আখরোট খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা


আখরোট খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ রয়েছে প্রচুর। আখরোট একটি পুষ্টিকর বাদাম জাতীয় ফল। আখরোট অন্য সকল ড্রাই ফুডের চেয়ে উন্নত এবং অধিক পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ। কারণ বাদাম জাতীয় খাবারে একাধারে ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট এবং শর্করা থেকে শুরু করে আরো অনেক উপকারী পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।
আখরোট-খাওয়ার-উপকারিতা
এটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি খাদ্য। প্রকৃতিতে পাওয়া যায় এমন অনেক বাদামের মধ্যে আখরোট অন্যতম যা ওয়ালনাট হিসেবেও পরিচিত। নিচে আখরোট খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, আখরোট খাওয়ার নিয়ম এবং এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি যা আপনারা পড়ে উপকৃত হবেন।

পেইজ সূচিপত্রঃ আখরোট খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আখরোট খাওয়ার উপকারিতা

আখরোট খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে প্রচুর। আখরোট বাদাম জাতীয় একটি ফল। যারা বাদাম খেতে পছন্দ করেন, তাদের কাছে পরিচিত নাম হলো আখরোট। তবে ফ্যাট আছে মনে করে অনেকে এই বাদাম এড়িয়ে চলেন, আসলে কিন্তু তা নয়। এতে থাকা ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, প্রোটিন ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড নানাভাবে শরীরের উপকার করে থাকে। কালো কিংবা বাদামি- দুই ধরনের আখরোটই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। জেনে নিন নিয়মিত আখরোট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী না হলে যেকোনো অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করা কঠিন হয়ে যায়। করোনা মহামারির এই সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রতি আমরা একটু হলেও মনোযোগী হয়েছি। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে আখরোট। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ইমিউন সিস্টেমকে ঠিক রাখে। আখরোটে আছে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ যেমন তামা এবং ভিটামিন বি-৬ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে।

হৃদযন্ত্র ভালো রাখেঃ সুস্থ থাকার জন্য হৃদযন্ত্র বা হার্ট ভালো রাখার বিকল্প নেই। আর আপনাকে এই কাজে সাহায্য করতে পারে আখরোট। এতে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের জন্য উপকারী। আপনি যদি প্রতিদিন কয়েকটি করে আখরোট খান তবে তা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করবে। এটি আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস করে এবং ভালো কোলেস্টেরলের বাড়াতে সাহায্য করে। তাই হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে নিয়মিত আখরোট খান।

মস্তিষ্ক বিকাশে সাহায্য করেঃ আখরোট দেখতে কিন্তু অনেকটা আমাদের মস্তিষ্কের আকৃতির মতো। এই বাদাম আমাদের মস্তিষ্কের বিকাশেও সাহায্য করে। এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এই কাজে ভূমিকা রাখে। তাই মস্তিষ্কের বিকাশে নিয়মিত আখরোট খেতে পারেন।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ মরণঘাতি রোগ ক্যান্সার থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে আখরোট। এতে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, পলিফেনলস এবং ইউরোলিথিন অ্যান্টি-ক্যান্সার বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। তাই স্তন, কোলন এবং প্রোস্টেট রোধে বড় ভূমিকা রাখে আখরোট। আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যান্সার রিসার্চ জানিয়েছে আখরোট খেলে তা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমায়ঃ আখরোট রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষ করে রক্তে থাকা ক্ষতিকর শর্করা প্রতিরোধ করে এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। যেহেতু রক্তে থাকা শর্করা ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ সেহেতু আখরোট পরোক্ষভাবে এর ঝুঁকি কমায়। অর্থাৎ নিয়মিত ওয়ালনাট খেলে তা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি তা প্রতিরোধ করে।

ওজন কমায়ঃ আখরোটে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট থাকার কারণে অনেকেই মনে করে এটি খেলে ওজন বৃদ্ধি পাবে। তবে এতে থাকা ওমেগা-৩, প্রোটিন ও ফাইবার দেহের পুষ্টি উপাদান নিয়ন্ত্রণ করে ওজন ঠিক রাখে। তবে কখনোই ওয়ালনাট বেশি খাওয়া যাবে না কারণ এতে দেহে অতিরিক্ত ফ্যাট জমা হবে যা স্থূলতা বৃদ্ধি করে।

শুক্রাণুর মান বৃদ্ধি করেঃ বীর্যে স্বাস্থ্যবান শুক্রাণু না থাকলে তা থেকে সন্তান উৎপাদন হয় না। প্রাকৃতিক উপায়ে শুক্রাণুর মান বৃদ্ধি করার যে যে খাবার আছে আখরোট তাদের মধ্যে অন্যতম। নিয়মিত মধুর সাথে আখরোট মিশিয়ে খেলে তা যৌন স্বাস্থ্য উন্নত করার সাথে সাথে শুক্রাণুর মান বৃদ্ধি করে। আখরোটে সমৃদ্ধ পুষ্টির প্রোফাইলের কারণে পুরুষ প্রজনন স্বাস্থ্যকে উপকৃত করে। আখরোটে উপস্থিত ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য বায়োঅ্যাকটিভ যৌগগুলি শুক্রাণুর গুণমান, গতিশীলতা এবং সামগ্রিক পুরুষ প্রজনন কার্যকে উন্নত করতে পারে।

