টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর উপায় জেনে নিন
টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর উপায় জানতে আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে
হবে। টেস্টোস্টেরন হচ্ছে এক ধরনের হরমোন যা পুরুষের মধ্যে পুরুষালি বৈশিষ্ট্যের
বিকাশ ঘটায়। এ কারণে একে অ্যান্ড্রোজেন বা সেক্স হরমোন বা লিঙ্গ নির্ধারণী হরমোনও
বলা হয়। এই হরমোন অণ্ডকোষে তৈরি হয়।
নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার মধ্যেই টেস্টোস্টেরন হরমোন থাকে। তবে পুরুষের মধ্যে
এই হরমোনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেশি থাকে। যার কারণে পুরুষের প্রজনন
কার্যক্রম বিকাশ লাভ করে ও যৌনাঙ্গ গঠিত হয়। টেস্টোস্টেরনের ফলে হাড় এবং মাংস
পেশীর গঠন প্রভাবিত হয়।
ছেলেদের হাড় ও মাংসপেশীর ঘনত্ব বাড়ে, রক্তে লোহিত কণিকার উৎপাদন বাড়ে, কণ্ঠস্বরে
পরিবর্তন হয়ে তা ভারী হয়, মুখে দাড়ি হয়, শরীরের অন্যান্য অংশ লোম বাড়ে, যৌনাঙ্গের
বৃদ্ধি ঘটে। একই সাথে যৌন ক্রিয়া এবং প্রজনন সক্ষমতা জাগ্রত হয়। পুরুষের
টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নিন।
পেইজ সূচিপত্রঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর উপায় জেনে নিন
- টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর উপায়
- টেস্টোস্টেরন হরমোনের কাজ কি
- টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ব্যায়াম
- মেথি কীভাবে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি করে
- টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট
- টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির খাবারের তালিকা
- টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার লক্ষণ
- সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর
- টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার কারণ
- টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর উপায় সম্পর্কে শেষকথা
টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর উপায়
টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর উপায় হলো জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করা। শরীরের
টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি থাকলে শারীরিক অক্ষমতা, দুর্বলতা, ডিপ্রেশন, ওজন
বৃদ্ধি, চুলপড়া নিম্নকর্ম ক্ষমতা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা গুলি
আপনার মধ্যে দেখা দিলে টেস্টোস্টেরন পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নিন। চলুন জেনে
নেওয়া যাক পুরুষ হরমোন বৃদ্ধি অর্থাত্ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করার
কয়েকটি টিপস-
নিয়মিত ব্যায়ামঃ নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধির
অন্যতম ভূমিকা পালন করে।যেকোনো ধরনের ব্যায়াম বা শরীরচর্চা রক্তে
টেস্টোস্টেরন বাড়াতে সহায়ক। তবে নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম, যেমন স্কোয়াট,
ডেডলিফট, বেঞ্চ প্রেস, পুশ আপ বেশি উপকারী।নিয়মিত ব্যায়াম করা
টেস্টোস্টেরোন বাড়ানোর একটি কার্যকর উপায়। ওজন প্রশিক্ষণ, ক্যালিস্টেনিক্স,
সার্কিট ট্রেনিং, প্রাণায়াম ও ধ্যানের মাধ্যমে শরীরকে সক্রিয় ও সুস্থ রাখা
যায়। বয়স ও জীবনধারার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই ব্যায়ামগুলি করা উচিত।
দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকাঃ দুশ্চিন্তার কারণে টেস্টোস্টেরন হরমোন লেভেল
কমে যায় তাই দুশ্চিন্তা মুক্ত থেকে সঠিক খাবার এবং ভালোভাবে বিশ্রাম নিতে
হবে।
খাদ্যাভ্যাসঃ টেস্টোস্টেরন বাড়ানোর জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।খাবারে প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বাইড এর পরিমাণ ঠিক রাখতে
হবে। খাবারে প্রোটিন পেশী, স্কিন, ব্লাড সুরক্ষা দেয় অন্যদিকে হরমোন
উত্পাদক হিসেবেও কাজ করে। ফ্যাট টেস্টোস্টেরন উত্পাদক হিসাবে কাজ করে
অন্যদিকে কার্বোহাইড্রেট টেস্টোস্টেরন লেভেলকে অপটিমাইজ করে।
সান বাথঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যের আলোতে থাকতে হবে অথবা ভিটামিন ডি
গ্রহণ করা, কারণ সূর্যের আলোতে শরীরে ভিটামিন ডি উত্পাদিত হয়। ভিটামিন ডি
হলো প্রাকৃতিক টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য সেরা মাধ্যম। তাই নিয়মিত
সকালের দিকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রোদে থাকা উচিত।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমঃ নিয়মিতভাবে ঘুম টেস্টোস্টেরনের উত্পাদন
বৃদ্ধি হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সুস্থ মানুষের উপর সাপ্তাহিক পরীক্ষায়
দেখা গেছে যারা পাঁচ ঘণ্টার কম ঘুমিয়েছে তাদের টেস্টোস্টেরন হরমোন ১৫% কমে
গেছে অন্যদিকে যারা পাঁচ ঘণ্টার বেশি ঘুমিয়েছে তাদের টেস্টোস্টেরন লেভেল ১৫%
বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই নিয়মিত ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।
জিংক, ম্যাগনেসিয়ামঃ এই জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে টেস্টোস্টেরন হরমোন
লেভেল অনেকবৃদ্ধি পায়। লেটুসপাতা প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে এবং
বাদামে প্রচুর পরিমাণে জিংক রয়েছে আপনার টেস্টোস্টেরন হরমোনকে বৃদ্ধি করবে।
আদা ও অশ্বগন্ধাঃ অশ্বগন্ধা গ্রহণ করলে ১৭% শতাংশ টেস্টোস্টেরন হরমোন
এবং আদা খেলে প্রাকৃতিকভাবে টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি পায়।
নেশা বা মাদকদ্রব্যঃ এজাতীয় অভ্যাস থাকলে তা টেস্টোস্টেরন হরমোনের
বৃদ্ধির বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে প্রাকৃতিক জল গ্রহণ করা কারণ প্লাস্টিক
বোতলে কেমিক্যাল থাকে যা টেস্টোস্টেরোন হরমোনের বাধা সৃষ্টি করে।
ওজন কমানোঃ শরীরে উচ্চতার তুলনায় অধিক ওজন থাকলে টেস্টেস্টেরন হরমোন
লেভেল কমে যায় তাই ওজন কমিয়ে ফেললে টেস্টোস্টেরন লেভেল বৃদ্ধি পেতে থাকে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণঃ মানসিক চাপ দিন দিন মানুষের যেন সবচেয়ে বড়
শত্রু হয়ে উঠছে। আপনি যদি ক্রমাগত মানসিক চাপে থাকেন, তাহলে এটি টেস্টোস্টেরন
হরমোনের মাত্রাও কমিয়ে দেবে।
ভিটামিন ডিঃ ভিটামিন ডি-র অভাবে টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ কমে যেতে পারে।
রোদে সময় কাটালে শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাব পূরণ হয়। সঙ্গে ভিটামিন ডি যুক্ত
খাবার এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন। একইসঙ্গে জিঙ্ক
