কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও ২০টি উপকারিতা
কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও ২০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানতে এখনি এই পোস্টটি শুরু
থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। আপনারা অনেকেই জানেন কাজুবাদাম আমাদের শরীরের
বিভিন্ন উপকার করে থাকে। বিশেষ করে আমাদের শরীরে হার্টের স্বাস্থ্যের একটি
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আপনারা যারা হার্টের রোগী রয়েছেন তারা নিয়মিত কাজু বাদাম খেতে পারেন। এটি আপনার
হার্টকে সুস্থ রাখবে এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা করে থাকবে। এই কাজু
বাদামে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল যা আপনার সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে
সাহায্য করতে পারে।
আপনারা যদি পরিমিতভাবে সঠিক মাত্রায় কাজুবাদাম খান তাহলে নিশ্চয়ই এর থেকে ভালো
পরিমাণ উপকার পাবেন। আর এজন্য আপনাদের কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
সম্পর্কে জানা উচিত। আজকের পোস্টটিতে আমরা এখন কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও
নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব।
পেইজ সূচীপত্রঃ কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
- কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম
- কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- কাজু বাদামের পুষ্টিগুণ
- গর্ভাবস্থায় কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- কাজু বাদামের ক্ষতিকর দিক
- সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- প্রতিদিন কয়টা কাজু বাদাম খাওয়া উচিত
- খালি পেটে কাজু বাদাম খেলে কি হয়
- কাজু বাদাম কি ভেজে খেতে হয়
- কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে শেষকথা
কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম
কাজু বাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়ম হয়তো আপনারা জানেন না আপনারা অনেকেই কাজুবাদাম
খেয়ে থাকেন তবে তেমন উপকার পান না। এর অন্যতম কারণ হলো আপনার কাজু বাদাম
খাওয়ার নিয়ম মেনে কাজুবাদাম খান না। সকল কিছুরই খাওয়ার নিয়ম রয়েছে তেমনি
ভাবে কাজু বাদাম খেতে হলে কিছু নিয়ম মেনে খেতে হবে। নিয়ম মেনে কাজুবাদাম
খেলে ভালো উপকার পাবেন। কথা না বাড়িয়ে চলুন জেনে নিই কাজু বাদাম খাওয়ার
নিয়ম।
- আপনারা চাইলে সরাসরি কাজুবাদাম ধুয়ে খেতে পারেন। কাজুবাদাম নিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে খেয়ে ফেলুন। এতে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
- তাছাড়া আপনারা কাজুবাদাম ভেজে খেয়ে ফেলতে পারেন। অনেকে আবার কাজুবাদাম ভেজে খেয়ে থাকে কারণ এটি ভেজে খেলে অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে। আপনারাও খেতে পারেন ভালো উপকার পাবেন।
- এছাড়াও আপনারা সালাদের সাথে কাজুবাদাম মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে সালাদের পুষ্টিগুণ আরো অনেক বেড়ে যায়। তাই আপনারা বেশি পুষ্টি পেতে সালাদের সাথে কাজু বাদাম মিশিয়ে খেতে পারেন।
- আপনার অবশ্য কাজুবাদাম বেলেন্ডার করে তাতে পানি মিশিয়ে বাটার করে খেতে পারেন। এতে করে আরো অনেক ভালো পুষ্টি পাওয়া যায়।
- এছাড়াও আপনারা কাজুবাদাম দইয়ের সাথে মিশ্রিত করে খেতে পারেন। দইয়ের সাথে মিশ্রিত করে খেলে আরো পুষ্টিগুণ বেড়ে যায় এবং অধিক পুষ্টিগুণ পেতে আপনারা এটি দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- কাজুবাদাম আপনারা বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশ্রিত করে খেতে পারেন। বিশেষ করে পায়েস, ক্ষীর, হালুয়া ইত্যাদি সহ আইসক্রিমের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন এতে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
