কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও কালোজিরার ৪০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও কালোজিরার ৪০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন আজকের
আর্টিকেলে। ইসলাম ধর্মমতে কালোজিরা সকল রোগের মহাঔষুধ। একটি বিশুদ্ধ হাদীসে নবী
করীম হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কালোজিরাকে মৃত্যু ব্যতিত সকল রোগের ঔষধ হিসেবে স্পষ্ট
ও সুনির্দিষ্টভাবে নির্দেশ করেছেন।
হযরত আবু হুরাইরা (রঃ) থেকে বর্নিত রাসুল (সাঃ) এরশাদ ফরমায়েছেন যে, তোমরা এই কালোজিরার ব্যবহারকে নিজেদের জন্য বাধ্যতামুলক করে নাও। কেননা মৃত্যু
ব্যতীত সকল রোগের নিরাময় রয়েছে কালোজিরার মধ্যে। নিচে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
পেইজ সূচিপত্রঃ কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও কালোজিরার উপকারিতা
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম রয়েছে অনেক, যা মেনে চললে শরীরের জন্য উপকারী। যেমন,
যদি আপনার পেট খারাপ থাকে, তাহলে সকালে ও বিকেলে কালোজিরা হালকা ভেজে গুঁড়ো
করে ৫০০ মিলিগ্রামের মতো (৭-৮ চামচ) দুধে মিশিয়ে ৭ দিন খেলে ভালো ফল পাবেন।
ঠাণ্ডা বা কাশির সমস্যা হলে, ১ চা চামচ কালোজিরার তেল ১ চা চামচ মধুর সাথে
মিশিয়ে অথবা ১ কাপ গরম লাল চায়ের সাথে আধা চা চামচ তেল মিশিয়ে দিনে তিনবার
খেতে পারেন।
কালোজিরে শরীরকে গরম করে দেয়। এই কারণে দিনে তিন গ্রামের বেশি ব্যবহার করা
উচিত নয়। বিশেষ করে সেইসব মানুষ, যাদের দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক সময়তেই
একটু বেশির দিকে থাকে, যাঁদের উচ্চ-রক্তচাপের সমস্যা আছে, যাঁরা গর্ভবতী এবং
৫ বছরের ছোট বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। শিশুরা দিনে ১ গ্রাম মতো কালোজিরে
খেতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, সব খাবারই নিয়ম করে খেলে শরীরের জন্য ভালো। এতে
শরীর সঠিক পুষ্টি পায় জেনে নিন কালোজিরা খাওয়ার কিছু নিয়মঃ
সকালে খালি পেটেঃ সকালে কালোজিরা খেলে রাতের চেয়ে বেশি উপকার পাওয়া
যায়। প্রতিদিন সকালে এক চিমটি (প্রায় ১ থেকে ২.৫০ গ্রাম) কালোজিরা খেলে
শরীরের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কালোজিরা এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে খেলে
রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাও ঠিক থাকে। সকালে গরম ভাত বা রং চায়ের সাথে কালোজিরা
খেলে নারী-পুরুষ উভয়ের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে এবং যৌন সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য
করে। মধুর সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খাওয়াও অনেক উপকারী। তবে মনে রাখবেন, কখনো
কাঁচা কালোজিরা খাবেন না, এতে পেট খারাপ হতে পারে। প্রয়োজন হলে তেল ছাড়া
হালকা ভেজে বোতলে ভরে রেখে দিন। চাইলে ভর্তার সাথে বা কালোজিরার ভর্তা করেও
খেতে পারেন।
ওজন কমাতেঃ কালোজিরার সাথে লেবুর রস মিশিয়ে সেটা ভালোভাবে ভিজিয়ে রেখে
রোদে শুকিয়ে নিন। দুই থেকে তিন দিন পর শুকানো চার-পাঁচটা বীজ নিয়ে দুপুর ও
বিকালে পানির সাথে খেলে দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন।আরেকটি উপায় হলো, এক চিমটি
কালোজিরা পিষে গুঁড়া তৈরি করুন। সেটা ১ গ্লাস গরম পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে
নিন, তারপর ১ চামচ মধু ও ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খালি পেটে সকালে পান করুন।
এভাবে নিয়মিত খেলে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই ভালো ফলাফল পাবেন।
এছাড়া, একটি বাটিতে অল্প পরিমাণ কালোজিরা নিয়ে সেটা হালকা গরম পানির সাথে
খেয়ে নিতে পারেন। অথবা ১ গ্লাস পানিতে ৮ থেকে ১০টি কালোজিরা সারারাত ভিজিয়ে
সকালে সেই পানি ছেঁকে পান করলে ওজন কমতে সাহায্য করবে।
চিবিয়ে খাওয়াঃ কালোজিরা আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী, তাই এটি
খাওয়ার নিয়ম ঠিক থাকলে আরও ভালো। আপনি কালোজিরা ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে
অল্প আঁচে তেল ছাড়া হালকা ভেজে নিতে পারেন। এরপর সকালে বা রাতে কয়েকটা
কালোজিরা দানা চিবিয়ে খেলে শরীর ভালো থাকে। যদি কাঁচা কালোজিরা খান, তবে একটু
সাবধানে খাবেন, কারণ বেশি খেলে পেট খারাপ হতে পারে। তবে ভাজা কালোজিরা খাওয়া
নিরাপদ, তাই সেটা একটি বোতলে ভরে রাখুন। যখন ইচ্ছে হয়, তখন অল্প অল্প করে
খেতে পারবেন। এটি পেটের জন্য সহজ এবং নিয়মিত খেলে শরীরও ভালো থাকে।
