ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায়


ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায় হলো প্রথমে আপনাকে ফেসবুকে একটি পেজ খুলে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার নিজের আগ্রহের পাশাপাশি অন্যদের আগ্রহকেও প্রাধান্য দেয়া উচিত। ফেসবুক পেজ হতে পারে যেকোনো ধরনের। যেমন- ফুড রিভিউ, ট্রাভেল পেজ, নিউজ পোর্টাল কিংবা ট্রেন্ডি কোনো ট্রল পেজ।
ফেসবুক-থেকে-ইনকাম-করার-উপায়
ফেসবুক থেকে ইনকামের উপায় সম্পর্কে জানার আগে ফেইসবুক নিয়ে জানতে হবে। ফেসবুক বিশ্বের অন্যতম প্রধান সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে একটি। এখানে অর্থ উপার্জনের বিভিন্ন উপায় রয়েছে। ছোট থেকে বড় সকলেই তাদের আর্থিক সম্ভাবনা উন্নত করতে ফেসবুক এর শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে।

আপনি বিভিন্ন উপায়ে অনুসরণ করে ফেসবুক থেকে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন। অনেকেই আমরা ঘরে বসে ফেসবুক থেকে ইনকাম করার চিন্তাভাবনা করে থাকি, এক্ষেত্রে আপনাদের অবশ্যই ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায় বিষয়টি সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে যা আমরা আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত তুলে ধরব। 

পেইজ সূচিপত্রঃ ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায়

ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায়

ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায় বা অর্থ উপার্জনের জন্য বেশ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ফেসবুকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, মেসেঞ্জারে বিজ্ঞাপন ও মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রির মতো বিভিন্ন বিষয়। এছাড়া বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে ফেসবুক থেকে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারবেন। ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলো নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
১. ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন করে আয়ঃ ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন হলো ফেসবুক থেকে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং কার্যকরী পদ্ধতিগুলোর একটি। ফেসবুকে আপনার নিজস্ব পেজ থাকলে এবং সেই পেজে বড় পরিসরের অডিয়েন্স তৈরি করতে পারলে আপনি ফেসবুকের ইন-স্ট্রিম অ্যাডস, কন্টেন্ট, রিলস মনিটাইজেশন ফিচারের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।

ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন করার শর্তাবলীঃ

  • আপনার ফেসবুক পেজে ন্যূনতম ১০,০০০ ফলোয়ার থাকতে হবে।
  • গত ৬০ দিনে ৩০,০০০ মিনিটের ভিডিও ভিউ থাকতে হবে।
  • ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য ৩ মিনিট বা তার বেশি হতে হবে।
  • ইন-স্ট্রিম অ্যাডস (In-stream ads): ইন-স্ট্রিম অ্যাডস হলো ফেসবুকের একটি ফিচার, যা আপনার ভিডিও কনটেন্টে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। যখন আপনার ফলোয়াররা ভিডিওটি দেখবে, তখন বিজ্ঞাপন দেখানো হবে এবং আপনি সেই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করবেন। ইন-স্ট্রিম অ্যাডস কার্যকরভাবে ব্যবহার করলে এটি একটি শক্তিশালী আয়ের উৎস হয়ে উঠতে পারে।
কিভাবে ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন করবেনঃ আকর্ষণীয় ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করুন: ভিডিও কনটেন্ট হতে হবে তথ্যবহুল, বিনোদনমূলক বা শিক্ষামূলক। কনটেন্ট যত আকর্ষণীয় হবে, তত বেশি দর্শক আপনার ভিডিও দেখবে। নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন: ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশনের শর্ত পূরণ করতে হলে আপনাকে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে, যাতে আপনার পেজের ভিউ বৃদ্ধি পায়। ইন-স্ট্রিম অ্যাডস সক্রিয় করুন: যখন আপনি মনিটাইজেশনের শর্ত পূরণ করবেন, তখন ইন-স্ট্রিম অ্যাডস চালু করতে পারবেন এবং আপনার ভিডিও থেকে আয় করতে পারবেন।

২। ফেসবুক বিজনেস পেইজ থেকে টাকা আয়ঃ ফেসবুক বিজনেস পেইজ হলো এক ধরনের ওয়েব পেজ যেখানে বিভিন্ন সেবা-পরিসেবা চালানো যায় এবং সেখানে বিজনেস করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়। ফেসবুক থেকে টাকা উপার্জন করার অন্যতম একটি সহজ এবং কার্যকরী মাধ্যম হলো এই বিজনের পেইজ তৈরি করা। যে কেউ চাইলে খুব সহজে একদম ফ্রি-তে একটি ফেসবুক পেইজ তৈরি করে নিতে পারেন। এবং সেই পেইজ মার্কেটিং করে ফলোয়ার জড়ো করে পারেন। যার পেজে যত বেশি ফলোয়ার থাকবে সে সবচেয়ে দ্রুত এবং সহজেই ফেসবুকে টাকা ইনকাম করতে পারবে।

বিশেষ করে আপনার যদি কোনো ব্যাবসা থাকে তাহলে সেই ব্যাবসার জন্য একটি ফেসবুক পেইজ তো অবশ্যই থাকা উচিত। ফেসবুক পেজের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যাবসার কিংবা কোনো নির্দিষ্ট সার্ভিসের বেশি-বেশি প্রচার-প্রচারনা করতে পারবেন। এর ফলে আপনি বেশি-বেশি কাস্টমার পাবেন। এতে করে ফেসবুকে আপনার পণ্য বিদ্ধির হার বেড়ে যাবে তাছাড়া ফেসবুকে পেইজের মাধ্যমে আরো অনেক উপায়ে টাকা আয় করা যায় কিভাবে তা নিচে গেলে আস্তে আস্তে জানতে পারবেন। যেগুলো নিচে পর্যায়ক্রমে জানতে পারবেন।

ইন-স্ট্রিম অ্যাড থেকে টাকা আয়ঃ ভিডিওর মধ্যে থাকা বিজ্ঞাপন কিংবা ইন-স্ট্রিম বিজ্ঞাপনগুলো বেশ চমৎকারভাবে দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। যখন একজন ব্যবহারকারী একটি ফেসবুক ভিডিও দেখতে থাকেন। তখন যদি ভিডিওটির মধ্যে একটি বিজ্ঞাপন আসে তাহলে বিজ্ঞাপনটি দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। এর কারণ তার মূল ভিডিওটির বাকি অংশ দেখার আগ্রহ, তাই তিনি ওই ভিডিওটি দেখতে থাকেন। তাই এটি ফিডের একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞাপনের চেয়ে কার্যকর। কারণ ব্যবহারকারীদের ফিডের স্বতন্ত্র বিজ্ঞাপন এড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

যেভাবে করবেন- ইন-স্ট্রিম বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে আপনাকে ভিডিওটি গল্প আকারে উপস্থাপন করতে হবে। ভিডিওতে ইতোমধ্যে আগ্রহী দর্শকদের মনোযোগ ধরতে ইন-স্ট্রিম অ্যাডগুলো খুবই কার্যকরী।তবে ফেসবুকের শর্তগুলো পূরণের পাশাপাশি ভিডিওগুলো অবশ্যই এক মিনিটের বেশি দৈর্ঘ্যের হতে হবে। সেই সঙ্গে ইন-স্ট্রিম বিজ্ঞাপন চালানোর জন্য আপনার পেজে কমপক্ষে ১০ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে।

৩। ফেসবুকে Instant Article থেকে টাকা আয়ঃ মোবাইল ইউজারদের দ্রুত খবর পড়ার সুবিধা দিতে ফেসবুক নিয়ে এসেছে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল (Instant Article)। খেয়াল করলে দেখতে পাবেন কিছু খবর বা শিরোনামে সঙ্গে বজ্রের মতো একটি চিহ্ন দেওয়া থাকে এবং সে শিরোনামের লিংকে ক্লিক করলে ফেসবুকের মধ্যেই খবরটি ওপেন হয়। এর জন্য আবার অন্য ব্রাউজার ওপেন করতে হয় না।

ইন্সট্যান্ট আর্টিকাল থেকে ক্লিক করে কোনো পোস্ট পড়তে গেলে সেখানে অনেক বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন। এই বিজ্ঞাপন দেখানোর বিনিময়েই ফেসবুক ইন্সট্যান্ট আর্টিকাল প্রকাশককে টাকা দিয়ে থাকে। বিশ্বের বড় বড় সংবাদ মাধ্যমগুলো ফেসবুকের ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেলের মধ্যমে বিভিন্ন খবরা-খবর প্রকাশ করে থাকে।
দ্রুত সাইটে প্রবেশ, ফেসবুকেই পাঠকদের পড়ার সুবিধা এবং ওয়েবসাইটের মালিকদের সঙ্গে রেভিনিউ শেয়ার করার জন্য এই ফিচারটি চালু করেছে ফেসবুক। আপনার যদি নিজস্ব কোনো ওয়েবসাইট বা ব্লগ থাকে এবং সেখানে পর্যাপ্ত ভিজিটর থাকে তাহলেই কেবল এই ফিচারটির মাধ্যমে ফেসবুকে টাকা আয় করতে পারবেন।

