কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার জানতে আপনারা অনেক সময় বিভিন্ন মাধ্যম ও চিকিৎসকের সরনাপন্ন হন। আজকে আমি আপনাদেরকে কিডনি রোগের লক্ষণ ও এর প্রতিকার, কিডনি রোগ প্রতিরোধে করণীয় কি, কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কে জানাবো।
বাংলাদেশে ঘণ্টায় পাঁচজনের বেশি মানুষ মারা যান কিডনি বিকল হয়ে আর দুই কোটিরও বেশি মানুষ কোন না কোনভাবে আক্রান্ত হয়ে আছেন কিডনি রোগে। আমাদের অনেকেরই জানা নেই, কিডনি রোগ প্রতিরোধযোগ্য। তবে সাধারণত ৭০ থেকে ৮০ ভাগ কিডনির কর্মক্ষমতা নষ্ট হওয়ার আগে কিডনি বিকল হওয়ার উপসর্গ বোঝা যায় না।
কিডনি রোগের প্রতিরোধ করা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া, ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রস্রাব লাল হওয়া, প্রস্রাবে দুর্গন্ধ, কোমরের দুই পাশে ও তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা, শরীর-মুখ ফোলা ইত্যাদি কিডনি রোগের লক্ষণ বা সংকেত বহন করে।
কয়েক মাস বা বছর চিকিৎসার পরও কিডনি রোগ ভালো না হলে এবং কিডনির কার্যক্ষমতা কমতে থাকলে সেটাকে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ বলে। ৮০ ভাগ লোকের কিডনি নষ্ট হয় ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও নেফ্রাইটিস - এই তিন রোগের
পেইজ সূচিপত্রঃ কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকারে করনীয়
- কিডনি রোগের লক্ষণ
- কিডনির রোগ কী কী
- কিডনি রোগের প্রতিকার
- কিডনি রোগ প্রতিরোধে করণীয়
- কিডনির সমস্যা বোঝার উপায়
- কিডনি ফেইলিওর এর লক্ষণ কী কী
- বেশি পানি খেলে কি কিডনি ভালো থাকে
- কিডনির পরিস্রাবণ হার কম হওয়ার কারণ
- কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়
- কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার
- কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ
- কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়
- কিডনির পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয়
- কিডনির জন্য ক্ষতিকর খাবার
- কিডনির সমস্যা হলে কি খাওয়া উচিত
- শেষ কথা
কিডনি রোগের লক্ষণ
কিডনি রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সবার পক্ষে এই চিকিৎসার ব্যয় পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। তবে সচেতন থাকলে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে মত দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। কিডনি রোগের লক্ষণ দেখা দিলে আপনি দ্রুত সঠিক চিকিৎসা শুরু করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ
কিডনি রোগের প্রধান সমস্যা হলো, প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো কিডনি রোগের লক্ষন প্রকাশ পায় না। কিডনির কার্যক্ষমতা কমতে থাকলে, ধীরে ধীরে কিডনি রোগের লক্ষণ গুলোও প্রকাশ পেতে থাকে। জেনে নিন কিডনি রোগের লক্ষন গুলো-
১। প্রস্রাব কম অথবা বেশি হওয়া ও প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া
২। প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হওয়া
৩। ওজন কমে যাওয়া
৪। শরীরের বিভিন্ন অংশে (হাত, পা, মুখ) পানি জমে ফুলে যাওয়া
৫। মনোযোগ কমে যাওয়া
৬। শরীরে ক্লান্তিভাব আসা
৭। সবসময় শীত শীত লাগা
৮। মাঝে মাঝেই মাথাব্যথা হওয়া
৯। শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি বা র্যাশ হওয়া
১০। বমি বমি ভাব হওয়া
আমাদের শরীরে ছাঁকনির মতো কাজ করে কিডনি। কোনো কারণে এই অঙ্গটি আক্রান্ত হলে বা কিডনিতে কোনো রকম সংক্রমণ হলে শরীরে একের পর এক জটিল সমস্যা বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাই কিডনির সমস্যা বা রোগকে ‘নিরব ঘাতক’ বলেই ব্যাখ্যা করে থাকেন চিকিৎসকরা।
কিডনি ড্যামেজ হওয়ার আগে শারীরিক কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যেতে পারে আপনার কিডনির অবস্থা কেমন। চুপি চুপি এ রোগ দেহে বাসা বেঁধে আপনাকে একদম শেষ করে দিতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা গুলোর মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের পরই অবস্থান করছে কিডনি ড্যামেজ।
দেখে নেয়া যাক কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো কিকি
ফোলাভাবঃ
কিডনি রোগের লক্ষণ হলো মুখ ও চোখের চারপাশ হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যায় ফলে অবশ্যই সতর্ক হওয়া জরুরি। চিকিৎসকরা বলছেন, কিডনিতে সমস্যা হলে চোখের নিচে অথবা পায়ের গোড়ালি বা মুখের ফোলাভাব স্থায়ী হয়। সেটা এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ হলে, তা কিডনির সমস্যার কারণে হতে পারে। কিডনি যখন শরীর থেকে পানি বের করতে পারে না, তখন তা শরীরে জমে এই ফোলাভাব হয়।
ক্লান্তিঃ
কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই সবসময় ক্লান্তি, দুর্বল অনুভব, ওজন দ্রুত কমে যাওয়া কিডনির সমস্যার কারণে হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এছাড়া কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে রক্ত পরিশুদ্ধ হয় না। রক্তে বিষাক্ত ও অপ্রয়োজনীয় উপাদান বাড়তে থাকে। ফলে আরও বেশি ক্লান্ত লাগে।
