প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
পেয়ারা খুবই পুষ্টিসমৃদ্ধ একটি ফল। পেয়ারার মধ্যে থেকে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। পেয়ারার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, এ, বি, কে, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিনসহ খনিজ পদার্থ। এসব পুষ্টি উপান পেয়ারার মধ্যে থাকার কারনে প্রতিদিন পেয়ারা খেলে শরীরে বেশ কিছু স্বাস্থ উপকারিতা পাওয়া যায়। তাই স্বাস্থ সচেতন মানুষেরা খাবার তালিকায় পেয়ারা রাখেন। জেনে নিন প্রতিদিন পেয়ার খাওয়ার উপকারিতগুলো কি কি।
রোগপ্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়ায়ঃ পেয়ারাতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করতে সহায়তা করে।দেহের কোথাও কেটে গেলে ক্ষতস্থান শুকানোর জন্য পেয়ারা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে।
হার্টের স্বাস্থ ভালো থাকেঃ পেয়ারা প্রতিদিন খেলে হার্টের স্বাস্থের উন্নতি হয়। পেয়ারার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম ও ফাইবার হার্টের স্বাস্থকে সুরক্ষিত রাখে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখেঃ মানবদেহে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল স্বাস্থের জন্য ঝুঁকিপূর্ন। প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার ফলে শরীর থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল অনেকটাই কমে আসে এবং শরীর সুস্থ থাকে।
দাঁতের স্বাস্থ ভালো রাখেঃ ভিটামিন সি’ দাঁতের স্বাস্থ সুরক্ষায় খুবই উপকারী। পেয়ারার মধ্য থেকে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন সি’ পাওয়া যায়, যা প্রতিদিন খাওয়ার ফলে দাঁততে বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখে।
দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখেঃ পেয়ারা থেকে ভিটামিন এ’ পাওয়া যায়। যা নিয়মিত খাওয়ার ফলে চোখকে বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা করে এবং দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ পেয়ারা হলো ফাইবার সমৃদ্ধ ফল। যা প্রতিদিন খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর হয়।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখেঃ পেয়ারা প্রতিদিন খেলে উচ্চরক্তচাপকে নিয়ন্ত্রনে রাখে। পেয়ারার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে।
ত্বক ও চুলের স্বাস্থ ভালো রাখেঃ পেয়ারা থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি পাওয়া যায়। তাই প্রতিদিন যদি পেয়ারা খাওয়া যায় তাহলে ত্বক ও চুলের স্বাস্থ ভালো থাকে।
স্ট্রেস কমায়ঃ পেয়ারার মধ্যে থাকা খনিজ পদার্থ ও পুষ্টি উপদানগুলো শরীরের ক্লান্তি বা স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে। তাই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর করতে প্রতিদিন পেয়ারা খাবেন ।
উপরের বলা স্বাস্থ উপকারিতগুলো প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার ফলে পাওয়া যায়। তাই শরীর ঠিক রাখতে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দিতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পেয়ারা রাখুন।
পেয়ারা খেলে কি ওজন বাড়ে
পেয়ারা একটি স্বাস্থউপকারীগুন সম্পন্ন ফল। তাই আমরা অনেকেই এ ফল খাবার তালিকায় রাখতে পচ্ছন্দ করি। তবে আমাদের খাদ্য তালিকা নির্বাচনের সময় আমাদের মাথায় প্রশ্ন আসে, যে খাবারগুলো আমরা খেতে চাই সেগুলো খেলে আমাদের শরীরের ক্ষতিকর ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না। তাই পেয়ারা যারা নিয়মিত খেতে চাইছেন অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন পেয়ারা খেলে কি ওজন বাড়ে। তো চলুন বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
ওজন নিয়ে আমরা অনেকেই চিন্তিত। ওজনকে স্বাভাবিক রাখার পরামর্শও দিয়ে তাকেন বিশেজ্ঞরা। কারণ অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে পেয়ারা খাওয়ার সময় ওজন নিয়ে চিন্তা করবেন না। পেয়ারা ওজন বাড়ায় না, বরং যাদের অতিরিক্ত ওজন তাদের ওজন কমাতে সহায়তা করে থাকে পেয়ারা। পেয়ারার মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা খাওয়ার ফলে অনেক্ষন পেট ভরা থাকে , খিদে কম পায় এবং অতিরিক্ত ওজনকে কমিয়ে আনে। বিশেজ্ঞদের মতে পেয়ারাকে বলা লো ক্যালরিযুক্ত সম্পন্ন ফুড। এটি নিয়মিত খেলে ওজন বাড়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না।
