কালমেঘ পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
কালমেঘ পাতার উপকারিতা প্রচুর। স্বাদে তিক্ত এবং ঔষধি গুণে ভরপুর কালমেঘ একটি ভেষজ উদ্ভিদ। আয়ুর্বেদিক ঔষধ ও অন্যান্য প্রাকৃতিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় বহুকাল ধরেই কালমেঘ পাতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি সবুজ চিরতা নামেও পরিচিত।
সাধারণ সর্দি ও জ্বরে প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসাবে কালমেঘ পাতার রসের উপকারিতা রয়েছে। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে, প্রদাহ কমাতে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সুরক্ষা প্রদান করতে, পেটের সাথে সম্পর্কিত সমস্যার জন্য কালমেঘ পাতার কার্যকারিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলুন তাহলে কালমেঘ পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
পেইজ সূচিপত্রঃ কালমেঘ পাতার রসের উপকারিতা ও অপকারিতা
- কালমেঘ পাতার উপকারিতা
- কালমেঘ পাতা খাওয়ার নিয়ম
- কালমেঘ পতা কিভাবে কাজ করে
- খালি পেটে কালমেঘ পাতা খাওয়ার উপকারিতা
- আয়ুর্বেদিক ওষুধে কালমেঘের ঐতিহ্যগত ব্যবহার
- চুলের যত্নে কালমেঘ পাতার উপকারিতা
- চিরতা ও কালমেঘ কি এক
- কালমেঘ কি কিডনির ক্ষতি করে
- কালমেঘ সিরাপ এর উপকারিতা
- কালমেঘ পাতা সম্পর্কে সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর
- কালমেঘ পাতার অপকারিতা
- কালমেঘ পাতার উপকারিতা সম্পর্কে শেষ কথা
কালমেঘ পাতার উপকারিতা
কালমেঘ পাতার উপকারিতা ও এর গুন সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবেনা। কালমেঘ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, প্রদাহ কমাতে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতার জন্য পরিচিত। কালমেঘে অ্যানড্রোগ্রাফোলাইড সহ বিভিন্ন ধরনের সক্রিয় যৌগ রয়েছে, যেগুলিতে প্রদাহ বিরোধী, ক্যান্সার প্রতিরোধী এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
এন্ড্রোগ্রাফিস প্যানিকুলাটা যেটা আমাদের দেশে কালমেঘ নামে পরিচিত। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী ভেষজ যা বহু শতাব্দী ধরে আয়ুর্বেদিক ওষুধে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যগত অবস্থার চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই তিক্ত ভেষজটি তার ইমিউন-বুস্টিং, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ক্যান্সার বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি লিভার এবং হজমের স্বাস্থ্যকে সমর্থন করার ক্ষমতার জন্য পরিচিত। এই নিবন্ধে, আমি কালমেঘ পাতার উপকারিতা, কীভাবে এটি ব্যবহার করতে হয় এবং আয়ুর্বেদিক ওষুধে এর ঐতিহ্যগত ব্যবহারগুলি আলোচনা করব।
লিভারের সমস্যায় স্থায়ী সমাধানঃ কালোমেঘ লিভারকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে দুই ধরনের উপাদান থাকে। একটি হেপাটোপ্রোটেকটিভ এবং একটি হেপাটোস্টিমুলেটরি। এই দুটি বৈশিষ্ট্যই লিভারকে জন্ডিসের মতো সমস্যা থেকে পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে। পিত্ত নিয়ন্ত্রণ করে, কালোমেঘ লিভারের কার্যকারিতা সহজ করে।
লিভারের যেকোনো সমস্যায় কালোমেঘ খুবি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তবে কালো মেঘ বড়দের থেকে ছোটদের লিভারের সমস্যায় খুবি উপকারী ভূমিকা পালন করে। ছোটদের লিভারের সমস্যায় হাঁফ চামচ কালোমেঘের পাতার রস খাওয়ানো যেতে পারে। বড়দের লিভারের সমস্যায় দের চামচ কালোমেঘ পাতার রস খাওয়া যেতে পারে।
লিভার সুরক্ষিত রাখতে কালমেঘ পাতা লিভার ও কিডনির চিকিত্সায় উপকারী। কালমেঘ পাতা আপনাকে লিভারের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। কালমেঘ গুঁড়া গ্রহণে কার্বন টেট্রাক্লোরাইডের মতো বিভিন্ন রাসায়নিকের থেকে লিভারকে সুরক্ষিত করে।
হর্টের সমস্যায়ঃ এখন তো বয়স ৩০-এর গণ্ডি পেরলেই হার্টের মারণ অসুখ পিছু নিচ্ছে। এক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিওরের মতো রোগে আকছার আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। তাই সচেতন থাকতে হবে। এক্ষেত্রে হার্টের অসুখ প্রতিরোধ করতে চাইলে আজ থেকেই কালমেঘ পাতা খাওয়া চালু করে দিন। এই পাতায় এমন কিছু উপকারী উপাদান উপস্থিত রয়েছে যা হাই ব্লাড প্রেশার কমায় এবং রক্তনালীকে প্রসারিত করে। ফলে সারাদেহের পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডেও সুস্থভাবে রক্ত চলাচল করে। এই কারণে হৃদরোগের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয়