প্রস্রাবে সমস্যাঃ
ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া অথবা প্রস্রাব কমে যাওয়া দুটিই কিডনি রোগের লক্ষণ। শরীর থেকে পানি বের করা ছাড়াও পানি শুষে নেয়ার কাজও করে কিডনি। সেটি করতে না পারলে বেশি প্রস্রাব হয়ে থাকে। কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বর্জ্য নির্গত করে। কিন্তু কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে মূত্রনালিতে সমস্যা দেখা দেয়। বারবার মূত্রত্যাগ, মূত্রের সঙ্গে রক্ত বের হওয়া বা মূত্রে অতিরিক্ত ফেনা হওয়াও কিডনির সমস্যার লক্ষণ। বিশেষত রাতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বার প্রস্রাব করতে হলে খুব সতর্ক হন।
শ্বাসকষ্টঃ
আমাদের শরীরের তরল ভারসাম্যতা বজায় রাখে কিডনি। তবে কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলে ফুসফুসে তরল জমা হবে, ফলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। একে ফ্লুইড ওভারলোড বা হাইপারভোলেমিয়াও বলা হয়। অনেকে আবার এক্ষেত্রে বুকে ব্যথাও অনুভব করেন।
অনিদ্রাঃ
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনির সমস্যায় আক্রান্তদের রাতে ঘুম না আসার সমস্যা দেখা দেয়। কিডনি যখন শরীর থেকে পানি নিঃসরণ করতে পারে না, তখন কিছু পানি ফুসফুসে জমে যায়। সে কারণে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
ত্বকে র্যাশঃ
রক্তে খনিজ এবং পুষ্টিগুলি ভারসাম্যহীন হলে ত্বকের ফুসকুড়ি এবং চুলকানি দেখা দেয়। কিডনি যখন সঠিকভাবে কাজ করে না তখন শরীরে খনিজ এবং পুষ্টির মধ্যে ভারসাম্যহীনতা থাকে।
মনোযোগ কমে যাওয়াঃ
কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস রক্তে দূষক এবং টক্সিনের উত্পাদনের দিকে পরিচালিত করে। যার কারণে আপনি ক্লান্ত, দুর্বল বোধ করেন। আপনিও কাজের প্রতি মনোযোগ হারাবেন। এই সময়ে, রক্ত হ্রাস প্রদর্শিত হয়। নিরাপত্তাহীনতা বোধের অন্যতম কারণ এটি।
কিডনি রোগের কারণ ও ঝুঁকির কারণ
নানা কারণে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত বা স্থায়ীভাবে বিকল হয়। গবেষণায় জানা গেছে, প্রায় ১০-৩০ শতাংশ বা আরো বেশি নেফ্রাইটিসের কারণে, ২০-৩০ শতাংশ ডায়াবেটিসের কারণে এবং ১০-২০ শতাংশ কিডনি বিকল হয় উচ্চ রক্তচাপের কারণে। এছাড়া বংশগত কারণে, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাল সংক্রমণে, কিডনিতে পাথর হলে, অস্বাস্থ্যকর ডায়েটে এবং ঔষধের প্রভাবেও কিডনিজনিত রোগ হতে পারে।
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপকে বর্তমানে কিডনি রোগের প্রধান ঝুঁকির কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হার্ট ও মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহে ব্যাঘাত, হঠাৎ কিডনি অকেজো হওয়া, স্থুলতা এবং অন্যান্য সংক্রামক রোগের কারণেও কিডনি রোগ হয়। এছাড়া ধূমপায়ী এবং ষাটোর্ধ্ব বয়সীদের কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
কিডনির রোগ কী কী
কিডনি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে তো জানলেন এবার জেনে নিন কিডনির রোগ কী কী। সাধারণত কিডনি রোগকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়- আকস্মিক কিডনি বৈকল্য (একিউট কিডনি ইনজুরি) এবং দীর্ঘস্থায়ী কিডনির রোগ (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ)। হঠাৎ করে কিডনিকে যেটা আক্রান্ত করে, তা একিউট কিডনি ইনজুরি।
অপরদিকে, ধীরে ধীরে এবং দীর্ঘসময়ে কিডনি তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারাতে থাকলে, সেটা ক্রনিক কিডনি ডিজিজ। চিকিৎসকদের মতে, সচেতন থাকলে এবং সঠিক সময়ে শনাক্ত করা গেলে এই দুটোই নিরাময় করা সম্ভব। আবার অন্যভাবে বললে আরো দুই রকম ভাগে কিডনি রোগকে ভাগ করা যায়- মেডিক্যাল ও সার্জিক্যাল।
মেডিক্যাল কিডনি রোগের চিকিৎসা সাধারণত নেফ্রোলজিস্টরা ঔষধের মাধ্যমে করেন। তবে কিডনি বিকল রোগীদের ডায়ালিসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হতে পারে।
এদের মধ্যে আছে কিডনি ফেইলিওর, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস থেকে কিডনির অসুখ, নেফ্রোটিক সিন্ড্রোম, প্রস্রাবের সংক্রমণ রোগ ইত্যাদি।
অন্যদিকে, ইউরোলজিস্টরা অপারেশন, এন্ডোস্কোপি ও লিথোট্রিপসির প্রয়োগ করে যেই চিকিৎসা করেন, সেগুলো সার্জিক্যাল কিডনি রোগ। মূত্রনালিকাতে পাথর, প্রস্টেটের রোগ, মূত্রনালিকাতে জন্মগত অসুখ, মুত্রনালিকার/রেনাল ক্যান্সার ও কিডনি প্রতিস্থাপন এসব রোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কিডনি রোগের প্রতিকার
কিডনি রোগের প্রতিকার করার জন্য চিকিৎসকরা সাধারণত প্রথমে রোগ নির্ণয় করার জন্য রোগীর রক্তের ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন এবং ইলেকট্রোলাইটসহ অন্যান্য পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। যদি ডায়রিয়া এবং বমির জন্য রোগীর একিউট কিডনি রোগ হয়ে থাকে এবং শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়, তখন স্যালাইন ও পটাশিয়াম দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা হয়।