সুতরাং পেয়ারা ওজন বাড়ায় না, বরং অতিরিক্ত ওজনকে কমিয়ে বিভিন্ন রোগকে বশ করে রাখে। তাই পেয়ারা খাওয়ায় ওজন নিয়ে সন্দেহ করবেন না, নিঃসন্দেহে এ ফল খেতে পারেন। তবে অবশ্যই পরিমিত খেতে হবে।
রাতে পেয়ারা খেলে কি হয়
শারিরিক সুস্থতা বজায় রাখতে পুষ্টিবীদরা নিয়মিত পেয়ার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অসংখ্যা পুষ্টি উপাদান পেয়ারার মধ্যে রয়েছে। তবে পেয়ারার মধ্যে অসংখ্যা পুষ্টি আছে বলে এটি কি রাতে খাওয়া যাবে? অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। তো চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক রাতে ফল খেলে কি হয়।
শরীর সুস্থ রাখতে ফলের জুড়ি মেলা ভার। বিভিন্ন ফল থেকে পাওয়া যায় অসংখ্যা স্বাস্থ উপকারিতা। তবে সবধরনের ফল আপনি দিনের যেকোনো সময় খেতে পারেন। কিন্তু সবধরনের ফল রাতের বেলা খাওয়া যাবে না। রাতে যেসব ফল খাওয়া মানা সেসব ফলের তালিকায় পেয়ারাও রয়েছে। কারন পেয়ারা হলো ফাইবার সমৃদ্ধ একটি ফল। ফাইবার আমাদের স্বাস্থের জন্য উপকারী হলেও, রাতের বেলা এটি কিছু শারিরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। রাতে পেয়ারা খাওয়ার ফলে হজমে বিভিন্ন সমস্যা হতে দেখা যায়। যেমন-পেট ফাঁপা, গ্যাস অথবা ঘুমের সমস্যা হওয়া। এছারাও ঠান্ডা ও কাশির সমস্যা দেখা দেয় রাতে কলা খাওয়ার ফলে।
তাই যারা পেয়ারার সঠিক উপকার পেতে চান, তারা দিনের যেকোনো সময় পেয়ারা খেলেও, স্বাস্থ ঝুঁকি কমাতে রাতের বেলা এ ফল এড়িয়ে চলবেন।
পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময়
পুষ্টিগুনের ভরপুর ফলের তালিকায় অন্যতম একটি ফলের নাম পেয়ারা। যা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখা উপকারী। পেয়ার আমাদের প্রায় অনেকের পচ্ছন্দের। পেয়ারা পুষ্টিকর ফল বলে এটি যখন তখন খাওয়া ঠিক নয়। পেয়ারা খাওয়ার সঠিক নিয়ম রয়েছে। পুষ্টিবীদদের মতে সঠিক সময়ে পেয়ারা খাওয়া স্বাস্থের জন্য বেশি উপকারী। তাই পেয়ারা খেলে অবশ্যই সঠিক নিয়মে পেয়ারা খেতে হবে।
পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময় হলো সকালের নাস্তা খাওয়ার পরে। সকালের নাস্তা খাওয়ার এক ঘন্টা পর পেয়ারা খাবেন। এ সময় পেয়ারা খাওয়া স্বাস্থের জন্য বেশ উপকারী। দিনের যেকোনো সময় আপনি পেয়ারা খেতে পারেন। তাহলেও পেয়ারার উপকারীগুন পাওয়া যায়। তবে সকালে খালি পেটে অথবা রাতে পেয়ারা খাওয়া ঠিক নয়। পেটের সমস্যা, ঠান্ডজনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। তাই রাতের বেলা এবং সকালে খালি পেটে পেয়ারা খাবেন না, দিনের যেকোনো সময় পেয়ারা খেতে পারেন।
পেয়ারা খাওয়ার অপকারীতা
কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় পেয়ারা খেলে উপকার মেলে, কিন্তু অতিরিক্ত পেয়ারা খেলে পেটফাঁপা বা হজমের সমস্যা হতে পারে। পেয়ারায় থাকা অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ় রক্ত শোষণ করতে পারে না যার ফলে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। পেয়ারায় পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকে যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখলেও কিডনির সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
পেয়ারার পুষ্টিগুন সম্পর্কে আমরা নিশ্চয় জেনে গিয়েছি। পেয়ারা আমাদের স্বাস্থের জন্য ভালো। পেয়ারার কোনো ক্ষতিকারক দিক নেয়, যদি এ ফল খাওয়া হয় পরিমিত। তবে যখন অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়া হয়, তখন স্বাস্থের জন্য সেটা ক্ষতিকারক হয়ে যায়। পেয়ারা কেন পরিমিত খেতে হবে পেয়ারা খাওয়ার আগে অবশ্যই আমাদের জেনে নিতে হবে। চলুন জেনে নিই পেয়ারা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরে কি কি অপকারিতা দেখা যায়।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url