খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

খেজুর পুরুষ-মহিলা উভয়ের জন্য খুবই উপকারী। আয়রনে ভরপুর খেজুর হার্ট, উচ্চ রক্তচাপ, কোষ্ঠকাঠিন্য সহ একাধিক সমস্যা সমাধানে কার্যকর। নিজেকে সুস্থ এবং সচল রাখতে খেজুর খাওয়া খুবই জরুরী বিশেষ করে পুরুষদের জন্য। গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত খেজুর খেলে দেহে শক্তি বাড়ায় এবং অদম্য মনোবল তৈরি করে। খনিজ আয়রন, ক্যালসিয়াম, চিনি, পটাশিয়াম জাতীয় অনেক উপকারী উপাদান গুলোর কারণে এই ফলের আশ্চর্য নিরাময় শক্তি রয়েছে। এই পুষ্টিকর ফল খাওয়ার অনেকগুলি স্বাস্থ্য উপকরিতা রয়েছে। বিশেষ করে পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতি করে ও শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ায়।
প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে ক্যালরি ২৭৭ গ্রাম, প্রোটিন ১.৮১ গ্রাম. চর্বি ০.১৫ গ্রাম. কার্বোহাইড্রেট ৭৫ মিলিগ্রাম ফাইবার ৬.৭ গ্রাম ও ৩% ভিটামিন এ রয়েছে। এছাড়া ভিটামিন বি রয়েছে৬০.২৫ মিলিগ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ ০.৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৫৪ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৬৯৬ মিলিগ্রাম। বিভিন্ন খনির সমৃদ্ধ এই খেজুর বিশেষ করে পুরুষ দেহের নানান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

পেইজ সূচিপত্রঃ খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 

পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা

খেজুর শারীরিক ও মানসিক শক্তি বর্ধক। খেজুরের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য উপাদান যা শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি সহ হজম শক্তি, যৌন শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 

দীর্ঘস্থায়ী রোগে উপকারীঃ খেজুরে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে কার্যকর। খেজুর খেলে পুরুষদের ক্যান্সার, আল-ঝাইমার, হৃদরোগ সহ বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

পুরুষ বন্ধাত্ব দূর করেঃ খেজুরে থাকা ফাইবার স্থূলতা ও বন্ধুত্বের সমস্যা দূর করতে সহায়ক। খেজুর ফুলের পরাগরেণুতে যে বোরণ থাকে তা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। মূলত টেস্টোস্টেরন হল একটি পুরুষ হরমোন যার শুক্রাণু উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। এতে থাকা জিংক শুক্রানুর গতিশীলতা উন্নত করে এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শুক্রাণুর ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায়ঃ আমাদের দেশের পুরুষরা হৃদরোগ বা হার্টের সমস্যায় বেশি ভোগেন। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে শরীরে যে বাজে কোলেস্টেরল তৈরি হয় তার জন্য এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। যদি প্রতিদিন রাতে শোয়ার আগে এক গ্লাস পানিতে খেজুর ভিজিয়ে রেখে প্রতিদিনের সকালে খান তাহলে হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন এবং হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে। নিয়মিত এভাবে খেলে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে গতি সঞ্চার হবে এবং রোজ কাজ করার পর ক্লান্তি থেকে দূর থাকবেন।

বার্ধক্য জনিত সমস্যা প্রতিরোধ করেঃ পুরুষদের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা হলো এর ফলে ত্বকের আদ্রতা ফিরে আসে এবং চাকচিক্য ফিরে আনে। এছাড়াও খেজুরে থাকা ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি পুরুষদের ত্বককে শিথিল হওয়া থেকে রক্ষা করে। এর এন্টি এজিং বৈশিষ্ট্য শরীরে মেলানিন বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বককে দীর্ঘসময়ের জন্য চাঙ্গা রাখে। নিয়মিত খেজুর খেলে পুরুষের ত্বক আরো ভালো থাকে।

প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করেঃ খেজুরে থাকা পটাশিয়াম ও সোডিয়াম আমাদের দেহে প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খেজুর খেলে শরীরের খারাপ বা বাজে কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। পুরুষদের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে অনেক কাজ করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ খেজুরের এন্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ডায়াবেটিসের চিকিৎসাতে কাজ করে। খেজুরে ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস থাকে যা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে। যার অর্থ হল আপনার শরীর ইনসুলিন এর প্রতি আরো প্রতীক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা আরো কার্যকর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রতিরোধ করেঃ ফাইবারের একটি ভালো উৎস হলো খেজুর। কোলন এর স্বাস্থ্য উন্নত করে ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এর এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য শরীরের প্রদাহ কমায় এছাড়াও এতে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ক্যান্সার কোষ সনাক্ত করে তা ধ্বংস করে। মনে রাখতে হবে ক্যান্সার প্রতিরোধে খেজুর কোন নিশ্চিত উপায় না। ঝুঁকি কমাতে হলে স্বাস্থ্যকর খাবার, ব্যায়াম, ধূমপান ত্যাগ করা ও নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ রাখা খুবই জরুরী।

শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকেঃ খেজুরে থাকা ফাইবার আমাদের ক্ষুধা কমায় এবং বেশি বেশি খাবার খাওয়া থেকে দূরে রাখে ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়মিত পানি বা দুধে ভেজানো খেজুর খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। খেজুর খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে আপনি চাইলে খালিও খেতে পারেন। তাছাড়া এতে ভালো পরিমাণে ক্যালরি থাকায় প্রাকৃতিক চিনি অর্থাৎ শর্করার মাত্রা বেশি থাকায় অল্প খেজুর খেলে পেট ভরে যায়।

চুলের গোড়া মজবুত ও শক্ত করেঃ খেজুরে থাকা প্রোটিন চুলের গঠনের শক্তি ধরে রাখে। আয়রন চুলের পাতলা হওয়া বা চুল পড়া কমায়। পটাশিয়াম চুলের কোষগুলোকে হাইড্রেটেড রাখে এবং ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে। খেজুর খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে অনেকে গুরুত্ব না দিলেও চুল আমাদের সৌন্দর্য বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এতে থাকা ভিটামিন-বি, ও এক ধরনের তেল চুলের বৃদ্ধিতে কাজ করে।

সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণে শক্তি, অ্যামিনো এসিড, শর্করা, ভিটামিন ও মিনারেল। প্রতিদিন খালি পেটে খেজুর খেলে গ্লুকোজের ঘাটতি পূরণ হয়। আসুন জেনে নেয়া যাক খালি পেটে খেজুর খেলে কি কি উপকার পাবেন

১। খেজুর হলো প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি ফল। আমাদের শরীরের জন্য প্রোটিন অত্যাবশ্যকীয় একটি প্রয়োজনীয় উপাদান।খেজুর আমাদের পেশী গঠনে সহায়তা করে এবং শরীরের জন্য খুবই পরিহার্য প্রোটিন সরবরাহ করে।

২। খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক। খেজুর দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় সেইসঙ্গে রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৩। আয়রন মানব দেহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে আয়রন হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই যাদের দুর্বল হৃদপিণ্ড তাদের জন্য খেজুর হতে পারে সবচেয়ে নিরাপদ ঔষধ।

৪। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়ক এবং হাড়কে মজবুত করে। খেজুর শিশুদের মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে।

৫। প্রচুর মিনারেলের সঙ্গে আয়রন থাকার কারণে খেজুর রক্তস্বল্পতা রোধ করে। তাই যাদের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম তারা নিয়মিত খেজুর খেয়ে দেখতে পারেন।

৬। খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম যা বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। খেজুর শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
 
৭। খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে কখনো কখনো ডায়রিয়ার জন্য এটা অনেক উপকারী 

৮। যকৃতের সংক্রমণে খেজুর খুবই উপকারী। এছাড়া গলাব্যথা বিভিন্ন ধরনের জ্বর, সর্দি এবং ঠান্ডায় খেজুর উপকারী। খেজুর অ্যালকোহলজনিত বিষক্রিয়ায় বেশ উপকারী। ভেজানো খেজুর খেলে বিষক্রিয়ায় দ্রুত কাজ করে।

রাতে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

রাতে যদি আপনি অন্যান্য খাবার খেয়ে থাকেন তাহলে এখন থেকে খেজুর কে আপনার ঘুমানোর আগে খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন। এটি সত্যিই খুব উপকারী। যদি আপনি ঘুমানোর আগে মাত্র দুটি খেজুর খান তাহলে আপনার শরীরের ক্লান্তি, ডায়াবেটিক উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। আর যদি আপনি দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খান তবে এক সপ্তাহের মধ্যে আপনার শরীরের পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।

