শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় গুলো জানতে বিডি টেকল্যান্ডের আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। শীতের প্রভাবে আমাদের মুখের ত্বক অনেকটাই শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। এসময় আমাদের ত্বকের প্রয়োজন পড়ে বাড়তি যত্নের।
শীতে-ত্বকের-যত্নে-ঘরোয়া-উপায়
শরীর থেকে চামড়া ওঠা, হাত-পা ফেটে যাওয়া, ঠোঁট ফেটে যাওয়া, মাথায় প্রচন্ড খুশকি হওয়া এই সময়ের কিছু সাধারণ সমস্যা। কারণ শীতের আবহাওয়া শুষ্ক হওয়াতে ত্বকের উপরের স্তর এপিডারমিসে পানির পরিমাণ কমে গিয়ে শুষ্কতা বেড়ে যায় ত্বকের।

সাধারণত শীতে আমরা পানি কিছুটা কম খাই, আর এই কারনেই আমাদের শরীরে পানি পরিমান কমে গিয়ে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে ত্বক আরও শুষ্ক হতে থাকে। এই শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতায় রূপান্তর করতে না পারলেই শুরু হয় সমস্যা। তাই জেনে নিন শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।

পেইজ সূচিপত্রঃ শীতেকালে ত্বকের যত্নের ঘরোয়া উপায়

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানা আপনার জন্য হতে পারে মূল্যবান। শীত এলেই আমাদের ত্বক মলিন হতে শুরু করে। বাইরের বিবর্ণ প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ত্বকও প্রাণহীন হতে শুরু করে। শীতের রুক্ষতার প্রথম ছাপ পড়ে আমাদের ত্বকে। এসময় চামড়া ফেটে যেতে পারে, দেখা দিতে পারে র‌্যাশ, ব্রণের মতো সমস্যা। এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে কিছু ঘরোয়া উপাদান। চলুন জেনে নেওয়া যাক শীতে ত্বকের যত্নের ঘরোয়া উপায়ঃ

পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ শীতের সময়েও বছরের অন্যান্য সময়ের মতোই পর্যাপ্ত পানি পানের অভ্যাস ধরে রাখতে হবে। শীত বলে একটু কম পানি খেয়ে দিন কাটিয়ে দেবেন না। এতে কিন্তু আপনিই বিপদে পড়বেন। পানি কম খেলে শরীরের ভেতরে ও বাইরে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। তাই এসময় পর্যাপ্ত পানি পানের দিকে নজর দিতে হবে। শরীরে পানির ঘাটতি হলে ত্বকও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই শরীর ভেতর থেকে আর্দ্র রাখতে দিনে অন্তত তিন লিটার পানি পান করুন।
কুসুম গরম পানিতে গোসলঃ শীতের মৌসুমে অনেকে গোসল এড়িয়ে যায়, এটি ভালো অভ্যাস নয়। আবার অনেকেই হট বাথ নিতে পছন্দ করেন। এ সময় অনেকেই অতিরিক্ত গরম পানি গায়ে ঢালেন। এতে ত্বক আরও শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। তবে এই সময়ে গোসল করতে হবে হালকা গরম পানিতে। কারণ শীতের সময়ে ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে আপনার ত্বক আরও রুক্ষ করে দেবে। তাই ঠান্ডা পানির বদলে গোসলের সময় ব্যবহার করুন হালকা গরম পানি। এতে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা সহজ হবে।

ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারঃ শীতে ত্বক ভালো রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ত্বক শুষ্ক হলে পেট্রোলিয়াম জেলি, অলিভ অয়েল, বডি লোশন ব্যবহার করা যায়। তবে সবচেয়ে উপকারী হলো প্রাকৃতিক অলিভ অয়েল, এতে কোনো ধরনের রাসায়নিক উপাদান মিশ্রিত থাকে না। গোসলের পর অলিভ অয়েল ব্যবহার করা ভালো। তবে শর্ষের তেল ব্যবহার করা যাবে না। চাইলে বিশুদ্ধ নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।

ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহারঃ ত্বক ভালো রাখার জন্য এই শীতে ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন। হিউমিডিফায়ারে ঘরের ভেতরের আর্দ্রতা বজায় থাকে ও ত্বক ও ময়েশ্চারাইজড থাকে। এই যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়। তাই এদিকে খেয়াল রাখতে পারেন।

ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহারঃ অনেকেই শীতকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে চান না। আবার অনেকে মনে করেন শীতে রোদ কম থাকে, তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু শীতকালেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। এই সময়েও তো সূর্যের ইউভি রে থাকে! তাহলে সানস্ক্রিন স্কিপ কেন করবেন? স্কিনকে প্রোটেক্টেড রাখতে ঘর থেকে বের হওয়ার ১৫ মিনিট আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

ক্লিনজার ব্যবহারঃ শীতের সময়, ফোম-ভিত্তিক অর্থাত ফেনা-যুক্ত ক্লিনজার ব্যবহার করা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। তার পরিবর্তে স্টেরাইল অ্যালকোহলের সঙ্গে সিটাইল সমৃদ্ধ একটি ক্লিনজার ব্যবহার করুন। এগুলি ত্বক যেমন পরিষ্কার করে, তেমনি ত্বককে হাইড্রেটেডও করে। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার পাশাপাশি ত্বকের তৈলাক্ত ভাবকে কখনও মুছে দেয় না। মৃদু, ময়েশ্চারাইজিং লেখা ক্লিনজারগুলি এই সময় ব্যবহার করুন।

হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহারঃ প্রতিবার হাত ধোওয়ার পর, আর্দ্রতা ফিরে পেতে নন-গ্রিসি হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করুন। জোজোবা তোল, শিয়া বাটার ও ডাইমেথিকোন-যুক্ত হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করলে হাত থাকবে সুন্দর, মসৃণ ও কোমল।

এক্সফোলিয়েশনঃ শীতকালে ত্বকের উপরিভাগ থেকে মৃতকোষ নির্মূল করতে এক্সফোলিয়েশনের দরকার হয়। কারণ এই সময় ত্বকের উপর তুলনামূলকভাবে মৃতত্বকের কোষগুলিকে রিহাইড্রেট করে। এক্সফোলিয়েটিংয়ের ফলে ত্বকের মৃতকোষগুলি দ্রুত দূর হয়ে আরও পরিষ্কার করে তোলে। সপ্তাহে এক থেকে ২ বার স্যালিসিলিক অ্যাসিড বা গ্লাইকোলিক অ্যাসিড-ভিত্তিক বডি ওয়াশ দিয়ে হালকা এক্সফোলিয়েশন ব্যবহার করুন।

লিপস এক্সফোলিয়েশনঃ কমবেশি আমরা সবাই ত্বক এক্সফোলিয়েট করে থকি। তবে শীতকালে ত্বকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি ঠোঁটও এক্সফোলিয়েট করা দরকার। শীতকালিন সময়ে ঠোঁট আরও রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। এক্সফোলিয়েশন ত্বকের মৃত কোষগুলো অপসারণ করতে সাহায্য করে, ত্বককে শ্বাস নিতে দেয়। এছাড়া এটি রুক্ষ ত্বককে নরম করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে পলিশ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এটি ত্বকের উপরিভাগের ময়লা ও দূষণও দূর করে। এক্ষেত্রে লিপ স্ক্রাব ক্রয় করতে পারেন, আপনি চাইলেও ফেইস স্ক্রাব দিয়েও কাজটি করতে পারেন।

ফেস মাস্ক ব্যবহারঃ এই সময় ত্বককে শান্ত, কোমল, ময়েশ্চারাইজড করে তোলার জন্য পছন্দ মত ফেসমাস্ক প্রয়োগ করতে পারেন। তবে তাতে যেন হাইলুরোনিক অ্যাসিড ও ভিটামিন সি থাকে, তা একবার দেখে নেওয়া উচিত। তাতে ত্বক থাকে উজ্জ্বল ও আর্দ্র।

পুষ্টিকর খাবারঃ ত্বক হচ্ছে আমাদের শরীরের উপরিভাগের অংশবিশেষ। এই উপরিভাগের যত্নটাই মুখ্য বিষয় নয়। ভেতরের পুষ্টিটাই আসল। ভেতরের পুষ্টি যোগাতে খাবারের দিকে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় তাজা ফলমূল, শাক-সবজি, মাছ, ডিম, দুধ বা এ জাতীয় খাবারের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। ভিটামিনযুক্ত খাবার প্রতিদিন খেতে হবে। প্রতিদিন ১টি করে হলেও যেকোনো ফল খেতে হবে। ফ্রেস জুস, শরবত, স্যুপ জাতীয় খাবারগুলোর দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। এ সময় ত্বকের পানি শুকিয়ে আসে। সে জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। প্রয়োজনে বাইরে যাওয়ার সময় সঙ্গে পানি রাখতে হবে।