ডায়াবেটিস প্রতিরোধেঃ কালোমেঘ একটি ঔষধি গুণের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্যাপকভাবে পরিচিত একটি ভেষজ। ডায়াবেটিস পরিচালনায় সহায়ক হতে পারে। এটিতে অ্যান্টি-ডায়াবেটিক গুণ রয়েছে যা এই অবস্থার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারে। ডায়াবেটিসের কারনে বেড়ে যাওয়া ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। এটি আপনার দেহের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে।যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা এই কালোমেঘের পাতার রস খেতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগীদের জন্য মহাঔষধঃ মনে রাখবেন, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস একটি জটিল অসুখ। এটি হল অটো ইমিউন রোগ। এক্ষেত্রে আক্রান্ত রোগীর ইমিউনিটি অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে পড়ে। ফলে দেহে একাধিক সমস্যা দেখা যায়। এই অসুখে আক্রান্তের গাঁটে গাঁটে ব্যথা হয়, জায়গাটা ফুলে লাল হয়ে যায়। তবে সুখবর হল, এই অসুখকে নিয়ন্ত্রণে আনার কাজেও অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা নেয় কালমেঘ পাতা। এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ব্যথা, ফোলার মতো জটিলতা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ কালমেঘ পাতায় অ্যান্টি-ক্যান্সার বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি এবং বিস্তার রোধ করতে সাহায্য করে। এটিতে অ্যানড্রোগ্রাফোলাইড নামক একটি বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ সহ অ্যান্টি-ক্যান্সার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই যৌগটি বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যেমন লিউকেমিয়া (এক ধরনের রক্তের ক্যান্সার), স্তন ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং মেলানোমা।
স্টমাক আলসারঃ স্টমাক আলসার একটি জটিল অসুখ। এই অসুখে আক্রান্ত হলে ডায়েটে বিশেষ নজর দিতে হয়। নইলে সমস্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই সমস্যাকে বাগে আনতে পারে কালমেঘ পাতা। এতে মজুত রয়েছে অ্যান্টিআলসার, অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান যা কিনা আলসারের মতো সমস্যাকে হেলায় হারাতে পারে।
বদহজমের জন্যঃ আপনার যদি বদহজমের সমস্যা থাকে তবে কালোমেঘ কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে। এটিতে এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা হজমের সমস্যা সমাধানে সহায়ক। যাইহোক, এটি কীভাবে হজমে সহায়তা করে তা আরও ভালভাবে বোঝার জন্য আরও গবেষণা চলছে।
ত্বকের সমস্যা দূর করতেঃ কালমেঘ ত্বকের রোগ নিরাময়ে উপকারী হতে পারে। এটিতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি রক্ত পরিশোধনকারী ওষুধের করে। একই সঙ্গে কালমেঘ ত্বকের ফোঁড়া এবং চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কার্যকর হতে পারে। কালমেঘের মধ্যে রক্ত পরিশোধন করার ক্ষমতা রয়েছে। এটি রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলি সরিয়ে দেয় এবং তাই ত্বকের রোগ সারাতে সহায়তা করে।
রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়ঃ যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি তারা যদি রোজ সকালে কালমেঘ পাতার জল পান করেন তাহলে খুব ভালো উপকার পাওয়া যায়। কালমেঘের শুকনো পাতার ক্বাথ সুগার রোগীর জন্য বেশি উপকারি বলে মনে করেন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা। কালোমেঘে এমন উপাদান রয়েছে যা শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়াতে সহায়ক।
স্ট্রেস দূর করে মস্তিষ্ক শক্তিশালী করেঃ যারা একটুতেই স্ট্রেস প্রবণ হয়ে পড়েন, তাদের জন্য কালোমেঘের ক্বাথ স্ট্রেস বাস্টারের মতো কাজ করে। কালমেঘ থেকে স্বর্তিয়া মার্টিন নামের একটি মৌল উৎপন্ন হয়। এই উপাদানটি মানসিক চাপ কমিয়ে মস্তিষ্ককে স্বস্তি দেয়।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ কালোমেঘ পাতার রস পান করলে মেটাবলিক রেট বাড়ে। মেটাবলিজমের উন্নতি ওজন কমাতে সাহায্য করে। দ্রুত বিপাকের কারণে ফ্যাট বার্ণ দ্রুত ঘটায়। এছাড়াও কালোমেঘ পেট সংক্রান্ত সমস্যা যেমন অ্যাসিডিটি, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। পাকস্থলীর সঠিক কার্যকারিতা ওজন কমানোর সফল প্রচেষ্টায় সাহায্য করে।
সর্দি-কাশি এবং জ্বরঃ কালোমেঘ পাতায় অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা সর্দি-কাশি এবং ফ্লুর মতো ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। কালমেঘ পাতায় অ্যান্টিপাইরেটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা জ্বর কমাতে কমাতে এবং কাশি উপশম করতেও সাহায্য করতে পারে। এটি শরীরে ঘামের উৎপাদন বৃদ্ধি করে জ্বর কমাতে সাহায্য করে