মধু ও কালোজিরাঃ ১ চা চামচ কালোজিরার তেলের সাথে ১ চা চামচ মধু
মিশিয়ে দিনে ৩ বার করে ২ থেকে ৩ সপ্তাহ খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ২ বছরের
বেশি বয়সের শিশুদের মধু ও কালোজিরা খাওয়ানোর অভ্যাস করলে তাদের মস্তিষ্কের
কার্যকারিতা ও স্মৃতিশক্তি বাড়ে। সকালে মধু আর কালোজিরা একসাথে খেলে শারীরিক
দুর্বলতা কমে যায়। যারা বাতের ব্যথায় ভুগছেন, তারা কালোজিরার তেল আর মধু
খেলে উপকার পাবেন। সকালে খালি পেটে কালোজিরা ও মধু খেলে ব্লাড
প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর যদি কারও খাবারে অনীহা থাকে, তবে খাবারের সাথে
নিয়ম করে কালোজিরা আর মধু মিশিয়ে খেলে খাবারের স্বাদ বাড়বে।
কালোজিরার তেলঃ আপনি চাইলে কালোজিরার তেল বানিয়ে নিতে পারেন। আজকাল
দোকানে কালোজিরার তেল পাওয়া যায়। কালোজিরারা তেল বানানো তেমন কোন কঠিন কাজ নয়।
আপনি কালিজিরা ভাল মত ধুয়ে তাতে হালকা তেল মিশিয়ে ঘানিতে ভাঙ্গালেই আপনি পেয়ে
যাবেন কালিজিরা তেল, এই তেল আপনি রান্নার কাজে, বা চানাচুর মুড়ি মাখিয়ে ও খেতে
পারেন। কালিজিরার তেল আসলে সবসময় ব্যবহার করা যায়।
কালোজিরার গুঁড়াঃ আপনি চাইলে কালোজিরার গুঁড়া করে মশলা হিসেবে ব্যবহার
করতে পারেন। আপনি যেমন হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া , বা ধনিয়া গুঁড়া তরকারীতে
ব্যবহার করেন, ঠিক তেমনি কালোজারার গুঁড়া তরকারীতে দিতে পারেন, এতে আলাদা একটি
ফ্লেভার পাবেন, তা আপনার রান্নাকে আরও সুস্বাদু করবেন। তাছাড়া কালিজিরার গুঁড়া
রেমেডির সাথে মিলিয়ে ও খেতে পারেন। অনেকে ওজন কমানোর জন্য এভাবে কালিজিরার
গুঁড়া খেয়ে থাকেন।
কালোজিরার ভর্তাঃ কালিজিরার ভর্তা বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত পদ। এই
কালিজিরারা ভর্তা খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি উপকারী। আপনার খুব বেশি ঠাণ্ডা
লেগেছে আপনি যদি একটু কষ্ট করে কালিজিরার ভর্তা বানিয়ে খান, তাহলে দুইদিনের
মধ্যেই আপনার ঠাণ্ডার সমস্যা কমে যাবে আপনি আরাম পাবেন, এমনকি ডাক্তাররাও
কালিজিরার ভর্তা খেতে বলে থাকে। গরম ভাত দিয়ে কালিজিরার ভর্তা খুবই মজাদার এবং
লোভনীয় খাবার।
কালোজিরার ক্যাপসুলঃ ফার্মেসিতে এখন অনেক ধরনের কালিজিরার ক্যাপসুল
পাওয়া যায়, যারা কর্মজীবী মানুষ এবং যাদের কালিজিরার তেল,মধু কিংবা আচার খাওয়ার
সময় নেই, তাদের জন্য কালিজিরার ক্যাপসুল তৈরি করা হয়েছে।আপনি এই ক্যাপসুল
প্রতিদিন সকালে নাস্তা খাওয়ার পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে এই ক্যাপসুল নিতে পারেন।
এতে আপনি উপকার পাবেন।
কালোজিরার ৪০টি উপকারিতা
কালোজিরার ৪০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন আর্টিকেলের এই অংশটি
থেকে।কালোজিরাকে সব রোগের মহাঔষধ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কালোজিরা খাওয়ার
নানা উপকারিতা রয়েছে। এর উপকারিতাগুলোর কথা বলে শেষ করা যাবে না। তবুও আপনাদের
বোঝার ও জানানোর সুবিধার্থে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতাগুলো সম্পর্কে
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করলাম।
আরও পড়ুনঃ চিয়া সীড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
১. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ কালোজিরায় রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ, যা
শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।এরজন্য কালোজিরাকে মহাঔষধ বলা হয়। নিয়মিত কালোজিরা খেলে
শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এতে করে যে কোন জীবাণুর বিরুদ্ধে
প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলে এবং সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের
উন্নতি করে। ১ চামচ কালোজিরা অথবা কয়েক ফোটা কালোজিরার তেল ১ চামচ মধুসহ
প্রতিদিন সেবন করলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
২. স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি করেঃ এক চা-চামচ পুদিনাপাতার রস বা কমলার রস বা
এক কাপ রঙ চায়ের সাথে এক চা-চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দিনে তিনবার
করে নিয়মিত সেবন। যা দুশ্চিন্তা দূর করে। এছাড়া কালোজিরা মেধার বিকাশের জন্য
কাজ করে দ্বিগুণ হারে। কালোজিরা নিজেই একটি অ্যান্টিবায়োটিক বা
অ্যান্টিসেপটিক। মস্তিস্কের রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণ শক্তি বাড়িয়ে
