জয়তুন ফলের ১১০টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম


জয়তুন ফলের ১১০টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম জানতে পারবেন আজকের আর্টিকেলটি পড়ে। হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন- জয়তুন ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারি, বার্ধক্যকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং পেটের জন্য তেমন শীতল যেমন আগুনের সামনে বরফ।
জয়তুন-ফলের-উপকারিতা
হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করে আরও বলেন, তোমরা জয়তুন খাও এবং জয়তুনের তেল গায়ে মাখো। কেননা এটি একটি মুবারক বৃক্ষ থেকে তৈরি। জয়তুন ফল ও তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানলে নিঃসন্দেহে আপনি আবাক হয়ে যাবেন। জয়তুন ফল ও তেল বরকত ও প্রাচুর্যে ভরপুর।

পেইজ সূচিপত্রঃ জয়তুন ফলের ১১০টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

জয়তুন ফলের ১১০টি উপকারিতা

জয়তুন ফলের ১১০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি আপনি অবাক হয়ে যাবেন। জয়তুন একাধারে ফল, ওষুধ এবং রূপচর্চার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি নিয়মিত খাওয়া ও ব্যবহার শরীর, মন এবং সৌন্দর্যের জন্য অমূল্য উপকার বয়ে আনে। এটি বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এবং স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জয়তুনের উল্লেখযোগ্য উপকারিতাগুলো নীচে তুলে ধরা হলো।
  • জয়তুনে উপস্থিত মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়।
  • জয়তুনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের ফ্রি র‍্যাডিকাল দূর করতে সহায়তা করে। এটি কোষ ক্ষতি প্রতিরোধ করে এবং বার্ধক্যের লক্ষণ কমায়।
  • জয়তুনে উপস্থিত পলিফেনল হাড়ের ক্ষয় রোধ করে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমায়।
  • জয়তুন ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ত্বককে কোমল ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য ত্বকের জ্বালা ও প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
  • জয়তুন ফাইবার সমৃদ্ধ, যা হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
  • জয়তুনে ভালো ফ্যাট থাকে, যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। এটি ক্ষুধা কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
  • জয়তুনে গ্লুকোজ মেটাবোলিজম উন্নত করে, যা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
  • জয়তুন এবং জয়তুন তেল মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং অ্যালঝাইমার রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • জয়তুনে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ক্যান্সার বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে।
  • জয়তুনে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে, যা শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
  • জয়তুন এবং এর তেল পলিফেনল এবং মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি বিশেষত উচ্চ রক্তচাপ (হাইপারটেনশন) রোগীদের জন্য উপকারী।
  • জয়তুন ফল এবং তেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের টক্সিন দূর করতে সহায়ক। এটি রক্ত পরিষ্কার করে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।
  • জয়তুনের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ আর্থ্রাইটিস, গেঁটেবাত, বা অন্য যে কোনও প্রদাহজনিত রোগে উপকারী। এটি ব্যথা এবং ফোলা কমাতে সহায়ক।
  • জয়তুনে প্রো-বায়োটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা পেটে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এটি গ্যাস্ট্রিক সমস্যা এবং অম্লতা কমায়।
  • জয়তুন লিভারের টক্সিন পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এটি ফ্যাটি লিভার ডিজিজ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে।
  • জয়তুন তেল চুলের গভীরে পুষ্টি যোগায়, খুশকি দূর করে এবং চুল পড়া কমায়। এটি চুলকে কোমল এবং উজ্জ্বল করে।
  • জয়তুনে থাকা ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। এটি রাতকানা ও চোখের শুষ্কতা প্রতিরোধ করে।
  • জয়তুনে থাকা পলিফেনল মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের কোষ রক্ষা করে। এটি স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং মানসিক চাপ কমায়।
  • জয়তুনে থাকা পুষ্টিগুণ শরীরের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে, যা বিভিন্ন ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়ক।
  • জয়তুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বলিরেখা এবং অন্যান্য বার্ধক্যের লক্ষণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে সহায়তা করে।
  • জয়তুনে আয়রন থাকে, যা হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়ক। এটি রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
  • জয়তুনে থাকা ফাইবার এবং পলিফেনল কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • জয়তুনে প্রাকৃতিক ফ্যাট এবং ক্যালোরি থাকে, যা দ্রুত শক্তি প্রদান করে। এটি শরীরকে দীর্ঘ সময় ধরে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে।
  • জয়তুনের স্বাস্থ্যকর ফ্যাট শরীরের হরমোন উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এটি মহিলাদের মেনোপজ এবং প্রিমেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম (PMS) সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
  • জয়তুনে কম ক্যালোরি এবং ভালো ফ্যাট রয়েছে। এটি ক্ষুধা দমন করে এবং বেশি খাবারের ইচ্ছা কমায়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
  • জয়তুনে থাকা মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। এটি রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে এবং রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা প্রতিরোধ করে।
  • জয়তুনের প্রাকৃতিক ফ্যাট শরীরে জমে থাকা চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এটি শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে।
  • জয়তুনে থাকা ওলিক অ্যাসিড এবং পলিফেনল রক্তনালীগুলোকে সুস্থ রাখে, যা হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে সহায়ক।
  • জয়তুন লিভারের কার্যকারিতা বাড়িয়ে শরীরের টক্সিন মুক্ত করতে সাহায্য করে। এটি লিভারের উপর অতিরিক্ত চাপ কমায়।
  • জয়তুনে উপস্থিত ফাইটোকেমিক্যাল এবং পলিফেনল স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে। এটি ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে।
  • জয়তুন অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি করে। এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
  • জয়তুন ফল খেলে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি দীর্ঘ সময় ধরে ক্লান্তি দূর করে কর্মক্ষম রাখে।
  • জয়তুনের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য গেঁটেবাতের ব্যথা কমাতে এবং যৌথের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • জয়তুন তেল চর্মরোগ যেমন সোরিয়াসিস, একজিমা ইত্যাদি চিকিৎসায় কার্যকর। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং প্রদাহ কমায়।
  • জয়তুন ফল শরীরে অম্লতা কমিয়ে পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এটি শরীরকে আরও ক্ষারীয় (alkaline) করে তোলে, যা স্বাস্থ্যকর।
  • জয়তুন এবং জয়তুন তেল সেরোটোনিন হরমোন নিঃসরণে সহায়তা করে, যা মানসিক চাপ ও বিষণ্ণতা দূর করে।
  • জয়তুনের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করে এবং মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
  • জয়তুন তেল প্রসব পরবর্তী সময়ে মায়েদের শরীর পুনর্গঠনে সহায়ক। এটি প্রসবকালীন হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।
  • জয়তুনে থাকা প্রাকৃতিক ফ্যাট মস্তিষ্কে মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়, যা ভালো ঘুমে সহায়তা করে।
  • জয়তুনের তেল এবং ফল শরীরে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, যা যৌন স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • জয়তুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করে এবং শরীরের টিস্যুর পুনর্গঠনে সহায়তা করে।
  • জয়তুনের পুষ্টিগুণ বার্ধক্যজনিত রোগ যেমন অ্যালঝাইমার, পারকিনসন্স প্রভৃতি প্রতিরোধে সহায়ক।
  • জয়তুন তেলের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষত দ্রুত সারিয়ে তোলে।
  • জয়তুনের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমায়, যা হার্ট এবং মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।
  • জয়তুনে থাকা ফোলেট এবং ভিটামিন ই গর্ভস্থ শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সহায়ক। এটি গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
  • জয়তুনে থাকা পলিফেনল মস্তিষ্কের কোষ রক্ষা করে এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করে। এটি অ্যালঝাইমার এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • জয়তুন ফল এবং তেল কিডনির কার্যক্ষমতা উন্নত করে এবং কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি কমায়। এটি প্রস্রাবের মাধ্যমে টক্সিন দূর করতেও সহায়ক।
  • জয়তুন ফলের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। এটি ত্বক এবং শরীরের কোষগুলিকে হাইড্রেটেড রাখে।
  • জয়তুন তেল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং ত্বকের দাগ, ব্রণের দাগ বা গায়ের কালো দাগ হালকা করতে সাহায্য করে।