এরপর রক্তচাপ কম থাকলে সেটা স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা করা হয়। এগুলো করলে রোগী পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে যায় বা কিডনি রোগের প্রতিকার পায়। তবে তার জন্য অবশ্যই তাকে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
সঠিক সময়ে শনাক্ত না হওয়ার কারনে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ আরও খারাপের দিকে অগ্রসর হয়ে কিডনি ফেইলিউরের দিকে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় এবং স্টেজিং এর দিক থেকে এটি শেষ পর্যায়ের কিডনি/রেনাল ডিজিজ হিসেবে চিহ্নিত হয় এবং এক্ষেত্রে ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনের মতো ব্যয়বহুল চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।
দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগীদের হার্ট এট্যাক, স্ট্রোকসহ মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে।
ক্রনিক কিডনি ডিজিজ যদি শুরুর দিকে শনাক্ত করা যায় এবং যথাযথ চিকিৎসা নেওয়া হয়, তাহলে কিডনির কার্যক্ষমতা আরো খারাপ হওয়ার গতিকে ধীর করে দেয় বা কিছু ক্ষেত্রে রোগী প্রায় সুস্থ হয়ে যান এবং যে ঝুঁকিগুলোর কথা ইতোমধ্যে বলা হয়েছে, সেগুলোর মাত্রা কমিয়ে দেয়। এছাড়া একজন কিডনি রোগীকে অবশ্যই ফলোআপের জন্য প্রতি তিন থেকে ছয় মাস পর পর বা চিকিৎসক যেভাবে বলেন, সেই সময়মতো চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।
কিডনি রোগ প্রতিরোধে করণীয়
কিডনি রোগের অন্যতম ঝুঁকির কারণ ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ। একটু সচেতন থাকলেই দীর্ঘমেয়াদী কিডনি রোগের প্রতিকার বা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
জেনে নিন কিডনি রোগের প্রতিকার বা প্রতিরোধে করণীয়-
১। ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
২। নিয়মিত হাঁটুন বা শারীরিক পরিশ্রম করুন
৩। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলুন
৪। ধূমপানের অভ্যাস থাকলে ত্যাগ করুন
৫। খাবার পাতে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন
৬। রক্তে কোলেস্টেরল স্বাভাবিক মাত্রায় রাখুন
৭। প্রতিদিন বেশি পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করুন
৮। কিডনি রোগ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ফলমূল খাবেন না
৯। কিডনি রোগ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শে নিয়মিত ঔষধ খাবেন
১০। কিডনির সমস্যায় নিয়মিত রুটিন চেকআপ করানো আবশ্যক।
কিডনির সমস্যা বোঝার উপায়
অজান্তেই ভেতরে ভেতরে সব শেষ করে দেয় বলে কিডনির সমস্যাকে 'নীরব ঘাতক' বলা হয়। কিডনি রোগের লক্ষণ বা সমস্যা দেখা দিলে শরীরে আরো বেশ কিছু রোগের প্রকোপ বাড়ে। এগুলোর ফলে স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ার পাশাপাশি প্রাণহানিও ঘটতে পারে। যেসব উপসর্গ দেখলে কিডনির সমস্যা বোঝা যাবে, সেগুলো জেনে রাখা খুব জরুরি। ৭ টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণেই ধারনা করা যাবে আপনার শরীরে কিডনি রোগ বাসা বেঁধেছে কি না।
আরও পড়ুনঃ
জেনে নিন লক্ষণগুলো-
১। বারবার মূত্রত্যাগ, মূত্রের সঙ্গে রক্ত বের হওয়া বা মূত্রে অতিরিক্ত ফেনা হওয়া
২। পিঠের নিচের অংশে ব্যথা হওয়া
৩। ত্বকে চুলকানি ও র্যাশ হওয়া
৪। গরম আবহাওয়ার মধ্যে শীত অনুভূত হওয়া
৫। শ্বাসকষ্ট হওয়া
৬। মুখ, চোখের চারপাশ ও পায়ের গোড়ালি ফুলে যাওয়া
৭। খাবারে অরুচি ও মুখে দুর্গন্ধ হওয়া।
বিভিন্ন কারণে কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে একজন মানুষ নানাবিধ শারীরিক জটিলতার মুখে পড়েন। কিডনি রোগের লক্ষণ ও কিডনি রোগের প্রতিকারের উপায়গুলো জানা থাকলে অনেক সময় সুস্থ জীবন যাপন করা সম্ভব। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলাফেরা, জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনলে জটিলতা অনেকক্ষেত্রেই এড়ানো যায়।
কিডনি কী কাজ করে
কিডনি মানবদেহের মূল অঙ্গগুলোর একটি। সুস্থ দেহের জন্য ও বেঁচে থাকার জন্য এটি অপরিহার্য অঙ্গ। কিডনি প্রধানত রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ, অতিরিক্ত পানি এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক পদার্থ শোধন করে। রক্তের পটেনশিয়াল অব হাইড্রোজেন ব্যালান্স (পিএইচ) বজায় রাখতেও কিডনি কার্যকরী ভুমিকা পালন করে, যা সুস্থ থাকার জন্য খুব জরুরি।
এছাড়া কিডনির অন্যতম প্রধান কাজ হলো লবণ ও পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা, হরমোন তৈরি করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, লাল রক্ত কোষের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করা, এবং ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করা।
কিডনি সমস্যার প্রথম লক্ষণ কী