শাক-সব্জি খাওয়াঃ শাক-সব্জি বেশি করে খাওয়া এ সময়ে খুব জরুরি। পালং, মেথি, সর্ষে শাক এ সময়ে শরীরে নানা ধরনের ভিটামিনের জোগান দিতে পারে। সবুজ শাক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, তাই পাতাযুক্ত সবুজ শাক আপনার ত্বকের জন্য একটি আশ্চর্যজনক খাদ্য হতে পারে। পাতাযুক্ত সবুজ শাক ত্বক থেকে ফ্রি র‌্যাডিকেল অপসারণ করতে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই ত্বককে স্বাস্থ্যকর করতে সহায়তা করে। তাই বিভিন্ন ধরনের শাক রাখুন আপনার খাবারের তালিকায়। শীতের শুরুতে ত্বকের যত্নে বাদাম খেতে পারেন। নিয়মিত বাদাম খেলে ত্বকের কোষের ক্ষতি সারিয়ে তোলে। ফলে শীতেও ত্বক ফাটে না।

গায়ে রোদ লাগানোঃ শীতে প্রতিদিন কিছুক্ষণ রোদে থাকা দরকার। এতে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি পাবে। ভিটামিন ডি ত্বককে সুন্দর ও মসৃণ করে এবং বার্ধক্য রোধ করে।

চিনি ও কফির ব্যবহারঃ চিনি আর কফি একসঙ্গে পেলে আপনি কী করবেন? এককাপ গরম পানিতে গুলিয়ে খেয়ে নিতে পারেন আবার চাইলে ত্বকের যত্নেও কাজে লাগাতে পারেন। ত্বকের যত্নে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে কফি ও চিনি। এই দুই উপাদান হলো প্রাকৃতিক স্ক্রাবার। চিনি ও কফি একসঙ্গে নিয়ে স্ক্রাব করলে ত্বকের মৃত কোষ দূর হবে। সেইসঙ্গে দূর হবে ত্বকের রুক্ষতা ও শুষ্কতাও।

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া ফেসপ্যাক

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া ফেসপ্যাক দিয়ে আপনার ত্বকের যত্ন নিতে পারেন। শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ও ধুলোবালি কিছুটা হলেও ত্বকের উপর প্রভাব পড়বে এটাই স্বাভাবিক। এ সময় ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া, কুচকানো ভাব, কালো হয়ে যাওয়া, ব্ল্যাকহেডস পড়াসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়। এর জন্য প্রয়োজন বাড়তি কিছু যত্নের। ত্বকের যত্নে অনেকেই অনেক কিছু ব্যবহার করে থাকেন। শীতে ত্বকের যত্ন নিন ঘরোয়া উপায়েঃ

কমলালেবু ও চন্দনের ফেসপ্যাকঃ কমলালেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা আপনার ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল অপসারণ করে ছিদ্র খুলে দিতেও সাহায্য করে। ত্বকের কোষে জমে থাকা ময়লা বাইরে বার করে দিতেও কমলালেবুর ভূমিকা অপরিহার্য। তৈলাক্ত ত্বকে সমস্যা লেগে থাকে সারা বছর। শীতেও তার অন্যথা হয় না। কমলালেবুর সঙ্গে চন্দন মিশিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন তৈলাক্ত ত্বকের উপযুক্ত ফেসপ্যাক। একটি পাত্রে ২ টেবিল চামচ কমলালেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে নিন চন্দনের গুঁড়ো। এ বার মিশ্রণটি ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে নিন। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়বে।

বেসন এবং হলুদের ফেসপ্যাকঃ ত্বকের যত্নে দু’টি উপকরণই সমান গুরুত্বপূর্ণ। ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে শীতকালে ত্বকের যত্নে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া জরুরি। একটি পাত্রে আধ কাপ বেসন, এক চিমটে হলুদ এবং সামান্য দুধ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ বানিয়ে নিন। স্নান করতে যাওয়ার আগে ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন। রোজ না হলেও সপ্তাহে অন্তত দু’তিন দিন এটি ব্যবহার করতে পারেন। উপকার পাবেন।

মধু ও পেঁপের ফেসপ্যাকঃ ১ কাপ পাকা পেঁপের সাথে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে মসৃণ পেস্ট তৈরী করে নিন। এবার এই মাস্কটি পুরো বডিতে লাগিয়ে কমপক্ষে ৩০ মিনিট রাখুন। এরপর পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ১ থেকে ২ দিন ব্যবহার করলেই দেখবেন ত্বকের শুষ্ক ভাব অনেকটা কমে ত্বকে এক্সট্রা গ্লো দেখা দিচ্ছে ।

গাজর এবং মধুর ফেসপ্যাকঃ শীতকালে বাজার ছেয়েছে যে মরসুমি সব্জিগুলিতে, তার মধ্যে অন্যতম গাজর। শরীর আর্দ্র রাখার পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও গাজরের ভূমিকা কম নয়। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য গাজর খুবই উপকারী। মিক্সিতে গাজরের টুকরোগুলি ঘুরিয়ে নিয়ে একটি থকথকে মিশ্রণ তৈরি করুন। তাতে মধু মিশিয়ে নিন। এ বার এই মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে কিছু ক্ষণ রেখে দিন। কয়েক দিন ব্যবহারে ত্বকে আসবে ঔজ্জ্বল্য।

বেসন ও টকদইয়ের ফেসপ্যাকঃ ত্বকে উজ্জ্বলতা ও টানটান ভাব ফিরিয়ে আনতে বেসন অনেক উপকারী। ২ টেবিল চামচ বেসনের সাথে ১ টেবিল চামচ টকদই মিশিয়ে প্যাক তৈরী করে নিন। এবার ভালো করে মুখে লাগিয়ে নিন, শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন । শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন। এরপর ভেজা অবস্থায় ত্বকে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

দুধ ও কাজুবাদামের ফেসপ্যাকঃ দুধে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বকের সুরক্ষায় বিশেষ কার্যকরী। ৮ থেকে ১০টি কাজু বাদাম পানিতে ভিজিয়ে খোসা ছাড়িয়ে ২ টেবিল চামচ দুধের সাথে ব্লেন্ড করে নিন। এবার এই মিশ্রণটি হাতে নিয়ে ত্বকে আলতো করে মাসাজ করুন। ত্বক নরম ও কোমল রাখতে ময়েশ্চারাইজারের মতো কাজ করে এটি।

অ্যালোভেরা ও শশার ফেসপ্যাকঃ অ্যালোভেরা ত্বক ও চুল দুটির সুরক্ষায়ই বেশ উপকারী। ত্বকের জন্য ১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল নিয়ে ১ টেবিল চামচ শশার পেস্টের সাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরী করে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। এই প্যাকটি ত্বকের কালো বা রোদে পোড়াভাব দূর করতে সাহায্য করবে।

অলিভ অয়েল ও কলার ফেসপ্যাকঃ কলা ত্বকের রুক্ষ ও শুষ্কভাব প্রাকৃতিকভাবে দূর করতে অনেক কার্যকরী। ১টি পাকা কলার সাথে ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করে নিন। ২০-৩০ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ব্যবহার করুন।

আলুর রস ও মধুর ফেসপ্যাকঃ সপ্তাহে এক বা দু'বার এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করুন এবং ত্বক সংক্রান্ত সমস্যা থেকে দূরে থাকুন। এর জন্য এক টেবিল চামচ আলুর রসে ২ থেকে ৩ ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিন। দুটো জিনিসই ভালো করে মিশিয়ে মুখে ও ঘাড়ে লাগান। আলু ত্বকের প্রাকৃতিক ব্লিচার হিসেবে কাজ করে৷ অন্যদিকে, মধু ত্বককে গভীরভাবে ময়শ্চারাইজ করে।

বাদাম এবং মধুর ফেসপ্যাকঃ বাদাম খেলে শীতে শরীরে উষ্ণতা পাওয়া যায়। ঠিক একইভাবে বাদাম থেকে তৈরি ফেসপ্যাক লাগালে ত্বকে আর্দ্রতা পাওয়া যায়। শুষ্ক ত্বকের মানুষ অবশ্যই এই প্যাকটি ব্যবহার করবেন। এ জন্য বাদাম পিষে এর গুঁড়ো তৈরি করুন। প্যাক তৈরি করতে এতে মধু ও দই মিশিয়ে নিন। এটি মুখে ও ঘাড়ে লাগান এবং কিছুটা শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

