মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই বিষয়ে আপনারা অনেকেই গুগল ও ইউটিউবে সার্চ করে থাকেন। বাজারে এখন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অনেক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন স্মার্ট মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। যার সাহায্যে আপনি ইচ্ছে করলে ঘরে বসেই বাড়াতে পারেন আপনার মাসিক ইনকাম।
মোবাইল-দিয়ে-ফ্রিল্যান্সিং-কিভাবে-শিখবেন
এই আর্টিকেলে আমি আপনাকে জানবো আপনার হাতে থাকা মোবাইল ডিভাইসের সাহায্যে ফ্রিল্যান্সিং করার কয়েকটি কার্যকর উপায়। এখানে আমি মোবাইল দিয়ে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলব, মোবাইল দিয়ে কি কি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করা যায়, কি কি দক্ষতা লাগে ফ্রিল্যান্সিং করতে ও আরো বেশ কিছু টপিক নিয়ে আলোচনা করবো। আসুন তাহলে জেনে নিন মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো।

পেইজ সূচিপত্রঃ মোবাইল দিয়ে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং  শিখবেন জেনে নিন

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো তা জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই পুরো কন্টেন্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। আপনার ফ্রিল্যান্সিং যাত্রা শুরু করুন সঠিক স্মার্টফোন নির্বাচনের মাধ্যমে। যদি সঠিক স্মার্টফোন নির্বাচন করতে পারেন তাহলে আপনার কাজগুলি কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে। আর তা নিশ্চিত করতে বেছে নিন একটি বড় স্ক্রীন, যথেষ্ট স্টোরেজ এবং একটি শক্তিশালী প্রসেসর ওয়ালা ডিভাইস।
শুধু মাত্র একটি মোবাইল ডিভাইসের সাহায্যে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব নয় যদি না আপনি অবিশ্বাস্যভাবে দক্ষ বা যোগ্য না হন। তাই সঠিক স্মার্টফোন, সেরা অ্যাপস এবং কার্যকরী কৌশলগুলির সাহায্যে আপনি আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার সফলভাবে পরিচালনা করতে পারবেন। এতেকরে আপনি আপনার কর্মজীবনে নতুন অধ্য়ায়ে পৌঁছাতে পারবেন। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো, অনলাইন থেকে আমরা খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারি যেমনঃ

১। ইউটিউব দেখে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারিঃ ইউটিউব থেকে খুব সহজে ফ্রিল্যান্সিং শিখা যায়। ইউটিউবে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে অনেক ভিডিও টিউটোরিয়াল পাওয়া যায় যা দেখে আপনি খুব সহজেই শিখতে পারবেন। ইউটিউবে গিয়ে যে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে চান সে বিষয়ে ভালো টিউটোরিয়াল সার্চ করে খুঁজে নিন। সেখান থেকে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন।

২। ব্লগ সাইট থেকে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারিঃ ব্লগ সাইট থেকেও আপনি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন। প্রথমে মোবাইল থেকে যেকোনো একটি ব্রাউজার খুলে গুগুলে যান। সেখানে আপনার দক্ষতার বিষয় লিখে সার্চ করুন এবং সেখান থেকে বিভিন্ন ব্লগ পড়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন।

৩। কোর্সের মাধ্যমে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারিঃ কোর্সের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং শিখার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি ভালোমানের প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে। যে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে চান এবং আগ্রহ আছে সে বিষয় নিয়ে কোর্স করতে পারেন।

৪। মেন্টর নির্বাচন করাঃ যেকোনো কাজ শিখার জন্য একজন দক্ষ মেন্টরের ভীষণ প্রয়োজন। তিনি আপনাকে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন এবং বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন। এই মুক্ত-পেশায় থাকতে হলেও একজন মেন্টরের প্রয়োজন।

এমন কাউকে মেন্টর হিসেবে নির্বাচন করা উচিত যিনি আপনার কাছের মানুষ। প্রাসঙ্গিক কোনো সমস্যায় পড়লে যার কাছে দৌড়ে সাহায্য নেওয়া যাবে তাকেই মেন্টর করুন। ইন্টারনেটে এমন অনেক সেলিব্রেটি আছে যারা প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছে, তাদেরকে মেন্টর করবেন না।

কেননা তারা আপনাকে চেনে না এবং আপনি যদি কোনো সহযোগিতার জন্য যদি তাদেরকে মেসেজ বা কল দেন তারা আপনাকে সাড়া দেবে না। তাই শুধু সফলতা বা ইনকাম দেখে মেন্টর পছন্দ না করে, যে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে তাকে মেন্টর বানান।

৫। ফাইভার লার্ন থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখুনঃ ফাইভার লার্ন অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মটি ফ্রীলান্সারদের জন্যে সেরা একটা লার্নিং সিস্টেম। বিশেষত, এখানে মার্কেটিং, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইনিং, বিসনেস, প্রোগ্রাম এবং ভিডিও ও ফটোগ্রাফির উপর দুর্দান্ত সমস্ত কোর্স রয়েছে। এছাড়াও, এর ওয়েবসাইটের ‘freelancing‘ সেকশনে নানা ফ্রি ও পেইড ভিডিও টিউটোরিয়ালও আছে।

৬। কোর্সেরা থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখুনঃ শুধুমাত্র ফ্রীলান্সিং শেখাই নয়, নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্ট, স্পেশ্যালাইজেশান কোর্স ও ডিগ্রীর কোর্সের জন্যে Coursera খুবই উপকারী একটা প্ল্যাটফর্ম। এখানে রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, কোডিং ও ওয়েব ডিজাইনিং-এর বিষয়ে ভালো ভালো সমস্ত ফ্রিল্যান্সিং কোর্সও আছে। এখানে ৪ সপ্তাহ থেকে শুরু করে ৪ মাসের নানান কোর্স ও ক্লাস করার সুযোগ আছে। এমনকি, এখানে পৃথিবীর সেরা সব ইউনিভার্সিটি থেকে অনলাইন ডিগ্রী কোর্সও করা সম্ভব।

৭। এডেক্স থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখুনঃ আপনার যদি কপিউরিটিং, ডেটা সাইন্স, কোডিং, অ্যাকাডেমিক রাইটিং, ভিডিও এডিটিং-এর মতো পেশার প্রতি আগ্রহ থাকে, তাহলে edX-এর ফ্রীলান্সিং কোর্সগুলোও দেখতে পারেন। এখানে সারা বিশ্বের সেরা ইউনিভার্সিটির কোর্সগুলো রয়েছে। এই ওয়েবসাইট থেকে আপনি ফ্রিল্যান্সিং প্রোফাইলের জন্যে সেরা প্রফেশনাল CV বানাতেও পারবেন। এখানেও ফ্রি ও পেইড দুই ধরণেরই কোর্স থাকে।

৮। ইউডেমি থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখুনঃ ইউডেমি হচ্ছে, অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম। এখান থেকে আপনারা প্রফেশনাল এবং ফ্রিল্যান্সিং কোর্সগুলোর সর্বমোট 65 টি ভাষায় শিখতে পারবেন। এই অনলাইন প্লাটফর্মে আপনারা ফ্রিল্যান্সিংয়ের উপর অনেক ধরনের ফ্রি কোর্স এবং পেইড কোর্স করতে পারবেন।

এই ওয়েবসাইটে প্রফেশনাল এক্সপার্ট ফ্রিল্যান্সারদের সাহায্যে আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ে ভালো প্রোফাইল তৈরি করতে পারবেন। ইউডেমি এর এই লিংক থেকে ফ্রিল্যান্সিং কাজের বেসিকটা জেনে নিতে আপনাকে নিয়মিত ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে। আশা করি আপনাদের হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে, এখান থেকে ফ্রিল্যান্সিং কোর্সগুলো সম্পন্ন করে নিতে পারবেন।

৯। ফিউচার লার্ন থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখুনঃ বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ভালো ইংলিশ কম্যুনিকেশন যেকোনো পেশাতেই খুব প্রয়োজনীয়। তাই, FutureLearn প্ল্যাটফর্মটি আপনাকে দারুণ সব রাইটিং ও স্পোকেন ইংলিশের কোর্স অফার করে। এছাড়াও, এখানে ফ্রীলান্সারদের শেখার জন্যে ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্লগিং, গ্রাফিক ডিজাইনিং-এর মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।

১০। স্কিল শেয়ার থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখুনঃ Skillshare-এর অনলাইন ফ্রিল্যান্স ও অন্ট্রাপ্রোনিউর ক্লাসগুলো আপনাকে ফ্রীলান্সিং কেরিয়ার শুরু করতে সাহায্য করবে। এখানে আপনি কোডিং, ই-কমার্স, UI/UX ডিজাইনিং, অ্যানিমেশন ও আরও নানান ফিল্ডের উপর অনলাইন কোর্স করতে পারবেন। তাছাড়াও, এই প্ল্যাটফর্মে মিউসিক, ফাইন আর্ট, ইলাস্ট্রেশন, ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়ের মতো বিষয়গুলোর উপরও ক্লাস পেয়ে যাবেন।
তাহলে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো জেনে নিলেন। আপনি যদি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে ভুল করেন, তবে আপনার টাকা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। শিখার আগে মনে রাখবেন ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে অনেক ধৈর্য রাখতে হবে। অনেক মনোযোগ দিয়ে আগ্রহের সাথে কাজ শিখতে হবে। তাহলেই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে এবং ইনকাম করতে সক্ষম হবেন। জেনেই তো নিলেন মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো সে সম্পর্কে।

মোবাইল দিয়ে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলব

মোবাইল দিয়ে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলব এইটা নিয়ে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট কিভাবে খুলবেন এর সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয়া হয়েছে এ পোস্টে। আজকের এই পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়ার পর আপনি নিজে নিজেই ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলতে পারবেন। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে আপনাকে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। তাহলে দেরি না করে দেখে নিন মোবাইল দিয়ে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলবেন।

ধাপ- ১ঃ ফ্রিল্যান্সিং অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে আপনাকে সর্ব প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করা যেখানে আপনি কাজ খুঁজতে চান। বর্তমানে অনেকগুলো ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। তার মধ্যে আপনার কাছে সবচেয়ে উপযুক্ত যে প্লাটফর্মটি মনে হবে আপনি সেই প্ল্যাটফর্মে একাউন্ট খুলতে পারেন।

প্রতিটি প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য আপনাকে একাউন্ট খুলতে হবে। এবং অ্যাকাউন্ট খোলার পরে আপনার কি কি অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা রয়েছে তা উল্লেখ করতে হবে। কিছু জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হল Freelancer.com, Upwork.com, Fiver.com, Guru.com এরকম আরও অনেক মার্কেটপ্লেস আছে।

Freelancer.com ওয়েবসাইটে যাওয়ার পরে আপনি প্রথম পেজে Earn money freelancing নামে একটি লিংক দেখতে পাবেন। এই লিংকে ক্লিক করার পরে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ফর্ম পাবেন।

ধাপ- ২ঃ এরপর আপনি একটি Sign up পেজ দেখতে পাবেন। সেখানে দুইটি ভাবে ফ্রিল্যান্সার একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। নিজের Facebook account ব্যবহার করে, নিজর Email id ব্যবহার করে। তবে, আমি আপনাকে পরামর্শ দিবো নিজের ইমেইল আইডি ব্যবহার করে একাউন্ট তৈরি করার জন্য। এজন্য আপনাকে যা করতে হবে –

প্রথমে বক্সে গিয়ে নিজের ইমেইল আইডি লিখুন। দ্বিতীয় বক্সে গিয়ে পাসওয়ার্ড দিবেন। এবার আপনি I agree to Freelancer user agreement and privacy policy অপশনে ক্লিক করুন। শেষে নিচে থেকে Join Freelancer অপশনে ক্লিক করুন।