তুলতে সাহায্য করে। কালোজিরা খেলে আমাদের দেহে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয়। এতে করে
মস্তিস্কের রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধির হয়। যা আমাদের স্মৃতি শক্তি বাড়িয়ে তুলতে
সাহায্য করে।
৩. ওজন কমায়ঃ কালোজিরায় রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি।যা আমাদের
শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।কালোজিরার তৈল খেলেও শরীরের ওজন কমে। নিয়মিতভাবে
কালোজিরা ও কালোজিরার তৈল সেবন করলে শরীরের ওজন কমতে সাহায্য করে। শরীরের ওজন
কমাতে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪. যৌনক্ষমতা বাড়ায়ঃ কালোজিরা নারী- পুরুষ উভয়ের যৌনক্ষমতা বাড়ায়।
প্রতিদিন কালোজিরা খাবারে সাথে খেলে পুরুষের স্পার্ম সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং
পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি করে। মধ্যপ্রাচ্যে প্রচলিত আছে যে,
কালিজিরা যৌন ক্ষমতা বাড়ায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে।
একচা-চামচ মাখন, এক চা-চামচ জাইতুন তেল সমপরিমাণ কালোজিরার তেল ও মধুসহ দৈনিক
৩বার ৪/৫ সপ্তাহ সেবন করুন। তবে পুরানো কালোজিরা তেল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত
ক্ষতিকারক।
৫. কিডনি সমস্যার সমাধান করেঃ কিডনি জনিত যেকোনো রকমের রোগের
প্রতিকারক উপাদান রয়েছে কালোজিরাতে। বিশেষ করে যাদের কিডনিতে পাথর হয়েছে তারা
পাথর দূর করতে -২ চামচ কালোজিরা গুড়ো এবং ২ চামচ মধু কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে
প্রতিদিন ভোরে খেতে পারেন । তাছাড়াও পাথর সরাতে অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের
অম্লিয় উপাদান সাহয্য করে। মধুতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং
অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান যা কিডনির পাথর রোগের প্রতিরোধ করে। ১ চা চামচ
ভিনেগার, ২ চা চামচ মধু, ২ চা চামচ কালোজিরা তেল এক সাথে মিশিয়ে টানা ৩০ দিন
খেলে কিডনির পাথর অপসারণ হয়ে যায়। এর পাশাপাশি কিডনিসহ শরীরের সকল ধরনের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৬. বদহজম দূর করেঃ নিয়মিত পেট খারাপের সমস্যা থাকলে কালোজিরা সামান্য
ভেজে গুঁড়ো করে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে ৭-৮ চা চামচ দুধে মিশিয়ে সকালে ও বিকেলে
সাত দিন ধরে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ডায়রিয়া সেলাইন ও হোমিও ওষুধের
পাশাপাশি ১ কাপ দই ও বড় এক চামচ কালোজিরার তেল দিনে ২ বার ব্যবস্থেয়। এর
মুল আরকও পরী্ক্ষনীয়।
৭. ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখেঃ প্রতিদিন সকালে রসুনের দুটি কোষ
চিবিয়ে খেয়ে এবং সমস্ত শরীরে কালোজিরার তেল মালিশ করে সূর্যের তাপে কমপক্ষে
আধঘন্টা অবস্থান করতে হবে এবং এক চা-চামচ কালোজিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ প্রতি
সপ্তাহে ২/৩ দিন সেবন করা যা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখে। এছাড়া কালোজিরা বা
কালোজিরা তেল বহুমুত্র রোগীদের রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং নিম্ন
রক্তচাপকে বৃদ্ধি করে ও উচ্চ রক্তচাপকে হ্রাস করে।
৮. গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করেঃ বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ ভেজাল খাবার ও
অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার খেয়ে থাকে। যার ফলে গ্যাস্টিক হয়ে থাকে। এই গ্যাস্টিক
থেকে বাঁচতে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক গ্লাস দুধের সাথে পরিমাণ
মতো কালোজিরার তৈল মিশিয়ে পান করতে হবে।দিনে কয়েকবার খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত
১৫-২০দিন খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর হবে ইন্শাল্লাহ।
৯. শ্বাস কষ্ট বা হাঁপানি রোগ সারাতেঃ যারা হাঁপানী বা শ্বাসকষ্ট জনিত
সমসসায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য কালোজিরা অনেক বেশি উপকারী। প্রতিদিন কালোজিরার
ভর্তা রাখুন খাদ্য তালিকায়। কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাস কষ্টজনিত সমস্যা উপশম
হবে।এছাড়া এক কাপ চা-চামচ কালোজিরার তেল, এক কাপ দুধ বা রং চায়ের সাথে দৈনিক ৩
বার করে নিয়মিত সেবন করুন।
১০. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে কালোজিরা
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত কালোজিরা খেলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাশাপাশি
চোখের লাল দাগ ও চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়।
১১. চুল পড়া কমায়ঃ কালোজিরার তৈল মাথায় ব্যবহার করলে চুলের গোড়া
মজবুত করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে। আজকাল প্রায় অনেকের চুল পড়ে মাথায় টাক
হয়ে যায়।এই সমস্যা দূর করতে নিয়মিত কালোজিরার তৈল মাথায় ব্যবহার করলে চুল
পড়া বন্ধ হবে ও চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে
ইন্শাল্লাহ।
১২. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিঃ মুখের দাগ ও ব্রণ দূর করতে কালোজিরা
কার্যকারী ভূমিকা রাখে। লেবুর রস সাথে কালোজিরার তৈল মিশিয়ে একটি পেষ্ট তৈরি
করে, নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মুখের দাগ ও ব্রণ
দূর করতে সাহায্য করে।
১৩. ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখেঃ ত্বকের গঠনের উন্নতি ও ত্বকের প্রভা
বৃদ্ধির জন্য কালোজিরা অত্যাবশ্যকীয়। এতে লিনোলেইক ও লিনোলেনিক নামের এসেনশিয়াল
ফ্যাটি এসিড থাকে যা পরিবেশের প্রখরতা, স্ট্রেস ইত্যাদি থেকে আপনার ত্বককে
রক্ষা করে এবং ত্বককে সুন্দর করে ও ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে।
১৪. সর্দি কাশি দূর করেঃ বর্তমানে ঠান্ডা কাশি নিয়মিত একটি রোগের নাম।
বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের হয়ে থাকে। সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পেতে এক চা চামচ
কালোজিরার তৈল সাথে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খেতে হবে।
এছাড়া এক চামচ কালোজিরার তৈল সাথে পরিমাণ মতো মধু ও তুলসীপাতার রস মিশিয়ে
প্রতিদিন দুই থেকে তিন বার খেলে সর্দি, কাশি ও জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে
ইন্শাল্লাহ।
১৫. পেটের ব্যাথা দূর করেঃ অনেকের প্রায় সময়ই পেটের ব্যাথা
হয়ে থাকে।যারা পেটের ব্যাথায় ভুগছেন তারা নিয়মিত কালোজিরা খেলে পেটের ব্যাথা
থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। আসুন জেনে নেই কিভাবে খাবেন, প্রথমে কালোজিরা ভেজে
পাউডার তৈরি করুন। তারপর এক গ্লাস গরম দুধের সাথে পরিমাণ মতো কালোজিরা পাউডার
মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খান।এভাবে নিয়মিত সাতদিন খেলে পেটের ব্যাথা দূর
হবে ইন্শাল্লাহ।
১৬. আমাশয় নিরাময় করেঃ আমাশয় নিরাময়ে করার জন্যও এই কালোজিরার কোন
বিকল্প নেই। আপনি এই আমাশয় নিরাময়ে করার জন্য নিয়ম মেনে কালোজিরা সেবন করলে
সমাধান পাবেন। তবে নিয়মটি এক টেবিল চামচ মধুর সাথে এক টেবিল চামচ কালোজিরা
মিশিয়ে নিয়মিত দিনে ২-৩ বার করে একমাস কন্টিনিউ করতে হবে। কারণ ফলাফল পাওয়ার
জন্য আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে কয়েক সপ্তাহের ভিতরে ফলাফল পাবেন ইনশাল্লাহ। তবে
আপনি একমাস একটানা খাবার পরিকল্পনা করে শুরু করবেন অবশ্যই, আমাশয় নিরাময়ে এক
মাসের ভিতরে সঠিক ফলাফল ইনশাল্লাহ পাবেন।
১৭. ডায়েটে কালোজিরাঃ যারা ডায়েট করছেন তারা নিয়মিত কালোজিরা খেতে
পারেন।ডায়েটে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আসুন জেনে নেই কিভাবে খাবেন,
টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে, মধুর সাথে মিশিয়ে, রান্নার সাথে, রুটি বানানোর সময়ও
কালোজিরা দিয়ে ইত্যাদি ভাবে কালোজিরা খাওয়া যায়।
১৮. দুগ্ধ দানকারি মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করেঃ কালোজিরা মায়ের বুুকের
দুধ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।যেসব মায়েদের বুকে পর্যাপ্ত দুধ নেই,
তাদের মহৌষধ কালোজিরা। মায়েরা প্রতি রাতে শোয়ার আগে ৫-১০ গ্রাম কালোজিরা মিহি
করে দুধের সঙ্গে খেতে থাকুন। মাত্র ১০-১৫ দিনে দুধের প্রবাহ বেড়ে যাবে। এছাড়া
এ সমস্যা সমাধানে কালোজিরা ভর্তা করে ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন। এছাড়া একচা-চামচ
কালোজিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ দৈনিক ৩বার করে নিয়মিত সেবন করুন। যা শতভাগ
কার্যকরী।
১৯. অপারেশনের দাগ দূর করেঃ সিজার বা অপারেশন করার ফলে দাগ পড়ে যায়।
এই দাগ দূর করতে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কেউ যদি নিয়মিত কালোজিরা
খায় তা হলে অপারেশন বা সিজারের দাগ সহজে দূর হয়।
২০. ক্যান্সার প্রতিরোধঃ আমরা সবায় জানি কালোজিরাতে অ্যান্টি
ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি মাইকোটিক আছে।যা শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে
সাহায্য করে।এছাড়া কালোজিরা শরীরের টিউমার প্রসমিত করতে সাহায্য করে।
২১. পাইলস প্রতিরোধ করেঃ পাইলস সমস্যা সমাধানে কালোজিরা বেশ উপকারি। এই
সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনি সাধারণভাবে এক টেবিল চামচ মাখন এবং এক
টেবিল চামচ কালোজিরার তেল ও এক টেবিল চামচ তিলের তেল মিশিয়ে সকালে নিয়মিত খালি
পেটে খেতে হবে অন্তত ১-২ মাস। যদি আপনি নিয়মিত নিয়ম মেনে সঠিকভাবে এটি
কন্টিনিউ করতে পারেন তাহলে আশা করা যায় আপনার পাইলস সমস্যা থাকলে দূর হবে
ইনশাআল্লাহ।
২২. রান্নার স্বাদ বৃদ্ধিঃ রান্নার সাথে কালোজিরা ব্যবহার করলে রান্নার
স্বাদ কয়েক গুণ বেড়ে যায় এবং খাবারের পুষ্টিগুনও বেড়ে যায়। খাবারের স্বাদ
বৃদ্ধি করতে মশলার সাথে কালোজিরা ব্যবহার করতে পারেন।
২৩. হাড়ের ব্যথা সারায়ঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরের বিভিন্ন
জায়গার হাড়ের ব্যথা দেখা দেয়।হাড়ের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা উঠে। এই ব্যথা
থেকে মুক্তি পেতে কালোজিরার তৈল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শরীরের যে অংশে
ব্যথা অনুভব হয় সে স্থানে কালোজিরার তৈল নিয়ে মালিশ করলে ব্যথা দূর হবে।
ব্যথা দূর করতে নিয়মিত কালোজিরার তৈল দিয়ে মালিশ করতে হবে।
২৪. দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি করেঃ কালোজিরা শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি
করে থাকে।শিশুদের খাবারের তালিকায় কালোজিরা রাখতে পারেন কারণ কালোজিরা শিশুদের
দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিশুদের দৈহিক ও মানসিক
বৃদ্ধি করতে কালোজিরার তৈলও ব্যবহার করতে পারেন।
২৫. বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগ সারাতেঃ যাদের চর্মরোগ রয়েছে আক্রান্ত
স্থানে ধুয়ে পরিষ্কার করে তাতে এক চা-চামচ কাঁচা হলুদের রসের সাথে সমপরিমাণ
কালোজিরার তেল, সমপরিমান মধু মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে চর্মরোগ থেকে মুক্তি
পাওয়া যাবে ইন্শাল্লাহ।
২৬. পিরিয়ড সমস্যায়ঃ বর্তমানে মহিলাদের পিরিয়ড এর সমস্যা একটি বড়
সমস্যা। পিরিয়ডের সমস্যায় প্রায় মহিলারা ভুগছেন। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ
পেতে কালোজিরার তৈল সাথে কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিন বার খেতে
হবে।নিয়মিত খেলে আশাকরি পিরিয়ড এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
২৭. লিভার ভালো রাখতেঃ কালোজিরায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সডেন্ট
যা লিভারকে সুস্থ রাখতে কার্যকারী ভুমিকা রাখে। এই অ্যান্টিঅক্সডেন্ট
আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।
২৮. উচ্চ রক্তচাপ কমায়ঃ উচ্চরক্তচাপ এর মত নিরবঘাতক হতে রক্ষা পেতে
কালোজিরাকে প্রতিদিনের সাথী করতে হবে। যেমন-নিয়মিত চা পানের অভ্যাস থাকলে চায়ের
পানি গরম হওয়ার সাথে সাথে ১ চা চামচ কালোজিরা মিশিয়ে দিতে হবে অথবা চায়ের সাথে
১ চা চামচ কালোজিরা তেল মিশাতে হবে। খাদ্যের তালিকায় কালোজিরা ভর্তা রাখতে হবে।
এছাড়া ভোরে ঘুম থেকে উঠেই ২ চামচ কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। যে
সকল মানুষের হাই ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের খাদ্যাভ্যাসে
কালোজিরাকে নিত্য সাথী করতে হবে তাহলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।
২৯. ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রণ করেঃ কালোজিরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা এক গ্লাস পানির সঙ্গে
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেয়ে দেখুন, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
থাকবে। এছাড়া এক কাপ চা-চামচ কালোজিরার তেল, এক কাপ রং চা বা গরম ভাতের সাথে
মিশিয়ে দৈনিক ২বার করে নিয়মিত সেব্য। যা ডায়বেটিকস নিয়ন্ত্রণে একশত ভাগ
ফলপ্রসূ।
৩০. কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করেঃ কালোজিরাতে ‘টাইমোকুইনোন’ নামক একটি
যৌগ থাকে যা শরীরের LDL বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং শরীরে HDL বা
ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। কালোজিরা গ্রহণকারীদের LDL
কোলেস্টেরলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। উচ্চ কোলেস্টেরলের সাথে প্রদাহ
যুক্ত থাকে। কালোজিরার প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রক্তে প্রদাহের মাত্রা কমাতে