কমলার রস বা খোসার ফেসপ্যাকঃ কমলার খোসা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। শীতে ত্বক সংক্রান্ত সমস্যা মোকাবিলায় এই প্যাকটি খুবই কার্যকরী। খোসার গুঁড়ো ছাড়াও এর রস ব্যবহার করতে পারেন। পাউডারে কয়েক ফোঁটা মধু ও যবের ময়দা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং মুখে লাগান এবং কিছুটা শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। মুখ মোছার পর ময়েশ্চারাইজার ক্রিমও লাগান।

ঘরোয়া উপায়ে ময়েশ্চারাইজার বানানোর পদ্ধতি

ঘরোয়া উপায়ে ময়েশ্চারাইজার বানানোর পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। ঘরোয়া কোনও কিছুর কখনই বিকল্প হয় না। আর তাই বাড়িতেই বানিয়ে নিন ময়েশ্চারাইজার। উপকরণ খুব সামান্যই, ত্বক অনুযায়ী বানিয়ে নিতেও পারবেন। এতে বিষাক্ত কেমিক্যালের হাত থেকে ত্বক থাকবে সুরক্ষিত। সেই সঙ্গে অ্যালার্জি, ব্রণের সমস্যাও হবে না। শীতের শুরুতেই রইল ঘরোয়া উপায়ে ময়েশ্চারাইজার বানানোর পদ্ধতি।

  • নারিকেল তেলের ময়েশ্চারাইজার
  • খাঁটি নারিকেল তেল হাফ কাপ
  • ভিটামিন ই ক্যাপসুল ৩টি
  • ল্যাভেন্ডার এসেন্সিয়ল অয়েল ১২ ফোঁটা

যেভাবে বানাবেনঃ একটা বাটিতে গরম পানি নিন। তার উপর একটা বাটিতে নারিকেল তেল ঢেলে ভালো করে গলিয়ে নিন। এবার ওর মধ্যে বাকি সব উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ওই গরম পানিতে বাটি বসানো অবস্থাতেই সবটা করবেন। এবার পুরো মিশ্রণটা ঠান্ডা হতে দিন। ঠান্ডা হলে কাচের পাত্রে রেখে ব্যবহার করুন।

অ্যালোভেরার ময়েশ্চারাইজার

  • নারিকেল তেল ২ চামচ
  • অ্যালোভেরা জেল ৪ চামচ
  • ভিটামিন ই অয়েল এক চামচ
  • আমন্ড অয়েল ২ চামচ

যেভাবে বানাবেনঃ একটি পরিষ্কার বাটিতে প্রথমে অ্যালোভেরা জেল নিন। এবার ওর মধ্যে নারিকেল তেল মিশিয়ে নিন। খুব ভালো করে মিশলে ভিটামিন ই ও আমন্ড অয়েল মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন গোসলের পর ব্যবহার করুন। ত্বকের দাগ, ছোপ থেকে বাঁচায়। সূর্যের আলো থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও শুকনো হয়ে যাওয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে। যাঁদের ত্বকের সমস্যা থাকে তাঁদের জন্য খুব ভালো এই ময়েশ্চারাইজার।

আমন্ড অয়েল ময়েশ্চারাইজার

  • আমন্ড অয়েল ১ চামচ
  • মধু ১ চামচ
  • কোকো বাটার ১ চামচ
  • গোলাপ পানি ২ চামচ

যেভাবে বানাবেনঃ কোকো বাটার আর আমন্ড অয়েল ভালো করে মিশিয়ে নিন। একটা পাত্রে গরম জল নিয়ে তার উপর অন্য একটি বাটি বসিয়ে কোকো বাটার ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার একটু ঠান্ডা করে মধু আর গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। পুরোটা ঠান্ডা হলে কাচের শিশিতে রাখুন। সংবেদনশীল ত্বক (Sensitive Skin) এর জন্য বেশ ভালো।

অলিভ অয়েল ময়েশ্চারাইজার

  • অলিভ অয়েল হাফ কাপ
  • ভিটামিন ই ক্যাপসুল ২টা
  • নারকেল তেল ১ চামচ
  • বিসওয়াক্স ১ চামচ

যেভাবে বানাবেনঃ অলিভ অয়েল আর নারিকেল তেল খুব ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার ওর মধ্যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে দিন। পুরো মিশ্রণটা ঠান্ডা করে বোতলে ভরে ফেলুন। এই ময়েশ্চারাইজার কিন্তু শুষ্ক ত্বকের জন্য খুব ভালো। তবে সূর্যের আলো পড়ে এমন জায়গায় কৌটা রাখবেন না।

আপেল ময়েশ্চারাইজার

  • আপেল ২টা
  • অলিভ অয়েল ১ চামচ
  • গোলাপ পানি ৫ ফোঁটা

যেভাবে বানাবেনঃ আপেলের বীজ বের করে সিদ্ধ করে নিন। এবার ঠান্ডা করে নিয়ে মিক্সিতে মিহি পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এবার ওর মধ্যে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে গোলাপ পানি মিশিয়ে ব্যবহার করুন। আপেলের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মুখকে চকচকে রাখে। সেই সঙ্গে শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই ভালো এই ময়েশ্চারাইজার।

গ্রিন টি ময়েশ্চারাইজার

  • গ্রিন টি এসেন্স ১ চামচ
  • আমন্ড অয়েল১ চামচ
  • গোলাপ জল ১ চামচ
  • এসেন্সিয়ল অয়েল ১ চামচ
  • অ্যালোভেরা জুস ১ চামচ
  • বিওয়াক্স ১ চামচ

যেভাবে বানাবেনঃ আমন্ড অয়েল আর বিওয়াক্স মিশিয়ে গরম করে নিন। এবার ঠান্ডা হলে বাকি উপকরণ মিশিয়ে নিন। ব্যাস, এবার ফ্রিজে রাখলেই তৈরি ময়েশ্চারাইজার। দূষণের হাত থেকে বাঁচায় এই ময়েশ্চারাইজার। এছাড়াও মুখে কোনও দাগ থাকলে আর সংবেদনশীল ত্বকের জন্য খুবই ভালো।

শীতেকালে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান

শীতেকালে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। সময় এসেছে আপনার ত্বকের বাড়তি যত্ন নেওয়ার এবং শীতে ত্বকের সমস্যার জন্য সজাগ থাকার। আসুন দেখে নেওয়া যাক সামনের শীতের মাসগুলিতে আপনার ত্বকের জন্য সবচেয়ে সাধারণ হুমকিগুলি কী এবং সেগুলি মোকাবেলায় আপনি কী করতে পারেন। চলুন দেখে নেই কিছু ত্বকের সমস্যা ও সমাধান।

শুষ্ক ঠোঁটঃ শীতে শুষ্ক ঠোঁট থেকে আমরা কেউই রেহাই পাই না। কীভাবে মোকাবেলা করবেন তা এখানে হাইড্রেটেড থাকার জন্য প্রচুর জল পান করুন এবং সম্ভব হলে বাড়িতে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন। আপনার ঠোঁটে উদারভাবে মোম বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগান। প্রতিবার বাইরে পা দেওয়ার সময় সানস্ক্রিনযুক্ত লিপবাম বা লিপস্টিক লাগান। আপনার ঠোঁটকে হাইড্রেট করার জন্য চাটবেন না - এটি সংক্ষিপ্তভাবে আরও ভাল লাগতে পারে, তবে এটি কেবল ফাটা ঠোঁটকে কিছুক্ষণ পরে আরও খারাপ করে তোলে।

প্রতিরোধঃ

  • আপনার শরীর এবং ঠোঁট হাইড্রেটেড রাখতে প্রচুর পানি পান করুন। ডিহাইড্রেশন শুষ্ক এবং ফাটা ঠোঁটে অবদান রাখতে পারে।
  • বাতাসে আর্দ্রতা যোগ করতে বাড়িতে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন, বিশেষ করে শুষ্ক শীতকালে।
  • আর্দ্রতা আটকাতে এবং শুষ্কতা প্রতিরোধ করতে আপনার ঠোঁটে উদারভাবে মোম বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগান।
  • UV রশ্মি থেকে আপনার ঠোঁটকে রক্ষা করতে আপনি যখনই বাইরে যান তখন সানস্ক্রিন সহ লিপবাম বা লিপস্টিক ব্যবহার করুন।
  • আপনার ঠোঁট চাটা থেকে বিরত থাকুন, কারণ লালা ত্বককে আরও শুকিয়ে দিতে পারে, ফাটা ঠোঁটকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।

ফাটা হিলঃ বেদনাদায়ক, ফাটা হিল শীতকালে একটি বারবার সমস্যা। এগুলি প্রায়শই শুষ্ক ত্বকের কারণে হয় এবং শুষ্ক শীতে আরও খারাপ হয়ে যায়। ফাটা গোড়ালিতে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে, প্লাস্টিকের মোড়ক দিয়ে ঢেকে এবং একজোড়া মোজা পরিয়ে আপনার পা সুস্থ ও পর্যাপ্ত ময়শ্চারাইজড রাখুন।