প্রস্রাবে পরিবর্তন হওয়া কিডনি রোগের একটি বড় লক্ষণ। এ সময় প্রস্রাব কম বা বেশি হয়। প্রস্রাবের রংও গাঢ় হয়ে যায়। রাতের বেলা ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। অনেক সময় প্রস্রাবের বেগ অনুভব হলেও প্রস্রাব হয় না।
কিডনি ফেইলিওর এর লক্ষণ কী কী
কিডনি ফেইলিওরের সাধারণ লক্ষণগুলো হচ্ছে- হঠাৎ করে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, রোগীর শরীর ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়, ক্ষুধা কমে যায়, বারবার বমি করা, খিঁচুনি হওয়া। এছাড়া কেউ কেউ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। আবার কোনো কোনো রোগীর হৃদযন্ত্রের সমস্যা হতে পারে।যাদের ডায়রিয়া, রক্তক্ষরণ ও গর্ভকালীন জটিলতা থেকে সাংঘাতিক কোনো ইনফেকশনের জন্য কিডনি ফেইলিওর হয়েছে, তাদের জ্বর থাকতে পারে।
অনেকের আবার জন্ডিস দেখা দিতে পারে। কারো কারো শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে। যাদের কিডনি ফেইলিওর কোনো সাংঘাতিক ধরনের নেফ্রাইটিসের কারণে হয়েছে, তাদের মধ্যে নেফ্রাইটিসের লক্ষণ প্রকাশ পাবে। এদের অনেকের প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে।
বেশি পানি খেলে কি কিডনি ভালো থাকে
অনেকের ধারণা, কিডনি রোগের প্রতিকার করার জন্য প্রচুর পানি পান করলেই কিডনি সুস্থ থাকে। তবে চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বলেন, খালি পেটে পানি খেলে তা দ্রুত রক্তে শোষিত হয়। ফলে রক্তের সোডিয়ামের ঘনত্ব কমে যেতে পারে।
এভাবে খালি পেটে অতিরিক্ত (যেমন এক জগ) পানি খেলে রোগীর বমি বা খিঁচুনি হতে পারে, মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। এভাবে পানি না খেয়ে সারা দিনে বিরতি দিয়ে দিয়ে অল্প অল্প করে পর্যাপ্ত পানি খাওয়া ভালো।
কিডনির পরিস্রাবণ হার কম হওয়ার কারণ
কিডনির স্বাভাবিক পরিস্রাবণ হারের একটি রেঞ্জ বা সীমা আছে, এটি নারী পুরুষ বা বয়সের সাথে কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। আপনার কিডনি রোগ আছে কিনা তা জানতে আপনার ডাক্তার GFR বা পরিস্রাবণের হার পর্যালোচনা করে থাকেন, অবশ্যই অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা সহ রোগ নিশ্চিত করা হয়।
পরিস্রাবণের হার স্বাভাবিক সীমা থেকে কমে গেলে তা কিডনির সমস্যা হিসেবে দেখা হয় এবং এটির মাত্রা অনুযায়ী (কতটা কমেছে স্বাভাবিক থেকে) বুঝা যায় কিডনি রোগ প্রাথমিক অবস্থায় আছে নাকি অগ্রসর।
আনুমানিক জিএফআর কী
জিএফআর (আনুমানিক গ্লোমেরুলার পরিস্রাবণ হার) হলো সিরাম ক্রিয়েটিনিন এর মাধ্যমে জিএফআরের গণনা করা মান। ইজিএফআরের মূল বিষয় হলো এটি সূত্র ব্যবহার করে একক রক্ত পরীক্ষার ফলাফলের মাধ্যমে পরিমাপ করা যায়।
আমার জিএফআর ৫১হলে আমার কি চিন্তা করা উচিত
এক্ষেত্রে আপনার বয়স, আপনি পুরুষ নাকি মহিলা, আপনি এই পরীক্ষা আগেও করেছিলেন কিনা, সর্বশেষ কখন করেছেন, আপনার অন্যান্য কোন পরীক্ষা করেছেন কিনা, করে থাকলে স্কল কিছুর রিপোর্ট সহ দেখে এবং আপনার শারীরিক অবস্থা, উপসর্গ বিবেচনা করে আপনার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যাবে। তবে আপনার অবশ্যই একজন নেফ্রোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করা জরুরী কেননা এটি স্বাভাবিক মাত্রা থেকে কম আছে।
কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়
কোমরের পেছন দিকে হালকা চিনচিনে ব্যথা, এমন উপসর্গ নিয়ে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে ছোটেন চিকিৎসকের কাছে। আমার কিডনি কি খারাপ হয়ে গেল? শুনেছি কিডনির সমস্যায় পেছনে ব্যথা হয়? কোমরব্যথার বেশির ভাগ রোগী মনে করেন, তাঁদের কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু সত্যি বলতে কি, কিডনিতে পাথর বা খারাপ ধরনের সংক্রমণ না হলে ব্যথা করার কথা নয়।অপর দিকে কোমরব্যথারও আছে নানা কারণ ও উৎস।
বেশির ভাগ কোমরব্যথা সাধারণত মাংসপেশি, মেরুদণ্ডের হাড়, ডিস্ক, সন্ধি ও স্নায়ুসম্পর্কিত। এটি নির্দিষ্ট অংশজুড়ে হয়। মেরুদণ্ডের নড়াচড়া, যেমন ওঠাবসা, সামনে ঝোঁকা, হাঁটা বা দাঁড়ানো, অনেকক্ষণ ধরে কাজ করা বা শুয়ে থাকার সঙ্গে এই ব্যথা বাড়ে-কমে।
আরও পড়ুনঃ
এ বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, কোনো রকম ব্যথা-বেদনা ছাড়াও কিডনি খারাপ হতে পারে। কারণ, কিডনি সমস্যার উপসর্গ সাধারণত দেরিতে দেখা দেয়। তাই যাদের পরিবারে কিডনির অসুখ আছে, তাদের বেশি সচেতন থাকা উচিত।
আর সাধারণ কোমরব্যথায় সাধারণত জ্বর হয় না (তবে টিউমার, টিবি ইত্যাদি ছাড়া)। দুর্বলতা, রক্তশূন্যতা, অরুচি, বমির ভাব ইত্যাদি আনুষঙ্গিক সমস্যা সাধারণত থাকে না। বিশ্রাম ও ব্যথানাশক ওষুধ সেবনে ভালো হয়; বন্ধ করলে ব্যথা আবার ফিরে আসে।
কিডনি রোগের উপসর্গ বা ব্যথা
কিডনিজনিত ব্যথা সাধারণত মেরুদণ্ড থেকে একটু দূরে ডান বা বাম পাশে হয়। এটি পেছনের পাঁজরের নিচের অংশে অনুভূত হওয়ার কথা। এই ব্যথা নড়াচড়া করে এবং কোমরের দুই পাশেও যেতে পারে। এই ব্যথা থেকে থেকে আসে, শোয়া-বসা বা কোনো কিছুতেই আরাম মেলে না।
- কিডনি সমস্যায় ব্যথা মূল উপসর্গ নয়, এতে শরীরে পানি আসা, দুর্বলতা, অরুচি, বমির ভাব দেখা দেয়।
- সংক্রমণ হলে জ্বর হতে পারে এই ব্যথার সঙ্গে।