এবং ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবারও ডায়েটে রাখতে হবে।
ফ্যাটযুক্ত খাবারঃ সঠিক ফ্যাটের উৎস যেমন অলিভ অয়েল, বাদাম এবং
অ্যাভোকাডো টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট
টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে সহায়ক এনজাইমগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
টেস্টোস্টেরন হরমোনের কাজ কি
টেস্টোস্টেরন হরমোনের কাজ হলো পুরুষদের লিঙ্গ গঠন এবং কার্যক্রমের প্রধান
হরমোন হিসাবে কাজ করে টেস্টোস্টেরন হরমোন। টেস্টোস্টেরন হরমোন পুরুষ প্রজনন
অঙ্গের বিকাশ। এই হরমোন পুরুষদের দেহ গঠনে চুল, শরীরের ত্বক, কণ্ঠস্বর, পেশী
শক্তিশালী করুন, স্থায়ী লিঙ্গের উন্নতি ও প্রতিরোধশীলতা তৈরী করে।
টেস্টোস্টেরন হরমোন বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পন্ন করে যাহা নিম্নরূপ-
লিঙ্গ বৃদ্ধিঃ এই টেস্টোস্টেরন হরমোন আমাদের শরীরের লিঙ্গাত্বক
মন্ডলকে উন্নত করে। প্রাথমিক লিঙ্গকে উন্নত করে স্থায়ী লিঙ্গের উন্নতিতে
পরিণত করে। শুধু তাই নয় এর ফলে সামাজিক যৌন প্রকৃতি সাথে সংযোগ স্থাপন করতে
সাহায্য করে।
প্রজননঃ টেস্টোস্টেরন, এস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন ইত্যাদি Hormone
আমাদের প্রজনন প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভুমিকা রাখে। এদের ছাড়া বংশবৃদ্ধি সম্ভব হতো
না।
মেজাজঃ এই হরমোন বৃদ্ধির ফলে আপনার মন এবং মেজাজ সবকিছুই শান্ত রাখে।
মাংসপেশী বৃদ্ধিঃ আপনি যখন বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করেন তার ফলে আপনার
মাংসপেশির বৃদ্ধি ঘটে। এই মাংসপেশী বৃদ্ধি যেন আপনার শারীরিক কার্যকলাপ ও
দৈহিক কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
হাড়ঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ফলে আপনার হাড়কে মজবুত ও শক্ত করে।
এতে আপনার শারীরিক কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
লিঙ্গাঙ্গঃ এই টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ফলে মেয়েদের লিঙ্গাঙ্গ
উন্নতির উত্থান করে। এর ফলে মেয়েরা যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যৌন উপভোগ করতে
অনেক আনন্দ পায়।
রক্ত উৎপাদনঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ফলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ
সামগ্রী নির্মাণ এবং রক্ত উৎপাদনে স্থায়ী ভূমিকা পালন করে।
বৃদ্ধি ও শরীর গঠনেঃ গ্রোথ-হরমোন, সেক্স-হরমোন, থাইরয়েড-হরমোন আমাদের
শরীরে বৃদ্ধি, গঠন ও পরিবর্তনে সাহায্য করে থাকে।
তাছাড়া, টেস্টোস্টেরন হরমোন মহিলাদের হাড় ও পেশি শক্তিতেও ভূমিকা
রাখে।টেস্টোস্টেরন হরমোন সামাজিক প্রতিরোধশীলতা, মানুষিক হিস্তি, মতবাদ
বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর প্রভাব বিস্তার করে।
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ব্যায়াম
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সবচেয়ে সাধারন ব্যায়াম হচ্ছে দৌড়ানো, সাইকেল
চালানো, দড়ি লাফ এবং সাঁতার কাটা মতো অ্যারোবিক ব্যায়ামও টেস্টোস্টেরনের
মাত্রা বাড়াতে উপকারী হতে পারে। টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর জন্য অন্যান্য
ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে হিল স্প্রিন্ট, মেডিসিন বল স্ল্যাম, প্লাইমেট্রিক
ব্যায়াম, পুশ-আপ এবং বারপিস।
হরমোন হল দেহের জৈব রাসায়নিক বার্তাবাহক যা শরীরের সাংকেতিক কার্যক্রম হিসেবে
কাজ করে। যৌনক্ষমতা, বিপাক ক্রিয়া, ঘুম, প্রজনন ক্ষমতা, মনোভাব সবকিছুই
নিয়ন্ত্রণ করে হরমোন। শরীরের বেড়ে ওঠা এবং মাংসপেশির গঠনের পেছনেও ভূমিকা
রয়েছে। তাই হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। যার সবচাইতে সহজ এবং
প্রাকৃতিক উপায় হল শরীরচর্চা।
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করতে ব্যায়াম একটি অতি কার্যকরী পদ্ধতি। যারা
নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বয়স বৃদ্ধির পরেও অনেক
বেশি থাকে। টেস্টোস্টেরন শরীরে মাংসপেশি গঠনে সহায়ক, তাই এমন ব্যায়াম করা
উচিত যা মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, ওয়েট লিফটিং, স্কোয়াট,
ব্রেঞ্জ প্রেস, এবং দৌড়ানো প্রভৃতি ব্যায়াম বেশ উপকারী।সাধারণভাবে
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য কিছু ব্যায়াম রয়েছে যেমন-
হাই ইনটেন্সিটি ইন্টারভাল ট্রেইনিংঃ এই ধরনের ব্যায়ামও টেস্টোস্টেরন
বৃদ্ধিতে সহায়ক। HIIT ব্যায়াম করতে হলে, সকালে ৬-৭ টার মধ্যে খোলা মাঠে
৩০-৬০ সেকেন্ড জোরে দৌড়াবেন এবং তারপর ১০-২০ সেকেন্ড বিশ্রাম নেবেন। এভাবে
পুনরায় দৌড়াবেন। প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট এই ব্যায়াম করুন। এর সাথে অন্যান্য
ব্যায়াম মিলিয়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ব্যায়াম করলে টেস্টোস্টেরনের
মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে।
স্ট্রেংথ ট্রেনিং ব্যায়ামঃ স্ট্রেংথ ট্রেনিং ব্যায়াম যেমন স্কোয়াট,
বেঞ্চ প্রেস, ডেডলিফ্ট এবং পুল-আপগুলি টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর জন্য সেরা
কিছু ব্যায়াম। ভারী ওজনের সাথে এবং একাধিক সেটের জন্য এই ব্যায়ামগুলি
টেসটোসটেরন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
হাঁটা চলাঃ আপনাকে নিয়মিত সকাল এবং বিকেল বেলা হাঁটাহাঁটি করতে হবে।
আপনি যদি নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করেন তাহলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এসব রোগ থেকে
নিরাপদে থাকতে পারবেন। তাছাড়া আপনি নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করলে হরমোন বৃদ্ধিতেও
এই ব্যায়ামটি কাজে লাগে।
দৌড়ানোঃ আপনাকে প্রতিদিন সকাল অথবা বিকেল বেলা যে কোন এক সময়
নিয়মিত ভাবে দৌড়াতে হবে। আপনি যদি নিয়মিত ভাবে দৌড়াতে থাকেন তাহলে দেখবেন
আপনার টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পেয়েছে। দৌড়ানো যে শুধু হরমোন বৃদ্ধিতে
কাজে লাগে তা কিন্তু নয় হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও দৌড়ানোটা বেশ
উপকারী।
সাইকেল চালানোঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির আরও একটি ব্যায়াম হচ্ছে
সাইকেল চালানো।তাই আপনাকে হরমোন বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ভাবে সাইকেল চালাতে
হবে।
দড়ি লাফঃ দড়ি লাফ দেয়াটাও হচ্ছে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির
ব্যায়াম। তাই আমরা হরমোন বৃদ্ধিতে এই ব্যায়ামটি করতে পারি।
সাঁতার কাটাঃ এই ব্যায়ামটি করলে হাড় শক্ত হয়। সাঁতার কাটার ফলে