ধাপ- ৩ঃ এবার আপনাকে Username দিতে বলা হবে। নাম দেওয়ার পরে Suggestions এ আপনাকে কিছু username দেখাবে, আপনি চাইলে সেখান থেকে একটা সিলেক্ট করতে পারবেন। সঠিক ভাবে username সিলেক্ট করে নিচে থাকা Next বাটুনে ক্লিক করুন।

ধাপ- ৪ঃ এবার আপনাকে একাউন্টের প্রকার বেছে নিতে হবে। আপনি যদি টাকা আয় করার জন্য freelancer account তৈরি করতে চান তাহালে I want to work অপশনে ক্লিক করুন। আর যদি অন্য freelancers দের দিয়ে টাকার বিনিময়ে কাজ করানোর উদ্দেশ্যে account তৈরি করতে চান তাহালে I want to hire অপশনে ক্লিক করুন। আপনি যেহেতু কাজ করতে চান সেহেতু I want to hire অপশনে ক্লিক করুন।

ধাপ- ৫ঃ আপনার একাউন্ট সাইন আপ করার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেছে। এবার আপনাকে একটি পেজ দেখাবে যেখানে আপনি নিজের স্কিল (skills) গুলো সিলেক্ট করতে পারবেন। মানে আপনি কি কি কাজ জানেন এবং কি কি কাজ করে টাকা আয় করতে চান, সেই কাজ গুলো সিলেক্ট করুন। মনে রাখবেন এখানে আপনি যে কাজ গুলো সিলেক্ট করবেন সেই হিসাবে ফ্রিল্যান্সার এর তরফ থেকে প্রজেক্ট (projects) গুলো দেখানো হবে। আপনি নিজে যে সকল কাজ গুলো জানেন সেই কাজ গুলো সিলেক্ট করে নিচে থাকা Next Step অপশনে ক্লিক করুন।

ধাপ- ৬ঃ এবার আপনাকে একটি পেজ দেখানো হবে, সেখানে আপনার profile এর সাথে জড়িত সকল details দিতে বলা হবে যেমন – প্রথমে আপনাকে একটি প্রোফাইল পিকচার আপলোড করতে হবে। এবার আপনার সম্পর্ন নাম দিতে হবে। এরপরে আপনি কি কি ভাষা জানেন সেই ভাষা গুলো সিলেক্ট করতে হবে। শেষে আপনাকে কাজের experience বিষয়ে বলে দিতে হবে। সব শেষে নিচে থাকা Next Step বাটুনে ক্লিক করন।

ধাপ- ৭ঃ এবার আপনাকে payment method যুক্ত করে সেটাকে verify করার জন্য বলা হবে। এখানে আপনি Credit card, debit card অথবা PayPal account ব্যবহার করার জন্য বলা হবে। তবে, এই কাজ গুলো আপনি পরেও করতে পারবেন। এজন্য নিচে থাকা Skip for now বাটুনে ক্লিক করুন।

ধাপ- ৮ঃ এবার আপনাকে একটি Promotion পেজ দেখানো হবে। মানে কিছু টাকা দিয়ে freelancer ওয়েবসাইটের তরফ থেকে plus membership নিয়ে থাকে। কিন্ত আপনি যেহেতু নতুন সেহেতু নেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না। এজন্য skip for now অপশনে ক্লিক করুন।

একাউন্ট খোলার পর যা করবেন

আপনার পছন্দের প্লাটফর্মে অ্যাকাউন্ট খোলার পরে আপনাকে আপনার প্রোফাইলটি সেটিং করতে হবে। প্রোফাইলটি এমন ভাবে সেটিং করতে হবে যেন ক্লাইন্ট আপনার প্রোফাইলে ঢুকা মাত্রই আকৃষ্ট হয়। অবশ্যই একটি ফরমাল ছবি দিবেন। এবং আপনার কাজের অভিজ্ঞতা গুলো খুব সুন্দর ভাবে উল্লেখ করবেন। পাশাপাশি কেন আপনি অন্যান্য ফ্রিল্যান্সারদের তুলনায় আলাদা সেটাও উল্লেখ করবেন। আপনার সার্ভিস নিয়ে তারা কি কি উপকার পাবে তা জানাতে ভুলবেন না। এবং আপনার প্রোফাইলে অবশ্যই আপনার পূর্বের কাজের ডেমো গুলো শেয়ার করে রাখবেন। যাতে করে ক্লাইন্ট তারা পর্যবেক্ষণ করতে পারে।

এরপর আপনাকে শুরু করতে হবে কাজের জন্য আবেদন করা। প্রতিটি ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে আপনি কাজের অনেক পোস্ট দেখতে পারবেন। এবং পোস্টগুলোতে স্কিল লেখা থাকে অর্থাৎ ক্লাইন্টরা কি ধরনের কাজ যাচ্ছে। কাজের আবেদন করার জন্য আপনাকে একটি আবেদন লিখতে হবে। খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে একটি আবেদন লিখবেন। এবং সেখানে অবশ্যই উল্লেখ করবেন কেন আপনি তার এই কাজের জন্য উপযুক্ত। আপনার আবেদনের উপর অনেকটাই নির্ভর করে যে আপনি কাজটি পাবেন কি পাবেন না।

কাজ পাওয়ার পর অবশ্যই প্রতিদিন সময়মতো কাজ সম্পূর্ণ করবেন। এতে করে ক্লাইন্ট আপনার প্রোফাইলে ভালো রিভিউ দিবে। আর আপনার কাজ পাওয়া সম্ভাবনা আরও বেড়ে যাবে। এমনও হতে পারে ক্লাইন্ট তার বন্ধুদেরকে আপনার কাজ রেফার করতে পারে। তাই অবশ্যই ক্লাইন্টদের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখবেন।

মোবাইল দিয়ে কি কি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করা যায়

মোবাইল দিয়ে কি কি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করা যায় সে বিষয় সম্পর্কে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। মোবাইল দিয়ে যে আসলেই ফ্রিল্যান্সিং করা যায় এটা হয়তো অনেকেই মানতে চায়না। তবে মোবাইলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং আসলেই করা সম্ভব। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারের অভাবে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শুরু করতে পারছেন না।

সুতরাং, আপনাদের মধ্যে যাদের হাতে ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার নেই তারা চাইলে আপনাদের হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলো শুরু করতে পারেন। মোবাইল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা যায়। এর মধ্যে কিছু জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ হলঃ

১। কনটেন্ট রাইটিংঃ বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং জগতে যে সব কাজ রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ হচ্ছে কন্টেন্ট রাইটিং। এই একটি মাত্র কাজ করে অল্প পরিশ্রমে বেশি টাকা অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে ইনকাম করতে পারবেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এই কাজ টি আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে করতে পারবেন অনায়াসে। কারণ এই কাজের জন্য একটি মাত্র text editor app থাকলেই চলবে। আর এই অ্যাপস দিয়ে খুব সহজেই সুন্দরভাবে কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ সম্পাদন করতে পারবেন।

মোবাইল দিয়ে লেখালেখির জন্য বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করা যায়, যেমন Google Docs, WPS Office, iA Writer, Microsoft office word ইত্যাদি।

২। ওয়েব ডিজাইনঃ ফ্রিল্যান্সিং জগতে আরো কিছু কাজ রয়েছে তা হলো ওয়েব ডিজাইন এর কাজ। এই কাজ টা শিখে খুব সহজেই অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে অধিক পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এটা সত্য কথা যে তা হলো আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ওয়েব ডিজাইন এর কাজ করতে চান তাহলে আপনি শুধু মাত্র বেসিক বিষয়গুলো করতে পারবেন যেমন -html , css । আর যদি প্রফেশনাল ওয়েব ডিজাইন করতে চান তাহলে অবশ্যই একটি পিসি বা ল্যাপটপ প্রয়োজন হবে। আর আসুন জেনে নেই মোবাইল দিয়ে ওয়েব ডিজাইন এর বেসিক কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য আপনি Google play store থেকে যে অ্যাপস গুলো ইন্সটল করবেনঃ

  • Free code camp
  • W3schools
  • Programming hero
  • Solo Learn

৩। এসইও কীওয়ার্ড ম্যানেজমেন্টঃ অনলাইনে যেকোনো কন্টেন্টের জন্য এসইও রিলেটেড কীওয়ার্ড রিসার্চ করা মোবাইলের মাধ্যমে সম্ভব। এক্ষেত্রে আপনাকে এসইও সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাজেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। এমন অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা SEO এর জন্য কীওয়ার্ড রিসার্চের জন্য ব্যাপক অর্থ প্রদান করে থাকেন। আর এর পেশাটি হল হাই পেয়বল স্কিল যা খুব সহজেই মোবাইলের মাধ্যমে করা যায়।

৪। ট্রান্সলেশনঃ এই বিশ্বজগতে সব মানুষ সকল ভাষা জানেন না এটাই স্বাভাবিক। আর আপনি যদি আপনার ভাষার সাথে অন্য কোন ভাষার ব্যাপারে পারদর্শী হন, তবে আপনি মোবাইল দ্বারাই ফ্রিল্যান্সিং ট্রান্সলেটর হিসেবে কাজ করতে পারেন। অনলাইনে এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে, যেখান থেকে মোবাইল দ্বারাও ট্রান্সলেটিং টাইপের জব করতে পারবেন। আর ফ্রিল্যান্সিং ট্রান্সলেটরদের সারা পৃথিবীতেই খুব ভাল অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে।

এই ফ্রিল্যান্সিং ট্রান্সলেটরের পেশায় সবচেয়ে ভাল ব্যাপার হল, এই কাজ আপনি ফোন, ট্যাবলেট অথবা কম্পিউটার যেকোনো ডিভাইস থেকেই করে নিতে পারবেন।

৫। কপিরাইটিংঃ কপিরাইটং কাজটি মূলত কিছুটা কন্টেন্ট রাইটিং কাজ এর মতোই। একাজ করার জন্য আপনার ফোনে কোন টাইপিং Application থাকলেই একাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব। সাধারণত কপিরাইটিং কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের জন্যে সৃজনশীল কোনো লেখা লিখে দিতে হবে। এধরণের কাজ মোবাইল দ্বারা করা অত্যন্ত সহজ কাজ। বর্তমান সময়ে কপিরাইটং কাজ হল নতুনদের মধ্যে সেরা একটি পেশা। এধরনের কাজ করার জন্য আপনাকে কোন নির্দিষ্ট ডিভাইস অথবা স্পেশাল কোন কিছুর ব্যবহার করতে হবে না।

৬। কাস্টমার সাপোর্টঃ কিছু কিছু কোম্পানি তাদের গ্রাহকদের সেবা প্রদানের জন্য কাস্টমার সাপোর্টের দরকার হয়। তখন তারা আপনাকে একটি নাম্বার দিবে এবং সেই নাম্বার দিয়ে আপনাকে তাদের গ্রাহকদের সাথে কথা বলতে হবে। তাদের কাস্টমারের সমস্যা, তাদের যে প্রশ্ন গুলো থাকে সেগুলোর উত্তর দিবেন। আপনি তাদের সাথে ইমেইল, চ্যাট, বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেও যোগাযোগ করতে পারবেন। এই কাজটি আপনি ঘরে বসে আপনার মোবাইল ফোন দিয়েই করতে পারবেন।