  • জয়তুন ফল ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী।
  • জয়তুন তেল চুলের গভীরে পুষ্টি যোগায় এবং শুষ্ক ও রুক্ষ চুল মসৃণ করে। এটি প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কার্যকর।
  • জয়তুনে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য ফুসফুসের প্রদাহ কমায় এবং শ্বাসযন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
  • জয়তুনে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে সজীব ও চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে। এটি ক্লান্তি দূর করে কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
  • জয়তুন ত্বকের নমনীয়তা বাড়ায় এবং ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক UV রশ্মি থেকে রক্ষা করে।
  • জয়তুন অন্ত্রের অম্লতা কমায় এবং গ্যাস্ট্রিক ও আলসারের মতো সমস্যা প্রতিরোধ করে।
  • জয়তুনে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং পুষ্টি উপাদান মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং বিষণ্ণতা কমাতে সহায়তা করে।
  • জয়তুনে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট শরীরের অনিয়ন্ত্রিত মেদ জমা প্রতিরোধ করে। এটি মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
  • শিশুরা যদি জয়তুন তেল সেবন করে বা এটি তাদের খাদ্যতালিকায় থাকে, তবে এটি তাদের হাড় এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সহায়ক।
  • জয়তুন ফল এবং তেল ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস প্রতিরোধে সহায়ক। এটি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • জয়তুনে উপস্থিত ফাইবার এবং পলিফেনল অন্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে।
  • জয়তুন তেল রক্তনালীর কার্যকারিতা বাড়ায় এবং রক্তচলাচল ভালো রাখে, যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
  • জয়তুন তেলের ব্যবহারে প্রদাহজনিত ব্যথা যেমন আর্থ্রাইটিসের ব্যথা হ্রাস পায়। এটি ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে।
  • জয়তুন তেল ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়। এটি সূর্যপোড়া প্রতিরোধে কার্যকর।
  • জয়তুন তেল মাথার তালুর রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং চুল পড়া প্রতিরোধ করে। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে।
  • জয়তুনের স্বাস্থ্যকর ফ্যাট দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
  • জয়তুন তেল পিত্তথলির কার্যকারিতা উন্নত করে এবং পিত্তথলিতে পাথর জমার ঝুঁকি কমায়। এটি পিত্ত নিঃসরণ বৃদ্ধি করে হজমে সহায়তা করে।
  • জয়তুনের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য অন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ যেমন ক্রোনস ডিজিজ বা আলসারেটিভ কোলাইটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
  • জয়তুনে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট শরীরের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি বিশেষ করে মহিলাদের পিরিয়ড ও মেনোপজজনিত সমস্যায় উপকারী।
  • জয়তুন তেল ত্বকে প্রাকৃতিক আভা যোগায় এবং ত্বকের মলিনতা দূর করে। এটি ত্বকের পিগমেন্টেশন কমাতে কার্যকর।
  • জয়তুন ফল শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা দীর্ঘ সময় ধরে হাইড্রেশন বজায় রাখে।
  • গর্ভবতী নারীদের জন্য জয়তুন তেল উপকারী। এটি গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • জয়তুনে উপস্থিত ফাইবার এবং পলিফেনল অন্ত্রের কার্যক্রম উন্নত করে এবং কোলন পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।
  • জয়তুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পলিফেনল ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ধীর করে। এটি স্তন, কোলন এবং ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর।
  • জয়তুনে থাকা ওলিক অ্যাসিড এবং ফ্ল্যাভোনয়েড রক্তনালীগুলিকে শিথিল করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • জয়তুন তেল শরীরের লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম সক্রিয় করতে সহায়ক, যা টক্সিন বের করে শরীর পরিষ্কার রাখে।
  • জয়তুন তেল পাকস্থলীর অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এটি গ্যাস্ট্রিক আলসার প্রতিরোধ করে এবং হজমে সাহায্য করে।
  • কঠোর পরিশ্রম বা শরীরচর্চার পর জয়তুন তেল দ্রুত শক্তি যোগায় এবং পেশির ব্যথা কমাতে সহায়ক।
  • জয়তুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে, যা ঠান্ডা, কাশি ও ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধ করে।
  • জয়তুন তেল হজম সহায়ক এনজাইমগুলির কার্যকারিতা বাড়িয়ে খাবার দ্রুত হজমে সহায়তা করে।
  • জয়তুন তেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে। এটি বিশেষ করে শীতকালে ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
  • জয়তুনের ফ্যাট দ্রুত শক্তি উৎপাদন করে এবং দীর্ঘ সময় ধরে শরীরকে সক্রিয় রাখে।
  • জয়তুনে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ফুসফুসের প্রদাহজনিত সমস্যা যেমন ব্রঙ্কাইটিস বা অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • জয়তুনে থাকা ভিটামিন এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সহায়ক। এটি রাতকানা প্রতিরোধ করে।
  • জয়তুন তেল নখের ভঙ্গুরতা কমায় এবং নখকে মজবুত রাখে। এটি নখের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়ক।
  • জয়তুন মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করে এবং কগনিটিভ ফাংশন উন্নত করে। এটি মস্তিষ্কের বার্ধক্যজনিত রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
  • জয়তুন তেল শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়। এটি হার্টের জন্য উপকারী।
  • জয়তুন তেল পেশি ও জয়েন্টের নমনীয়তা বাড়ায়। এটি ক্রীড়াবিদদের জন্য বিশেষ উপকারী।
  • জয়তুন লিভার এবং কিডনি থেকে টক্সিন দূর করে শরীরকে পরিষ্কার রাখে।
  • জয়তুন তেলের ম্যাসাজ রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং মাথাব্যথা বা মাইগ্রেন কমাতে সাহায্য করে।
  • জয়তুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই কোষের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধ করে, যা অকাল বার্ধক্য রোধে সাহায্য করে।
  • জয়তুন তেলে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট নার্ভের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং স্নায়ুর সুস্থতা বজায় রাখে।
  • জয়তুন তেল ক্ষতিগ্রস্ত কোষের পুনর্গঠনে সহায়তা করে, যা শরীরের পুনর্স্থাপনে কার্যকর।
  • জয়তুন তেলে থাকা পুষ্টি উপাদান দাঁতের এনামেল মজবুত করে এবং মাড়ির প্রদাহ কমায়।
  • জয়তুন তেলে উপস্থিত ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য উপাদান হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে এবং হাড়ের রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
  • জয়তুন তেল শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং অতিরিক্ত ঘাম প্রতিরোধে সহায়ক।
  • জয়তুন তেলের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য সোরিয়াসিস, ডার্মাটাইটিস, এবং একজিমার মতো প্রদাহজনিত চর্মরোগের চিকিৎসায় সহায়ক।
  • জয়তুন তেল মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রকে সুরক্ষা দেয় এবং পারকিনসন্স বা মটর নিউরন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
  • জয়তুন তেল এবং ফল প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন, ফ্যাট, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে, যা একটি ডায়েট সাপ্লিমেন্ট হিসেবে কাজ করে।
  • জয়তুন ত্বকে মেলানিনের সঠিক মাত্রা বজায় রাখে, যা ত্বকের রঙের ভারসাম্য রক্ষা করে।
  • জয়তুনের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণাবলী বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর।
  • গরম আবহাওয়ায় জয়তুন শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং তাপজনিত ক্লান্তি প্রতিরোধ করে।
  • জয়তুনে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ফাইটোকেমিক্যাল শক্তি ও স্ট্যামিনা বৃদ্ধি করতে সহায়ক, বিশেষত ক্রীড়াবিদদের জন্য।
  • জয়তুন তেল অন্ত্রে মল নরম করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, যা হজম প্রক্রিয়া সহজ করে।
  • জয়তুন তেল চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগায়, যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক। এটি চুলকে ঘন এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলে।
  • জয়তুন তেল অন্ত্রের মিউকাস ঝিল্লিকে রক্ষা করে এবং আলসার প্রতিরোধ করে।
  • জয়তুন হজমে সহায়তা করে এবং অন্ত্রের গ্যাসের সমস্যা হ্রাস করে।
  • জয়তুন লিভার এবং কিডনি থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এবং শরীর পরিষ্কার রাখে।
  • জয়তুন তেল থাইরয়েড হরমোন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, যা মেটাবলিজম সঠিক রাখতে সাহায্য করে।
  • জয়তুন তেল পেশি পুনর্গঠনে কার্যকর, যা শরীরচর্চা বা আঘাতের পর পুনরুদ্ধারে সহায়ক।
  • জয়তুন তেলের স্বাস্থ্যকর ফ্যাট মনোযোগ বাড়াতে এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সহায়ক।
জয়তুন প্রকৃতির এক অলৌকিক খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। এর নিয়মিত ব্যবহার শরীর, মন এবং ত্বক সবক্ষেত্রেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যকর খাদ্য উপাদান হিসেবে সুপারিশযোগ্য। আশা করছি জয়তুন ফলের ১১০টি উপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।

