আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আনারস এক প্রকারের গুচ্ছফল। এটি একটি বহুবর্ষজীবী ভেষজ, যা ১.০ থেকে ১.৫ মিটার লম্বা হয়। কখনও কখনও এটি আরও লম্বা হতে পারে। আনারসে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এনজাইম ব্রোমেলেইন। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’-পাওয়া যায়। এই ফলে আছে ম্যাঙ্গানিজ নামক খনিজ উপাদান, যা দেহের শক্তি বাড়ায়। আছে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন বি-১, যা শরীরের জন্য অপরিহার্য।
অনেকেই মনে করেন, আনারস এবং দুধ একসঙ্গে খেলে বিষক্রিয়া হয়। এটা কুসংস্কার ছাড়া কিছুই না। আনারস একটি অ্যাসিটিক এবং টকজাতীয় ফল। দুধের মধ্যে যেকোনো টকজাতীয় জিনিস দিলে দুধ ছানা হয়ে বা ফেটে যেতে পারে। ফলে হতে পারে বদহজম, পেট ফাঁপা বা পেট খারাপের মতো সমস্যা। তবে এতে বিষক্রিয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
পেইজ সূচিপত্রঃ আনারসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
পুষ্টির অভাব পূরণে আনারসের জুড়ি নেই। এতে আছে প্রচুর ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস।নিচে আনারসের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো
ক্যান্সার প্রতিরোধীঃ ফ্রি-রেডিকেল বা মুক্ত মুলক মানবদেহের কোষের উপর বিরূপ ক্রিয়ার সৃষ্টি করে ফলে ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মত মারাত্মক রোগ দেখা দিতে পারে। দেশী আনারসে আছে উচ্চ মাত্রায় পানিতে দ্রবনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-সি এবং পানিতে দ্রবনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দেহকে ফ্রি-রেডিকেল থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। ফলে ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মত মারাত্মক রোগ দেহে বাসা বাঁধতে বাধাগ্রস্থ করে।
পুষ্টির অভাব দূর করেঃ আনারস পুষ্টির বেশ বড় একটি উৎস। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণেঃ শুনতে অবাক লাগলেও আনারস আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার এবং অনেক কম ফ্যাট রয়েছে। সকালে আনারস বা সালাদ হিসেবে এর ব্যবহার অথবা আনারসের জুস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।
হাড় গঠনে সহায়কঃ আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ম্যাঙ্গানিজ হাড়কে করে তোলে মজবুত।আনারসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামও থাকে। ক্যালসিয়াম হাড় ক্ষয়ে যাওয়া রোধে কাজ করে। এতে থাকা ম্যাঙ্গানিজ হাড়কে করে তোলে মজবুত। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমাণ আনারস রাখলে হাড়ের সমস্যাজনিত যে কোনও রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষায়ঃ আনারসের ক্যালসিয়াম দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। মাড়ির যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন আনারস খেলে দাঁতে জীবাণুর আক্রমণ কম হয় এবং দাঁত ঠিক থাকে।
চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এ রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এতে সুস্থ থাকে আমাদের চোখ।
হজমশক্তি বাড়ায়ঃ আনারস আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন, যা আমাদের হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। বদহজম বা হজমজনিত যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন আনারস খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ত্বকের সুরক্ষায়ঃ আনারসে থাকা ক্যালরি আমাদের শক্তির জোগান দেয়। প্রোটিন ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বককে কুঁচকে যাওয়া থেকে বাঁচায়। দেহের তৈলাক্ত ত্বক, ব্রণসহ ত্বকের নানা সমস্যায় আনারস যথেষ্ট কাজ করে।