প্রতিরোধঃ

  • ফাটা হিলগুলিতে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগান, প্লাস্টিকের মোড়ক দিয়ে ঢেকে রাখুন এবং আর্দ্রতা লক করার জন্য মোজা পরুন।

শুষ্ক হাতঃ শীতের ঠান্ডা বাতাস ও পানিতে আপনার হাত কষ্ট পেতে পারে। ঠান্ডা এবং ফ্লু জীবাণু দূর করার জন্য ঘন ঘন আপনার হাত ধোয়া প্রয়োজন, তবে এটি শুষ্কতাও বাড়ায়। এই শীতে সকালে, ঘুমাতে যাওয়ার আগে এবং দিনের যে কোনও সময় যখন আপনার হাত শুকিয়ে যায় তখন গ্লিসারিন-ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে শুকনো হাতের যত্ন নিন। এবং প্রতিবার বাইরে যাওয়ার সময় গ্লাভস পরতে ভুলবেন না।

প্রতিরোধঃ

  • শুষ্কতা মোকাবেলায় সকালে, শোবার আগে এবং সারা দিন গ্লিসারিন-ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • ঠান্ডা এবং বাতাস থেকে আপনার হাত রক্ষা করার জন্য বাইরে যাওয়ার সময় গ্লাভস পরিধান করুন।

একজিমাঃ একজিমা শুষ্ক, লালচে ত্বক দ্বারা চিহ্নিত এক ধরনের ত্বকের প্রদাহকে বোঝায় যা চুলকায় বা পুড়ে যায়। এটি শীতকালে জ্বলতে পারে। সানস্ক্রিনযুক্ত তেল-ভিত্তিক মলম দিয়ে ঘন ঘন ময়েশ্চারাইজ করে সুরক্ষিত থাকুন। ঘাম এবং অতিরিক্ত উত্তাপও চুলকানির কারণ হতে পারে, তাই সেই অনুযায়ী আপনার স্তরগুলি পরিধান করুন।

প্রতিরোধঃ

  • শুষ্ক, লালচে ত্বক থেকে রক্ষা করার জন্য সানস্ক্রিনযুক্ত তেল-ভিত্তিক মলম দিয়ে ঘন ঘন ময়শ্চারাইজ করুন।
  • অতিরিক্ত গরম এড়াতে স্তরে স্তরে পোশাক পরুন, যা একজিমা-প্রবণ ত্বকে চুলকানি শুরু করতে পারে।

সোরিয়াসিসঃ সোরিয়াসিস শুষ্ক ত্বকের চেয়ে বেশি গুরুতর। এটি ঘটে যখন ইমিউন সিস্টেম ত্বকের কোষের বিল্ড আপ নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম হয়। শুষ্ক বায়ু, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং সূর্যালোকের অভাব এটিকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে। প্রতিরোধের জন্য, সংক্ষিপ্ত, হালকা উষ্ণ গোসলের রুটিন অনুসরণ করুন এবং সারা ঘরে প্রচুর ময়েশ্চারাইজার এবং হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন। আপনার জন্য সেরা চিকিত্সা সম্পর্কে ভারতের একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।

প্রতিরোধঃ
  • সোরিয়াসিসের লক্ষণগুলিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে সংক্ষিপ্ত, হালকা উষ্ণ গোসলের রুটিন অনুসরণ করুন।
  • শুষ্ক বাতাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ময়েশ্চারাইজার এবং হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন।

শুষ্ক ত্বকঃ বায়ু শুষ্ক এবং শীতল হয়ে গেলে এটি অত্যন্ত সাধারণ। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি প্রচুর তরল পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঝরনায় হালকা গরম জল এবং একটি মৃদু, সুপার-ফ্যাটেড সাবান ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন, গরম জল পাত্র এবং প্যান থেকে গ্রীস অপসারণের জন্য, আপনার ত্বক নয়। আপনার স্নানের পরে ত্বকের শুষ্ক ত্বকে আলতোভাবে চাপ দিয়ে এবং ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করে আর্দ্রতা লক করুন।

বিশেষত একটি গ্লিসারিন-ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার এবং শুধুমাত্র সুগন্ধযুক্ত কিছু জলযুক্ত লোশন নয়। যখনই প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে অত্যধিক শুষ্ক ত্বকের প্যাচগুলিতে সারা দিন ময়শ্চারাইজার পুনরায় প্রয়োগ করুন। রোদে এবং বাতাসে বেশিক্ষণ বাইরে থাকা এড়িয়ে চলুন। আপনি যখনই করবেন, বাইরে যাওয়ার আগে শীতকালীন সানস্ক্রিন ময়েশ্চারাইজার লাগান।

প্রতিরোধঃ

  • একটি পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন এবং সামগ্রিক ত্বকের স্বাস্থ্যকে সমর্থন করার জন্য ভালভাবে হাইড্রেটেড থাকুন।
  • ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ছিনতাই এড়াতে ঝরনায় হালকা গরম জল এবং একটি মৃদু, সুপার-ফ্যাটেড সাবান ব্যবহার করুন।
  • গোসলের পরে একটি গ্লিসারিন-ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করুন এবং শুষ্ক ত্বকের প্যাচগুলিতে সারা দিন পুনরায় প্রয়োগ করুন।

খুশকিঃ মাথার ত্বকে জ্বালাপোড়া, খুশকি এবং ত্বকে ফুসকুড়ি যে কোনো সময় ঘটতে পারে, তবে সাধারণত শীতকালে তা জ্বলে ওঠে। মাথার ত্বকের জন্য, অ্যান্টি-ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করা উপকারী। অতিরিক্ত শ্যাম্পু করা শীতে চুলের অন্তর্নিহিত আর্দ্রতা কেড়ে নিতে পারে। তাই প্রতিদিনের পরিবর্তে প্রতি ২-৩ দিন অন্তর চুল ধুয়ে ফেলুন। আপনার চুল হাইড্রেটেড, নরম এবং চকচকে রাখতে কন্ডিশনার প্রয়োগ করুন।

প্রতিরোধঃ
  • মাথার ত্বকে জ্বালাপোড়া এবং ফ্ল্যাকিং নিয়ন্ত্রণ করতে অ্যান্টি-ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
  • প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ছিঁড়ে যাওয়া রোধ করতে প্রতিদিনের পরিবর্তে প্রতি 2-3 দিন পর পর চুল ধুয়ে নিন।
  • চুলের অবস্থা: চুল হাইড্রেটেড রাখতে এবং শুষ্কতা রোধ করতে নিয়মিত কন্ডিশনার লাগান।
  • স্টাইলিং সরঞ্জামগুলির অত্যধিক ব্যবহার এড়িয়ে চলুন এবং একটি টুপি পরার মাধ্যমে চুলকে উপাদান থেকে রক্ষা করুন।

ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে যেসব খাবার খাবেন

উজ্জ্বল চকচকে আর নিখুঁত ত্বক কে না চায়। সুন্দর ত্বক পেতে আমরা কত রকমের পন্থা-ই না অবলম্বন করি। যেমন- স্কিন ট্রিটমেন্ট, স্কিন কেয়ার রুটিনে কত রকমের স্টেপ, ঘরোয়া উপায়, ফেসিয়াল আরও কত কী। পারফেক্ট চকচকে স্কিনের জন্য ভেতর থেকে প্রয়োজন পুষ্টির যাতে ঘাটতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেলেই ত্বক হয়ে উঠবে ফ্ললেস। ত্বকের চকচকে ভাব ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে এই ১৩ টি খাবার ডায়েটে রাখুন।
ত্বকের-উজ্জলতা-বাড়াতে-যেসব-খাবার-খাবেন

১. টমেটোঃ

  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেঃ টমেটোতে আছে ভিটামিন সি, ই এবং বিটা ক্যারোটিন যা ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল করে ও ত্বক সুন্দর রাখে।
  • বয়সের ছাপ কমায়ঃ ত্বক ভালো রাখার উপাদান ভিটামিন বি যেমন- বি ওয়ান,বি থ্রি, বি ফাইভ, বি সিক্স এবং বি নাইন ইত্যাদি যা টমেটোতে পাওয়া যায়। এই ভিটামিনগুলো ত্বকের বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও বলিরেখা, বয়সের দাগ, চোখের চারপাশের কালো দাগ, পিগমেন্টেইশন ইত্যাদি থেকে টমেটো ব্যবহারের মাধ্যমে রক্ষা পাওয়া যায়।
২. পানিঃ ত্বক ভালো রাখতে বেশি করে পানি পান করার বিকল্প নেই। প্রতিদিন অন্তত ২-২.৫/৩ লিটার পানি পান করতে হবে। ত্বকের ভাঁজ দূর করার পাশাপাশি শরীরে চিনি জমতে দেয় না। শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান ঘামের মাধ্যমে বের করে দেয় পানি। পর্যাপ্ত পানি পেলে ত্বকের কোষে পানি পৌঁছায় এবং ত্বক সজীব দেখায়। পরিমিত পানি খেলে ব্রণের উপদ্রবও কমে।