হৃদরোগ প্রতিরোধ করেঃ হৃদরোগের জন্য সব থেকে বেশি দায়ী হলো ক্ষতিকর কোলেস্টরেল, ফ্যাট এবং রক্তে থাকা শর্করা। এগুলো প্রতিরোধ করার জন্য আখরোট অনেক ভালো কাজ করে। কারণ আখরোটে আছে ওমেগা-৩, ভিটামিন, ফাইবার, এন্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি উপাদান। এগুলো দেহের সকল পুষ্টিগুণ স্বাভাবিক রাখে এবং রক্ত চলাচল বাধামুক্ত রাখে। এতে হৃৎপিণ্ড সচল থাকে এবং এর পারিপার্শ্বিক পেশীগুলো কর্মক্ষম থাকে। এই কারণে সম্ভাব্য হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ হয়।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃ দেহের কর্মক্ষমতা স্বাভাবিক রাখার জন্য কোলেস্টেরেলের প্রয়োজন হয়। তবে ক্ষতিকারক এলডিএল কোলেস্টরেল উপকারের থেকে ক্ষতি বেশি করে। বিশেষ করে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করার জন্য এই এলডিএল কোলেস্টরেল দায়ী।নিয়মিত আখরোট বা ওয়ালনাট খেলে তা রক্তে থাকা এই ক্ষতিকারক উপাদান দূর করে এবং শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমার সাথে সাথে অন্যান্য সমস্যা নির্মূল হয়।

হাড়ের গঠন শক্ত করেঃ হাড়ের দুর্বলতা দেখা দিলে সতর্ক হোন। কারণ সেখান থেকে দেখা দিতে পারে আরও অনেক সমস্যা। হাড় ভালো রাখতে নিয়মিত আখরোট খান। এতে আছে আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিড নামে একটি প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড। এই অ্যাসিড হাড়কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে আখরোটে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও হাড় ভালো রাখে।

গর্ভাবস্থায় উপকারীঃ আখরোটে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি, ফোলেট, রাইবোফ্লাভিন, থিয়ামিন এবং ফলিক অ্যাসিড থাকে যা গর্ভবতী মা এবং অনাগত সন্তানের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। এগুলো হবু মায়েদের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। আখরোটে থাকা ফলিক এসিড গর্ভবতী ও অনাগত সন্তানের জন্য উপকারী।  নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ আখরোট খেলে গর্ভবতী নারীর জন্য খুবই উপকারী।

মানসিক চাপ কমায়ঃ আখরোটে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি থাকে, যা চামড়াকে বুড়িয়ে যেতে বাধা দেয়। বলা হয় ভিটামিন বি হল স্ট্রেস রিলিভার ও মুড ম্যানেজার। স্ট্রেস কম থাকলে ত্বকের চামড়া উজ্জ্বল হয়। ভিটামিন বি-এর সঙ্গে ভিটামিন ই মিশে তা শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে।

শিশুর মস্তিস্কের বিকাশ করেঃ শিশুর মস্তিস্কের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে- একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে আখরোটে থাকা ভিটামিন ই, মোলাটোন, ওমেগা ৩, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে বিশেষভাবে সাহায্য করে। তাই ছোটবেলা থেকেই আপনার শিশুকে আখরোট খাওয়ানো অভ্যাস করুন।

ভালো ঘুমের জন্যঃ অনিদ্রার সমস্যা থাকলে আখরোট রাখুন খাবারের তালিকায়। এতে থাকা মেলাটোনিন ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক। আখরোটে উপস্থিত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তচাপকে কম রাখে এবং স্ট্রেস উপশম করে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ  আখরোটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে, যা সুস্থ ত্বকের জন্য বিশেষ উপযোগী। ত্বকের বলিরেখা কমাতে এবং বয়সের ছাপ দূর করতে প্রতিদিন আখরোট খাওয়া প্রয়োজন।

চুলের উপকার করেঃ চুলের জন্য উপকারী উপাদান যেমন পটাশিয়াম, ওমেগা থ্রি, ওমেগা সিক্স ও ওমেগা নাইন ইত্যাদি আখরোটে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। এই কারণে নিয়মিত ওয়ালনাট খেলে তা চুল শক্ত করে, উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, চুলের গোঁড়া মজবুত করে। এতে চুল হয় ঘন, কালো, লম্বা এবং স্বাস্থ্য উজ্জ্বল।

ডার্ক সার্কল দূর করেঃ আমরা জানি ডার্ক সার্কেল তৈরি হয় অনিদ্রা, দুশ্চিন্তার কারণে। নিয়মিত ওয়ালনাট খেলে তা মানুষিক অবসাদ দূর করে এতে স্ট্রেস দূর হয় এবং স্বাস্থ্যসম্মত ঘুম হয়। অন্যদিকে এতে থাকা ফাইবার, আলফা লাইনলেনিক অ্যাসিড এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট চোখের নিচে ফোলাভাব দূর করে এবং চেহারার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

আখরোটের পুষ্টি উপাদান

আখরোটের পুষ্টি উপাদান রয়েছে প্রচুর। পুষ্টিগুণে ভরপুর আখরোট একপ্রকার বাদাম জাতীয় ফল। আখরোটে প্রচুর আমিষ এবং অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি আসিড আছে। আখরোটে থাকা গামা, টোকোফেরল, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও ইলেজিক-গ্যালিক অ্যাসিড শরীরে ক্যানসার প্রতিরোধ করে। শরীরে ক্যালসিয়াম জমা করতে সাহায্য করে আখরোট। আখরোটে মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড, মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বেশি থাকে। 