ভাইরাল সংক্রমণঃ কালোমেঘ পাতায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা বিভিন্ন ধরণের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এটি ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ, যেমন ইউটিআই, নিউমোনিয়া এবং ত্বকের সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ভাইরাল সংক্রমণ, যেমন হারপিস, হেপাটাইটিস এবং ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায়ও ব্যবহার করা যেতে পারে।
যকৃতের সমস্যায়ঃ কালমেঘ পাতায় লিভার টনিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা যকৃতের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি লিভারের প্রদাহ কমাতে এবং লিভারের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করতে পারে। এটি হেপাটাইটিস এবং লিভার সিরোসিসের মতো যকৃতের রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
পেট খারাপঃ কালমেঘ পাতায় অ্যান্টি-ডায়রিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা পেট খারাপ এবং ডায়রিয়া উপশম করতে সাহায্য করে। এটি পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং ডায়রিয়ার সাথে যুক্ত অন্যান্য লক্ষণগুলিও কমাতে সাহায্য করতে পারে।
পেটের কৃমি দূর করতেঃ কৃমি প্যারাসাইট বা পরজীবী প্রাণী। এটি আমাদের ইন্টেস্টাইনে বাসা বাঁধে এবং আমাদের শরীরের অন্যান্য অর্গ্যানগুলিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।এগুলি সাধারণত দূষিত জল বা খাবার থেকে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। কালোমেঘ পাতা, জল ও গুড় একসাথে বেটে ছোট্ট মটরশুঁটির দানার মত বল বানিয়ে নিন।
রোদে শুকিয়ে একটি পাত্রে রেখে দিন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে জলের সঙ্গে ট্যাবলেটের মত গিলে খেলেও কিন্তু খুব উপকার পাওয়া যাবে। এটি তেতো রস খাওয়ার থেকে অনেক বেশী সহজ। এছাড়া কালোমেঘ পাতা বেটে তার রস বের করে সকালে খালি পেটে খেলে কিছুদিনের মধ্যেই সমস্ত কৃমি মরে বেরিয়ে যাবে।
বাত ব্যাথাঃ কালোমেঘ পাতায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা বাতের ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি গেঁটেবাত এবং আর্থারাইটিসের মতো বাতের রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
কৃমি দূর করতেঃ ছোট হোক বা বড়, সবার কৃমি দূর করতে কালো মেঘ পাতার রস খাওয়া যেতে পারে। সাধারণত ২চামচ কালোমেঘ পাতার রস ২-৩ দিন খেলেই কৃমি মরে যায়।
পেট কামড়িঃ কামড়ি রোগের ক্ষেত্রে গোল মরিচ লবঙ্গ, দারচিনি বড় এলাচ ও কালোমেঘ সমপরিমানে নিয়ে থেঁতো করে ছোট ছোট বড়ি বানিয়ে রোদে শুকিয়ে প্রতিদিন একটি করে খেতে হবে। ফলে পেটকামড়ি রোগ ভালো হয়ে যাবে।
কুষ্ঠ রোগঃ কুষ্ঠ রোগ দূরকরতে কালোমেঘ এর ভূমিকা খুবি গুরুত্ব পূর্ণ। কুষ্ট রোগীরা যদি কিছু পরিমান কালোমেঘ পাতা বেটে ক্ষত স্থানে নিয়মিত লাগায় তাহলে ধীরে ধীরে সেই রোগ দূর হবে।
ক্রিমিঃ কালমেঘের পাতার রস ৩০-৩৫ ফোটার সঙ্গে ,৩০-৩৫ ফোটা কাঁচা হলুদের রস একসঙ্গে মিশিয়ে অল্প চিনি দিয়ে সকালে ও বিকেলে খাওয়াতে হয়। ক্রিমি দূর হবে।
রক্ত আমাশয়ঃ কালমেঘ পাতার রস ১৫ ফোটা নিয়ে তার সঙ্গে ১৫০ মিলিগ্রাম মেথিচূর্ণ মিশিয়ে সকালে ও বিকেলে ২ দিন খেলেই রক্ত আমাশয় সেরে যাই।
দূষিত জ্বরেঃ কালমেঘ পাতার রস ১৫-২০ ফোটা নিয়ে তার সঙ্গে অল্প জল মিশিয়ে সারাদিনে ২-৩ বার করে ৩ দিন খাওয়াতে হবে। তাহলে শরীরের দূষিত জ্বর জ্বালা অবশ্যই কমবে এবং রোগী অবশ্যই সম্পূর্ণভাবে আরোগ্যের পথে যাবে।
পচা ক্ষতেঃ শরীরের কোনো জায়গায় ঘা হয়ে পচতে থাকলে কালমেঘ পাতা সিদ্ধ করে সেই জল দিয়ে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করতে হয়। সারাদিনে ২-৩ বার করা ভালো। পচা ক্ষত অবশ্যই দূর হবে।
হৃদয়ের স্বাস্থ্যের জন্যঃ কালমেঘ এর অ্যান্টিথ্রোম্বোটিক বৈশিষ্ট্যের কারণে হার্টের স্বাস্থ্যকে সমর্থন করতে পারে, যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যে এই বৈশিষ্ট্যগুলি ধমনী পাতলা করে রক্ত প্রবাহ বাড়াতে পারে, যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
অনিদ্রার জন্যঃ অনিদ্রা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যার মধ্যে চাপ একটি প্রধান অবদানকারী। কালমেঘ একটি অ্যান্টি-স্ট্রেস এজেন্ট হিসেবে কাজ করে, স্ট্রেস লেভেল কমিয়ে এবং ভালো ঘুমের প্রচার করে অনিদ্রা দূর করতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেঃ সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য একটি শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কালোমেঘ এর ইমিউনোমোডুলেটরি বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য অনাক্রম্যতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, যা সক্রিয়ভাবে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সমর্থন করে এবং শক্তিশালী করে।