কাস্টমার সাপোর্টে কাজ করতে হলে এই দক্ষতাগুলো লাগবে –
  • সমস্যা সমাধানের দক্ষতা
  • যোগাযোগের দক্ষতা
  • সুন্দর এবং স্পষ্ট ভাবে কথা বলা
  • ভাষাগত দক্ষতা
  • টেকনিক্যাল জ্ঞান
  • ধৈর্য
৭। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজঃ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যেমন নিজের কাজ সহজ করার জন্য পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখি ঠিক তেমনি অনলাইনের মাধ্যমে এই ধরনের কাজ পাওয়া যায়। যা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নামে ডাকা হয়। এই কাজ করে মোটামুটি ভালো ইনকাম করতে পারবেন। উল্লেখ্য যে, যারা ব্যস্ত মানুষ , অনলাইনে সময় দিতে পারেন না, তারাই মূলত অনলাইনের ছোট বা বড় কাজগুলো সম্পাদন করতে এক বা একাধিক ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করে। এই ধরনের কাজ গুলো মার্কেটপ্লেসে বেশি দেখা যায়। মজার বিষয় হচ্ছে এই কাজ গুলো আপনি মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন।

৮। গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ শুধু পিসি বা ল্যাপটপ দিয়ে না বরং মোবাইল দিয়েও গ্রাফিক্স ডিজাইন করা সম্ভব। মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিক্স ডিজাইন করা যায়, যেমনঃ লোগো, ব্যানার, প্রেজেন্টেশন, ইত্যাদি। মোবাইলে গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য বিভিন্ন অ্যাপ পাওয়া যায়, যেমন Canva, Adobe Photoshop Express, PixelLab, ইত্যাদি। এই অ্যাপগুলো দিয়ে আপনি খুব সুন্দর করে ডিজাইন করতে পারবেন।

৯। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টঃ সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমরা জানি ফেইসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদি। আর সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট হচ্ছে সেই সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোকে ম্যানেজ করা। যেমনঃ কোনো কম্পানির ফেইসবুক পেজে নিয়মিত পোস্ট দেওয়া, কাস্টমারদের মেসেজ এর উত্তর দেওয়া ইত্যাদি। মুলত সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে এই ধরনের কাজ থাকে যা মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব।

১০। ফোরাম পোস্টিংঃ ফোরাম পোস্টিং হল একটি অনলাইন মার্কেটিং কৌশল যা বিভিন্ন ফোরামে পোস্ট তৈরি এবং শেয়ার করে একটি পণ্য বা পরিষেবা প্রচার করে। ক্লায়েন্ট যেকোনো একটি পণ্যের ফোরামের লিস্ট দিবে অথবা সেই লিস্ট গুলো আপনাকে খুজে বের করতে হবে। আপনাকে সেই পণ্যটি প্রমোট করতে হবে বিভিন্ন ফোরামে।

আপনাকে সেই পণ্য রিলেটেড যত ধরনের ফোরাম রয়েছে সবগুলো ফোরামের একটি লিস্ট করতে হবে এবং সেখানে গিয়ে কমেন্ট বা পোস্ট করতে হবে। কমেন্ট বা পোস্ট করার আগে বিভিন্নভাবে ফোরাম প্রোফাইল গ্রো করতে হবে। সুতরাং এই বিষয়গুলো মূলত ফোরাম পোস্টিং এর কাজ।

১১। ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রান্সলেশনঃ মোবাইলে বিভিন্ন ভাষার মধ্যে অনুবাদ করা যায়। যেমনঃ ইংলিশ টু বাংলা, বাংলা টু হিন্দি ইত্যাদি। এভাবে বিভিন্ন ভাষা অনুবাদ করে আপনি অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন। তবে তার জন্য আপনাকে অবশ্যই উভয় ভাষা জানতে হবে। যদি শুধুমাত্র ট্রান্সলেটরের উপর নির্ভর করেন তবে সেটা দীর্ঘমেয়াদে আপনার ক্যারিয়ারের জন্য ভালো হবেনা। এজন্য আপনি বিভিন্ন ভাষা শিক্ষা কোর্সে ভর্তি হতে পারেন।

১২। ফটোগ্রাফি থেকে ইনকামঃ মোবাইল ফোন দিয়ে ছবি তুলে সেই ছবি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে বিক্রি করে টাকা ইনকাম করা যায়। এটি অনলাইন থেকে ইনকাম করার একটি সহজ মাধ্যম। কিন্তু ভালো মানের ছবি তোলার জন্য একটি ভালো মানের স্মার্ট ফোন লাগবে এবং সেই সাথে আপনার সুন্দর ছবি তোলার দক্ষতা থাকতে হবে।

ছবি তোলার জন্য যে দক্ষতাগুলো প্রয়োজন –
  • ক্যামেরা এবং এর সেটিংস সম্পর্কে জ্ঞান
  • লাইটিং সম্পর্কে জ্ঞান
  • কম্পোজিশন সম্পর্কে জ্ঞান
  • সৃজনশীলতা

১৩। ভয়েস ওভারঃ
 বিশ্বে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা তাদের নানান প্রজেক্ট ভয়েস ওভার আর্টিস্টদের দিয়ে থাকেন। যদি আপনি একজন দক্ষ বাচনভঙ্গির অধিকারী হয়ে থাকেন, তবে আপনি মোবাইলের মাধ্যমেও ফ্রিল্যান্সিং ভয়েস ওভার আর্টিস্টের কাজ খুব সহজেই করতে পারেন।

আর আপনি আপনার মোবাইল ফোন থেকে ক্লায়েন্টের জন্য ভয়েস ওভার প্রজেক্টের কাজ শুরু করতে পারেন। আর প্রতি মাসে একটা ভাল পরিমাণে টাকা উপার্জন করতে পারেন।

বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের চাহিদা অনেকাংশে কমিয়েছে ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে। এটি এমন একটি পেশা যেখানে কাজ করার কোনো ধরাবাঁধা সময় নেই। আপনার যখন ইচ্ছা, যেখানে ইচ্ছা কাজ করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং কি

ফ্রিল্যান্সিং কি, ফ্রিল্যান্সিং অর্থ মুক্তপেশা। যেখানে আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এটি সাধারন চাকরির মতোই, কিন্তু ভিন্নতা হলো এখানে আপনি আপনার স্বাধীন মতো কাজ করতে পারবেন। হোক সেটা দেশের ভিতরের কিংবা দেশের বাইরের। দেখা গেলো আপনার এখন কাজ করতে ইচ্ছা করছে না, আপনি করবেন না। যখন ইচ্ছা করবে তখন আবার চাইলেই করতে পারেন।

এখানে কাজ করার ক্ষেত্রে জায়গাভেদে কোনো ধরা বাঁধা নিয়ম নেই। আপনি চাইলেই এই কাজ অফিসে বসে করতে পারেন আবার ঘরে বসেও করতে পারেন। এরপরে এখানে আপনার নির্দিষ্ট কোনো ইমপ্লয়ার নেই। যখন যে বায়ারের কাজ নিবেন তখন সে-ই আপনার ইমপ্লয়ার।

সাধারন চাকরি থেকে এখানে আরেকটি বিষয়-এর ভিন্নতা আছে। সেটি হলো কাজের স্থান। ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) এর নির্দিষ্ট কোনো অফিস নেই। মূলত আপনার বাড়িই হচ্ছে আপনার অফিস। এখানে বসেই আপনি বিভিন্ন দেশের বায়ারদের সাথে কাজ করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) এর ক্ষেত্রে খুব সহজেই সরকারি বেসরকারি অনেক চাকরির থেকে বেশি বেতনে কাজ করতে পারবেন আপনার যদি যথেষ্ট পরিমাণে দক্ষতা থাকে।

এটা আমরা সবাই জানি যে, আমাদের দেশে দক্ষতার কদর হয় না সেভাবে, কিন্তু বাইরের দেশ গুলোতে হয়। আপনি সেসব দেশের বায়ারদের সাথে কাজ করে বাংলাদেশের তুলনায় দ্বিগুণ/তিনগুণ অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

সচরাচর প্রশ্নের উত্তর

আপনারা সচোরাচর প্রশ্নের উত্তর জানতে যে প্রশ্নগুলা গুগলে কিংবা কোনো ওয়েব সাইটে এসে সার্চ করে থাকেন তার সংক্ষেপে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর নিচে তুলে ধরা হলো। যা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আশা করছি আপনারা সংক্ষিপ্ত কিছু ধারনা লাভ করতে পারবেনঃ

১. প্রশ্নঃ বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর কোনটি?

উত্তরঃ বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজগুলোর মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং অন্যতম। অনলাইনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে এখন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ ছাড়া কল্পনা করা যায় না। জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে বা বাংলাদেশের লোকাল মার্কেটে দিন দিন ডিজিটাল মার্কেটিং কাজের প্রচুর চাহিদা বাড়ছে।

২. প্রশ্নঃ ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থান কত তম?

উত্তরঃ দেশের অনেক তরুণ আইসিটির বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ হয়ে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দেশে বসে বিদেশি গ্রাহকের জন্য কাজ করছেন। মার্কিন সাময়িকী সিইও ওয়ার্ল্ড গত ১৯ এপ্রিল ফ্রিল্যান্স কাজের জন্য সেরা গন্তব্য ৩০টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ এই তালিকায় ২৯তম স্থানে রয়েছে।

৩. প্রশ্নঃ নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি?

উত্তরঃ বর্তমানে আপওয়ার্ক, ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার ডট কম, পিপল পার আওয়ার এবং গুরু ডট কম এই ৫টি ফ্রিল্যান্সিং সাইট যা নতুনদের জন্য খুবই উপযুক্ত। নির্ভরতার দিক থেকে এবং সেবার মানের জন্য অধিকাংশ অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সাররা এই ৫টি সাইটকে নতুনদের ব্যবহারের উপযোগী বলে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

৪. প্রশ্নঃ ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন সেক্টর ভালো?

উত্তরঃ ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য সবচেয়ে লাভজনক কিছু সেক্টর রয়েছে যেমন, ওয়েব এবং মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ডেটা সায়েন্স, গ্রাফিক ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং।

কি কি দক্ষতা লাগে ফ্রিল্যান্সিং করতে

কি কি দক্ষতা লাগে ফ্রিল্যান্সিং করতে অনেকেই এই কনফিউশনে থাকে যে আসলেই কি আমি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবো। কি কি জিনিস দরকার এই কাজের জন্য, আসলে সত্যি কথা বলতে তেমন কিছুই লাগবে না আপনাকে এই পেশা শুরু করার জন্য। প্রথম যে জিনিসটা আপনার লাগবে সেটি হলো ইচ্ছাশক্তি ও ধৈর্য্য। এগুলো থাকলেই আপনি এই সেক্টরে নিমিষেই সফল হতে পারবেন ।

এর পাশাপাশি আপনার দরকার হবে ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগের দক্ষতা এবং কাজ চালানোর মতো ইংরেজি জানা। ইন্টারনেট সম্পর্কিত ভালো ধারনা ও গুগল এবং ইউটিউব থেকে বিভিন্ন রিসোর্স খুঁজে বের করার দক্ষতা এক্ষেত্রে আপনাকে অনেক সহায়তা করবে। এই ছিল মুলত প্রয়োজনীয় বিষয়াবলী যা আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য যোগ্য করে তুলবে।

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে কতটুকু শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে এটা বলা অনেকটাই মুশিকল। এই প্রশ্নটা অনেকটা এমন হয়ে যায়, কতটুকু বাংলা জানলে আমি লিখতে ও পড়তে পারবো। মূল কথায় আসি, ফ্রিল্যান্সিং এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কমিউনিকেশন, যেটা সম্পূর্ণ ইংরেজিতে হতে হবে। কারণ ৯৫% বায়ারই আপনার সাথে ইংরেজিতে কথা বলবে। এখন আপনি যেনো ইংরেজিতে আপনার মনের কথা, বিষয়বস্তু একজন বিদেশিকে ভালোভাবে বুঝিয়ে, কাজ দেওয়ার জন্য রাজি করতে পারেন, ব্যাস এইটুকু শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেই হবে। তাহলেই এই সেক্টর এর কাজ শিখে ভালো কিছু সম্ভব।