আপনার মাংসপেশি নড়াচড়া করে সেই কারণেই এই ব্যায়ামটি করা উচিত। সাঁতার
কাটাও হরমোন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ভার উত্তোলনঃ শক্তি প্রদর্শন করা ব্যায়াম ভার উত্তোলন এই ব্যায়ামটি
আপনি করতে পারেন। এতে আপনার হরমোন বৃদ্ধি পাবে।
পুশ আপঃ আপনি যে প্রসাব করেন সেই প্রসাবের মাধ্যমে আপনার হরমোনের
মাত্রা বেড়ে যায়।তাই আপনি পুশ আপ করবেন এবং হরমোনের মাত্রাটা বাড়িয়ে
নিবেন। এ বিষয়ে আপনি ইউটিউবে ভিডিও দেখতে পারেন।
বেঞ্চ প্রেসঃ বেঞ্চ প্রেস এই ব্যায়ামটি আপনি নিয়মিত করে আপনার
হরমোনকে আপনি বৃদ্ধি করতে পারেন।
হিল স্প্রিন্টঃ আপনাকে নিয়মিত হিল স্প্রিন্ট ব্যায়ামটি করতে হবে।
তাহলে আপনার টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পাবে।
যোগ ব্যায়ামঃ আপনাকে বিভিন্ন ধরনের যোগ ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে
দেখবেন আপনার হরমোন বৃদ্ধি পেয়েছে।
মেথি কীভাবে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি করে
মেথি কীভাবে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি করে প্রশ্ন করে অনেকেই জানতে
চেয়েছেন। টেস্টোস্টেরন হলো সেক্স হরমোন। পুরুষদের দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের
মাত্রা বাড়াতে মেথি দারুণ কার্যকরী। পুরুষ এবং মহিলা- উভয়ের দেহেই এই
হরমোনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যৌন ক্রিয়ায় সাহায্য করার পাশাপাশি
এনার্জির মাবাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এবং ওবেসিটি ও ডায়াবেটিসের মতো কিছু শারীরিক
সমস্যার কারণে শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমতে শুরু করে।
সেক্স পাওয়ার বাড়ানো মানে টেস্টেটোরেন হরমোন বাড়ানোর ক্ষেত্রে মেথী কার্যকরী।
এই হরমোন কম থাকলে পুরুষের সেক্স করার ইচ্ছে কমে যায়, বউকে রাতে আদর করতে
ইচ্ছে করে না। তাই এই হরমোন বাড়াতে মেথী বেশ কার্যকরী। যাদের সেক্স হরমোন কম
বা ইচ্ছে করে না তাদের উচিত নিয়মিত মেথী পানি খাওয়া। সাধারণত প্রাকৃতিক উপায়ে
বা ঘরোয়া টোটকার মাধ্যমেই টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়ানোর চেষ্টা করেন।
আর এক্ষেত্রে অনেকেই ব্যবহার করেন হার্বাল সাপ্লিমেন্ট, যা মেথি থেকেই তৈরি
করা হয়।
সেক্স পাওয়ার বাড়ানোর ক্ষেত্রে ও পুরুষের বীর্যের শুক্রানু বাড়ানোর ক্ষেত্রে
বেশ উপকারী মেথী। মেথী রাতে পানিতে ভিজিয়ে সকালে মেথীসহ পানি খালি পেটে খেলে
পুরুষের বীর্যের শুক্রানু বাড়ে। তবে ৩ মাস লাগাতার খেতে হবে। যাদের বাচ্চা
কাচ্চা হচ্ছে না পুরুষের সমস্যার কারনে তারা তাদের শুক্রানু বাড়াতে ৩ মাস
মেথী গোটা বা গুড়া পানিতে রাতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খান। শুক্রানু বেড়ে
যাবে ইনশা-আল্লাহ।
পুরুষত্বের জন্য দায়ী মূল হরমোন হচ্ছে টেস্টোস্টেরন। পুরুষদের বয়স বাড়ার সঙ্গে
সঙ্গে ধীরে ধীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমতে থাকে। টেস্টোস্টেরন শরীরে কমে
যাওয়ার কারণে অ্যান্ড্রোপজ হয়। টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাবে পুরুষের যৌন চাহিদা,
মানসিক শক্তি ইত্যাদি ক্রমশ পরিবর্তিত হতে থাকে। গড়ে ৩০ বছর বয়স হওয়ার পরে এর
মাত্রা প্রতিবছর ১% করে কমে; সাধারণত ৭০ বছর বয়স্ক পুরুষের শরীরে এর মাত্রা
স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক কমে যায়। কারও কারও এ মাত্রা আরও কমে যেতে পারে।
টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে বিভিন্ন রকম লক্ষণ উপসর্গ দেখা যায়।
পুরুষের স্বাভাবিক যৌনাচরণের পরিবর্তন হয়। অনেকের অণ্ডকোষ দুটি আকারে-আকৃতিতে
ছোট হয়ে যায় এবং যৌন দুর্বলতা দেখা দেয়।
মানসিক পরিবর্তন ও কর্মস্পৃহা অনেক কমে যায়। কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলার
পাশাপাশি অনেকে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। যৌবনের যে উৎসাহ-উদ্দীপনা, মনের জোর,
সব জয় করার এক উদগ্র বাসনা; টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ কমার ফলে তা কোথায় যেন উবে
যায়। অনেকে কোনো কাজে একভাবে মনঃসংযোগ করতে পারেন না, স্মৃতিশক্তি ক্ষীণ হয়ে
আসে; এমনকি অনেকে বিভিন্ন মাত্রার বিষণ্ণতায় ভুগতে পারেন। ফলে স্মৃতিশক্তি
হ্রাসের পাশাপাশি কামবাসনা কমে যাওয়া, লিঙ্গোত্থানে সমস্যা, খারাপ মেজাজসহ
মনোযোগের অভাব দেখা দেয়।
শারীরিক অসুখ যেমন, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা, বিষণ্ণতা রোগ, অতিরিক্ত মদ্যপান
ইত্যাদি কিংবা ওষুধ সেবনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসাবেও এ রকম হতে পারে।
জীবনাচরণ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। যেমন- স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাদ্য
গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীর চর্চা করা ইত্যাদি। সুস্থ জীবনাচরণ শারীরিক শক্তি
ও মানসিক উদ্দীপনা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক।
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য অনেকগুলো সাপ্লিমেন্ট রয়েছে। টেস্টোস্টেরন
মূলত একটি যৌন হরমোন। এটি পুরুষের লিঙ্গ, অন্ডকোষ ইত্যাদি বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া এটি পুরুষের লোম গজাতেও সাহায্য করে থাকে।
মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের টেস্টোস্টেরন অনেক বেশি উৎপন্ন হয়। লিঙ্গ, বয়স এবং
স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে টেস্টোস্টেরন এর মাত্রা অনেক পরিবর্তিত হতে পারে।
টেস্টোস্টেরনের মাত্রা পুরুষদের ক্ষেত্রে ২০ বছর বয়সে সবচেয়ে বেশি থাকে। এরপরে
টেস্টোস্টেরনের মাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এজন্য অনেকে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করে
থাকে যা এর মাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়হা করে। নিচে এমন কিছু সাপ্লিমেন্টের নাম দেওয়া
হলো যেগুলো টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১. টেস্টোজেনঃ এতে বিভিন্ন কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান যেমন: মেথি, জিংক
এবং অন্যান্য আরো উপাদান উপস্থিত আছে। এটি আমাদের শরীরে টেস্টোস্টের০ন হরমোন
বৃদ্ধি করে, চর্বি কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরের শক্তির মাত্রা বাড়ায় পাশাপাশি
মেজাজ ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
২. প্রাইম মেলঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির এই সাপলিমেন্ট মূলত বয়স্ক
পুরুষদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এতে নেটল রুট নির্যাস, বায়োপেরিন এর উপস্থিতি
