কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা জানতে আজকের আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হতে পারেন। স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলুদের সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ বায়োঅ্যাকটিভ উপাদানের নাম হলো কারকিউমিন যা কাঁচা হলুদে ৩ শতাংশ
পর্যন্ত থাকে। এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন জটিল রোগে
আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
পেইজ সূচিপত্রঃ কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা
- কাঁচা হলুদের পুষ্টি উপাদান
- সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা
- কাঁচা হলুদ যাদের জন্য ক্ষতিকর
- হলুদ ও দুধ খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় হলুদ ও দুধ পান করার উপকারিতা
- হলুদ দুধ তৈরি করার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় হলুদ ও দুধ খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- কাঁচা হলুদের ঐতিহ্যগত ব্যবহার
- কাঁচা হলুদ খাওয়ার অপকারিতা
- ত্বকে কাঁচা হলুদ ব্যবহারের উপকারিতা
- রুপচর্চায় কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক
- কাঁচা হলুদ নিয়ে কিছু প্রচলিত প্রশ্ন
- কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে শেষকথা
কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা
কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা প্রচুর। কাঁচা হলুদে অ্যান্টি–ইনফ্লামেশন,
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও কার্কুমিন
উপাদান আছে, যা আমাদের শরীরের অনেক সমস্যার সমাধান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রাখে, বিশেষ করে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন এমন রোগের ক্ষেত্রে। এই কার্কুমিন
একাই একশোর বেশি রোগ সারাতে পারে। কার্কিউমিন তার প্রদাহ বিরোধী,
অ্যান্টিটিউমার এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট প্রভাবগুলোর জন্য পরিচিত।
সেই সঙ্গে হলুদে মজুত রয়েছে অ্যান্টি ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক
প্রপাটিজও, যা নানাভাবে শরীরকে মজবুত রাখতে এবং কঠিন থেকে কঠিনতর
রোগ-ব্যাধিকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। চলুন তাহলে দেরী না করে
কাঁচা হলুদ খাওয়ার কিছু উপকাররিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
প্রদাহ থেকে মুক্তি মিলেঃ প্রদাহের মতো জটিল সমস্যার বিরুদ্ধে
প্রথমেই ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তী সময়ে তা ভয়ানক হতে সময় লাগবে না। এমনকি এ
কারণে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে একাধিক ক্রনিক রোগ। তাই চিকিৎসকরা প্রদাহ
প্রশমিত করতে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কাঁচা হলুদের
মূল উপাদান কারকিউমিন, যা প্রদাহ প্রশমিত করার কাজে ভীষণ উপকারী।
ক্ষতিকর পদার্থ বেরিয়ে যেতে সাহায্য করেঃ বিপাকের পরে আমাদের
শরীরে তৈরি হয় একাধিক ক্ষতিকর পদার্থ। আর এই পদার্থগুলো শরীর থেকে বেরিয়ে
না যেতে পারলে একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কাঁচা হলুদ শরীরের
অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কাটানোর কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই
প্রাকৃতিক উপাদান রোজ এক টুকরো খেয়ে নিলেই ক্ষতিকর ফ্রি ব়্যাডিকেলস
নিউট্রিলাইজ করা সম্ভব হবে। তাই সুস্থ থাকতে কাল থেকেই কাঁচা হলুদ খান।
হার্ট ভালো রাখেঃ এখন তো কম বয়সেই অনেকে হার্টের জটিল রোগে
আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। তাই চিকিৎসকরা সবাইকে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের দিকে
নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। আপনার হাতের কাছে উপস্থিত এক টুকরো কাঁচা
হলুদই হার্টের খেয়াল রাখার কাজে একাই এক শ। এতে উপস্থিত কারকিউমিন নামক
উপাদান হার্টের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারে। তাই হার্ট অ্যাটাকের ফাঁদ এড়াতে
চাইলে প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়া আবশ্যক।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী
একটি রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে কাঁচা হলুদ। কাঁচা হলুদে এমন কিছু
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ক্যান্সার সেলের বৃদ্ধি আটকে দিতে
পারে। হলুদের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রক্তকণিকাকে নিরাপদ রাখে, ফলে স্তন
ক্যানসার, পাকস্থলী, কোলন ও ত্বকের ক্যানসার তৈরি হতে পারে
না। তাই এই মারণরোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচতে কাঁচা হলুদ খাওয়ার
অভ্যাস করুন।
আলঝেইমার প্রতিরোধ করেঃ আলঝেইমার একটি জটিল অসুখ। এই রোগে
আক্রান্ত রোগীর স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। তিনি সব কিছু ভুলতে শুরু
করেন। এই জটিল অসুখ প্রতিরোধের কাজেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
কাঁচা হলুদ। তাই প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খাওয়ার অভ্যাস করুন।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করেঃ রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে
রাখতে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো হলুদ। নিয়মিত সকালে উঠে কাঁচা
হলুদ খেলে দেহের অন্দরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে,
যার প্রভাবে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা
নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগই পায় না। তাই বলা যেতে পারে ডাইবেটিসের
মতো মারণ রোগে আক্রান্ত যদি হতে না চান, তাহলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে
অবশ্যই কাঁচা হলুদ খেতে হবে।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ বর্তমান সময়ে দেহের অতিরিক্ত ওজন
নিয়ে আমাদের অনেকেই সমস্যায় রয়েছেন। তবে একটা সামান্য উপাদান দৈনন্দিন
গ্রহণের ফলে আপনি আপনার ওজন কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। কাঁচা হলুদের
মধ্যে থাকা উপাদান গুলো শরীরে বাড়তি মেদ জমতে দেয় না। এবং দেহের
মেটাপলিজমের হাড় বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে শরীরে বাড়তি মেদ জমার সম্ভাবনাকে
কমিয়ে দেয়। হলুদের মধ্যে থাকা কার কিউমিন শরীরে ফ্যাট সংরক্ষণকারী
কোষগুলি উৎপাদনে বাঁধা সৃষ্টি করে এবং বিপাকীয় প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ
করতে পারে।
আর্থ্রাইটিসের ব্যথা হ্রাস করেঃ হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি
উপাদান থাকে। আর্থ্রাইটিসের কবল থেকে এই উপাদান রক্ষা করে। হাড়ের কোষকে
সুরক্ষা দেয়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে নড়াচড়ার অসুবিধা দূর করে।
ক্ষত সারাতে সহায়তা করেঃ কাঁচা হলুদে উপস্থিত কার্কিউমিন এবং
আরও নানা সব অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যে কোনো ধরনের ক্ষতের যন্ত্রণা
কমায়। এটা আঘাত সারাতেও দারুণভাবে কাজ করে। এ কারণেই তো ছোট বাচ্চাদের
নিয়মিত কাঁচা হলুদ খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। এছাড়া
ক্ষতস্থানে অল্প পরিমাণে হলুদ বেঁটে লাগিয়ে দিলেও কিন্তু সমান উপকার পাওয়া
যায়।
পিরিয়ডের সমস্যা দূর করেঃ অনিয়মিত মাসিক রোধ, হরমোনের মাত্রা
নিয়ন্ত্রণ–বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে হলুদের কারকিউমিন। এই উপাদান পিরিয়ডের আগে
ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে থাকে।
মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত সমস্যা রোধ করেঃ হলুদে থাকা
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান পার্কিনসনস, আলঝেইমার, টিস্যুর স্থবিরতার মতো
অসুস্থতা রোধে সক্ষম। এটি আমাদের মস্তিষ্কে তথ্য আদান-প্রদানের পরিমাণ
বাড়ায়। হতাশার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
যকৃৎ সুরক্ষিত রাখেঃ হলুদ যকৃতের নানান রোগের প্রতিষেধক হিসেবে
কাজ করে। লিভারের বহুবৃদ্ধি, হেপাটাইটিস, সিরোসিস, গলব্লাডারের মতো সমস্যা
তৈরিতে বাধা দেয়।
মাথা যন্ত্রণা সারায়ঃ এবার থেকে মাথা যন্ত্রণা হলেই এক কাপ
হলুদ মেশানো দুধ খেয়ে নেবেন। দেখবেন কষ্ট কমে গেছে। হলুদের অন্দরে থাকা
কার্কিউমিন এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি উপাদান শরীরের অন্দরে প্রদাহ কমায়।
ফলে মাথা যন্ত্রণা কমতে সময় লাগে না।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়ঃ নিয়মিত হলুদ খাওয়া শুরু করলে হজমে সহায়ক
পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে বদহজমের আশঙ্কা যেমন কমে। সেই সঙ্গে
গ্যাস-অম্বল এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন
করে থাকে।
বাতের ব্যথা কমায় হলুদঃ যেকোনো ধরনের ব্যথা কমাতে হলুদের
ব্যবহার খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে বাতের ব্যথা, হাঁটুর ব্যথা, যেকোনো
ধরনের পেশী ব্যথাগুলোর ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টিইমফ্লেমেটরি উপাদান গুলো শরীরের ভেতর থেকে ব্যথা
নিরাময় সহায়ক করে।
মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়ঃ কাঁচা হলুদ মস্তিষ্কের ক্ষমতা
বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত কাঁচা হলুদ খেলে
অ্যালঝাইমার্স, ডিমেনশিয়া-সহ মস্তিষ্কের বেশ কিছু সমস্যা কয়েক হাত দূরে
চলে যায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মস্তিষ্কে যে সমস্যাগুলি দেখা
দেয়, তা দূরে সরিয়ে রেখে ব্রেনকে আরও সজাগ করে তোলে কাঁচা হলুদ।
বয়সজনিত নানা রোগের প্রকোপ কমায়ঃ আর্থারাইটিসের সমস্যা
থাকলে কাঁচা হলুদ খান। উপকার পাবেন। শুধু তাই নয়, খালি পেটে নিয়মিত
হলুদ খেলে অল্প বয়সে বুড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে। বয়সজনিত নানা
সমস্যা দূরে রাখতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই রোজ
খালি পেটে কাঁচা হলুদ খান আর দূরে রাখুন সব শারীরিক সমস্যা।
সর্দি কাশি নিরাময় করে হলুদঃ বর্তমানে ঋতু পরিবর্তনের সময়
একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হল সর্দি কাশি। ছোট থেকে বড় প্রায় সব ঘরেই এই
সমস্যা লেগেই রয়েছে। কারো কারো আবার এলার্জির কারণে বা জ্বরের মতো
সমস্যা হয়ে থাকে। এই সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায় হলুদের
সহায়তায়। হলুদ সর্দি-কাশি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া কাঁচা হলুদ
অনকর্মতা দূর করতে সাহায্য করে। কাঁচা হলুদে থাকা ভিটামিন সি সর্দি কাশির
মতো সমস্যা গুলিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কাঁচা হলুদের পুষ্টি উপাদান
কাঁচা হলুদের পুষ্টি উপাদান ব্যপক।হলুদ কিছু নির্দিষ্ট বায়ো–অ্যাক্টিভ
যৌগ সমন্বিত, যেমন কারকিউমিন যা হলুদের মধ্যে তার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং
প্রদাহ–বিরোধী বৈশিষ্ট্যাবলী প্রদান করে। এছাড়াও এটি ম্যাঙ্গানিজ,
পটাশিয়াম, এবং আয়রনের মত কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজেও সমৃদ্ধ। উপরন্তু হলুদ
আবার ভিটামিন B6 এবং ভিটামিন C এর মত কিছু অপরিহার্য ভিটামিনের এক
দুর্দান্ত উৎস।
ফাইবার বা তন্তু সমৃদ্ধ হওয়ায় হলুদ আবার একটি অত্যন্ত কার্যকর ঔষধি গুণ
যুক্ত মশলায় পরিণত হয়েছে। তাছাড়াও এটি হজম এবং লিভার বা যকৃতের
কার্যক্ষমতার উন্নতি ঘটানো, নিয়মিত অন্ত্রের গতিবিধির সহজীকরণ, রক্তজমা
লাঘব করা ইত্যাদির মত অগণিত স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলি সরবরাহ করে। কাঁচা
হলুদ একটি ঔষধি গুণসমৃদ্ধ মশলা যা বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা হলুদে আপনি পাবেন
ভিটামিন সিঃ 53 মিলিগ্রাম (আপনার দৈনন্দিন চাহিদার 88%)
ম্যাঙ্গানিজ: 2.86 মিলিগ্রাম (আপনার দৈনন্দিন চাহিদার 143%)
লোহা: 0.58 মিলিগ্রাম (আপনার দৈনন্দিন চাহিদার 32%)
পটাশিয়াম: 422 মিলিগ্রাম (আপনার দৈনন্দিন চাহিদার 12%)
ভিটামিন বি6: 0.154 মিলিগ্রাম (আপনার দৈনন্দিন চাহিদার 12%)
ম্যাগনেসিয়াম: 24 মিলিগ্রাম (আপনার দৈনন্দিন চাহিদার 6%)
ফাইবার: 3.1 গ্রাম (আপনার দৈনন্দিন চাহিদার 12%)
এছাড়াও কাঁচা হলুদে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে:
কার্কিউমিন: এটি হলুদের সক্রিয় উপাদান যা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণসম্পন্ন।
টারমেরিক: এটি হলুদের আরেকটি সক্রিয় উপাদান যা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি
এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণসম্পন্ন।
থায়ামিন: এটি শরীরের শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।
রিবোফ্লাভিন: এটি ত্বক, চুল এবং চোখের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
নিয়াসিন: এটি শরীরের শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।
ফোলেট: এটি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা কথা জানতে চেয়েছেন অনেকে।
স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হলুদ উপকারী একটি উপাদান। বিশেষ করে সকালে উঠে
খালি পেটে একটুখানি কাঁচা হলুদ নানা রকম রোগ থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম।
রোজ ২৫০ মিলিগ্রাম হলুদই যথেষ্ট। সকালে ও রাতে দুই বেলায় ২৫০ মিলিগ্রাম
করে হলুদ খাওয়া যেতে পারে। সকালে খালি পেটে হলুদ খাওয়ার পর আধ ঘণ্টা
কিছু না খাওয়াই উচিত। তবে খেয়াল রাখবেন এর থেকে বেশি পরিমাণে হলুদ
খাবেন না যেন, তাতে ক্ষতি হতে পারে।
১. শরীর সুস্থ রাখতে এক কুঁচি কাঁচা হলুদের কোনও বিকল্প হয় না। সকালে
খালি পেটে খেলে রক্ত পরিষ্কার থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
২. কাঁচা হলুদ হজমশক্তি বাড়িয়ে খাবার পরিপাকে সাহায্য করে।
৩. কাঁচা হলুদের প্রধান উপাদান কারকিউমিন হাড়ের ক্ষয়কে রোধ করে।
৪. ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকায় কাঁচা হলুদ বিভিন্ন
ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
৫. রক্তে শর্করার মাত্রাকে ঠিক রাখতে এবং ইনসুলিন হরমোনের ক্রিয়াকে
সর্বতোভাবে সাহায্য করে কাঁচা হলুদ।
৬. হলুদে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল উপাদান দাঁতকে জীবাণু সংক্রমণ
থেকে মুক্ত রাখে। দাঁতের মাড়িকে মজবুত করে তোলে।
৭. হলুদে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে। রক্তে আয়রনের পরিমাণ হ্রাস পেলে,
তা বৃদ্ধি করতে হলুদ কার্যকর।
৮. দীর্ঘদিনের কোলেস্টরলের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করবে
কাঁচা হলুদ।
কাঁচা হলুদ যাদের জন্য ক্ষতিকর
হলুদে রয়েছে কারকিউমিন নামক এক পলিফেনল যৌগ। যেটা এক ধরনের
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এই পলিফেনল যৌগটি শরীরের রোগ-প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়িয়ে বিভিন্ন অসুস্থতা থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।
ভেষজ ওষুধ হিসেবে হলুদ খুবই জনপ্রিয়। সাধারণত কাঁচা হলুদের ঔষধি
গুণই বেশি। কিন্তু ঔষধি গুনে ভরপুর এই ভেষজ উপাদানটি কিছু কিছু
ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক কাঁচা
হলুদ কাদের জন্য ক্ষতিকর
হজমের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেনঃ যাঁদের হজমের সমস্যা
