কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম
কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম রয়েছে অনেক। কারি পাতা শরীরের জন্য উপকারি একটি ভেষজ
উপাদান। এ পাতার রয়েছে একাধিক গুন। তাই চিকিৎসকেরা এটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে
থাকেন। তবে প্রশ্ন হলো কারি পাতার উপকার পেতে, এ পাতা খাওয়ার নিয়ম কি। কোন
কোন নিয়মে কারি পাতা খাওয়া স্বাস্থের জন্য উপকারী অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন।
তো চলুন নিচের আলোচনা থেকে জেনে নিন কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
১. স্বাস্থ উপকারিতা পেতে কয়েকটি কচি কারি পাতা প্রতিদিন রাতে এক
গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে শুধু পানিটুকু ছেঁকে পান করুন। এ
নিয়মে কারি পাতা খেলে ইমিউনিটি বাড়বে, কোলেস্টেরল ঠিক থাকবে, পেটের সমস্যা
কমবে, দুশ্চিন্তা কমবে এবং বিভিন্ন রোগ দূরে যাবে।
আরও পড়ুনঃ কালমেঘ পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
২. কারি পাতার উপকার পেতে ৩ থেকে ৪ টি কচি পাতা নিয়ে সকালে চিবিয়ে
খাবেন। এ পদ্ধতিতে কারি পাতা খেলে রয়েছে বেশ কিছু উপকার। যেমন-ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রন করে, হজমে ভালো কাজ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, ওজন কমায়, দাঁতের
ব্যাকটেরিয়া দূর করে ইত্যাদি।
৩. কারি পাতা পরিমানমতো জলের সাথে দিয়ে সেদ্ধ করে, ছেঁকে নিন। এরপর
পানি ঠান্ডা হলে সে পানির সাথে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খাবেন বিভিন্ন উপকার
পাবেন।
৪. বিভিন্ন রান্নায় কারি পাতা ব্যবহার করতে পারেন। এ পাতা শুধু
রান্নায় স্বাদ বাড়ায় না, বরং এ থেকে বেশ কিছু স্বাস্থ উপকারিতাও পাওয়া যায়।
সেক্ষেত্রে এ পাতা শাকসবজি, ওটসের সাথে যোগ করে এবং সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন।
যারা কারি পাতা খেতে চাইছেন, তারা স্বাস্থের সঠিক উপকার পেতে উপরের নিয়মগুলো
ফলো করে কারি পাতা খাবেন। সঠিক নিয়মে কারি পাতা খান, আপনার শরীরে কারিপতার
উপস্থিতি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করবে বলে আশা করা যায়।
সকালে কারি পাতা ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারীতা
সকালে কারি পাতা ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারীতা রয়েছে প্রচুর। কারিপাতার গুণের শেষ নেই। এতে রয়েছে অত্যন্ত উপকারী কিছু ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভানয়েডসের ভাণ্ডার। তবে এই পাতার সমস্ত গুণ পেতে চাইলে রোজ রাতে কয়েকটি কচি কারি পাতা জলে ভিজিয়ে রাখুন। আর পরেরদিন জল ছেঁকে নিয়ে তা পান করুন। নিচে কারি পাতা ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারীতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কারিপাতা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। যার ফলে নানা রোগবালাইয়ের হাত থেকে শরীর সুরক্ষিত থাকে। তাছাড়া, প্রতিদিন কারিপাতার জল পান করলে হজমশক্তিও বাড়ে।
২. বাড়বে ইমিউনিটিঃ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্য়বস্থা চাঙ্গা থাকলে একাধিক ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাসের আক্রমণ রুখে দেওয়া সম্ভব। আর এই কাজে আপনার সহযোদ্ধা হতে পারে কারিপাতা ভেজানো জল। আসলে এই পানীয়ে মজুত রয়েছে অত্যন্ত উপকারী কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কিনা একাধিক ছোট-বড় সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করার কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই নীরোগ জীবন কাটানোর ইচ্ছে থাকলে এই পানীয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নিতে দেরি করবেন না যেন।