সাহায্য করে, যা বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। ‘ট্রাইগ্লিসারাইড’ হল
রক্তে এমন এক ধরনের চর্বি যা উচ্চ মাত্রায় থাকার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
কালোজিরা রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৩১. পেট খারাপঃ অনেকের ঘন ঘন পেটের সমস্যা হয়ে থাকে। পেট খারাপ থেকে
পরিত্রাণ পেতে দুধের সাথে কালোজিরার গুড়া মিশিয়ে নিয়মিত সেবন করতে হবে।
নিয়মিত সাতদিন সেবন করলে পেট খারাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইন্শাল্লাহ।
৩২. বাতের ব্যাথা দুর করেঃ বাতের ব্যথা হলে সেখানে ভাল করে ধুয়ে
পরিষ্কার করে তাতে কালোজিরার তেল মালিশ করতে হবে। এক চা- চামচ কাঁচা হলুদের
রসের সাথে সমপরিমাণ কালোজিরার তেল সমপরিমান মধু বা এক কাপ রং চায়ের সাথে দৈনিক
৩বার খেতে হবে এটা ২/৩সপ্তাহ খেতে হবে। তাহলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে।
৩৩. হাঁটু ও পিঠের ব্যথা নিরাময় করেঃ হাঁটু ও পিঠের ব্যাথা নিরাময়ে
কালোজিরা অনেক উপকারক হিসেবে কাজ করে থাকে। যাদের বয়স ৫০ বা ৬০ এর বেশি অথবা এর
একটি কম তাদের হাঁটু ব্যথা, পিঠে ব্যথা প্রায় প্রতিদিনের সাথী। এই সকল ব্যাথা
থেকে মুক্তি লাভে ব্যবহার করতে হবে কালোজিরা। ৩টি মধ্যম সাইজের আদা এবং ৩-৪ টি
মধ্যম সাইজের হলুদ পিষে নিয়ে , ১ চা কাপ সরিষার তেল, ২ চা কাপ নিম তেল এবং ২ চা
কাপ কালোজিরা তেলের সাথে ১০-১৫ মিনিট গরম করতে হবে। এর পরে তেলটি ঠান্ডা করে
নিয়ে বোতলে সংরক্ষণ করতে হবে। ব্যথার জায়গায় তেলটি মালিশ করলে সাথে সাথে ব্যথা
কমে যাবে এবং প্রতিদিন ব্যবহারে করলে দীর্ঘ সময়ের সব ব্যথা নিরাময় হবে।
৩৪. মাথা ব্যথা কমায়ঃ মাথা ব্যাথা বর্তমান সময়ে অনেক জটিল সমস্যা হয়ে
দাঁড়িয়েছে। আর এই মাথা ব্যাথা সমস্যা নিরসনের জন্য কালোজিরার উপকারিতা
অনেক।আমরা কপালের দুই পাশে কালোজিরার তেল মালিশ করলে ৫ মিনিট সময় ধরে এতে মাথা
ব্যাথা খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে। তাছাড়াও মাথা ব্যাথা যাদের প্রতিদিনের সাথী
তাদের জন্য ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা রয়েছে। কালোজিরা দিয়ে বড়ি বানিয়ে খেলে মাথা
ব্যাথার উপদ্রপ অনেক কমে যাবে এবং সাথে সাথেই এর ভালো সুফল পাওয়া যাবে।
৩৫. দাঁত ব্যথা সারায়ঃ দাঁতের ব্যাথা সারাতে কুসুম গরম পানির সাথে
কালোজিরা মিশিয়ে, সেই পানি দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কমে যাবে। দাঁতের ব্যথার
সাথে সাথে মুখের জিবাণু ধ্বংস করে ফেলে।
৩৬. চোখের সমস্যায়ঃ চোখ ব্যথা, ঝাপসা দেখা, চোখ জ্বালাপোড়া
সমস্যা দূর করতে কালোজিরা ব্যবহার করা হয়। চোখ ব্যথা হলে চোখের পাতা, ভ্রুসহ,
চোখের দুই পাশে কালোজিরা তেল মালিশ করতে হবে প্রতিদিন ঘুমানোর আগে। চোখে
ঝাপসা লাগলে, গাজর ব্লেন্ড করে এক কাপ পরিমাণ গাজরের জুস নিতে হবে এবং জুসে ৩
চা চামচ কালোজিরা তেল মিশ্রিত করে খেতে হবে টানা ৩০ দিন ভোরে বা ঘুমোতে
যাওয়ার পূর্বে। চোখের জ্বালাপোড়া বেশি হলে ২ টুকরো গাজর, ৪-৫ টুকরো শসা এবং
৪ চা চামচ কালোজিরা ব্লেন্ড করে নিতে হবে ও এর মিশ্রণের সাথে যোগ করতে হবে ২
চা চামচ মধু। এভাবে কালোজিরা মিশ্রণ ঠিকমতো দিনে ২ বার খেলে চোখ জ্বালাপোড়া
দূর হয়ে যাবে।
৩৭. হার্টের বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রেঃ এক চা-চামচ কালোজিরার তেল সহ
এক কাপ দুধ খেয়ে দৈনিক ২বার করে ৪/৫ সপ্তাহ সেবন এবং শুধু কালোজিরার তেল বুকে
নিয়মিত মালিশ করতে হবে।
৩৮. অর্শ রোগ নিরাময়েঃ এক চা-চামচ মাখন ও সমপরিমাণ তিলের
তেল, এক চা-চামচ কালোজিরার তেল সহ প্রতিদিন খালি পেটে ৩/৪ সপ্তাহ সেবন করা।
৩৯. মুত্রথলির সংক্রমণ ঠেকাতেঃ কালোজিরা দুর্দান্ত অ্যান্টি টক্সিনের
কাজ করে। তাই যন্ত্রণামুক্ত ও পরিষ্কার প্রস্রাবের জন্য খাবারের সঙ্গে রাখুন
কালোজিরা। এতে মুত্রথলির সংক্রমণ রোধ হবে।
৪০. অনিয়মিত মাসিক/স্রাব রোগের ক্ষেত্রেঃ এক কাপ কাঁচা হলুদের রস বা
সমপরিমাণ আতপ চাল ধোয়া পানির সাথে এক কাপ চা-চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দৈনিক
৩ বার করে নিয়মিত সেবন করুন। যা শতভাগ কার্যকরী।
কালোজিরার পুষ্টিগুণ ও উপাদান
কালোজিরার পুষ্টিগুণ ও উপাদান রয়েছে প্রায় শতাধিক। কালোজিরা খাদ্যাভাসের ফলে
আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায়
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কালোজিরা ফুলের মধু উৎকৃষ্ট মধু হিসেবে
বিশ্বব্যাপী বিবেচিত। তেমনি কালোজিরার তেলও আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