রক্ত জমাটে বাধা দেয়ঃ দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এই ফল। ফলে শিরা-ধমনির (রক্তবাহী নালি) দেয়ালে রক্ত না জমার জন্য সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত যেতে পারে। হৃৎপিণ্ড আমাদের শরীরে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ করে। আনারস রক্ত পরিষ্কার করে হৃৎপিণ্ডকে কাজ করতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঃ
আনারস খেলে অনেকেই অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন। ফলে তাদের শরীরে চুলকানি, ফুসকুরি দেখা দেয়। এতে থাকা চিনি ডায়বেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। আনারস অ্যাসিটিক ফল। তাই খালি পেটে খেলে পেটব্যথা হতে পারে।
আনারস খাওয়ার ফলে অনেক নারী ও পুরুষের দেহে অ্যালার্জী দেখা দিতে পারে। আনারস খাওয়ার ফলে অ্যালার্জীর উপসর্গ হল ঠোঁট ফুলে যাওয়া ও গলায় সুরসুরি বোধ হওয়া। তাই আনারস খাওয়ার আগে তা কেটে লবণ পানি দিয়ে ধুয়ে নেয়া উচিত। এভাবে ধুয়ে নিয়ে খেলে কোন সমস্যা হওয়ার সম্ভবনা থাকেনা।
আনারসের কারণে নারীদের গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গর্ভাবস্থায় থাকলে নারীদের আনারস খেতে বারণ করা হয়। তাছাড়া গর্ভাবস্থার পরে চাইলে আনারস খেতে পারেন কিন্তু শরীরের অবস্থা বুঝে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
যখন আপনি আনারস খাবেন তখন এটি আপনার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল নালীর কাছে পৌঁছানোর পর এটি অ্যালকোহলে পরিনত হয়। এবং এই কারণে মানুষের দেহে বাতের ব্যথা শুরু হতে পারে। তাই যে সকল মানুষের দেহে বাতের ব্যথা আছে কিংবা সন্দেহ করা হচ্ছে বাত হতে পারে তাদের আনারস না খাওয়াটাই ভালো।
আনারসে আছে অনেক বেশি পরিমানে প্রাকৃতিক চিনি। আনারসের ২ টি চিনি উপাদান সুক্রোজ এবং ফ্রুক্টোজ যা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু দেহের ক্ষতি, এটি খাওয়ার উপর নির্ভর করে। এবং আনারসের মধ্যে অতিরিক্ত চিনি আমাদের দেহে রক্তের চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই আনারস বেশি না খেয়ে সপ্তাহে ২ দিন খেতে পারেন।
আনারসে আছে ব্রমিলেইন যা দিয়ে ওষুধ বানানো হয়ে থাকে এবং কোন রোগীর প্রয়োজন পরলে তাকে তা দেয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া আপনি যদি কোন কারণে অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিকনভালসেন্ট ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আনারস খেতে ডাক্তাররা নিষেধ করে থাকেন। কারণ এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
অনেকেই কাঁচা আনারস ব্যবহার করে থাকেন জুস বানানোর জন্য কিন্তু এটি দেহের জন্য ক্ষতিকর এবং খুব বিষাক্ত। এবং মাঝে মাঝে কাঁচা আনারস খাওয়ার কারণে বমির প্রবণতা দেখা দেয়।
কাঁচা আনারসে আছে অনেক বেশি পরিমানে এসিডিটি যা আমদের মুখের ভিতর ও গলায় শ্লেষ্মা তৈরি করে। এবং ফলটি খাওয়ার পর মাঝে মাঝে অনেকের পেটে ব্যথাও হতে পারে।
রক্ত তরল করার জন্য যে ওষুধ বানানো হয় তাতে আনারস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ফল দেহে রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াতে বাঁধা প্রদান করে থাকে।
ব্রমিলেইন আনারসের একটি উপাদান যা আমদের দেহের প্রোটিনের পরিমাণ নষ্ট করাতে দায়ী থাকে। এবং এই ফল দেহে ডার্মাটাইটিস ও অ্যালার্জী সংক্রামন করে।
আনারস আমাদের দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। যাদের দাতে কেভিটিস ও জিংজাইভেটিভস এর সমস্যা আছে তাদের আনারস না খাওয়াই ভালো।