৩. সব ক্রনিক রোগ থাকবে দূরেঃ জানলে অবাক হবেন, এই পানীয় হল অত্যন্ত উপকারী কিছু অ্যালকালয়েড, গ্লাইকোসাইডস এবং ফেনোলিক কম্পাউন্ডের ভাণ্ডার। আর এইসব উপাদান কিন্তু দেহের প্রদাহ প্রশমিত করার কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই তো নিয়মিত এই পাতা ভেজানো জল গলায় ঢাললে ক্যানসার সহ একাধিক জটিল ক্রনিক রোগের ফাঁদ এড়ানো যাবে। আর এই কারণেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ প্রতিদিন কারিপাতা ভেজানো জলপান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
৪. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রনে থাকেঃ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে বশে রাখতে চাইলে নিয়মিত কারিপাতা ভেজানো জল সেবন করতেই হবে। কারণ এই পাতায় রয়েছে এমন কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কিনা লিপিডকে স্বাভাবিকের গণ্ডিতে টেনে আনতে একাই একশো।। আর কোলেস্টেরল কন্ট্রোলে থাকলে যে খুব সহজেই হার্টের রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে, তা তো বলাই বাহুল্য! তাই এবার থেকে রোজ সকালে এই পানীয়ের গ্লাসে চুমুক দিন। আশা করছি, তাতেই শুধরে যাবে হার্টের স্বাস্থ্যের হাল।
৫. লিভারকে সুস্থ রাখেঃ সুস্থ-সবলভাবে বাঁচতে গেলে লিভার সুস্থ থাকা খুবই জরুরি। তবে অত্যধিক বাইরের খাবার খাওয়া, অনিয়মিত জীবনযাপন এবং আরও অনেক কারণে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লিভার ভালো রাখতে কারিপাতার জুড়ি মেলা ভার। কারিপাতায় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে ভরপুর পরিমাণে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট লিভারের ক্ষতি হতে দেয় না। এ ছাড়া, লিভারকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকেও বাঁচায় কারিপাতা।
৬. পেটের সমস্যা দূর করেঃ কারিপাতা ভেজানো জল খেলে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ফিরতে সময় লাগবে না। এমনকী এই পানীয়ের গুণেই পাকস্থলীতে হজমে সাহায্যকারী উৎসেচকের ক্ষরণও বাড়বে। তাই নিয়মিত গ্যাস, অ্যাসিডিটি, বদহজম বা অন্য কোনও ধরনের পেটের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা আর দেরি না করে কাল সকাল থেকেই এই পানীয়ের শরণাপন্ন হন। হলফ করে বলতে পারি, কিছুদিনের মধ্যেই আপনি একদম চাঙ্গা হয়ে উঠবেন।
৭. দুশ্চিন্তা দূর করেঃ সারাদিন ধরে দুশ্চিন্তা করার খারাপ অভ্যেস রয়েছে নাকি? তাহলে রোজ সকালে উঠে কারিপাতা ভেজানো জলের গ্লাসে চুমুক দিন। এতেই চটজলদি পাবেন উপকার। এইটুকু কাজ করলেই স্ট্রেস তো দূরে থাকবেই, সেই সঙ্গে ভয়, উৎকণ্ঠার মতো মানসিক সমস্যারও ফাঁদ কাটিয়েও চলতে পারবেন। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই পানীয়কে আপনার ডায়েটে জায়গা করে দিতেই হবে। আর তাতেই আপনি হেসে-খেলে জীবন কাটানোর পথে আরও এক পা এগিয়ে যাবেন।
কারি পাতা চেনার উপায়
কারি পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন অনেকে। মানবস্বাস্থেও জন্য
দারুন উপকারী কারি পাতা। খাবারের স্বাদ বাড়াতে ব্যপক ভাবে পরিচিত এ
পাতা। রান্নায় ব্যবহৃত অপরিহার্য একটি উপাদান। ভারতে এ পাতা খুবই
পরিচিত হলেও বাংলাদেশে প্রায় অনেকের এ পাতার সম্পর্কে জানা নেই। তাই অনেকেই
প্রশ্ন করে থাকেন কারি পাতা চেনার উপায় কি। তো চলুন নিচের আলোচনা থেকে জেনে
নিন কারি পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে।
কারি পাতা সাধারনত রান্নার রুচি বাড়াতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে এ পাতার অনেক
স্বাস্থ উপকারী গুন থাকার কারনে অনেকেই এ পাতা খেতে চাই। অনেকেই নিম পাতাকে
কারি পাতা ভাবে, তবে নিম পাতা এবং কারি পাতা একই নয়। তবে কারি পাতা অনেকটাই
দেখতে নিম পাতার মতোই। কারি পাতা স্বাদে মিষ্টি ও এর ঝাঁঝালো গন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে নিম পাতা স্বাদে তেতো।
কারি গাছের উচ্চতা মাঝারি, প্রায় পাঁচ থেকে ছয় মিটার উঁচু হয়ে থাকে। কারি
পাতার আকার অনেকটাই নিম পাতার মতোই, তবে নিম পাতার থেকে কিছুটা ছোট এবং ঘন
হয়ে থাকে এ পাতা। এ গাছের ফুল সাদা এবং ফল নিম ফলের মতোই দেখতে। তবে নিম ফল
পরিপক্ক হলে এর রঙ সবুজ রয়ে যায়, অন্যদিকে কারি ফল পরিপক্ক হলে সবুজ থেকে লাল
অথবা কালো হতে দেখায়।
চুলের যত্নে কারি পাতার উপকারিতা