রয়েছে যা টেস্টো-স্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়ায় এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
৩. ডি- এ্যাসপার্টিক এসিডঃ এই সাপ্লিমেন্ট একটিভ ন্যাচারাল অ্যামাইনো
এসিড যা কম টেস্টোস্টেরনের মাত্রাকে বাড়াতে সক্ষম। টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির
সাপ্লিমেন্ট হিসেবে এটি বেশ জনপ্রিয়। গবেষণায় বলেছে, প্রাথমিকভাবে এটা গ্রন্থি
কোষ উদ্দীপক হরমোন এবং গ্রোথ- হরমোন বৃদ্ধির কাজে সহায়তা করে থাকে।
ডি-এসপার্টিক এসিড মূলত তাদের জন্যই বেশি উপকারী, যাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা
কম কিংবা যাদের যৌন কর্মে অক্ষমতা রয়েছে। যাদের টেস্টোস্টেরন লেভেল স্বাভাবিক
রযেছে তাদের জন্য এই সাপ্লিমেন্টটির কোন প্রয়োজন নেই।
৪. ভিটামিন ডিঃ ভিটামিন ডি একটি চর্বি দ্রবণীয় ভিটামিন, যা সূর্যালোকে
চামড়ার মধ্যে উত্পাদিত হয়। এর সক্রিয় রূপ শরীরে স্টেরয়েড হরমোন হিসেবে কাজ
করে। আজকাল বিরাট সংখ্যক মানুষ তাদের গায়ে খুব সামান্য রোদ মেখে থাকে। এর ফলে
তারা ভিটামিন ডি’র স্বল্পতা বা ঘাটতিতে ভুগছে। ভিটামিন ডি’র সঞ্চয় বৃদ্ধি আপনার
টেস্টোস্টেরন লেভেল জোরদার এবং অন্যান সম্পর্কিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার, যেমন
সুক্রানুর মানোন্নয়ন ঘটায়।
ভিটামিন ডি’র ঘাটতির সাথে লো টেস্টোস্টেরনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বেশি করে
ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে হলে বেশি করে গায়ে রোদ লাগান। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ৩০০০
আইইউ মাত্রায় ভিটামিন D3 সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ এবং বেশি করে ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ
খাবার খেতে পারেন।
৫. ট্রিবুলাস টেরেস্ট্রিসঃ ট্রিবুলাস টেরেস্ট্রিস ক্যালট্রপ পরিবারের
অন্তর্ভুক্ত একটি একবর্ষজীবি উদ্ভিদ।প্রায় সারা বিশ্বজুড়েই এটি পাওয়া যায়। এটি
একটি ঔষধি গাছ যা শত বছর ধরে যৌন শক্তি বৃদ্ধির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যে
সকল পুরুষদের উত্থান-রোহিতের সমস্যা রয়েছে তাদেরকে ৯০ দিন ট্রিবুলাস সেবন করতে
দিয়ে ভাল ফল পাওয়া গেছে।
তাদের যৌন স্বাস্থ্যের পাশাপাশি টেস্টোস্টেরন লেভেল ১৬ শতাংশ উন্নীত হয়েছে।
তবে, স্বাস্থ্যবান যুবক ও এ্যাথলেট, যাদের টেস্টোস্টেরন লেভেল ভাল রয়েছে, তাদের
জন্য এই সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের কোন প্রয়োজন নেই। অন্যান্য বুস্টারের মত
ট্রিবুলাসও যাদের টেস্টোস্টেরন লেভেলে ঘাটতি এবং যৌন দুর্বলতা রয়েছে শুধুমাত্র
তাদের জন্যই প্রযোজ্য।
৬. মেথিঃ মেথি আরেকটি জনপ্রিয় ঔষধি ভিত্তিক টেসটোসটেরন বুস্টার। কিছু
সংখ্যক গবেষক মনে করেন,মেথি টেস্টোস্টেরন এনজাইমকে এস্ট্রোজেনে রূপান্তারক
এনজাইমগুলোকে হ্রাস করার মাধ্যমে টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন
৫০০ মিলিগ্রাম মেথি টেস্টোস্টেরন লেভেল এবং যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে ভাল কাজ দেয়। এটি
যুবক-বৃদ্ধ, স্বাস্থ্যবান-অস্বাস্থ্যবান উভয়ের জন্যই উপকারী।
৭. ম্যাকারুটঃ ম্যাকা একটি উদ্ভিদ, বৈজ্ঞানিকভাবে লিপিডিয়াম মিয়েনি
নামেও পরিচিত। আবার একে কখনো কখনো পেরুর Ginseng হিসেবে অভিহিত করা হয়।এটি
প্রধানত পেরুর কেন্দ্রস্থল এনডেস-এর পার্বত্যাঞ্চলে বেশি জন্মে।এটি ক্রুসিফেরাস
শ্রেণির সব্জি এবং ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পাতা কপি’র সাথে সম্পর্কিত। তবে
এই উদ্ভিদটির প্রধান ভোজ্য অংশ হল এর শিকড়, যা মাটির নীচে উদ্গত হয়। এটি সাদা,
কালো ইত্যাদি বিভিন্ন রঙের হয়। সাধারণ শুষ্ক পাউডার এবং ক্যাপসুল রূপে
সাপ্লিমেন্ট হিসেবে পাওয়া যায়।
এটি নারী-পুরুষ উভয়েরই যৌন-আকাঙ্ক্ষা, পুরুষের উর্বরতা এবং শুক্রানুর মান ও
পরিমাণ বৃদ্ধি করে। এছাড়া এটি নারীর নিয়মিত ঋতুস্রাবে সাহায্য করে, যোনির
শুস্কতা দূর করে, মেজাজ ভাল রাখে এবং নিদ্রাহীনতা দূর করে। এটি এনার্জি বৃদ্ধি
করে এবং খেলোয়ারদের পারফর্মেন্স ভাল করতে সহায়তা করে। ম্যাকা ত্বকের স্বাস্থ্য
রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৮. আদাঃ আদা হচ্ছে গৃহস্থালি রান্না-বান্নার একটি সাধারণ মশলা, যা শত শত
বছর ধরে বিকল্প ঔষধ হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে। এর বহু স্বাস্থ্য-উপকারিতা
রয়েছ।বিশেষ করে, প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া কমানো এবং টেস্টোস্টেরন জোরদার করার
ক্ষেত্রে এটা খুবই কাজ দিতে পারে বলে গবেষণায় জোরালো সমর্থন পাওয়া যায়। ইঁদুরের
উপর কয়েকটি পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, টেস্টোস্টেরন লেভেল এবং যৌনকর্মে আদার
একটি ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
৯. জিংকঃ জিংক বা দস্তা কামোদ্দীপক হিসেবে সুপরিচিত। এটি একটি অপরিহার্য
খনিজ।এটি শরীরের মধ্যে শতাধিক রাসায়নিক প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত। বহু বছর ধরে
জিংক একটি অতি প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান। খাদ্য গ্রহণের রুচী বজায় রাখা,
প্রজনন স্বাস্থ্য, ত্বক, হাড়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি কাজ ছাড়াও
দু’শরও বেশি এনজাইমের কাজে কো-ফ্যাকটর হিসেবে ভূমিকা পালন করে।
জিংক এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো এন্টিঅক্সিডেন্ট-প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ
নেয়া। রোগ-জীবাণু প্রতিরোধে জিংক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে
জিংক এর অভাব রয়েছে এমন প্রাণি সহজে জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। লালা
গ্রন্থির জিংক নির্ভর পলিপেটাইড, গাসটিন এর মাধ্যমেই স্বাদের অনুভূতি পাওয়া
যায়। কাজেই যদি জিংক এর অভাব থাকে তবে স্বাদ বোঝার ক্ষমতা কমে যায় অর্থাৎ
রুচি কমে যায়। পূর্ণ যৌন পরিপক্কতা এবং বংশবৃদ্ধির সক্ষমতা অর্জনের জন্য জিংক
অত্যাবশ্যক।
১০. অশ্বগন্ধাঃ অশ্বগন্ধা আমাদের দেশের ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম।
গাছের গন্ধ ঘোড়া বা অশ্ব এর মত বলেই সংস্কৃতে একে অশ্বগন্ধা বলে। বাংলায় ও
আমার অশ্বগন্ধা-ই বলে থাকি। শক্তিবর্ধক হিসেবে এবং এ্যাফ্রোডেসিয়াক হিসেবে
ব্যবহৃত হয় বলেই ইংরেজিতে একে Indian Ginseng বলে। অশ্বগন্ধের অপর নাম বলদা ও
বাজিকরি। সুতরাং অশ্বগন্ধা সেবনে যে দেহের যথেষ্ট পুষ্টি হয়, সে বিষয়ে
সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। এটি বাজিকরি অর্থাৎ কামোদ্দীপক ও রতিবর্ধক। ইন্দ্রিয়