এটিতে যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সবচেয়ে বেশি পরিমানে থাকে তার নাম Alpha linoleic acid (ALA) যা আখরোটে বিদ্যমান মোট চর্বির ৮-১৪%। এছাড়া বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে আখরোট কার্যকর ভূমিকা পালন করে। শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে, অ্যালজাইমার, হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন যদি অন্তত ৭৫ গ্রাম করে আখরোট খাওয়া যায় তবে পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের সমস্যা কমে। কারণ আখরোট বাড়িয়ে দেবে স্পার্ম কাউন্ট বা শুক্রাণুর সংখ্যা। দেখে নিন আখরোটের পুষ্টি উপাদানঃ

আখরোটের প্রতি ১০০ গ্রাম-এ পুষ্টি উপাদান 
পুষ্টি উপাদান পরিমান
শক্তি ২৫৪ কিলোক্যালোরি
শর্করা ১৩.৭১ গ্রাম
চিনি ২.৬১গ্রাম
খাদ্য আঁশ ৬.৭গ্রাম
প্রোটিন ১৫.২৩ গ্রাম
বিটা-ক্যারোটিন ১২ ইউঃ গ্রাম
লুটিন-জিয়াক্সানথিন ৯ ইউঃ গ্রাম
ভিটামিন-এ ২০ আইইউ
ভিটামিন-বি৬ ০.৫৩৭ মিলিগ্রাম
ভিটামিন-ই ০.৭ মিলিগ্রাম
ভিটামিন-সি ১.৩ ইউঃ গ্রাম
ভিটামিন-কে ২.৭ মিলিগ্রাম
থায়ামিন-বি১ ০.৩৪১ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লাভিন-বি২ ০.১৫ মিলিগ্রাম
নায়াসিন-বি৩ ১.১২৫ মিলিগ্রাম
প্যানটোথেনিক এসিড-বি৫ ০.৫৭০ মিলিগ্রাম
ফোলেট-বি৯ ৯৮ ইউঃ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ৯৮ মিলিগ্রাম
লৌহ ২.৯১ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ১৫৮ মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ ৩.৪৪১ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ৩৪৬ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ৪৪১ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম
জিঙ্ক ৩.০৯ মিলিগ্রাম

আখরোট খাওয়ার নিয়ম

আখরোট খাওয়ার নিয়ম জানতে চেয়েছেন অনেকে। আখরোট খুবই স্বাস্থ্যকর একটি বাদাম, যা পুরো শরীরকে পুষ্টির যোগান দেয়। আখরোট জলে ভিজিয়ে খেতে পারলে তা হজম করা অনেক বেশি সহজ হয়। আখরোটে রয়েছে শক্তি, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ডায়েটারি ফাইবার, ফসফরাস, আয়রন, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ইত্যাদির মতো অনেক পুষ্টি উপাদান। আখরোট খাওয়ার বিভিন্ন উপায় রয়েছে নিচে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ড্রাই ফুড হিসেবেঃ বর্তমান সময়ে উচ্চ পুষ্টির খাবার হিসেবে ড্রাই ফুডের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। ড্রাই ফুড তৈরি করার প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধরনের শুকনা খাবারের সাথে অনেক রকমের বাদাম ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে পেস্তা বাদাম, কাজু বাদাম এবং কাঠ বাদামের সাথে আখরোট মেশানো হয়। এতে পুরো মিশ্রণের মধ্যে পুষ্টি উপাদান সঠিকভাবে বণ্টন হয়। এই কারণে ড্রাই ফুড হিসেবে শুরু থেকেই ওয়ালনাট বা আখরোট ব্যবহার হয়ে আসছে।

মধুর বা দুধের সাথে মিশিয়েঃ মধুর সাথে অথবা দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার জন্য আখরোট অনেক জনপ্রিয়। প্রতিদিন সকালে এবং বিকেলে মধুর অথবা দুধের সাথে দুই দানা আখরোট মিশিয়ে খেলে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্য উপকারিতা নিশ্চিত করে। মধু বা দুধের সাথে এই বাদাম খেলে উক্ত খাবার গুলো থেকে যে যে উপকারী উপাদান পাওয়া যায় তা মাল্টিপ্লাই হয়ে বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ মধুর সাথে খেলে মধুর গুণাগুন ও ওয়ালনাটের পুষ্টিগুণ এক সাথে হয়ে অন্যান্য খাবারের থেকে বেশি পুষ্টি সরবরাহ করে। অন্য দিকে ঠিক একই ভাবে দুধের সাথে খেলেও পুষ্টি বৃদ্ধি পায়।

পানিতে ভিজিয়েঃ ধরুন আপনার কাছে মধু অথবা দুধ কিছুই নেই তখন কি আখরোট খাওয়া যাবে না? অবশ্যই যাবে, তখন আপনাকে আখরোট পানিতে ভিজিয়ে খেতে হবে। এমনি আপনি শুকনা হিসেবেও খেতে পারবেন তবে এতে পেটে বদহজম সহ অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে পানিতে ভিজিয়ে খেলে আখরোটের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পায়। এই কারণে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পানিতে ভেজানো আখরোট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

গুঁড়ো করেঃ শুকনো ওয়ালনাট গুঁড়ো করে তা কফির সাথে অথবা কেকের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এতে উক্ত খাবারের যেমন স্বাদ বৃদ্ধি পায় তেমনি সর্বোপরি উপকারী পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পায়। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দেশের মানুষ আখরোট গুঁড়ো করে তা দিয়ে নানান পদের খাবার তৈরি করে খাচ্ছে। এতে ওয়ালনাটের পুষ্টি উপাদান নষ্ট হওয়ার কোন সুযোগ থাকে না।