Instant Article এর মাধ্যমে ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়
Facebook Instant Article এর মাধ্যমে অনেকেই ফেসবুকে লাখ লাখ টাকা আয় করে, কিন্তু এর জন্য আপনার ফেসবুক পেজে পর্যাপ্ত পরিমানে ফলোয়ার থাকতে হবে। তাছাড়া ফেসবুকের সিটিআর রেট খুবই জঘন্য। অনেকেই ফেসবুকের এ রেটের জন্য বিরক্ত। আপনার পেইজটি কতটা জনপ্রিয় তার ওপর নির্ভর করবে আপনার আয় কত হবে। সাইটের ভাষা বাংলা নাকি ইংরেজি এটি কোনো বিষয় নয়। তবে, ইউরোপীয় দেশ তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ থেকে যদি ক্লিক পড়ে তাহলে আপনার আয় তুলনামূলক বেশি হবে।

জেনে রাখা ভালো বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান মাসে লাখ টাকার বেশি আয় করে শুধুমাত্র ফেসবুকের এই ইন্সট্যান্ট আর্টিকাল ফিচারটি ব্যবহার করে। আয়ের টাকা ১০০ ডলার হলেই সরাসরি চলে আসবে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এবং সেজন্য ফেসবুকের সাথে আপনার ব্যাংক একাউন্টটি যুক্ত করতে হবে।

৪। ফেসবুক ভিডিও থেকে আয়ঃ ইউটুবে ভিডিও আপলোড করে টাকা আয় করা যায় এটা হয়তো আমরা সবাই জানি। কিন্তু, আজ আমরা জানবো, ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে কিভাবে টাকা আয় করা যায়। ফেসবুকের ভিডিও-তে বিজ্ঞাপন দেখানোর এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় In-Stream Ads. আপনার যদি যদি ভালো মানের একটি ফেসবুক পেজ থাকে। অর্থাৎ, আপনার পেজে যদি ভালো ফলোয়ার থাকে এবং পোস্টগুলোতে যদি নিয়মিত বেশি বেশি ভিউ আসে, তাহলে আপনি আপনার পেজে ভিডিও আপলোড করে লাভবান হতে পারেন।

আপনার পেইজ ফেসবুক ইন-স্ট্রীম এডের জন্য মনিটাইজ করার পর, আপনার ভিডিওতে ফেসবুক বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখাবে। এবং এসকল বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য ফেসবুক আপনাকে টাকা দিবে। আপনার ফেসবুক পেইজের ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখাতে হলে আপনার পেইজের কিছু যোগ্যতা থাকা উচিত। যেগুলো পরিপূর্ণ করলেই আপনি আপনার ফেসবুকে ভিডিও মনিটাইজেশন করার মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন। ফেসবুক ভিডিও মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য যা যা লাগবেঃ

  • একটি ফেসবুক পেইজ থাকতে হবে।
  • আপনার ফেসবুক পেইজে ১০,০০০ লাইক থাকতে হবে।
  • গত ৬০ দিনে ভিডিওতে মিনিমাম ৩০,০০০ ভিউস থাকতে হবে।
  • প্রত্যেকটি ভিউ মিনিমাম ১ মিনিটের হতে হবে।
  • প্রত্যেকটি ভিডিও কমপক্ষে ৩ মিনিট লম্বা হতে হবে।
  • আপনার বয়স অবশ্যই কপক্ষে ১৮ হতে হবে।
  • ফেসবুক এর Partner Monetization Policies মেনে ভিডিও তৈরি করতে হবে।
৫। ফেসবুকে অনলাইন মার্কেটিং করে আয়ঃ ফেসবুকে অনলাইন মার্কেটিং করার জন্য, ফেসবুক মার্কেটপ্লেস নামে একটি ফিচার চালু করেছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট ডিসপ্লে করা থাকে। এবং যার যেই প্রোডাক্ট পছন্দ হয়, বিক্রেতার সাথে কথা বলে সেটি কিনে নিতে পারে। আপনি ও চাইলে যেকোনো একটি প্রোডাক্ট নিয়ে ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে যুক্ত করতে পারেন। তারপর, আপনার সেই প্রোডাক্টটি অন্য কারো পছন্দ হলে আপনার পেজে মেসেজ পাঠাবে। 
এবং এভাবেই আপনি ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে অনলাইন মার্কেটিং করে আয় করতে পারেন। তাছাড়া ফেসবুকে অনলাইন মার্কেটিং করার আরো অনেক উপায় রয়েছে। যেমনঃ কোনো একটি প্রোডাক্টের বিস্তারিত লিখে পোস্ট করে সেটি ফেসবুকে পেইড বিজ্ঞাপন চালাতে পারেন। এতে করে বেশি বেশি মানুষের কাছে আপনার পোস্টটি পৌছাবে এবং সেখান থেকে আপনার অনেক কাস্টোমার জেনারেট হবে।

চলুন একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি ব্যাখ্যা করি
শীতের সময় দেখতে পাবেন আপনার নিউজ ফিডে অনেক ধরনের মধু কিংবা সোয়েটারের পোস্ট চলে আসে। কখনো কি ভেবেছেন কেনো আসে? কিভাবেই বা আসে? কারন যিনি এই মধু কিংবা শীতের জামা বিক্রি করতেছে, তিনি ফেসবুক-কে কিছু টাকা দিয়ে তার পোস্ট বেশি মানুষের কাছে পৌছাচ্ছে। এটিকে বলা হয়, ফেসবুক পেইড ক্যাম্পেইন বা এড ম্যানেজমেন্ট।

ফেসবুকে অনলাইন মার্কেটিং-এর এই বিজনেস করতে অনেকের কোনো পুঁজিও দরকার হচ্ছে না। তো আপনার যদি কোনো পণ্য বা সেবা থাকে তাহলে, আজই শুরু করতে পারেন। কিভাবে পুঁজি ছাড়া ফেসবুকে অনলাইন মার্কেটিং করে আয় করা যায়?

অনলাইন মার্কেটিং বলতে বুঝায় অনলাইনে পন্য বেচা-কেনা করা। আপনার কাছে যদি কোনো পুঁজি না থাকে তাহলেও ফেসবুকে আপনি এই বিজনেসটি করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে আগে বাচাই করতে হবে যে আপনি কোনধরনের পণ্য দিয়ে বিজনেসটি করবেন। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন যেসব পণ্যের চাহিদা সবসময়ই থাকে সেসব পণ্য বাচাই করা আপনার জন্য লাভজনক হবে। আপনি যদি পণ্য হিসেবে মধুকে বাছাই করেন তাহলে শুধু শীতেকালে আপনি লাভবান হতে পারবেন। কেননা শীতকালে মানুষ মধু খেতে বেশি পছন্দ করে।

মনে করুন আপনি যেকোনো একটি পণ্য বাছাই করলেন। তাহলে আপনি যেটি করতে পারেন পাইকারী অথবা খুচরা উভয় দোকানদারের সাথে কথা বলতে পারেন। বলতে পারেনঃ “আমি ফেসবুকে অনলাইন মার্কেটিং বিজনেস করি, তো আপনার দোকানের কিছু প্রোডাক্ট যদি আমাকে একটু কমদামে দেন তাহলে আমি অনেক প্রোডাক্ট বিক্রি করে দিতে পারবো।

এভাবে বুঝিয়ে দোকাদারদের সাথে ডিল করবেন এবং পরবর্তীতে আপনি কোনো অর্ডার পেলে সরাসরি দোকানদার থেকে সেটি নিয়ে অল্প লাভে ফেসবুকে কাস্টোমারদের কাছে বিক্রি করে দিতে পারেন। আপনার ফেসবুক পেজে লাইক বেশি থাকলে লোকজন আপনার প্রোডাক্টগুলো দেখতে পাবে এবং কেউ কেউ সেটি কিনতে অবশ্যই আগ্রহ দেখাবে। আপনি যদি সততার সাথে পন্য ডেলিভারি দেন, তাহলে প্রশংসা শুনে আরো হাজারো লোক দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আপনার প্রোডাক্ট কিনার জন্য আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। এভাবে আস্তে আস্তে পুঁজি জমিয়ে বড় করে বিজনেসটি করে ফেসবুকে টাকা আয় করা যায়।

৬। ফেসবুকে অ্যাপ থেকে আয়ঃ প্রোগ্রামার বা গেম ডেভলপারদের জন্য ফেসবুকে টাকা আয় করার রয়েছে এক অপার সম্ভাবনা। ফেসবুক অ্যাপ তৈরির মাধ্যমেও ভালো টাকা উপার্জন সম্ভব। আপনি যদি একজন গেম ডেভেলোপার হন তাহলে আপনি নিজস্ব অ্যাপ তৈরির মাধ্যমেও ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে পারবেন। আপনি যদি ফেসবুকের জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করেন এবং ফেসবুকে পাবলিশ করেন তাহলে ফেসবুক আপনার অ্যাপ ইউজারের উপর ভিত্তি করে আপনাকে নির্দিষ্ট অর্থ প্রধান করবে।