রাতে খেজুর খেলে যে বিশেষ উপকার গুলো পাবেন

  • রাতে খেজুর খেলে আমাদের দেহের পেশী শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • খেজুর শরীরের জয়েন্টের ব্যথা কমায় ও রক্তস্বল্পতা কমাতে সাহায্য করে।
  • রাতে খেজুর খেলে আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • নিয়মিত রাতে খেজুর খেলে প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে রক্তের হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা বাড়ায়।
  • অনিদ্রার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে 
  • হার্টের নানা সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • গর্ভবতী মহিলাদের জন্য প্রসব বেদনা নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে।
  • আমাদের শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
  • নিয়মিত রাতে পরিমাণ মতো খেজুর খেলে আপনার স্বাস্থ্য ও শরীরের নানা রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

দুধ ও খেজুর দুটিই আয়রনের ভাল উৎস। দুধের স্বাদ বাড়াতে তার মধ্যে দুটি খেজুর মিশালে আরো উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে কেবল স্বাদ বাড়াতেই নয় এই পানিয় পুষ্টিগুনেও ভরপুর। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে দুর্বলতা, দৃষ্টিশক্তি একাধিক রোগব্যাধি দূর করতে এই পানীয়টির খুবই উপকারী।
রাতে এক গ্লাস দুধে ৩-৪ টি খেজুর মিশিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেলে পুরুষের যৌন শক্তি বেড়ে যায়। এছাড়া দুধ আর খেজুর একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে আরো যেসব উপকার পাওয়া যায় তা নিচে আলোচনা করা হলো

রক্তশূন্যতা নিরাময় করে
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে দুধ ও খেজুর একসঙ্গে খেতে পারলে রক্তশূন্যতা দূর হয়।

দুর্বলতা দূর করে
গ্রীষ্মের দিনে অল্প কাজ করে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়েন সারাদিন শরীর চেঙ্গা রাখতে এই পানীয় দারুণ উপকারী। সকালে অফিস যাওয়ার তাড়াহুড়োয় অনেকে নাস্তা না করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। এক গ্লাস দুধের মধ্যে তিন চারটে খেজুর মিশিয়ে খেলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে।গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজে ভরপুর খেজুর শরীর শক্তির যোগান দেয়।

তোকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না
খেজুর ও দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের বার্ধক্য জনিত লক্ষণ গুলো দূরে ঠেলে দেয়। চুলকানি বা প্রদাহ দূর করতে এই পানীয় বেশ উপকারী। হালকা গরম দুধে চারটি খেজুর মিশিয়ে খেলে ত্বকে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বেড়ে যায়। নিয়মিত খাদ্য তালিকায় এই পানিও রাখলে ব্রণ, ফুসফুড়ির সমস্যাও দূর হয়। যাদের অতিরিক্ত চুল পড়ে যাচ্ছে তারাও এই পানিয় খেতে পারেন।

হজমের সমস্যায় দারুণ উপকারী
গরমকালে এমনিতেই কোন ভারী খাবার খেলে হজমের সমস্যা হয়। অল্প খেলে পেট ভার হয়ে যায় গ্যাসের সমস্যায়। এই সমস্যা দূর করতে দুধ আর খেজুরের মিশ্রণ বেশি উপকারী। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

গাটের ব্যথা নিরাময় করে
দুধ ক্যালসিয়ামের খুব ভালো উৎস। দুধের সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে খেলে হাড় মজবুত হয়। গাটের ব্যাথার সমস্যা থাকলেও এ পানীয় খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

চোখের সমস্যায়
দৃষ্টির শক্তি ভালো রাখতে খেজুর দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেক পুষ্টিবিদরা। চোখে অঞ্জনি হলে এই পানীয় খেলে উপকার পেতে পারেন। আর যারা একটানা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন তাদের চোখের উপর  চাপ পড়ে, দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এক্ষেত্রে খেজুর দুধ খেতে পারেন।

অতিরিক্ত খেজুর খেলে কি হয়

শরীরের জন্য খেজুর ফলটি দারুন উপকারি। এতে আয়রনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে ফলে রক্তস্বল্পতার সমস্যায় কেউ ভূকলে খেজুর খেতে পারেন উপকার পাওয়া যাবে। আর ওজন কমানো ও ডায়েটেও রাখা যেতে পারে খেজুর। রমজান মাসে ইফতারে খেজুর না হলে তো চলেই না।

আসুন জেনে নেয়া যাক অতিরিক্ত খেজুর খেলে কি কি সমস্যা হয়

প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খেজুর খেলে সমস্যা হতে পারে যতই স্বাস্থ্যকর হোক, কোন খাবার বেশি খাওয়া উচিত নয়। খেজুরের ক্ষেত্রেও এই কথাটিও প্রযোজ্য।