পুরুষদের জন্য আখরোটের উপকারিতা

পুরুষদের জন্য আখরোটের উপকারিতা রয়েছে ব্যপক। আখরোটে থাকে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। আমাদের শরীরে প্রতিদিন যে পরিমাণ ওমেগা ফ্যাট প্রয়োজন, তার ১০০ শতাংশ চাহিদাই পুষিয়ে দেয় আখরোট। সেইসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে তামা, ম্যাঙ্গানিজ, মলিবডেনাম ও বায়োটিন থাকে আখরোটে। একাধিক পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ আখরোট কিভাবে পুরুষদের উপকার করে জেনে নিন।

শুক্রাণু বৃদ্ধি করেঃ বীর্যে স্বাস্থ্যবান শুক্রাণু না থাকলে তা থেকে সন্তান উৎপাদন হয় না। প্রাকৃতিক উপায়ে শুক্রাণুর মান বৃদ্ধি করার যে যে খাবার আছে আখরোট তাদের মধ্যে অন্যতম। নিয়মিত মধুর সাথে আখরোট মিশিয়ে খেলে তা যৌন স্বাস্থ্য উন্নত করার সাথে সাথে শুক্রাণুর মান বৃদ্ধি করে। আখরোটে সমৃদ্ধ পুষ্টির প্রোফাইলের কারণে পুরুষ প্রজনন স্বাস্থ্যকে উপকৃত করে। আখরোটে উপস্থিত ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য বায়োঅ্যাকটিভ যৌগগুলি শুক্রাণুর গুণমান, গতিশীলতা এবং সামগ্রিক পুরুষ প্রজনন কার্যকে উন্নত করতে পারে।

যৌন ফাংশন উন্নতঃ আখরোট সেবনের প্রভাব পুরুষদের জন্য যৌন ফাংশনের উপর ইতিবাচক প্রভাব প্রদর্শন করেছে। খাদ্যতালিকায় আখরোট অন্তর্ভুক্ত করলে অধিকতর যৌন তৃপ্তি ও আকাঙ্ক্ষা এবং ইরেক্টাইল ফাংশন উন্নত হয়। ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (ED) পুরুষদের যৌনমিলন সম্পূর্ণ করার জন্য ইরেকশন পেতে বা ধরে রাখতে বাধা দেয়। এই অবস্থাটি বেশ সাধারণ, প্রায় ৩০ মিলিয়ন পুরুষ এ সমস্যায় ভুগছেন। এই সমস্যার শারীরিক কারণগুলি রক্ত ​​​​প্রবাহকে সীমিত করে এবং একটি আসীন জীবনযাপন, মানসিক চাপ, ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, অতিরিক্ত ওজন ইত্যাদি। দিনে ৭০ গ্রাম করে আখরোট খেলে, বাড়বে স্পার্ম কোয়ালিটি। আখরোট লিপিড প্রিঅক্সিডেশনের হার কমায়। এই লিপিড প্রিঅক্সিডেশনই শুক্রাণু কোষের ক্ষতির জন্য দায়ী।

শুক্রাণুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারীঃ পুরুষদের উর্বরতা মূলত শুক্রাণুর গুণমান এবং পরিমাণ দ্বারা নির্ধারিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি বীর্যপাতের সংখ্যা খুব কম হয় বা শুক্রাণু নিম্নমানের হয়, তাহলে গর্ভধারণ করা কঠিন বা এমনকি অসম্ভাব্যও হতে পারে। যেহেতু পাঁচজনের মধ্যে একের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের ঘটনা শুধুমাত্র পুরুষ সঙ্গীর কারণে হয় এবং প্রায় বিশজনের মধ্যে একজন পুরুষ কম সংখ্যক শুক্রাণুর ক্ষরণজনিত উর্বরতার সমস্যায় ভুগছেন, শুক্রাণুর আকারবিদ্যা, জীবনীশক্তি উন্নত করার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর এবং প্রমাণিত পদ্ধতি ব্যবহার করে এবং গতিশীলতা উর্বরতা সমস্যা মোকাবেলা শুরু করার একটি ভাল উপায়। আখরোট দিয়ে আপনার খাদ্যকে সমৃদ্ধ করা আপনার উর্বরতার সমস্যা সমাধানের একটি কার্যকরী প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। এবং প্রয়োজনে ওষুধ বা অস্ত্রোপচার ব্যবহার করে বন্ধ্যাত্বের আরও অনেক চিকিৎসা রয়েছে।

গর্ভাবস্থায় আখরোট খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় আখরোট খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক। গর্ভবতী নারীর জন্য প্রতিদিন আখরোট খাওয়া উপকারী। আখরোটে আছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যেমন ফোলেট, রাইবোফ্লাভিন এবং থিয়ামিন। এগুলো হবু মায়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। আখরোটে থাকা ফলিক এসিড গর্ভবতী ও অনাগত সন্তানের জন্য উপকারী। আসুন গর্ভাবস্থায় আখরোট খেলে তা কীভাবে আপনাকে সহায়তা করতে পারে সে সম্পর্কে আরও জেনে নেওয়া যাকঃ