- আরও পড়ুনঃ চিয়া সীড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
আপনারা অবশ্যই কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম জানার আগে কাজুবাদামের উপকারিতা গুলো
জানা উচিত। কারণ এই কাজুবাদাম আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে
এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করতে পারে। আর এজন্য আপনাদের এটি নিয়মিত
খাওয়া উচিত। চলুন কথা না বাড়িয়ে এবার শুরু করা যাক কাজু বাদামের উপকারিতাঃ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধঃ কাজু বাদামকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাওয়ার
হাউস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগ, চোখের বিভিন্ন রোগ
ও স্মৃতিশক্তিজনিত যে কোনো সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে। এ ছাড়া
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বজায় থাকে এবং চোখের দৃষ্টিশক্তি
বাড়ে।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধিঃ বর্তমান সময়ে ফাস্টফুডজাতীয় খাবার, অনিয়ম,
বিরূপ আবহাওয়াসহ নানা কারণে মানষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এ কারণে
রোগের সঙ্গে লড়াই করার জন্য শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। এ জন্য
ভরসা রাখতে পারেন দুধে ভেজানো কাজুবাদামের ওপর। কাজুতে ভিটামিন ও মিনারেলস
প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। তাই শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত খেতে পারেন
দুধে ভেজানো কাজুবাদাম।
অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করেঃ কাজুবাদামে কপার বা তামার মতো
গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। এ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রক্তরোগ দূর করতে কার্যকরী।
রক্তে কপারের অভাব হলে লৌহ স্বল্পতাও শরীরে দেখা দেয়, যা রক্তশূন্যতা তৈরি করে।
দুধে ভেজানো কাজুবাদাম এ সমস্যা সমস্যা সমাধানে দারুণ কাজ করে।এটি আমাদের শরীর
থেকে ফ্রি র্যাডিকেল বের করে দেয় এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। বিশেষ করে যেসব
নারীর অ্যানেমিয়া আছে তাদের প্রতিদিন কাজু বাদাম খাওয়া উচিত।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ প্রচলিত ধারণা অনুসারে যে কোনো বাদাম ওজন বাড়ায়।
বাদামে প্রচুর ফ্যাট থাকে তাই বেশিমাত্রায় বাদাম খেলে ওজন বাড়ে। তবে নিয়ন্ত্রিত
মাত্রায় বাদাম খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। বিশেষত যাঁরা নিয়মিত কাজু বাদাম
খান তাদের ওজন কিন্তু ঝরতে শুরু করে। কাজু এবং অন্যান্য বাদামে রয়েছে ওমেগা ৩
ফ্যাটি অ্যাসিড। এই উপকারী ফ্যাট বিপাকক্রিয়ার হার বাড়ায়। ফলে শরীরে জমে থাকা
ফ্যাট বার্ন করা সহজ হয়। তাছাড়া কাজু একবার খেলে দীর্ঘসময় পেট ভরে থাকার
অনুভূতি দেয়। ফলে উলটোপালটা খাবার খাওয়ার দরকার পড়ে না। শরীরে মাত্রাতিরিক্ত
ক্যালোরিও প্রবেশ করে না ফলে ওজনও বাড়ে না।
হৃদরোগ প্রতিরোধ করেঃ আমাদের দেশে হৃদরোগের কারণে প্রতি বছর অনেক
মানুষের মৃত্যু ঘটে। কাজুবাদামে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬
ফ্যাটি এসিড যা শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (এলডিএল) এর পরিমাণ কমিয়ে দেয় ও
ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) এর পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়
অনেকাংশে।
নার্ভের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়ঃ বাদামে শরীরের থারা ম্যাগনেসিয়াম নার্ভের
ক্ষমতা বাড়িয়ে সার্বিকভাবে মস্তিষ্কের শক্তি বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে
থাকে। আর একবার ব্রেন পাওয়ার বাড়তে থাকলে ধীরে ধীরে ব্রেনের কগনিটিভ ফাংশনেরও