শৈথিল্যে এটি একটি শ্রেষ্ঠ ওষুধ।
এই সাপ্লিমেন্ট-গুলো মূলত তাদের জন্য বেশি কার্যকরী যাদের টেস্টোস্টেরনের
মাত্রা কম এবং যৌনকর্মে অদক্ষতা রয়েছে। যাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা স্বাভাবিক
তাদের জন্য এই হরমোন এর প্রয়োজন নেই।
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির খাবারের তালিকা
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা
আবশ্যক। পুরুষ শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি হরমোন হল টেস্টোস্টেরন। টেস্টোস্টেরন
সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত কিছু খাবার খাওয়ার অভ্যাস করলেই উপকৃত হওয়া
যায়। শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করে এমনই কিছু
খাবারের নাম উল্লেখ করা হলো।
লাল মাংস বা রেডমিটঃ আমরা অনেকেই ডায়াবেটিস বা হাই প্রেসার এর কারণে
লাল মাংস এভোয়েড করি। কিন্তু এই লাল মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক আর এই
জিংক টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে। তাই খাদ্য তালিকায় সপ্তাহে
একদিন লাল মাংস রাখার চেষ্টা করুন। এছাড়াও, বাদাম বা বীজ জাতীয় ফল শরীরের
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
কলিজাঃ আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের একটি ভালো উৎস হলো কলিজা। শরীরে আয়রনের
ঘাটতি পূরণ করতে আয়রন ট্যাবলেট গ্রহণের চেয়ে কলিজা খাওয়া ভালো। কারণ আয়রন
ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে কোষ্টকাঠিন্য দেখা দেয় কিন্তু কলিজা
খাওয়ার ফলে এই সমস্যা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। সেই সাথে ভিটামিন ডি, জিংক
এবং ভিটামিন বি১২ এর একটি ভালো উৎস হলো কলিজা। আর এই উপাদান গুলো টেস্টোস্টেরন
হরমোনের উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তবে যাদের রক্তে কোলেস্টেরল
(LDL) এর পরিমাণ বেশি রয়েছে তাদের জন্য কলিজা না খাওয়াই ভালো
ডিমঃ কুসুম সহ ডিম খাওয়ার ফলে পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের
উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। সেই সাথে দিনে একজন পুরুষের জন্য সর্বোচ্চ ৩ টি ডিম খাওয়া
যেতে পারে বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে ডিমের কুসুম খাওয়ার ফলে রক্তে
খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে থাকে যা হার্টের রোগ (উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট
অ্যাটাক, স্ট্রোক ইত্যাদি) সৃষ্টি করে। সুতরাং যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা
বেশি তাদের বেলায় চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। সেই সাথে যারা ডায়েট
কন্ট্রোল করা শুরু করছেন তাদের জন্য ডিম ভাজি না করে বরং সিদ্ধ করে খাওয়া
উচিত। কারণ ভাজার জন্য তেল ব্যবহার করতে হয় যা ক্যালরি বাড়িয়ে দেয়।
আয়রন বা লৌহ সমৃদ্ধ খাবারঃ আয়রন (Iron) রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে
অংশগ্রহণ করে আর আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের মাধ্যমে শরীরে আয়রনের চাহিদা পূরণ
হয়। আবার কারো শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে অভাব জনিত লক্ষণ দেখা দেয় যাকে
মেডিকেলের ভাষায় রক্তস্বল্পতা বা Anemia বলে। রক্তস্বল্পতার সাথে শরীরে
টেস্টোস্টেরন হরমোন উৎপাদনের যোগসূত্র রয়েছে। অর্থাৎ শরীরে রক্তস্বল্পতা থাকলে
টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎপাদন কমে যায়।
আর তাই নিয়মিত আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তবে শরীরে আয়রনের অভাব না থাকা
সত্ত্বেও টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আয়রন ট্যাবলেট (Iron supplement)
গ্রহণ করা যাবে না। কারণ অহেতুক আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে শরীরে আয়রনের
মাত্রা বেড়ে গিয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
ওমেগা ৩ যুক্ত মাছঃ রুই, কাতলা, বোয়াল, এবং চিতল জাতীয় তেলযুক্ত মাছ
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর থাকে। হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া ভাল রাখার
পাশাপাশি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করতেও
সাহায্য করে। নিয়মিত তেলযুক্ত মাছ খেলে হার্টের সুস্থতা বজায় থাকে এবং
শরীরের সার্বিক পুষ্টির জন্যও এটি উপকারী।
মধুঃ প্রাকৃতিক নিরাময়কারী উপাদান বোরোন যা মধুতে থাকে। এই খনিজ
উপাদান টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বাড়াতে খুবই কার্যকরী সেই সাথে নাইট্রিক
অক্সাইডের মাত্রাও ঠিক রাখে। যা ধমনী সম্প্রসারণ করে এবং লিঙ্গোত্থানে শক্তি
সঞ্চালন করে থাকে। মধু টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে তবে
এক্ষেত্রে একদম খাঁটি মধু হতে হবে। মধুর সাথে আদা কুচি করে সরাসরি সেটি খেতে
হবে, এতে পানি মিশানোর প্রয়োজন নেই।
আদাঃ আদা প্রাকৃতিকভাবে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ানোর জন্য বিশেষ
উপকারী । ইরাকে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে,আদা পুরুষদের
টেস্টোস্টেরনের মাত্রায় ১৭% বৃদ্ধি করতে সক্ষম । এটি খুবই সহজে দৈনন্দিন
খাবারের মেনুতে যোগ করা যায় কেননা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ানো ছাড়াও এর
অনেক ঔষধি গুনাগুন রয়েছে।
বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবারঃ হরমোনগুলোর ঠিক মতো কাজ করার জন্য
কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বাদাম বা বীজ জাতীয়
খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা, শরীরে
কোলেস্টেরল তৈরিতে সাহায্য করে। বীজ জাতীয় খাবার যেমন কুমড়োর দানায় থাকে
প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক যা সেবনে প্রস্টেট গ্ল্যান্ড সুস্থ থাকে। পাশাপাশি,
শুক্রাণু তৈরি করে এবং টেসটোস্টেরন হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে। রোজ খান
কুমড়োর বীজ, সূর্যমূখীর বীজ, চিনা বাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম
ইত্যাদি।
এভোকেডোঃ এভোকেডো এর মধ্যে ভালো মানের চর্বি ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে
যা টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎপাদন বাড়ায়। সেই সাথে এভোকেডো থেকে বোরন
(boron) নামক একটি খনিজ উপাদান পাওয়া যায় যা শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের
উৎপাদন এবং তা ক্ষয় হয়ে যাওয়া রোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