৩. লেবু জাতীয় ফলঃ লেবু, কমলা, মোসাম্বি, জাম্বুরা, মাল্টা এগুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে দারুন কার্যকরী। কারণ এতে আছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিনস, যা স্কিনকে হাইড্রেটেট রাখে আর ন্যাচারালি স্কিনটোন ব্রাইট করতে হেল্প করে। মেলানিন কমিয়ে স্কিনকে উজ্জ্বল করে তুলতে লেবু জাতীয় ফল বেশ ভালো কাজ করে।

৪. শসাঃ ত্বকের যত্নে শসার কথা কল্পনা করলেই চোখে ভাসে শসার স্লাইস আর মুখে ফেইসপ্যাক তাই না? ফেইসপ্যাকে শসা ব্যবহার করা হয় কেননা এতে আছে কুলিং ইফেক্ট, যা ত্বকে এনে দেয় প্রশান্তি। শুধুমাত্র ফেইসপ্যাকে নয়, রেগুলার শসা খেলে আপনি অনেক উপকার পাবেন। শসাতে আছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি আর ভিটামিন কে। আর এই উপাদানগুলো আপনার স্কিনকে রাখে হেলদি্ আর গ্লোয়িং। আরও উপকারিতা আছে, বয়সের ছাপ বা বলিরেখা কমাতে ও স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখতে দারুন কার্যকরী এই উপাদানটি।

৫. মাছঃ ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা চাইলে প্রতিদিনের খাবারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ রাখা ভালো। এই অ্যাসিড চেহারায় বয়সের গতি ধীর করে এবং প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখে। ওমেগা থ্রি শক্তিশালী প্রদাহরোধী উপাদান সমৃদ্ধ যা ব্রণ দূর করে। তাই ত্বক সুন্দর রাখতে ওমাগা থ্রি সমৃদ্ধ মাছ খাওয়া উপকারী।

৬. ফলঃ

  • কলাঃ কলা ত্বক ভাল রাখার জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-এ, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। পাশাপাশি এটি ত্বকের মলিনভাব দূর করতেও সাহায্য করে।
  • আপেলঃ আপেলে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, এ, সি আর অন্যান্য দরকারি নিউট্রিয়েন্ট। আনইভেন স্কিনটোন রিপেয়ারে, হেলদি গ্লো ধরে রাখতে এবং ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত দেখাতে এই ফলটি দারুন কাজ করে।

৭. ইয়োগার্ট বা টকদইঃ ত্বকের বিভিন্ন ছোটখাটো সমস্যার সাথে অন্ত্রের বা Gut এর একটি সম্পর্ক আছে! টকদইয়ে আছে বিভিন্ন ধরণের প্রোবায়োটিকস, যেটা হজমে সাহায্য করে। স্কিনের অনেক ধরনের সমস্যার সল্যুশন দেয় এটা। ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়, ব্রেকআউটের সমস্যা কমিয়ে স্কিনকে করে উজ্জ্বল ও লাবন্যময়।

৮. মশলাঃ

  • দারচিনিঃ ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এছাড়া রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সহায়তা করে এই মসলা। ব্রণ-ফুসকুড়ি রোধেও দারুচিনি দারুণ কার্যকর।
  • জিরাঃ জিরায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরে জমে থাকা দূষিত উপাদান দূর করতে সাহায্য করে। শরীরে দুষিত পদার্থের পরিমাণ বেড়ে গেলে ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। ব্রণ ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় জিরা রাখা উচিত।

৯. গ্রীন টিঃ শরীরকে ডিটক্স করার জন্য গ্রীন টি নিঃসন্দেহে একটি দারুন উপাদান। এতে আছে প্রচুর পরিমাণ ন্যাচারাল অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এতে আছে Phytonutrient যেটাকে বলে Epigallocatechin Gallate (EGCG), স্কিনকে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল থেকে সুরক্ষা দেয়। এছাড়া ডার্ক স্পট কমাতে এবং অকালবার্ধক্য প্রতিরোধে সাহায্য করে এই উপাদানটি। এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বককে হেলদি রাখতে ও স্কিনটোন ব্রাইট করতে দারুন কার্যকরী।

১০. গাজরঃ গাজরে আছে বিটা ক্যারোটিন। স্কিনের আউটার লেয়ারে কোষের বৃদ্ধি করে, হেলদি স্কিন সেলসকে প্রোমোট করে ত্বককে স্মুথ রাখে। গাজরে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, যেটা ড্যামেজড কোলাজেন রিস্টোর করে। সবচেয়ে ভালো দিক হলো, এটি সহজলভ্য এবং সহজেই ডায়েটে অ্যাড করা যায়।

১১. বাদামঃ স্কিনের জন্যও দারুন উপকারি! বাদাম ভিটামিন ই এর সবচেয়ে ভালো উৎস। এটি ড্যামেজড স্কিন সেলসকে রিপেয়ার করে এবং ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করে। স্নেহজাতীয় খাবার ত্বককে সুস্থ্য ও সুন্দর রাখে। এতে থাকা Linoleic acid বা প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড ত্বকের রুক্ষতা ও শুষ্কভাব কমিয়ে ফেলে।

১২. পালং শাকঃ এমন একটি সবুজ সবজি এটি, যার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। এতে আছে lutein এবং zeaxanthin, এগুলো স্কিনের জন্য খুবই বেনিফিসিয়াল। পালং শাকে আরো আছে ভিটামিন এ, ই, কে- যা স্কিনকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো স্কিনের তারুণ্যও বজায় রাখে, সেই সাথে বার্ধক্যের ছাপ পরার প্রক্রিয়াকে বিলম্ব করে।

১৩. ডার্ক চকলেটঃ ডার্ক চকলেটে flavanol নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে, যেটা স্কিনকে মসৃণ ও সুন্দর রাখতে দারুন ইফেক্টিভ। কোকোয়া বিন স্কিনকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে সুরক্ষা দেয়। এটি অকালবার্ধক্য রোধ করে। পরিমিত পরিমাণে ডার্ক চকলেট খেলে ত্বক সুন্দর হওয়ার পাশাপাশি হার্টও ভালো থাকে।

ত্বকের যত্নে ভিটামিনের উপকারিতা

ত্বকের যত্নে ভিটামিনের উপকারিতা অপরিহার্য। ফর্সা এবং উজ্জ্বল ত্বক পেতে সবাই প্রত্যাশা করে। তবে তাৎক্ষণিক ফলাফলের জন্য কোনও যাদুকরী ঔষধ না থাকলেও কিছু ভিটামিন ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে, ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বক ভালো রাখার জন্য যেমন আপনার নিয়মিত ভালো করে মুখের যত্নও নিতে হবে আবার খাবারের দিকেও নজর দিতে হবে।

কারণ, আপনি যদি স্বাস্থ্যকর খাবার না খান বা ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার(Vitamin Rich Foods) গ্রহণ না করেন, তাহলে ত্বকের বারোটা বাজতে খুব বেশি সময় লাগবে না। তাই আজ এমন কয়েকটি ভিটামিনের সন্ধান দেব, যা খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করতেই হবে। তা আপনার ত্বককে ভালো রাখবে। জেনে নিন কোন কোন ধরনের খাবার খেলে আপনার মুখের জেল্লা হবে চোখে পড়ার মতো।

ভিটামিন-সিঃ আপনি নিশ্চয়ই খুব ভালো করে জানেন, আমাদের ত্বক ভালো রাখার জন্য ও যত্ন নেওয়ার জন্য ভিটামিন সি কতটা কার্যকরী। সেই জন্য বিউটি ইন্ডাস্ট্রিতে এই ভিটামিন সি ব্যবহার দিনের পর দিন খুবই জনপ্রিয় হচ্ছে। তবে শুধুই ভিটামিন সি মুখে লাগিয়ে নিলেই হবে না, বরং আপনার ডায়েটেও যদি ভিটামিন সি থাকে, তাহলে তার প্রভাব পড়বে আপনার ত্বকে।

ভিটামিন সি-তে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস থাকে। যা আপনার মুখের জেল্লা ধরে রাখতে খুবই কাজে দেয়। শুধুমাত্র তাই নয়, কোলাজেনের বৃদ্ধি ঘটায়। এতে ত্বক থাকে টানটান ও সতেজ। জেল্লাদার মসৃণ ত্বকও আপনি যেমন পাবেন, পাশাপাশি আপনার ত্বকের তরতাজা ভাবও বজায় থাকবে। লেবু জাতীয় খাবারে আপনি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাবেন।