আছে, তাঁরা সতর্কতার সঙ্গে খাবেন। কারণ, হলুদে রয়েছে পলিফেনলস বা
কারকিউমিন নামক উপাদান। ফলে এটি সহজে হজম হয় না। তবে সঙ্গে
গোলমরিচ ব্যবহার করলে হজমপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।
গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়াতে হলুদ বেশ উপকারী। গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীর ক্ষেত্রে
রান্নায় থাকা হলুদ নিরাপদ। কারণ রান্নার পর তাতে ‘কারকিউমিন’য়ের
মাত্রা অনেকটাই কমে যায়। তবে আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে এসময় হলুদ
গ্রহণ করা ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ হলুদ ঋতুস্রাব শুরু হতে সহায়ক এবং
জরায়ুকে উত্তেজিত করে। দুটাই গর্ভাবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ।
অ্যান্টিক্যানসার ওষুধ খাচ্ছেন যারাঃ হলুদ ক্যানসার
নিরাময়ে যেমন সাহায্য করে, ঠিক তেমনি অ্যান্টিক্যানসারের কিছু
ওষুধ আছে হলুদ সেবনের ফলে সেগুলোর কার্যকারিতা কমে যায়। তাই
অ্যান্টিক্যানসার ওষুধ সেবনকারী কাঁচা হলুদ সেবন করতে চাইলে
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে।
রক্ত শূণ্যতায় ভুগলেঃ শরীরে পর্যাপ্ত আয়রনের অভাবে
অ্যানেমিয়া বা রক্ত শূন্যতা দেখা দেয়। মূলত শরীর যখন পর্যাপ্ত
লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে পারে না কিংবা যতটুকু তৈরি করে তার
থেকে বেশি পরিমাণে হারায় বা ধ্বংস হয়ে যায় সেই অবস্থাকেই
‘অ্যানেমিয়া’ বলা হয়। এসময় উচ্চমাত্রায় হলুদ গ্রহণ করলে শরীরের
আয়রন বা লৌহ শোষণ করার ক্ষমতা কমে যাবে। যা ‘অ্যানেমিয়া’য়ের
তীব্রতা আরও বাড়াবে।
রক্ত ক্ষরণের সমস্যা থাকলেঃ যাদের ক্রমাগত রক্ত ক্ষরণের
সমস্যা আছে, রক্ত পাতলা করার জন্য ওষুধ খেতে হয়, নাক দিয়ে রক্ত
পড়ে, তাদের প্রত্যেকের হলুদ খাওয়ায় সাবধান হতে হবে। অতিরিক্ত
গ্রহণ করে ফেললে রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা হারাতে পারে। যা
পক্ষান্তরে যে কোনো রক্তপাত বন্ধ করাকে জটিল করে তুলবে।
যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেনঃ একজন ডায়াবেটিস রোগীকে তার
খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর রেখে যেতে হয় বাকি জীবনটা। রক্তে শর্করার
মাত্রা তাদের বেশি হওয়া যাবে না, কমলেও বিপদ।অপরদিকে ‘কারকিউমিন’
রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। তাই সতর্ক না থাকলে হলুদের কারণে
রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত কমে গিয়ে মারাত্বক বিপদ হতে পারে।
অ্যান্টিডায়াবেটিক ওষুধ সেবন করছেন যারাঃ কাঁচা হলুদ কিছু
মুখে খাওয়ার অ্যান্টিডায়াবেটিক ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস করে।
তাই ডায়াবেটিক রোগীদের হলুদ গ্রহণের আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ
করে খেতে হবে।
অল্প কিছুদিনের মধ্যে যারা সন্তান নিতে চানঃ কাঁচা হলুদ
টেস্টোস্টেরন হরমান কমায় সঙ্গে সঙ্গে শুক্রাণুকে অচল করে দেয়।
অল্প দিনের মধ্যে যাঁরা বাচ্চা নিতে চাচ্ছেন, তাঁদের কাঁচা হলুদ
সেবন করা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।
২ সপ্তাহের মধ্যে যারা কোন অপারেশন করবেনঃ হলুদ রক্ত
জমাটবাঁধার যে স্বাভাবিক প্রবণতা, তা হ্রাস করে। ফলে ২ সপ্তাহের
মধ্যে যাঁরা অপারেশন করবেন, হলুদ গ্রহণের ফলে অপারেশনে তাঁদের
অধিক রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। একই কারণে যাঁরা রক্ত পাতলা
করার ওষুধ খান, তাঁরাও কাঁচা হলুদ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
যাঁরা ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করেনঃ হলুদ তার
অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ক্ষমতার জন্য
কাঁটা স্থান ও ক্ষতস্থানের ব্যথা উপশম করে। আবার বিভিন্ন ব্যথার
ওষুধের কার্যকারিতাও হ্রাস করে।
লিভার সমস্যায় আক্রান্ত রোগীঃ কাঁচা হলুদ সহজে হজম হতে
চায় না। আর যেহেতু লিভার সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর হজমের জন্য যে
এনজাইম দরকার, তার স্বল্পতা থাকে তাই এ ধরনের রোগীদের কাঁচা হলুদ
সেবন থেকে বিরত থাকাই উচিত। কিন্তু যাঁদের লিভারে চর্বি জমেছে,
তাঁরা হলুদ খেতে পারবেন; কারণ, হলুদ চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
স্তন, জরায়ুর ক্যানসারে যাঁরা ভুগছেনঃ হরমোনের সঙ্গে
সম্পর্কিত কিছু ক্যানসার যেমন স্তন, জরায়ুর ক্যানসারে হলুদ খাওয়া
থেকে বিরত থাকবেন।
বৃ্ক্কে পাথরঃ সাধারণত বিভিন্ন খনিজ আর লবণ জমেই বৃক্কে
পাথর সৃষ্টি হয়। এদের মধ্যে সবচাইতে বেশি যে খনিজটি মেলে তা হল
‘ক্যালসিয়াম অক্সালেট’।হলুদে ‘অক্সালেট’ থাকে উচ্চমাত্রায়, যা
ক্যালসিয়ামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বৃক্কে পাথর তৈরি করতে সহায়ক
ভূমিকা রাখে। তাই যাদের বৃক্কে পাথর আছে বা আগে ছিল, তাদের এই
মসলাটি অল্প পরিমাণে খেতে হবে।
দৈনিক এক গ্রাম হলুদ গ্রহণ করা যায়। আমরা মসলা হিসেবে যে হলুদ
ব্যবহার করে থাকি, দৈনিক চাহিদার তুলনায় তা অনেক কম। কাঁচা
হলুদের অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট,
স্মৃতিবর্ধকসহ আরও নানাবিধ গুণাবলি আছে। তবে মসলা ছাড়াও অতিরিক্ত
হলুদ খাওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
হলুদ ও দুধ খাওয়ার উপকারিতা
হলুদ ও দুধ খাওয়ার উপকারিতা প্রচুর। দুধ অনেকেই রোজ খেয়ে থাকেন। তবে মাথায় রাখতে হবে যে দুধ ও হলুদ মিশে গেলে শরীরের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী হয়ে ওঠে। এটা নানা রোগ থেকে আমাদের বাঁচাতে পারে। আপনি যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে চান তাহলে হলুদ ও দুধের বিকল্প কিছু হতে পারে না। কিন্তু জানেন কি এক গ্লাস হলুদমিশ্রিত গরম দুধ স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারি। ঔষধি গুণাগুণসম্পন্ন হলুদ দুধের সঙ্গে মেশালে এর গুণাগুণ বেড়ে যায় অনেক বেশি।
প্রাচীনকাল থেকেই হলুদমিশ্রিত দুধ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-কাশি, ঠাণ্ডা লাগা, শারীরিক ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে এক গ্লাস হলুদমিশ্রিত দুধ হতে পারে প্রাকৃতিক সমাধান। এছাড়া যেকোন ধরনের সংক্রমণ সারাতেও হলুদ মিশ্রিত দুধ বেশ উপকারী। দেরি না করে জেনে নিন হলুদ মিশ্রিত দুধ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কেঃ
ঘুমের সমস্যা দূর করেঃ যাদের ইনসমনিয়া অথবা ঘুমের
সমস্যা আছে তারা হলুদমিশ্রিত দুধ পান করতে পারেন। হলুদের দুধ
আপনার মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে, স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে এবং
ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে। মনে করা হয় যে মস্তিষ্কের
কার্যক্ষমতার ওপরও হলুদের প্রভাব রয়েছে। রাতে যাদের ঘুমের
সমস্যা রয়েছে হলুদের দুধ পান তাদের জন্য খুব উপকারী।
ত্বকে বয়সের ছাপ কমায়ঃ প্রতিদিন নিয়মিত হলুদমিশ্রিত দুধ
পান করলে ত্বক সুন্দর থাকে। সতেজ টানটান ত্বক পেতে ও ত্বকে
বয়সের ছাপ পড়া ঠেকাতে হলুদ-দুধ খুব উপকারী। পাশপাশি এটি ব্রণ
নিরাময় করতে পারে। গুঁড়া হলুদ সরাসরি ত্বকে লাগালেও ভালো ফল
পাওয়া যায়। এছাড়া হলুদের দুধ হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে
সহায়তা করে। অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা থাকা মহিলাদের জন্য এটি
বেশ কার্যকর।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ যারা ওজন নিয়ে চিন্তিত এবং ওজন
কমাতে চান তারা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পান করতে পারেন এক
গ্লাস গরম গরম হলুদমিশ্রিত দুধ। এটি দেহের অতিরিক্ত চর্বি দূর