এক্ষেত্রে আপনার অ্যাপের ইউজার যত বেশি টাকাও তত বেশি। ফেসবুকে গেম চালু হওয়ার শুরু দিকে একটি গেম খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো, নাম ফার্মভিল। এখন ফেসবুকে লুডু থেকে শুরু করে অনেক গেমস রয়েছে। যারা এই গেমগুলো পাবলিস করে তারা এখন ফেসবুক থেকে বিপুল পরিমানে টাকা পাচ্ছে। তো আপনিও যদি গেম বানাতে পারেন তাহলে চেষ্টা করতে পারেন।

৭। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ফেসবুক থেকে টাকা আয়ঃ অন্যের পণ্যের প্রচার করে বিক্রয়ের উপর কমিশন নিয়ে আসার আরেক নাম হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অনলাইনে অনেক ধরনের প্রোডাক্ট বিদ্যমান। আবার, আমরা অনেকেই প্রোডাক্ট বলতে ফিজিক্যাল পণ্যকে বুঝে থাকি। কিন্তু অনলাইনে শুধুমাত্র ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট নয় অনেক ধরনের ডিজিটাল প্রোডাক্টও রয়েছে। যেমনঃ অডিও, ভিডিও, ই-বুক, ওয়ার্ডপ্রেস থিম, ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিং সহ নানান কিছু।

আপনারা নিশ্চয় জানেন যে, উন্নত দেশগুলোতে মানুষ এখন আর বাজারে গিয়ে বাজার থেকে প্রোডাক্ট কিনে আনে না। তারা অনলাইনে বিভিন্ন পর্যালোচনা দেখে অর্ডার করে এবং পণ্যটি তাদের বাড়িতে পৌছে যায়। আর অর্ডার করার জন্য বিশ্বাসযোগ্য ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মধ্যে Amazon, eBay, Alibaba, Ali express অন্যতম।

তাছাড়া বাংলাদেশে রয়েছে Daraz, BD Shop এর মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যেখানে একটি পণ্য বিক্রয়ের জন্য তার প্রচারককে শতকরা হিসেবে কমিশন দিয়ে থাকে। এসকল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান বাদেও এখন প্রায় সকল ওয়েবসাইটেরই একটি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থাকে। আপনি চাইলে এ ধরনের মার্কেটপ্লেসগুলোতে একটি একাউন্ট খোলে তাদের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে জয়েন করতে পারেন। এবং সেখান থেকে যেকোনো প্রোডাক্ট বাছাই করে তা ফেসবুকে প্রচার করার মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন।

*কিভাবে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম কাজ করে?
যেসকল ওয়েবসাইটে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে আপনি সেই সকল ওয়েবসাইটে একটি অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট খুলবেন। সেখানে থেকে যেকোনো প্রোডাক্ট বাছাই করবেন। এবং সাথে সাথে আপনার জন্য ঐ প্রোডাক্টের একটি অ্যাফিলিয়েট লিংক তৈরি হয়ে যাবে। আপনি মূলত এই লিংকটিকেই প্রচার করবেন। আপনার প্রচারিত এই লিংক থেকে ক্লিক করে যদি কেউ এই পণ্যটি অনলাইনে ক্রয় করে তাহলে আপনি সেখানে থেকে নির্দিষ্ট পরিমানের কমিশন পেয়ে যাবেন।

*কিভাবে ফেসবুকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা আয় করা যায়
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য যেটি বেশি দরকারী সেটি হলো একটি ওয়েবসাইট কিংবা ইউটুব চ্যানেল থাকা। আপনি অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট থেকে ইনফরমেশন(পণ্যের ছবি+ অ্যাফিলিয়েট লিংক) নিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে সুন্দর করে একটি পর্যালোচনা লিখবেন। এবং আপনার ওয়েবসাইটের লিংকটি পণ্যের ছবিসহ ফেসবুকে শেয়ার করে দিবে। কিন্তু এক্ষেত্রে ভালো হয় যদি আপনি একটি লেন্ডিং পেইজ তৈরি করে কাজ করেন।

লেন্ডিং পেইজ বলতে বুঝায়, আপনি একটি ওয়েব পেইজ তৈরি করবেন যেখানে পণ্যের ছবি থাকবে এবং নিচে লিখা থাকবে Buy Now, Order Now বা এরকম কিছু একটা। এবং কেউ যদি এই লিখাতে ক্লিক করে তাহলে যেন সরাসরি অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইটে চলে যায়। এবং যদি কেউ প্রোডাক্টটি ক্রয় করে তাহলে আপনি কমিশন পেয়ে যাবেন।

লেন্ডিং পেইজ তৈরি করলে সুবিধা হয় কি? আপনার ওয়েবসাইটের স্পেমিং স্কোর বৃদ্ধি পায় না ফলে আপনার সাইট সুরক্ষিত থাকে। আর অবশ্যই প্রচারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গ্রুপে এবং নিউজ ফিডে একটি ফেসবুক পেইজ দিয়ে প্রচার করবেন । চাইলে ফেসবুক পেইড মার্কেটিং ও করতে পারেন।

৮। ফেসবুক পেইজ বিক্রি করে টাকা আয়ঃ এতক্ষনে হয়তো জেনে গেছেন যে ফেসবুক পেইজের গুরুত্ব কি। ডিজিটাল মার্কেটিং করে নিজের একটি বিজনেস দ্বার করাতে ফেসবুকের পেইজের গুরুত্ব অপরিসীম। অনেকের যেমন ফেসবুক পেইজ তৈরি করার সময় নেই, তেমন অনেকের আবার ফেসবুক পেইজের ফলোয়ার বাড়ানো তথা পেইজের মার্কেটিং করার মতো সময় নেই। তারা সবসময় সহজ রাস্তা খোজে যে কি করে খুব সহজে একটি বিল্ড করা পেইজ পাওয়া যায়। অর্থাৎ, অনলাইনে অনেক মানুষ আছে যারা বেশি লাইক বা ফলোয়ার আছে এমন পেইজ ক্রয় করতে আগ্রহী।

আপনি চাইলে যেকোনো ধরনের পেইজ তৈরি করে সেখানে লাইক/ফলোয়ার বাড়িয়ে সেটি বিক্রি করে দিয়ে ফেসবুকে টাকা আয় করতে পারবেন। এবং সেটি ফেসবুকের মাধ্যমেই বিক্রয় করতে পারবেন।আসলে ফেসবুক পেজের গুরুত্ব অনেক যা আপনাকে বলে বুঝানো যাবে না। তাই আপনি যদি প্রশ্ন করেন কিভাবে ফেসবুকে টাকা আয় করা যায় তাহলে আমি বলবো আপনি একটি ফেসবুক বিজনেস পেইজ তৈরি করে নিন।

৯। ফেসবুকে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয়ঃ ফ্রিল্যান্সিং মানে হলো, নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অন্য কারো কাজ করে দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা। ফেসবুকের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করার অনেক অপশন আছে, যেমন ফেসবুক পেইজ ম্যানেজ করা, ফেসবুক পেইজ প্রোমোট করা, এড ক্যাম্পেইন করা, এমনকি প্রোফেশনাল ফেসবুক পেইজ তৈরি করে দেওয়া।

মনে করুন আপনার যেকোনো একটি দক্ষতা আছে। ধরুন আপনি খুব ভালো করে একটি ফেসবুক পেইজ তৈরি করতে পারেন, অথবা আপনি ফেসবুক পেইড ক্যাম্পেইন চালাতে পারেন তাহলে ইন্টারনেশনাল মার্কেটপ্লেসে জয়েন করে আপনি ফেসবুকেই এই সকল সার্ভিসগুলো দিতে পারবেন।

কিভাবে ফেসবুকে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করা যায়?
ফেসবুক যেহেতো বিশ্বের সবচেয়ে বড় একটি মিডিয়া তাই ফেসবুকে ফ্রিল্যান্সিং করাটাই সবচেয়ে বেশি সহজ। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আলাদা অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে।যেমনঃ
  • fiverr.com
  • upwork.com
  • freelancer.com 
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য এসব মার্কেটপ্লেস স্বমন্ধে আপনার আইডিয়া থাকতে হবে। মূলত ফ্রিল্যান্সিং করবেন ঐ সকল মার্কেটপ্লেসে কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কাজগুলো আপনি ফেসবুকের মাধ্যমে যোগার করে নিতে পারবেন।

যেমন আপনি যদি ফটো ডিজাইন তথা লগো ডিজাইন, ব্যাকগ্রাউন্ড রিমোব, টি-শার্ট ডিজাইন ইত্যাদি কাজ করে ফেসবুকে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে এই বিষয় নিয়ে যাবতীয় যত গ্রুপ রয়েছে সবগুলোতে জয়েন করে সেখানে আপনার স্কিল শেয়ার করতে পারেন। আপনার কাজ দেখে মানুষের পছন্দ হলে অবশ্যই আপনাকে তারা কাজ দিবে । এবং এভাবেই ফেসবুকে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করা যায়।