ভিটামিন-এঃ ত্বকে বয়সের ছাপ ও বলিরেখা চলে আসছে? তা প্রতিরোধ করবে ভিটামিন এ। এই ধরনের ভিটামিন আপনার ত্বককে রাখে টানটান। কোলাজেন হল এক ধরনের প্রোটিন। যা কার্টিলেজ, হাড়, লিগামেন্ট এবং দাঁত শক্ত রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের এলাস্টিসিটি বা টানটান ভাব ধরে রাখতেও দারুণ কাজে দেয়। এইক্ষেত্রে ভিটামিন এ-এর কোনও জুড়ি নেই।

সানবার্নও প্রতিরোধ করে এই ভিটামিন (Vitamins A for Skin)। ত্বকের যত্নে ভিটামিন কত প্রয়োজন দেখছেন তো। টমেটো, ব্রকলি, গাজর, পালং শাক ইত্যাদিতে আপনি সঠিক পরিমাণে ভিটামিন সি পাবেন। যা ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

ভিটামিন-কেঃ ভিটামিন কে পাবেন আপনার প্রতিদিনের ডায়েটের নানা খাবারে। তাই ত্বকের যত্ন নিতে ও ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে এই ধরনের ভিটামিন কে সমৃদ্ধ খাবার খেতেই পারেন। ব্রকলি, বাঁধাকপি এবং পালংশাকের মতো খাবারে আপনি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে পাবেন। যা আপনার ত্বকের জন্য ভালো। তাই ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে খুবই কাজে আসবে এই ধরনের খাবার।

ভিটামিন-ইঃ ভিটামিন ই যে আপনার ত্বকের জন্য ভালো, তা আর আলাদা করে বলে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। সেই কথা নিশ্চয়ই আপনাকে আর আলাদা করে বলে দিতে হবে না। ভিটামিন ই শুধু ত্বকে লাগালেই কাজ দেয় তা নয়, এই ভিটামিন গ্রহণেও আপনার মুখ ভালো থাকে।

ভিটামিন ই-এ থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্য়ান্টি অক্সিড্যান্টস। ত্বককে স্বাস্থ্যকর রাখে। আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য় করে। সান ড্যামেজ থেকেও বাঁচায় আপনার মুখকে। আপনি লেটুস পাতা, আমন্ড, পিনাট বাটার, পিনাট, কুমড়ো ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই পাবেন।

ভিটামিন-বি৩ঃ ত্বক ভালো রাখতে আপনি ভিটামিন বি ৩(B3) সমৃদ্ধ খাবারও গ্রহণ করতে পারেন। এতে আপনার মুখের নানা সমস্যা মিটে তো যাবেই, পাশাপাশি আপনার ত্বকের জেল্লাও হবে চোখে পড়ার মতো। ডিম, অ্যাভোকাডো, দুধের প্রোডাক্ট, মাছেও আপনি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ৩ পাবেন। তা গ্রহণ করুন, আপনার শরীরও ভালো থাকবে। আর আপনার ত্বকের জেল্লাও হবে দেখার মতোই।

ভিটামিন বি ৩ আপনার ত্বকে আর্দ্রতা যোগায়। ত্বকের টেক্সচার ঠিক রাখে। ত্বকের উপর সুরক্ষা স্তরকে মজবুত করে। এতে আছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। যা আপনার ত্বককে ভালো রাখে।

ভিটামিন-ডিঃ ভিটামিন-ডি-এর অভাবে ত্বকে অতিরিক্ত শুষ্কতা দেখা দেয়। ত্বক ফ্যাকাসে ও বিবর্ণ হয়ে পড়ে। সহজে ত্বকের ক্ষত শুকাতে চায় না। একজিমা, সোরিয়াসিস হতে পারে। স্যামন, টুনা, পনির, ডিম, মাশরুম, সয়া, দুধ, অ্যাভোকাডো, চিকেন এবং পিনাট বাটারের মতো চর্বিযুক্ত খাবার থেকে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়। প্রতিিদন কিছু সময় সকালে সূর্যের অালোতে বসে থাকলেও ভিটামিন-ডি পাওয়া যাবে।

শীতে ছেলেদের ত্বক ভালো রাখতে যা করবেন

শীতের প্রভাব শুধু মেয়েদের ত্বকেই পড়ে না, পড়ে ছেলেদের ত্বকেও। আর ছেলেরা যেহেতু নিজের যত্নে একটু বেশিই উদাসীন থাকে তাই তাদের ত্বকে শীতের আক্রমণও সহজ হয়। বছরের অন্যান্য সময় ততটা বোঝা না গেলেও শীতে একটু অবহেলায়ই ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে। তাই শীতের সময়ে ছেলেদেরও ত্বকের যত্নে সমান সচেতন হতে হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক শীতে ছেলেরা ত্বক ভালো রাখতে কী করবেন-

ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কারঃ যে সাবান গায়ে মাখেন সেই সাবান দিয়েই মুখ পরিষ্কার করেন? এই অভ্যাস বাদ দিন। কারণ সাবানে আছে উচ্চ পি এইচ। যা আপনার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। তাই মুখ পরিষ্কার করার জন্য সাবানের বদলে ক্লিনজার ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। তবে শুধু শীতেই নয়, বছরের অন্যান্য সময়েও ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করার অভ্যাস করুন।

এক্সফোলিয়েশনঃ ত্বকের যত্নে নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করা জরুরি। ছেলেরা ত্বক ভালো রাখতে নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করুন। এতে ত্বক উজ্জ্বল ও কোমল থাকবে। ত্বকে থাকা মৃত কোষ ঝরে যাবে। সপ্তাহে দুইদিন এক্সফোলিয়েট করতে পারলে শীতেও ত্বক ভালো থাকবে।

ঠোঁটের যত্নঃ শীতের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে আমাদের ঠোঁটে। এসময় নিয়মিত লিপবাম ব্যবহার না করলে দ্রুত ঠোঁট ফেটে যায়। তবে শুধু লিপবাম কিংবা গ্লিসারিন ব্যবহার করলেই হবে না, সেইসঙ্গে নিয়মিত নিতে হবে ঠোঁটের যত্নও। ঠোঁট কোমল ও সুন্দর রাখতে নিয়মিত স্ক্রাব করতে হবে।

ময়েশ্চারাইজ করাঃ শীতে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা জরুরি। কারণ এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যায়, যার প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বকেও। শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ত্বকও হয়ে পড়ে আর্দ্রতাহীন। তাই এসময়ে প্রতিদিন ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এটি ত্বককে কোমল রাখে এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে।

অলিভ অয়েল বা লোশন ব্যবহারঃ শুধু মুখের যত্ন নিলেই হবে? শীতে ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচাতে শরীরের যত্নও দরকার। হাত-পায়ে অবশ্যই লোশন বা অলিভ অয়েল মাখতে হবে। এতে গোড়ালি ফাঁটার আশঙ্কাও দূর হয়।

পায়ের যত্নঃ শীত এলে পা ফাটার সমস্যা দেখা দেয় প্রায় সবারই। শুধু মেয়েরা নয়, এই সমস্যায় পড়েন ছেলেরাও। শীতের এই অত্যাচার থেকে বাঁচতে পায়ের যত্ন নিতে হবে নিয়মিত। শুধু যত্ন নিলেই হবে না, জুতার দিকেও রাখতে হবে নজর। শীতে পা ঢাকা জুতা পরলে পা অনেকটাই ভালো থাকে। সেইসঙ্গে পরতে হবে মোজাও। পা ফেটে গেলে হালকা গরম পানিতে কিছুটা নারিকেল তেল, লবণ ও শ্যাম্পু গুলিয়ে নিয়ে তাতে মিনিট পনের পা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফুট ক্রিম ব্যবহার করুন।

শীতে ত্বক ভালো রাখতে যে খাবারগুলা খাবেন

শীত আসতে না আসতেই আমাদের ত্বকের রুক্ষতা সবার আগে নজরে আসে। ঠোঁট, পায়ের গোড়ালি, কনুই ফেটে যায়, চুল হয়ে যায় বিবর্ণ। এসব সমস্যা সমাধানে যত্ন তো নিতে হবেই সেইসঙ্গে খাবারের প্রতিও হতে হবে সচেতন। কিছু খাবার যোগ করতে হবে, কিছু করতে হবে বিয়োগ। শীতে ত্বক ভালো রাখার জন্য আপনার খাবারের তালিকায় রাখুন এই খাবার গুলোঃ

