ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা
পেইজ সূচিপত্রঃ ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা
- ডাবের পানির উপকারিতা
- ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম
- খালি পেটে ডাবের পানি খাওয়া কি উচিত
- ত্বকের জন্য ডাবের পানির উপকারিতা
- প্রতিদিন ডাবের পানি খেলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
- সকালে ডাবের পানি কেন পান করবেন
- গরমে ডাবের পানির উপকারিতা
- ডাবের পানি খেলে কি ওজন কমে
- ডাবের পানি কাদের খাওয়া উচিত নয়
- ডাবের শাঁসের উপকারিতা
- ডাবের পানির অপকারিতা
- শেষ কথা
ডাবের পানির উপকারিতা
- ডাবের পানির উপকারিতা অনেক। সংক্ষেপে বললে,ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম থাকে। ফলে এটি প্রাকৃতিক ভাবে ক্যালসিয়াম জোগান দেয় শরীরে।
- ডাবের পানি শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান বের করে।
- এতে থাকা আঁশ শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে।
- এটিতে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকায় কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
- চর্বির পরিমাণ খুব কম থাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- পানিশূন্যতা দূর করে।
- যে কোনো কোমল পানীয়ের থেকে এতে অনেক কম ক্যালরি ও চিনি থাকে।
- পটাশিয়াম, সোডিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের উপস্থিতির কারণে শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।
- এতে আঁশ থাকে বলে হজমে সহায়তা করে।
- রোদের কারণে শরীরে তরলের ঘাটতি হয় এবং শরীর আর্দ্রতা হারায়। ডাবের পানি শরীরের তরল উপাদান ও আর্দ্রতা বজায় রাখে।
ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম
ডাবের পানিকে বলা হয় প্রাকৃতিক স্যালাইন। ডাবের পানি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান, ইলেক্ট্রোলাইট এবং খনিজ থাকে যা শরীরের জন্য উপকারী। ডাবের পানি সঠিকভাবে খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অতিরিক্ত পান করলে কিছু অসুবিধা হতে পারে। নীচে ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম হলো, কচি ডাবের পানি খাওয়া। কেননা ডাব যত বয়স্ক হয়, তাতে চিনির পরিমাণ বাড়তে থাকে। যেটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়, এবং ডাব কাটার সাথে সাথেই পানি খেয়ে নিতে হবে। যেকোনো সময় ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে তবে অনেক রোদ থেকে এসে সাথে সাথে ডাবের পানি না খাওয়াটাই ভালো।
পাশাপাশি ডাবের পানিতে অন্য কোন কিছু মিশিয়ে খাওয়া যাবেনা কেননা এটি শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। আশা করছি ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও আরো কিছু নিয়ম রয়েছে যেগুলো মেনে ডাবের পানি খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী।
খালি পেটে ডাবের পানি খাওয়া কি উচিত
ডাবের পানির উপকারিতা'র কথা কমবেশি সবারই জানা। শরীরে পুষ্টি জোগাতে ডাবের পানির তুলনা নেই। অনেকেরই অভ্যাস আছে সকালে উঠে খালি পেটে ডাবের পানি খাওয়ার। গরমে একটু স্বস্তি এনে দিতে ডাবের পানির কোনও বিকল্প নেই। তবে শুধু তেষ্টা মেটাতেই নয়, গরমে শরীর ভাল রাখতেও ডাবের পানি অত্যন্ত উপকারী।
ডাবের
পানিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স,
ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, মেঙ্গানিজ এবং জিঙ্ক
নানাভাবে শরীরে গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। খালি পেটে ডাবের পানি
খেলে ফল মেলে আরও বেশি। চলুন জানা যাক এই পানীয়টির আরও কত গুণ।
হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটেঃ
ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম, হাড়কে শক্ত-পোক্ত করে তোলার পাশাপাশি হাড়ের
স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ডাবে উপস্থিত
ম্যাগনেসিয়ামও এক্ষেত্রে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
শরীরকে বিষমুক্ত করেঃ
দেহের প্রতিটি কোণায় উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দিতে এই
প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে
এক গ্লাস ডাবের পানি পান করলে নানাবিধ রোগ যেমন শরীরের ধারে কাঁছে ঘেঁষতে
পারে না, তেমনি সার্বিকভাবে শরীরিক ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে চলে আসেঃ
ডাবের পানিতে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং ডায়াটারি ফাইবার ইনসুলিনের
কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে
আসে। এই কারণেই রোজের ডায়েটে ডাবকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন
চিকিৎসকেরা।
কিডনির ক্ষমতা বাড়েঃ প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম
এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে ডাবের পানি কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ
ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত টক্সিন উপাদানদের ইউরিনের
সঙ্গে বের করে দিয়ে নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়।
পানির ঘাটতি মিটায়ঃ
ডাবের পানি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র জলের ঘাটতি মিটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে
এতে থাকা ইলেকট্রোলাইট কম্পোজিশান ডায়ারিয়া, বমি এবং অতিরিক্ত ঘামের পর
শরীরের ভিতরে খনিজের ঘাটতি মেটাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
শরীর এবং ত্বকের বয়স কমেঃ
ডাবের পানিতে রয়েছে সাইটোকিনিস নামে নামে একটি অ্যান্টি-এজিং উপাদান, যা
শরীরের উপর বয়সের ছাপ পরতে দেয় না। সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতেও
বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ওজন হ্রাসে পায়ঃ ডাবের পানিতে
বেশ কিছু উপকারি এনজাইম হজম ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মেটাবলিজমের
উন্নতিতেও সাহায্য় করে থাকে। ফলে খাবার খাওয়া মাত্র তা এত ভালো ভাবে হজম
হয়ে যায় যে শরীরে হজম না হওয়া খাবার মেদ হিসেবে জমার সুযোগই পায় না। ফলে
ওজন কমতে শুরু করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটেঃ
রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন এবং পাইরিডোক্সিনের মতো উপকারি উপদানে
ভরপুর ডাবের পানি প্রতিদিন পান করলে শরীরের শক্তি এতটা বৃদ্ধি পায় যে
জীবাণুরা কোনওভাবেই ক্ষতি করার সুযোগ পায় না। সেই সঙ্গে ডাবের পানিতে
অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্য়াকটেরিয়াল প্রপাটিজ নানাবিধ সংক্রমণের হাত
থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটেঃ
শরীরে বাজে কোলেস্টেরল বা এল ডি এল-এর পরিমাণ কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্যের
উন্নতিতে ডাবের পানির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। দেহে ভালো
কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমাতেও ডাবের
পানি বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে।
মাথা যন্ত্রণার প্রকোপ কমেঃ
ডিহাইড্রেশনের কারণে মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনর অ্যাটাক হওয়ার মতো ঘটনা
ঘটলে শীঘ্র এক গ্লাস ডাবের পানি পান করবেন। এমনটা করলে দেখবেন নিমেষে কষ্ট
কমে যাবে। প্রাকৃতিক উপাদানটিতে ম্যাগনেসিয়াম, এই ধরনের শারীরিক সমস্যার
চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
নিয়মিত ডাবের পানি খেলে আরও যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়-
- সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সুবিধা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে ডায়াবেটিকদের এইচবিএ১সি নিয়ন্ত্রণে আসে। অর্থাৎ তাদের তিন মাসের গড় সুগার কমে।
- গরমে শরীরে ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্য ফেরায়।
- নিম্ন রক্তচাপের সমস্যায় অত্যন্ত কার্যকরী ডাবের পানি।
ত্বকের জন্য ডাবের পানির উপকারিতা
- ডাবের পানি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়তা করে।
- রং স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
- কালো দাগ দূর করতে সহায়তা করে।
- ব্ল্যাক হেডস দূর করতে সহায়তা করে।
- বলি রেখা কমাতে সহায়তা করে।
- আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে।
- কোলাজেন তৈরি করে।
প্রতিদিন ডাবের পানি খেলে কি হয়
প্রতিদিন ডাবের পানি খেলে যে সমস্ত উপকার পাবেন-