জয়তুন ফল খাওয়ার নিয়ম

জয়তুন ফল খাওয়ার নিয়ম বা আলাদা কোনো উপায় নেই। এটা অন্য সব ফলের মতই খাওয়া যায় বা খেতে পারেন। তাপরও জয়তুনের পুষ্টিগুন ও সঠিক উপকারিতা পেতে কিছু উপায় বা নিয়ম মেনে খেতে হবে। কেননা এটি সঠিক নিয়মে না খেলে এর উপকারিতাগুলো পাবে না।  জয়তুন ফল খাওয়ার নিয়ম এবং সঠিক উপায় জানতে নিচের পরামর্শগুলো অনুসরণ করতে পারেন। তাহলে চলুন দেরি না করে দেখে নেওয়া যাক।

১. প্রাকৃতিক এবং কাঁচা অবস্থায়ঃ কাঁচা জয়তুন খাওয়ার আগে অবশ্যই তা ভালোভাবে ধুয়ে নিন। কাঁচা জয়তুনে লবণ বেশি থাকে, তাই লবণ কমানোর জন্য এটি কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাওয়া ভালো।

২. প্রক্রিয়াজাত জয়তুনঃ প্যাকেটজাত জয়তুন সাধারণত ভিনেগার বা স্যালাইনের মধ্যে সংরক্ষণ করা হয়। খাওয়ার আগে অতিরিক্ত লবণ ও অ্যাসিড দূর করতে ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নিন। সরাসরি স্ন্যাকস হিসেবে বা সালাদে মিশিয়ে খেতে পারেন।

৩. সালাদ বা রান্নায়ঃ জয়তুন ছোট ছোট টুকরা করে বা আস্ত দিয়েও সালাদে ব্যবহার করা যায়। এটি সালাদের স্বাদ এবং পুষ্টি বৃদ্ধি করে। পাস্তা বা পিজ্জায় যোগ করার জন্য জয়তুন টুকরা করে দিন।জয়তুন ব্যবহার করে চাটনি বা বিশেষ ডিপ তৈরি করতে পারেন।

৪. জয়তুন তেলঃ ১-২ চামচ জয়তুন তেল খালি পেটে সেবন করলে হজমশক্তি উন্নত হয় এবং ত্বক উজ্জ্বল থাকে। এই তেল সবজি, মাছ, বা মাংসের রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। জয়তুনের তেল সালাদের ড্রেসিং হিসেবে আদর্শ।

৫. নির্দিষ্ট সময় এবং পরিমাণঃ দৈনিক ৫-৭টি জয়তুন ফল খাওয়া স্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত। যদি প্রথমবার জয়তুন খেতে শুরু করেন, তবে অল্প পরিমাণে শুরু করে ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ান। অতিরিক্ত লবণাক্ত জয়তুন এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

৬. শুকনো জয়তুনঃ শুকনো জয়তুন স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটি স্যুপ, স্ট্যু বা কুসকুসের মতো খাবারের সাথে পরিবেশন করা যায়।

৭. গর্ভবতী এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে খাওয়ার নিয়মঃ গর্ভবতী নারীরা পরিমিত পরিমাণে জয়তুন ফল বা তেল খেতে পারেন। বিশেষ কোনো শারীরিক অসুস্থতায় ডাক্তারের পরামর্শ মেনে জয়তুন সেবন করুন।

৮. স্ন্যাকস হিসেবে সরাসরি খাওয়াঃ প্রক্রিয়াজাত বা কাঁচা জয়তুন ফল সরাসরি স্ন্যাকস হিসেবে খেতে পারেন। স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস হিসেবে এটি ক্ষুধা মেটাতে সহায়ক এবং পেট ভরাট রাখে।

৯. জয়তুন ফলের আচারঃ অনেক অঞ্চলে জয়তুন ফল থেকে আচার তৈরি করা হয়। আচার খাওয়ার সময় লবণের মাত্রা কম রাখতে হবে।

১০. ওজন নিয়ন্ত্রণেঃ জয়তুন ফ্যাটের একটি ভালো উৎস হলেও, এটি কম ক্যালোরির হওয়ায় ডায়েটে যোগ করা যেতে পারে। এটি লো কার্ব ডায়েটের জন্য আদর্শ কারণ এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে।

১১. হজমের জন্য সহজ উপায়ঃ খাবারের আগে বা পরে ১-২টি জয়তুন ফল খেলে হজম সহজ হয়। এটি অ্যাসিডিটি এবং গ্যাসের সমস্যা কমাতে সহায়ক।

১২. শিশুদের জন্য খাওয়ার নিয়মঃ শিশুদের জন্য প্রথমে জয়তুন ফলের পিউরি বা মিহি পেস্ট তৈরি করে দিন। ধীরে ধীরে তাদের ছোট টুকরা খাওয়ানোর অভ্যাস তৈরি করুন।

১৩. মিশ্রণের মাধ্যমে খাওয়াঃ জয়তুন ফলের সঙ্গে টমেটো, বেল পেপার, এবং অন্যান্য সবজি মিশিয়ে সালাদ তৈরি করুন। এটি প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে খেলে পুষ্টির ভারসাম্য বজায় থাকে।

১৪. জয়তুনের পাতা বা তেল দিয়ে বিশেষ ড্রেসিংঃ জয়তুন পাতা দিয়ে চা তৈরি করে পান করতে পারেন। এটি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যযুক্ত। জয়তুন তেল দিয়ে পাস্তা, ব্রেড বা গ্রিলড সবজিতে ড্রেসিং করুন।

১৫. নির্দিষ্ট পরিমাণ বজায় রাখাঃ প্রতিদিন ৫-৭টি জয়তুন ফল খাওয়া নিরাপদ এবং উপকারী। অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে লবণের পরিমাণ বেশি হলে স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।

জয়তুন তেলের উপকারিতা

জয়তুন তেলের উপকারিতা রয়েছে নানাবিধ। জয়তুন তেল রান্না এবং ত্বক পরিচর্যা করার জন্য অনেক জনপ্রিয় একটি তেল। নিয়মিত জয়তুন তেল খেলে শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমে উপকারী কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাছার লিভারের সমস্যা দূর করতে এই তেলের কোন জুড়ি নেই। অন্যদিকে, জয়তুন তেল নিয়মিত রান্নার সাথে খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। নিচে জয়তুন তেলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
 
হার্ট সুস্থ রাখেঃ হার্টের সকল কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখার জন্য এতে নিয়মিত বিরতিহীন রক্ত চলাচলের প্রয়োজন পরে। আমরা বিভিন্ন সময় খাবারের সাথে ক্ষতিকর ফ্যাট গ্রহণ করার কারণে তা হার্টের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত করে। নিয়মিত জয়তুনের তেল খাবারের সাথে গ্রহণ করলে তা থেকে অনেক উপকার পাওয়া যায়। সাধারণত অলিভ অয়েল দেহের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায় যা হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এতে হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
 
ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করেঃ ক্যানসারের জীবাণু যখন একবার দেহে আক্রমণ করে তখন তা অনেক ভয়াবহ আঁকার ধারণ করে। সাধারণত অভিজ্ঞ ডাক্তারগণ সব সময় ক্যানসার ভাইরাস প্রতিরোধ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ একবার এই রোগ হলে তখন আর ঠিক করা যায় না। যাইহোক, জয়তুন তেলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ই থাকে যা কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। তাছাড়া এই তেলে স্কোয়ালেন এবং টেরপেনয়েড নামক দুটি যৌগ থাকে যা সরাসরি ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ করে।
ময়েশ্চারাইজারঃ ময়েশ্চারাইজার হিসেবে আমরা প্রায় সময় নারিকেল তেল, সরিষার তেল বা অন্য কোন পণ্য ব্যবহার করি। ত্বককে সুস্থ ও আর্দ্র রাখার এই প্রচেষ্টা সব সময় আমাদের জন্য তেমন সুখকর হয় না। সাধারণত প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে জয়তুন তেলের কোনো জুড়ি নেই। এতে থাকা পুষ্টি উপাদান ত্বকের ডেড সেল রিপেয়ার করে, ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, আলট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন থেকে ত্বককে রক্ষা করা সহ শরীরের শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে। এই কারণে অন্যান্য তেলের থেকে জয়তুন তেল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ভালো কাজ করে।

অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টঃ অলিভ অয়েলে আছে Oleic acid এবং Squalene নামক উপাদান। যা অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে। এই ধরনের উপাদান আপনার ত্বককে নানা ক্ষতিকারক উপাদানের থেকে রক্ষা করে। ফলে ত্বক ভালো থাকে, বজায় থাকে প্রাকৃতিক জেল্লা। এছাড়া সহজেই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। ৪০ পেরলেও আপনার ত্বকের জেল্লা থাকে একদম তরুণীদের মতোই। 
 
ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম কারণ। বিশেষ করে স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হয় অতিরিক্ত ওজনের কারণে। তাছাড়া শরীরের ওজন বেড়ে গেলে চলা ফেরায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সকল অসুবিধা থেকে বাঁচতে নিয়মিত খাবারের সাথে জয়তুন তেল গ্রহণ করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কারণ ইনসুলিন নামক যে হরমোন রক্তে শর্করা বাড়িয়ে ওজন বৃদ্ধি করে তা জয়তুন তেল নিয়ন্ত্রণ করে। এতে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি বাসা বাঁধতে পারে না। শরীরে চর্বি না জমা হওয়ায় ওজন বৃদ্ধি পায় না যা স্থূলতা সমস্যার সমাধান হিসেবে কাজ করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করেঃ বর্তমান খাদ্যাভ্যাস এবং ভুল রুটিনের কারণে যে কারো ডায়াবেটিস হতে পারে। একবার কারো ডায়াবেটিস হলে তাকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে এবং তার খাওয়া-দাওয়ার প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে জয়তুন তেল খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী হবে। জয়তুন তেল টাইপ-২ ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী। আপনি যদি ডায়াবেটিসে ভুগেন, তাহলে আপনি আপনার খাদ্যতালিকায় জয়তুন তেল অন্তর্ভুক্ত করুন।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখেঃ কাজের চাপ, মানসিক চাপ এবং আরও নানা কারণে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আজকাল সাধারণ হয়ে উঠেছে। এটাকে গুরুত্ব সহকারে না নিলে তা হয়ে উঠতে পারে জীবনের শত্রু। অতএব, যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ থাকে তবে আপনার জীবনযাত্রার উন্নতি করা উচিৎ, ব্যায়ামের পাশাপাশি আপনার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। আপনার খাদ্যতালিকায় জয়তুন তেল অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ। এটি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করে। এতে পলিফেনল এবং মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের রক্তচাপের ওষুধের প্রয়োজনীয়তা কমাতেও এর ব্যবহার দেখা গেছে। তাছাড়া জয়তুন তেল থেকে তৈরি খাবারও খেতে পারেন।

অকাল বার্ধক্য দূর করেঃ শরীরের চামড়া যখন থেকে ভাঁজ হওয়া শুরু করে তখন থেকে আমাদের বুড়ো হওয়ার মিশন চালু হয়। তবে নিয়মিত জয়তুন তেল খাবারের সাথে গ্রহণ করলে বা প্রতিদিন ত্বকে মাখলে শরীরে যে বার্ধক্যের ছাপ পরে তা রোধ করা যায়। বিশেষ করে ভার্জিন অলিভ অয়েল এই বিষয়ে সব থেকে বেশি কাজ করে। সাধারণত দেহের চামড়া টাইট ও সতেজ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জয়তুন তেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। যা শরীরের অল্প বয়সে বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে।
 
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃ শরীরের জন্য সব থেকে বেশি ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ভার্জিন অলিভ অয়েলের অনেক সুনাম রয়েছে। সাধারণত এই কোলেস্টেরল উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করে এবং হার্টের নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি করে। জয়তুন তেল দেহের কোলেস্টেরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে খারাপ আর ভালোর মধ্যে সমতা বজায় রাখে। এই কারণে নিয়মিত জয়তুন তেল ব্যবহার করলে শরীরে এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
 
আলসার প্রতিরোধ করেঃ আলসার বা পেটে কোন ধরনের ঘা থাকলে তা দ্রুততার সাথে সমাধান করতে হয়। না হলে অনেক কোস্ট ভোগ করতে হয় যা স্বাস্থ্যহানির কারণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। পক্ষান্তরে জয়তুন তেলে থাকা পুষ্টিগুণ আলসার প্রতিরোধে অনেক ভালো কাজ করে। জয়তুন তেল অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল স্বভাব আলসার বা পেটে যে কোনো ধরনের ঘা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

হজম সমস্যা দূর করেঃ জয়তুন তেল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এতে খাবার রুচি ঠিক হয় এবং সহজেই খাবার হজম হয়। বিশেষত জয়তুন তেল নিয়মিত খাওয়ার কারণে তা পেটের সমস্যা গুলো ঠিক করে দেয়। এতে তা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধঃ জয়তুন তেল প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যথেষ্ট পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এই তেল গ্রহণ করলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে থাকা পলিফেনল স্মৃতিশক্তি উন্নত করে। অন্যদিকে জয়তুন তেল মানসিক চাপ প্রতিরোধ করে এবং ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী।

চোখের উপকার করেঃ চোখ আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সেই সঙ্গে সারাদিন কম্পিউটার, টিভি ও মোবাইলে ব্যস্ত থাকার কারণে আমাদের চোখের ওপর অনেক চাপ পড়ে। এ কারণে সময়ের সাথে সাথে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। চোখের যত্নে জয়তুন তেল ব্যবহার করতে পারেন। জয়তুন তেল দিয়ে চোখের চারপাশে হালকাভাবে ম্যাসাজ করতে পারেন। এটি আপনার চোখের চারপাশে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করবে, ক্লান্তি দূর করবে এবং আপনি সতেজ বোধ করবেন। ঘুমানোর আগে এটি করতে পারেন।

মস্তিষ্কের জন্য ভালোঃ স্ট্রেস, দুশ্চিন্তা এবং আরও অনেক কারণে মানুষের মানসিক অবস্থার ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে বয়স বাড়ার সঙ্গে অনেকেই আলঝেইমারের মতো রোগের শিকার হতে শুরু করেন। এতে একজন মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে সে তার স্মৃতিশক্তি হারাতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে জয়তুন তেল বা ভার্জিন জয়তুন তেল খেলে আলঝেইমারের মতো স্মৃতিশক্তির সমস্যা এড়ানো যায়। জয়তুন তেলে রয়েছে পলিফেনল, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা স্মৃতিশক্তি উন্নত করে। এছাড়াও জয়তুন তেল দিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করলে মানসিক চাপ থেকেও অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া যায় এবং মন শান্ত থাকে।

হাড় শক্তিশালী করেঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড় দুর্বল হতে শুরু করলেও আজকাল যুবকরাও এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেয়ারে বসে গাড়িতে যাতায়াত করলে হাড়ের ব্যথা হচ্ছে। সময়মতো এগুলোর যত্ন না নিলে মারাত্মক রূপ নিতে পারে। এটি এড়াতে আপনার খাদ্যতালিকায় জয়তুন তেল অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ। অস্টিওপোরোসিস জয়তুন তেল দ্বারা এড়ানো যায়। এটি হাড়ের সুরক্ষার চাকার মতো কাজ করে এবং নিয়মিত সেবনে হাড় মজবুত হয়। আপনি এটিকে রান্না করা খাবার হিসেবে খেতে পারেন অথবা সালাদে টপিং হিসাবে এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেল সেবন করতে পারেন।