১. মিষ্টি আলুঃ শীতকালীন প্রিয় খাবার মিষ্টি আলু ভিটামিন এ সমৃদ্ধ, যা ত্বক মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয়। এতে আরও থাকে বিটা-ক্যারোটিন, যা শীতের কঠোর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করে। তাই শীতের এই সময়ে নিয়মিত মিষ্টি আলু খাওয়ার অভ্যাস করুন। এটি আপনার ত্বককে ভেতর থেকে সতেজ রাখতে কাজ করবে।

২. পালং শাকঃ পুষ্টি, ভিটামিন এবং খনিজের পাওয়ার হাউস হলো পালং শাক। এতে আরও থাকে আয়রন এবং ত্বক-বান্ধব ভিটামিন ই। পালং শাকের ভিটামিন এ এবং সি ত্বক ভালো রাখতে কাজ করে। এই শাক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং হাইড্রেশনে ভরপুর থাকে, যা আপনার ত্বককে বাড়তি সুবিধা দেয়। তাই শীতে ত্বক ভালো রাখতে নিয়মিত খেতে হবে পালং শাক।

৩. বাদাম এবং বীজঃ বাদাম এবং বীজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড দিয়ে পরিপূর্ণ থাকে যা আমাদের শরীরকে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগায়। এই খাবার নিয়মিত খেলে তা ত্বকের কোষের ক্ষতি সারাতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি ত্বকের নতুন কোষ জন্মাতেও করে। ত্বককে মসৃণ করতে নিয়মিত এ ধরনের খাবার খান। দিনে এক মুঠো বাদাম, আখরোট বা সূর্যমুখীর বীজ যথেষ্ট।

৪. মাছঃ মাছের অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। ওমেগা -৩ এর অন্যতম উৎস হলো বিভিন্ন ধরনের মাছ। ডুবো তেলে ভাজার পরিবর্তে স্বাস্থ্যকরভাবে মাছ রান্নার পদ্ধতি বেছে নিন। যেমন স্টিমিং, গ্রিলিং, পোচিং বা বেকিং। নিয়মিত মাছ খেলে তা শরীরের প্রদাহ কমাতেও কাজ করে। স্যামন, ম্যাকেরেল এবং সার্ডিনের মতো সামুদ্রিক মাছ আপনার ত্বক ভালো রাখতে কাজ করবে।

৫. অ্যাভাকাডোঃ অ্যাভাকাডো বিদেশি ফল হলেও এখন আমাদের দেশে এটি পাওয়া যায়। এই ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা-ক্যারোটিন, ফোলেট, ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই ইত্যাদি থাকে। যা শীতকালে ত্বককে অতিরিক্ত পুষ্টি সরবরাহ করে এবং শুষ্কতা দূর করে। অ্যাভোকাডো পুষ্টিগুণে ভরা। এটি ত্বক ভালো রাখার পাশাপাশি শরীরের আরও অনেক উপকার করে।

৬. শসাঃ শসাতে আছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি আর ভিটামিন কে। আর এই উপাদানগুলো আপনার স্কিনকে রাখে হেলদি্ আর গ্লোয়িং। আরও উপকারিতা আছে, বয়সের ছাপ বা বলিরেখা কমাতে ও স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখতে দারুন কার্যকরী এই উপাদানটি।

৭. ডালিমঃ ডালিম এমন একটি ফল, যাতে আপনি প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি পাবনে। এটিতে পলিফেনলও থাকে। এই সব উপাদানগুলো ফ্রি র্যাডিকেল দূরে রাখে এবং শরীরে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। এটি আপনার ত্বকের টোন এবং টেক্সচার উভয়ই উন্নত করতে সক্ষম।

৮. পেঁপেঃ পেঁপেতে ভিটামিন সি ও এ পাওয়া যায়। এটি আপনার ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে এবং নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। এটি আপনার ত্বককে ফ্রি
রযাডিকেল দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকেও রক্ষা করে।

৯. পেয়ারাঃ পেয়ারায় আপনি ভিটামিন এ, সি, লাইকোপিন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। এটি আপনার ত্বককে ফ্রি রযাডিকেল দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এটি কোলাজেন সংশ্লেষণকে বাড়িয়ে তোলে, যা আপনার ত্বককে নরম ও কোমল রাখতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত চিন্তা-অভিযোগ করা বাড়াতে পারে মানসিক চাপ, পরিবর্তে কী করবেন জানুন নারকেল নারকেল আপনাকে হাইড্রেট করে। শুধু তাই নয়, এটি আপনার ত্বকের ভেতর থেকে পুষ্টিও জোগায়।

১০. নারকেলঃ নারকেলে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা আপনার ত্বককে বিভিন্ন উপায়ে উপকার করতে পারে। নিয়মিত নারকেলের পানি বা নারকেল খেলে আপনার বলিরেখার সমস্যা সমাধান হতে পারে।

১১. কলাঃ কলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-বি, এ, সি পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, এতে ডোপামিন এবং ক্যাটেচিনও পাওয়া যায়। এগুলি আপনার ত্বককে হাইড্রেট করার পাশাপাশি নমনীয় করে তোলে। এটি আপনার মুখ থেকে সূক্ষ্ম রেখা এবং বলিরেখাও দূর করতে পারে।

১২. টক দইঃ টক দই সার্বিক সুস্থতায় অনেকটাই নির্ভর করে অন্ত্রের স্বাস্থ্যের ওপরে। তাই হজমপ্রক্রিয়া ঠিক রাখতে নিয়মিত টক দই খাওয়া প্রয়োজন। এতে উপস্থিত উপকারী প্রোবায়োটিক্স আপনার অন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখবে। তাতে শরীরও যেমন ভালো থাকবে, ঠিক তেমনই ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি হবে দেখার মতো।

ত্বকের যত্নে মিষ্টি আলুর উপকারিতা

আপনার ত্বককে স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল আভা দেওয়ার জন্য প্রাকৃতিক উপায় খোঁজেন তবে মিষ্টি আলু একটি কার্যকরী খাবার হতে পারে। এতে ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা জন্য বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। ত্বকের শুষ্কতা দেখা দিলে বা উজ্জ্বলতা নষ্ট হতে শুরু করলে খাবারের তালিকায় মিষ্টি আলু যোগ করে নিন। চলুন জেনে নেওয়া যাক মিষ্টি আলু খেলে ত্বকের কী উপকার হয়-

১. কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়ঃ মিষ্টি আলু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা কোলাজেন উৎপাদনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। কোলাজেন হলো সেই প্রোটিন যা ত্বককে দৃঢ়, মসৃণ এবং স্থিতিস্থাপক রাখে। ২০২১ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, ২০-৭০ বছর বয়সী ১,১২৫ জন অংশগ্রহণকারীর (যাদের মধ্যে ৯৫% নারী) ওপর করা ১৯টি গবেষণার পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, হাইড্রোলাইজড কোলাজেন প্লাসিবো চিকিৎসার তুলনায় ত্বকের হাইড্রেশন, স্থিতিস্থাপকতা এবং বলিরেখা কমিয়েছে। মিষ্টি আলু নিয়মিত খেলে তা ত্বকের গঠনে সহায়তা করে এবং বলিরেখা কমাতে কাজ করে।

২. ইউভি ক্ষতি থেকে রক্ষা করেঃ মিষ্টি আলুর কমলা রঙ বিটা-ক্যারোটিন থেকে আসে, একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত করে। ত্বক মেরামত এবং পুনর্জন্মের জন্য ভিটামিন এ অপরিহার্য। বিটা-ক্যারোটিন ত্বককে ক্ষতিকারক ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে, রোদে পোড়া এবং দীর্ঘমেয়াদী ত্বকের ক্ষতির ঝুঁকি কমায়। খাদ্যতালিকায় মিষ্টি আলু যোগ করে সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাবের বিরুদ্ধে ত্বকের প্রতিরক্ষা বাড়াতে পারেন।

৩. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়ঃ মিষ্টি আলুতে থাকা ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারোটিন ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ ত্বকের কোষের পরিবর্তন বৃদ্ধি করে, যা কালো দাগ এবং পিগমেন্টেশন কমাতে সাহায্য করে। খাবারের তালিকায় নিয়মিত মিষ্টি আলু রাখলে তা ত্বকের উজ্জ্বল আভা বৃদ্ধি করে।

৪. ত্বককে হাইড্রেট করে এবং পুষ্টি দেয়ঃ মিষ্টি আলুতে প্রচুর পানি থাকে, যা ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, মিষ্টি আলুতে প্রচুর পটাসিয়াম রয়েছে, যা শরীরে তরল মাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। খাদ্যতালিকায় মিষ্টি আলু রাখলে তা ত্বককে প্রাণবন্ত এবং উজ্জ্বল থাকার জন্য প্রয়োজনীয় হাইড্রেশন প্রদান করতে পারে।