১০। ফেসবুক গ্রুপ থেকে টাকা আয়ঃ ফেসবুক গ্রুপ পারস্পরিক ভাব বিনিময়ের একটি সহজ মাধ্যম। সেখানে প্রতিদিন সবাই সবার নিজের মতো করে পোষ্ট করতে পারে। ফেসবুক পেজের মধ্যে শুধু মাত্র আপনি একা পোস্ট করতে পারবেন। আপনার ফলোয়ারস রা পোস্ট করতে পারবে না। কিন্তু ফেসবুক গ্রুপে যে কেউ পোস্ট করতে পারে এবং যে কেউ সেখানে কমেন্টে সমাধান দিতে পারে। তাই টাকা আয় করার অন্যতম সহজ মাধ্যম হতে পারে ফেসবুক গ্রুপ। ফেসবুকে গ্রুপ থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় তার কয়েকটি উদাহরন দিচ্ছিঃ

*পণ্য বেচাকেনা করে
আপনার যদি যেকোনো পণ্য আপনার ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে সহজেই বিক্রি করতে পারবেন। এর জন্য আপনার ফেসবুক গ্রুপে পর্যাপ্ত মেম্বার থাকতে হবে, এবং মেম্বারগন কোন বিষয়ে আগ্রহী সেটি আপনাকে খুজে বের করতে হবে। মেম্বাররা যেই বিষয়ে আগ্রহী সেই বিষয়ের পণ্য কিংবা সার্ভিস বিক্রি করে ফেসবুকে গ্রুপ থেকে টাকা আয় করা যায়। আপনি চাইলে একটি গ্রুপ তৈরি করে আজই এটি শুরু করতে পারেন।

*গ্রুপে এডমিন ডিল করে
মনে করুন আপনার একটি ফেসবুক গ্রুপ আছে অর্থাৎ আপনি গ্রুপের এডমিন। আপনার গ্রুপটি যদি অনেক বড় হয় তথা গ্রুপ মেম্বার অনেক বেশি হয় তাহলে অবশ্যই আপনি তাদের পরিচিত হবেন। এখন ২ জন মানুষ যদি অনলাইনে কোনো কিছু ক্রয় বা বিক্রয় করতে চায় তাহলে উভয়েই একটু দ্বিধার মধ্যে থাকে। একজন মনে করে সে টাকা নিয়ে পণ্যটি দিবে না আবার আরেকজন মনে করে পণ্যটি দিয়ে দিলে সে টাকা দিবে না। এরকম প্রতারিত হওয়ার ভয় সবার মধ্যেই থাকে।

তো আপনি যদি তাদের উভয়ের বিশ্বস্ত এডমিন হয়ে থাকেন তাহলে ওদের ডিলটি আপনি করে দিতে পারবেন এবং আপনার সময় দেওয়ার জন্য কিছু অর্থ চার্জ করতে পারবেন। যদিও এখন ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট কেনাবেচার জন্য কোরিয়ান সার্ভিসে ক্যাশ অন ডেলিভারি সিস্টেম রয়েছে কিন্তু ডিজিটাল প্রোডাক্ট বেচা-কেনার সময় এই ঝামেলাটি হয়ে থাকে। তাই, আপনি আপনার গ্রুপে এডমিন ডিলের সার্ভিসটি প্রোভাইড করতে পারেন এবং সেখান থেকে কিছু একটা ইনকাম করতে পারেন।

*প্রোমোশনাল পোস্ট অফার করে
অনেক কম্পানি বা ব্যাক্তিবর্গ রয়েছে যারা তাদের পণ্য বা ব্যান্ড সবার মধ্যে প্রচার করতে চায়। আপনার যদি নির্দিষ্ট টপিকের উপর একটি ফেসবুক গ্রুপ থাকে এবং সেখানে বিপুল মেম্বার থাকে তাহলে তাদেরকে প্রোমশনাল পোস্ট করার সুযোগ করে দেওয়ার মাধ্যমেও আপনি টাকা আয় করতে পারবেন। মনে করুন, আপনার ব্লগিং ট্রিপ্স রিলেটেল একটি ফেসবুক গ্রুপ আছে যেখানে সবাই ব্লগিং তথা ওয়েবসাইটে লেখালেখি করে টাকা আয় করতে আগ্রহী।

তো যারা ব্লগিং করবে তাদের তো অবশ্যই একটি ডোমেইন এবং একটি হোস্টিং লাগবে। যারা ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইড করে তারা আপনাকে টাকা দিয়ে আপনার গ্রুপে তাদের কম্পানির প্রোমোশনাল পোস্ট করবে যাতে করে তাদের পণ্য বেশি বিক্রি হয়। আপনি একটি পোস্টের জন্য ১০০০ টাকা চার্জ করতে পারেন।

*কভার ফটো বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমে
গ্রুপের মধ্যে প্রবেশ করার পর যেই জিনিসটি সবার আগে চোখে পরে তা হলো গ্রুপের কভার ফটো। আপনার যদি একটি বড় কমিউনিটি গ্রুপ থাকে তাহলে আপনি এই কভার ফটো বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন। প্রোমোশনাল পোস্ট থেকে এই কভার ফটো বেশি কার্যকারী হয়ে থাকে। কারন একটি পোস্ট কিন্ত গ্রুপের সংশ্লিষ্ট সবার কাছে রিচ না ও হতে পারে।

কিন্তু যেই গ্রুপে প্রবেশ করুক না কেনো সবার আগে কভার ফটোটি তার চোখে পড়বেই পড়বে। তাই আপনি যেকোনো কম্পানির সাথে ডিল করতে পারেন যে আমি ১ দিনের জন্য আপনার কম্পানির ব্যানারটি আমার গ্রুপের কভারে রাখবো এর জন্য আমাকে ১৫০০ টাকা দিতে হবে। এভাবে কভারে বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমেও ফেসবুক থেকে টাকা উপার্জন করা সম্ভব।

১১। ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে টাকা আয়ঃ আপনার যদি আগে থেকে কোনো একটি কম্পানি থাকে অথবা নতুন কোনো কম্পানি দ্বার করাতে চাচ্ছেন তাহলে এই ফেসবুক বিজ্ঞাপন আপনার সঙ্গী হতে পারে। আপনি চাইলে আপনার কম্পানির বিভিন্ন পণ্য খুব অল্প মূল্যে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে সেখান থেকে অধিক লাভ নিয়ে আসতে পারেন। খেয়াল করলে দেখবেন অনেক পোস্টের উপরে ছোটো করে sponsored নামের একটি শব্দ লেখা থাকে। এর মানে হলো যেই কম্পানি এই পোস্টটি করেছে সে ফেসবুককে টাকা প্রদান করছে বেশি মানুষের কাছে তার পোস্টটি পৌছে দেওয়ার জন্য। তো আপনি চাইলেও এই ধরনের পোস্ট করে তার ফেসবুকে এড দিয়ে দিতে পারেন। এতে করে আপনার পণ্যটি বেশি বেশি বিক্রি হবে। এবং আপনি বেশি লাভবান হবেন।

১২। ইনফ্লোয়েন্সার মার্কেটিং করে আয়ঃ যার অনেক অনেক ফলোয়ার থাকে এবং সে মানুষকে যেকোনোত পথে ধাবিত করে তাকে আমরা ইনফ্লোয়েন্সার বলি। মনে করুন আপনাকে অনেক অনেক মানুষ ফলো করে এবং আপনিও তাদেরকে কিছু না কিছু শিখানে চেষ্ঠা করেন, নির্দিষ্ট একটি গন্তব্যে নিয়ে যেতে চেষ্ঠা করেন, তাহলে আপনি একজন ইনফ্লোয়েন্সার। ইনফ্লোয়েন্সার ৫ ধরনের হয়ে থাকে। যথাঃ

  • Mega-influencers (১০ লাখের বেশি ফলোয়ার/ সেলিব্রিটি)
  • Macro-influencers (৫ লাখ থেকে ১০ লাখ ফলোয়ারস)
  • Mid-tier influencers (৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ ফলোয়ারস)
  • Micro-influencers (৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার ফলোয়ারস)
  • Nano-influencers(১ হাজার থেকে ১০ হাজার ফলোয়ারস)
যার ফলোয়ার যত বেশি ইনফ্লোয়েন্সার মার্কেটে তার মূল্যও ততো বেশি। বাংলাদেশের পেক্ষাপটে মেগা ইনফ্লোয়েন্সার যেকোনো একটি পণ্য প্রোমোট করলে সর্বনিন্ম ১ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকার মতো পেয়ে থাকে। শুধু মাত্র লাইভে এসে কথা বলার সময় ১ মিনিট বা তার চেয়ে কম সময় নিয়ে ঐ পোডাক্টি সম্পর্কে একটু বলে দেওয়ার মাধ্যমে। তো আপনার যদি টুকটাক ফলোয়ার থাকে তাহলে এই ফর্মুলা কাজে লাগাতে পারেন।