করে ওজন কমাতে সাহায্য করে। হলুদে থার্মোজেনিক নামে এক ধরনের
উপাদান থাকে যা শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। সেই
সঙ্গে ক্যালরিও কমায়। হলুদে রয়েছে ফাইবার, যা শরীরের অতিরিক্ত
মেদ ঝরাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। আবার দুধে থাকা প্রোটিন এবং
ক্যালশিয়াম একদিকে যেমন শরীরে পুষ্টিবৃদ্ধি করে অন্যদিকে মেদ
ঝরিয়ে শরীরকে রাখে সুস্থ ও কর্মক্ষম।
ব্যথা দূর করেঃ এক গ্লাস হলুদ মেশানো দুধ পান করলে
যেকোনো ধরনের মাথাব্যথা উপসম হয়। এটি আর্থাইটিসের ব্যথা কমাতেও
সাহায্য করে। অনেকের দুধ খেলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। হলুদ
আর দুধ একসঙ্গে খেলে গ্যাসের সমস্যা অনেকাংশে দূর হয়ে যায়।
শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবও দূর হয়। এছাড়া মাংসপেশির
নমনীয়তাও বাড়ায় এটি।
আঘাত ও রোগবালাই নিরাময় করেঃ দেহের বাইরের বা
অভ্যন্তরীণ অংশে কোনো আঘাত থাকলে, হলুদমিশ্রিত দুধ পান করলে
এটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিরাময়ে সহায়তা করে। কারণ হলুদ দুধ
অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্যের কারণে
ব্যাকটিরিয়াকে বাড়তে দেয় না।
রক্ত পরিশোধন করে ও লিভার সুস্থ রাখেঃ হলুদমিশ্রিত
দুধের আয়ুর্বেদিক উপাদান প্রাকৃতিকভাবে রক্ত পরিশোধনে সহায়তা
করে। রক্ত সঞ্চালনেও সাহায্য করে হলুদমিশ্রিত দুধ। এছাড়া
নিয়মিত হলুদমিশ্রিত দুধ পান করলে সুস্থ থাকে লিভার। আর
হলুদমিশ্রিত দুধে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়ের শক্তি বাড়াতে সাহায্য
করে। পাশাপাশি হজমের গণ্ডগোল দূর করে দ্রুত হজমে সহায়তা করে
এটি।
মস্তিষ্কের কার্য-ক্ষমতা বাড়ায়ঃ নিয়মিত হলুদ মেশানো দুধ
খেলে কারকিউমিনের প্রভাবে শরীরে ‘বিডিএনএফ’ নামে এক রাসায়নিকের
পরিমাণ বাড়ে। এই যৌগ অ্যালঝাইমার্স রোগের ঝুঁকি কমায়।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
সর্দি-কাশির প্রাকৃতিক সমাধানঃ শীতকালীন আবহাওয়ায় ঘরে
ঘরে সর্দি-কাশি লেগেই আছে। গরম দুধে এক চামচ হলুদ গুলে খেলেই
হবে সমস্যার সমাধান। তাই টানা কাশির হাত থেকে রেহাই পেতে রোজ
রাতে ঘুমোনোর আগে গরম দুধে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে সন্তানকে খাওয়ালে
ঠান্ডা থেকে দূরে রাখা যাবে। এ ছাড়া বড়রাও এই পানীয় খেলে উপকার
পাবেন।
হজমের জন্য হলুদ দুধের উপকারিতাঃ হলুদ দুধের উষ্ণতা
বৈশিষ্ট্য হজমের সমস্যাগুলিকে প্রশমিত করতে সাহায্য করতে পারে
যেমন bloating, বদহজমএবং পেটে অস্বস্তি। এটি স্বাস্থ্যকর
অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াকেও উন্নীত করতে পারে, সামগ্রিক হজমের
সুস্থতায় অবদান রাখে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যঃ কারকিউমিনের শক্তিশালী
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীরের ফ্রি
র্যাডিকেলগুলিকে নিরপেক্ষ করে। এই র্যাডিকালগুলি অক্সিডেটিভ
স্ট্রেস সৃষ্টি করতে পারে এবং বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগের জন্য
দায়ী। হলুদের দুধ পান করা কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে এবং
সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যঃ বিজ্ঞানীরা কারকিউমিন এর সম্ভাব্য
নিউরোপ্রোটেক্টিভ প্রভাবের জন্য গবেষণা করেছেন, যা জ্ঞানীয়
কার্যকারিতা সমর্থন করতে পারে এবং সম্ভাব্যভাবে নিউরোডিজেনারেটিভ
রোগের সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে।
হলুদ দুধের ত্বকের উপকারিতাঃ হলুদ দুধের
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলি
স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল ত্বকে অবদান রাখতে পারে। এটি দাগ কমাতে,
ত্বকের রঙ উন্নত করতে এবং একজিমা এবং সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের
বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
শ্বাসযন্ত্রের সহায়তা করেঃ হলুদ দুধ হাঁপানি,
ব্রঙ্কাইটিস এবং শ্বাসযন্ত্রের সমস্যাগুলির জন্য উপশম দিতে পারে
কাশি. এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি স্ফীত
শ্বাসনালীগুলিকে প্রশমিত করতে এবং সহজে শ্বাস প্রশ্বাসে সহায়তা
করতে পারে।
কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যঃ কারকিউমিন সম্ভাব্য প্রদাহ
হ্রাস করে, কমিয়ে উন্নত কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের সাথে যুক্ত
হয়েছে কোলেস্টেরল স্তর, এবং স্বাস্থ্যকর সমর্থন করে রক্তচাপ
মাত্রা।
ব্যথা উপশম করেঃ হলুদ দুধের প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যগুলি
সহ বিভিন্ন ধরণের ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করতে পারে মাথাব্যাথা,
পেশী ব্যথা, এবং মাসিক ক্র্যাম্প।
রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণঃ কিছু গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া
হয়েছে যে কারকিউমিন ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে এবং রক্তে
শর্করার মাত্রা পরিচালনায় সম্ভাব্য সাহায্য করতে পারে,
ডায়াবেটিস বা প্রিডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপকার করতে
পারে।
লিভারের স্বাস্থ্যঃ হলুদ দুধ লিভারের কার্যকারিতাকে
সমর্থন করে এবং এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারে যকৃতের ক্ষতি এর
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যের কারণে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ অনেক বিজ্ঞানী কারকিউমিন এর
সম্ভাব্য ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য মূল্যায়ন করছেন।
যদিও আরও গবেষণার প্রয়োজন হয়, কিছু গবেষণা পরামর্শ দেয় যে এটি
নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি এবং বিস্তারকে বাধা দিতে
সাহায্য করতে পারে।
ক্ষত নিরাময় করেঃ হলুদের দুধের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং
অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি দ্রুত ক্ষত নিরাময় এবং
সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে, এটি কাটা, পোড়া এবং অন্যান্য
ত্বকের আঘাতের চিকিত্সার জন্য একটি সম্ভাব্য সাহায্য করে।
মহিলাদের জন্য হলুদ দুধের উপকারিতাঃ কারকিউমিন
হাড়-নির্মাণ কোষের বৃদ্ধি এবং কার্যকলাপ প্রচার করে হাড়ের
স্বাস্থ্যকে সহায়তা করতে পারে, সম্ভাব্যভাবে অস্টিওপোরোসিস এবং
অন্যান্য হাড়-সম্পর্কিত অবস্থার ঝুঁকি হ্রাস করে।
স্ট্রেস উপশম করেঃ হলুদ ও দুধের উষ্ণ এবং প্রশান্তিদায়ক
প্রভাব, এর ক্ষমতা কমানোর সাথে মিলিত হয় প্রদাহ এবং শিথিলতাকে
উন্নীত করে, চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে এবং শান্ত ও সুস্থতার
বোধকে উন্নীত করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় হলুদ ও দুধ পান করার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় হলুদ ও দুধ পান করার উপকারিতা ব্যপক। গর্ভাবস্থায় হলুদ
ও দুধ খাওয়া হলে তা কোনও গর্ভবতী মহিলার দেহে তার হরমোনীয়
ভারসাম্যহীনতার কারণে ঘটে থাকা বিভিন্ন পরিবর্তনগুলি(যেমন জল ধারণ
ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দুর্বল অনাক্রম্যতা) প্রতিরোধ করতে সহায়তা করতে
পারে। যেহেতু এই সময় ক্রমবর্ধিত ভ্রূণ এবং বর্ধিত জরায়ুর কারণে
আভ্যন্তরীণ অঙ্গাণুগুলির উপর চাপ বৃদ্ধি হয়, যা গর্ভবতী মহিলাকে
কিছুটা কাহিল করে দেয়।
তাই এই সময় হলুদ–দুধ পান করলে তা গর্ভাবস্থায় একটি মহিলাকে শক্তি
যোগায়।সুতরাং হলুদ দুধ পান করলে তা বমি বমি ভাব এবং অস্বস্তি হ্রাস
করে গর্ভাবস্থাকে তুলনামূলক একটি স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক অভিজ্ঞতা করে