৫. প্রদাহ কমায়ঃ আপনি কি জানেন যে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রণ এবং জ্বালার কারণ হতে পারে? অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের উচ্চ উপাদানের কারণে মিষ্টি আলুতে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই যৌগগুলো প্রদাহ শান্ত করতে এবং স্বাস্থ্যকর ত্বককে উন্নীত করতে সহায়তা করে। মাল্টিডিসিপ্লিনারি ডিজিটাল পাবলিশিং ইনস্টিটিউট (এমডিপিআই) গবেষণা অনুসারে, মিষ্টি আলুর নির্যাস প্রদাহের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে তা ত্বকের ফ্লেয়ার-আপ কমাতে সাহায্য করে।

৬. ব্রণ ও দাগ সারাতেঃ মিষ্টি আলুতে ক্যাটোকোলেস থাকে তা স্কিন থেকে ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করতে পারে। আপনি চাইলে বাড়িতে মিষ্টি আলু দিয়ে অয়েন্টমেন্ট তৈরি করতে পারেন। হাফ চা চামচ আলুর রস, এক কোয়াটার চামচ টমেটোর রস আর হাফ চা চামচ মধু ভালোভাবে মেশান। এই অয়েনমেন্ট ত্বকে দিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে একদিন এই প্যাক ব্যবহার করুন। ব্রণ থেকে যে দাগের সৃষ্টি হয় তা দূর করবে এই অয়েন্টমেন্ট।

৭. প্রাকৃতিক দীপ্তি প্রচার করেঃ মিষ্টি আলু খাওয়া আপনার ত্বককে স্বাস্থ্যকর, প্রাকৃতিক আভা দিতে পারে। মিষ্টি আলুতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন একটি উষ্ণ, রোদে চুম্বন করা রঙে অবদান রাখে। এই ক্যারোটিনয়েড একটি সূক্ষ্ম সোনালি রঙ প্রদান করে আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক রঙ বাড়াতে সাহায্য করে যা প্রায়শই স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল ত্বকের সাথে যুক্ত থাকে। মিষ্টি আলু নিয়মিত সেবন একটি সমান ত্বকের স্বর বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে, সময়ের সাথে সাথে পরিষ্কার ত্বকের চেহারা উন্নত করে।

৮. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুরক্ষাঃ মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আপনার ত্বককে পরিবেশগত কারণ যেমন দূষণ, অতিবেগুনী রশ্মি এবং টক্সিনের কারণে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন সি এবং অ্যান্থোসায়ানিন (বেগুনি মিষ্টি আলুতে পাওয়া যায়) ফ্রি র‌্যাডিকেলগুলিকে নিরপেক্ষ করতে সাহায্য করে যা ত্বকের কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং অকাল বার্ধক্যের কারণ হতে পারে। মিষ্টি আলু খাওয়া আপনার ত্বককে তারুণ্য এবং উজ্জ্বল দেখাতে সূক্ষ্ম রেখা, বলিরেখা এবং বয়সের দাগ রোধ করতে সাহায্য করে।

ছেলেদের ত্বক পরিষ্কার রাখবেন যেভাবে

ছেলেদের ত্বক পরিষ্কার রাখার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই ছেলেরা ত্বকের প্রতি যত্নশীল হোন না। ফলে নানা কারণেই ছেলেদের ত্বকে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে দাগ, ব্ল্যাকহেডস, ব্রণ বা অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব দেখা যায়। তবে নিত্যদিনের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারায় সামান্য পরিবর্তন এনে ছেলেরাও ত্বক পরিষ্কার রাখতে পারেন। জেনে নিন কিভাবে ছেলেদের ত্বক পরিষ্কার রাখবেনঃ
ছেলেদের-ত্বক-পরিষ্কার-রাখবেন-যেভাবে
মুখ ভাল করে ধুয়ে নেওয়াঃ প্রতিদিন কমপক্ষে দুইবার মুখ পরিষ্কার করুন। ত্বকে জমে থাকা ময়লা, মৃত কোষ এবং অতিরিক্ত তেল যা ত্বকে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে সেগুলো পরিষ্কার করার এটি উল্লেখযোগ্য উপায়। এতে আপনার ত্বক সতেজ ও পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি মৃত ত্বকের কোষ থেকে মুক্তি পেতেও সাহায্য করে।

এক্সফলিয়েশনঃ প্রত্যেক ছেলের সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এক্সফলিয়েট করা উচিত। এতে ত্বক মসৃণ হয়। এবং ত্বককে পরিষ্কার দেখানোর জন্য ওপরের দিকের মৃত কোষ সরাতে সাহায্য করে। এছাড়া লুকিয়ে থাকা চুল পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে। তবে খুব শক্ত স্ক্রাব বা ব্রাশ দিয়ে অতিরিক্ত এক্সফলিয়েট করবেন না। প্রতিদিন এক্সফলিয়েট করলেও চুলকানি বা জ্বালা হতে পারে।

সূর্যের এক্সপোজার থেকে সুরক্ষাঃ ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্যই এটি বিশেষ প্রয়োজন। ত্বকের ক্যানসার প্রতিরোধে এবং ত্বকের বার্ধক্যজনিত লক্ষণ যেমন কালচে দাগ কমাতে ৩০-এর বেশি এসপিএফ-এর সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

স্কিন কেয়ার রুটিনঃ ছেলেদের একটি কাস্টম স্কিন কেয়ার রুটিন অনুসরণ করা উচিত। এটি স্বাস্থ্যকর ত্বক রাখতে সাহায্য করবে। একটা সঠিক রুটিন ত্বককে সুরক্ষিত ও পরিষ্কার রাখে। দৈনন্দিন রুটিনে স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টও ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বকে ভিটামিন সি বা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের যোগান দেয়। একটি সিরাম, একটি সানস্ক্রিন, একটি স্মুথ ক্লিনজার, একটি রেটিনল এবং একটি চোখের ক্রিম এই রুটিনের মধ্যে রাখা যেতে পারে।

সঠিক খাবারঃ পরিষ্কার ত্বক পেতে সঠিক মাত্রায় শর্করা খাবার খাওয়া উচিত। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে শরীর আরও ইনসুলিন নিঃসরণ করে। শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা যত বাড়ে তত তেলতেলে ভাব বাড়ে। যা পক্ষান্তরে ব্রণের ঝুঁকি বাড়ায়।

ময়েশ্চারাইজিংঃ ময়েশ্চারাইজিং প্রতিটি পুরুষের স্কিন কেয়ার রুটিনের নিয়মিত অংশ হওয়া উচিত। কখনও কখনও পরিষ্কার করা বা শেভ করার ফলে ত্বক শুকিয়ে যেতে পারে। তাই ত্বককে সুস্থ এবং ভাল রাখার জন্য হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনা খুব জরুরি।

স্ক্রাবিংঃ প্রতিদিন আপনার ত্বক পরিষ্কার করুন। স্ক্রাবিং স্কিন কেয়ার রুটিনের একটি অপরিহার্য অংশ। এটি ত্বকের ছিদ্র খুলতে সাহায্য করে এবং ত্বকের ময়লা দূর করে। এটি ব্ল্যাক আর হোয়াইটহেডস দূর করতেও সাহায্য করে।

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে শেষকথা

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে শেষকথা হলো শীতকালে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বকে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকে। ফলে ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক ও রুক্ষ। ত্বক ফাটা, ত্বকে ছোপ ছোপ কালো দাগ, ফাঙ্গাস, ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যাওয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাই ত্বক রুক্ষ ও অনুজ্জ্বল হয়ে যাওয়া রোধে দরকার বাড়তি যত্নের। ত্বকের শুষ্কতা রোধ করতে জলপাই তেল, লোশন বা ভ্যাসলিন মাখতে হবে। তাতে ত্বক আর্দ্রতা ধরে রাখবে। পানি, পানিজাতীয় খাবার, ফল ও ফলের রস, সতেজ শাকসবজি ও ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে।

শীতের সময়েও বছরের অন্যান্য সময়ের মতোই পর্যাপ্ত পানি পানের অভ্যাস ধরে রাখতে হবে। শীত বলে একটু কম পানি খেয়ে দিন কাটিয়ে দেবেন না। এতে কিন্তু আপনি নিজেই বিপদে পড়বেন। পানি কম খেলে শরীরের ভেতরে ও বাইরে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। তাই এসময় পর্যাপ্ত পানি পানের দিকে নজর দিতে হবে। শরীরে পানির ঘাটতি হলে ত্বকও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই শরীর ভেতর থেকে আর্দ্র রাখতে দিনে অন্তত তিন লিটার পানি পান করুন। আশা করছি শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে উপকৃত হয়েছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url