১৩। কোর্স বিক্রি করে ফেসবুক থেকে আয়ঃ আপনার যদি যেকোনো বিষয়ে অনেক দক্ষ হন তাহলে সে দক্ষতাকে কাজে লাগানোর উপায় ফেসবুক আপনাকে করে দিয়েছে। আপনি যেকোনো বিষয়ে কোর্স তৈরি করে সেটি ফেসবুকে ফ্রি প্রচার করতে পারবেন। এবং সেগুলো বিক্রি করে ফেসবুকে টাকা আয় করা যায়। যেমন, আপনি যদি খুব ভালো গ্রাফিক্স ডিজাইন করতে পারেন তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইনের একটি কোর্স বানিয়ে ফেলুন। এবং সেটি ফেসবুক প্রুপে প্রচার করুন। কিন্তু সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি কোনো গ্রুপের এডমিত হয়ে থাকেন। তাহলে সবাই আপনার কাছ থেকে কোর্স কিনতে আগ্রহী হবে।

১৪। অনলাইন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ফেসবুক থেকে আয়ঃ ফেসবুকে অনেকসময় অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রচারের জন্য লটারী, কুইজ সহ নানা কর্মসূচী পালন করে থাকে। সেখানে তারা নানান অফার এবং পুরষ্কার নিয়ে আসে। মূলত বলা হয়ে থাকে, তাদের পোস্টে লাইক দিয়ে শেয়ার করা জন্য তাহলে লটারীর মাধ্যমে বিজয়ী বাছাই করে পুরষ্কার দেওয়া হবে। আবার অনেক সময় অনেক প্রতিষ্ঠান কুইজের আয়োজনও করে। 

তো আপনি চাইলে এখানে যুক্ত হয়ে পুরষ্কার জিতে নিতে পারেন। যদিও এতো এতো মানুষের মধ্যে খুব ভাগ্যবান না হলে পুরষ্কার জেতা যায় না। কিন্তু অনেক সময় পণ্যের উপর অনেক অফার নিয়ে আসে অনেক প্রতিষ্ঠান। আপনি চাইলে অফারে কম মূল্যে সেই পণ্য ক্রয় করে আবার পুনরায় বিক্রিও করে দিতে পারেন। আশা করি এতক্ষনে বুঝে গেছেন যে ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়। এখন একটি ট্রিপ্স জেনে নিন-

১৫। ফেসবুক জব করে টাকা আয়ঃ ফেসবুকে Job নামের একটি অপশন রয়েছে। সেটিতে প্রবেশ করলে আপনি বিভিন্ন ধরনের চাকরীর খবর পাবেন। আপনার আসে পাশের অনেক প্রতিষ্ঠান যারা কর্মচারী নিয়োগ নিতে চায় তাদের বিজ্ঞপ্তিগুলো আপনি সেখানে দেখতে পাবেন। সেখান থেকে যেকোনো একটি জব পছন্দ হলে আপনি সেখানে এপ্লাই করতে পারেন। যদি আপনার চাকরী করার যোগ্যতা থাকে তাহলে ফেসবুকের মাধ্যমে খুব সহজেই চাকরী জোগার করে আয় করতে পারবেন। তাছাড়া আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হয়েও ঘরে বসে আয় করতে পারবে। এইজন্য আপনার ফেসবুক মার্কেটিং কোর্স করে নিতে হবে।

১৬। ফেসবুক পেইজ তৈরি করে দিয়ে টাকা আয়ঃ আপনি জানলে অবাক হবেন, পৃথিবীতে এমনও অনেক মানুষ রয়েছে যাদের কাছে একটি ফেসবুক পেইজ তৈরি করার মতো সময় থাকে না। তারা অন্যদের দিয়ে টাকার বিনিময়ে বিজনেস পেইজ তৈরি করিয়ে নেয়। আমাদের বাংলাদেশের মানুষের কাছে সময়ের কোনো মূল্য নেই। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকার মানুষের সময়ের অনেক মূল্য। তাদের কাছে টাকার চেয়ে সময়ের মূল্য অনেক বেশি।

বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান সহ বিভিন্ন দেশের মানুষ ফেসবুক পেইজ তৈরি করে দেওয়ার এই সেবাটি দিয়ে থাকে। আপনি যদি ভালোভাবে ফেসবুক পেইজ তৈরি এবং ডিজাইন করতে পারেন তাহলে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে জয়েন হয়ে এই কাজটি করে প্রতিমাসে ফেসবুকে ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।

ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ইনকাম

ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ইনকাম করতে পারবেন ফেসবুক থেকে। অর্থ উপার্জন করতে চাইলে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। বর্তমানে এই উপায়ে খুব সহজেই ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা যাচ্ছে। আপনারা যদি নিজস্ব ফেসবুক পেজ থাকে তাহলে সেখানে আকর্ষণীয় ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করে আয় করুন।

এভাবে ভিডিও আপলোড করে ফেসবুক থেকে প্রতিমাসে সহজেই হাজার হাজার টাকা আয় করা যায়। অবশ্যই ফেসবুকের গাইডলাইন অনুযায়ী ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করবেন এবং আপলোড করবেন। ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে মনিটাইজেশনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

ভিডিও কন্টেন্ট আপলোড করে ইনকাম করার জন্য অবশ্যই ফেসবুক পেজ খুলতে হবে। সঠিকভাবে ভালো একটি নাম নির্বাচন করে ফেসবুক পেজ খুলুন এবং সেখানে নিয়মিত ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করতে থাকুন। আপনার ভিজিট এর সংখ্যা বাড়তে থাকলেই আপনি একসময় মনিটাইজেশন এপ্লাই করে ফেসবুক থেকে আয় করতে পারবেন।

ফেসবুকে রিলস বানিয়ে টাকা ইনকাম

ফেসবুকে রিলস বানিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারেন এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন ধরনের শর্ট ভিডিও বানিয়ে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বর্তমানে ফেসবুক টিকটক এর মত শট ভিডিও আপলোড করার ফিচার চালু করেছে। অর্থাৎ আপনি ফেসবুকে শর্ট ভিডিও বানিয়ে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। প্রতিদিন facebook থেকে টাকা ইনকাম করতে চাইলে শর্ট ভিডিও বানিয়ে ইনকাম করতে পারবেন।

বর্তমানে এই উপায়ে সকলেই প্রচুর টাকা ইনকাম করে আসছে। ফেসবুকে সাধারণ ভিডিও ও রিলস ভিডিওর মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভিডিওর দৈর্ঘ্য। রিলস ভিডিওর দৈর্ঘ্য হতে হবে সর্বোচ্চ ৯০ সেকেন্ড এবং ভিডিও হতে হবে ভার্টিক্যাল বা লম্বালম্বি। রিলস মনিটাইজেশন করতে পেজ বা প্রফেশনাল মুডের আইডিতে অন্তত ৫ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে। ৫টি ইউনিক ভিডিও থাকতে হবে, যা আপনিই প্রথম আপলোড করেছেন এবং শেষ ২ মাস বা ৬০ দিনে ৬০ হাজার মিনিট ওয়াচটাইম থাকতে হবে।

জেনে রাখা ভালো, অন্যের ভিডিও দিয়ে আপনি মনিটাইজেশন করতে পারবেন না। এসব শর্ত পূরণ হওয়ার পর রিলস মনিটাইজেশন করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ফেসবুক আপনার পেজ ও পার্টনার মনিটাইজেশন পলিসি এবং কনটেন্ট মনিটাইজেশন পলিসি রিভিউ করবে। সব ঠিক থাকলে মেটা বিজনেস স্যুট, প্রফেশনাল ড্যাশবোর্ডে অথবা ইমেইলের মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে আপনার কাঙ্ক্ষিত বার্তাটি।

ফেসবুক ইন-স্ট্রিম অ্যাডসের মাধ্যমে ইনকাম

ফেসবুক ইন-স্ট্রিম অ্যাডসের মাধ্যমে ইনকাম করা একটি কার্যকর পদ্ধতি যা ভিডিও ক্রিয়েটরদের জন্য একটি বড় সুযোগ। আপনি যদি ক্রিয়েটর স্টুডিওতে যোগ্যতা অর্জন করেন এবং সঠিকভাবে মনিটাইজেশন সেটআপ করেন, তবে আপনি ফেসবুকের ইন-স্ট্রিম অ্যাডস থেকে স্থায়ীভাবে আয় করতে পারেন। ইন-স্ট্রিম অ্যাডসের ক্ষেত্রে আপনাকে ভিডিওগুলি গল্প আকারে উপস্থাপন করতে হবে।