চুলের যত্নে কারি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। কারি পাতা
চুলের রঙের উন্নতিতে সাহায্য করে। চুলের তেলে কয়েকটি কারি পাতা যোগ করুন
তারপর তেল ফুটিয়ে নিন এবং মাথার খুলির উপর এটি লাগান। এটি চুলের
স্বাস্থ্যের উন্নতি করবে। কারি পাতা চুলের অকালপক্বতা প্রতিরোধ করে। কারি
পাতা চুলের যত্নের জন্য ভাল কাজ করে। সকালে প্রাতরাশে ক্যারি পাতার পাউডার
খেতে পারেন।
এছাড়া আমলকি, শিকাকাই এবং মেথি ও কারি পাতা চুলের জন্য বেশ উপকারি।
কচি-কারি পাতার পেস্ট আপনার চুলের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল কাজ করে।
মেথি বা মেথি বীজ চুলের উপকারী । এটি আপনার চুলকে একটি দর্শনীয় উজ্জ্বল
করে। জেনে নিন চুলের যত্নে কারি পাতা কি কি উপকার করে সে সম্পর্কেঃ
চুলের ফলিকল উদ্দীপকঃ কারি পাতা চুলের ফলিকলকে উদ্দীপিত করার জন্য
এবং এর ফলে চুলের বৃদ্ধির জন্য বিখ্যাত। এগুলিতে অত্যাবশ্যক পুষ্টি এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা মাথার ত্বকে প্রবেশ করে এবং ভিতরে থেকে
চুলের ফলিকলগুলিকে শক্তিশালী করে। কারি পাতায় বিটা-ক্যারোটিন এবং
প্রোটিনের উপস্থিতি চুল পাতলা হওয়া কমাতে সাহায্য করে এবং চুল পড়া রোধ
করে।
চুলের বৃদ্ধিতেঃ কারি পাতাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি,
বি, প্রোটিন এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যা মাথার ত্বকে লাগালে রক্ত সঞ্চালন
বৃদ্ধি পায়। এর ফলে নতুন চুল গজায়। আমলকি, মেথি এবং কারি পাতা সমপরিমাণে
বেটে মাথার তালুতে লাগিয়ে রাখুন প্রায় ৩০-৪৫ মিনিট। এরপর অল্প গরম পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুইদিন এই হেয়ার প্যাক ব্যবহার করলে নতুন
চুল গজাবে।
মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেঃ স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধি
একটি স্বাস্থ্যকর মাথার ত্বক দিয়ে শুরু হয়। কারি পাতা অ্যান্টিফাঙ্গাল,
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি প্রদর্শন
করে যা একটি পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর মাথার ত্বকের পরিবেশ বজায় রাখতে
সহায়তা করে। ত্বকের মৃত কোষ অপসারণ করে, লোমকূপগুলিকে বন্ধ করে এবং রক্ত
সঞ্চালনের উন্নতি করে, কারি পাতা চুলের বৃদ্ধির জন্য একটি অনুকূল
পরিবেশ তৈরি করে।
চুলের ঘনত্ব বাড়ায়ঃ কারি পাতার অ্যামিনো অ্যাসিড এবং প্রয়োজনীয়
পুষ্টি কেরাটিনের জন্য প্রয়োজনীয় বিল্ডিং ব্লক সরবরাহ করে, প্রোটিন যা
চুল তৈরি করে। কারি পাতার নিয়মিত ব্যবহারের ফলে চুল ঘন, মজবুত এবং আরও
স্থিতিস্থাপক হতে পারে।
অকাল পক্কতার বিরুদ্ধে লড়াই করেঃ চুলের অকাল পাকা হওয়া একটি
সাধারণ উদ্বেগ যা কারি পাতা দিয়ে প্রশমিত করা যায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
এবং বি ভিটামিন সমৃদ্ধ, কারি পাতা চুলের প্রাকৃতিক রঙ্গক পুনরুদ্ধার করতে
সাহায্য করে। তারা চুলের শিকড়কে শক্তিশালী করে এবং চুলের রঙের জন্য
দায়ী মেলানিনের ক্ষয় রোধ করে কাজ করে।
চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়ঃ কারি পাতায় প্রয়োজনীয় তেল এবং
পুষ্টির উচ্চ ঘনত্ব চুলের কিউটিকল সিল করতে সাহায্য করে, যার ফলে চুল
মসৃণ এবং ঝলমলে হয়। কারি পাতার পেস্ট বা তেলের নিয়মিত প্রয়োগ চুলের
সামগ্রিক দীপ্তি এবং চেহারা বাড়াতে পারে।
চুল ভেঙ্গে যাওয়া রোধেঃ কারি পাতা পুষ্টির একটি চমৎকার উৎস যা
চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত মজবুত করে। কারি পাতার প্রোটিন এবং
বিটা-ক্যারোটিন চুলের ভাঙ্গা এবং বিভক্ত হওয়া কমাতে সাহায্য করে,
স্বাস্থ্যকর এবং আরও স্থিতিস্থাপক চুল নিশ্চিত করে।
চুলে পুষ্টি যোগায়ঃ কারি পাতা একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ চুলের চিকিৎসা।
তাদের উচ্চ ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান চুল এবং মাথার ত্বকে পুষ্টি যোগায়,
চুলের সমস্যা হতে পারে এমন ঘাটতিগুলি পূরণ করে। কারি পাতার নিয়মিত