কম্পিউটার দক্ষতাঃ ফ্রিল্যান্সিংয়ে আপনার কাজ যেহেতু পিসি বা কম্পিউটারেই হবে তাই কম্পিউটার বিষয়ক দক্ষতা থাকা জরুরি। কম্পিউটার চালনায় নতুন হলে আগে কম্পিউটার বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে নিন। মাইক্রোসফট অফিসের বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে শিখে নিন। এক্সেল, ওয়ার্ড, নোটপ্যাড ইত্যাদি প্রোগ্রামগুলোর বিভিন্ন ফাংশন নিয়ে ধারণা নিয়ে নিন। কেননা আপনি যে ধরণের ফ্রিল্যান্সিং কাজই করুন না কেন এগুলো আপনার দরকার হবেই।

অনলাইনে কম্পিউটারের বিভিন্ন প্রোগ্রাম চালানোর ব্যাপারে বিনামূল্যেই অনেকরকম টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন। এগুলো থেকে আগে কম্পিউটারের দক্ষতা অর্জন করে নিন। কম্পিউটার সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকলে অন্য ব্যাপারগুলোও সহজ হয়ে যাবে আপনার জন্য।

ইংলিশে ভালো দক্ষতাঃ ইংলিশে ভালো দক্ষতা থাকা অন্যতম প্রধান একটি যোগ্যতা। কেননা ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজের ক্ষেত্রে আপনার গ্রাহক প্রায় সবসময়ই বিদেশি হবেন। তার সাথে সঠিকভাবে যোগাযোগ করে সবকিছু বুঝে নিয়ে আপনাকে কাজ করতে হবে। তাই ইংলিশে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভালো দক্ষতা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন নয় যে আপনাকে একদম নির্ভুল ইংলিশ জানতে হবে। তবে অন্তত আপনার গ্রাহককে বুঝতে ও তাকে বুঝাতে পারার মতো দক্ষতা অর্জন না করলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও খুব বেশি দূর এগোতে পারবেন না।

তাই যে কোন বিশেষ দিকে দক্ষতা অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে ইংলিশেও দক্ষতা বৃদ্ধি করুন। আপনি যে বিষয় নিয়ে কাজ করবেন সে বিষয়ক সকল ইংলিশ টার্মগুলো আগে থেকেই জেনে ও বুঝে নিন যাতে করে গ্রাহকের নির্দেশনা পুরোপুরি বুঝতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারেন।

টাইপিং দক্ষতাঃ টাইপিং দক্ষতা আপনার পুরো ফ্রিল্যান্সিং পেশার জন্যই বড় একটি জিনিস। আপনি খুব বেশি টাইপ করতে হয় এমন কোন কাজ না করলেও দ্রুতগতির টাইপিং থাকলে আপনি অনেক কাজই দ্রুত সেরে ফেলতে পারবেন। কেননা যেমন কাজই করুন না কেন মাঝে মধ্যে সেটির জন্য টাইপিং করার প্রয়োজন হবেই। কাজেই ইংলিশ টাইপিং এ অন্তত মিনিটে ৩০ শব্দ লেখার সক্ষমতা অর্জন করলে সব কাজের ক্ষেত্রেই তা আপনাকে সাহায্য করবে।

কন্টেন্ট রাইটিং করতে চাইলে দ্রুতগতির টাইপিং সেখার বিকল্প নেই। অনলাইনে সঠিকভাবে টাইপিং শিখতে বেশ কিছু ফ্রি টুল পাওয়া যায়। বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে আপনি সহজেই দ্রুতগতিতে টাইপ করা শিখে নিতে পারবেন।

সৃজনশীলতাঃ বলা হয়ে থাকে রোবট এবং মেশিন দিয়ে যেকোন কাজ করানো সম্ভব। শুধু একটি মাত্র কাজ তাদের দ্বারা অসম্ভব তা হচ্ছে সৃষ্টিশীলতা এবং সৃজনশীলতা। কারণ মানুষের মত তাদের ইমাজিনেশন বা ভিজ্যুয়ালাইজ করার ক্ষমতা নেই বা কখনো হবে না।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটেপ্লেসে কাজ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ক্রিয়েটিভ হতে হবে। একটা কথা সবসময় মাথায় রাখতে হবে, আপনি যদি আপনার সার্ভিস বাকি দশজনের চেয়ে একটু ব্যতিক্রম না করতে পারেন তবে আপনার ক্লায়েন্ট কেন আপনাকে হায়ার করবে।

এই ক্রিয়েটিভিটি যে কেবল একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ওয়েব বা ইউ এক্স ডিজাইনার এবং কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য প্রযোজ্য তা কিন্তু নয়। আপনি যেই সেক্টরেই কাজ করেন না কেন আপনার প্রত্যেকটা কাজে ক্রিয়েটিভ হওয়া উচিৎ।

ধৈর্যঃ ধৈর্য একটি বড় গুন যে কোন কাজের ক্ষেত্রেই। ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে এটি আরও বেশি দরকারি। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেই আয় করার চিন্তা করলে ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য নয়। এর পিছনে আপনাকে বেশ সময় দিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই প্রথম দিকে বেশ কষ্ট করা সত্ত্বেও কাজ পাওয়া কঠিন হতে পারে। এসময় অনেকেই ধৈর্য হারিয়ে ফ্রিল্যান্সিং বাদ দিয়ে দিতে চান। তবে ধৈর্য রাখাটা বেশ জরুরি। আপনি কোন কাজে সত্যিকারের দক্ষতা অর্জন করতে পারলে একবার পরিচিতি পেয়ে গেলে কাজ পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।

অন্য যে কোন কাজের মতোই মানুষ নতুন কাউকে কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকে। তাই নতুন হিসেবে কাজ পাওয়া কিছুটা কষ্টকর। তবে আপনি আপনার বায়ারকে সন্তুষ্ট করতে পারলে এবং আপনার কাজের জন্য ভালো রিভিউ সংগ্রহ করতে পারলে ধীরে ধীরে আপনার প্রোফাইল তৈরি হতে থাকবে। ফলে কাজও বাড়তে থাকবে আপনার রেটিং বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। তাই ধৈর্য রেখে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে হবে।

সময় ব্যবস্থাপনাঃ ফ্রিল্যান্সিং এর কাজের ধরণ যেহেতু অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক কাজের ধরণ থেকে একটু ভিন্ন সেক্ষেত্রে একজন ফ্রিল্যান্সারের সময় জ্ঞান থাকা তার ক্যারিয়ারের জন্য যে কতটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ তার কাজের জন্য কারোর কাছে জবাবদিহিতা করতে হয় না। হাজার ব্যস্ততার মাঝে তাকে সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়। যেহেতু একজন ফ্রিল্যান্সার অফিসিয়াল পরিবেশে কাজ করতে পারে না। মাঝে মাঝে প্রডাকটিভিটি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। বিভিন্ন ধরণের স্ট্রেসের কারণের তার কাজের ব্যাঘাত ঘটতে পারে?

আবার এমনও না আপনি একটা কাজ অনেকক্ষন সময় নিয়ে করতে পারবেন। যা আপনার অন্যান্য কাজেও ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। যদিও আপনার স্কিল এবং অভিজ্ঞতা একটা ফ্যাকটর যেখানে আপনি কম সময়ে অনেক বেশি কাজ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনার প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ট্যুল ব্যবহার করা উচিৎ। সেই প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ট্যুলে আপনার প্রতিদিনের টু-ডু লিস্ট সেট করা থাকলে তেমন ঝামেলা পোহাতে হবে না।

যোগাযোগ দক্ষতাঃ পারসোনাল কিংবা প্রফেশনাল লাইফে একটা মানুষের জন্য কমিউনিকেশন স্কিল যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আসলে বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এই স্কিল ডেভেলপ করতে আমরা সবচেয়ে বেশি অপারগতা প্রকাশ করি। একজন ফ্রিল্যান্সার কখনোই সফল হবে না যদি না সে এই কমিউনিকেশনে এই দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। আমাদের সফলতার জন্য প্রধান অন্তরায় মানুষের সাথে কথা বলতে না পারা।

আমরা অনেকেই বুঝে উঠতে পারি না কিভাবে কথোপকথন শুরু করতে হবে? বায়ারকে নিজের কাজের জন্য কিভাবে এপ্রোচ করতে হবে? কিভাবে লজিক্যাল ফ্যাক্ট এবং ডাটা প্রদর্শনের মাধ্যমে নিজের কাজের পারদর্শিকতা প্রকাশ করতে হবে? নিয়মিত বায়ারকে নিজের কাজের সম্পর্কে কিভাবে আপডেট দিবেন? কাজ শেষে বায়ারের ফিডব্যাক কিভাবে হ্যান্ডেল করবেন? কাজশেষে বায়ারের সাথে যোগাযোগ কিভাবে মেইনটেইন করবেন? সবকিছু সম্পর্কে জানতে হবে।

সেলস এবং নেগশিয়েশন দক্ষতাঃ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে একজন ক্লায়েন্টকে কনভিন্স করা যেমন কষ্টের তেমনি গুরুত্বপূর্ন। প্রতিটা বায়ার একে অপরের থেকে ভিন্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। আবার সবাইকে একই পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে কিন্তু কনভিন্স করা সম্ভব নয়।

এছাড়া আপনার মার্কেটিং এবং সেলস রিলেটেড কিছু দক্ষতার প্রয়োজন। যেখানে আপনি আপনার স্কিল বা সার্ভিস ক্লায়েন্টের সামনে কিভাবে উপস্থাপন করবেন? কিভাবে নিজের সার্ভিস অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে প্রমোট করবেন? আপনার স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং কি হওয়া উচিৎ? সেই সংক্রান্ত কিছু টিপস এন্ড ট্রিক্স জানা একান্ত জরুরী। বায়ারের বাজেটের উপর ভিত্তি করে আপনাকে তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে এবং সেখান থেকে সেলস জেনারেট করতে হবে।

নমনীয়তা এবং অভিযোজন যোগ্যতাঃ যে কোন পরিস্থিতিতেই নিজেকে খাপ খাওয়ানো আসলেই অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জিং। সারা বিশ্ব যেদিকে যেভাবে আগাচ্ছে আপনাকে ঠিক সেভাবে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। যেকোন প্রফেশনাল মানুষদের কাজে টেকনোলজিক্যালি অনেক পরিবর্তন আসছে এবং আসবে। সেই সাথে আপনাকে খাপ খাওয়ায়ে চলতে হবে।

তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল সেই সাথে প্রতিযোগিতাও বেশি। মার্কেটপ্লেসের অবস্থার উপর নির্ভর করে আপনার স্ট্র্যাটেজিক মুভ করতে হবে। তা না হলে আপনি হারিয়ে যাবেন।

উপরের যোগ্যতাগুলো ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এছাড়াও অনেক দক্ষতা ও যোগ্যতার দরকার রয়েছে। সেগুলো আপনি নিজে থেকেই বুঝতে পারবেন কাজ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে। তাই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাইলে উপরের যোগ্যতাগুলো অর্জনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করে করে দিন।

কিভাবে শুরু করবেন ফ্রিল্যান্সিং

কিভাবে শুরু করবেন ফ্রিল্যান্সিং এই প্রশ্নটা সকলের মাথায় ঘুরপাক খায়। এই পেশায় ঢোকার জন্য আপনাকে প্রথমেই একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার যে কাজে আগ্রহ সব থেকে বেশি সে কাজটি বেছে নিবেন। যেমন ধরুন আপনি ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর উপর খুব ভালো দক্ষতা অর্জন করলেন। এবার আপনাকে যেকোনো ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট তৈরি করতে হবে।