ফেসবুক ইন-স্ট্রিম অ্যাডস (In-Stream Ads) এর মাধ্যমে ইনকাম করার প্রক্রিয়াটি মূলত ভিডিও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য। ফেসবুক ইনস্ট্রিম অ্যাডস এমন একটি ফিচার যা ভিডিওর মাঝে বা শুরুর দিকে ছোট বিজ্ঞাপন দেখায়। এই বিজ্ঞাপনগুলি দেখা হলে ভিডিও ক্রিয়েটররা অর্থ উপার্জন করতে পারেন। ফেসবুক ইনস্ট্রিম অ্যাডস এর মাধ্যমে কিভাবে ইনকাম হয় তা নিচে ব্যাখ্যা করা হলোঃ

১. যোগ্যতাঃ ফেসবুক ইন-স্ট্রিম অ্যাডস ব্যবহার করে ইনকাম করার জন্য প্রথমে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবেঃ

  • আপনার ফেসবুক পেজটি মনিটাইজেশন যোগ্য হতে হবে।
  • আপনার পেজে কমপক্ষে ১০,০০০ ফলোয়ার থাকতে হবে।
  • গত ৬০ দিনে আপনার পেজের ভিডিওগুলোতে কমপক্ষে ৩০,০০০ মিনিটের ভিউ থাকতে হবে।
  • আপনাকে ফেসবুকের সমস্ত কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড এবং মনিটাইজেশন পলিসি মেনে চলতে হবে।
২. ফেসবুক মনিটাইজেশন সেটআপ করা

  • ক্রিয়েটর স্টুডিও (Creator Studio) এ যান।
  • Monetization** ট্যাবে ক্লিক করুন।
  • আপনার পেজ নির্বাচন করুন এবং ইনস্ট্রিম অ্যাডস সক্রিয় করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন।
৩. ভিডিও আপলোড এবং ইন-স্ট্রিম অ্যাডস সেট করা

  • ভিডিও আপলোড করার সময় মনিটাইজেশন অপশন নির্বাচন করুন।
  • ইনস্ট্রিম অ্যাডসের জন্য উপযুক্ত প্লেসমেন্ট নির্বাচন করুন (উদাহরণস্বরূপ, ভিডিওর মাঝখানে বা শুরুর দিকে)।
  • আপলোড শেষ হলে আপনার ভিডিওতে ইনস্ট্রিম অ্যাডস যুক্ত হয়ে যাবে।
৪. ইনকাম ট্র্যাকিং এবং অর্থ উত্তোলন

  • ক্রিয়েটর স্টুডিও বা পেআউট সেটিংস(Payout Settings) এর মাধ্যমে আপনার উপার্জন ট্র্যাক করতে পারেন।
  • ইনকাম নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলে ফেসবুক আপনার প্রদান করা ব্যাংকল অ্যাকাউন্টে পেমেন্ট পাঠাবে।

ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ইনকাম

ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ইনকাম করতে চাইলে আপনার নিজস্ব কোন ফেসবুক পেজ থাকতে হবে। সেখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের ভিডিও কনটেন্ট, রিভিউ কন্টেন্ট এবং গেমিং ভিডিও বানিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যদি প্রতি মাসে ৫০ থেকে ১ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে ফেসবুক পেজে ভিডিও বানাতে পারেন। কারণ একমাত্র ফেসবুক পেজে ভিডিও আপলোড করেই বেশি টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

এছারাও ফেসবুক পেজটি ব্যবহার করে ব্র্যান্ড প্রমোশন ও এফিলেট মার্কেটিং করে ইনকাম করা যাবে। আপনি বিভিন্ন কোম্পানির প্রোডাক্ট ও পণ্য প্রমোশন করে দিয়ে আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে হবে। ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে পারলে আপনি খুব সহজেই ফেসবুক মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করে অধিক টাকা আয় করতে পারবেন।

একটি ফেসবুক পেজের মূল অংশ হলো কন্টেন্ট বা বিষয়বস্তু। ফেসবুক ইউজারদের এই বিশাল সংখ্যার কাছে আপনার পেজের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে কন্টেন্টের উপর। মানসম্মত ও সুন্দরভাবে বর্ণিত যেকোনো কন্টেন্ট ভালো ইউজারদের মাঝে সাড়া জাগাতে অনেকটাই সহায়ক। কন্টেন্ট তৈরি থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বেশ কিছু পদক্ষেপ অবলম্বন করতে হবে যেমনঃ

১। আপনার পেজের জন্য একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট তৈরি করুন। ফেসবুকে পেজের পাশাপাশি একটি ওয়েবসাইট থাকা কিন্তু বেশ কাজের। আপনার কন্টেন্টের বিশদ বর্ণনা থাকবে এসব ওয়েবসাইটে।ওয়েবসাইট তৈরির জন্য আপনি ব্লগস্পট, ওয়ার্ডপ্রেস কিংবা উইবলির সাহায্য নিতে পারেন। ফ্রি ডোমেইনের কিছু সীমাবদ্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে আপনি অল্প কিছু টাকা খরচ করে বানিয়ে নিতে পারেন আপনার নিজেরই একটি ওয়েবসাইট।

২। অ্যাডসেন্স (AdSense) নামক গুগলের একটি প্রোগ্রাম রয়েছে, যা ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করার জন্য সাড়া বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত। অ্যাডসেন্সের কাজ হলো ওয়েবসাইটে বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপনের সরবরাহ করা এবং বিনিময়ে ওয়েবসাইটের পরিচালনাকারীদের একটি নির্দিষ্ট অর্থ দেয়া। প্রায়সময়ই বিভিন্ন ওয়েবসাইটে হাজারো অ্যাড আমাদের নজরে আসে এবং এগুলোই আপনার ফেসবুক পেজের ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারবেন গুগল অ্যাডসেন্স যুক্ত করার মাধ্যমে। এর ফলে আপনি আপনার ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করা শুরু করতে পারবেন।

৩। ফেসবুকে পেজে নিয়মিত নিত্যনতুন কন্টেন্ট হালনাগাদ করা অনেক জরুরী। বেশি বেশি কন্টেন্ট আপলোড করলে আপনার পেজ প্রতিনিয়তই নতুন নতুন মানুষের চোখে পড়বে, লাইক-কমেন্ট-শেয়ারের পরিমাণও বাড়তে থাকবে দ্রুতই।

৪। ফেসবুক থেকে আয় এর ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, আপনার শেয়ার করা কন্টেন্ট যেন অন্য কোনো আর্টিকেলের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ না হয়। কেননা অনেক ফেসবুক পেজের নিজস্ব কপিরাইট থাকে। অনেক অনেক ক্ষেত্রে রিপোর্ট করার মাধ্যমেও আর্টিকেল চুরির বিষয়টা চোখের সামনে চলে আসে। কন্টেন্ট হুবুহু প্রমাণিত হলে ফেসবুক কতৃপক্ষ সেসব পোস্ট তাৎক্ষনাত সরিয়ে দেয়।

ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে ইনকাম

ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে আপনি বিভিন্নভাবে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এখন আপনি যদি ফেসবুক গ্রুপ থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে, আপনাকে ফেসবুকে একটি গ্রুপ তৈরি করতে হবে। গ্রুপটি তৈরি করার জন্য আপনার একটি নিশ এর প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ আপনি গ্রুপটি কি রিলেটেড বা কিসের উপর নির্ভর করে গ্রুপটি তৈরি করবেন। কারণ এই নিশ এর উপর নির্ভর করে আপনাকে গ্রুপ থেকে ইনকাম করতে হবে।

গ্রুপ থেকে ইনকাম করার জন্য আপনাকে সর্বনিম্ন ১০ হাজার ফলোয়ার বানাতে হবে। তাহলেই কেবল আপনি ফেসবুক গ্রুপ থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। যদি আপনার ফেসবুকে গ্রুপে ফলোয়ার সংখ্যা বেশি থাকে এবং ফেসবুক গ্রুপে মেম্বার বেশি থাকে তাহলে আপনি ফেসবুক গ্রুপটি ব্যান্ড প্রমোশনের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। অনেকেই ফেসবুক গ্রুপে মেম্বার সংখ্যা বাড়িয়ে বিভিন্ন কোম্পানি প্রোডাক্ট প্রচারণার কাজ করে থাকে। আপনার ফেসবুক পেজে যদি প্রচুর মেম্বার থাকে তাহলে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং, ব্যান্ড প্রমোশন ও বিভিন্ন কোম্পানির প্রোডাক্ট প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

সম্প্রতি ফেসবুক গ্রুপ মনিটাইজেশনের ক্ষেত্রে নতুন কয়েকটি বৈশিষ্ট্য নিয়ে এসেছে মেটা। এর ফলে আরও বেশি অর্থ আয় করা যাবে গ্রুপ থেকে। যদিও আগে থেকেই বিভিন্ন পণ্য বিক্রি, সাবস্ক্রিপশন ফি নির্ধারণ, কোচিং অথবা মেন্টরিং, স্পন্সরশিপ অ্যাডভার্টাইজিং ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রুপ থেকে আয় করার সুযোগ পেতো অ্যাডমিনরা। তবে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা সম্প্রতি জানায়, সাবস্ক্রিপশন-নির্ভর ব্যবসায়িক মডেলের (অর্থের বিনিময়ে বিশেষ সুবিধা প্রদান) অংশ হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে সুবিধাগুলো চালু করা হবে।