ব্যবহার চুলকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি দিয়ে পূরণ করতে পারে, চুলের সামগ্রিক
স্বাস্থ্যের প্রচার করে।
স্ক্যাল্পে পিএইচ ব্যালেন্স করেঃ মাথার ত্বকের সঠিক pH ভারসাম্য
বজায় রাখা স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারি পাতা
মাথার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, খুশকি, চুলকানি
এবং মাথার ত্বকের অন্যান্য অবস্থার ঝুঁকি কমায়। একটি সুষম মাথার ত্বকের
পরিবেশ চুলের যত্নের পণ্যগুলির আরও ভাল শোষণ নিশ্চিত করে।
চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনারঃ কারি পাতা প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে
ব্যবহার করা যেতে পারে চুলকে নরম ও জটমুক্ত করতে। তাদের ময়শ্চারাইজিং
বৈশিষ্ট্যগুলি চুলকে হাইড্রেট করতে সাহায্য করে, এটিকে আরও পরিচালনাযোগ্য
করে তোলে এবং জট ও ঝাপসা হওয়ার ঝুঁকি কম করে।
চুলের গোড়া মজবুত করেঃ চুল পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ হল দুর্বল
চুলের গোড়া। কারি পাতা প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং মাথার ত্বকে
রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে চুলের গোড়াকে মজবুত করে। এর ফলে চুলের গোড়া
মজবুত হয় এবং চুল পড়া কমে যায়।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা মোকাবেলা করেঃ হরমোন ভারসাম্যহীনতা চুল
পড়া এবং অন্যান্য চুল সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে। কারি পাতায় এমন যৌগ
রয়েছে যা হরমোন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, যার ফলে চুল পড়ার মূল
কারণগুলির মধ্যে একটি।
খুশকি দূর করেঃ কারি পাতাতে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে, যা কিনা খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। কারি পাতা বেটে তার সাথে সমপরিমাণ টক দই মিশান। এবার এই মাস্কটি মাথার তালুতে লাগিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসেজ করুন। এরপর অন্তত পক্ষে ত্রিশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। খুশকি দূর করতে যাদুর মত কাজ করবে এই মাস্কটি।
অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্যঃ মাথার ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ
প্রায়শই খুশকির কারণ হয়। কারি পাতার শক্তিশালী অ্যান্টিফাঙ্গাল
বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা খুশকি-সৃষ্টিকারী ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে
সাহায্য করে, যার ফলে চটকানো এবং চুলকানি কম হয়।
মাথার ত্বকের জ্বালা
কারি পাতার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা মাথার ত্বকের
জ্বালা প্রশমিত করে এবং লালভাব এবং চুলকানি কমায়। এটি তাদের সংবেদনশীল
এবং স্ফীত মাথার ত্বকের জন্য একটি কার্যকর প্রতিকার করে তোলে।
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার খুবই কার্যকারী। শরীর স্বাস্থ ভালো রাখার
জন্য আমাদের যেমন শরীরের যত্ন নিতে হয়, তেমনি চুল ভালো রাখতে চাইলে নিতে হবে
চুলের সঠিক যত্ন। কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা, চুলের স্বাস্থকে ভালো
রাখতে সাহায্য করে, তার মধ্যে একটি হলো কারি পাতা। কারি পাতার মধ্যে
অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান প্রচুর পরিমাণে রয়েছে যা
চুল পড়া, চুলে খুশকি প্রতিরোধ ও চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুনঃ বিটরুটের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
এছারাও চুলকে একাধিক সমস্যার হাত থেকে বাঁচায়। তাই চুলের সঠিক যত্ন নিতে
ব্যবহার করতে পারেন কারি পাতা। চুলের যত্নে কারি পাতা খুবই কার্যকারী একটি
পাতা। এ পাতা চুলের স্বাস্থ ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে।
কারি পাতা চুলের যত্নে কি কি উপকার করে এবং কিভাবে এ পাতা ব্যবহার করতে হয়
অনেকের সঠিক নিয়ম জানা নেই। তো চলুন জেনে নিন চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
সম্পর্কে।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url