বর্তমানে কালিজিরা ক্যাপসুলও বাজারে বিভিন্ন ফার্মেসীতে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কালোজিরায় রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক ক্যারোটিন ও শক্তিশালী হরমোন, প্রস্রাব
বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পাচক এনজাইম ও অম্লনাশক উপাদান এবং
অম্লরোগের প্রতিষেধক। এর প্রধান উপাদানের মধ্যে আমিষ ২১, শতাংশ, শর্করা ৩৮
শতাংশ, স্নেহ বা ভেষজ তেল ও চর্বি ৩৫ শতাংশ। এছাড়াও ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ
আছে। প্রতি গ্রাম কালিজিরা পুষ্টি উপাদান হলো-
প্রোটিন ২০৮ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন বি১ ১৫ মাইক্রোগ্রাম
নিয়াসিন ৫৭ মাইক্রোগ্রাম
ক্যালসিয়াম ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম
ফসফরাস ৫.২৬ মিলিগ্রাম
কপার ১৮ মাইক্রোগ্রাম
জিংক ৬০ মাইক্রোগ্রাম
ফোলাসিন ৬১০ আইউ
ম্যাঙ্গানিজ 8.53 মিলিগ্রাম
তামা ২.৬ মিলিগ্রাম
আয়রন 9.7 মিলিগ্রাম
মোট চর্বি 31.16 মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম 265 মিলিগ্রাম
দস্তা 6.23 মিলিগ্রাম
কালিজিরার অন্যতম উপাদানের মধ্যে আরও রয়েছে নাইজেলোন, থাইমোকিনোন ও স্থায়ী
তেল। পাশাপাশি কালিজিরার তেলে আছে লিনোলিক এসিড, অলিক এসিড, ফসফেট, লৌহ,
ফসফরাস, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক,
ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি২, নিয়াসিন ও
ভিটামিন-সি ছাড়াও জীবাণুনাশক বিভিন্ন উপাদান যা হাজারও রোগের উপকার করে।
মেয়েদেরর জন্য কালোজিরার উপকারিতা
মেয়েদেরর জন্য কালোজিরার উপকারিতা ব্যপক। কালোজিরা একটি ছোট কিন্তু শক্তিশালী
বীজ যা অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা দিয়ে পরিপূর্ণ। এর উপকারিতাগুলো নারীর
স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ গুরুত্ব রাখে। এই প্রাচীন প্রতিকারটি বহু শতাব্দী ধরে
ঐতিহ্যবাহী ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে, যা নারীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত
বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে কাজ করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক নারীর স্বাস্থ্যের
জন্য কালোজিরার উল্লেখযোগ্য উপকারিতা-
হরমোনের ভারসাম্যঃ নারীর জন্য কালোজিরার অন্যতম উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো এর
হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করার ক্ষমতা। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার
কারণে অনিয়মিত মাসিক চক্র, পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS) এবং মুড সুইং
সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। কালোজিরায় ফাইটোয়েস্ট্রোজেন রয়েছে,
এটি উদ্ভিদ-ভিত্তিক যৌগ যা শরীরে ইস্ট্রোজেনকে অনুকরণ করে। এটি মাসিক চক্রকে
নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা উপশম করতে সহায়তা করে।
মাসিক স্বাস্থ্যঃ অসহ্য মাসিক ক্র্যাম্পে ভুগছেন এমন নারীর জন্য কালোজিরা
একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার হতে পারে। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য
মাসিকের কারণে সৃষ্ট ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে কালোজিরা
মাসিক চক্র নিয়মিত করতে এবং অতিরিক্ত রক্তপাত কমাতে সাহায্য করে।
খাদ্যতালিকায় কালোজিরার তেল যোগ করলে তা মাসিকের অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিতে
পারে।
প্রজনন স্বাস্থ্যঃ কালোজিরা প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাবের জন্য
পরিচিত। এটি মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডিম্বস্ফোটন বৃদ্ধি করে উর্বরতা
উন্নত করতে সাহায্য করে। কালোজিরার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য প্রজনন
অঙ্গগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে।
ত্বকের স্বাস্থ্যঃ নারীরা স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল ত্বক বজায় রাখার জন্য
প্রতিকার খোঁজেন। এক্ষেত্রে কালোজিরা সাহায্য করতে পারে। এর
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে, অকাল
বার্ধক্য প্রতিরোধ করে এবং তারুণ্যের বর্ণকে উন্নীত করে। কালোজিরা তেল ত্বকে
লাগাতে পারেন। এটি ব্রণ, দাগ এবং পিগমেন্টেশন কমাতে কাজ করে। এটি ত্বককে
ময়েশ্চারাইজ করে এবং পুষ্টি যোগাতেও সাহায্য করে, এটি যেকোনো স্কিনকেয়ার