উন্নতি ঘটে। ফলে বুদ্ধি, স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগও বাড়তে শুরু করে।
চোখের জন্যঃ কাজুতে রয়েছে লুটেইন নামে উপকারী উপাদান। এছাড়া রয়েছে
প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। দুটি উপাদানই বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির হাত থেকে চোখকে
রক্ষা করে। দৃষ্টিশক্তিও উজ্জ্বল করে। এছাড়া কাজুতে রয়েছে বিশেষ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জিয়াজ্যান্থিন যা চোখের ম্যাকুলা অংশের ক্ষয় রোধ করে। এই
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ফিল্টার হিসেবে কাজ করে সূর্যের
রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আপনার চোখকে রক্ষা করে।
ত্বক সুরক্ষিত রাখেঃ কাজু বাদামের তেলে রয়েছে সেলেনিয়াম, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস। যা
আপনার ত্বককে দেবে দারুণ সুরক্ষা। তাছাড়া এতে উপস্থিত তামা ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষের ধ্বংস হওয়া রোধ
করে। ফলে নিয়মিত কাজু খেলে চেহার হয় উজ্জ্বল। এছাড়া কাজু বীজ থেকে প্রস্তুত
কাজু তেলও ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া রয়েছে প্রোটিন,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিক্যালস যা ত্বকের টানটান ভাব ধরে রাখতে
সাহায্য করে। সহজে বলিরেখা আসতে দেয় না। ত্বক ভালো রাখতে নিয়মিত কাজু বাদাম
খেতে পারেন।
চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেঃ সুন্দর চুল পেতে চান সবাই। কপার হলো সেই
খনিজ, যা চুলের ঔজ্জ্বল্য বাড়ানোর পাশাপাশি চুলের গোড়াকে শক্তপোক্ত করতে
বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেজন্য খেতে হবে এমন কিছু খাবার যা চুল সুন্দর
করে, ভেতর থেকে সুস্থ রাখে। তেমনই একটি খাবার হলো কাজুবাদাম। নিয়মিত এই বাদাম
খেলে মিলবে সুস্থ ও সুন্দর চুল। কাজু বাদামে উপস্থিত কপার চুলের রঞ্জক পদার্থ
মেলাটোনিন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ফলে চুল হয় মসৃণ ও স্বাস্থ্যবান।
মাইগ্রেনঃ ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিতে শরীরে দেখা দিতে পারে একাধিক অসুখ।
নিয়মিত কাজু খেলে শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রায় ভারসাম্য আসে। কাজু ভিটামিন
ই-এর একটি ভালো উৎস যা স্নায়ু কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। ফলে
মাইগ্রেনের মতো মাথাব্যথার সমস্যা কমতেও সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধঃ কাজুবাদাম ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
কাজুতে রয়েছে প্রো অ্যান্থোসায়ানিডিন নামে এক ধরনের ফ্ল্যাভোনল, যা টিউমার
কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এখানেই শেষ নয়, কাজুতে রয়েছে কপার এবং
প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিন, যা এই মারণ রোগকে দূরে রাখতে সাহায্য় করে।
হার্টের অসুখ প্রতিরোধেঃ স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে উপকারী হিসেবে
কাজ করে কাজু বাদাম। কাজু বাদাম নিয়মিত খেলে রক্তচাপ ও ট্রাইগ্লিসারাইডের
মাত্রা কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে। কাজুতে রয়েছে
মনোস্যাচুরেটেড এবং অসম্পৃক্ত চর্বি যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে
রক্তনালীগুলিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ফলে হার্টের সমস্যাও প্রতিরোধ করা
যায়।
হাড় মজবুত করেঃ কাজু বাদামে ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ থাকার কারণে
এটি হাড়ের জন্য অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয়
কপারের অভাব পূরণ করে এটি। আর কপারের অভাবে বিভিন্ন হাড়ের সমস্যা
হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই কাজু বাদাম হাড়ের জন্য উপকারী হিসেবে কাজ করে। রাতে
দুধের সঙ্গে ভিজিয়ে রাখবেন কাজু। সারা রাত দুধে ভিজিয়ে রাখা কাজু সকালে খেলে
বার্ধক্যে হাড়ের ক্ষয় নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। কাজু এবং দুধ দুটোতেই রয়েছে
ভিটামিন কে, মিনারেলস, ভিটামিন বি৬ এর মতো কার্যকরী উপাদান। যা হাড়ের ক্ষয় রোধ
করে পেশির ব্যথা, যন্ত্রণাও উপশম করে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার সমাধানঃ যারা দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যের
সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য দুধে ভেজানো কাজু হতে পারে এক মহৌষধ। কাজুতে রয়েছে
ফাইবারের মতো উপাদান, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পেটের সমস্যার সমাধানও করে থাকে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করেঃ ডায়াবেটিস রোগের জন্যও উপকারী হিসেবে কাজ
করে কাজু বাদাম। এতে থাকা ফাইবার রক্তের শর্করার স্পাইক প্রতিরোধে সহায়তা
করে এবং এতে শর্করার পরিমাণও অনেক কম থাকে। আর এ কারণে এটি রক্তে শর্করার
মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ মাঝে মধ্যেই কি রক্তচাপ গ্রাফের
কাঁটার মতো ওঠা-নামা করে? তাহলে তো চটজলদি কাজু খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ
এই বাদামে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, যা ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ
ভূমিকা পালন করে থাকে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রন করেঃ দুই ধরনের কোলেস্টেরলের মধ্যে রয়েছে এলডিএল
ও এইচডিএল। এলডিএল, ধমনীতে ক্ষতিকারক চর্বি জমাট বাঁধায় এবং এইচডিএল এই
ক্ষতিকারক চর্বি এলডিএলকে যকৃতের দিকে বহন করতে সাহায্য করে। আদর্শগতভাবে,
এলডিএল’য়ের মাত্রা কম আর এইডিএলয়ের মাত্রা বেশি থাকা দরকার। আর এখানেই কাজু
বাদাম কার্যকর হতে পারে। কাজু বাদাম খাওয়া খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলয়ের মাত্রা
কমায়। শুধু তাই নয় কাজুবাদাম সমৃদ্ধ খাবার ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএলয়ের মাত্রা
বাড়াতেও সহায়তা করে।
কোষের ক্ষয় রোধঃ বাদাম ও বীজ উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ‘ফ্রি র্যাডিকেলের কারণে হওয়া দেহের ক্ষতি কমায়। কাজু
বাদাম পলিফেনল ও ক্যারোটিনয়েড আন্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস। কাচার তুলনায় ভাজা
বাদামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি থাকে।
কাজু পিত্তথলির পাথর কমাতেঃ পিত্ত রঙ্গক, কোলেস্টেরল এবং বিলিরুবিন
দ্বারা গঠিত পিত্তথলির পাথরগুলি পিত্তথলিতে বিকশিত হয় এবং হজমের ব্যাধি
সৃষ্টি করে। এর ফলে পিত্তথলি, অগ্ন্যাশয় এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল
ট্র্যাক্টের দীর্ঘস্থায়ী ব্যাধিও হতে পারে। তবে কাজু খাওয়ার ঘটনা কমাতে
পারেপিত্তথলিনারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই তাদের জৈব সক্রিয় উপাদানের
কারণে।
কাজু বাদামের পুষ্টিগুণ
কাজু বাদামের পুষ্টিগুণ অন্য যেকোনো বাদামের মতোই। কাজু হলো প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং শক্তির একটি
পাওয়ার হাউস। তারা অনেক উপায়ে আপনার শরীরকে সমর্থন করে এবং এটিকে সুস্থ
রাখতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে সাহায্য করা থেকে শুরু করে সামগ্রিক
স্বাস্থ্যের উন্নতিতে, কাজুর উপকারিতা অপরিসীম। কাজু মিষ্টি, ক্রিমযুক্ত
বাদাম যা গ্রীষ্মমন্ডলীয় চিরহরিৎ গাছে জন্মে। সাধারণত গাছের বাদাম হিসাবে
উল্লেখ করা হয়, কাজু আসলে বীজ। এগুলি বিভিন্ন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং আপনার
অনেক পছন্দের খাবারের একটি সহজ সংযোজন হিসাবে কাজ করে৷
পুষ্টিগুণ | পরিমান |
---|---|