এখানে অ্যাডমিনরা গ্রুপে ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির সুবিধা পাবেন। আবার সদস্যদের কাছে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে তহবিল গঠনের ব্যবস্থাও থাকবে। এতে গ্রুপ পরিচালনার ব্যয় নির্বাহ করা যাবে। ফেসবুক লাইভে প্রচারিত কমিউনিটিজ সামিট-এ ঘোষণাগুলো দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, সাব গ্রুপে অর্থ পরিশোধ করে কিংবা বিনামূল্যে যোগ দেওয়ার সুবিধা দিতে পারবেন অ্যাডমিনরা। এতে গ্রুপের সদস্যরা ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে পারবেন।

ফেসবুক বলেছে, গ্রুপে দৃশ্যমান পরিবর্তন আনার সুযোগ পাবেন অ্যাডমিনরা। সদস্যরা ভালো পোস্টের জন্য ‘কমিউনিটি অ্যাওয়ার্ড’ দিতে পারবেন। এমনকি পেজ ও গ্রুপের সেরা সুবিধাগুলো এক করার ব্যাপারেও ইঙ্গিত এসেছে। তখন পেজ অ্যাডমিনরাও গ্রুপের মতো সুবিধা পাবেন। তবে সেটি এখনো পরীক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।

ফেসবুক ইভেন্টের মাধ্যমে ইনকাম

ফেসবুক ইভেন্টের মাধ্যমে ইনকাম করার অনেক সুযোগ রয়েছে। ফেসবুক বিভিন্ন সময়ে নতুন নতুন ইভেন্ট চালু করে থাকে। সেই ইভেন্টে আপনি অংশগ্রহণ করে কিছু টাকা আয় করতে পারেন। তাছাড়াও ফেসবুকে লাইভ ইভেন্ট পরিচালনা করার মাধ্যমেও আয় করতে পারবেন।আবার অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট থাকে যেগুলোকে হোস্ট করার মাধ্যমে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারেন।

আপনার ফেসবুক পেজ থাকলে, সেই অফ পেজে অর্থের বিনিময়ে ইভেন্ট পরিচালনা করতে পারেন। ফেসবুকের এই ইভেন্ট ফিচার এর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। তাছাড়াও ফেসবুকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আপনারা চাইলে সেই ইভেন্ট গুলোতে অংশগ্রহণ করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারেন। তাছাড়াও ব্যবসার পণ্য ফেসবুক ইভেন্টের মাধ্যমে ডিসকাউন্ট প্রদান করে বিক্রয় করতে পারেন।

আপনারা ফেসবুক পেজে বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা নিয়ে ইভেন্ট তৈরি করতে পারেন। সেখানে আপনারা পণ্যগুলোতে ডিসকাউন্ট অফার প্রদান করবেন। যার ফলে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা আপনার ইভেন্টে আগ্রহী হবে এবং পণ্যগুলো দেখে ক্রয় করবে। এতে করে আপনি লাভবান হবেন এবং অপরজন সহজেই ডিসকাউন্টে পণ্য কিনতে পারবে। আপনার এই সার্ভিসটি চালু করার জন্য অবশ্যই ফেসবুক পেইড ইভেন্ট অপশন চালু করতে হবে। আর ফেসবুক পেইড ইভেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে youtube-এ সার্চ করে দেখতে পারেন।

ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে ইনকাম

আপনারা যারা ফেসবুক ব্যবহার করেন তারা নিশ্চয়ই জানেন ফেসবুকের নিজস্ব মার্কেটপ্লেস রয়েছে, যেখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট ও পণ্যগুলো বিক্রয় করে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এখানে আপনি সহজেই একটি নিজস্ব ব্যবসা খুলতে পারবেন। অনলাইনে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রোডাক্ট বিক্রি করে প্রতিদিন টাকা আয় করতে পারেন।

বর্তমানে অনেকেই ফেসবুক মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করে অনলাইন ব্যবসা দান করিয়েছে। তারা ফেসবুকে মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট ও পণ্য বিক্রি করে প্রচুর টাকা ইনকাম করছে। আপনি চাইলে ফেসবুকের মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করে পণ্য বিক্রি করার মাধ্যমে আয় করতে পারেন।

ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে পণ্য ও পরিষেবা বিক্রি করে টাকা আয় করা যায়। আপনার যদি কোন পণ্য থাকে সেটি আপনি ফেসবুক মার্কেট প্লেসে পোস্ট করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে অতি সহজে যে কোন পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করা যায়। ফেসবুক মার্কেটপ্লেস অনেকটা শপিং ওয়েবসাইটের মত দেখতে হয়ে থাকে।

এখানে সকল পণ্য লিস্ট আকারে দেওয়া থাকে। যেখানে গ্রাহকরা পছন্দ অনুযায়ী পণ্যগুলো কিনতে পারবে। আপনার যেকোন পণ্য এই ফেসবুক মার্কেট প্লেসে বিক্রি করতে পারবেন। মূল কথায় আপনি আপনার পণ্যগুলো ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে প্রচার করবেন। ফেসবুক মার্কেট প্লেসে থাকা আপনার পণ্যগুলো কোন ব্যক্তি পছন্দ করলে সেই ব্যক্তি আপনাকে মেসেজ অথবা কল দিয়ে পণ্যটি ক্রয় করতে পারবে।

এখানে মার্কেটপ্লেসে সরাসরি যোগাযোগ করার ব্যবস্থা রয়েছে। যার মাধ্যমে আপনি অতি সহজেই গ্রাহকদের সাথে কমিউনিকেট বা যোগাযোগ করতে পারবেন। কোন ফেসবুক ব্যবহারকারী ব্যক্তি যদি আপনার পণ্য পছন্দ করে তিনি পণ্যটি ক্রয় করার জন্য আপনাকে সরাসরি মেসেজ করতে পারবে। ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় ও কার্যকরী মাধ্যম।

আফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম

আফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করার উপায় হলো ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ ব্যবহার করে বিভিন্ন কোম্পানির প্রোডাক্ট প্রমোশন করা। বর্তমানে ডিজিটাল বিশ্বে সবকিছুই অনলাইন ভিত্তিক। কোনো ব্রান্ড প্রচার প্রচারনার কাজে এখন অনলাইন মার্কেটিং কে গুরুত্ব দোওয়া হয়। ডিজিটাল মার্কেটিং এর জনপ্রিয় একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এফিলিয়েট মার্কেটিং। আপনি যদি অনলাইনে ইনকাম করতে আগ্রহী হোন তাহলে আপনার জন্য সঠিক প্ল্যাটফর্ম হবে এফিলিয়েট মার্কেটিং।

এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি ব্যবসায়িক কৌশল যেখানে আপনি কোনো কোম্পানির পণ্য বা সেবা প্রচার করে তা বিক্রি করে কমিশন নিতে পারবেন। আর পুরো এফিলিয়েট মার্কেটিং সেক্টরটি এই প্রক্রিয়ায় কাজ করে থাকে। আপনি যদি কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট সঠিকভাবে প্রচার প্রচারণা করতে পারেন তাহলে তাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবেন। আর এই প্রচার ও প্রচারণা করার জন্য ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ ব্যবহার করতে পারেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য এফিলিয়েট প্রোগ্রামে জয়েন হতে হবে। 

বর্তমানে জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্লাটফর্ম হল Amazon, Daraz, ClickBank। এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য অবশ্যই একটা অনলাইন প্লাটফর্ম থাকতে হবে । তা হতে পারে আপনার ব্লগ ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল সহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ তবে আপনার source বা platfrom এ প্রচুর পরিমানে ফলোয়ার, ভিজিটর বা সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে। কারন, প্রোডাক্টের মার্কেটিং করার জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো অডিয়েন্স যাদের কাছে আপনি প্রোডাক্ট শেয়ার বা মার্কেটিং করবেন।

প্রোডাক্ট সেল করে (ই-কমার্স) ইনকাম

আপনার নিজের তৈরি করা পণ্য অথবা ড্রপশিপিং এর পণ্যগুলো ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রয় করে টাকা ইনকাম করতে পারেন। ফেসবুক মার্কেটপ্লেস অথবা নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি প্রোডাক্ট বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এভাবে আপনি ফেসবুকে ই-কমার্স ব্যবসা করে টাকা ইনকাম করতে পারেন।

ই-কমার্স বিজনেসের প্রসারের মাধ্যমে এখন ঘরে বসেই যে কোন পণ্য বা সেবা অনলাইনে কেনাকাটা করা যাচ্ছে। পণ্য সরাসরি আমাদের দরজার সামনে হোম ডেলিভারি হয়ে আসছে। এতে জীবন-যাপন অনেক সহজ হয়ে গেছে। ই-বিজনেস পরিচালিত হয় বিজনেস টু বিজনেস, বিজনেস টু কাস্টমার ও কাস্টমার টু কাস্টমার পদ্ধতি ব্যবহার করে। অর্থাৎ এই ব্যবসায় সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তার মধ্যকার লেনদেন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়।