  • আখরোট ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিনে সমৃদ্ধ যা আপনার অনাগত শিশুটির চোখ এবং মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করতে পারে।
  • আখরোটে রয়েছে উদ্ভিজ্জ স্টেরল যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং আপনার দেহে ভাল কোলেস্টেরলের (HDL) মাত্রা বৃদ্ধি করে।
  • মাঝারি পরিমাণে আখরোট খাওয়া গর্ভাবস্থায় সন্তোষজনক লিপিড প্রোফাইল বজায় রাখতে সহায়তা করে।
  • আখরোট তেল সারা দেহের রক্তবাহের রেখায় উপস্থিত এন্ডোথেলিয়াল কোষগুলির কার্যকারিতা সংরক্ষণে উপকারী বলে জানা যায়।এই কোষগুলি রক্তবাহের নমনীয়তায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করে।সুতরাং নিয়মিত আখরোট সেবনের দ্বারা রক্তবাহের প্রদাহগুলি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
  • আখরোট রক্তবাহকে শিথিল করার কারণে সেগুলি আবার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।
  • আখরোট প্রোটিন এবং ফাইবারের একটি ভাল উৎস,যার উভয়েই একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • আখরোট বাদামে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করতে পারে।আখরোট বাদামের উপরে আচ্ছাদিত পাতলা বাদামী আস্তরণটি সমেত বাদামগুলি খাওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়।এর কারণ হল আখরোট বাদামে পাওয়া 90% অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলিই এর উপরে আচ্ছাদিত পাতলা আস্তরণের মধ্যেই ঘনিভূত থাকে।
  • আখরোট মধ্যস্থ এর কপার উপাদানটি ভ্রূণের যথাযথ বৃদ্ধি এবং বিকাশে সহায়তা করে থাকে।
  • এগুলির মধ্যে আবার পলিফেনল এবং কপার রয়েছে যা ক্যান্সার এবং মুক্ত মূলক থেকে ক্ষতি হওয়া রোধ করতে পারে।
  • প্রসবের পরে মায়েদেরকে প্রসব পরবর্তী হয়ে থাকা ডিপ্রেশন বা মানসিক চাপকে দূরে ঠেলে রাখার জন্য আখরোট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।আখরোটের আলফা–লিনোলেনিক অ্যাসিড উপাদানটি প্রসবোত্তর মানসিক চাপ এবং হতাশা,ম্যানিক–ডিপ্রেশনাল সাইকোসিস এবং এমনকি স্মৃতিভ্রংশের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ভাল।সুতরাং,আপনি প্রসবের পরে আখরোট বাদাম খাওয়া চালিয়ে যেতে পারেন।
  • আখরোটগুলি আবার মেলাটোনিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে থাকে। মেলাটোনিন ঘুমকে প্ররোচিত করে,এবং আখরোট খাওয়া বিশেষ করে তৃতীয় ত্রৈমাসিকে, ভীষণ উপকারী হয়ে উঠতে পারে কারণ যেহেতু এই সময় ঘুম একটা বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে ওঠে।
  • আখরোটগুলি আপনার মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে সম্পূর্ণবোধ হওয়ার মত অনুভূতি ধরে রাখতে পারে এবং পুনরায় খাই–খাই ব্যাপারটি থেকে বিরত রাখতে পারে।যা আপনার একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে ওজন বজায় রাখতে সহায়তা করতে পারে।
  • আখরোট মধ্যস্থ ভিটামিন-ই কোষের ঝিল্লির গঠণ বজায় রাখতে এবং কোষগুলিকে রক্ষা করতে সহায়তা করতে পারে।এছাড়াও এটি আবার শিশুর ফুসফুসের বিকাশে এবং অ্যাসথেমা ও অন্যান্য শ্বাস–প্রশ্বাসের সমস্যাগুলির ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারে।
  • আখরোটে কপার বা তামা থাকে যা লোহিত রক্তকণিকা গঠনের জন্য প্রয়োজনীয়।এটি আবার কলাগুলির মেরামতে এবং শর্করার ভাঙনেও সহায়তা করে থাকে।
  • শিশুর হাড় এবং তরুনাস্থির বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন পুষ্টিকর উপাদান হল ম্যাঙ্গানিজ।সারাদিনের প্রয়োজনীয় ম্যাঙ্গানিজের পরিমাণের প্রায় অর্ধেকটাই সরবরাহ করা যেতে পারে একবার আখরোট পরিবেশন করার মাধ্যমে।

ত্বকের যত্নে আখরোটের উপকারিতা

ত্বকের যত্নে আখরোটের আশ্চর্যজনক উপকারিতা রয়েছে। আখরোটে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ত্বকের জন্য বিস্ময়কর কাজ করে। আখরোট ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে, বলিরেখা এবং সূক্ষ্ম রেখাগুলি দূরে রাখে। নিচে ত্বকের জন্য আখরোটের উপকারিতা সম্পর্কে আরও জানুনঃ
বার্ধক্যের সাথে লড়াই করেঃ বার্ধক্য স্বাভাবিকভাবেই ঘটে এবং এটি থেকে বাঁচার কোন উপায় নেই। তারপরও, আমরা বার্ধক্য এবং বলিরেখার অকাল লক্ষণগুলিকে বিলম্বিত বা দীর্ঘায়িত করতে পারি। সূর্যের সংস্পর্শে আসা এবং দূষণও বার্ধক্যের প্রাথমিক লক্ষণগুলিকে ত্বরান্বিত করে এবং আমরা ত্বকের জন্য আখরোট ব্যবহার করে এটি বিলম্বিত করতে পারি। আখরোট অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ, এইভাবে পরিবেশগত কারণের কারণে ত্বককে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। যারা বলিরেখা এবং সূক্ষ্ম রেখা দূর করতে চান তাদের জন্য আখরোট তেল একটি ভালো বিকল্প।

ত্বক এক্সফোলিয়েট করেঃ আখরোট স্ক্রাবের অনেক সুবিধা রয়েছে, যে কারণে অনেক শীর্ষস্থানীয় স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড তাদের পণ্যগুলিতে আখরোট যোগ করার বিষয়টি নিশ্চিত করে। আখরোট তাদের গঠন, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সামগ্রীর কারণে একটি চমৎকার ত্বকের এক্সফোলিয়েন্ট। অতিরিক্ত তেল, মৃত ত্বকের কোষ, ময়লা অপসারণের ক্ষেত্রে তারা যাদু কাজ করে।