প্রদাহ দূর করেঃ শরীরে প্রদাহের কারণেও অনেক রোগ হয়। প্রদাহ এড়াতে জয়তুন তেল খেতে পারেন। এটিতে ওলিওক্যানথল রয়েছে, যা প্রদাহ-বিরোধী ওষুধ আইবুপ্রোফেনের মতো কাজ করে । কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে, এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেলে ওলিওক্যানথল থাকায়, এর 50 মিলি গ্রহণ করলে 10 শতাংশ আইবুপ্রোফেন ওষুধ গ্রহণের সমান প্রভাব পড়ে। তাছাড়া এটি প্রদাহ দ্বারা সৃষ্ট আর্থ্রাইটিস থেকেও রক্ষা করতে পারে। কারণ এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রদাহ কমায়।

ত্বক সুস্থ রাখেঃ ত্বক এবং সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে, আজকাল বেশিরভাগ মানুষ প্রাকৃতিক জিনিসের উপর বেশি নির্ভরশীল এবং জয়তুন তেল সেই প্রাকৃতিক পদার্থগুলোর মধ্যে একটি। জয়তুন তেলে রয়েছে ভিটামিন-ই এবং অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য, যা ত্বককে সুস্থ ও উজ্জ্বল করে। আপনি যদি চান, আপনার খাদ্যতালিকায় জয়তুন তেল অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন বা আপনার ত্বকে লাগান, উভয় উপায়েই এটি উপকারী।

ব্রণ দূর করেঃ যে কোনো সময় ব্রণ হতে পারে এবং সৌন্দর্যে দাগ পড়তে পারে। মানুষেরা ব্রণের জন্য বিভিন্ন ক্রিম, লোশন এবং ফেস ওয়াশ ব্যবহার করে, তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। এমতাবস্থায় জয়তুন তেল ব্যবহার করলে মুখের ব্রণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। জয়তুন তেলে রয়েছে ভিটামিন ই, যা ত্বককে সুস্থ রাখে। এটি প্রদাহরোধী, যার কারণে ত্বককে ব্রণ এবং পিম্পলের সমস্যা থেকে রক্ষা করা যায়।

বলিরেখা দূর করেঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে বলিরেখা দেখা দিলেও অনেক সময় ধুলো-মাটি, দূষণ এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির কারণে মুখে বলিরেখা দেখা দিতে শুরু করে। মহিলারা বলিরেখার জন্য ক্রিম এবং লোশন ব্যবহার করেন, তবে এগুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা কেড়ে নেয়। তাই বলিরেখা কমাতে জয়তুন তেল ব্যবহার করুন। কারণ, জয়তুন তেল মুখের জন্য উপকারী এবং অ্যান্টি-এজিং হিসেবে কাজ করে। এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেলে রয়েছে সেকোইরিডয়েড পলিফেনল, যার অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

চুলের যত্নেঃ চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য জয়তুন তেল অদ্বিতীয়। বিশেষ করে মাথা থেকে খুশকি দূর করার পাশাপাশি মাথার ত্বকের পুষ্টি বৃদ্ধি করা ও চুল সতেজ ও শক্তিশালী করার জন্য জয়তুন তেল ব্যবহার করা হয়। এতে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল উপাদান মাথার ত্বকের পুষ্টিগুণ তারতম্যের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। এই কারণে চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য জয়তুন তেল ব্যবহার করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় জয়তুন তেলের ব্যবহার

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় জয়তুন তেলের ব্যবহার করার অনেক উপায় রয়েছে। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে মানুষ প্রতিদিনই পেট সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। কোষ্ঠকাঠিন্য সেই সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় জয়তুন তেল খেলে তা থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া যায়। কারণ, জয়তুন তেল গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্ট এবং পাকস্থলীর জন্য খুব উপকারী।জয়তুন তেলের পুরুত্ব এবং টেক্সচার পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায়। 

এটি নিয়মিত সেবনে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। জয়তুন তেল মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ। এছাড়াও, এটি ভিটামিন ই এবং কে, ওমেগা-9 ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এটি খেলে শুধু স্বাস্থ্যের উন্নতিই হয় না, পরিপাকতন্ত্রও ভালো হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর করা যায়। কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য আপনি বিভিন্ন উপায়ে জয়তুন তেল ব্যবহার করতে পারেন। এখানে আমরা আপনাকে কিছু উপায় বলছি।
কাঁচা জয়তুন তেল বা এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেলঃ প্রতিদিন দুবার এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেল খান। সকালে খালি পেটে এক চামচ খান এবং রাতে ঘুমানোর আগে দ্বিতীয় চামচ পান করুন। আপনি যদি খালি পেটে পান করতে ভুলে যান তবে খাবারের কয়েক ঘন্টা পরে পান করুন। আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর না হওয়া পর্যন্ত এটি নিয়মিত খান।

ফলের সাথে জয়তুন তেলঃ জয়তুন তেল ফল দিয়ে একসঙ্গে খেতে পারেন। ফাইবার সমৃদ্ধ ফল যেমন আপেল এবং কমলার সাথে জয়তুন তেল খেতে পারেন। সকালে প্রথমে এক চামচ জয়তুন তেল খান এবং তারপর ফল খান। এতে কাজ না হলে সন্ধ্যায় ফাইবার সমৃদ্ধ সবজির সাথে খেতে পারেন। যতক্ষণ না কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সেরে না যায়, ততক্ষণ এটি নিয়মিত সেবন করুন।

কমলার রসের সঙ্গে জয়তুন তেল প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস কমলার রসে এক চা চামচ জয়তুন তেল মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। এটি আপনার পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ করে তুলবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে আপনাকে সারাদিন সুস্থ রাখবে। এক কাপ কফির সঙ্গেও জয়তুন তেল পান করতে পারেন।

লেবুর রস দিয়ে জয়তুন তেলঃ কমলার রস পছন্দ না হলে লেবুর রসের সঙ্গে জয়তুন তেল নিতে পারেন। লেবুর পানিতে এক চামচ জয়তুন তেল মিশিয়ে পান করুন, এতে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে। আপনি চাইলে সন্ধ্যায় এক টুকরো লেবুর সঙ্গে এক চামচ জয়তুন তেল খান, যাতে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে দূরে থাকবেন।

দুধের সাথে জয়তুন তেলঃ আপনি যদি ফল বা ফলের রস খাওয়া পছন্দ না করেন তবে আপনি দুধের সাথে জয়তুন তেল খেতে পারেন। যাদের তীব্র কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তাদের জন্য এই রেসিপিটি খুবই কার্যকরী। আপনাকে যা করতে হবে তা হল এক কাপ দুধে এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেল মিশিয়ে সেবন করুন। প্রতিদিন দুধে জয়তুন তেল মিশিয়ে খালি পেটে খান। এটি নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

রুপচর্চায় জয়তুন তেলের ব্যবহার

রুপচর্চায় জয়তুন তেলের ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। জয়তুন তেল চুলের ও ত্বকের যত্নে অনেক ভালো কাজ করে। তো মনমত ফলাফল পাওয়ার জন্য চুলে ও ত্বকে নিয়মিত জয়তুন তেল মালিশের মত করে মেখে নিতে হবে। এতে চুলের গোঁড়া থেকে চুল শক্তিশালী ও উজ্জ্বল হয়ে আসবে। অন্যদিকে ত্বকের মধ্যে থাকা ড্যামেজ স্কিন সেল রিপেয়ার হয়ে ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল হবে। জেনে নিন রুপচর্চায় জয়তুন তেলের ব্যবহার 

১. ব্রণ দূর করতে জয়তুন তেলঃ যে কোনো সময় ব্রণ হতে পারে এবং সৌন্দর্যে দাগ পড়তে পারে। মানুষেরা ব্রণের জন্য বিভিন্ন ক্রিম, লোশন এবং ফেস ওয়াশ ব্যবহার করে, তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। এমতাবস্থায় জয়তুন তেল ব্যবহার করলে মুখের ব্রণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। জয়তুন তেলে রয়েছে ভিটামিন ই, যা ত্বককে সুস্থ রাখে। এটি প্রদাহরোধী, যার কারণে ত্বককে ব্রণ এবং পিম্পলের সমস্যা থেকে রক্ষা করা যায়।