তোলে। গর্ভাবস্থায় হলুদ ও দুধ পান করায় যে সকল স্বাস্থ্য
উপকারিতাগুলি পাওয়া যায় তার একটি তালিকা নীচে দেওয়া হলঃ
যন্ত্রণা উপশম করেঃ হলুদের প্রদাহ–বিরোধী বৈশিষ্ট্যগুলি
গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে অতি প্রয়োজনীয় উপশম নিয়ে আসে।
গর্ভাবস্থায় অধিকাংশ মহিলার মধ্যেই পায়ের পাতা ফুলে যাওয়ার প্রবণতা
থাকে এবং তাছাড়াও তাদের দেহে জলধারণ এবং হরমোনীয় পরিবর্তনগুলির
কারণে অস্থি সন্ধির যন্ত্রণা বা জয়েন্ট পেইনের অভিজ্ঞতাও হয়ে থাকতে
পারে। হলুদ এই সকল যন্ত্রণাগুলি নিরাময়ে সাহায্য করে।
সর্দি–কাশি এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়ায় করেঃ হলুদ মধ্যস্থ
এর প্রদাহ–বিরোধী বৈশিষ্ট্যগুলি সর্দি–কাশি, জ্বর থেকে উপশম আনতে
সাহায্য করে।সাধারণ সর্দি–কাশির সাথে গলা ব্যথার নিরাময়ে একটি
দ্রুত ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে উষ্ণ হলুদ–দুধ পান করা বেশ কার্যকর
হিসেবে পরিচিত।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করেঃ হলুদ উচ্চ
অ্যান্টঅক্সিডেন্ট যুক্ত হওয়ায় সেটি ফ্রী র্যাডিক্যাল বা মুক্ত
মূলকগুলিকে অপসারিত করার মাধ্যমে হালকা সংক্রমণগুলিকে দূরে ঠেলে
রেখে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করেঃ গর্ভাবস্থায় সিরাম
কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে।হলুদের
অ্যান্টিলিপিডেমিক বৈশিষ্ট্যগুলি ক্রমবর্ধমান কোলেস্টেরলের মাত্রা
একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখে। কারকিউমিনের বেশ কয়েকটি উপকারী
কারণের জন্য হৃদরোগ প্রতিরোধে এর একটি ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়।এটি
এন্ডোথেলিয়ামের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং তাছাড়াও এটি হল একটি
শক্তিশালী অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি বা প্রদাহ বিরোধী এজেন্ট এবং
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট।
ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়ঃ সকল গর্ভবতী মহিলার মধ্যেই
গর্ভাবস্থাকালীন ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে না, কিছু মহিলার মধ্যে আবার
এমনকি গর্ভাবস্থায় হঠাৎ ব্রণের প্রাদুর্ভাব ঘটে, বিশেষ করে প্রথম
ত্রৈমাসিকে হয়ে থাকা হরমোনীয় পরিবর্তনগুলির কারণে, তবে
গর্ভাবস্থাকালীন ডায়েটের মধ্যে সোনালী মশলাটির সংযোজন করলে তা ব্রণ
রদ করার ক্ষেত্রে প্রভূত সহায়তা করতে পারে।হলুদের প্রদাহ–বিরোধী
বৈশিষ্ট্যগুলি ব্রণ এবং একজিমা হ্রাস করতে সহায়তা করে এবং তাছাড়াও
আবার এর মধ্যে থাকা রক্ত শোধনকারী বৈশিষ্ট্যগুলি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য
নিয়ে আসে।
ঘুমের উন্নতি ঘটায়ঃ এক গ্লাস উষ্ণ হলুদ–দুধ, গর্ভবতী মহিলার
মধ্যে হয়ে থাকা অস্বস্তি, যা তাদের একটি গভীর ও গাঢ় নিশ্চিন্ত ঘুম
থেকে বঞ্চিত করে, তা দূর করে তার ভাল ঘুমের সহায়ক ও প্রেরণাকারী
হিসেবে পরিচিত।
হলুদ দুধ তৈরি করার নিয়ম
হলুদ দুধ তৈরি করার নিয়ম অনেকেই জানেন না। হলুদ দুধ হলো একটি
দুর্দান্ত অনাক্রম্যতা বৃদ্ধিকারী পানীয় যা প্রদাহ বিরোধী
বৈশিষ্ট্যগুলিকে বাড়িয়ে তোলে। এটি উভয়ই প্রস্তুত করা সহজ,
অত্যন্ত সুস্বাদু এবং অসংখ্য স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে।দুধ সুষম
খাদ্য যাতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন। আর হলুদ হলো প্রাকৃতিক
অ্যান্টিবায়োটিক। এই দুই জিনিস মিশে গেলে দূরে থাকে বহু
রোগ। বাড়িতে কিভাবে হলুদ দুধ তৈরি করবেন জেনে নিন সঠিক নিয়ম।
উপকরণঃ
- ১ কাপ গরুর দুধ
- হলুদ ও অ্যামন্ড এক চা চামচ
- ১/২ চা চামচ দারুচিনি
- ১/৪ চা চামচ আদা
- এক চা চামচ ম্যাপেল সিরাপ বা মধু
প্রস্তুতপ্রণালীঃ হলুদ-দুধ বানাতে চাইলে একটি পাত্রে
১২০ মিলিগ্রাম গরুর দুধ সাথে অ্যামন্ড মিশিয়ে মাঝারি আঁচে
গরম করুন। দুধ গরম হয়ে গেলে বিশেষ করে দুধ ও হলুদের সঙ্গে অল্প
কিছুটা আদা কুচি, আধ চা-চামচ দারুচিনির গুঁড়া, এক চিমটে গোল মরিচ
গুঁড়া মিশিয়ে ফোটান। ফুটতে শুরু করার পর আঁচ কমিয়ে ১০ মিনিট ধরে
ফোটাতে থাকুন। মশলা সম্পূর্ণরূপে একত্রিত না হওয়া পর্যন্ত
মিশ্রণটি নাড়তে থাকুন। এরপর নামিয়ে তা ছেঁকে নিন।
একটি মগ বা গ্লাসে উষ্ণ হলুদ দুধ ঢেলে নিন এবং গরম থাকা অবস্থায়
উপভোগ করুন। আপনি যদি মিষ্টি স্বাদ পছন্দ করেন তবে মধু বা ম্যাপেল
সিরাপ আপনার পছন্দমতো যোগ করতে পারেন। এতে দারুচিনি ছিটিয়ে বা
কয়েকটি জাফরান দিয়ে সাজান পারেন, যা অতিরিক্ত স্বাদ এবং দৃষ্টি
আকর্ষণের জন্য। হলুদ-দুধ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার করে
যেকোনো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় হলুদ–দুধ খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
হলুদ-দুধ গর্ভবতী মহিলার অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে যা
বিকাশকারী ভ্রূণের কঙ্কাল তন্ত্রের বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য
প্রয়োজনীয়। এই অবস্থায় হলুদ মেশানো দুধ খেতে পারেন কারণ এটি
আপনার জন্য প্রচুর উপকারিতা নিয়ে আসবে, তবে সেটির পরিমাণের দিকে
নজর রাখতে হবে। কারণ এটি অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে তা আবার
আপনার গর্ভস্থ ভ্রূণের স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
এর সাথে জড়িত ঝুঁকিগুলি নিম্নরূপঃ
গর্ভপাতঃ গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে হলুদ-দধ সেবন করলে, তা
জরায়ুর পেশী সহ মসৃণ পেশীগুলিতেও সংকোচন সৃষ্টি করতে পারে। আর
গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে জরায়ুর সংকোচনগুলি শ্রম বেদনাকে
উদ্দীপ্ত করতে পারে যা গর্ভপাতের দিকে পরিচালিত করে। সুতরাং হলুদ
সর্বদা সংযমের সাথে পরিমিত পরিমাণেই সেবন করা উচিত। এমনকি পূর্ণ
গর্ভদশাতেও বা কোনও মহিলা যখন তার গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহের
কাছাকাছি সময়ে এসে উপনীত হন, তখনও এটি অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করা
উচিত নয়।
জন্মগত ত্রুটিগুলিঃ বেশি মাত্রায় কারকিউমিন ভ্রূণের মধ্যে বেশ কিছু
ত্রুটি গড়ে তুলতে এবং ভ্রূণের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
যেহেতু কারকিউমিন হলো হলুদের মধ্যে থাকা একটি প্রধান উপাদান, তাই
সেটি ক্রমবিকশিত ভ্রূণের পক্ষে ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং,
আপনি যদি গর্ভাবস্থায় হলুদ-দধ সেবন করতে চান, তবে সেক্ষেত্রে
তার আগে আপনার একজন পুষ্টিবিদের সাথে কথা বলে নেওয়ার পরামর্শই
আপনাকে দেওয়া হয়।
রক্তক্ষরণের সমস্যাঃ খুব বেশি পরিমাণে হলুদ-দধ সেবন করলে তা
রক্তক্ষরণের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।এটি আবার অস্বাভাবিক এবং
অত্যধিক রক্ত জমাট বাঁধারও কারণ হয়ে উঠতে পারে যা আরও জটিলতাগুলি
গড়ে তুলতে পারে।হলুদের পরিপূরকগুলিও আবার এমনকি প্রাথমিকভাবে
স্পটিং–র কারণ হয়ে উঠতে পারে, সেগুলি সেবন করার পরে।
বমি বমি ভাব এবং অস্বস্তিঃ গর্ভাবস্থায় অত্যধিক পরিমাণে হলুদ-দুধ
সেবন করলে তা গা গুলানো, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, বুক জ্বালা এবং বদ
হজমের কারণ হয়ে উঠতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য হলুদ দুধের
অবশ্যই বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলি আছে।তবে গর্ভাবস্থা যেহেতু
বিভিন্ন সংক্রমণ এবং টেরোটোজিনিসিটি–র ঝুঁকির এক সাবলীল অবস্থা,
তাই পরামর্শ দেওয়া হয় যে গর্ভবতী মহিলারা যেকোন খাবার (ভেষজ এবং
মশলা সহ), দোকান থেকে ক্রয় করা অন্যান্য খাদ্যপণ্য বা ওষুধ
সামগ্রীগুলি সেবন করার আগে সে ব্যাপারে সর্বাধিক যত্ন নেবেন এবং
নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।
কাঁচা হলুদের ঐতিহ্যগত ব্যবহার
বাংলাদেশের প্রতিটি রান্নাঘরে হলুদের উপস্থিতি একটি সাধারণ
দৃশ্য। কিন্তু আমরা যে হলুদ ব্যবহার করি, তা সাধারণত শুকনো ও
গুঁড়া। শুধু রান্নার উপকরণ হিসেবেই নয়, বরং একটি শক্তিশালী
ঔষধি উদ্ভিদ হিসেবেও বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। প্রাচীন আয়ুর্বেদ
থেকে শুরু করে আধুনিক গবেষণা পর্যন্ত, কাঁচা হলুদের গুণাগুণ
বিভিন্নভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর প্রধান উপাদান কারকিউমিন, একটি
শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এজেন্ট
হিসেবে কাজ করে, যা নানা রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় সহায়ক।
১। রোদে পুড়ে বা অন্য কোনও কারণে ত্বকের রঙ কালো হয়ে গেলে হলুদ
ভীষণ চমৎকার কাজে দিবে। সামান্য পরিমাণ শসার রস নিন, তাতে অল্প
একটু হলুদ বাটা বা গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন ও মুখে লাগান।
১৫/২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কিছুদিন ব্যবহারেই উপকার
পাবেন। মুখে হলুদের দাগ দূর করা নিয়ে চিন্তিত হলে ব্যবহার করুন
দুধ। তুলা দুধে ভিজিয়ে পরিষ্কার ত্বকের উপর বুলিয়ে আনুন। হলুদ
দাগ উঠে যাবে।
২। সাধারণ কাঁটাছেঁড়ায় হলুদ এন্টিসেপ্টিকের কাজ করে। খুব
হাল্কা উষ্ণ পানি দিয়ে হলুদের পেস্ট তৈরি করে ক্ষত স্থানে
লাগিয়ে দিন। দ্রুত সেরে উঠবে। যারা হাড়ের সমস্যায় ভুগছেন,
তাঁদের জন্য হলুদ মহৌষধ। আধা গ্লাস দুধ নিন, তাতে আধ ইঞ্চি
পরিমাণ হলুদ দিয়ে চুলায় জ্বাল দিন। দুধের রঙ হলুদ হয়ে গেলেই
নামিয়ে নিন ও উষ্ণ অবস্থান পান করুন। প্রতিদিন রাতে এই পানীয়
পান করলে হাড় হবে শক্তিশালী ও মজবুত, অষ্টিওপরসিস এর মতন রোগের
সম্ভাবনা থাকবে না। এছাড়া এছাড়া বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও এই পানীয়
উপকারী। অন্যদিকে মেনপজের পরে মহিলাদের হাড়ের ভঙ্গুরতা নিরাময়
করতেও অত্যন্ত কার্যকর।
৩। কৃমি সমস্যায় ভুগছেন, প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদের রস ২০
ফোঁটা নিয়ে তার মধ্যে ১ চিমটি লবণ মিশিয়ে সেবন করুন। চাইলে
সামান্য পানি মিশিয়ে নিতে পারেন। নিয়মিত সেবনে অচিরেই পরিত্রাণ
মিলবে। সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ দেয় হলুদ। কাশি কমাতে
হলে হলুদের রস খেয়ে নিন কয়েক চামচ, কিংবা এক টুকরো হলুদের সাথে
মধু মাখিয়ে তা মুখের মাঝে রেখে আস্তে আস্তে চুষতে পারেন। সেটা
করতে না পারলে এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে হলুদের গুঁড়ো, সামান্য
মাখন এবং গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে পান করুন। কয়েকবার সেবনেই
নিরাময় হবে। কাশি ও গলা ব্যথা উভয়েই দূর হবে।
৪। শরীরে ব্যথা হলে বা ব্যথা পেলে দুধের মধ্যে হলুদ মিশিয়ে পান
করুন। দীর্ঘ মেয়াদী বা সাময়িক, দুই প্রকার ব্যথাতেই আরাম
পাবেন। এছাড়া কোথাও কেটে-ছড়ে গেলেও এই পানীয় পানে কাজ দেয়।
দ্রুত ক্ষত নিরাময় হয়ে যায়।
৫। দেহে রক্তের ঘাটতি বা রক্ত শুন্যতা দেখা দিলে হলুদ বাটা খেলে
উপকার মিলবে, কেননা এটি রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে
চা চামচের এক চামচ কাঁচা হলুদের রস ও সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে
নিয়মিত সেবন করুন, রক্তশূন্যতা অচিরেই দূর হবে।
৬। হাড়ের জোড়ায় ব্যথা হলে হলুদরে পেস্টের প্রলেপ নিয়মিত
দিলেও উপকার পাওয়া যায়। শরীরের কোনো অংশ পুড়ে গেলে পানির
মধ্যে হলুদের পাউডার মিশিয়ে প্রলেপ দিলে আরাম মিলবে। মুখের মাঝে
কোনও কারণে কেটে ছড়ে গেলে কিংবা অন্য কোনও কারণে জ্বালা পোড়া
হলে গরম পানির মাঝে হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে কুলি করুন। সেরে যাবে।
৭। হলুদ ডায়রিয়া নিরাময়ের ক্ষেত্রেও কার্যকরী। ডায়রিয়া হলে
এক চামচ পরিমাণ কাঁচা হলুদের রস পানির সাথে মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন।
জীবাণু ধ্বংস হয়ে ডায়রিয়া নিরাময় হবে। এছাড়াও যারা অন্ত্রের
নানান রকম রোগে ভুগছেন তারা প্রতিদিন টাটকা হলুদ বেটে রস পানিতে
মিশিয়ে খাবেন। এটি অন্ত্রের রোগের মহৌষধ।
৮। সর্দি-কাশি ও গলা ব্যথা হলে কাঁচা হলুদের রস এবং মধু একসাথে
মিশিয়ে খাওয়া খুবই কার্যকরী। কাঁচা হলুদের
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য শরীরকে
সর্দি-কাশি এবং ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে। এটি গলা ব্যথা উপশম
করে এবং শ্বাসনালীকে প্রশমিত করে। প্রতিদিন ১ টেবিল চামচ কাঁচা
হলুদের রস এবং ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার সেবন করলে
দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।
৯। বাত বা জয়েন্টের ব্যথা হলে কাঁচা হলুদের পেস্ট ব্যবহার করা
যায়। হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য প্রদাহ কমাতে
সাহায্য করে এবং ব্যথা উপশম করে। ১ টেবিল চামচ কাঁচা হলুদের
পেস্ট তৈরি করে ব্যথার স্থানে ২০-৩০ মিনিটের জন্য প্রয়োগ করতে
হয়। এটি দিনে ১-২ বার ব্যবহার করলে প্রদাহ কমে যায় এবং
আর্থ্রাইটিস বা অন্যান্য জয়েন্টের সমস্যায় স্বস্তি পাওয়া
যায়।
১০ পেটের গ্যাস ও বদহজম দূর করতে কাঁচা হলুদ খুবই কার্যকর।
কাঁচা হলুদ হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং বদহজম থেকে মুক্তি
দেয়। আদার সাথে কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খেলে পেটের সমস্যা
দূর হয়। প্রতিদিন খাবারের পর ১ চামচ কাঁচা হলুদের রস এবং আদার
রস খেলে হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে এবং গ্যাসের সমস্যা কমে
যায়।
১১ ত্বকের ব্রণ, ফুসকুড়ি এবং অন্যান্য সংক্রমণের জন্য কাঁচা
হলুদ একটি প্রাকৃতিক সমাধান হিসেবে কাজ করে। কাঁচা হলুদ এবং টক
দইয়ের মিশ্রণ ত্বকে প্রয়োগ করলে ত্বকের দাগ, ফুসকুড়ি এবং
প্রদাহ কমে যায়। কাঁচা হলুদের অ্যান্টিসেপটিক গুণাগুণ ত্বকের
ইনফেকশন প্রতিরোধ করে এবং ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে তোলে।
সপ্তাহে ২-৩ বার এই মিশ্রণটি ত্বকে লাগালে ত্বকের বিভিন্ন
সমস্যা দূর হয়।
১২। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাঁচা হলুদ খুব উপকারী। কাঁচা
হলুদের রস রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং
ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১
টেবিল চামচ কাঁচা হলুদের রস পান করলে রক্তে শর্করার মাত্রা
নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
১৩। কাঁচা হলুদ লিভারকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং এটি
টক্সিন দূর করে লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে। কাঁচা হলুদ এবং
লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে সেবন করলে লিভারের
বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় এবং লিভার সুস্থ থাকে। এটি লিভারের
প্রদাহ এবং চর্বি জমা কমাতে সহায়ক।
১৪। কাঁচা হলুদ শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায় এবং ফ্যাট কমাতে
সহায়তা করে, যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। কাঁচা হলুদ এবং
মধু মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খাওয়া হলে শরীরের
অতিরিক্ত চর্বি পোড়ানোর প্রক্রিয়া দ্রুততর হয়। এটি ওজন
কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরকে স্লিম রাখতে সহায়ক।
১৫। হলুদের মধ্যে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ লবণ, ফসফরাস,
ক্যালসিয়াম, লোহা প্রভৃতি নানা পদার্থ রয়েছে। তাই হলুদ খেলে
শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যেমন বাচ্চাদের
লিউকমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় নিয়মিত কাঁচা
হলুদের রস সেবন। প্রতিদিন দুধ বা পানির সাথে হলুদের গুঁড়ো বা রস
মিশিয়ে খাওয়া অভ্যাস করলে অনেকটাই সুস্থ থাকা সম্ভব।
কাঁচা হলুদ খাওয়ার অপকারিতা
কাঁচা হলুদ খাওয়ার অপকারিতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে হয়তো
অনেকেই জানেন না। প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদশাস্ত্রে বিভিন্ন
চিকিৎসাতে ভেষজ ঔষধ হিসাবে হলুদ ব্যবহার হয়ে আসছে। হলুদের যে কতো গুণ
তা সকলেরই জানা।আজকাল চায়ের সঙ্গে কাঁচা হলুদ কিংবা কাঁচা হলুদ দিয়ে
চা, দুধ এখন অনেকেই খাচ্ছেন। অতিরিক্ত হলুদ খাওয়া মোটেই শরীরের জন্য
ভালো নয়। এর নানা রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। চলুন জেনে আসা যাক
এর অপকারিতা গুলো।
১. হলুদ শরীর থেকে অতিরিক্ত আয়রণ শোষণ করে নেয় । তখন হিমোগ্লোবিনের
মাত্রা কমে যায়। ফলে আয়রনের ঘাটতি তৈরি হয় শরীরে। হলুদের মধ্যে
থাকা কিউকারমিন ভেঙে ফেরিক কিউকারমিন তৈরি হয়। যার জন্যেই অতিরিক্ত
আয়রন শরীর থেকে শুষে ।
২. এই যৌগটি দেহে আয়রন ভারসাম্যের জন্য দায়ী পেপটাইডস, হেপসিডিন
সংশ্লেষণকেও বাধা দিতে পারে। এই সমস্ত কারণগুলো একসাথে আয়রনের ঘাটতি
বাড়ে। শুধুমাত্র শরীরে আয়রনের ঘাটতি হতে পারে এমন নয় সেই সঙ্গে
হজমেরও কিন্তু সমস্যা হতে পারে। খুব বেশি হলুদ খেলে ত্বকের সমস্যা,
মাথা ধরা এসব লেগেই থাকে। এছাড়াও লিভার বড় হয়ে যাওয়া, আলসার,
প্রদাহ এসবও হতে পারে।
৩. হলুদের মধ্যে যে কিউকারমিন থাকে তা কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য
খুবই ভালো। স্বাস্থ্যের দিক থেকেও উপকারী। কিন্তু বেশি হলুদ খেলে
কিংবা হলুদের সাপ্লিমেন্ট খেলে শুধুই যে অ্যানিমিয়া হবে তা নয়। এর
সঙ্গে রক্তপাতে সমস্যা, কিডনি স্টোন, ডায়াবেটিস এসবও কিন্তু আসতে
পারে।
৪। একজন ডায়াবেটিস রোগীকে তার খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর রেখে যেতে হয়
বাকি জীবনটা। রক্তে শর্করার মাত্রা তাদের বেশি হওয়া যাবে না, কমলেও
বিপদ। অপরদিকে ‘কারকিউমিন’ রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। তাই সতর্ক না
থাকলে হলুদের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত কমে গিয়ে মারাত্বক
বিপদ হতে পারে।
৫। অতিরিক্ত মাত্রায় হলুদ খেলে তা কেমোথেরাপির প্রভাব নষ্ট হয়ে যাওয়ার
আশঙ্কা থাকে। তাই যাদের কেমোথেরাপি চলছে, তাদের হলুদ না খাওয়াই ভাল।
৬।রিক্ত হলুদ খাওয়ার ফলে শরীর থেকে আয়রণ শোষণ করে নেয়। তখন
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়। ফলে আয়রনের ঘাটতি তৈরি হয় শরীরে। হলুদের
মধ্যে থাকা কিউকারমিন ভেঙে ফেরিক কিউকারমিন তৈরি হয়। যার জন্যেই
অতিরিক্ত আয়রন শরীর থেকে শুষে নেয়।
৭। হলুদের মধ্যে যে কিউকারমিন থাকে তা কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য খুবই
ভালো। স্বাস্থ্যের দিক থেকেও উপকারী। কিন্তু বেশি হলুদ খেলে কিংবা
হলুদের সাপ্লিমেন্ট খেলে শুধুই যে অ্যানিমিয়া হবে তা নয়। এর সঙ্গে
রক্তপাতে সমস্যা, কিডনি স্টোন, ডায়াবেটিস এসবও কিন্তু আসতে পারে।
ত্বকে কাঁচা হলুদ ব্যবহারের উপকারিতা
ত্বকে কাঁচা হলুদ ব্যবহারের উপকারিতা ও এর গুণের কথা সকলেরই জানা। ত্বকের যত্নে হলুদের জুড়ি মেলা ভার। রূপটানের কথা উঠলে একদম প্রথমদিকেই থাকবে হলুদের নাম। মুখের নিষ্প্রাণ বিবর্ণভাব কাটিয়ে সতেজ উজ্জ্বলতা এনে দিতে, মুখের কালো দাগছোপ হালকা করতে, ব্রণ-ফুসকুড়ি নির্মূল করার কাজে, মুখের যে কোনও প্রদাহ কমাতে হলুদের ব্যবহার বহু প্রাচীন। চলুন জেনে নেয়া যাক ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদ ব্যবহারের উপকারিতা
ব্রণ দূর করেঃ হলুদের মধ্যে এন্টিসেপ্টিক এবং এন্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান থাকে যেটি ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। এটি শুধু ব্রণই দূর করে না, তার সাথে ব্রণের দাগ এবং লোমকূপ থেকে তেল বের হওয়ার পরিমাণও কমিয়ে দেয়। কাঁচা হলুদ বাটা, চন্দন গুঁড়া, লেবুর রস মিশিয়ে একটি মাস্ক বানিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তাছাড়া ব্রণের উপর কাঁচা হলুদ বাটা এবং পানি মিশিয়ে দিয়ে ১৫ মিনিটের জন্য রাখুন। ব্রণ তাড়াতাড়ি চলে যাবে।
বলিরেখা দূর করেঃ হলুদ ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। ২/৩ চিমটি হলুদ গুঁড়া, চালের গুঁড়া, টমেটো রস, কাঁচা দুধের সাথে মিশিয়ে মুখে মাস্ক হিসাবে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের ফাইন লাইন্স এবং ঝুলে পড়া ত্বক কে স্বাভাবিক করতে, ত্বক কে ফর্সা করতে অত্যন্ত কার্যকরী।
চোখের নিচে কালো দাগ দূর করেঃ ২/৩ চিমটি হলুদ গুঁড়ার সাথে মাখন মিশিয়ে চোখের নিচে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন। এটি চোখের নিচে বলিরেখা সহ কালো দাগও দূর করবে।
বয়স ধরে রাখেঃ ১ দিন পর পর বেসন, কাঁচা হলুদ বাটা, টক দই মিশিয়ে মুখ সহ সারা শরীরে লাগিয়ে রাখুন শুকানো না পর্যন্ত। শুকিয়ে গেলে ঘড়ির কাটার উলটো দিকে স্ক্রাব করে মাসাজ করুন। এটি ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করার সাথে সাথে ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে ।
স্ট্রেচ মার্ক দূর করেঃ ত্বকের মোটা হয়ে যাওয়ার ফাটা দাগ, প্রেগ্নেন্সির স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে বেসন, কাঁচা হলুদ মিশিয়ে ঐ নিদিষ্টও জায়গায় লাগালে ধীরে ধীরে দাগ কমতে শুরু করে।
ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম দূর করেঃ প্রতিদিন ময়দা এবং কাঁচা হলুদ বাটা মিশিয়ে স্ক্রাব করলে, ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম ধীরে ধীরে কমে আসবে।
পায়ের গোড়ালির ফাটা দাগ দূর করেঃ গোসলের যাওয়ার আগে কাঁচা হলুদের সাথে, নারিকেল তেল অথবা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখলে পায়ের ফাটা দাগ কমবে, পায়ের ত্বক সুন্দর এবং নরম থাকবে।
ব্রণের দাগ দূর করেঃ আপনার মুখে ব্রণ বা যেকোনো দাগ-ছোপ থাকলে তা দূর করার জন্য কার্যকরী একটি উপাদান হতে পারে হলুদ। হলুদে থাকা অনেক উপাদান ত্বকের দাগ দূর করতে দারুণ কার্যকরী। সেইসঙ্গে ব্রণ থেকে মুক্তি পেতেও সাহায্য করে এই উপাদান। লেবুর রসের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন। এভাবে মিনিট দশেক অপেক্ষা করে এরপর ধুয়ে ফেলুন।
দ্রুত ক্ষত উপশম করেঃ হলুদ দ্রুত ত্বকের জারণ ও মানসিক চাপের কারণে হওয়া মলিনভাব দূর করতে পারে। ক্ষতস্থানের ওপর কেবল হলুদ লাগিয়ে রাখলেও তা সারাতে সহায়তা করে।
বলিরেখা কমায়ঃ বয়সের ছাপ কমাতে সহায়তা করে হলুদ। কারণ এতে আছে কোষকলার মাত্রা বৃদ্ধি ও আর্দ্রতা রক্ষা করার ক্ষমতা। এর মানে হল, হলুদ খুব সহজে বলিরেখা ও ত্বকের ভাঁজ দূর করতে সহায়াত করে।
অতি বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করেঃ হলুদ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সাহয্য করে। কারণ এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। একারণে ত্বকে হলুদের পেস্ট ব্যবহার করা হলে ঠাণ্ডা ও আরাম অনুভূত হয়। আর রোদের কারণে হওয়া র্যাশ ও পোড়াভাব দূর হয়ে যায়।
ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ রাখেঃ ত্বক বিষাক্ত উপাদানের কারণে মলিন ও অস্বস্তিকর হয়ে পড়ে। হলুদ ত্বককে পরিষোধিত করে। ফলে ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল ও মসৃণ।
ব্রণের কালো দাগ কমায়ঃ হলুদ ব্রণের বিরুদ্ধে কাজ করে জ্বলুনি কমায় বিশেষ করে যাদের ত্বক সংবেদনশীল তাদের ত্বকে হলুদ খুব ভালো কাজ করে। হলুদে থাকা কারকিউমিন এমন এক ধরনের এঞ্জাইম যা রোদ ও ‘হাইপার পিগমেন্টেইশন’য়ের কারণে হওয়া কালো দাগ ও পোড়াভাব কমাতে কার্যকর।
