এটি নিয়মিত খেলে ওজন বাড়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না।

সুতরাং পেয়ারা ওজন বাড়ায় না, বরং অতিরিক্ত ওজনকে কমিয়ে বিভিন্ন রোগকে বশ করে রাখে। তাই পেয়ারা খাওয়ায় ওজন নিয়ে সন্দেহ করবেন না, নিঃসন্দেহে এ ফল খেতে পারেন। তবে অবশ্যই পরিমিত খেতে হবে।

রাতে পেয়ারা খেলে কি হয়

শারিরিক সুস্থতা বজায় রাখতে পুষ্টিবীদরা নিয়মিত পেয়ার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অসংখ্যা পুষ্টি উপাদান পেয়ারার মধ্যে রয়েছে। তবে পেয়ারার মধ্যে অসংখ্যা পুষ্টি আছে বলে এটি কি রাতে খাওয়া যাবে? অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। তো চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক রাতে ফল খেলে কি হয়।

শরীর সুস্থ রাখতে ফলের জুড়ি মেলা ভার। বিভিন্ন ফল থেকে পাওয়া যায় অসংখ্যা স্বাস্থ উপকারিতা। তবে সবধরনের ফল আপনি দিনের যেকোনো সময় খেতে পারেন। কিন্তু সবধরনের ফল রাতের বেলা খাওয়া যাবে না। রাতে যেসব ফল খাওয়া মানা সেসব ফলের তালিকায় পেয়ারাও রয়েছে। কারন পেয়ারা হলো ফাইবার সমৃদ্ধ একটি ফল। ফাইবার আমাদের স্বাস্থের জন্য উপকারী হলেও, রাতের বেলা এটি কিছু শারিরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। রাতে পেয়ারা খাওয়ার ফলে হজমে বিভিন্ন সমস্যা হতে দেখা যায়। যেমন-পেট ফাঁপা, গ্যাস অথবা ঘুমের সমস্যা হওয়া। এছারাও ঠান্ডা ও কাশির সমস্যা দেখা দেয় রাতে কলা খাওয়ার ফলে।

তাই যারা পেয়ারার সঠিক উপকার পেতে চান, তারা দিনের যেকোনো সময় পেয়ারা খেলেও, স্বাস্থ ঝুঁকি কমাতে রাতের বেলা এ ফল এড়িয়ে চলবেন।

পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময়

পুষ্টিগুনের ভরপুর ফলের তালিকায় অন্যতম একটি ফলের নাম পেয়ারা। যা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখা উপকারী। পেয়ার আমাদের প্রায় অনেকের পচ্ছন্দের। পেয়ারা পুষ্টিকর ফল বলে এটি যখন তখন খাওয়া ঠিক নয়। পেয়ারা খাওয়ার সঠিক নিয়ম রয়েছে। পুষ্টিবীদদের মতে সঠিক সময়ে পেয়ারা খাওয়া স্বাস্থের জন্য বেশি উপকারী। তাই পেয়ারা খেলে অবশ্যই সঠিক নিয়মে পেয়ারা খেতে হবে।

পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময় হলো সকালের নাস্তা খাওয়ার পরে। সকালের নাস্তা খাওয়ার এক ঘন্টা পর পেয়ারা খাবেন। এ সময় পেয়ারা খাওয়া স্বাস্থের জন্য বেশ উপকারী। দিনের যেকোনো সময় আপনি পেয়ারা খেতে পারেন। তাহলেও পেয়ারার উপকারীগুন পাওয়া যায়। তবে সকালে খালি পেটে অথবা রাতে পেয়ারা খাওয়া ঠিক নয়। পেটের সমস্যা, ঠান্ডজনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। তাই রাতের বেলা এবং সকালে খালি পেটে পেয়ারা খাবেন না, দিনের যেকোনো সময় পেয়ারা খেতে পারেন।

পেয়ারা খাওয়ার অপকারীতা

কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় পেয়ারা খেলে উপকার মেলে, কিন্তু অতিরিক্ত পেয়ারা খেলে পেটফাঁপা বা হজমের সমস্যা হতে পারে। পেয়ারায় থাকা অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ় রক্ত শোষণ করতে পারে না যার ফলে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। পেয়ারায় পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকে যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখলেও কিডনির সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।

পেয়ারার পুষ্টিগুন সম্পর্কে আমরা নিশ্চয় জেনে গিয়েছি। পেয়ারা আমাদের স্বাস্থের জন্য ভালো। পেয়ারার কোনো ক্ষতিকারক দিক নেয়, যদি এ ফল খাওয়া হয় পরিমিত। তবে যখন অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়া হয়, তখন স্বাস্থের জন্য সেটা ক্ষতিকারক হয়ে যায়। পেয়ারা কেন পরিমিত খেতে হবে পেয়ারা খাওয়ার আগে অবশ্যই আমাদের জেনে নিতে হবে। চলুন জেনে নিই পেয়ারা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরে কি কি অপকারিতা দেখা যায়।
  • পেয়ারা ঠান্ডা জাতীয় ফল। যার কারনে অতিরিক্ত পেয়ারা খেলে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন সমস্যা হতে দেখা যায়। তাই যাদের ঠান্ডার সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত পেয়ারা খাবেন না।
  • পেয়ারার মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমানে ফাইবার ও পটাশিয়াম রয়েছে। তাই অতিরিক্ত পেয়ারা খেলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন-ডায়রিয়া, আমাশয় ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
  • গর্ভবতী মায়েদের অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়া স্বাস্থের জন্য ঠিক নয়। পেয়ারার মধ্যে থাকা ফাইবার গর্ভবতী মায়েদের হজমের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
  • ডায়াবেটিস রোগিদের পেয়ারা খাওয়া স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। কারন রক্তের শর্করাকে পেয়ারা হ্রাস করে থাকে।
  • অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠ্যির সমস্যা হয়ে থাকে।
  • পেয়ারাতে পটাশিয়াম থাকায় কিডনীর সমস্যা যাদের রয়েছে, তাদের সমস্যাকে আরও বাড়ায় দেয় পেয়ারা।
  • যাদের শরীরে কোনো স্বাস্থ সমস্যা রয়েছে, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পেয়ারা খাবেন। পেয়ারার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম এবং ফাইবার সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়ার ফলে উপরের বলা স্বাস্থ ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। তাই স্বাস্থের সঠিক উপকার পেতে পেয়ারা অতিরিক্ত খাওয়া যাবেন না। বড় সাইজের ১ টি এবং মাঝারি সাইজের ২ টি পেয়ারা দৈনিক খাওয়া স্বাস্থের জন্য উপকারী।পেয়ারাতে থাকা পুষ্টিগুন মানবস্বাস্থের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে থাকে। তাই দৈনিক পরিমিত পেয়ারা খান এবং স্বাস্থকে সুরক্ষিত রাখুন।

লেখকের শেষ কথা

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url