কালমেঘ পাতা খাওয়ার নিয়ম
কালমেঘ পাতা খাওয়ার নিয়ম কী তা নিয়ে আমাদের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। যেহেতু এর অনেক উপকারিতা রয়েছে তাই এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য আমরা অনেকেই আগ্রহী কিন্তু কালমেঘ পাতার রস খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে না জানার কারণে অনেক সময় আমরা এটির উপকারিতা ভোগ করতে ব্যর্থ হই। তাই চলুন কালমেঘ পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
কালমেঘ পাতা খাওয়ার নিয়ম দিনের যে কোনো সময় সেবন করা যেতে পারে। এক গ্লাস জলের সাথে কালমেঘের গুঁড়ো মিশিয়ে সারারাত রেখে সকালে খালি পেটে সেবন করুন। নিয়মিত সকালে খালি পেটে চিরতার পানি পান করলে পেট পরিষ্কার থাকে। এটির স্বাদ তেতো , তাই খাওয়ার সময় পরিমান মতো মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। তবে মনে রাখা দরকার, দিনে একগ্লাসের বেশি চিরতার পানি খাওয়া ঠিক না। কালমেঘ পাতার রস একটানা এক মাস বা তার বেশি খাওয়া ঠিক নয়। এক্ষেত্রে হিতের বিপরীত হতে পারে।
কালমেঘ পাতা খাবার সবথেকে ভালো নিয়ম হলো সকালে খালিপেটে খাওয়া ২-৩ টি কালমেঘ পাতা চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়া যায় অথবা কালমেঘ পাতার ভালো করে বেঁটে তার রস এক দু চামচ খাওয়া যেতে পারে। এর মধ্যে আর একটি হলো কালমেঘ পাতাকে ভালো করে ধুয়ে গরম জলে কিছুক্ষন ভিজিয়ে রাখতে হবে দিয়ে সেই জল চুমুক দিয়ে পান করেও খাওয়া যায়।
সারাদিনে এক চা চামচ কালমেঘ পাউডার খেতে পারেন। বিকল্পভাবে, প্রতিদিন ¼ থেকে ½ টেবিল চামচ দুই ডোজ নিন। রসের জন্য আট থেকে দশটি পাতা এক কাপ জলে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। কালমেঘ ক্যাপসুলও পাওয়া যায়। যাইহোক, আপনার প্রয়োজনের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিমাণ নির্ধারণ করতে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ভাল।
কালমেঘ পাতার রস বানানোর জন্য এটি ১৫-৩০ মিলি বা ২-৩ টেবিল চামচ গরম পানিতে মিশিয়ে তার সাথে লবঙ্গ বা দারুচিনি যোগ করতে পারেন। এটি তেঁতো হওয়ার কারণে এটির সাথে মধু মিশিয়ে নেওয়া যায়। কালমেঘ পাতার মধ্যে থাকা স্যালিসিলিক নির্যাস একটি টনিক হিসেবে কাজ করে থাকে। এই নির্যাস দিনে দুইবার সেবন করতে পারলে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা সম্ভব।
কালমেঘ পতা কিভাবে কাজ করে
কালমেঘ পাতা খুবই উপকারি একটি ভেষজ উদ্ভিদ যদিও স্বাদ তোতো। কিন্তু এতে রয়েছে নানান গুণ।কালমেঘ পাতার ডালপালা ধুয়ে পরিষ্কার করে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ওই পানি পান করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।কালমেঘে অ্যানড্রোগ্রাফোলাইড, ফ্ল্যাভোনয়েড এবং টেরপেনয়েড সহ বিভিন্ন ধরনের সক্রিয় যৌগ রয়েছে। এন্ড্রোগ্রাফোলাইড হলো কালমেঘের প্রধান সক্রিয় যৌগ।জেনে নিন কালমেঘ পাতা কিভাবে কাজ করেঃ
- প্রদাহজনক সাইটোকাইন উৎপাদনে বাধা দিয়ে শরীরে প্রদাহ কমায়।
- ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাকের মতো অণুজীবের বৃদ্ধিকে হত্যা বা বাধা দেয়।
- টক্সিন থেকে ক্ষতি রোধ করে এবং লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে লিভারকে রক্ষা করে।
- এছাড়াও কালমেঘ পাতা ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়া রোগের প্রতিরোধক হিসেবেও কাজ করে।
- শ্বেত রক্ত কোষের কার্যকলাপ বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যা সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
- অনিয়মিত মাসিক এর সমস্যা বা এর থেকে হওয়া নানা রকম অবাঞ্ছিত সমস্যার ক্ষেত্রে কালমেঘ পাতার রস উপকারী।
- কালমেঘ পাতা রক্তকে পরিশুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। ফলত আমাদের ত্বকের নানারকম সমস্যার ক্ষেত্রে কালমেঘ পাতা অত্যন্ত কার্যকরী। এছাড়া কালমেঘ পাতা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
- কালমেঘ পাতা নিয়মিত সেবন আমাদের শারীরিক শক্তি ও কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
- আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে কুষ্ঠ রোগ এবং কলেরার চিকিৎসা করতে কালমেঘ পাতা ব্যবহৃত হয়।
- সাপ বা বিছে এই ধরনের বিষাক্ত প্রাণীর কামড়ের উপশম হিসেবে কালমেঘ পাতার সাথে পুরো গাছ টি-ই ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