ব্রণ প্রতিরোধ করেঃ আখরোটে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এজেন্ট রয়েছে, যা ব্যাকটেরিয়া, সংক্রমণ এবং জীবাণুগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করতে বিস্ময়কর কাজ করে যা ব্রণ এবং একজিমার মতো ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে। নিয়মিত আখরোট-ইনফিউজড ফেস ওয়াশ বা বডি ওয়াশ ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতিকারক জীবাণু এবং জীবাণু দূরে থাকবে। এইভাবে, ব্রণ এবং অন্যান্য ত্বক সংক্রান্ত সমস্যা প্রতিরোধ করে।

ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি করেঃ আখরোটে রয়েছে ভিটামিন ই এবং ভিটামিন বি-৫ যা ছিদ্র শক্ত করতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। আখরোটে উপস্থিত ভিটামিন বি-৫ ট্যান এবং কালো দাগ দূর করতে, ত্বকের রঙ উন্নত করতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে কাজ করে। ভিটামিন-ই ত্বক মেরামত করে, এটিকে স্বাস্থ্যকর এবং নরম রাখে। ত্বকের জন্য আখরোটের উপকারিতা প্রচুর, তাই সঠিক পণ্য ব্যবহার করলে তা আপনাকে একটি পরিষ্কার এবং দাগহীন বর্ণ নিয়ে যাবে।

ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করেঃ আখরোট ত্বকের জন্য ভালো ফ্যাটি অ্যাসিড সহ ময়শ্চারাইজিং এবং পুষ্টিকর বৈশিষ্ট্যে ভরপুর। আপনার ত্বকে আখরোট তেল ব্যবহার করা ভিটামিন বি-৫ এর প্রয়োজনীয় পুষ্টির সাথে এটিকে সুস্থ রাখতে এবং পুষ্টিতে সাহায্য করবে, যখন ই ব্যবহার করলে আপনার ত্বক ভালভাবে হাইড্রেটেড থাকবে। আখরোট তেল রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত করতেও পরিচিত। উজ্জ্বল ত্বকের জন্য এখানে কয়েকটি খাবার রয়েছে।

ত্বকের জন্য আখরোটের ফেসস্ক্রাব

ত্বকের জন্য আখরোটের ফেসস্ক্রাব দুর্দান্ত এক্সফোলিয়েন্ট। এটি ত্বকের মরা চামড়া, ময়লা দূর করে এবং ছিদ্রগুলিকে গভীরভাবে পরিষ্কার করে। আখরোটে ভিটামিন ই এবং পলিফেনল সহ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই অক্সিডেটিভ স্ট্রেস অকাল বার্ধক্য এবং ত্বকের ক্ষতিতে অবদান রাখে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি ফ্রি র‌্যাডিক্যালের কারণে সৃষ্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সাহায্য করে। নিচে আখরোটের কয়েকটি ফেসস্ক্রাব সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

১. VLCC Walnut ফেস স্ক্রাবঃ আপনি যদি একটি আখরোট ফেস স্ক্রাব খুঁজছেন যা আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত, তাহলে VLCC Walnut Face Scrub হল মৃত কোষ এবং ডি-ক্লগ ছিদ্র অপসারণের জন্য দুর্দান্ত। এটি আপনার ত্বককে সুস্থ এবং উজ্জ্বল রাখার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত করে যা ত্বককে উজ্জ্বল এবং টানটান করতে কাজ করে। সব ধরনের ত্বকের জন্য চমৎকার এবং ব্ল্যাকহেডস, ময়লা এবং অমেধ্য দূর করতে সাহায্য করে

২. ন্যানো মাল্টি ভিট ন্যাচারালস এক্সফোলিয়েটিং আখরোট স্ক্রাবঃ এটি আরেকটি আশ্চর্যজনক আখরোট ফেস স্ক্রাব যা ত্বকের জন্য প্রচুর উপকারিতা নিয়ে আসে। এই Everyuth Naturals Exfoliating Walnut Scrub ভিটামিন ই এবং আখরোটের খোসার কণার সাথে আসে যা মৃত ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে এবং ত্বকের অমেধ্য থেকে মুক্তি পায়। স্ক্রাবের ভিটামিন ই ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং পুষ্টি জোগায়, আপনার ত্বককে সুন্দর, পরিষ্কার এবং পরিষ্কার করে।

৩. ভায়াম আয়ুর্বেদ আখরোট এক্সফোলিয়েটিং জেল স্ক্রাবঃ আপনি যদি আপনার ত্বকের জন্য কাজ করে এমন একটি আয়ুর্বেদ স্ক্রাব খুঁজছেন, তাহলে ভায়াম আয়ুর্বেদ আখরোট এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব একটি ভাল বিকল্প। এই ফেস স্ক্রাবটি একটি উজ্জ্বল এবং মসৃণ বর্ণ তৈরি করে, যা আপনার মেকআপ এবং অন্যান্য স্কিনকেয়ার পণ্যগুলিকে সমান এবং ত্রুটিহীন দেখায়। প্যারাবেন-মুক্ত, খনিজ তেল-মুক্ত, এবং সালফেট-মুক্ত, এই ফেস স্ক্রাবটি আপনার ত্বককে পরিপূর্ণতায় এক্সফোলিয়েট এবং হাইড্রেট করে। জেল ফর্মুলায় তৈরি, এটি মৃত কোষ অপসারণ এবং ছিদ্রগুলি ডি-ক্লগ করতে কাজ করে।