খালি পেটে আনারস খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে সকালবেলা আনারস খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আনারসে রয়েছে এনজাইম, ব্রমেলেইন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন-সি যা রোগ নিরাময়ে বেশ কার্যকরী। কিডনি রোগ থেকে মুক্তি পায়ওয়ার অন্যতম মাধ্যম হল খালি পেটে আনারস খাওয়া। সকালবেলা কোনকিছু খাওয়ার আগে আনারস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে মুক্ত পাওয়া যায়।
সকালবেলা কোনকিছু খাওয়ার আগে আনারস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য যথেষ্ঠ এনজাইম এবং ফাইবার পাওয়া যায়।খালি পেটে আনারস রোগপ্রতিরোধের প্রক্রিয়ার জন্যেও ভালো, যা প্রোটিনের ধীর গতির জারণের ফলে হয়ে থাকে। আনারসে পটাশিয়াম থাকায় হাড়কেও শক্ত করে।
আনারস খাওয়ার পর দুধ খেলে কি হয়
আমরা ছোটোবেলা থেকেই শুনে এসছি যে, আনারস আর দুধ একসাথে খেলে শরীরে বিষক্রিয়া তৈরী হয়, ফলে মানুষ মারা যায়। এটি একটি ভূল ধারনা।
দুধের অন্যতম উপাদান হল ক্যাসিন (Casein) । দুধের সাথে যখন কোন অ্যাসিডিক পদার্থ মেশানো হয়, যেমন লেবু, আনারস, বা টক জাতীয় অন্য কোন ফল বা খাবার, তখন তা দুধকে ভেঙ্গে ক্যাসিন আলাদা করে ফেলে এবং দুধ পরিণত হয় ছানায়।
আনারস কিংবা দুধে কারো কারো এলার্জী থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে আনারস গ্রহণে কিংবা দুধ পানে বিরূপ শারীরিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এই জন্যই আলসার বা গ্যাস্ট্রিক বা ‘ল্যাক্টোজেন টলারেন্স’ কম এমন রোগীদেরকে দুধ পান করতে কিংবা বেশি পরিমাণে টক জাতীয় ফল খেতে নিরুৎসাহিত করা হয়। এই ধরণের পূর্ব শারীরিক অবস্থা না থাকলে, দুধ ও আনারস একসাথে খেলে আলাদা করে কোন স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই। উল্লেখ্য বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে আনারস ও দুধের তৈরি জনপ্রিয় বিভিন্ন পানীয় রয়েছে, যার মধ্যে ভাইফালা, বাবল টি পাইন্যাপল স্মুদিস, ওটাই, মিল্কশেক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এসব পানীয়তেও কোন বিষক্রিয়া হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় না।
দুধে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকে। আনারসে থাকে ব্রোমেলিন নামক একটি এনজাইম। এই এনজাইম প্রোটিনের সাথে বিক্রিয়া করে একটি টক্সিন তৈরি করে। এই টক্সিনই অ্যাসিডিটির কারণ। অ্যাসিডিটি হলে পেটে ব্যথা, বমি, বমি বমি ভাব, জ্বর, মাথাব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে এই বিষক্রিয়া সাধারণত মারাত্মক হয় না।
গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়
একটি মেয়ে যখন প্রথম গর্ভবতী হয়, তার চারপাশে যেন রাজ্যের উপদেশ ডানা মেলে অবাধে বিচরণ করতে শুরু করে। পরিবার-পরিজন, আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষীর দল এমনকি মাঝে মাঝে অজানা অচেনা মানুষও তাদের মতামত শুনিয়ে যান হবু মাকে। অবশ্যই তারা প্রত্যেকে হবু মা ও সন্তানের মঙ্গলকামনা করেন। কিন্তু একজন মায়েরও সমস্ত কিছু নিয়ে চোখ-কান খোলা রাখা অবশ্যই প্রয়োজন। কখনই কোনও উপদেশ যাচাই না করে যেমন মেনে নেওয়া উচিত না, আবার অন্যদিকে সেগুলো একেবারেই না মানা যুক্তিযুক্ত নয়। যেমন, গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া নিয়ে প্রচুর দ্বিমত রয়েছে। হবু মা যেন আনারস একেবারেই না খান।
আনারস বেশ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ একটি রসালো ফল। তবে এ ফলটি থেকে গর্ভবতী নারীকে একটু দূরেই থাকতে বলা হয়। কারণ, আনারসের মধ্যে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ব্রোমেলেইন। এ এনজাইমটি সারভিক্সকে নরম করে দেয় এবং জরায়ুর সংকোচনকে উদ্দীপ্ত করে। এ কারণে আগেভাগে সন্তান জন্ম হতে পারে, যেটি মা ও শিশু উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।