বোরন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের মাধ্যমে শরীরে টেস্টোস্টেরন এর পরিমাণ
উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সাপ্লিমেন্ট হিসেবে গ্রহণের জন্য আরো
গবেষণার প্রয়োজন বলে মনে করা হয়। তবে প্রাকৃতিক ভাবে কোনো খাবারের মধ্যে
বোরন থাকলে তা খেতে উৎসাহিত করা হয়েছে। আর সেই হিসেবে টেস্টোস্টেরন
বাড়াতে নিয়মিত এভোকেডো খাওয়ার অভ্যাস উপকারিতা বয়ে আনতে পারে।
ফলঃ ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, ব়্যাপসবেরি জাতীয় ফলে রয়েছে প্রচুর
পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখে এ ছাড়া
টেস্ট্রোস্টেরনের জন্য খুই উপকারি। এছাড়াও একাধিক ছোট-বড় রোগ থেকেও মুক্তি
পাওয়া যায় এ খাবারে। সন্তান জন্ম দেওয়ার স্বপ্ন পূরণ করার ইচ্ছা থাকলে
প্রতি নিয়ত টক জাতীয় ফল খেতে ভুলবেন না।
বাঁধাকপিঃ এই সবজিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। আরও
আছে ইনডোল থ্রি-কার্বিনল। এই উপাদান স্ত্রী হরমোন ওয়েস্ট্রজেনের পরিমাণ কমিয়ে
টেস্টোস্টেরন বেশি কার্যকর করে তোলে।
সবুজ শাকঃ নতুন জেনারেশনের ছেলে-মেয়েদের একাংশ শাকপাতা খেতে পছন্দ করে
না। এই কারণেই মূলত তাঁরা নানাবিধ সমস্যায় পড়ে। এমনকী কম বয়স থেকেই তাঁদের
দেহে টেস্টোস্টেরনের মাত্রাও কমতে থাকে। তাই শরীরে এই হরমোনের পরিমাণ বাড়াতে
চাইলে নিয়মিত সবুজ শাক খেতে হবে। আসলে এইসব শাকে ম্য়াগনেশিয়াম সহ এমন কিছু
মাইক্রোনিয়েট্রিয়েন্ট রয়েছে যা কিনা টেস্টোস্টেরন লেভেল অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
তাই ডায়েটে শাকপাতা থাকাটা অত্যান্ত জরুরি।
সিজনাল সবজিঃ বিভিন্ন ধরনের সিজনাল সবজি আছে তার মধ্যে শীতকালীন একটি
সবজি যেমন বাঁধাকপি কিন্তু শরীরের টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়াতে সহায়তা করে।
তাই শীতকালে খাবারের তালিকায় অবশ্যই বাঁধাকপি রাখার চেষ্টা করবেন। পুই শাক
এবং পালং শাকের কথা আমরা সবাই জানি। পুই শাক এবং পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে
জিংক রয়েছে আর এই জিংক টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে অনেক কার্যকরী।
রসুনঃ রসুনের আলিসিন যৌগ মানসিক চাপের হরমোন করটিসলের মাত্রা কমাতে
সাহায্য করে। ফলে টেস্টোস্টেরন ভালোমতো কাজ করে। ভালো ফল পেতে রসুন কাঁচা
খাওয়ার অভ্যেস করুন।
কলাঃ কলা ব্রোমেলেইন এনজাইম টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য
করে। আর দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি সরবরাহের উৎস হিসেবে কাজ করে।
কাঠবাদামঃ নারী এবং পুরুষ উভয়ের ‘সেক্স ড্রাইভ’য়ের জন্য প্রতিদিন এক
মুঠ কাঠবাদাম যথেষ্ট। এই বাদামে রয়েছে জিঙ্ক যা টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ায় আর
কামবাসনা বৃদ্ধি করে।
সূর্যমুখী বীজঃ সূর্যমুখী বীজ থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং
সেলেনিয়াম পাওয়া যায়। আর ভিটামিন ই পুরুষের যৌন স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত
উপকারী একটি উপাদান। অনেকেই চুলপড়া বন্ধ করতে বা যৌন সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে
নিজে নিজে ফার্মেসি থেকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিনে খেয়ে থাকেন। কিন্তু
চিকিৎসকের নির্দেশনা ব্যতীত এভাবে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিত নয়
কারণ তাতে শরীরের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। পক্ষান্তরে প্রাকৃতিক উৎস
তথা খাবার থেকে ভিটামিন গ্রহণ করলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয় না। আবার
সূর্যমুখী বীজের মধ্যে থাকা সেলেনিয়াম উপাদানটি টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎপাদন
বাড়াতে সহায়তা করে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।
কুমড়ার বীজঃ জিংকের প্রাকৃতিক উৎস যা টেস্টোস্টেরনের মাত্রায় প্রভাব
ফেলে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটির মেডিসিন বিভাগের একটি গবেষণায়
দেখা গেছে, জিংক স্বল্পতায় বয়স্ক ব্যক্তিকে ছয় মাস জিংক সাপ্লিমেন্ট দেওয়ার
পর তার টেস্টোস্টেরনের মাত্রা দ্বিগুণ হয়।
ডার্ক চকোলেটঃ ডার্ক চকোলেটে থাকে কোকাও নামক একটি উপাদান। আর এই
উপাদানটি কিন্তু অত্যন্ত উপকারী একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও ডার্ক
চকোলেটে অন্যান্য একাধিক উপকারী ফ্ল্যাভানয়েডসও রয়েছে। এইসব উপাদানও
টেস্টোস্টেরন বাড়াতে সক্ষম। তাই সুযোগ পেলেই একটু আধটু ডার্ক চকোলেট খান।
টক ফলঃ স্ট্রেস হরমোন’ কমানোর পাশাপাশি টকজাতীয় ফলে রয়েছে ভিটামির এ।
যা টেস্টোস্টেরন উৎপন্ন করতে প্রয়োজন হয়। এছাড়া ওয়েস্ট্রজেনের মাত্রা কমায়
অর্থাৎ পুরুষ হরমন ভালোমতো কাজ করতে পারে।
পালংশাকঃ এটা প্রমাণিত যে, ওয়েস্ট্রজেনের মাত্রা কমাতে পারে এই শাক।
তাছাড়া আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি এবং ই। আর এসবই
টেস্টোস্টেরন তৈরির উপাদান।
আঙুরঃ প্রতিদিন একথোক। লাল আঙুর খাওয়া গেলে টেস্টোস্টেরনের
পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, শুক্রাণুর তৎপতরতা উন্নত করে আর শক্তিশালী করে।
ডালিমঃ ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইম্পোটেন্স রিসার্চ থেকে জানা যায়
যৌন কর্মে অক্ষম পুরুষদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ যারা প্রতিদিন ডালিমের রস খেয়ে
থাকেন তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
ঝিনুকঃ টেস্টোস্টেরন তৈরিতে জিংক গুরুত্বপূর্ণ। ঝিনুকে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণ খনিজ উপাদান। যা টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। ঝিনুক
পছন্দ না, তাহলে বিকল্প হতে পারে চিজ বা পনির। বিশেষ করে সুইস এবং রিকোত্তা
চিজ।
টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার লক্ষণ
টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার লক্ষন হিসাবে পুরুষদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের
পরিবর্তন দেখা দেয়। এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাথমিক লক্ষণ হলো যৌনাকাঙ্ক্ষা
কমে যাওয়া। এই পরিবর্তনটি ব্যক্তি নিজে বা তার সঙ্গী সহজেই বুঝতে পারে।
টেস্টোস্টেরন কমে যাওয়ার ফলে পুরুষদের শারীরিক শক্তিও কমে যায়। ফলে তারা
আগের মতো কাজ করতে পারে না। টেস্টোস্টেরন হরমোন পুরুষের পুরুষত্ব গঠনের একটি
গুরুত্বপূর্ণ হরমোন।
পেশীর ঘনত্ব টেস্টোস্টেরনের উপর নির্ভর করে। টেস্টোস্টেরন কমে গেলে পেশী
ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ফলে চামড়া ঝুলে পড়ে। পুরুষদের বিকৃত যৌন আচরণের একটি