একাউন্ট তৈরি করার পর আপনাকে যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে একটি অর্ডার পাওয়ার জন্য। সত্যি কথা বলতে একজন নতুন ওয়েব ডিজাইনারকে কেউই কাজ দিতে খুব একটা আগ্রহী হয় না। আর তাই আপনার প্রোফাইলে যদি ভালো কিছু রিভিউ থাকে, তাহলে আপনাকে আর কাজ পেতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না। এর ফলে আপনি কাজ করে যেমন মজা পাবেন, তেমন অনেক দূর যেতে পারবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত সেক্টরটিতে। যেমন ধরুন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন সেকশনটা বেছে নিলেন ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য। এই কাজটি কিন্তু ক্রিয়েটিভ মানুষদের কাজ। সবার দ্বারা ডিজাইন করা সম্ভব নয়।

তো এটি বেছে নেওয়ার পূর্বেই আপনি দেখবেন যে, এই কাজটি আপনি কেমন পারছেন, কেমন আগ্রহ আপনার এই গ্রাফিক্স ডিজাইন এর উপর। যদি দেখেন সব কিছু ঠিকঠাক, সেক্ষেত্রে এটিকে নির্ধারিত করে এই রিলেটেড যত কাজ আছে সব শিখবেন। যেমন: ব্যানার, কভার পেজ, লিফলেট, পোস্টার, লোগো ইত্যাদি ডিজাইন করা।

এগুলো আপনি নিজে নিজেই গুগলে বা ইউটিউবে রিসোর্স খুঁজে সেখান থেকে দেখে দেখে শিখতে পারেন, আবার চাইলে বিভিন্ন কোর্স আছে অনলাইনে সেগুলোও করতে পারেন। পুরোটাই আপনার ইচ্ছার উপরে নির্ভরশীল। কাজ শেখার পরে এবার কাজ করার পালা। কাজ করার জন্য আপনাকে প্রথমেই একটি ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে (Freelancing Platform) একাউন্ট খুলতে হবে।

এরকম অনেক প্লাটফর্ম রয়েছে বর্তমানে। যেমন: Fiver, Freelancer, Upwork ইত্যাদি। একাউন্ট খোলার পর সেটিকে সুন্দর করে সাজাতে হবে। দোকানে যেমন বিভিন্ন পন্য সাজানো থাকে, ঠিক তেমন করেই আপনার করা কাজগুলো পোর্টফোলিও আকারে সাজিয়ে রাখতে হবে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস (Marketplaces) গুলোতে। এর পরে শুধু প্রথম কাজের জন্য অপেক্ষা।

আসলে প্রত্যেকটা কাজের ক্ষেত্রেই প্রথম ধাপটা একটু কষ্টকর হয়ে থাকে। ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রেও বিষয়টি ভিন্ন নয়। এক্ষেত্রেও প্রথম কাজটা পাওয়া একটু কষ্টসাধ্য। তবে কারো রেফারেন্সের মাধ্যমে কাজ পাওয়া অনেক সহজ এখানে। সেক্ষেত্রে আপনি পরিচিত কোনো ফ্রিল্যান্সারের সাহায্য নিতে পারেন।

বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারদের একটা বড় কমিউনিটি আছে সেখান থেকেও সাহায্য নিতে পারেন। প্রথম কাজ পাওয়া গেলে এর পর থেকে আর কাজের অভাব হয় না। তবে তার জন্য আপনাকে আপনার কাজের কোয়ালিটি বজায় রাখতে হবে, আপনাকে আপনার ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট করতে হবে।

নতুনরা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসতে পারে

নতুনরা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসতে পারে, ফ্রিলান্সিং ইংরেজি শব্দ যার বাংলা প্রতিশব্দ মুক্তপেশা। আরো সহজ ভাবে বলা যায়, একজন ফ্রিলান্সার হচ্ছে আত্ম-কর্মশীল যে কোন নির্দিষ্ট কর্মদাতার অধীনে দীর্ঘ সময়ের জন্য কাজ করে না। এরা সল্প সময়ের জন্য বিভিন্ন কম্পানি, এজেন্সিতে নিজেদের নিযুক্ত করে শ্রম দেয়। ফুল টাইম অথবা পার্ট যেকোনো ভাবেই সে পেশটাকে নিতে পারে।
নতুনরা-কিভাবে-ফ্রিল্যান্সিং-পেশায়-আসতে-পারে
যেকোনো জায়গাতে বসেই এরা কাজ করতে পারে। হোক সেটা নিজের ঘর অথবা পার্কের মাঠ। ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, গৃহিণী সহ যেকোনো কাজের পাশাপাশি যে কেউ ফ্রিলান্সিং পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারে। অথবা যারা পড়াশুনা শেষ করে চাকুরির জন্য চেষ্টা করছেন এরাও এই পেশাটাকে বেছে নিতে পারেন। নতুন বলতে শুধুমাত্র নতুন প্রজন্মকে বলা হচ্ছে তা না, হতে পারে সে ৪৫ বছরের একজন সরকারি চাকুরীজীবী অথবা ২৫ বছরের গৃহিণী।

আমি যদি ২০১০ সালের কথা আজকে চিন্তা করি তাহলে ভাবতেই অবাক লাগে সেই সময় আমরা কিভাবে কাজ করতাম আর কিভাবে কাজগুলি শিখেছিলাম। ১০ বছরের ব্যবধানে আজকে নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং এর জগতে আসাটা যতোটা সহজ হয়েছে, সেটি আসলে বলার মতো নয়। সেই সময়, ২০১০ সালের দিকে খুব বেশি মানুষের বাসায় কম্পিউটারই ছিল না। তাই ফ্রিল্যান্সিং এর জগতে নতুনদের আসতে এখন আর খুব বেশি কোনো সমস্যা হয় না। ফ্রিল্যান্সিং সর্ম্পকিত সমস্ত তথ্য ইন্টারনেটেই আছে। আপনি গুগল কিংবা ইউটিউবে কিছুটা ঘাটাঘাটি করলে এই বিষয়ে আরো জানতে পারবেন।

তাছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন প্রফেশনাল মানের অনলাইন কোর্স থেকে শুরু করে অনেক ভালো ভালো ট্রেনিং সেন্টারও রয়েছে; যেখানে আপনি ট্রেনিং করে দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। তবে একটি বিষয় অবশ্যই চিন্তা করা প্রয়োজন। ফ্রিল্যান্সিং এমন কোনো পেশা নয় যেখানে আপনি এক মাস কাজ করলেই খুব ভালো আয় করতে পারবেন। আপনাকে ধৈর্য্য সহকারে কাজ করে যেতে হবে। পথটা দুর্গম ও কষ্টকর হলেও আপনার ইচ্ছাশক্তি ও মনোবল থাকলে এটি কোনো সমস্যা হবে না আপনার জন্য।

নতুনদের কেন ফ্রিলান্সিং পেশায় আসা উচিত

আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা হতে পারে অন্যতম কারণ যার জন্য নতুনদের এই পেশায় আসা উচিত। বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, দিন দিন আমাদের দেশে বেকারত্বের প্রভাব বেড়েই চলেছে। শিক্ষিত জনশক্তি গোষ্ঠী বাড়ছে প্রতিবছরই কিন্তু কর্ম-সংস্থান বাড়ছে না তুলনামুলক ভাবে। তাই অধিকাংশ শিক্ষিত মানুষ গুলোকে বয়ে বেড়াতে হয় বেকারত্বের অভিশাপ।

যেখানে গতানুগতিক চাকুরির বাজার সঙ্কীর্ণ সেখানে অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিলান্সিং পেশা হতে পারে দেশের অর্থনৈতিক সচ্ছলতার অন্যতম চালিকাশক্তি। আবার যারা ইতোমধ্যে বিভিন্নপেশায় নিয়োজিত আছেন তারাও দিনের কিছুটা সময় কাজ করে আয়ের আরেকটি মাধ্যম হিসেবে ফ্রিলান্সিং পেশাকে বেছে নিতে পারেন।


নতুনরা যেভাবে ফ্রিলান্সিং পেশায় আসতে পারে

গতকয়েক বছরে ফ্রিলান্সিং আমরা যে হারে এগিয়েছি তাতে বলার অপেক্ষা রাখেনা যে এই পেশার ভবিষ্যৎ আশাব্যঞ্জক। আর এর ভবিষ্যৎ বুঝতে পেরেই বর্তমান সরকার অনলাইনে ফ্রিলান্সিং পেশায় সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, MoICT উদ্যোগে এন্ড্রোয়েড এপস ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণ। যেখানে কিভাবে এন্ডোয়েড মোবাইলের এপস বানানো যায় তা শেখানো হয়।

এছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ, প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও স্বনির্ভর বাংলাদেশের উদ্যোগে লার্নিং এন্ড আরনিং প্রশিক্ষণ। এখানে বহুবিধ কাজ শেখানো হয়। যেমন, ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইন, এসইও সহ আরো বিভিন্ন রকমের কাজ যা করে যে কেউ ফ্রিলান্সিং করতে পারবে। যেখানে বিভিন্ন মেয়াদে সারাদেশে বিভিন্ন সময়ে বিনামূল্যে ট্রেনিং এবং সরাসরি অনলাইনে কাজ করে কিভাবে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যায় সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা দিচ্ছে। তাই নতুনরা প্রাথমিকভাবে এর মাধ্যমে কাজ শিখতে পারে।

কাজ শেখা ও কাজ করা

নতুনদের মাঝে প্রায়ই একটা প্রশ্ন কাজ করে আর সেটা হল কি কাজ শিখবো আর কিভাবে কাজ করবো? তাদের উচিত হবে প্রথমে জেনে নেয়া যে কি কি কাজ করে অনলাইনে ফ্রিলান্সিং করা যায়, এবং কিভাবে দক্ষ ও কর্মঠ হওয়া যায়। একটি সুন্দর উদাহরণ দেই, আপনি যদি শুধুমাত্র ওয়েব ডেভেলপার হয়ে ফ্রিলান্সিং করতে চান তাহলে খুব সহজেই কাজ শিখতে পারবেন। আবার শঙ্কায় থাকে কিভাবে টাকা হাতে পাবে, কোন ব্যাংক থেকে টাকা পাবে, কাজ শিখতে কত মাস লাগবে, প্রতিমাসে কত টাকা আয় হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।

আপনি যদি ভাল ভাবে কাজ শিখতে পারেন তাহলে আস্তে আস্তে জানতে পারবেন কিভাবে কাজ পাবেন আর কিভাবে টাকা হতে পাবেন। তাই আপনার প্রথম কাজ হবে যেকোনো একটা বিষয়ে নিজেকে দক্ষ করে তোলা। আর সেই দক্ষতা কাজে লাগিয়ে নতুনরা অনলাইনের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে কাজ করতে পারবে। তবে সাবধান, কারণ বেশিরভাগ মানুষই অল্প কিছু শিখেই মার্কেটপ্লেসে নেমে পরড় কাজের উদ্দেশ্যে। তাই অনেক সময়ই দেখা যায় এরা ক্লাইন্ট এর সব কাজ করে দিতে পারে না।

শেষ কথাঃ নতুনদের জন্য সুখবর এই যে, অনলাইন মার্কেটে এখনো দক্ষ ফ্রিলান্সারের অনেক অভাব। তাই নতুনদের জন্য পরামর্শ একটাই, ভাল করে কাজ শিখুন, সময়ের চাহিদা অনুযায়ী কাজ শিখুন আর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিধিত্ব করুন নিজের দেশের। অর্জন করুন অসংখ্য বৈদেশিক মুদ্রা।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কাজ পাওয়ার উপায়

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কিভাবে কাজ পাবেন প্রশ্ন তো এটাই তাইতো। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কাজ পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। একটা বিষয় অবশ্যই মাথাই রাখবেন, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে অনেক অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। একজন ক্লায়েন্ট, কেন আপনাকেই কাজটি দিবে তার জন্য আপনাকে অবশ্যই খুবই ভালো মানের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভালো হতে হবে।