- প্রস্রাব ঘোলাটে হয়, দুর্গন্ধ বা রক্ত থাকতে পারে।
- প্রস্রাবের পরিমাণ কম-বেশি হয়। রক্তশূন্যতা থাকতে পারে।
কিডনি রোগের ঝুঁকি
দীর্ঘদিনের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, সংক্রমণ, ব্যথানাশক বড়ি খাওয়া এবং পরিবারের কারও কিডনি অসুখ হওয়ার ইতিহাস, হার্টের সমস্যা, স্ট্রোক করলে, অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান। এসব ঝুঁকির মধ্যে যাঁরা আছেন, তাঁদের উচিত নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানো বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শে থাকা।
কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার
আপনি যা খাবেন তাই আপনার স্বাস্থ্যে প্রতিফলিত হবে। এবং আর যে কোনো অঙ্গের মতোই কিডনির সুরক্ষায়ও বিশেষ কিছু খাবার দরকার হয়। স্বাস্থ্যবান হৃদপিণ্ডের মতোই একটি স্বাস্থ্যবান কিডনি থাকাটাও জরুরি। কিডনিদের প্রধান কাজ হলো দেহ থেকে বর্জ্য বের করে দেওয়া। এবং ক্ষতিকর টক্সিন বা বিষ অপসারণের মাধ্যমে দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেওয়া।
এছাড়াও কিডনি ইলেকট্রোলাইটস এবং অন্যান্য তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে। এমনই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গকে সুস্থ রাখার জন্য সঠিক কিডনির জন্য উপকারী খাদ্যাভ্যাসও জরুরি। এখানে রইল এমন নয় খাদ্যের তালিকা যেগুলো কিডনির সুরক্ষায় নিয়মিত খেতে হবে।
সবুজ শাকসবজিঃ
নিয়মিত সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। বেশিরভাগ শাকসবজিতে ভিটামিন সি, কে, ফাইবার ও ফলিক এসিড থাকে। এগুলো রক্তচাপ কমায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং কিডনি জটিলতা কমায়।
ক্যানবেরি জুসঃ
চেরির মতো ক্যানবেরিতেও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি ও ম্যাগনেসিয়াম। এই দুটি উপাদান কিডনির ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত ক্যানবেরি জুস খেলে মূত্রথলির সংক্রমণ কমে যায়। সেই সঙ্গে এটি কিডনিও পরিষ্কার করে। এছাড়া কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকিও কমে যায়।
হলুদঃ
এলার্জি থেকে ত্বককে রক্ষা করা ত্বককে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি কিডনির রক্ষাও করে হলুদ। নিয়মিত হলুদ খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। সেই সঙ্গে কিডনিও পরিষ্কার হয়। এতে থাকা কারকুমিনে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান কিডনি রোগ ও পাথর জমা হওয়া রোধ করে।
আপেলঃ
প্রচলিত আছে 'প্রতিদিন একটা আপেল খান আর ডাক্তারকে দূরে রাখুন'। কথাটা কিডনির ক্ষেত্রেও সত্য। আপেল উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, এতে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটোরি আছে যা বাজে কোলেস্টেরল দূর করে হৃদ রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এছাড়া এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। আপেল কাঁচা বা রান্না করে অথবা প্রতিদিন এক গ্লাস আপেলের জুস খাওয়ার চেষ্টা করুন।
রসুনঃ
রসুন ইনফ্লেমেটোরি এবং কোলেস্টেরল কমাতে অনেক বেশি কার্যকরী। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে যা দেহের প্রদাহ দূর করে থাকে। তবে রান্না করে খেলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় না। ভাল হয় সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খাওয়া, এটি হার্ট ভাল রাখার পাশাপাশি কিডনিকেও ভাল রাখে।
ড্যান্ডেলিয়নঃ
এটি হলো একধরনের বন্য হলুদ ফুলের গাছ। এর মূল এবং পাতা শুকিয়ে চা বানিয়ে খেতে হয়। প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ায় এবং দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। এ ছাড়া পেটে স্ফীতি কমায়। এটি প্রাকৃতিকভাবে কিডনিকে পরিষ্কার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অলিভ অয়েলঃ
একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতিদিনের রান্নায় অন্যান্য তেলের চেয়ে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা বেশি স্বাস্থ্যকর। এতে অলিক এসিড, অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ফ্যাটি এসিড আছে যা কিডনি সুস্থ রাখার পাশাপাশি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।
লেবুর শরবতঃ
প্রতিদিন লেবু মেশানো জল খেলেও কিডনি পরিষ্কার হয়। লেবুতে যে এসিড উপাদান আছে তা কিডনিতে জমা হওয়া পাথর ভাঙ্গতে বেশ কার্যকর। লেবুতে যে সাইট্রাস উপাদান আছে তা কিডনিতে থাকা ক্রিস্টালদের পরস্পরের জোড়া লাগতে বাধা দেয়।
আদাঃ
কিডনিকে আরও কার্যকরী করতে আদা খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ কিডনিকে ভাল রাখতে আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদা কিডনিতে রক্তের চলাচল বাড়িয়ে কিডনিকে সচল ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে কিডনির কর্মক্ষমতা আরও বেড়ে যায়। যদি নিয়মিত কাঁচা আদা, আদার গুড়া কিংবা জুস করে খাওয়া যায় তাহলে তা কিডনি পরিষ্কারে ভূমিকা রাখে।
কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ
কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ । হার্ট দিয়ে পাম্প করারক্তের ২০% কিডনি পরিষ্কার করে। এছাড়া কিডনি বিষাক্ত এবং বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বাইরে বের করে দেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, আমরা কিডনির সংক্রমণ সম্পর্কে কিছুই জানি না। বহুবার এটি ঘটে কিন্তু যখন আমরা তা জানতে পারি, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়।
তার জন্য আমরা আপনাদেরকে কিডনি রোগের লক্ষন সম্পর্কে বলবো যাতে সমস্যার দ্রুত সমাধান করা যায়।
প্রস্রাবের দ্বারা রক্ত বা প্রোটিন বেরনোঃ
যখন প্রস্রাবের সাথে রক্ত বেরোয় তখন আমরা সহজেই বুঝে যাই। কিন্তু যখন প্রোটিন নির্গত হয় তখন বুঝতে সমস্যা হয়। এ জন্য নিরন্তর পরিদর্শন চালিয়ে যেতে হবে । উভয় ক্ষেত্রেই আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের কাছে যান এবং সম্পূর্ণ বিষয়টি খুলে বলুন।
কম খিদে পাওয়া বা ওজন কমে যাওয়াঃ
আমাদের শরীরকে সুস্থভাবে চালানোর জন্য পুষ্টি এবং শক্তি দরকার। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই পুষ্টি এবং শক্তি আমরা খাদ্য থেকে পাই।আপনার যদি খিদে না পায় তাহলে সেটা কিডনি সংক্রমণের জন্য হতে পারে। এক্ষেত্রে ডাক্তারকে দেখানো খুব জরুরী।
উচ্চ রক্তচাপঃ
উচ্চ রক্তচাপ নিজের মধ্যেই একটি সমস্যা। কিন্তু অনেক সময় এটি কিডনির সংক্রমণের জন্য হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, শরীরের ক্ষমতা হ্রাস হবার ফলে অন্যান্য স্নায়ুতন্ত্রের কাজ চালানোর জন্য, হৃদয় দ্রুত রক্ত পাম্প করতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে, যখন হৃদয় এত বেশি কাজ করে তখন উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা যায়।
চর্মরোগ
আমরা আগেই বলেছি যে, কিডনি রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন করে। কিন্তু যখন কিডনিতে সংক্রমণ দেখা যায়, তখন বর্জ্য পদার্থ গুলি বাইরে বেরোতে পারে না। এর ফলে ত্বকে নানান রকম সমস্যা দেখা যায় বা চুলকানি হয়।
ক্লান্তি এবং নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা
যখন শরীর থেকে সব বর্জ্য পদার্থ বেরিয়ে যায় তখন কিডনি একপ্রকার হরমোন তৈরি করে যার নাম এরিথ্রোপোয়েটিন। এই হরমোনের কাজ হল লাল রক্ত কণিকায় অক্সিজেন তৈরি করা। যখন কিডনিতে কোন সমস্যা হয়, তখন এরিথ্রোপোয়েটিন তৈরিতেও এর প্রভাব পড়ে। লাল রক্ত কণিকায় অক্সিজেন না পৌঁছালে তখন নিঃশ্বাস গ্রহণে সমস্যা হয়। এর সাথে আমাদের মস্তিস্ক, মাংশপেশি এবং সারা শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। একে অ্যানিমিয়া বলা হয়।
বমি বমি ভাব এবং মাথা ঘোরা
যখন কিডনি কাজ করা বন্ধ করে দেয় তখন শরীরে বর্জ্য পদার্থের সংখ্যা বেড়ে যায়। এর ফলে বমি হওয়া এবং মাথা ঘোরা শুরু হয়।এছাড়াও অ্যানিমিয়ার জন্য মাথা ঘোরার সমস্যা কিংবা অবচেতনার সমস্যা দেখা যায়।
মাংশপেশিতে খিঁচুনি
কিডনির সমস্যার ফলে অনেক সময় মাংশপেশিতে খিঁচুনি এবং ব্যথা উৎপন্ন হয়। এই ব্যথা শরীরের বিভিন্ন অংশেও ছড়িয়ে পড়ে।
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
কিডনি সংক্রমণের একাধিক লক্ষণের মধ্যে ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়া অন্যতম লক্ষণ। এর কারণে আপনার প্রস্রাবের স্রোতে বা প্রস্রাবে নানা পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে রাতের সময়, কারণ সেই সময় প্রস্রাব বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হয়। এই ক্ষেত্রে আপনার কম বা বেশি প্রস্রাব হবে এবং হলুদ রঙের প্রস্রাব হবে। এটাও হতে পারে যে, প্রস্রাব করতে সমস্যা হচ্ছে এবং এই সমস্যাগুলি অনেক সময় ধরে রয়েছে।
হাতে এবং পায়ে জ্বলন
এটি কিডনি সংক্রমণকে শনাক্ত করার আরও একটি লক্ষণ। যখন কিডনি সংক্রমিত হয় তখন, শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ গুলি শরীর থেকে বাইরে বেরতে পারে না। যার জন্য শরীরে নানান সমস্যা দেখা দেয়।শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত তরল হাত, পা, মুখ এবং গোড়ালিতে জ্বলন সৃষ্টি করে।
পরীক্ষা
শেষ এবং সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিকার হল, আপনি এই লক্ষণগুলির উপর ভিত্তি করে পরীক্ষা করতে পারেন। কিডনি সংক্রমণে কিডনির কার্যক্ষমতার সম্পর্কে জানার জন্য ক্রিয়েটিনাইনের মাত্রা জানা হয়। এর জন্য সাধারণ পরীক্ষা করা হয়। যদিও কিডনি সংক্রমণ সম্পর্কে জানার জন্য প্রস্রাব এবং স্ক্রীনিং দ্বারা পরীক্ষা করা হয়।
কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়
উপরে কিডনি রোগের লক্ষণ ও কিডনি রোগের প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এবার জেনে নিন আপনার কিডনি ভালো আছে কিনা তা বোঝার উপায়, কিডনিতে সমস্যা হলে আপনি সহজে ধরতে পারবেন না। কারণ কোনো লক্ষণ আপনার সামনে আসবে না। তাই মাঝে মাঝে পরীক্ষা করে নেয়া ভালো।