ক্যালোরি | ১৫৭ গ্রাম |
ফাইবার | ০.৯ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ৮.৫৬ গ্রাম |
চর্বি | ১২.৪৩ গ্রাম |
প্রোটিন | ৫.১৭ গ্রাম |
চিনি | ১.৬৮ গ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ১০ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ১.৮৯ মিলিগ্রাম |
তামা | ০.৬২ মিলিগ্রাম |
জিঙ্ক | ১.৬৪ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ১৬৮ মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | ৮৩ মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম | ৩ মিলিগ্রাম |
পটাসিয়াম | ১৮৭ মিলিগ্রাম |
এই পুষ্টির পাশাপাশি, কাজুর উপকারিতাগুলির মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি
স্বাস্থ্যকর যৌগ এবং খনিজ যেমনঃ
- কাজু ভিটামিন বি এবং সি এর একটি সমৃদ্ধ উৎস।
- কাজুতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অসম্পৃক্ত চর্বি থাকে এবং এটি প্রোটিনের একটি ভালো উৎস।
- কাজুতে থাকা খনিজ যেমন ম্যাগনেসিয়াম, কপার এবং ম্যাঙ্গানিজ শক্তি উৎপাদন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থায় কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় কাজুবাদাম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা অনেকেই প্রশ্ন
করে থাকেন। গর্ভাবস্থায় কাজু বাদাম খেলে উপকার পাওয়া যায় ঠিকই কিন্তু
অবশ্য আপনাদের কাজুবাদামে এলার্জি রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। আর
যদি এলার্জি থাকে তাহলে এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এলার্জির
প্রতিক্রিয়া মা ও শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
তাছাড়া কাজু বাদামে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেগুলো খেলে
গর্ভাবস্থায় মায়েদের ওজন বেড়ে যেতে পারে। তাই পরিমাণ মতো হওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় কাজুবাদাম খাওয়াতে চাইলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে
খাওয়াতে হবে। আর কাজুবাদামে গর্ভাবস্থায় এলার্জি রয়েছে কিনা এটা টেস্ট করে
নিবেন। আর অবশ্যই যদি খেতে চান লবণ মুক্ত কাজুবাদাম এ ধরনের জাত খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
কাজু বাদাম বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পুষ্টির একটি ভাল উৎস। এটির মধ্যে রয়েছে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি (মনস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট), ফাইবার, ভিটামিন রয়েছে।যেমন ভিটামিন কে, ভিটামিন ই, এবং বি ভিটামিন, এবং খনিজ যেমন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, তামা এবং দস্তা হিসাবে। এই ‘কাজু বাদামের পুষ্টিগুণ’ মায়ের সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং শিশুর বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
১. গর্ভাবস্থায় কাজু বাদাম (কপারের একটি ভাল উত্স) খাওয়া গেলে ভ্রূণের
রক্ত কণিকার বিকাশও ত্বরান্বিত হয়। এক আউন্স কাজুতে ০.৬ মিলিগ্রাম কপার
থাকে এবং গর্ভবতী মহিলার প্রতিদিন ১ গ্রাম কপার গ্রহণের প্রয়োজনীতা পূরণ
করতে সহায়তা করতে পারে।
২. এক আউন্স কাজু বাদামে ৯.৮ এমসিজি (মাইক্রোগ্রাম) ভিটামিন কে রয়েছে।
গর্ভবতী মহিলাদের এই পর্যায়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ যাতে না হয় তার জন্য
গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিন ৯০ এমসিজি পরিমাণ এই ভিটামিন প্রয়োজন হয়।
৩. প্রতি আউন্স কাজু বাদামে ১.৭ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। সুতরাং কাজু বাদাম
আয়রন সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে একটি হতে পারে যা অন্যান্য খাবারের সাথে
খাওয়ার সময় দিনে ২৭ মিলিগ্রাম আয়রন গ্রহণে সহায়তা করতে পারে। গর্ভবতী