তাছাড়া আপনাকে যে কাজটির জন্য ক্লায়েন্ট পেমেন্ট করবে সেই কাজটিও আপনাকে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ভালোভাবে সম্পন্ন করতে হবে। মনে রাখবেন, বায়ারের সাথে যতো ভালো সম্পর্ক তৈরি হবে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার ততো বেশি সুন্দর হবে। তাই অবশ্যই চেষ্টা করবেন প্রতিটি বায়ারের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করার।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়ার সহজ ১০টি সহজ উপায়

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট করে কাজ পাওয়া যায় না এই কথা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট করার সাথে সাথেই আপনি কাজ পেয়ে যাবেন এটি যেমন আশা করা বোকামি আবার মার্কেটপ্লেসে দীর্ঘদিন অ্যাকাউন্ট করে রেখো যদি কাজ না পান সেটিও হতাশাজনক। তাই মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়ার জন্য কতিপয় বিষয় মাথায় রাখা উচিত।

১. কমিউনিকেশন স্কিল বৃদ্ধি করাঃ মার্কেটপ্লেসে বায়ারের কাছ থেকে কাজ নিতে চাইলে আপনাকে সঠিকভাবে কমিউনিকেশন করতে হবে। আপনি যদি ঠিকঠাক ভাবে কমিউনিকেশন করতে না পারেন তাহলে হঠাৎ করে ক্লায়েন্ট পেলেও পরবর্তীতে তা ধরে রাখতে পারবেন না। প্রতিদিন একটু একটু করে ইংরেজি শিখার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে গুগল ট্রান্সলেটর ব্যবহার করতে পারেন।

২. ভালোভাবে প্রোফাইল তৈরি করাঃ প্রতিটি মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরু করার জন্য একটি সুন্দর প্রোফাইল তৈরি করতে হয়। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে আপনার মার্কেটপ্লেস প্রোফাইলটি যেন নির্ভুল, বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক হয়। প্রোফাইল তৈরির ক্ষেত্রে কখনোই অন্যের প্রোফাইল কপি করার চেষ্টা করবেন না। আপনি যদি অন্যর প্রোফাইল থেকে কনটেন্ট চুরি করে নিজের প্রোফাইলে যুক্ত করেন তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান হতে পারে। এজন্য চেষ্টা করবেন নিজে যে কাজগুলো জানেন সেগুলো সম্পর্কে সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখে একটি প্রোফাইল তৈরি করতে।

৩. আকর্ষণীয় পোর্টফলিও যুক্ত করাঃ আপনি একটি কাজ অনেক ভালো জানতে পারেন কিন্তু সে কাজ সম্পর্কে যদি আপনার সঠিক স্যাম্পল বা পোর্টফলিও না থাকে তাহলে আপনি ক্লায়েন্টকে বুঝাতে পারবেন না যে আপনি কাজটিতে অভিজ্ঞ। এজন্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে হলে পোর্টফোলিও খুবই দরকারি। এ ক্ষেত্রে অনেকেই অন্যের পোর্টফলিও নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ ধরনের প্রচারণামূলক কাজ কখনই মার্কেট প্লেসে করবেন না। এটা যেমন ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও সঠিক কাজ নয় আবার এ কাজটি করলে আপনার মার্কেটপ্লেসের অ্যাকাউন্ট ব্যান হয়ে যেতে পারে।

৪. বেশিক্ষণ অনলাইনে থেকে দ্রুত রেসপন্স করাঃ নতুন অবস্থায় যেকোনো মার্কেটপ্লেসে দ্রুত কাজ পাওয়ার জন্য বেশিরভাগ সময় অনলাইনে থেকে ক্লায়েন্টের মেসেজের দ্রুত রেসপন্স করতে হয়। সাধারণত ক্লায়েন্ট যখন কোনো একটি জব পোস্ট করে তখন খুব দ্রুত রেসপন্স করতে পারলে কাজটি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে এ জন্য রাত জেগে মার্কেটপ্লেসে বসে থাকার প্রয়োজন নেই। দিনের বেশীর ভাগ সময় এক্টিভ থাকুন এবং চেষ্টা করুন দ্রুত সময়ে রেসপন্স করার। তাহলে ইনশাআল্লাহ কাজ পাবেন।

৫. কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে কাজে এপ্লাই করাঃ অনেক সময় দেখা যায় ফ্রিল্যান্সাররা জব পোস্টটি ঠিকভাবে না করে কপি পেস্ট কভার লেটার বা প্রপোজাল লেটার পাঠায়। এটা এক ধরনের স্প্যামিং। তাই সব জবে একই প্রপোজাল লেটার না পাঠিয়ে প্রতিটি জব পোস্ট সুন্দরভাবে পড়ে সে অনুযায়ী প্রপোজাল পাঠাতে হবে। চেষ্টা করুন আপনার প্রপোজাল লেটার দিতে নিজের অভিজ্ঞতা কে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে। আপনি কেন কাজটি করার জন্য উপযুক্ত? এজাতীয় আগে কোনো কাজ করেছেন কিনা তার অভিজ্ঞতা সম্ভব হলে শেয়ার করুন। ফলে আপনার প্রতি ক্লায়েন্টের একটি আস্থা তৈরি হবে।

৬. মার্কেটপ্লেসের নিয়মকানুন মেনে চলাঃ প্রতিটি মার্কেটপ্লেসে কাজ করার আগে প্রথমে সেই মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিন। বিশেষ করে একেকটি মার্কেটপ্লেসে ভিন্ন ভিন্ন রুলস থাকতে পারে। এ সব রুলস মেনে কাজ শুরু করুন। অনেকে দেখা যায় মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট করে রিভিউ কেনার চেষ্টা করেন। এ কাজটির মাধ্যমে আপনি হয়তো সাময়িক ভাবে লাভবান হতে পারেন, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এটি আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে। ১ জানুয়ারী ২০২৩ সালে ফাইভার মার্কেটপ্লেস এ ভূয়া রিভিউ নেওয়ার জন্য গণহারে প্রচুর অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করা হয়।

৭. স্কিল টেস্টে অংশ নেওয়াঃ প্রায় প্রতিটি মার্কেটপ্লেসে তাদের নিজস্ব স্কিল যাচাইকরণ পদ্ধতি রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে পরীক্ষার মাধ্যমে স্কিল বা দক্ষতা যাচাই করা হয়। এবং পরীক্ষা শেষে প্রাপ্ত স্কোর প্রোফাইলে দেখানোর ব্যবস্থা থাকে। তাই ক্লায়েন্টের আস্থা অর্জন করতে এসব স্কিল যাচাইকরণ পরীক্ষায় অংশ নিন। চেষ্টা করুন ভাল ফলাফলের মাধ্যমে নিজের প্রোফাইলটাকে উন্নত করতে। ফলে নতুন ক্লাইন্টরা সহজেই আপানার প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং আপনার কাজে পেতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে।

৮. কম্পিটিটর এর উপর নজর রাখাঃ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে নতুন অ্যাকাউন্টে কাজ পেতে হলে শুরুর দিকে একটু কম মূল্যে জবে বিড করতে হয়। কারণ যিনি যত পোস্ট করেন তিনি সাধারণত চেষ্টা করেন সর্বোত্তম প্রাইসে সর্বোচ্চ কোয়ালিটি টি পেতে। এজন্য অন্যদের চাইতে তুলনামূলক একটু প্রাইস কম দিলে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তবে অনেক ক্ষেত্রে এর উল্টোটাও হতে পারে। একটি কাজে বেশি প্রাইস দিলে ক্লায়েন্টের তার প্রতি কৌতূহল তৈরি হয়। কেন সে অন্যান্যদের চাইতে বেশি মূল্য যাচ্ছে সেটি জানতে চায়। আপনি দুটো কৌশলই অবলম্বন করে দেখতে পারেন।

৯. ইংরেজি ভাষা আয়ত্ত করাঃ ফ্রীলান্সিং মার্কেটপ্লেস এর বেশিরভাগ ক্লায়েন্টই যেহেতু পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে হয়ে থাকে, এজন্য তাদের অধিকাংশেরই ভাষা ইংরেজি। ক্লায়েন্টের সাথে সুন্দরভাবে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য ইংরেজি ভাষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আপনাকে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে হবে ইংরেজি ভাষাকে আয়ত্তে আনার। ইংরেজি শিখা ব্যাতিত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে গুলোতে আপনি বেশীদুর এগোতে পারবেন না।

১০. একাধিক মার্কেটপ্লেস নিয়ে কাজ করাঃ আপনি যদি ফ্রীলান্সিং পেশাই নতুন হয়ে থাকেন আপনার উচিত একাধিক মার্কেটপ্লেসে একসাথে কাজ করা। অনেকেই শুধু একটি মার্কেটপ্লেসের উপর নির্ভরশীল থাকেন, তবে সম্ভবত সেই মার্কেটপ্লেস আপনাকে সফল করতে পারে না। তাই আপনার উচিত হবে যদি আপনি সর্বোচ্চ দুই থেকে তিনটা মার্কেটপ্লেস নিয়ে একসাথে কাজ করা। একেকটি মার্কেটপ্লেস থেকে কম অর্ডার আসলেও আপনি অন্যান্য মার্কেটপ্লেস থেকে বাকি অর্ডার গ্রহণ করে আপনার কাজের ব্যালেন্স রাখতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস কি

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস কি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরুর আগে প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে  ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হচ্ছে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যেদিকে বায়ার বা ক্লায়েন্ট কাজ করিয়ে নেয় এবং ফ্রিল্যান্সররা কাজ সম্পূর্ণ করে দিয়ে টাকা উপার্জন করেন। ফ্রীল্যাংসিং মার্কেট প্লেস এমন একটি জায়গা যেখানে আপনি যেকোনো একটি বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করে সে বিষয়ে ঘরে বসেই দেশ বিদেশের ক্লায়েন্টদের সার্ভিস প্রদান করতে পারবেন।

সে সার্ভিসের বিনিময়ে আপনি একটি ভালো এমাউন্ট ইনকাম করে নিতে পারবেন। র্তমানে ফ্রীল্যান্কিং মার্কেট প্লেসে অনেক সাইট আছে যেখানে আপনি আপনার সার্ভিস গুলো সেল করতে পারবেন। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে চান এবং নিজের ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ব্যাপারে পারদর্শী হতে হবে।

লোকাল কোনো চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা প্রায়শই বিডিজবস ওয়েবসাইট ভিজিট করে থাকি। এখানে কোম্পানিগুলো তাদের কোম্পানিতে লোক নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের জব পোস্ট করে থাকে। আগ্রহী প্রার্থীরা সেখান থেকে আবেদন করতে পারে। একইভাবে অনলাইন জব এর ক্ষেত্রেও এ ধরনের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে বায়ার বিভিন্ন ধরনের কাজ সংক্রান্ত পোস্ট করে থাকে।

সেখানে সারা বিশ্ব থেকে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী এপ্লাই করতে পারে। যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই কাজগুলো সংঘটিত হয় সে ওয়েবসাইট গুলোকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস বলে। বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসের কাজের ধরন, পেমেন্ট মেথড বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।

জনপ্রিয় কয়েকটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস

বর্তমান সময়ে ৪০ টিরও অধিক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গড়ে উঠেছে। এই মার্কেটপ্লেস গুলোর মধ্যে সুপরিচিত ও জনপ্রিয় কয়েকটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হচ্ছে Upwork.com, Fiverr.com, Freelancer.com, Peopleperhour.com, Guru.com, Seoclerk.com, 99designs.com ইত্যাদি। তবে আজ আমি আপনাদের সাথে জনপ্রিয় কয়েকটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এবং তাদের কাজের ধরণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