এসিআর ও জিএফআর -এর মতো দুটো সিম্পল টেস্ট করালেই ধরা পড়বে আপনার কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে কি না।
বয়স যাদের ৫০ পার হয়েছে তাদের উচিত বছরে দু-বার পরীক্ষা করানো।
এসিআর ও জিএফআর -এর মতো দুটো সিম্পল টেস্ট করালেই ধরা পড়বে আপনার কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে কি না।
১। এসিআরঃ এটি অ্যালবুমিন ও ক্রিয়েটিনিনের অনুপাত। অ্যালবুমিন হলো বিশেষ ধরনের প্রোটিন। মূত্রে অ্যালবুমিন আছে কি না, পরীক্ষা করে সেটাই দেখা হয়। আমাদের শরীরের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত জরুরি। যে কারণে রক্তে প্রোটিন থাকা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু, এই প্রোটিন কখনোই মূত্রে থাকার কথা নয়। যদি মূত্র পরীক্ষায় প্রোটিন পাওয়া যায়, তার মানে হল, কিডনি ঠিকঠাক ভাবে রক্তকে ছাঁকতে পারছে না। তাই ইউরিন টেস্টে প্রোটিন পজিটিভ হলে, নিশ্চিত হতে এনএফআর করাতে হবে। যদি, তিন মাস বা তার বেশি সময় ধরে রেজাল্ট পজিটিভ হয়, তা কিডনির অসুখের আভাস।
২। জিএফআরঃ কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলে তা রক্ত থেকে ক্রিয়েটিনিন অর্থাত্ বর্জ্য পদার্থ ঠিকমতো বের করে দিতে পারে না। তবে, এই ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা হল প্রথম ধাপ। এর পর জিএফআর দেখতে হবে। সেই রেজাল্ট দেখেই ডাক্তার বুঝতে পারবেন কিডনি কেমন কাজ করছে।
রক্তের এমন টেস্ট করার পর ডাক্তার যদি দেখে যে রক্তে ক্রিয়েটিনিন লেভেল স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি, তখন চিকিৎসকরা কিডনির অবস্থা আরও ভালোভাবে বুঝতে রোগীর অন্য উপসর্গ অনুযায়ী চার ধরনের ক্রিয়েটিনিনের একটি বা একাধিক টেস্ট করতে দেন।
কিডনির পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয়
মানবদেহের কিডনি যার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিডনিতে রোগের সমস্যা দেখা দিলে ডায়ালাইসিস এর প্রয়োজন পড়ে। কিডনির পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয় তা হল, স্বাভাবিকভাবে নারীদের ক্ষেত্রে রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা থাকে 0.5 mg/dl থেকে 1.1 mg/dl এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে থাকে 0.6mg/dl থেকে 1.2 mg/dl।
কিডনির পয়েন্ট যদি এই মাত্রাগুলো থেকে বেড়ে যায় তবেই ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন পড়ে শরীরে।কিডনি থেকে সমস্যাকে দূরে রাখতে হলে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। রক্তে চর্বির মাত্রা বেশি থাকলে কিডনিতে ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়ান। কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে, সুস্থ জীবনযাপনের আশা করা যায়। কিডনির পয়েন্ট দেখতে কয়েকদিন পর পরই ডায়াবেটিস চেক করুন।
কিডনির জন্য ক্ষতিকর খাবার
আপনার হৃদয়ের যত্ন নিন’–এই কথাটি আমরা বলতে শুনলেও ‘আপনার কিডনির যত্ন নিন’–এটি শোনা যায় না। মানব শরীরের এই দুই আশ্চর্যজনক অঙ্গের গুরুত্ব প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়। এগুলো শরীরের পাওয়ার হাউস, যা আপনার রক্তে বিষাক্ত পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল ফিল্টার করে আপনার পুরো শরীরকে সুস্থ রাখে।তারা হরমোন তৈরি করে যা আপনার হাড়কে শক্তিশালী রাখে এবং আপনার রক্ত সুস্থ রাখে। যদি কিডনি তার কাজে ব্যর্থ হয় সে ক্ষেত্রে আপনার শরীরের ক্ষতিকারক বর্জ্যগুলো শরীরের সিস্টেমকে ব্যাহত করে; আর এটি অন্য অঙ্গগুলোকে মৃত্যুর দিকে পরিচালিত করবে।
আরও পড়ুনঃ
বেশি পরিমাণ সোডিয়াম কিডনির জন্য ক্ষতিকর। লবণে প্রচুর সোডিয়াম থাকে। কিডনির ক্ষতি প্রায়ই অপরিবর্তনীয় হয়, তাই যারা তাদের কিডনির যত্ন নেন না তারা উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে। এর ফলে ডায়ালাইসিস এমনকি কিডনি প্রতিস্থাপনও করা লাগতে পারে, বলেছেন পাইডমন্টের নিবন্ধিত ডায়েটিশিয়ান স্যালি ব্রোজেক।
তাই আমাদের জীবনযাত্রার চরম পরিবর্তনগুলো এড়াতে আমাদের নিজেদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকারক খাদ্য কিংবা পানীয় প্রত্যাহিক রুটিন থেকে বাদ দেয়া উচিত। চলুন জেনে নিই কিডনির যত্নে কোন কোন খাবার বাদ দেবেন।
লবণঃ
বেশি পরিমাণ সোডিয়াম কিডনির জন্য ক্ষতিকর। লবণে প্রচুর সোডিয়াম থাকে। এ কারণে বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। দীর্ঘদিন ধরে লবণ খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হয়, এতে কিডনি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সাধারণত ডায়েটে প্রতিদিন প্রায় ৩৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে বলে অনুমান করা হয়েছে, যা স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক সর্বাধিক ২৩০০ মিলিগ্রাম (প্রায় এক চা চামচ লবণ) থেকে অনেক বেশি।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, ৭৫ শতাংশ সোডিয়াম আমেরিকানরা গ্রহণ করেন প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং রেস্টুরেন্টের খাবারে। অন্যান্য সাধারণ উচ্চ সোডিয়াম আসে টিনজাত স্যুপ, প্রক্রিয়াজাত মাংস, হিমায়িত পিৎজা, স্ন্যাক খাবার (যেমন: চিপস, ক্র্যাকার, প্রিটজেল), কেচাপ, বারবিকিউ সস, সয়া সসের মতো মসলা, সালাদ ড্রেসিং, আচার, জলপাই, বীট, টিনজাত শাকসবজি ইত্যাদি খাবার থেকে।