মহিলারা আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতার ঝুঁকিতে বেশি থাকে। এবং
গর্ভাবস্থায় তাদের আরও আয়রনের প্রয়োজন হয়, যা গর্ভাবস্থায় ডায়েটে
কাজু বাদাম যুক্ত করে পূরণ করা যেতে পারে। কাজু বাদাম এভাবে রক্তাল্পতার
সাথে লড়াই করতে সহায়তা করে।
৪. কাজু বাদাম আপনার গর্ভাবস্থায় সন্তানের বিকাশের জন্য প্রয়োজন সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির উপাদান দ্বারা সমৃদ্ধ।
৫. কাঁচা বাদামের এক আউন্সে ৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৪.৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ১৩ গ্রাম ভাল চর্বি আছে।
৬. সংক্রমণ রোধ করার জন্য এতে উপযুক্ত ও পর্যাপ্ত এন্টিব্যাটারিয়াল প্রোপার্টি রয়েছে।
৭. এটি আপনাকে যথেষ্ট শক্তি দেয়, যা আপনার এই সংবেদনশীল সময় প্রয়োজন।
৮. কাজুতে উপস্থিত ফাইবারের উচ্চ মাত্রা সংকোচন ও ডায়রিয়ার মত সমস্যার সাথে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে, যা গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে খুব সাধারণ।
৯. এই সময়ে কাজু ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং লাভজনক স্কাভালেন, ফাইটেস্টেরোল, এবং টোকোফেরোল আছে।
১০. ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ কাজু আপনার শিশুর হাড় এবং দাঁত উন্নয়নে সহায়ক।
১১. কাজুতে লিপিড প্রোফাইল স্তরে ইতিবাচক ফলাফল প্রমাণিত হয়েছে, যা গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মহিলাদের জন্য উপকারী।
১২. কাজু বাদামে এমন রাসায়নিক আছে যা গর্ভাবস্থায় যে কোনও ক্যাভিটি বা দাঁতকে গহ্বর অপসারণে সহায়তা করে।
১৩. ম্যাগনেসিয়াম-সমৃদ্ধ কাজু বাদামের সাহায্যে মাংসপেশি, উচ্চ রক্তচাপ, মাথাব্যথা এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
১৪. কাজু বাদামে ভিটামিনের পরিমাণও পাওয়া যায়, যা আপনার প্রসবের সময় অত্যধিক রক্তক্ষরণ রোধে সাহায্য করে। কাজু বাদামে ৯. এমজি ভিটামিন থাকে।
১৫. গর্ভাবস্থায় রক্তের অভাব দূর করার জন্য লোহা-সমৃদ্ধ কাজু বাদাম আপনার খাদ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
১৬. কাজুতে প্রচুর পরিমাণে তামা রয়েছে যা ভ্রূণীয় কোষগুলির দ্রুত বিকাশে সহায়ক।
কাজু বাদামের ক্ষতিকর দিক
আপনারা হয়তো এতক্ষণে কাজুবাদামের উপকারিতা গুলো জানতে পেরেছেন। এখন আপনাদের
অবশ্যই কাজুবাদামের ক্ষতিকর দিক জানা উচিত। কাজুবাদাম অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে
কি কি ক্ষতি হতে পারে সেগুলোই চলুন আমরা এবার জেনে আসি।
- কাজু বাদামে রয়েছে অতিরিক্ত পরিমাণ ক্যালরি ও ভিটামিন। আর এই কাজু বাদাম যদি আপনারা অধিক মাত্রায় অতিরিক্ত পরিমাণ খেয়ে ফেলেন তাহলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে স্থুলতা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।
- অবশ্য যদি অধিক পরিমাণে খান তাহলে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তবে পরিমাণ মতো খেলে তেমন কোন সমস্যা নেই। আর যারা স্থূলতায় ভুগছেন তারা এই বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- তাছাড়া গবেষণা জানা গেছে কাজু বাদামে রয়েছে অধিক পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম যেটি কাজুবাদামে উপস্থিত রয়েছে। আপনারা যদি কাজুবাদাম অতিরিক্ত পরিমাণ গ্রহণ করেন তাহলে আপনার কিডনিতে পাথর দেখা দিতে পারে। আর যাদের কিডনিতে সমস্যা রয়েছে তাদের এই কাজু বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন।
- কাজুবাদাম খাওয়ার পর যদি পরিমাণ মতো পানি না পান করেন তাহলে আপনার ডিহাইড্রেশন দেখা দিতে পারে। তাই ডিহাইড্রেশন যদি না হয় সেজন্য কাজুবাদাম খাওয়ার পর বেশি পরিমাণ পানি পান করবেন।