- এক গ্লাস সুস্বাদু ডাবের পানি শুধু দেহ-মনে প্রশান্তির ছোঁয়াই এনে দেবে না, আপনি শুনে বিস্মিত হবেন, এর এমন এক অলৌকিক গুণ আছে, যা ওজন কমিয়ে আপনাকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- ডাবের পানি ইলেকট্রোলাইট ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। যে কারণে এটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে গ্রহণযোগ্য। আপনি যদি পানিশূন্যতায় ভোগেন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ধীরগতিতে ক্যালরি বার্ন হবে। এ পানিশূন্যতা দূর করবে সহজলভ্য ডাবের পানি।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ডাবের পানি। এতে থাকা রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন ও পাইরিডোক্সিনের মতো উপকারী উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর ফলে জীবাণুরা সহজে সংক্রমণ ঘটাতে পারে না।
- এই লো-ফ্যাটযুক্ত স্বাস্থ্যকর পানীয় পটাশিয়ামের উৎস, যা শরীরের ফ্যাট বার্ন করে পেশি গঠনে সহায়তা করে। তাই আপনি যদি বেশি করে ডাবের পানি পান করেন, তাহলে মেটাবলিজম বেড়ে যাবে আর ওজন থাকবে স্বাভাবিকভাবে নিয়ন্ত্রণে।
- ডাবের পানিতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় শক্তিশালী করার পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ডাবে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়ামও এ ক্ষেত্রে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
- ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ ও সি, যা ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। এ দুই ভিটামিন চুলের গোড়া মজবুত রাখতেও সাহায্য করে।
- এক কাপ ডাবের পানিতে তিন গ্রাম ফাইবার থাকে, যা অন্যান্য পানীয়র তুলনায় অনেক বেশি। ফাইবার পরিপাকের মাধ্যমে খাদ্য শোষণের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, ফাইবার শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ নির্মূল করে শরীর সুস্থ রাখে।
- ডায়েটেশিয়ান ও জিম ইনস্ট্রাক্টররা খাদ্যতালিকায় সব সময় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রাখার পরামর্শ দেন। এক কাপ ডাবের পানিতে রয়েছে দুই গ্রাম প্রোটিন। তাই ব্যায়ামের পরে স্পোর্টস ড্রিংক হিসেবে বেছে নিতে পারেন ডাবের পানি।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
- শরীরে পানির ভারসাম্য রক্ষা করে।
- পটাশিয়াম, সোডিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের উপস্থিতির কারণে শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করে।
- ডাবের পানিতে পটাশিয়াম থাকে বলে উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
- ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে বলে ডাবের পানি ভ্রূণের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- গ্যাস্ট্রিকের হাত থেকে কোনো কোনো গর্ভবতী নারীকে স্বস্তি দিতে পারে।
- শর্করার পরিমাণ খুবই কম বলে এটি ওজন বাড়াবে না
- ডাবের পানি ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। শরীরে রক্ত বাড়ায় এছাড়াও মূত্রাশয় থেকে আসা কোনও সংক্রমণকে রুখে দেয়।
- বুক জ্বালার সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় ডাবের পানি। বুক জ্বালা গর্ভবতী থাকাকালীন বহু নারীর ক্ষেত্রেই সমস্যা হয়ে ওঠে।
- গর্ভাবস্থায় সকালে উঠে খানিকটা দুর্বল লাগে। তা থেকে রক্ষা পেতে ডাবের পানি খুবই উপকারী।
- এতে থাকে ওমেগা থ্রি, ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার। ফলে তা মা ও সন্তান দুজনের স্বাস্থ্যের পক্ষেই খুব ভালো।
সকালে ডাবের পানি কেন পান করবেন
সকালে ডাবের পানি পান করার উপকারিতা-
গরমে ডাবের পানির উপকারিতা
শরীরে পানির ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেঃ পটাশিয়াম, সোডিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের উপস্থিতির কারণে শরীরে ইলেকট্রোলাইটে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।
এতে আঁশ থাকে বলে হজমে সহায়তা করেঃ রোদের কারণে শরীরে তরলের ঘাটতি হয় এবং শরীর আর্দ্রতা হারায়। ডাবের পানি শরীরের তরল উপাদান ও আর্দ্রতা বজায় রাখে।
ডাবের পানি খেলে কি ওজন কমে
ডাবের পানি কাদের খাওয়া উচিত নয়