কারণ হতে পারে টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি। এই হরমোন কমে গেলে কিছু লক্ষন
বুঝা যায় যেমনঃ
যৌনাকাক্ষা কমে যায়ঃ টেস্টোস্টেরন হলো পুরুষদের মধ্যে প্রধান যৌন
হরমোন। এই হরমোনটি যৌন ইচ্ছা, শারীরিক শক্তি, এবং লিবিডো বৃদ্ধিতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই, টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে গেলে যৌন
ইচ্ছা কমে যাওয়া স্বাভাবিক।
যৌনাঙ্গ উত্থানে অক্ষমতা দেখা যায়ঃ টেস্টোস্টেরন যৌনাঙ্গে রক্ত প্রবাহ
বাড়াতে সাহায্য করে, যা উত্থানের জন্য অত্যন্ত জরুরী। এছাড়াও এই যৌন হরমোন
নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে, যা রক্তবাহিকাগুলোকে শিথিল করে
এবং রক্ত প্রবাহ বাড়ায়। এই হরমোন স্নায়ুতন্ত্রকেও প্রভাবিত করে, যা যৌন
উত্তেজনা এবং উত্থানের জন্য দায়ী।
লিঙ্গের দৃঢ়তা ধরে রাখতে না পারাঃ টেস্টোস্টেরন এর মাত্রা কমে গেলে
অনেক পুরুষই যৌন সঙ্গমের সময় লিঙ্গের দৃঢ়তা ধরে রাখতে পারেননা। তাদের মধ্যে
ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ শিথিলতা দেখা দেয়। ফলে তারা যৌন মিলনের সময়
আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। লিঙ্গের দৃঢ়তা ধরে রাখতে না পারার কারনে তাদের
মধ্যে যৌন অনিচ্ছা কাজ করে।
বীর্যের পরিমাণ কমে যাওয়াঃ বীর্য হলো শুক্রাণু বহনকারী তরল। শুক্রাণু
দুধের ন্যায় কিন্তু ঘনত্বে বেশি। বীর্যের মাধ্যমেই শুক্রাণু ডিম্বানুতে
প্রবেশ করে। যদি লক্ষ্য করা যায় যে বীর্যের পরিমাণ ও ঘনত্ব হঠাৎ করেই কমতে
শুরু করেছে তবে তা টেস্টোস্টেরন হরমোনের ঘাটতি থেকে হতে পারে। এমন সমস্যা হলে
দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
রক্তশূন্যতা দেখা দেয়ঃ শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে রক্তশূন্যতা
বা রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, টেস্টোস্টেরন কম
হওয়ার কারণে শরীরে প্রদাহ বাড়তে পারে এবং এটি দীর্ঘমেয়াদে রক্তশূন্যতার
ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তবে, রক্তশূন্যতার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। কারণগুলোর
মধ্যে আয়রন, ভিটামিন বি১২ বা ফোলেটের অভাব, রক্তক্ষরণ ইত্যাদি।
অন্ডকোষ ছোট হয়ে যায়ঃ অণ্ডকোষ টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরি বা উৎপাদনে
সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে। তাই শরীরে যদি টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা
কমে যায় তাহলে অন্ডকোষ ছোট হয়ে যেতে শুরু করে।
গাইনোকোমেশিয়াঃ টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাবে পুরুষদের স্তনের আকার
বৃদ্ধি পাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাকে গাইনোকোমেশিয়া বলা হয়। এই
হরমোনের ঘাটতির ফলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, কিছু মনে না রাখা, এবং
অবসাদগ্রস্ততার মত লক্ষণ দেখা দেয়, যদিও খাওয়া-দাওয়া ঠিকঠাক থাকে।
স্মৃতিশক্তি কমে যায়ঃ যদি ধীরে ধীরে আপনার স্মৃতিশক্তি কমে যায় তাহলে
বুঝতে হবে আপনার শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রায় ঘাটতি রয়েছে।বয়স
বাড়ার সাথে সাথে আপনার শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে যেতে পারে এটা
স্বাভাবিক কিন্তু যদি দেখেন যে অল্প বয়সে আপনার স্মৃতিশক্তি কমে যাচ্ছে
তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রার ঘাটতি রয়েছে ।
শুক্রাণুর উৎপাদন কমে যায়ঃ টেস্টোস্টেরন শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য
প্রয়োজনীয় একটি হরমোন। এটি শুক্রাণু তৈরির প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করে।
টেস্টোস্টেরন শুক্রাণুর গুণগত মানকেও প্রভাবিত করে। এটি শুক্রাণুর গতিশীলতা
এবং স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধিকে সহায়তা করে।
অবসাদঃ সারাদিন নানান কাজে ব্যস্ত থাকার পর অবসাদ দেখা দেবে সেটা
স্বাভাবিক ঘটনা। তবে যেসব পুরুষের ‘টেস্টোস্টেরন’য়ের অভাব রয়েছে তাদের
কর্মক্ষমতা অনেকাংশে কমে যায়। ফলে দিন শেষে তারা অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে যান।
মন ও মেজাজঃ টেস্টোস্টেরনের অভাবের সঙ্গে আবেগতাড়িত বিভিন্ন সমস্যা
জড়িয়ে আছে যেমন- মন খারাপ থাকা, মানসিক চাপ, খিটখিটে মেজাজ, মানসিক অস্বস্তি
ইত্যাদি। এর কারণ হল, শারীরিক বিভিন্ন দিকের পাশাপাশি মস্তিষ্কের
কার্যাবলীতেও প্রভাব ফেলে এই হরমোন। তাই এর অভাবে একজন পুরুষের মানসিক অবস্থা
অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে যায়।
বাড়তি ওজনঃ দেহের বাড়তি ওজনের কারণে টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাব দেখা
দেয়। কারণ ফ্যাট সেল তখন টেস্টোস্টেরনকে ইস্ট্রোজেনে রূপান্তর করে। স্থূলকায়
মানুষের দেহে এমনিতেই এই হরমোনের ঘাটতি থাকতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবার,
নিয়মিত ব্যায়াম ও ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এ অভাব থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃ আদা খেলে কি টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ে?
উত্তরঃ আদাতে আছে প্রচুর পরিমানে জিংক। আদা অণ্ডকোষে অক্সিডেটিভ চাপ
কমায়, নির্দিষ্ট অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এঞ্জাইমের কার্যকারিতা বাড়ায়, রক্তের
শর্করা স্বাভাবিক রাখে, নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদন এবং রক্ত প্রবাহ বাড়ায়।
এসব বিষয় টেস্টোস্টেরনে ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
প্রশ্নঃ রসুন খেলে কি টেস্টোস্টেরন বাড়ে?
উত্তরঃ রসুনে থাকা নানা উপাদান পুরুষদের ফার্টিলিটির সমস্যা ঠিক করতে
সাহায্য করে। এটি টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ায় এবং শুক্রাণুর কার্যক্ষমতা
বৃদ্ধি করে। প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে রসুন খুবই উপকারী।
প্রশ্নঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ায় কোন ভিটামিন?
উত্তরঃ ভিটামিন ডি। আপনার ত্বক সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসলে আপনার শরীর
স্বাভাবিকভাবেই ভিটামিন ডি তৈরি করে। যাইহোক, যারা সূর্যালোকের খুব বেশি
এক্সপোজার পান না তাদের ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হতে পারে। এক বছরব্যাপী
গবেষণায়, 65 জন পুরুষ যারা দৈনিক 3,300 আইইউ ভিটামিন ডি গ্রহণ করেন তাদের
টেস্টোস্টেরনের মাত্রা যারা পাননি তাদের তুলনায় 20% বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রশ্নঃ কি কি খাবার খেলে হরমোন বাড়ে?