- এছাড়া অধিক পরিমাণে কাজুবাদাম খাওয়ার ফলে ফুসফোসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ কাজু বাদামে রয়েছে অত্যাধিক পরিমাণ আয়রন। আর আপনি যদি এই আয়রন জাতীয় কাজু বাদাম গ্রহন করেন তাহলে হাঁপানি সহ ফুসফুসে সমস্যা হতে পারে।
- এছাড়াও যাদের আগে থেকেই হজমে সমস্যা রয়েছে তাদের কখনোই কাজুবাদাম খাওয়া উচিত নয়। এতে করে যদি আপনি কাজু বাদাম গ্রহণ করেন তাহলে আপনার হজমের জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- আর যাদের কাজুবাদাম এলার্জি রয়েছে তারা কখনোই খাবেন না। এটা সাধারণত সবার ক্ষেত্রে হয় না। আপনার ত্বকে কাজু বাদামে এলার্জি রয়েছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখুন।
অধিক পরিমাণে কাজুবাদাম খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা দেখা
দিতে পারে।আশা করছি আপনারা তাহলে কাজুবাদামের অপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো
জেনে গেলেন। এখন আপনারা অতি সহজেই কাজু বাদামের ক্ষতিকর দিক জেনে নিয়ম মেনে
কাজু বাদাম খেতে পারবেন।
সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা জানতে চেয়ে আপনারা অনেকেই
প্রশ্ন করেছেন। আপনি কি সকালে খালি পেটে কাজুবাদাম খেতে চান। তাহলে অবশ্যই
সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। সকালে
খালি পেটে কাজুবাদাম খেলে অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যায় আর এ সম্পর্কে আমি
এখন নিম্নে বিস্তারিত তুলে ধরব।
- সকালে কাজুবাদাম খেলে বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়া যায়। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে সকালে খালি পেটে কাজ বাদাম খেতে পারেন।
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খেলে আমাদের শরীরের ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কারণ কাজু বাদামে কম পরিমাণ গ্লেসেমিক ইনডেক্স থাকে।
- দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে এবং চোখ পরিষ্কার করতে নিয়মিত খালি পেটে কাজুবাদাম খান। কারণ কাজু বাদামে লুটেইন এবং জিয়াক্সানথিন নামক পুষ্টি উপাদান থাকে। যা আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- কাজুবাদামে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর উপাদান যেটি আপনার দেহে শরীরের খনিজের চাহিদা পূরণ করবে।
- তাছাড়াও হৃদরোগের জন্য কাজু বাদাম খুবই উপকারী। আপনারা যদি হৃদরোগের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খেতে পারেন তাহলে বেশ উপকার পাবেন।
- আপনারা সকলে কাজুবাদাম ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন। অর্থাৎ কাজু বাদাম পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন এতে ভালো উপকার পাবেন।
- এছাড়াও আপনারা অতিরিক্ত পুষ্টি পেতে কাজুবাদাম দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এর জন্য আপনি দুধের সাথে কমপক্ষে ছয় থেকে সাত ঘন্টা কাজুবাদাম ভিজিয়ে রাখবেন এরপর আপনারা কাজুবাদাম খেতে পারেন এতে করে আপনার দেহের ক্যালসিয়ামের চাহিদা সহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন চাহিদা পূরণ হবে।
এছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে এই কাজুবাদাম যদি আপনি উপরের
দেওয়া কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা জেনে থাকেন। তাহলে একমাত্র
ভালো উপকার পাওয়া সম্ভব।
প্রতিদিন কয়টা কাজু বাদাম খাওয়া উচিত
প্রতিদিন কয়টা কাজু বাদাম খাওয়া উচিত আপনারা অনেকেই জিজ্ঞাসা করে থাকেন।
কাজুবাদাম বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণে ভরপুর। আপনারা হয়তো আগে জেনে গেছেন
কাজুবাদাম খাওয়ার উপকারিতা কি কি। এটি শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে
তাই আপনাদের পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত। তবে সবার মনে একটি প্রশ্ন থেকে থাকে
প্রতিদিন কয়টি করে কাজু বাদাম খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