খালি পেটে কালমেঘ পাতা খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে কালমেঘ পাতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। সাধারণত কালমেঘ পাতা সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে সে পানি পান করা হয়। নিয়মিত সকালে খালি পেটে কালমেঘ পাতার পানি পান করলে পেট পরিষ্কার থাকে। কালমেঘ পাতা শরীরের বিভিন্ন অংশের জ্বালাপোড়া দূর করে। জ্বর, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্যানসার, পাইলস, চর্মরোগ ও অন্ত্রের কৃমি দূর করে। একইসঙ্গে চিরতা লিভার ও পাকস্থলীর কার্যক্ষমতা বাড়ায়, ক্ষুধা উদ্দীপক এবং হজমে সহায়তা করে। জেনে নিন খালি পেটে কালমেঘ পাতা খাওয়ার উপকারিতাঃ২। কালমেঘ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। কারণ কালমেঘ পাতা রক্তে চিনির পরিমাণ কমায়। ব্লাডের সুগার লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া কালমেঘ পাতার পানি রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয় অনেকটাই।
৩। অনেকেরই মারাত্মক অ্যালার্জির সমস্যা থাকে। অ্যালার্জির জন্য শরীর ফুলে যায়, চোখ ফুলে যায়। শরীরে র্যাশও দেখা যায় অনেক সময়। কালমেঘ পাতা এক্ষেত্রে উপকারী। রোজ সকালে খালি পেটে কালমেঘ পাতার পানি পান করুন উপকার পাবেন।
৪। আজকাল অনেকেই লিভারের সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে কালমেঘ পাতার পানি উপকারী। কালমেঘ পাতার পানি লিভারকে পরিষ্কার রাখে। এ ছাড়া এই পানীয় লিভারের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ফ্যাটি লিভার ও আরও অন্যান্য সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে।
৫। কালমেঘ পাতা পরিষ্কারক হিসাবেও কাজ করে। কালমেঘ পাতার পানি শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে দেয়। এতে শরীর ভেতর থেকে পরিষ্কার হওয়ায় অনেকটাই ফ্রেশ অনুভূতি দেবে আপনাকে।
৬। যদি হজমের সমস্যা থাকে তাহলেও খেতে পারেন কালমেঘ পাতার পানি। এটি বদহজম, অ্যাসিডিটি থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া যদি আপনার কোষ্ঠ্যকাঠিন্যর সমস্যা থাকে তাহলে নিয়মিত কালমেঘ পাতার পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।
৭। অ্যানিমিয়ার সমস্যা কমাতেও কালমেঘ পাতার পানি খুব উপকারী। রক্ত কমে গেলে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। আর এ সমস্যায় কালমেঘ পাতার পানি দারুণ কাজ করে। কারণ কালমেঘ পাতার পানির রক্ত উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
৮।ত্বকের জন্যও কালমেঘ পাতা খুব উপকারী। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন চামড়ার ঘা, অন্যান্য ক্ষত সারাতে কালমেঘ পাতার পানি বেশ উপকারী। এই পানীয় ত্বকের অন্যান্য যেকোনো ইনফেকশন দ্রুত সারিয়ে তুলতে পারে।
৯। টাইফয়েড জ্বর হওয়ার পর আবারও অনেকের প্যারাটাইফয়েড জ্বর হয়। তাই টাইফয়েড জ্বরের পরে কালমেঘ পাতার রস খেলে যথেষ্ট উপকার পাওয়া যায়।
১০। কালমেঘ পাতার রস কৃমিনাশক। তারুণ্য ধরে রাখতেও কালমেঘ পাতার গুরুত্ব অপরিসীম। শরীরের ঝিমুনিভাব, জ্বরজ্বর লাগা দূর করে কালমেঘ পাতার রস।
আয়ুর্বেদিক ওষুধে কালমেঘের ঐতিহ্যগত ব্যবহার
কালমেঘ পাতা ঐতিহ্যগতভাবে ভারত ও চীনে সাধারণ সর্দি এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য ব্যবহার করা হয়।কালমেঘের পাতা যেকোন রকমের ঠান্ডালাগা জনিত রোগের নিরাময়ের জন্য বেশ উপকারি। এছারাও গলাব্যাথা, গলা বসে যাওয়া এবং টন্সিলের জন্য বেশ কার্যকরী ।কালামেঘের পাতা পরিষ্কার করে ধুয়ে রস করে খেতে হবে, এর স্বাদ তিতে, তাই এর রস খাওয়ার পরে এক চামচ মধু খেয়ে নিতে পারেন। জেনে নিন আয়ুর্বেদিক ওষুধে কালমেঘের ঐতিহ্যগত ব্যবহারঃ
১. ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু জ্বর এবং চিকুনগুনিয়া সহ জ্বরের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়।
২. লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে এবং হেপাটাইটিস এবং সিরোসিসের মতো লিভারের রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়।
৩. হজমকে উদ্দীপিত করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া এবং আমাশয়ের মতো হজমজনিত ব্যাধিগুলির চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়।
৪. ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি এবং কাশির মতো শ্বাসকষ্ট দূর করতে ব্যবহৃত হয়।
৫. একজিমা, সোরিয়াসিস এবং ফোঁড়ার মতো ত্বকের সমস্যাগুলির চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়।
৬. জয়েন্টে ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিস সহ শরীরের প্রদাহ কমাতে ব্যবহৃত হয়।
৭. মূত্রনালীর সংক্রমণ এবং অন্যান্য প্রস্রাবের ব্যাধিগুলির চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়।
৮. সামগ্রিক অনাক্রম্যতা উন্নত করতে এবং সংক্রমণ এবং রোগ প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়।চুলের যত্নে কালমেঘ পাতার উপকারিতা