এ ছাড়া ব্রোমেলেইন গর্ভপাতও ঘটিয়ে দিতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শই দেন বিশেষজ্ঞরা
বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় আনারস খাওয়া যাবে
বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় আনারস খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ। এর কারণ হল সাইট্রাস ফল, আনারস এবং টমেটোর মতো অ্যাসিডিক খাবারগুলি মায়ের দুধকে প্রভাবিত করে না, কারণ এই খাবারগুলি মাতৃ রক্তরসের পিএইচ ভারসাম্য পরিবর্তন করে না। যদি আপনি বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় আপনার খাদ্যতালিকায় আনারস অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে চিন্তিত হন তাহলে আপনার উচিত একজন গাইনোকোলজিস্ট বা পুষ্টিবিদের সাথে আপনার উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করা।
বেশিরভাগ মহিলাই সচেতন যে গর্ভাবস্থায় এবং তাদের শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় ফল খাওয়া বেশ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ফলগুলি অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং শিশুরাও তাদের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এমন বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের স্বাদ পায়। গর্ভবতী মহিলার খাদ্যতালিকায় আনারস অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায়ে। যাইহোক, যখন দুধ খাওয়ানোর সময় এই ফলটি খাওয়ার কথা আসে, তখন নিশ্চিতভাবে বলা যায় না যে এটি একটি শিশুর জন্য নিরাপদ।
ডায়াবেটিস হলে আনারস খাওয়া যাবে কি
দিন দিন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। জীবনযাত্রায় অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর খাবার ও শরীরচর্চার অভাব এই রোগের মূল কারণ। ডায়াবেটিস হলে দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়। বিশেষ করে খাদ্যাভ্যাসে একটা বড় পরিবর্তন আনতে হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ রাখতে হয় অনেক কিছুই। বিশেষত মিষ্টি জাতীয় খাবার এবং পানীয়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব দরকার। কারণ এই রোগের হাত ধরেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চোখ, কিডনি, হৃদযন্ত্রসহ বিভিন্ন অঙ্গ।
ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যতালিকায় অনেক খাবার রাখা যায় না। আবার কিছু খাবার না রাখলেই নয়। তেমনই একটি খাবার হলো আনারস।আনারস নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্যকর একটি ফল। ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল সমৃদ্ধ আনারস অনেক রোগের মোকাবিলা করার ক্ষমতা রাখে।ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে আনারস এড়িয়ে চলাই ভালো। তার মানে এই নয়, ফলটিকে একেবারে বাদ দিতে হবে। খেলেও অল্প পরিমাণে।
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, এ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস, ফাইবার সমৃদ্ধ আনারস হজমশক্তির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ডায়াবেটিস রোগীদের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা জিআইয়ের পরিমাণ বেশি এমন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এ হিসেবে আনারসে জিআইয়ের পরিমাণ হলো ৫১ থেকে ৭৩ এর মধ্যে। তাই আনারসের পুষ্টিগুণ পেতে ডায়াবেটিস রোগীরা আনারস খেতে পারেন।
শেষ কথা
পুষ্টিসাধন সহ দেহকে সুস্থ রাখতে আনারস একটি অতুলনীয় ও কার্যকরী ফল। এটি দামেও সস্তা এবং সহজলভ্য। এছাড়া এর বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যে কোন ধরনের একটি ফল থাকলে মন্দ হয় না। তাই চাইলেই প্রতিদিনের খাবারে আনারস রাখা যেতেই পারে।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url