৪. আখরোট ও হলুদের মামার্থ উবটান স্ক্রাবঃ আরেকটি জনপ্রিয় ফেস স্ক্রাব যা আপনি নরম এবং কোমল ত্বকের জন্য ব্যবহার করতে পারেন তা হল মামার্থ উবটান স্ক্রাব। যা ত্বকের জন্য আখরোটের আশ্চর্যজনক উপকারিতা নিয়ে আসে। আখরোট এবং হলুদ দিয়ে মিশ্রিত, এই মুখের স্ক্রাব ট্যান অপসারণ এবং নিস্তেজ, অসম ত্বকের টোন ঠিক করার জন্য দুর্দান্ত। হলুদে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ড্যামেজ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং সান ট্যান দূর করে ত্বককে হালকা করতে সাহায্য করে। কৃত্রিম রং, SLES, phthalates এবং সালফেটের মতো ক্ষতিকারক রাসায়নিক ছাড়াই এই ফেস স্ক্রাবটি ত্বকের জন্য চমৎকার।

চুলের যত্নে আখরোটের উপকারিতা

চুলের যত্নে আখরোটের উপকারিতা ব্যপক। আখরোট একটি প্রাকৃতিক শুষ্ক বীজ এবং এটি অসংখ্য পুষ্টিতে পূর্ণ। এই বীজ খেতে সবাই পছন্দ করে, আখরোটের পরম উপকারিতা সম্পর্কে যদি বলি, অবাক হবেন। প্রকৃতি আমাদের বিভিন্ন উপায়ে বিস্মিত করে, এই নিবন্ধে, চুলের জন্য আখরোটের বৈশিষ্ট্য, আমরা অর্থ প্রদান করি আখরোট শুধুমাত্র খাওয়ার জন্যই ভাল নয়, এতে চুল এবং ত্বকের জন্য প্রচুর সাময়িক উপকারিতাও রয়েছে।
এমনকি এর খোসার অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আমাদের চুল সুন্দর এবং শক্তিশালী। বহু বছর ধরে, লোকেরা আখরোট খাওয়া এড়িয়ে চলত এবং ভেবেছিল যে এই ধরণের বীজ ওজন বাড়াতে পারে, কিন্তু তারা জানে না যে আখরোট গ্রহের অন্যতম স্বাস্থ্যকর খাবার যা আমাদের শরীরকে ফিট রাখে এবং চুলের স্বাস্থ্য, বৈশিষ্ট্যগুলিতেও সহায়তা করে। দেখে নিন চুলের যত্নে আখরোট উপকারিতা গুলো কি কি

অতিরিক্ত চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করেঃ সেলেনিয়াম চুলের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান এবং আখরোট এই খনিজটির একটি ভাল উৎস। প্রতিদিন প্রায় 10টি আখরোট সেলেনিয়ামের একটি নিয়মিত উৎস প্রদান করে, যা টাক প্রতিরোধে কার্যকর। এছাড়াও, আখরোট বায়োটিনের একটি ভাল উৎস, যা অতিরিক্ত চুল পড়া নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

চুল মজবুত করেঃ আখরোটের একটি উপকারিতা হল চুল মজবুত করা; হল, দূষণ এবং ক্ষতিকারক সূর্যের রশ্মি সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ উপায়ে চুলের ক্ষতি করে। চুলের বৃদ্ধি উন্নত করতে এবং টাক পড়াকে সাহায্য করতে, নিয়মিত আপনার খাদ্যতালিকায় আখরোট অন্তর্ভুক্ত করুন। পটাসিয়াম, ওমেগা-৩, ওমেগা-৬ এবং ওমেগা-৯ ফ্যাটি অ্যাসিডার মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির উপস্থিতি চুলকে গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত মজবুত করে।

খুশকি দূর করেঃ আখরোট চুলের পুষ্টির একটি ভালো উৎস। তাই, যদি আপনি পুষ্টির দিক থেকে সুষম খাবার খেতে না পারেন, তাহলে প্রতিদিন এক মুঠো আখরোট খান, ওয়েনাটস মাথার ত্বক থেকে স্থায়ীভাবে খুশকি দূর করতে এবং দুর্বল চুলের অভ্যন্তরে স্বাস্থ্যকর ও মজবুত চুলে রূপান্তর করতে খুবই কার্যকর।

মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করেঃ আখরোটে থাকা অপরিহার্য তেল মাথার ত্বকে রক্ত ​​সঞ্চালন এবং চুলের স্বাস্থ্য এবং মজবুত করার জন্য উপকারী। আখরোটিতেও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি আপনাকে মাথার ত্বকের সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে।

চুলকে মজবুত ও পুষ্টিকর করতে আখরোটের তেলঃ চুলের জন্য আখরোটের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, এটি এর তেল তৈরি করা, সূর্যের রশ্মি চুলের ক্ষতি করে এবং পরিবেশগত কারণগুলিও চুল পাতলা করার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে। এই রশ্মির কারণে চুল পড়ে এবং টাক হয়ে যেতে পারে এভাবে। চুল পড়া এবং ক্ষতি রোধ করতে, আপনার আখরোট তেল ব্যবহার করা উচিত কারণ আখরোটে চর্বিযুক্ত তেল রয়েছে যা চুল পড়া রোধ করতে এবং চুলকে মজবুত ও লম্বা করতে সাহায্য করে। রাতে অল্প পরিমাণে আখরোট তেল দিয়ে আপনার চুল ম্যাসাজ করার অভ্যাস করুন, যা চুল ঘন এবং শক্তিশালী করে।

খুশকি প্রতিরোধে আখরোটের তেলঃ আখরোট তেলে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। খুশকি চুলের ফলিকলকে ব্লক করে এবং চুলের বৃদ্ধি রোধ করে, তাই এই তেলটি আপনার চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করলে খুশকি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। এটিও চুলের জন্য আখরোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য, এটি। এছাড়াও, খুশকি সেবেসিয়াস গ্রন্থিগুলির নিঃসরণ কমাতে পারে। কম চর্বি, শুষ্ক চুল এবং চুলের গোড়ায় খুশকি থেকে যায়। আখরোট তেল খুশকি প্রতিরোধের জন্য একটি চমৎকার প্রতিকার, এটি আপনার চুলে রাখলে ময়লা এবং খুশকি দূর হয়।

আখরোট সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর


প্রশ্নঃ দিনে কতগুলো আখরোট খাওয়া উচিত?