বর্তমান সময়ের বহুল পরিচিত ওয়েবসাইট দারাজ একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। একজন মানুষের জীবনে যে যে জিনিস প্রয়োজন তার সব কিছু দারাজে পাওয়া যায়। একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটে বিভিন্ন প্রকারের পণ্য থাকে এবং সেগুলো পছন্দ করে অনলাইনে কিনে নেওয়ার ব্যবস্থা করা থাকে। পছন্দের পণ্য কেনার পর অনলাইনেই উক্ত পণ্যের দাম পরিশোধ করার সিস্টেম আছে যা ওয়েবসাইটে সেটআপ ও কনফিগার করা থাকে। পেমেন্ট করা হয়ে গেলে ডেলিভারি লোকেশন দিতে হয় যাতে পণ্যটি আপনার বাসায় পৌঁছাতে পারে।

অনলাইন কোর্স বিক্রি বা কোচিং করে ইনকাম

অনলাইন কোর্স বিক্রি বা কোচিং করে ইনকাম করার অনেক সুযোগ রয়েছে। ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন কোর্স বিক্রি করে বা কোচিং করিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারেন। বর্তমানে ফেসবুকে থাকেন করার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো অনলাইন কোর্স করানো। আপনার নির্দিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকলে, সেই বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে কোর্স বানিয়ে বিক্রয় করে উপার্জন করতে পারেন।

আপনার যেকোন বিষয়ে ভালো দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা থাকলে সেই বিষয়টি আপনি অনলাইনে ফেসবুকের মাধ্যমে কোচিং করাতে পারবেন। আর সেই কোচিং করিয়ে আপনারা অনলাইন স্টুডেন্টদের কাছ থেকে মাসিক একটা বেতন নিতে পারেন। বর্তমানে বেশিরভাগ ফেসবুক ব্যবহারকারীরা অনলাইনে কোর্স করিয়ে থাকে। ধরুন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কে ভালো জানেন এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনে আপনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা রয়েছে।

তাহলে আপনি সেই গ্রাফিক্স ডিজাইনের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে কোর্স করাতে পারেন। অনেক ব্যক্তি রয়েছে যারা অনলাইনের মাধ্যমে কম খরচে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে চায়। আপনারা তাদের জন্যই ফেসবুক পেজে পাইভেট ভিডিও বানিয়ে আপলোড করে টাকা নিয়ে মরতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার কোচিং করানোর বিষয়টি প্রচার প্রচারণা করতে হবে। এতে করে গ্রাহকরা আকৃষ্ট হয়ে আপনার কোর্সটিতে ভর্তি হতে পারে।

ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কিত সাধারণ জিজ্ঞাসা

প্রশ্নঃ ফেসবুক পেজে কত ফলোয়ার হলে টাকা ইনকাম হয়?

উত্তরঃ ফেসবুক পেজে কমপক্ষে ১ হাজার ফলোয়ার হলে টাকা ইনকাম করার জন্য মনিটাইজেশনে এপ্লাই করতে পারেন।

প্রশ্নঃ ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম কি হালাল?

উত্তরঃ ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম হালাল হবে কিনা সেটি নির্ভর করে আপনার ভিডিও কনটেন্ট এর উপর। আপনার ভিডিও কনটেন্ট যদি হালাল হয়ে থাকে তাহলে তার থেকে ইনকাম আপনার হালাল হয়ে থাকবে।

প্রশ্নঃ ফেসবুকে ১ মিলিয়ন ফলোয়ার হলে কত টাকা ইনকাম হয়?

উত্তরঃ ফেসবুকে ১ মিলিয়ন ফলোয়ার হলে কত টাকা ইনকাম হয়ে থাকে এটি নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। কারণ ফেসবুকে প্রতিটি পোস্টের জন্য বিভিন্ন ধরনের ইনকাম হয়ে থাকে। অর্থাৎ প্রতি কনটেন্ট বা পোষ্টের জন্য আলাদা আলাদা ইনকাম হয়। সে ক্ষেত্রে সহজেই ইনকাম কত হয় সেটি বলা সম্ভব নয়। তবে আপনি আনুমানিকভাবে পঞ্চাশ হাজার টাকা থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।

প্রশ্নঃ রিলসে ১০০০ ভিউয়ের জন্য ফেসবুক কত টাকা দেয়?

উত্তরঃ ফেসবুকে রিলসে ১০০০ ভিউয়ার জন্য কত টাকা দেওয়া হয়, এই বিষয়টি নির্দিষ্ট ভাবে বলা সম্ভব নয়। কারণ ফেসবুক বিভিন্ন রিয়েলসের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পেমেন্ট দিয়ে থাকে। তবে আপনি মাসে প্রতি এক হাজার ভিউয়ার জন্য কমপক্ষে ১০ থেকে ২০ ডলার আয় করতে পারবেন।

প্রশ্নঃফেসবুক ক্রিয়েটরদের বেতন কত?

উত্তরঃ ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটরের প্রতি ঘন্টায় ইনকাম ৩৮ ডলার। তবে বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে কম হতে পারে।

ফেসবুকে ফ্রিল্যান্সিং সেবা প্রদান করে ইনকাম

ফেসবুকে ফ্রিল্যান্সিং সেবা প্রদান করে ইনকাম করতে পারেন। আপনার ফ্রিল্যান্সিং এর কোন বিষয়ে দক্ষতা থাকলে, সেই বিষয়টি সম্পর্কে ফ্রিল্যান্সিং সেবা দিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং সেবা দেয়ার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফি চার্জ করতে পারেন। এভাবে অনেকেই ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে ফ্রিল্যান্সিং সেবা দান করে ইনকাম করছে। এভাবে বিভিন্ন উপায়ে ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা যায়।

ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি মুক্ত পেশা। সাধারণ চাকরি আর ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যকার প্রধান পার্থক্য হলো ডিউটি করার সময়। অর্থাৎ কোন চাকরি করতে গেলে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ডিউটি করতে হয়। ফ্রিল্যান্সিং পেশায় সচরাচর কোন টাইম লিমিট থাকে না। সেখানে নিজের পছন্দমতো সময়ে কাজ করার স্বাধীনতা থাকে।

ফ্রিল্যান্সিং শব্দটিকে আরও সহজভাবে বর্ণনা করতে অনলাইন ইনকাম টার্ম ব্যবহার করা হয়। সাধারণত অনলাইনে যে যে কাজ পাওয়া যায় সেগুলো করে দিয়ে যে অর্থ পাওয়া যায় তাকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। অর্থাৎ কোন নির্দিষ্ট কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের হয়ে না কাজ করে চুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করা কে ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইনে আয় করা বলে।

দুনিয়া ধীরে ধীরে অনলাইন ভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে। দেশে বা বিদেশে আজকাল প্রশাসনিক বা বাণিজ্যিক কাজ গুলো অনলাইনে কনভার্ট হচ্ছে। এতে যেমন কাজের গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি সময় বাঁচানো যাচ্ছে। অনলাইনে যে সকল কাজ পাওয়া যায় সেগুলো গতানুগতিক কাজ থেকে একটু ভিন্ন। এই কারণে সেগুলো করতে হলে আমাদের নির্দিষ্ট বিষয়ের উপরে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়।

বর্তমানে অনলাইনে পাওয়া যায় এমন কাজের মধ্যে ওয়েব ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স, ভিডিও এডিটিং, প্রোগ্রামিং, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, আর্টিকেল রাইটিং, মার্কেটিং ইত্যাদি অন্যতম।একজন সাধারণ ফ্রিল্যান্সারের কাজ শেখা থেকে শুরু করে কাজ পাওয়া ও ডেলিভারি দিয়ে পেমেন্ট রিসিভ করার যে প্রক্রিয়া সংঘটিত হয় সেটাই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ।

ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে শেষকথা

আজকের নিবন্ধনে ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায় বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হয়েছে। যারা ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না তারা এই আর্টিকেলটি ভালো করে পড়ুন। আমরা ফেসবুক থেকে ইনকাম করার সকল উপায় গুলো স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনায় জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যারা ফেসবুক থেকে আয় করতে চান ধৈর্য পরিশ্রম দিয়ে কাজ করুন তাহলে সহজেই আয় করতে পারবেন।

বর্তমানে ফেসবুক একটি খুব জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। বহু মানুষ প্রতিদিন এই প্ল্যাটফর্মে অনেক সময় কাটান। ফলে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করাও অনেকটাই সহজ। আপনি খুব সহজেই ফেসবুক থেকে অনেক টাকা আয় করতে পারেন। ফেসবুকে একাধিক ভাবে টাকা আয় করা সম্ভব। আশা করছি ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url