পেটের সমস্যা
ড্রাই ফ্রুটস হিসেবে বেশ জনপ্রিয় খেজুর। অনেকেই নিয়ম করে ড্রাই ফ্রুটস খান। তবে খেজুর বেশি খেলে পেট গরম হতে পারে। খেজুরে ফাইবারের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। ফাইবার হজম ক্ষমতা উন্নত করে। তবে ফাইবারের পরিমাণ বেশি হলে হীতে বিপরীত হতে পারে।

ত্বকের সমস্যা
খেজুর সংরক্ষণে সালফাইট নামক রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়। এই সালফাইট শরীরের ভিতরে এবং বাইরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং এর প্রভাবে ত্বকে রেশ, চুলকানি, লাল হয়ে যাওয়ার সহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।

ওজন বেড়ে যেতে পারে

রোগা হওয়ার ডায়েটে অনেকেই খেজুর রাখেন। তবে অতিরিক্ত খেজুর খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে কারণ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি। একটি খেজুরে ক্যালরির পরিমাণ প্রায় ২.৮ গ্রাম। তাহলে বুঝতেই পারছেন রোজ অন্তত চারটি করে খেজুর খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা কিছুতেই সম্ভব নয়।

শ্বাসকষ্টের সমস্যা
অতিরিক্ত খেজুর খেলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে খেজুর খেতে নিষে ধ করেন চিকিৎসকরা। খেজুর খেলে দেখা দিতে পারে এলার্জি তাই যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের খেজুর না খাওয়াটাই ভালো।

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়

খেজুর ফাইবারে সমৃদ্ধ যা আমাদের সুস্বাস্থ্য ও হজম শক্তি বৃদ্ধিতে উপযোগী। ক্যালোরিতে ভরপুর খেজুরে একাধিক পুষ্টি উপাদান উপস্থিত থাকে যা আমাদের সুস্বাস্থ্য ও হজম শক্তি বৃদ্ধিতে উপযোগী। এতে উপস্থিত এন্টিঅক্সিডেন্ট বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনা কে কমিয়ে আনে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। তবে অধিক মিষ্টি ও ফাইবারে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে অনেকেই খেজুর খাওয়ার সঠিক সময় বাছাই করে উঠতে পারে না। কিভাবে খাওয়া উচিত তা নিয়ে অনেকে চিন্তাভাবনা করেন আবার খালি পেটে খাবে না রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খাবে।
তাই খেজুর খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত ও অনুপযুক্ত সময় কোনটি জেনে নিন

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়
প্রাকৃতিকভাবে খেজুরে চিনির পরিমাণ বেশি থাকলেও এটি তৎক্ষণাৎ রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে না।তাই ওয়ার্কআউট করতে যাওয়ার ৩০ থেকে ৬০ মিনিট আগে দুই থেকে চারটি খেজুর খাওয়া যেতে পারে। খেজুরে উপস্থিত কার্বসগুলি ধীরে ধীরে নিসৃত হয় ফলে ওয়ার্কআউটের সময় শরীর থাকে এনার্জেটিক।

আবার এতে উপস্থিত ফাইবার খুদা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই খেজুর স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এটি খাওয়া যেতে পারে। অণ্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকরে ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ পরিষ্কার করতে ও লিভার কে সুস্থ রাখতে সকালে খেজুর খাওয়া উচিত। এতে উপস্থিত এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান চুল ও ত্বককে সুস্থ রাখে।

খেজুর ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে ।কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে মস্তিষ্ক হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নতি ঘটাতে ওরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। এমনকি নানা ধরনের ক্যান্সার বা ক্রমিক রোগ প্রতিরধেও ভূমিকা পালন করে। তাই নিয়মিত খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।অ্যান্ট-অক্সিডেন্টে  সমৃদ্ধ হওয়ায় খেঁজুর ডায়াবেটিস রোগীদের অথবা যাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে তাদের জন্য উপকারী।

অনউপযুক্ত সময়
বদহজমের প্রবণতা থাকলে খাবার খাওয়ার পর খেজুর খাবেন না। আবার খেজুরে উপস্থিত সরবিটল নামক সুগার, অ্যালকোহল, বাওয়েল, সিনড্রোম ও সেনসিটিভিটির সমস্যা থাকলে খেজুর না খাওয়াই উত্তম।

উপসংহার

খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফ্রুকটোজ, গ্লাইসেমিক, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, এবং ফাইবার রয়েছে। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস এবং শরীরের ক্লান্তিভাব দূর করতে সহায়ক।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url