চিনিঃ
চিনি বেশি খেলে শুধু সুগার বাড়ে না সেই সঙ্গে কিডনির সমস্যাও আসে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে প্রস্রাবের মাধ্যমে চিনি বেরিয়ে যায়। রক্তে শর্করার পরিমাণ যত বেশি হয় কিডনি দিয়ে ততই বেশি চিনি পরিস্রুত হয়। এর কারণেই ডায়াবেটিসের রোগীদের কিডনির সমস্যা হয়।
আমাদের বেশিরভাগ খাবারেই চিনি পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক কিংবা প্রক্রিয়াজাত সব কিছুতেই চিনি রয়েছে। তাই চিনি গ্রহণে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। ফল প্রাকৃতিক চিনির উৎস, যা আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে। এটি যোগ করা শর্করাযুক্ত খাবার, যা পুষ্টির মান স্কেলে কম থাকে। আপনি জানলে অবাক হবেন যে মসলা, রুটি এবং অন্যান্য স্ন্যাক খাবারেও অতিরিক্ত চিনি থাকে।
সোডাঃ
আমেরিকান কিডনি ফান্ডের মতে, একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় পরামর্শ দেয়া হয়েছে যে প্রতিদিন দুই বা ততোধিক কার্বনেটেড সোডা, ডায়েট বা নিয়মিত পান করলে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। কার্বনেটেড এবং এনার্জি ড্রিংকস উভয়ই কিডনিতে পাথর তৈরির সঙ্গে যুক্ত।
মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্যঃ
মাংস এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য থেকে প্রাণিজ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো কিডনির ক্ষতি করতে পারে। কারণ, সেগুলো বিপাক করা খুব কঠিন হতে পারে। এটি কিডনির ওপর একটি ভারী বোঝা রাখে, যা তাদের পক্ষে বর্জ্য পণ্যগুলো দূর করা কঠিন করে তোলে। একটি উচ্চ প্রোটিন খাদ্য বিদ্যমান কিডনি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
এ ছাড়াও গবেষণাগুলো দেখায় যে একটি প্রাণীভিত্তিক খাদ্য থেকে উদ্ভিদের ওপর ভিত্তি করে একটির দিকে সরে যাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা রয়েছে। রঙিন উদ্ভিদের খাবার হলো পুষ্টির শক্তি এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
ক্যাফেইনঃ
কফি, চা, সোডা এবং খাবারে পাওয়া ক্যাফেইন আপনার কিডনিতেও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ক্যাফেইন একটি উদ্দীপক, যা রক্তপ্রবাহ, রক্তচাপ এবং কিডনিতে চাপ বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ কিডনিতে পাথরের সঙ্গেও যুক্ত।
কিডনির সমস্যা হলে কি খাওয়া উচিত
কিডনির সমস্যা হলে খাবারের জন্য যে নিয়মগুলা মেনে চলা উচিত তা নীচে আলোচনা করা হলো-
যে সব সবজি খাওয়া যাবেঃ ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, পটল, চালকুমড়া, ডাটা, লাউ, শশা
যে সব শাক খাওয়া যাবেঃ ডাটা শাক ,লাউ শাক, কলমি শাক, লাল শাক ৷
যে সব ফল খাওয়া যাবে নাঃ কলা ,কামরাঙ্গা, আনার, লেবু, আমরা, বড়োই, পাকা আম, কাঁঠাল
যে সব ফল খাওয়া যাবেঃ প্রতিদিন যে কোনো এক প্রকারের ফল খাবেন ৫০ – ১০০ গ্রাম। যেমন, পেয়ারা ১/২, আপেল ১/২, নাসপাতি ১/২, পাকা পেপে ২-৪ টুকরা, কমলা ১/২, আনারস ২-৪ টুকরা, বেল।
যে সব সবজি খাওয়া যাবেঃ ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, পটল, চালকুমড়া, ডাটা, লাউ, শশা
যে সব শাক খাওয়া যাবেঃ ডাটা শাক ,লাউ শাক, কলমি শাক, লাল শাক ৷
যে সব সবজি সিদ্ধ করে পানি ফেলে রান্না করতে হবেঃ মিষ্টি কুমড়া , আলু , কাঁচা পেপে, কাঁচা কলা, করলা, গাজার, টমেটো, মুলা
যে সব সবজি বাদ দিতে হবেঃ সজনে ,ঢেঁড়শ, বরবটি, কচু, মিষ্টি আলু ,পালং শাক, পুঁই শাক, ধনে পাতা
যে সব ফল খাওয়া যাবে নাঃ কলা ,কামরাঙ্গা, আনার, লেবু, আমরা, বড়োই, পাকা আম, কাঁঠাল
যেসব খাবার বাদ দিতে হবেঃ বিভিন্ন প্রকার ডাল, শুকনা ফল ,বাদাম, কাজু বাদাম, খেজুর ও বিচি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে |ডাবের পানি ও নারিকেলের তৈরি খাবার বাদ দিতে হবে।
গরু,খাসি, ভেড়া, মহিষ এদের মগজ, কলিজা, মাংস, সামুদ্রিক মাছ, সামুদ্রিক মাছের ডিম্, চিংড়ি বাদ দিতে হবে
লবণের তৈরি যেসব খাবার বাদ দিতে হবেঃ চিপস, আচার, চানাচুর, শুটকি, পনির )সকল প্রকার ফর্মুলা এর খাদ্য (হরলিক্স,কমপ্লান ),কোমল পানীয় (কোক,সেভনআপ)
শেষ কথা
মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনি। আরএই অঙ্গটির কিছু হলে পুরো শরীরে বিরূপ প্রভাব পড়ে। কিডনির সমস্যা বা রোগের নির্দিষ্ট কোনো উপসর্গ হয় না। তবে কয়েকটি উপসর্গ অত্যন্ত সাধারণ বলে মনে হলেও, এগুলো লক্ষ্য করলে ( যেগুলো সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে) আগে থেকেই সতর্ক হওয়া উচিত।
আশা করছি এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে কিডনি রোগের লক্ষণ ও কিডনি রোগের প্রতিকার সহ আরো আনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ডিসক্লেইমারঃ এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url