উত্তরঃ বয়স, লিঙ্গ এবং সামগ্রিক ক্যালোরির চাহিদার মতো স্বতন্ত্র কারণের উপর নির্ভর করে আখরোটের প্রস্তাবিত দৈনিক খাওয়া পরিবর্তিত হয়। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞরা সুষম খাদ্যের অংশ হিসাবে প্রতিদিন প্রায় 1-2 আউন্স (প্রায় 14-28 অর্ধেক) আখরোট খাওয়ার পরামর্শ দেন।

প্রশ্নঃ প্রতিদিন আখরোট খাওয়া কি নিরাপদ?

উত্তরঃ প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে আখরোট খাওয়া একটি সুষম খাদ্যের অংশ হিসাবে সাধারণত নিরাপদ। যাইহোক, অংশের আকার এবং ক্যালোরি গ্রহণের বিষয়ে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আখরোটে চর্বিযুক্ত উপাদানের কারণে ক্যালোরি বেশি থাকে।

প্রশ্নঃ আখরোট কি ত্বকের জন্য ভালো?

উত্তরঃ হ্যাঁ, আখরোট ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যেমন পলিফেনল এবং ভিটামিন-ই, যা আমাদের ত্বককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং অকাল বার্ধক্য থেকে রক্ষা করে। উপরন্তু, আখরোটে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ কমাতে এবং ত্বকের হাইড্রেশন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

প্রশ্নঃ আখরোট কি চুলের জন্য ভাল?

উত্তরঃ আখরোট তাদের পুষ্টি উপাদানের কারণে স্বাস্থ্যকর চুলে অবদান রাখতে পারে। এগুলি বায়োটিনের একটি দুর্দান্ত উত্স, একটি বি ভিটামিন যা চুলের বৃদ্ধি এবং শক্তিকে সমর্থন করে। উপরন্তু, আখরোটের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগাতে পারে এবং চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে।

প্রশ্নঃ কোন সময় আখরোট খাওয়া ভাল?

উত্তরঃ আখরোট খাওয়ার জন্য কোন নির্দিষ্ট সেরা সময় নেই, কারণ আপনি যে কোনো সময় সেগুলি উপভোগ করতে পারেন। যাইহোক, কিছু লোক ক্ষুধা নিবারণ করতে এবং শক্তি এবং পুষ্টি বাড়াতে সাহায্য করার জন্য মধ্য-সকাল বা সন্ধ্যার জলখাবার হিসেবে খেতে পছন্দ করে।

আখরোটের অপকারিতা

আখরোটের উপকারিতার পাশাপাশি কিছু খারাপ দিক রয়েছে। যেকোনো খাবারই প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। কারণ তাতে শরীরে পুষ্টি উপাদানগুলোর সামঞ্জস্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই অন্যান্য খাবারের মতোই আখরোটও প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। আপনি যদি আখরোট বেশি খেয়ে ফেলেন তবে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমনঃ

  • যাদের এলার্জি সমস্যা আছে তারা বেশি পরিমানে খেলে তাদের এলার্জি সমস্যা দেখা দেয়। 
  • অধিক মাত্রায় আখরোট খেলে লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • যাদের শরীরে সামান্য পরিমাণে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে তারা আখরোট খাবেন না। আখরোটে থাকা ফাইটেটস শরীরের আয়রন শুষে নিতে পারে। এর ফলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
  • যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের আখরোট খেলে মুখে চুলকানি, গলা ফুলে যাওয়া, হাঁপানি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • হাঁপানি রোগীরা আখরোট খেলে শ্বাসকষ্ট এবং জিভে ও গলা ফোলা সমস্যায় ভুগতে পারেন।

আখরোট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে শেষকথা

আখরোট একটি সত্যিকারের সুপারফুড, যা স্বাস্থ্যগত সুবিধার একটি চিত্তাকর্ষক অ্যারের প্রস্তাব করে। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং হার্টের স্বাস্থ্যকে সমর্থন করা থেকে শুরু করে ওজন ব্যবস্থাপনার প্রচার এবং প্রদাহ কমাতে, এই পুষ্টি-ঘন বাদামগুলি একটি খাদ্যতালিকাগত প্রধান হয়ে উঠেছে। আপনার দৈনন্দিন রুটিনে মুষ্টিমেয় আখরোট অন্তর্ভুক্ত করা আপনার সামগ্রিক সুস্থতা বাড়ানোর একটি সহজ কিন্তু কার্যকর উপায় হতে পারে।

আখরোটের অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা অনুভব করার জন্য, আমরা আপনাকে আজকে আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে উৎসাহিত করছি। এই অসাধারণ বাদামের পুষ্টিকর মঙ্গলের জন্য আপনার শরীরকে চিকিত্সা করুন এবং আরও ভাল স্বাস্থ্য এবং জীবনীশক্তির দিকে যাত্রা শুরু করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url