১. ফাইবার ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসঃ নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ফাইবার ডট কম একটি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস। এখানে অন্যান্য মার্কেটপ্লেসের তুলনায় সহজে কাজ পাওয়া যায়। আমি অনেককেই দেখেছি খুব অল্প সময়ের মাঝে এখানে কাজ পেতে। এই মার্কেটপ্লেসে যে কেউ কাজ শিখে একাউন্ট তৈরী করে খুব সহজেই বাইরের কোন দেশের ক্লায়েন্টের কাজ করতে পারে।

ফাইবারের কাজের ধরনঃ
সাধারণত ফাইবারে বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজ পাওয়া যায়। সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন কিছু কাজ উল্লেখ করা হলো। যেমন-

  • প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স
  • প্রোগ্রামিং এবং এ.আই ডেভেল্পমেন্ট
  • ডাটা এন্ট্রি ও লীড জেনারেশন
  • ভিডিও এডিটিং ও মোশন গ্রাফিক্স
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট

ফাইবারে থেকে টাকা উত্তোলনের মাধ্যমঃ
বর্তমান সময়ে ফাইবার থেকে টাকা উত্তোলনের জনপ্রিয় মাধ্যমগলো হলো- পেওনিয়ার, ক্রেডিট কার্ড, পেপাল, ফাইভার ক্রেডিটস, ইত্যাদি। তবে বাংলাদেশীদের জন্য পেওনিয়ারই হচ্ছে সব থেকে সহজ মাধ্যম। এখানে ফ্রিল্যান্সাররা কাজ সম্পন্ন করে জমা দেওয়ার পরে ফাইভার থেকে ১৪ দিন পর পেমেন্ট পাওয়া যায়। এর জন্য ফাইভার প্রতি ৫ ডলারে ১ ডলার নিয়ে থাকে অথ্যাৎ শতকরা ২০% টাকা ফাইবার কেটে নিয়ে যায়।

২. আপওয়ার্ক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসঃ আপওয়ার্ক হচ্ছে বর্তমান সময়ের একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস, যেখানে 12 মিলিয়নেরও বেশি নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। এটি ফ্রিল্যান্সারদের বিভিন্ন দক্ষতয়ার উপর ভিত্তি করে কাজের সুযোগ প্রদান করে। তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হিসাবে Upwork বিশ্ব্যাপী ব্যাপকভাবে স্বীকৃত যেখানে ক্লায়েন্টরা বিভিন্ন পেশাদারদের কাছ থেকে পরিষেবা গ্রহন করে থাকে, এবং ফ্রিল্যান্সাররা টাকা বিনিময়ে সেবা দিয়ে থাকে।

Upwork এর কাজের ধরনঃ
আপওয়ার্কে বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজ পাওয়া যায়। কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে সেগুলোকে আবার ২ টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, তা হচ্ছে ,

*ঘণ্টা ভিত্তিক (Hourly) কাজ
*চুক্তিভিত্তিক (Fixed Price) কাজ

*ঘন্টা ভিত্তিকঃ ঘন্টা ভিত্তিক কাজে ফ্রিল্যান্সাররা যে কাজ করে তার জন্য ঘন্টা হিসেবে পারিশ্রমিক পেয়ে থাকে। এখন প্রশ্ন হতে পারে আমি যে কয় ঘন্টা কাজ করব তা ক্লায়েন্ট বা বায়ার দেখবে কিভাবে অথবা এর হিসাব কিভাবে হবে?

সাধারণত যেসব মার্কেটপ্লেসে ঘন্টা ভিত্তিক কাজ হয় সেসব মার্কেটপ্লেসের নিজস্ব সফটওয়্যার থাকে যেখানে ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করার সময় সেই সফটওয়্যার টি চালু করে কাজ করে। এর ফলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারের কাজগুলো ক্লায়েন্ট বা বায়ার সরাসরি মনিটরিং করার ‍সুযোগ পায়।

*চুক্তিভিত্তিকঃ চুক্তিভিত্তিক কাজে ফ্রিল্যান্সাররা কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে বাজেট দিয়ে থাকে এবং ক্লায়েন্ট কাজটি সম্পাদন সাপেক্ষে চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক প্রদান করে। এজন্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে ক্লায়েন্ট জব সংক্রান্ত বিস্তারিত বর্ণনা প্রদান করে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফ্রিল্যান্সাররা সেই জব টিতে কাজ প্রাপ্তির জন্য প্রোপোজাল লেটার পাঠায়।

এখানে একটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন, অনেক সময় ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সারের কাছে কাজের স্যাম্পল চেয়ে থাকে। ক্লায়েন্ট কাজ দেওয়ার পূর্বে ফ্রিল্যান্সারের কাছ থেকে স্যাম্পল চাইতেই পারে কারণ তার জানার প্রয়োজন আছে, সে যাকে কাজটি দিচ্ছে সেই ফ্রিল্যান্সার আসলে এই কাজটি করার উপযুক্ত কিনা, এ ধরনের কাজ আগে সে করেছে কিনা, ইত্যাদি, ইত্যাদি। কখনো কখনো টেস্ট প্রজেক্ট এর নামে কিছু প্রতারক মার্কেটপ্লেসে তার পুরো কাজটিই করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে থাকে যদিও এই সংখ্যাটি খুবই কম।

আপওয়ার্কে বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজ পাওয়া যায়। এখানে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন কিছু কাজের উদাহরণ হলো:

  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • ওয়েব ডিজাইন
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও)
  • ডাটা এন্ট্রি ও লিডস জেনারেশন
  • ভিডিও এডিটিং
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
  • ডিজিটাল মার্কেটিং
  • ভিডিও প্রোডাকশন

আপওয়ার্ক থেকে টাকা উত্তোলনের মাধ্যমঃ
পে’পাল, পেওনিয়ার, ওয়্যার ট্রান্সফার, ইত্যাদি। তাছড়া লোকাল ব্যাংকের মাধ্যমেও টাকা তোলা যায়। বর্তমানে আপওয়ার্কের কাজের জন্য শতকরা ১০% ফি কেটে নেওয়া ফ্রিল্যান্সারদের আক্যাউন্ট থেকে। প্রতিটা কাজ শেষ করার পর টাকা আপনার আক্যাউন্টে জমা হয়ে যায়।

৩. ফ্রিল্যান্সার ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসঃ ফ্রিল্যান্সার.কম (Freelancer.com) আরেকটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস, যেখানে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কাজ পেয়ে থাকে। এখানে ১৮০০এর বেশি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরির জব রয়েছে। এখানে কাজ করতে হলে আপনাকে ব্যক্তিগত প্রোফাইল তৈরি করতে এবং কাজের পোর্টফোলিও শেয়ার করতে হবে। তাছাড়া এখানে ২০০ এর ও বেশি দেশের ফ্রিল্যান্সাররা এখানে নিবন্ধিত আছেন, যা এই মার্কেটপ্লেসকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্রিল্যান্সিং কমিউনিটিতে রূপান্তর করেছে।

ফ্রিল্যান্সার (Freelancer.com) এর কাজের ধরনঃ
আমারা ইতিমধ্যে জেনেছি যে এখানে ১৮০০ এর বেশি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরির জব রয়েছে। তাই আপনি চাইলে খুব সহজেই আক্যাউন্ট করে কাজ শরু করতে পারেন। নিচে আমরা Freelancer.com এর অধিক চাহিদা সস্মত কাজের লিস্ট তুলে ধরেছি।

  • ওয়েব ডিজাইন
  • সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • লোগো ডিজাইন
  • এইচটিএমএল
  • সিএসএস
  • পিএইচপি
  • কন্টেন্ট রাইটিং
  • ফটোশপ, ইত্যাদি

ফ্রিল্যান্সার থেকে টাকা উত্তোলনের মাধ্যমঃ
অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এর মতই ফ্রিল্যান্সার ডটকমে টাকা উত্তোলনের অনেকগুলো সহজ মাধ্যম রয়েছে। এখানে টাকা উত্তোলনের উল্লেখযোগ্য মাধ্যম গুলো হচ্ছে পেপাল, স্কিল, ফ্রিল্যান্সার ডেবিট কার্ড এবং পেওনিয়ার ইত্যাদি। Fiver.com এর মতই এখানেও মার্কেটপ্লেস চার্জ হিসেবে ২০% টাকা কেটে নেওয়া হয়।

৪. নাইনটি নাইন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসঃ 99designs.com হলো আরেকটি বিশ্বব্যাপী ডিজাইন মার্কেটপ্লেস। এটি হচ্ছে গ্রাফিক ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন এবং অন্যান্য ডিজাইন বিক্রি করার জন্য উপযুক্ত মার্কেটপ্লেস। এখানে ডিজাইনারদের সাথে ক্লায়েন্টদের খুব সহজে সংযোগ স্থাপন করা যায়। এটি বর্তমান সময়ের একটি ক্রিয়েটিভ ডিজাইন মার্কেটপ্লেস, যেখানে ক্রিয়েটিভ এবং দক্ষ লোকজন কাজ করে থেকে।

নাইনটি নাইন এর কাজের ধরনঃ
অনন্যা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোর তুলনায় 99 ডিজাইন কিছুটা ভিন্ন। এখানের বেশির ভাগ কাজই হচ্ছে গ্রাফিক্স ডিজাইন রিলেটেড। আপনি যদি একজন ভালো গ্রাফিক্স ডিজাইন এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে এই মার্কেটটি আপনার জন্য পারফেক্ট। এখানে ফিক্স জবের পাশাপাশি কনটেস্ট এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা ইনকাম করে থাকে।

  • গ্রাফিক ডিজাইন
  • লোগো ডিজাইন
  • ওয়েব ডিজাইন
  • ইলাস্ট্রেশন ডিজাইন
  • প্যাকেজিং ডিজাইন
  • ব্রোশার ডিজাইন
  • এনিমেশন ডিজাইন
  • প্রিন্ট ডিজাইন
  • সোশ্যাল মিডিয়া ডিজাইন
  • ইনফোগ্রাফিক ডিজাইন

নাইনটি নাইন ডিজাইন থেকে টাকা উত্তোলনের মাধ্যমঃ
পেপাল (PayPal), ব্যাংক ট্রান্সফার, স্ক্রিল (Skrill), পেয়নিয়ার (Payoneer), মাস্টারকার্ড/ভিসা ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি, মাধ্যমগুলির মাধ্যমে ডিজাইনাররা তাদের উপার্জনিত আয় উত্তোলন করতে পারেন 99designs.com থেকে। এবং এখানেও মার্কেটপ্লেস চার্জ হিসেবে ২০% টাকা কেটে নেওয়া হয়।

৫. পিপল পার আওয়ার ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসঃ পিপল পার আওয়ার হলো অনলাইনে আয় করার জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যা লন্ডনে অবস্থিত একটি ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠান। এই প্ল্যাটফর্মে আপনি ঘন্টাভিত্তিক এবং ফিক্সড প্রাইস প্রজেক্ট পাবেন যার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে আয় করতে পারেন। এই প্ল্যাটফর্মে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি হওয়ার জন্য প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য আপনি ২০ থেকে ২৫০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। আপনি কাজ সম্পন্ন করার পর প্ল্যাটফর্মটি ২০% কমিশন নিয়ে থাকে।

পিপল পার আওয়ার এর কাজের ধরনঃ
পিপল পার আওয়া এ বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজ রয়েছে। আবার এই ক্যাটাগরি গুলোর আবার বিভিন্ন সাব ক্যাটাগরি রয়েছে। নিম্নে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন কিছু কাজের উদাহরণ হলো –

  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • গ্রাফিক ডিজাইন
  • ডিজিটাল মার্কেটিং
  • কন্টেন্ট রাইটিং
  • ভিডিও এডিটিং
  • ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট
  • এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন)
  • ডাটা এন্ট্রি