রুপচর্চায় কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক
মুখের নিষ্প্রাণ বিবর্ণভাব কাটিয়ে সতেজ উজ্জ্বলতা এনে দিতে, মুখের
কালো দাগছোপ হালকা করতে, ব্রণ-ফুসকুড়ি নির্মূল করার কাজে বা মুখের
যে কোনো প্রদাহ কমাতে হলুদের ব্যবহার প্রাচীন কাল থেকে। হলুদের
অ্যান্টি-সেপটিক, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি
উপাদান ত্বকের বিভিন্ন ইনফেকশন দূর করে। এছাড়া এর প্রাকৃতিক উপাদান
ত্বককে ভিতর থেকে উজ্জ্বল করে থাকে। আসুন আজ হলুদের কিছু কার্যকরী
ফেসপ্যাকের সাথে পরিচিত হওয়া যাক।
১। হলুদ, মধু এবং দুধের প্যাকঃ ১/৪ চা চামচ হলুদের গুঁড়ো, এক
চা চমচ মধু, এবং এক চা চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এই
প্যাকটি ত্বকে ব্যবহার করুন। প্যাকটি ব্যবহারের আগে ত্বক ক্লেনজার
দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
এরপর হলুদের প্যাক-টি ত্বকে ব্যবহার করুন। ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
প্যাক শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
প্রতি সপ্তাহে একবার প্যাক-টি ব্যবহার করুন। মধু ত্বক হাইড্রেট করে
নরম-কোমল করে তোলে। এর অ্যান্টি-সেপটিক এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল
উপাদান ত্বকের ব্যাকটেরিয়া দূর করে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে।
দুধে প্রচুর পরিমাণ মিনারেল এবং ভিটামিন রয়েছে যা ত্বকের মৃত কোষ দূর
করে ত্বক কোমল করে থাকে। এছাড়া ত্বকের রিংকেল এবং মৃত কোষ দূর করতে
সাহায্য করে।
২। হলুদ, অ্যাভোকাডো এবং টকদইঃ ১/৪ চা চামচ হলুদের গুঁড়ো, এক
টেবিল চামচ অ্যাভোকাডার পেস্ট এবং এক চা চামচ টকদই একসাথে মিশিয়ে
প্যাক তৈরি করে নিন। প্যাকটি ত্বকে ব্যবহার করুন। ১০ মিনিট পর শুকিয়ে
গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।অ্যাভকোডার ভিটামিন-ই, ন্যাচারাল
অয়েল এবং ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বক হাইড্রেট করে। এর অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি
এবং অ্যান্টি-এজিং উপাদান ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
৩। হলুদ, লেবুর রস এবং মধুঃ লেবুর রস ত্বকের কালো দাগ, ব্রণের
দাগ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকের লোমকূপ সংকুচিত করে থাকে। মধু
প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। শুধু তাই নয় মধু ব্রণ হওয়ার প্রবণতা রোধ
করে। ১/৪ চা চামচ হলুদের গুঁড়ো, ১/২ চা চামচ লেবুর রস এবং ১ টেবিল
চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে
রাখুন ১০ মিনিট। শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই
প্যাকটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ত্বকের
উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
৪। হলুদ, বেসন এবং গোলাপ জলের প্যাকঃ বেসন ত্বকের অতিরিক্ত
তেল শুষে নিয়ে ত্বককে রাখে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত এবং ব্রণ হওয়ার প্রবণতা
হ্রাস করে। এছাড়া বেসন প্রাকৃতিক এক্সফলিয়েট হিসেবে কাজ করে। ১ টেবিল
চামচ হলুদ গুঁড়ো, ২ টেবিল চামচ বেসন, ১ থেকে ২ টেবিল চামচ গোলাপ জল
একসাথে মিশিয়ে নিন। প্যাক-টি ব্যবহারের আগে মুখটি পানি দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন। তারপর পেস্ট-টি ত্বকে ব্যবহার করুন। ১০-১৫ মিনিট পর মুখ
শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ত্বকের ব্রণ
হওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে।
৫। হলুদ, টকদই এবং টমেটোঃ ত্বকের সানবার্ন দূর করতে এই
প্যাকটি বেশ কার্যকর। ১/৪ টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়ো, ১ টেবিল চামচ
টকদই, ১ টেবিল চামচ টমেটোর পিউরি মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন।
এটি ত্বকে ব্যবহার করুন। ১০-১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি
দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৬। টকদই, হলুদ ও ময়দাঃ এক টেবিল চামচ টকদই, এক টেবিল চামচ হলুদ,
এক টেবিল চামচ ময়দা মিশিয়ে পেস্ট করে নিন। এখন প্যাকটি মুখে মেখে ১৫-২০
মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর হারকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি
ত্বক উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ত্বক টানটানও করে।
৭। হলুদ, কফি আর টকদইয়ের প্যাকঃ এক টেবিলচামচ কফির গুঁড়োয়
খানিকটা টকদই আর এক চাচামচ কাঁচা হলুদবাটা যোগ করে ভালো করে মিশিয়ে
নিন। মুখে লাগিয়ে 20 মিনিট রাখুন। তারপর হালকা গরম জলে ধুয়ে
ময়শ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নিন। টকদই সেবাম নিয়ন্ত্রণ করে মুখের বাড়তি
তেলাভাব কমিয়ে দেবে, ফলে ব্রণও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কফির গুঁড়ো ত্বক
এক্সফোলিয়েট করবে আর হলুদ রুখে দেবে ব্রণর বাড়বৃদ্ধি আর সংক্রমণ।
কাঁচা হলুদ নিয়ে কিছু প্রচলিত প্রশ্ন
দিনে কতটা করে খেলে ফল মিলবে?
রোজ ২৫০ মিলিগ্রাম হলুদই যথেষ্ট। সকালে ও রাতে দুই বেলায় ২৫০
মিলিগ্রাম করে হলুদ খাওয়া যেতে পারে। সকালে খালি পেটে হলুদ খাওয়ার
পর আধ ঘণ্টা কিছু না খাওয়াই উচিত। অন্যদিকে রাতে ঘুমোনোর আগে
হলুদ-দুধ খেতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন এর থেকে বেশি পরিমাণে হলুদ
খাবেন না যেন, তাতে ক্ষতি হতে পারে।
কাঁচা হলুদ খেলে কি ফর্সা হয়?
হলুদ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী, এটি শুধুমাত্র খাবারেই ব্যবহার
করা হয় না, এটি ত্বকের জন্যও খুবই উপকারী। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল,
অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ, হলুদ
মুখের ব্রণ এবং ব্রণর মতো ত্বক সম্পর্কিত আরও অনেক সমস্যা দূর করতে
সাহায্য করে।
কাঁচা হলুদ আর মধু খেলে কি হয়?
কাঁচা হলুদের রস মধু মিশিয়ে খেলে লিভারের সমস্যায় উপকার পাওয়া
যায়। কাঁচা হলুদের রস সামান্য নুন মিশিয়ে সকালবেলা খালি পেটে খেলে
কৃমি সারে। সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেলে হজমশক্তির উন্নতি হয়,
শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। তবে রোজের রান্নায় হলুদ বেটে রান্না
করা একটু সময় সাপেক্ষ।
কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে শেষকথা
মসলাজাতীয় ফসলের তালিকায় শীর্ষ ব্যবহারযোগ্য ফসলের মধ্যে হলুদ
অন্যতম। কাঁচা হলুদ থেকে শুরু করে গুঁড়া হলুদের ব্যবহার ব্যাপক।
নিত্য খাবার ব্যঞ্জনের রঙ করার উদ্দেশ্যেই প্রধানত এর ব্যবহার করে
থাকে অনেকেই। কিন্তু হলুদ শুধু খাাবারে রং এর জন্যই ব্যবহৃত হয়
না। হলুদ ব্যবহারে রয়েছে নানাবিধ উপকারিতা। শারীরিক প্রয়োজনেও
হলুদের ব্যবহার হয়ে থাকে। শুধু হলুদ দিয়েই রোগ নিরাময়ে বহুমাত্রিক
ব্যবহার সম্ভব।
হলুদের মধ্যে রয়েছে কারকিউমিন নামক একটি উপাদান, যা একাই একশোর বেশি
রোগ সারাতে পারে। হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে এশিয়ায় হলুদের ব্যবহার
শুধু মসলা হিসাবে নয়, ঔষধ হিসাবেও। ভিটামিন-ই বা ভিটামিন-সি-র
তুলনায় পাঁচ থেকে আট গুণ বেশি কার্যকরী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট
কারকিউমিনে বিদ্যমান যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়,
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।আর্থ্রাইটিস, অ্যাজমা, হার্টের
রোগ,
অ্যালঝাইমার, ডায়াবেটিস এমনকী ক্যান্সার প্রতিরোধেও
কারকিউমিনের উপকারী গুণ অপরিহার্য বলে দাবি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url