চুলের সমস্যায় ভোগেন নি এরকম মানুষ পাওয়া খুবই মুশকিল। আমরা আমদের চুলকে সুন্দর রাখার জন্য অনেক কিছু করি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার্লারে গিয়ে কাটিয়ে দিই। কিন্তু সবসময় তেমন ভালো ফল পাওয়া যায় না। অনেক প্রোডাক্ট ব্যবহার করি কিন্তু অনেক সময় আবার সঠিক প্রোডাক্টটি বুঝতেও পারি না। যার ফলে চুলের নানান সমস্যা দেখা যায়। কিন্তু আমরা যদি বাড়িতেই কিছু ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করি, তাহলে চুলের সমস্যাও কমে। আবার চুল সুন্দর ঘনও হয়।
কালমেঘ পাতার নাম নিশ্চয়ই সবাই শুনেছেন? কিন্তু ব্যবহার করেছেন কি কখনও? চুলের বিভিন্ন সমস্যায় ও সুন্দর চুলের ক্ষেত্রে কালমেঘ পাতার ভূমিকা কিন্তু যথেষ্ট। আসুন তাহলে জেনে নিই কালমেঘ পাতার কিছু ঘরোয়া টিপস যা চুলের জন্য খুবই উপকারী।
১. ঘন চুলঃ চুলকে ঘন কালো করার জন্য আমরা বাজারের হেয়ার ডাই ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এর জন্যই আরও তাড়াতাড়ি চুলের স্বাভাবিক রঙ নষ্ট হয়ে যায়। আর খুব ক্ষতিও হয়। এক্ষেত্রে কালমেঘ পাতার ভূমিকা কিন্তু অনবদ্য। চুলকে ঘন কালো করার জন্য। কিছু কালমেঘ পাতা পরিষ্কার জলে ধুয়ে, রস করে সেই রস স্ক্যাল্পে এবং চুলে লাগান। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দু থেকে তিন দিন করুন। চুল হবে ঘন কালো।
২. চুল পরা কমায়ঃ যদি চুল পরে তাহলে একটু কালমেঘ পাতা বেটে নিন ভালো করে। তার সঙ্গে মধু মিশিয়ে পেস্ট বানান। সেটি ভালো করে মাথায় লাগান। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। বা কালমেঘ পাতার রস করে তাতেও মধু মিশিয়ে লাগাতে পারেন। এতে নতুন চুল গজাবে। আর চুল হবে ঝলমলে সুন্দর।
৩. ইনফেকশন বা চুলকানি থেকে চুলের সুরক্ষাঃ মাথায় অন্যান্য ইনফেকশন, যেমন চুলকানি বা অন্য কিছু সমস্যা হলে, ভালো করে আগে কিছুটা জল ফুটিয়ে নিন। তারপর ২০ থেকে ৩০টি কালমেঘ পাতা তাতে দিয়ে সারারাত রাখুন। তারপর সেই জলটা সপ্তাহে দুদিন ব্যবহার করুন। সেই জল দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। মাথার যেকোনো ইনফেকশন চুলকানি, বা মাথার ভেতর ফুসকুড়ি কমবে।
৪. নরম চুলঃ একটু মেথি ভিজিয়ে রাখুন। মেথি ভিজিয়ে নরম হয়ে গেলে, এতে কালমেঘ পাতা মিশিয়ে পেস্ট বানান। এর সাথে যোগ করুন একটু লেবুর রস আর একটু টকদই। ভালো করে পেস্ট বানান। আবার চুলে তেল মেখে তার ওপর এই পেস্ট লাগান। আধঘণ্টা রাখুন। তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এটি চুলকে সুন্দর রাখার জন্য একটি উপকারি হেয়ার প্যাক।
৫. চুলের যত্নঃ একটু কালমেঘ পাতার রস, একটু আমলকীর রস, আর একটু লেবুর রস ভালো করে মেশান। পারলে একটু টকদইও দিতে পারেন। ভালো করে পেস্ট বানিয়ে চুলে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়াও কালমেঘ পাতা ভালো করে বেটে পেস্ট বানিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। এতে খুস্কি দূর হবে। চুল হবে ঘন সুন্দর।
কালমেঘ পাতা আপনার চুলের পরম বন্ধু হয়ে উঠতে পারে যদি নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। কি ভাবছেন? সত্যি সত্যি চুলের যত্ন নিতে কালমেঘ পাতার জবাব নেই। তাই দেরি না করে আজ থেকে ব্যবহার করুন কালমেঘ পাতা আর হয়ে উঠুন সুন্দর চুলের মালকিন।
চিরতা ও কালমেঘ কি এক
আমাদের মধ্যে অনেকের প্রশ্ন রয়েছে যে চিরতা ও কালমেঘ একই কিনা। চিরতা এবং কালমেঘ একই জিনিস। এই গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Andrographis paniculata। ইংরেজিতে Creat অথবা Green Chiretta নামে বেশি পরিচিত। মূলত চিরতার আরেকটি নাম হলো কালমেঘ। এর আরেকটি প্রচলিত নাম হলো আলুই। স্থানের ভিন্নতার ওপর নির্ভর করে এর নাম পরিবর্তন হয়। অনেক স্থানের চিরতা বলে চিনে আবার অনেকেই কালমেঘ বললে চিনে থাকেন। তবে কালমেঘ ও চিরতা একই ভেষজ উদ্ভিদ। আশা করি চিরতা ও কাল মেঘ কি এ সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
কালমেঘ কি কিডনির ক্ষতি করে
কালমেঘ পাতায় প্রচুর পরিমাণে গুন রয়েছে। এটি মূলত ভিন্ন ধরনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন যাবত ধরে। এটি মূলত কৃমি, ডায়াবেটিকস, লিভারের সমস্যা, পেটের সমস্যা, চর্মরোগ জ্বরের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত হয়। তবে কালমেঘ পাতা অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে কিডনির ব্যাপক সমস্যা তৈরি হতে পারে। এর কারণ হলো কালমেঘ পাতায় একটি উপাদান থাকে যে উপাদান টির নাম অ্যালকালয়েডস।
মূলত এই অ্যালকালয়েডস উপাদানের কারণে আমাদের কিডনির কোষগুলোর ক্ষতি হতে থাকে। এজন্য আপনার যদি কিডনির সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি এই কালমেঘ পাতা থেকে যথা সম্ভব না থাকার চেষ্টা করবেন। কারণ কিডনি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গুলোর মধ্যে অন্যতম। কিডনি আমাদের শরীরের চ ছাঁকনি যন্ত্র হিসেবে পরিচিত। এটি কিডনির উপরে চাপ বাড়াতে পারে।
চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক কালমেঘ পাতা কি কিডনির কি কি ক্ষতি করে এবং কালমেঘ পাতা আমাদের কিডনির ক্ষতি করলেও কি ধরনের ক্ষতি করে থাকে। কালমেঘ পাতা আমাদের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করে থাকে তবে যে ক্ষতিগুলো আমাদের কিডনির জন্য খুবই মারাত্মক সেই কারণগুলো সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
- বমি বমি ভাব
- শ্বাসকষ্ট
- শরীর ফুলে যাওয়া
- প্রস্রাবের রঙের পরিবর্তন
- মাথাব্যথা
- ক্ষুধামন্দা
- প্রস্রাবের সাথে রক্ত আসা
- ক্লান্তি
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
আশা করি বুঝতে পেরেছেন যদি আপনার কিডনি রোগের সমস্যা থাকে আর আপনি যদি কালমেঘ পাতা খান, তাহলে আপনার কতগুলো ক্ষতি হতে পারে। এজন্য সব সময় চেষ্টা করবেন কালমেঘ পাতা না খাওয়ার যদি আপনার কিডনি সমস্যা থেকে থাকে। কালমেঘ পাতা কি কিডনির ক্ষতি করে নাকি ক্ষতি করে না আশা করি আপনারা এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বুঝতে পেরেছেন এবং কি কি ক্ষতি করে তাও জানতে পেরেছেন।
তবে আপনার যদি কালমেঘ পাতা খাওয়ার খুবই প্রয়োজন হয় কিংবা চিরতা খেতে খুবই মন যায় তাহলে আপনি আপনার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। তার নির্দেশনা অনুসারে সামান্য পরিমাণ কালমেঘ পাতা খেতে পারেন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন চিকিৎসকেরা কখনোই আপনাকে কালমেঘ পাতা খেতে বলবে না যদি আপনার কিডনির সমস্যা থাকে।
কালমেঘ সিরাপ এর উপকারিতা
কালোমেঘ সিরাপ অত্যন্ত কার্যকরী দুইটি মূল্যবান ও অত্যন্ত কার্যকরী ভেষজ উপদানে প্রস্তুত একটি জ্বর নিরাময় ও লিভারের শক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকরী সিরাপ। এতে ব্যবহৃত ভেষজগুলো সকল প্রকার জন্ডিস দুর করে, জ্বর, ম্যালেরিয়া জ্বর, আন্ত্রিক জ্বর উপশম করে, পিত্ত নিঃসরন স্বাভাবিক করে, ডায়াবেটিস এ সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রন করে, ক্রিমিনাশক, ভাইরাল হেপাটাইটিস এর উপসর্গ উপশম করে।
কোষ্ঠকাঠিন্যে ও সকল প্রকার চর্মরোগ চিকিৎসায় দীর্ঘকাল ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।কালোমেঘ সিরাপ লিভারের যাবতীয় গোলযোগ দূর করতে বিশেষভাবে উপকারী ঔষধ। কালোমেঘ সিরাপ বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও জ্বর, ক্রিমি, অজীর্ণ, পেটফাঁপা, আমাশয়, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, জন্ডিস, ক্ষুধামান্দ্য, যকৃতের প্রদাহ প্রভৃতি রোগে এডি কালোমেঘ সিরাপ অত্যন্ত কার্যকরী। বাচ্চাদের জন্য এটি একটি অতি কল্যাণকর ঔষধ।
কালমেঘ সিরাপ খাওয়ার নয়ম
শিশুদের জন্য১ চা চামচ ঔষধ দৈনিক ২-৩ বার আহারের পর সেব্য। প্রাপ্ত বয়স্করা ২-৩ চা চামচ ঔষধ দৈনিক ২ বার আহারের পর অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেব্য।
বিশেষ নির্দেশনা ও সতর্কতাঃ ইউনানী সিরাপ এডি-কালোমেঘ গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকারী মায়েদের সেবন নিষিদ্ধ।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ ইউনানী সিরাপ এডি-কালোমেঘ এ তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
বিরূপ প্রতিক্রিয়াঃ ইউনানী সিরাপ এডি-কালোমেঘ এ তেমন কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি, তবে এর যে কোন উপাদানের প্রতি সংবেদনশীল রোগীদের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ ইউনানী সিরাপ এডি-কালোমেঘ এ তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
বিরূপ প্রতিক্রিয়াঃ ইউনানী সিরাপ এডি-কালোমেঘ এ তেমন কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি, তবে এর যে কোন উপাদানের প্রতি সংবেদনশীল রোগীদের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।
কালমেঘ পাতা সম্পর্কে সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর
আপনারা যারা ভাইরাল জ্বর সম্পর্কিত সচোরাচর যে প্রশ্নগুলা গুগলে কিংবা কোনো ওয়েব সাইটে এসে সার্চ করে থাকেন তার সংক্ষেপে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর নিচে তুলে ধরা হলো। যা ঋতু পরিবর্তনের সময় ভাইরাল জ্বর থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে আশা করছি আপনারা সংক্ষিপ্ত ধারনা লাভ করতে পারবেনঃ
প্রশ্নঃ কালমেঘ কিভাবে খেতে হয়?
উত্তরঃ কালমেঘ পাতা ভালো করে ধুয়ে হালকা গরম জল মিশিয়ে ছাঁকনিতে ছেঁকে নিতে হবে। এই কালমেঘ পাতার রস যেকোনো রকম ঠাণ্ডালাগা জনিত রোগ খুব তাড়াতাড়ি সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। তবে এর স্বাদ অত্যন্ত তিত্কুটে, তাই রস খাওয়ার সাথে সাথে এক চামচ মধু খেয়ে নিলে ভালো।
প্রশ্নঃ কালমেঘ খেলে কি ওজন কমে?