পিপল পার আওয়ার থেকে টাকা উত্তোলনের মাধ্যমঃ
পেপাল (PayPal), ব্যাংক ট্রান্সফার, স্ক্রিল (Skrill), পেয়নিয়ার (Payoneer), মাস্টারকার্ড/ভিসা কার্ড ইত্যাদি, মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের টাকা খুব সহজেই উত্তোলন করতে পারেন।

৬. বিল্যান্সার ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসঃ বাংলাদেশী জনপ্রিয় একটি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট বিল্যান্সার, যেটা বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। আপনারা যারা বাংলাদেশী তাদের কাছে সবচেয়ে সুবিধাসম্পন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হতে পারে এটি। কেননা বিলান্সিং ওয়েবসাইটের বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সাররা বাংলাদেশের বাসিন্দা।

এখানে যদি আপনি ভালোভাবে কাজ করতে পারেন তাহলে স্থায়ীভাবে কাজের সুযোগ পাবেন সেই সাথে এই মার্কেটপ্লেসের একটি অন্যতম সুবিধা হচ্ছে– আপনার পারিশ্রমিক বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট নিতে পারবেন। আর এর ফলে ইন্টারনেসনাল সাইট গুলোতে পেমেন্ট নেওয়ার জন্য যে ঝামেলা তৈরি হয় সেটা থেকে মুক্ত থাকবেন।

এছাড়াও ওয়েব ডিজাইন, সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং, ডাটা এন্ট্রি থেকে শুরু করে অনলাইন ভিত্তিক যে কোন কাজের প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগ পাবেন। আর আপনি যদি বায়ার হয়ে থাকেন তাহলে এক্সপার্ট থেকে মেড লেভেলের ফ্রিল্যান্সারদের কে হায়ারো করতে পারবেন এই বিলান্সার ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে।

৭. গুরু ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসঃ একটি আমেরিকান জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট হচ্ছে গুরু ডটকম। যেটা সবদিক বিবেচনা করে ফ্রিল্যান্সার মার্কেটপ্লেস এর তালিকায় ৭ নম্বরে অবস্থান করছে। জানা গিয়েছে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় 1,500,000 মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী-বেস তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে এই মার্কেটপ্লেস এবং দিন দিন এই সংখ্যা বেড়ে চলেছে হুরহুর করে।

এখানে মূলত প্রো লেভেলের ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করে থাকে সচরাচর। সেই সাথে কাজের ধরন অনুযায়ী বেতনের পরিসীমাটাও অনেকটাই বেশি। ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা এবং এই মার্কেটিং প্লাটফর্মের সুযোগ-সুবিধার উপর ভিত্তি করে জনপ্রিয়তা নেহাত কম নয়।

৮. টপটাল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসঃ তালিকায় সর্বশেষ পর্যায়ে রয়েছে টপটাল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। আর এ মার্কেটপ্লেসটি শুধুমাত্র উচ্চমানের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য। মূলত জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোর তালিকায় সবার শেষে থাকলেও এই ওয়েবসাইটে আবেদনের প্রক্রিয়াটা অনেকটাই কঠিন আর তাই শুধুমাত্র প্রফেশনাল লেভেলের ফ্রিল্যান্স শুধুমাত্র কাজের সুযোগ পেয়ে থাকে এই মার্কেটপ্লেসে।

বিশ্বমানের ফ্রিল্যান্সারদের শীর্ষস্থর থেকে নিয়োগের জন্য সর্বদা টপটাল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সহায়তা প্রদান করে। আপনি যদি একজন প্রফেশনাল অ্যাপ ডেভেলপার ওয়েব ডেভলপার কন্টেন্ট রাইটার বা ডিজিটাল মার্কেটার হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য একটি আদর্শ ও যথাপ্পযুক্ত মার্কেটপ্লেস হবে এটি।

ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা

ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা এই দুইটা দিকও রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং করে নিজের ইচ্ছামত কাজ করার স্বাধীনতার পাশাপাশি সুবিধার দিকে অতিরিক্ত নজর দিলে ভুল হবে। যেকোনো বিষয়ের মত ফ্রিল্যান্সিং এর ভালো ও খারাপ দিক রয়েছে। এমনকি মজার বিষয় হলো ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধাগুলোই হলো এর প্রধান অসুবিধা। অর্থাৎ এখানে ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা-অসুবিধা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ হিসেবে কাজ করে। নিচে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধাঃ
ফ্রিল্যান্সিং এমন অপশন যা আপনাকে শুধু প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা যোগাবে তাই নয় সেই সঙ্গে ইনকামের সুযোগ করে দিবে। ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করে শেষ করা যাবে না। তারপরও সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাগুলো নিচে বর্ণনা করা হলোঃ

সময়ের স্বাধীনতাঃ আগেই বলা হয়েছে যে, এ কাজে আপনার সুবিধা অনুযায়ী সময়ে আপনি কাজ করতে পারবেন। এর পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার উপরে। আপনি যদি চান আপনি এখন কাজ করবেন না, আপনাকে কেউ জোর করবে না এখন কাজ করতে।

কাজের স্বাধীনতাঃ আপনি নিজেই নিজের কাজ বেছে নিতে পারবেন। আপনার যে কাজটি সব থেকে ভালো লাগে সেটিকে বেছে নিতে পারবেন ও চাইলে যতদিন ইচ্ছা ওই কাজ করে যেতে পারবেন।

নিজের বেতন নিজে ঠিক করাঃ আপনার নিজের পেমেন্ট রেট (Payment Rate) আপনি নিজে বেছে নিতে পারবেন। প্রায় প্রত্যেকটা মার্কেটপ্লেসেই নিজের পেমেন্ট রেট উল্লেখ করার সুযোগ রয়েছে। আপনি যত বেতনে কাজ করতে চান সেটি অনুযায়ী কাজ পাবেন এখানে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করা সুযোগঃ ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কাজ না করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বা বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করতে পারবেন। এক্ষেত্রেও ক্লায়েন্ট (Client) বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন পুরোটাই আপনার নিজের উপরে।

দলগত কাজের সুযোগঃ একক ভাবে কাজের পাশাপাশি এখানে আপনারা দলগত কাজেরও সুযোগ পেয়ে যাবেন।

পড়ালেখার পাশাপাশি কাজের সুযোগঃ এই পেশাটি আপনি চাইলে ফুল টাইমও (Full Time) নিতে পারেন আবার পার্ট টাইম (Part Time) হিসাবেও কাজ করতে পারেন। তাই ছাত্র থাকা অবস্থায়ও এই কাজ আপনি করতে পারবেন বিনা ঝামেলায়।

নিজের মন মতো কাজের পরিবেশঃ আপনি চাইলেই নিজের ইচ্ছা মতো ওয়ার্কস্টেশন (Workstation) বানিয়ে নিতে পারবেন কাজ করার জন্য। আপনার কাজের জায়গা আপনি নিজেই তৈরি করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধাঃ
ফ্রিল্যান্সিং এর কিছু অসুবিধাও রয়েছে স্বাস্থ্যগত বিষয়গুলোই বেশি গুরুত্বপূর্ণ এক্ষেত্রে। চলুন দেখে নিই এর অসুবিধাগুলো কি কি-

  • ফ্রিল্যান্সেরদের (Freelancer) দীর্ঘ সময় একই জায়াগায় বসে কাজ করতে হয়। এজন্য কোমর, ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাথা সহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
  • কম্পিউটার এর সামনে একটানা অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফ্রিল্যান্সারদের চোখের সমস্যা দেখা যায়।
  • এক্ষেত্রে সব কাজ বাসায় বসে করতে হয়। এর ফলে একাকীত্বের মাধ্যমে মানুষ অবসাদগ্রস্ত হয়ে যায় যেটি পরবর্তীতে বড় রুপ ধারন করতে পারে।
  • প্রায়শই ঘুমের নানা রকম সমস্যায় সম্মুখীন হন ফ্রিল্যান্সাররা। কারন দেখা যায় আমাদের দেশে যখন রাত, ক্লায়েন্টের দেশে তখন দিন।
  • বাইরে তেমন বের না হওয়ার কারনে রোদের স্পর্শ পায় না তেমন এই পেশার লোকজন। সেক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এর অভাব হওয়াটা ব্যতিক্রম কিছু না।

মোবাইল দিয়ে কি আসলেই ফ্রিল্যান্সিং শিখা যায়

মোবাইল দিয়ে কি আসলেই ফ্রিল্যান্সিং শিখা যায় এই বিষয়ে আপনারা অনেকেই জানতে চান। ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টিকে কিছু মানুষ খুব সস্তা ভাবে উপস্থাপন করে। আজ কাল অনেকই ফেসবুক পেজ খুলে বিজ্ঞাপন দেয় মোবাইল দিয়ে ইনকাম করুন লাখ লাখ টাকা। আবার অনেকই ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করে লোভনীয় থাম্বেল দিয়ে দেয় যে মোবাইল দিয়ে শিখুন ফ্রিল্যান্সিং।
মোবাইল-দিয়ে-কি-আসলেই-ফ্রিল্যান্সিং-শিখা-যায়
আপনি মোবাইল দিয়ে বিজ্ঞাপন দেখে মাসে হয়তো ২০০ ৩০০ টাকা ইনকাম করতেই পারেন, কিন্তু সেটা কে ফ্রিল্যান্সিং বলে না। ফ্রিল্যান্সিং আসলে কি এই ব্যপারটা আগে জানতে হবে ও বুঝতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং মূলত এমন একটি পেশা যেখানে আপনি ইন্টারনেটের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এটি সাধারন চাকরির মতোই, কিন্তু ভিন্নতা হলো এখানে আপনি আপনার স্বাধীন মতো কাজ করতে পারবেন। দেখা গেলো আপনার এখন কাজ করতে ইচ্ছা করছে না আপনি করবেন না। যখন ইচ্ছা করবে তখন আবার চাইলেই করতে পারবেন।

মোবাইল দিয়ে কখনোই ফ্রিল্যান্সিং করা যায় না। ফ্রিল্যান্সিং একটি কাজ যা আপনাকে শিখতে হবে আর সেটা শিখতে গেলে পিসি অথবা ল্যাপটপ লাগবে। ১০০ টাকা দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কোর্স কিনে কখনও ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায় না।

লেখকের শেষ কথা

আজকের আর্টিকেলে আলোচনার মূল বিষয় ছিলো মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো, মোবাইল দিয়ে কি কি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করা যায়, মোবাইল দিয়ে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলব ও ফ্রিল্যান্সিং কি। আশা করি এ সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের উত্তর এই আর্টিকেলটিতে পেয়ে গিয়েছেন। ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি পেশা যেখানে আপনার কিছু বিশেষ দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান থাকতে হবে।

সুতরাং, যখন ফ্রিল্যান্সিং শেখার কথা আসে তখন আপনাকে যে কোনও বিষয়ের জ্ঞানকে প্রফেশনাল পদ্ধতিতে নিতে হবে। যেমন, ডিজিটাল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, কনটেন্ট রাইটিং, অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপার ইত্যাদি অনেক বিষয় রয়েছে। প্রথমত, আপনাকে যে কোন বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এভাবে আপনি ভবিষ্যতে অন্যের জন্য সেই কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

শুধু প্রফেশনাল কাজ জেনে আপনি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারবেন না। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে হলে আপনাকে অবশ্যই সাধারণ প্রশিক্ষণ নিতে হবে যাতে আপনি সঠিকভাবে ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করতে পারেন। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এটাই ছিল মূলত আলোচনার মূল বিষয়। প্রত্যেকটা জিনিসেরই ভালো মন্দ উভয় দিক রয়েছে। এক্ষেত্রে ভালো মন্দ উভয় দিক বিদ্যমান যা আমি আলোচনা করেছি বিস্তারিতভাবে। এখানে একটু নিয়ম মেনে চললে ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধাগুলোকে খুব সহজেই এড়িয়ে চলা যায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url