উত্তরঃ আপনার ডায়েটে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত স্বাস্থ্যকর চর্বি
অন্তর্ভুক্ত করুন। যেমন চিয়া সিড, আখরোট, চর্বিযুক্ত মাছ ইত্যাদি। যা হরমোন
উৎপাদন প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে তোলে। ফ্লেক্স সিড, ব্রোকলি, স্প্রাউট,
বাঁধাকপি, শস্য, ফল-মূলের মতো উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার খেলে ইস্ট্রোজেন সহজেই
বর্জ্য আকারে শরীর থেকে বের হয়ে যায়।
প্রশ্নঃ পুরুষের টেস্টোস্টেরন মাত্রা কতো থাকা উচিত?
উত্তরঃ সাধারণ মোট টেস্টোস্টেরনের মাত্রা পুরুষদের জন্য ২৮০ থেকে
১,১০০ ng/dL মহিলাদের জন্য 15 থেকে 70 ng/dL
টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার কারণ
টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার কারণ জানতে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন।
টেস্টোস্টেরণ মূলত পুরুষের যৌন উত্তেজনামূলক হরমোন যা পুরুষের শুক্রাশয়
উৎপন্ন হয়। তবে টেস্টোস্টেরন নারী দেহেও থাকে কিন্তু তা পরিমাণে কম। যৌন
উদ্দিপনা ছাড়াও শারীরিক বিভিন্ন কার্যাদি সম্পন্ন করতেও ভূমিকা রাখে
টেস্টোস্টেরন। টেস্টোস্টেরণ পরিপক্ক শুক্রাণুর বিকাশে সহায়তা করে।
টেস্টোস্টেরন একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন যা যৌনন্নয়ন, শারিরীক শক্তি ও দৈনিক
কার্যক্ষমতা এবং লোহিত রক্তকণিকা নিয়ন্ত্রণ করে। মহিলাদের ডিম্বাশয়েও কিছু
পরিমাণ টেস্টোস্টেরণ উৎপন্ন হলেও তার ঘনত্ব ও পরিমাণ পুরুষের
টেস্টোস্টেরণের তুলনায় কম। মস্তিষ্ক এবং পিটুইটারি গ্রন্থি টেস্টোস্টেরনের
মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। দেহে উৎপাদিত টেস্টোস্টেরন রক্তের মধ্য দিয়ে চলে
দেহের বিভিন্ন কার্যাদি সম্পন্ন করে। এই টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে
যাওয়ার বিশেষ কিছু কারণ রয়েছে, যেমন-
১. অতিরিক্ত গরমে দীর্ঘক্ষণ থাকলে টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন কমে যেতে পারে।
কারণ এই হরমোনের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে হলে দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের
তুলনায় এক থেকে দেড় ডিগ্রি কম রাখতে হয়।
২. আরেকটি কারণ হচ্ছে স্থূলতা। দেহের অতিরিক্ত মেদ সরাসরি টেস্টোস্টেরনের
ঘাটতিতে অবদান রাখে।
৩. মস্তিষ্কে আঘাত পেলে, লিভার সিরোসিস, কিডনির সংক্রমণ, অতিরিক্ত মদ্যপান,
ঘুমে সমস্যা বা স্লিপ অ্যাপনিয়া এবং মানসিক রোগের চিকিৎসায় ওষুধ সেবন করলেও
এই হরমোনের ঘাটতি তৈরি হতে পারে।
৪. রক্তে শর্করার পরিমাণ যাদের বেশি বা যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের
টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।
৫. হজমে সমস্যা ও শরীরে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে গেলে।
৬. আদর্শ খাবার গ্রহণ না করা।
৭. দীর্ঘদিন জটিল রোগে অসুস্থ থাকলে।
যাদের বিভিন্ন ধরনের রেডিয়েশনে থাকতে হয় বা চিকিৎসাজনিত কারণে কেমো
থেরাপি দিতে হয়, তাদের টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি দেখা দেয়।
৮. অণ্ডকোষের সংক্রমণ।
৯. আঘাতজনিত কারণ বা দুর্ঘটনার কারণে যদি কারো অণ্ডকোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়,
জীনগত সমস্যা থাকে, তাহলে এই হরমোনের ঘাটতি থাকতে পারে।
১০. কারো যদি জন্মগতভাবে অণ্ডকোষ না থাকে বা সেটি যদি পরিপূর্ণ গঠিত না
থাকে, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থাকে, যৌন সংক্রমণজনিত রোগ থাকে, কোন ভাইরাসের
সংক্রমণ থাকে, বা টিউমার থাকে তাহলেও টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন কমে যেতে পারে।
১১. যকৃতের পচন রোগ।
১২. এইচআইভি এইডস।
১৩. প্রোল্যাক্টিন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি।
১৪. হঠাৎ স্থূলতা বা ওজন অতিরিক্ত কমে গেলে।
১৫. ক্যান্সারের জন্য কেমোথেরাপি গ্রহণ।
১৬. পিটুইটারি গ্রন্থির কর্মহীনতা বা টিউমার হলে।
১৭.জন্মগত ত্রুটি থাকলে ও
১৮. অতিরিক্ত পড়াশুনা বা অনলাইন আসক্তির জন্য অলস সময় পার করা।
১৯. সাধারণত ৩০ বছর বয়সের পর থেকেই কমতে থাকে টেস্টোস্টেরন হরমোন। আদর্শ
খাবার নিয়মিত না খেলে টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি হয়।
টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর উপায় সম্পর্কে শেষকথা
টেস্টোস্টেরন এক ধরণের স্টেরয়েড হরমোন যা মানুষ সহ প্রায় সকল স্তন্যপায়ী,
সরীসৃপ এবং পাখিদের মাঝে দেখা যায়। এটি পুরুষদের প্রধান প্রজনন হরমোন।
টেস্টোস্টেরন নারী পুরুষ উভয়ের দেহেই থাকে৷ নারীদের দেহে কম আর পুরুষের দেহের
এটি বেশি মাত্রায় উৎপন্ন হয়৷ হাড়ের ঘনত্বের জন্য এই হরমোন খুব গুরুত্বপূর্ণ৷
বয়ঃসন্ধিতে পুরুষের দেহে এর মাত্রা অনেক বেড়ে যায়৷ এর কারণে কন্ঠস্বরে পরিবর্তন
হয়৷ পাশাপাশি শুক্রাশয়ে শুক্রাণু উৎপাদন বেড়ে যায়৷ অর্থাৎ ছেলেদের পুরুষ হয়ে
ওঠার পেছনে এই হরমোনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷
ব্রেইনের ঠিক ভিত্তিতে রয়েছে পিটুইটারি গ্রন্থি। ব্রেইন থেকে পিটুইটারিতে
পাঠানো সিগন্যাল পুরুষের টেস্টোস্টেরন উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর পিটুইটারি
গ্ল্যান্ড সিগন্যালটা পাঠিয়ে দেয় টেসটিসে, আর সেখানেই টেস্টোস্টেরন উৎপাদিত
হয়। রক্তে হরমোনটির পরিমাণ কতখানি হবে তা নিয়ন্ত্রণ করে একটি ফিডব্যাক লুপ বা
প্রতিক্রিয়া চক্র। টেস্টোস্টেরনের মাত্রা খুব বেড়ে গেলে ব্রেইন পিটুইটারিতে
সিগন্যাল পাঠায় উৎপাদন কমানোর জন্য। আশা করছি টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর
উপায়, টেস্টোস্টেরন হরমোনের কাজ কি ও টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার লক্ষণ
সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url