ব্রণ দূর করতে জয়তুন তেলের ফেসপ্যাক
উপাদানঃ

  • ১/৩ কাপ দই
  • এক চতুর্থাংশ কাপ মধু
  • দুই টেবিল চামচ জয়তুন তেল
প্রস্তুতিঃ সব উপকরণ মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এবার মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট শুকাতে দিন। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার এই ফেসপ্যাক লাগাতে পারেন।

২. ত্বকের জন্য জয়তুন তেলঃ প্রত্যেকেই তাদের ত্বকের বিশেষ যত্ন নিতে চায় তাদের ত্বকের টোন উজ্জ্বল এবং নিশ্ছিদ্র দেখাতে। এর জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরণের ক্রিম ব্যবহার করে, তবে তাদের প্রভাব কেবল কিছু সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। তাই, আপনার সময়মতো কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না হয় এবং আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। এই জন্য, আপনি যদি কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার গ্রহণ করেন, তাহলে আপনার ত্বক অনেকাংশে উন্নত হবে। যেমন, জয়তুন তেল খেতে পারেন বা ত্বকে লাগাতে পারেন। এতে আপনার গায়ের রং এবং ত্বক উজ্জ্বল হবে।

ত্বকের জন্য জয়তুন তেল ব্যবহার করার উপায়
উপাদানঃ

  • দুই টেবিল চামচ জয়তুন তেল
  • এক চা চামচ লেবুর রস
  • এক চিমটি সামুদ্রিক লবণ
  • একটি বাটি
 একটি পাত্রে সব উপকরণ মিশিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি আপনার মুখের শুকনো অংশে লাগান। তার কিছুক্ষণ পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৩. মেকআপ রিমুভার হিসেবে জয়তুন তেলঃ প্রায় প্রতিটি মেয়ে এবং মহিলা মেকআপ করতে পছন্দ করে। কেউ হালকা মেকআপ পছন্দ করেন, কেউ একটু গাঢ়। তবে মেকআপ হালকা হোক বা গাঢ়, রাতে ঘুমানোর আগে মেকআপ মুছে ঘুমানো দরকার। অনেক সময় মহিলারা বাজারে পাওয়া মেকআপ রিমুভার বেছে নিতে বিভ্রান্ত হন। এই পরিস্থিতিতে জয়তুন তেল ব্যবহার করা সবচেয়ে ভাল সমাধান। এটি আপনার ত্বকে নরমভাবে কাজ করবে এবং সহজেই আপনার মেকআপ তুলে ফেলবে।
মেকআপ রিমুভার হিসেবে জয়তুন তেল ব্যবহার করার নিয়মঃ

  • জয়তুন তেলে তুলা ভিজিয়ে তা দিয়ে মুখ হালকা করে মুছে নিন।
  • চোখের নিচের মেকআপ দূর করতে জয়তুন তেল ব্যবহার করতে পারেন।
  • মেকআপ অপসারণের পাশাপাশি এটি আপনার ত্বককে করবে কোমল।
৪. ঠোঁটের জন্য জয়তুন তেলঃ আজকাল সেলফির যুগ আর পাউট ছাড়া সেলফি তোলা মজার নয়। এমন পরিস্থিতিতে আপনার ঠোঁট সুন্দর হওয়া জরুরি, তাই ঠোঁটের যত্নে জয়তুন তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি আপনার ঠোঁটকে নরম ও কোমল করে তুলবে এবং সুন্দর করে তুলবে।

ঠোঁটের জন্য জয়তুন তেল ব্যবহারের নিয়ম
উপাদানঃ

  • গুঁড়ো বাদামী চিনি
  • জয়তুন তেল কয়েক ফোঁটা
  • লেবুর রস
 সব উপকরণ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। ঘুমানোর আগে এই মিশ্রণটি ঠোঁটে লাগান।

৫. ত্বক সুস্থ রাখতে জয়তুন তেলঃ ত্বক এবং সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে, আজকাল বেশিরভাগ মানুষ প্রাকৃতিক জিনিসের উপর বেশি নির্ভরশীল এবং জয়তুন তেল সেই প্রাকৃতিক পদার্থগুলোর মধ্যে একটি। জয়তুন তেলে রয়েছে ভিটামিন-ই এবং অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য, যা ত্বককে সুস্থ ও উজ্জ্বল করে। আপনি যদি চান, আপনার খাদ্যতালিকায় জয়তুন তেল অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন বা আপনার ত্বকে লাগান, উভয় উপায়েই এটি উপকারী।

৬. বলিরেখা দূর করতে জয়তুন তেলঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে বলিরেখা দেখা দিলেও অনেক সময় ধুলো-মাটি, দূষণ এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির কারণে মুখে বলিরেখা দেখা দিতে শুরু করে। মহিলারা বলিরেখার জন্য ক্রিম এবং লোশন ব্যবহার করেন, তবে এগুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা কেড়ে নেয়। তাই বলিরেখা কমাতে জয়তুন তেল ব্যবহার করুন। কারণ, জয়তুন তেল মুখের জন্য উপকারী এবং অ্যান্টি-এজিং হিসেবে কাজ করে। এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেলে রয়েছে সেকোইরিডয়েড পলিফেনল, যার অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

৭. চুলের জন্য জয়তুন তেলঃ চুলের বৃদ্ধির জন্য জয়তুন তেলঃ লম্বা এবং ঘন চুল প্রায় প্রতিটি মেয়ের ইচ্ছা। এর জন্য,অনেকে বিভিন্ন ধরণের শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করেন, তবে সেগুলোর কোনও বিশেষ প্রভাব নেই। এমতাবস্থায় প্রাকৃতিক প্রতিকার গ্রহণ করলে চুল অনেকাংশে সুস্থ রাখা যায়। এই প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলোর মধ্যে একটি হল চুলে তেল লাগানো, যাতে চুলের পুষ্টি এবং আর্দ্রতা অটুট থাকে। জয়তুন তেল আপনার চুলের জন্য অনেক উপকারী। জয়তুন তেল অন্য উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে লাগালে ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। জয়তুন তেল পুষ্টিতে ভরপুর, যা আপনার চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক।

চুলের বৃদ্ধির জন্য জয়তুন তেলের ব্যবহার
উপাদানঃ

  • এক কাপ জয়তুন তেল
  • দুই চামচ মধু
  • একটি ডিমের হলুদ অংশ
প্রস্তুতিঃ সব উপকরণ মিশিয়ে একটি ভালো মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার এই পেস্টটি চুলে লাগিয়ে কয়েক মিনিট শুকাতে দিন। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে চুলে কন্ডিশনার লাগান।

৮. খুশকির জন্য জয়তুন তেলঃ খুশকির জন্য বিভিন্ন ধরণের শ্যাম্পুগুলো অল্প সময়ের জন্য কাজ করে এবং খুশকি ফিরে আসে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ শ্যাম্পু বদল করলেও তেলের যত্ন নেওয়া হয় না। আপনার তেল আপনার খুশকিকেও অনেক বেশি প্রভাবিত করে। তাই খুশকি দূর করতে জয়তুন তেল ব্যবহার করতে পারেন। জয়তুন তেলের প্যাক চুলে লাগাতে পারেন.