উত্তরঃ কালমেঘের জল পান করলে মেটাবলিক রেট বাড়ে। মেটাবলিজমের উন্নতি ওজন কমাতে সাহায্য করে। দ্রুত বিপাকের কারণে ফ্যাট বার্ণ দ্রুত ঘটায়। এছাড়াও কালমেঘ পেট সংক্রান্ত সমস্যা যেমন অ্যাসিডিটি, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
উত্তরঃ কালমেঘ সিরাপ হলো একটি হোমিওপ্যাথিক ওষুধ যা বদহজম, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্যে ব্যবহৃত হয় এবং বিভিন্ন ধরনের হেপাটিক এবং গ্যাস্ট্রিকের অভিযোগ কভার করে। এই সিরাপটি ক্ষুধাও উন্নত করে এবং এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
প্রশ্নঃ কালমেঘ কতদিন খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ কালমেঘ পাতা একটানা ১০-১৫ দিনের বেশি খাওয়া ঠিক না। কেননা এতে হিতের বিপরীত হতে পারে যেমন-কিডনির সমস্যা ও যৌন সমস্যা হতে পারে।
উত্তরঃ কালমেঘ পাতা একটানা ১০-১৫ দিনের বেশি খাওয়া ঠিক না। কেননা এতে হিতের বিপরীত হতে পারে যেমন-কিডনির সমস্যা ও যৌন সমস্যা হতে পারে।
কালমেঘ পাতার অপকারিতা
উপকারের পাশাপাশি কালমেঘ পাতা মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কিছু অপকারিতাও আছে। প্রয়োজনের চাইতে বেশি কালমেঘ পাতার রস খাওয়া বা ব্যবহার করা দুটোই হিতে বিপরীত হতে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে যেকোন জিনিস ব্যবহারের একটা নির্দিষ্ট মাত্রা থাকে। কালমেঘ পাতা অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়াও আবার উচিত নয়। কালমেঘ পাতা খাওয়ার অপকারিতা ও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া এড়াতে দৈনিক ২ থেকে ৭ গ্রামের বেশি খাওয়া যাবেনা।
তবে গর্ভবতী মা বা শিশুকে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ বা ভেষজ খাওয়ানো উচিত নয়। দীর্ঘদিন রোগে ভুগছেন এমন রোগী বা, ক্রিটিকাল অসুখে ভুগছেন এমন ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কালমেঘ পাতা খাওয়া বা ব্যবহার করা উচিত। নির্দিষ্ট মাত্রায়, নিয়ম মেনে পরিমিত পরিমাণে কালমেঘ পাতা খাওয়া অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারী। জেনে নিন কালমেঘ পাতার অপকারিতা সম্পর্কেঃ
- কালমেঘর পাতা অতিরিক্ত সেবনে অ্যালার্জি হতে পারে।
- অন্যান্য ওষুধের সাথে কালমেঘ গ্রহণ করলে মিথস্ক্রিয়া হতে পারে। তাই আপনি যদি কোনো ওষুধ খান তাহলে কালমেঘ নেওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
- কালমেঘের অতিরিক্ত সেবনে নিম্ন রক্তচাপ এবং সুগার কমে যেতে পারে। তাই সময় সময় রক্তচাপ এবং সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করতে থাকুন।
- অতিরিক্ত সেবনে ক্ষুধা হ্রাস হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় কালমেঘ কালমেঘ পাউডার খাওয়া এড়িয়ে এড়িয়ে চলাই ভালো।
- প্রতিদিন কালমেঘ পাতার রস খেলে নির্দিষ্ট বয়সে মাথা ব্যথা এবং ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। এর থেকে গর্ভপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।
- এটি ডিম্বস্ফোটনকে বাধা দেয় এবং শুক্রাণুর সংখ্যা কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি প্রোজেস্টেরন উত্পাদনে বাধা দেয়।
- কালমেঘের নির্যাস অতিরিক্ত গ্রহণ করলে অলসতা হতে পারে।
- কিছু লোকের মধ্যে কালমেঘের কারণে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হতে পারে, ছোটছোট ত্বকের ফুসকুড়ি থেকে শুরু করে উচ্চ মাত্রার কারণে অ্যানাফিল্যাক্সিস নামক একটি সম্ভাব্য অবস্থা পর্যন্ত হতে পারে।
কালমেঘ পাতার উপকারিতা সম্পর্কে শেষ কথা
কালমেঘ পাতা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী- এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এর স্বাদ তেতো হওয়ায় খাওয়ার সময় বমি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অল্প অল্প করে ধীরে সুস্থে খাওয়া উচিত। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিরতা খাওয়া ভাল। কারণ কালমেঘ পাতা ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ব্লাড সুগার লেভেল কমিয়ে আনে।
অতিরিক্ত মাত্রায় কালমেঘ পাতা খাওয়া হলে দেহে লো ব্লাড সুগারের প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। কালমেঘ পাতা তিক্ত স্বাদযুক্ত গ্লুকোসাইড থাকায় গর্ভবতী অবস্থায় কালমেঘ পাতা খাওয়া উচিত নয়। এক্ষেত্রে মা ও সন্তান উভয়ের সমস্যা হতে পারে। চিরতা একটানা ১৫-৩০ দিন খাওয়া হলে, সমপরিমাণ দিন বিরতি নিয়ে আবার খাওয়া উচিত। এতে কালমেঘ পাতা থেকে আশানুরূপ উপকারীতা পাওয়া যাবে।
স্বাদ তেতো হলেও কালমেঘ পাতা রয়েছে নানান গুণ। শুধু তিতা বলে কালমেঘ পাতা অবহেলার কোনো সুযোগ নেই। আল্লাহ তা’য়ালা বিভিন্ন রোগের উপশমের জন্যই একে তিক্ত করে সৃষ্টি করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত তিতা খান তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে ছোট-বড় নানা রোগ-বালাইয়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তাই চির জীবন সুস্থ থাকতে তিতা হলেও কালমেঘ পাতা ভাল।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url