ডাবের শাঁসের উপকারিতা
- ডাবের শাঁসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটি ঠান্ডা, কাশি, এবং অন্যান্য সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
- ডাবের শাঁসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং নিয়মিত অন্ত্রের চলাচল বজায় রাখে।
- ডাবের শাঁসে ফাইবার থাকে যা দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ফলে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- ডাবের শাঁসে থাকা ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়াম হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
- ডাবের শাঁসে থাকা ভিটামিন ই ত্বক ও চুলের জন্য ভালো। এটি ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে এবং চুলকে পুষ্ট করে।
- ডাবের শাঁসে থাকা ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এটি হাড়কে শক্ত করে এবং অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- ডাবের শাঁসে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- ডাবের শাঁসে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- ডাবের শাঁসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি থাকে যা শরীরে শক্তি সরবরাহ করে।
- ডাবের শাঁসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- আশা করছি বুঝতে পেরেছেন ডাবের শাঁসের উপকারিতা। তাই নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়ার পাশাপাশি ডাবের ভেতরের শাঁস খেলে উপরোক্ত ডাবের শাসের উপকারিতা পাওয়া যাবে।
dolonডাবের পানির অপকারিতা
রক্তে শর্করা মাত্রা বাড়ায়ঃ ডাবের পানিতে চিনির পরিমান কম থাকলেও কার্বহাইড্রেট ও ক্যালরি অধিক মাত্রায় থাকার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। তাই ডাবের পানি প্রতিদিন খাওয়া উচিত নয়। ডায়বেটিস থাকলে ডাবের পানিএড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
রক্তাচাপ বাড়িয়ে দেয়ঃ রক্তাচাপ বাড়িয়ে দেয় ডাবের পানি। ডাবের পানিতে প্রচুর সোডিয়াম থাকায় তা রক্তাচাপ বাড়িয়ে দেয়। তাই যাদের রক্তচাপ স্বাভাবিক ভাবেই বেশি তাদের ডাবের পানি প্রতিদিন খাওয়া উচিত নয়। ডাবের পানিতে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ডায়াটারি ফাইবার ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
কিডনির রোগঃ ডাবের পানি খেলে কিডনির সমস্যা হয় না। তবে কিডনি রোগ হলে ডাবের পানি পান করা একদমই ঠিক নয়। কারণ কিডনি অকার্যকর হলে শরীরের অতিরিক্ত পটাশিয়াম দেহ থেকে বের হয় না। ফলে ডাবের পানিতে পটাশিয়াম ও দেহের পটাশিয়াম একত্রে কিডনি ও হৃদপিণ্ড দুটোই অকার্যকর করে দেয়। তাই যাদের শরীরে প্রচুর পটাশিয়াম আছে এবং বের হয় না তাদের ডাবের পানি পান করা ঠিক না।
- নিয়ম করে ডাবের পানি খেতে হবে। উপকার করে বলে অপ্রয়োজনেও এটি খাওয়া যাবে না। তাতে বরং ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
- অতিরিক্ত ডাবের পানি খেলে কারও কারও ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
- ডাবের পানিতে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম থাকে। এ উপাদানগুলো শরীরে উচ্চ রক্তচাপ, ইলেকট্রোলাইট, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। কিন্তু শরীরে এগুলোর কোনোটার পরিমাণ বেড়ে গেলে উচ্চ রক্তচাপ, ইলেকট্রোলাইট, ডায়াবেটিস ইত্যাদির ভারসাম্য বজায় নাও থাকতে পারে। আবার এটি রক্তচাপ কমিয়েও দিতে পারে। এ সবকিছুই স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করবে। বলা হয়ে থাকে, কিডনি সুস্থ রাখতে ডাবের পানি পান করা ভালো। কিন্তু কিডনি রোগীদের জন্য ডাবের পানি ক্ষতির কারণও হয়। কাজেই যাদের যেকোনো পর্যায়ের কিডনি রোগ আছে তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডাবের পানি পান করবেন।
- কোনো কোনো অ্যালার্জির রোগী ডাবের পানি পানে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। কাজেই যাদের অ্যালার্জি আছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শে ডাবের পানি পান করবেন।
- ঠান্ডার রোগ আছে বা সর্দির রোগীদের বুঝেশুনে ডাবের পানি পান করা উচিত। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url