খুশকির জন্য জয়তুন তেল হেয়ার প্যাক
উপাদানঃ

  • একটি ডিমের সাদা অংশ
  • দুই টেবিল চামচ জয়তুন তেল
  • শাওয়ার ক্যাপ
প্রস্তুতিঃ একটি পাত্রে জয়তুন তেল দিয়ে ডিমের সাদা অংশ ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি চুলে লাগান এবং শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে দিন। তারপর ১৫   থেকে ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপরে ঠান্ডা জল এবং হালকা শ্যাম্পু দিয়ে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন, হালকা গরম বা গরম পানি একেবারেই ব্যবহার করবেন না। এর পর কন্ডিশনার লাগাতে পারেন। সপ্তাহে এক বা দুবার এই প্যাক লাগাতে পারেন।

৯. চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে জয়তুন তেলঃ চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে তেল মালিশ জরুরি। জয়তুন তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে আপনার চুল সুস্থ ও মজবুত হবে। জয়তুন তেলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি, যা শুধু চুলকে ঘন, মজবুত করে না, বরং চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে, চুলকে নরম ও চকচকে দেখায়। তাই চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে নিয়মিত জয়তুন তেল ব্যবহার করুন।

দ্রষ্টব্যঃ আপনি যদি হেয়ার প্যাক লাগাতে পছন্দ না করেন তবে আপনি জয়তুন তেলের সাথে বাদাম তেল মিশিয়ে লাগাতে পারেন। রাতে ঘুমানোর আগে চুলে লাগিয়ে হাতে হালকাভাবে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। তার পরদিন সকালে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মাথায় রাখবেন চুলের গোড়ায় কন্ডিশনার লাগাবেন না।

ত্বকের যত্নে জয়তুন তেলের উপকারিতা

ত্বকের যত্নে জয়তুন তেলের উপকারিতা রয়েছে প্রচুর। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও মেয়েদের রূপচর্চায় জয়তুন তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। ত্বকের নিয়মিত যত্নে তেলটি বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে সহায়তা করে। নানান ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ এই তেল আমাদের মুখে বয়সের ছাপ দূর করতে জয়তুন তেল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। চলুন জেনে নিই ত্বকে যত্নে জয়তুন তেল ব্যবহারের কিছু উপকারিতা।
১. ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করেঃ আমাদের ত্বকে পানির পরিমাণ কমে গেলে ত্বক রুক্ষ হতে শুরু করে। নিয়মিত অলিভ ওয়েলের ব্যবহার এই ঘাটতির আশঙ্কা দূর করে। প্রচুর ভিটামিন এ ও ই-এর পাশাপাশি এই তেলে ভিটামিন ডি ও কে থাকে, যা ত্বকের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশকেও সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেয়। তাই এটিকে সরাসরি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে বা ক্রিমের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

২. ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু ঠিক করতেঃ কনুই বা হাঁটুর ছিলে যাওয়া চামড়া অথবা কোনো হালকা আঘাতে অলিভ ওয়েল ব্যবহার বেশ কার্যকরী। পাশাপাশি মুখের ব্রণ রোধেও ভূমিকা রাখে এটি। ব্রণের জন্য দায়ী বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টিতে বাধা দেয় তেলটির বিভিন্ন উপাদান। রোজাসিয়া ও সোরিয়াসিসের মতো রোগগুলোকেও বেশি বাড়তে দেয় না এটি।

৩. ত্বকে উজ্জলতা আনেঃ প্রত্যেকেই তাদের ত্বকের বিশেষ যত্ন নিতে চায় তাদের ত্বকের টোন উজ্জ্বল এবং নিশ্ছিদ্র দেখাতে। এর জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরণের ক্রিম ব্যবহার করে, তবে তাদের প্রভাব কেবল কিছু সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। তাই, আপনার সময়মতো কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না হয় এবং আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। এই জন্য, আপনি যদি কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার গ্রহণ করেন, তাহলে আপনার ত্বক অনেকাংশে উন্নত হবে। যেমন, জয়তুন তেল খেতে পারেন বা ত্বকে লাগাতে পারেন। এতে আপনার গায়ের রং এবং ত্বক উজ্জ্বল হবে।

৪ মুখের সজীবতায়ঃ আমাদের ত্বকের অন্যতম উপাদান কোলাজেনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে অলিভ ওয়েল। তাছাড়া এতে থাকা অলিক এসিড ত্বকের নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে, মুখের ত্বককে করে তোলে আরও নরম, এনে দেয় মুখের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা।

৫. বয়সের ছাপ দূর করতেঃ সময়ের সঙ্গে মুখে-শরীরে বয়সের ছাপ পড়া স্বাভাবিক ব্যাপার। তার সঙ্গে যদি যুক্ত হয় দূষিত পরিবেশ, মানসিক চাপ বা অন্য কোনো কারণ, তাহলে তো কথাই নেই। আর এর সমাধানেও আছে অলিভ ওয়েলে। এই তেলে পলিফেনল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা বয়স্ক হওয়ার জন্য দায়ী ফ্রি র‍্যাডিকেল তৈরি হতে দেয় না। পাশাপাশি সূর্যের আলো থেকেও মুখকে সুরক্ষা দেয়।

৬. ত্বক পরিষ্কার রাখতেঃ প্রতিনিয়তই আমাদের ত্বককে পরিষ্কার রাখতে হয়। অলিভ ওয়েল সেই নিয়মিত কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। মুখ থেকে মেকআপ বা সানস্ক্রিন ক্রিম তোলার ক্ষেত্রে তেলটি কাজে দেবে। মেকআপ তোলার জন্য বিভিন্ন সামগ্রী বাজারে পাওয়া গেলেও, এগুলোতে মুখের স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু অলিভ ওয়েল সরাসরি বা প্যাডে মেখে মুখে লাগালে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকে না।

জয়তুন তেলের প্রকারভেদ

জয়তুন তেলের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন অনেকে।জয়তুন তেল অনেক ধরনের আছে, যেমন রান্নার জন্য আলাদা এবং ত্বক ও চুলের জন্য আলাদা। জয়তুন তেল বা Olive Oil এ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে, যেগুলো আমাদের শরীরকে সুস্থ এবং সুন্দর রাখে। বাজারে প্রাপ্ত কয়েক রকমের  জয়তুনের তেল বা অলিভ অয়েল রয়েছে যা নিম্নে আলোচনা করা হলো।

এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেলঃ জয়তুন তেলের কথা বলতে গেলে এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেল হল সবচেয়ে ভালো জয়তুন তেল। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেলের পরিমাণ অন্যান্য জয়তুন তেলের তুলনায় বেশি হলেও এতে অ্যাসিডের পরিমাণ কম। এই তেল অল্প আঁচে রান্না করলে পুড়ে যেতে পারে। তাই এটি দিয়ে রান্না করার সময় একটু যত্ন নেওয়ার দরকার হয়। হ্যাঁ, আপনি চাইলে সালাদ, সবজি বা অন্যান্য খাবারে টপিং হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। তবে অন্যান্য জয়তুন তেলের তুলনায় এর দাম অনেক বেশি।

ভার্জিন জয়তুন তেলঃ এই জয়তুন তেল খুবই জনপ্রিয়, এটি রান্নায় ব্যবহার করা হয় এবং এতে অ্যাসিডের পরিমাণও কম থাকে। এটি তৈরিতে কোনো রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় না। ভার্জিন জয়তুন তেল এবং এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেলের মধ্যে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। যেমন, এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেল টপিং হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে বেশি ভাজার জন্য ব্যবহার করা যাবে না। 

পোমেস গ্রেড জয়তুন তেলঃ এটিও এক ধরনের জয়তুন তেল এবং এটি বাজারে পাওয়া যায়। এটি রান্নায় সবচেয়ে কম ব্যবহৃত হয়। মানের দিক থেকে এটি এক্সট্রা ভার্জিন এবং ভার্জিন জয়তুন তেলের চেয়ে কম।
ল্যাম্প্যান্ট জয়তুন তেলঃ এই ধরনের জয়তুন তেল ত্বক এবং চুলে, খাওয়া বা ব্যবহার করার জন্য নয়। এটি শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত উদ্দেশ্যে এবং জ্বালানীর জন্য ব্যবহৃত হয়।

জয়তুন তেলের অপকারিতা

জয়তুন তেলের অপকারিতা জানতে চেয়েছেন অনেকেই। জয়তুন তেল (Olive Oil) সাধারণত স্বাস্থ্যকর এবং বহু উপকারিতা রয়েছে। সবকিছুরই উপকারিতা এবং অপকারিতা দুটোই আছে, ঠিক একইভাবে জয়তুন তেলেরও কিছু অপকারিতা রয়েছে। অতিরিক্ত ব্যবহার বা নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এটি কিছু অপকারিতা বা ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। নিচে জয়তুন তেলের সম্ভাব্য অপকারিতাগুলো উল্লেখ করা হলো।

অতিরিক্ত ক্যালোরিঃ জয়তুন তেল একটি উচ্চ-ক্যালোরি তেল। অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। বিশেষ করে যদি এটি দৈনন্দিন ডায়েটের ক্যালোরি চাহিদার বেশি হয়ে যায়।

অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়াঃ কিছু মানুষের জয়তুন তেলে অ্যালার্জি হতে পারে। এটি ত্বকের উপর ব্যবহার করলে র‍্যাশ, লালচে ভাব বা চুলকানি দেখা দিতে পারে।

রক্তচাপের উপর প্রভাবঃ জয়তুন তেল রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তবে যাদের রক্তচাপ ইতিমধ্যে কম (Hypotension), তাদের জন্য এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে।

মেয়াদ উত্তীর্ণ তেলের ক্ষতিঃ মেয়াদ উত্তীর্ণ বা ঠিকমতো সংরক্ষণ না করা জয়তুন তেল ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে, কারণ এটি অক্সিডাইজড হয়ে যেতে পারে এবং এতে ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিক্যাল তৈরি হতে পারে।

ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সতর্কতাঃ জয়তুন তেল ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে। তবে অতিরিক্ত গ্রহণ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রায় অনিয়ম আনতে পারে।

ওমেগা-৬ এবং ওমেগা-৩ ভারসাম্যহীনতাঃ জয়তুন তেলে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যদি এটি অত্যধিক পরিমাণে গ্রহণ করা হয় এবং ডায়েটে যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা-৩ না থাকে, তবে ওমেগা-৬ এবং ওমেগা-৩ এর ভারসাম্যহীনতা হতে পারে। এটি প্রদাহ বা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।

লিভার এবং পিত্তথলির সমস্যাঃ যারা লিভার বা পিত্তথলির সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য অতিরিক্ত জয়তুন তেল গ্রহণ জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এটি পিত্তথলিতে পাথর বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অস্বস্তি বাড়াতে পারে।

খাদ্যনালীর সমস্যাঃ জয়তুন তেল অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে কিছু মানুষের খাদ্যনালীর নিচের অংশে (Esophageal sphincter) চাপ কমিয়ে দিতে পারে, যার ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।

বাচ্চাদের জন্য সঠিক নয়ঃ বেশি পরিমাণ জয়তুন তেল শিশুদের ক্ষেত্রে হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তেল থেকে আসা অতিরিক্ত ফ্যাট তাদের অপুষ্টি বা ডায়রিয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

সংরক্ষণের সমস্যাঃ জয়তুন তেল যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করা হয় (যেমন আলো বা তাপের সংস্পর্শে), তবে এটি অক্সিডাইজড হয়ে যায় এবং এর গুণগত মান নষ্ট হয়। এ ধরনের তেল গ্রহণ শরীরে ফ্রি র‌্যাডিকাল বাড়াতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

ব্লাড সুগার কমানোর সম্ভাবনাঃ যারা নিয়মিত ইনসুলিন বা ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহণ করছেন, তাদের জন্য জয়তুন তেলের অতিরিক্ত ব্যবহার রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দিতে পারে। এটি হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণ হতে পারে।

পেটের অস্বস্তিঃ যদি জয়তুন তেল খালি পেটে খাওয়া হয়, তবে অনেকের ক্ষেত্রে পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি হতে পারে। এটি বিশেষ করে হজমশক্তি দুর্বল মানুষের ক্ষেত্রে বেশি ঘটে।

প্রদাহ সৃষ্টিকারী উপাদানঃ নিম্নমানের জয়তুন তেল বা মিশ্রিত তেল (যা বাজারে প্রায়ই পাওয়া যায়) শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। এগুলোতে প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় ক্ষতিকর রাসায়নিক যোগ করা হয়।

হরমোনের উপর প্রভাবঃ জয়তুন তেল অতিরিক্ত ফ্যাট সরবরাহ করে, যা কিছু ক্ষেত্রে শরীরের হরমোন উৎপাদন প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এটি বিশেষত মহিলাদের মাসিক চক্র বা হরমোন-সংশ্লিষ্ট সমস্যায় প্রভাব ফেলতে পারে।

জয়তুন ফল খাওয়ার অপকারিতা

জয়তুন ফল খাওয়ার অপকারিতা জানতে চেয়ে অনেকেই গুগল কিংবা ইউটিউবে সার্চ করে থাকেন।জয়তুন ফল খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি অপকারিতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে। সাধারণত এটি নিরাপদ হলেও কিছু মানুষের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। নিচে এর সম্ভাব্য অপকারিতাগুলো উল্লেখ করা হলো।

  • প্রক্রিয়াজাত জয়তুন ফল, বিশেষত যেগুলো সংরক্ষণ করার জন্য লবণ পানি বা ব্রাইন ব্যবহৃত হয়, সেগুলোতে উচ্চমাত্রার সোডিয়াম থাকতে পারে। এটি উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • কিছু মানুষের ক্ষেত্রে জয়তুন বা এর তেল থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। এতে চুলকানি, ফোলাভাব, শ্বাসকষ্ট বা ত্বকে র‍্যাশ হতে পারে।
  • জয়তুনে ক্যালোরি ও ফ্যাট (বিশেষত স্বাস্থ্যকর ফ্যাট) বেশি থাকে। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে হজমে সমস্যা, যেমন পেট ফাঁপা বা ডায়রিয়া হতে পারে।
  • বাজারে কিছু নিম্নমানের জয়তুনে রাসায়নিক প্রক্রিয়াজাত করা হয়, যা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • অলিভ বা অলিভ তেল রক্তচাপ ও রক্ত শর্করা কমাতে সাহায্য করে। তবে যারা রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ সেবন করেন, তাদের জন্য এটি অতিরিক্ত প্রভাব ফেলতে পারে।
  • জয়তুনে কিছু প্রাকৃতিক যৌগ রয়েছে যা সাধারণত উপকারী, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে এটি ক্যালসিয়ামের শোষণে প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে এটি হাড় দুর্বল করার কারণ হতে পারে।
  • অলিভ ফলের কিছু উপাদান রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াকে ধীর করতে পারে। যারা রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যায় ভুগছেন বা এ ধরনের ওষুধ গ্রহণ করছেন, তাদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
  • প্রক্রিয়াজাত জয়তুনে উচ্চ মাত্রার সোডিয়াম (লবণ) থাকে, যা কিডনির কার্যক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত যারা কিডনির রোগে ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে এটি ক্ষতিকর হতে পারে।
  • জয়তুনে উপস্থিত কিছু প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি অন্ত্রের ভারসাম্যহীনতার কারণ হতে পারে।
  • নিম্নমানের বা অপর্যাপ্ত প্রক্রিয়াজাতকরণে তৈরি জয়তুনে আর্সেনিক বা অন্যান্য ভারী ধাতু উপস্থিত থাকতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে।
  • জয়তুন বা এর তেলে থাকা উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হলেও অতিরিক্ত গ্রহণে এটি হঠাৎ রক্তচাপ কমিয়ে দিতে পারে, যা মাথা ঘোরা বা দুর্বলতার কারণ হতে পারে।
  • গর্ভবতী নারীদের জন্য জয়তুন সাধারণত নিরাপদ হলেও অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। প্রক্রিয়াজাত জয়তুনে থাকা লবণ গর্ভাবস্থার রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
  • যদিও এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতায় হঠাৎ পরিবর্তন আনতে পারে।
  • অলিভ তেলের মতো, জয়তুন ফলও পিত্তথলির কাজ উদ্দীপিত করে। পিত্তথলিতে পাথর থাকলে এটি ব্যথা বাড়াতে পারে।

জয়তুন ফলের ১১০টি উপকারিতা সম্পর্কে শেষকথা

জয়তুন ফলের ১১০টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে উপরে আলোচনা করেছি, যা আপনার জন্য উপকৃত হবে। ত্বীন ফলে আছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে, ভিটামিন-বি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক, কপার, আইরন ইত্যাদি। এছাড়াও এতে আছে প্রচুর পুষ্টিকর ও খনিজ উপাদান। যেমন—সোডিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস ও আয়োডিন।

এই উপাদান গুলো শরীরে দরকারি ভিটামিন ও অ্যামাইনো এসিড সরবরাহ করে। জলপাইতে আছে অলেইক এসিড, আর এই অলেইক এসিড হার্টের সুরক্ষার কাজ করে। ত্বীন ফলে অনেক উপকারী উপাদান থাকলেও কোন ক্যালরি এবং ফ্যাট নেই বললেই চলে। আশা করছি জয়তুন ফলের ১১০টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে উপকৃত হয়েছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url