আপনারা প্রতিদিন নিয়মিত ৮ থেকে ১০ টি কাজুবাদাম খেতে পারেন। তবে অনেক
বিশেষজ্ঞ বলে থাকেন কাজুবাদাম সাধারণত ১০ থেকে ১২ টি পর্যন্ত খাওয়া উচিত।
তবে আপনাদের সঠিক মাত্রায় কম পরিমাণে কাজু বাদাম খাওয়া উচিত। তাই আপনার নিয়মিত
কাজুবাদাম ৮ থেকে ১০ টি করে খেতে পারেন। এতে করে অনেক ভালো উপকার পাবেন।
খালি পেটে কাজু বাদাম খেলে কি হয়
খালি পেটে কাজু বাদাম খেলে কি হয় এটা আপনারা অনেকেই জানতে চান। খালি পেটে
কাজু বাদাম খেলে বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়ে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম হলো আপনি
যদি দেহের ওজন কমাতে চান তাহলে প্রতিদিন খালি পেটে কাজু বাদাম খেতে পারেন।
তাছাড়া খালি পেটে কাজুবাদাম খেতে হলে অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে খেতে হবে তা না
হলে আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আপনার যদি সকালে কাজুবাদাম খেতে পছন্দ না হয় তাহলে আপনি কখনোই কাজু বাদাম
খাবেন না। এমন অবস্থায় যদি আপনি জোর করে সকালে কাজু বাদাম খেয়ে ফেলেন তাহলে
আপনার বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই যাদের সকালে কাজু বাদাম
খেতে সমস্যা বোধ হয় তারা দিনের অন্যান্য সময়ে যে সময় আপনার ভালো লাগে সেই
সময় খেতে পারেন।
তাছাড়া ও খালি পেটে কাজু বাদাম খাওয়া আপনার ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য
করতে পারে। তবে আপনি যদি খালি পেটে বেশি পরিমাণ কাজুবাদাম খেয়ে ফেলেন তাহলে
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে বিশেষ করে ডায়রিয়া ও ঘন ঘন বমি দেখা
দিতে পারে। তাই সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করুন।
কাজু বাদাম কি ভেজে খেতে হয়
কাজু বাদাম কি ভেজে খেতে হয় তা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। কাজুবাদাম আপনারা
বিভিন্নভাবে খেতে পারেন। তবে আপনারা জানতে চান কাজু বাদাম কি ভেজে খেতে হয়।
এতে বলবো কাজুবাদাম ভেজে খাওয়া ছাড়াও সরাসরি এটি খাওয়া যায়। কাজুবাদাম
সরাসরি খেলে অধিক পরিমাণে পুষ্টি পাওয়া যায়। তবে যাদের সাধারণত কাজু বাদাম
সরাসরি খেতে ভালো লাগে না তারা কাজুবাদাম ভেজে খেতে পারেন।
এতেও পুষ্টি পাওয়া যায় তবে একটু কম পরিমাণে। তাহলে বুঝতে পারছেন কাজু বাদাম
ভেজে খাওয়া যায় তাছাড়া বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করে খেতে পারেন। আপনারা
সুস্বাদু দইয়ের সাথে অথবা পায়েসের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। অনেকভাবে
খাওয়া যায় যেটি আমরা উপরের অংশে খাওয়ার নিয়মে আলোচনা করেছি। কাজুবাদাম
খাওয়ার নিয়ম অংশটি পড়লে আপনারা বিস্তারিত জেনে যাবেন।
কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে শেষকথা
বাদামমাত্রই তা শরীরের জন্য উপকারী। বাদামে থাকা স্বাস্থ্যগুণ সহজেই শরীরের অনেক সমস্যা দূর করে। আর তা যদি হয় কাজুবাদাম তাহলে তো কোনো কথাই নাই। কাজুবাদামে রয়েছে ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, জিঙ্ক, কপারের মতো কিছু উপকারী উপাদান। এ ছাড়াও ভিটামিন কে, ভিটামিন বি৬-এর মতো খাদ্য উপাদানও রয়েছে কাজুবাদামে। তাই শরীরের অনেক সমস্যাসহ যারা ওজন কমাতে ডায়েট করছেন, তাদের নিয়মিত খাবারে এ কাজুবাদাম থাকাটা জরুরি।
আশা করছি আপনারা এতক্ষণে কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম, কাজুবাদাম খাওয়ার
উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে গেছেন। যার ফলে আপনারা অতি সহজেই এখন
কাজুবাদাম নিয়ম অনুযায়ী খেতে পারবেন এবং উপকার জেনে কিভাবে খেতে হয় সেভাবে
খেতে পারবেন। আশা করছি বুঝতে পারছেন। আপনারা অবশ্যই নিয়মিত সঠিক মাত্রাই খাবেন
তাহলেই কাজুবাদামের সঠিক পুষ্টিতা পাবেন।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url