রুটিনে একটি চমৎকার সংযোজন হতে পারে।
চুলের স্বাস্থ্যঃ কালোজিরা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য একটি আশীর্বাদ। এটি চুল
পড়া, খুশকি এবং অকালে ধূসর হওয়ার মতো সাধারণ সমস্যার সমাধান করে। ভিটামিন,
খনিজ এবং ফ্যাটি অ্যাসিড সহ কালোজিরায় থাকা প্রয়োজনীয় পুষ্টি চুলের ফলিকলকে
শক্তিশালী করে এবং স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কালোজিরা তেলের
নিয়মিত ব্যবহার চুল পড়া রোধ করে, খুশকি কমায় এবং চুলের সামগ্রিক গঠন এবং
উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। কালোজিরা তেল দিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করলে
তা রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং চুলের গোড়া থেকে পুষ্টি যোগাতে পারে।
চুলের জন্য কালোজিরার তেলের উপকারিতা
চুলের জন্য কালোজিরার তেলের উপকারিতা রয়েছে প্রচুর পরিমানে, কিন্তু কতটা
উপকারি তা নির্ভর করবে আপনার চুলের অবস্থার উপর। আপনার চুল খারাপ হলে যে
উপকারিতা দেখাবে, তবে ধীরে ধীরে। অন্যদিকে, খুব স্বাস্থ্যকর চুলের লোকেরা
কিছুদিন ব্যবহারে তাদের চুলের একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য লক্ষ্য করতে
পারে। ক্ষতিগ্রস্থ চুল যাদের জন্য, ফলাফলগুলি কেবলমাত্র ২ সপ্তাহের
ধারাবাহিক ব্যবহারের পরে দৃশ্যমান হবে।
১. কালোজিরার তেল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ধার্মিকতায় পূর্ণ যা আপনার
স্ট্র্যান্ডে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাবকে নিরপেক্ষ করতে খুবই
কার্যকর। এটি আপনার চুল এবং মাথার ত্বককে সুস্থ এবং শক্তিশালী রাখতে
সাহায্য করে। কালোজিরার তেলে ওমেগা-৩ এবং ৬ জৈব অণু রয়েছে যা রক্ত
সঞ্চালন বাড়ায়। এটি সপ্তাহের মধ্যে দ্রুত চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত
করতে পারে।
২. কালোজিরার তেলে ভালো ফ্যাটি অ্যাসিড উপাদান রয়েছে যা আপনার
চুলকে মজবুত ও কন্ডিশন করতে সাহায্য করে আপনার স্ট্র্যান্ডগুলিকে নরম
করে। বিভিন্ন মাথার ত্বকে বিভিন্ন পরিমাণে সিবাম উৎপন্ন হয় এবং এটিই
চুলকে শুষ্ক বা তৈলাক্ত করে তোলে। কালোজিরার তেল আপনার মাথার ত্বকে
তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যা আপনার চুলকে ভালো অবস্থায় রাখতে
সাহায্য করে এবং তৈলাক্ত হওয়া রোধ করে।
৩. যারা শুষ্ক চুলের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্যও কালোজিরার তেল
একটি শক্তিশালী উপাদান। কালোজিরার তেল ব্যবহার করা তাদের চুলকে
সঠিক পরিমাণে হাইড্রেশন সরবরাহ করবে কারণ এটি আর্দ্রতা লক করতে সাহায্য
করে এবং আপনার চুলের চকচকে এবং স্বাস্থ্যকর চেহারা যোগ করে। এটি একটি
শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে এবং তারপর একটি হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৪. আপনি চুলের সমস্যা যেমন অ্যালোপেসিয়া অ্যারিটা বা অ্যান্ড্রোজেনিক
অ্যালোপেসিয়ার চিকিৎসার জন্য কালোজিরার গুঁড়ো দিয়ে পেস্ট তৈরি
করতে পারেন। এই পেস্টে নাইজেলোন এবং থাইমোকুইনোন রয়েছে যা
অ্যান্টিহিস্টামিন এবং অ্যালোপেসিয়া রোগীদের অ্যালার্জি প্রতিরোধ করতে
এবং দ্রুত চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে দেওয়া হয়।
৫. কালোজিরায় অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে যা আপনার মাথার ত্বকে আর্দ্রতা
বন্ধ করতে সাহায্য করে এবং এটিকে স্বাস্থ্যকর এবং সঠিকভাবে কন্ডিশন
রাখে। জিরা আপনার প্রি-ওয়াশ রুটিনের অংশ হিসেবে ব্যবহার করলে অনেক
টাকা বাঁচাতে সাহায্য করে। শ্যাম্পুর আধঘণ্টা আগে জিরার তেল দিয়ে চুলে
তেল মাখলে চুলের কন্ডিশন ভালো হয়।
ত্বকের যত্নে কালোজিরার ব্যবহার
ত্বকের যত্নে কালোজিরার ব্যবহার সম্পর্কে আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না।
ত্বকের যত্নে এই কালোজিরার ব্যবহার আপনাকে আশ্চর্যজনক ফলাফল পেতে সহায়তা
করবে। প্রচলিত আছে যে, কালোজিরায় এমন কিছু অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল
বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা সমস্ত ধরণের শারীরিক সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
কালোজিরা বীজ ব্রণ দূর করতে এবং ত্বকের টেক্সচার উন্নত করতেও সহায়তা করে।
চলুন জেনে নেয়া যাকঃ
স্ক্রাবার হিসেবে কালোজিরার ব্যবহারঃ কালোজিরা পিষে গুঁড়ো করে
ত্বকে ব্যবহার করা সবচেয়ে ভাল উপায়। মুখের ছিদ্রগুলি পরিষ্কার করতে এটি
স্ক্রাবার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। কালোজিরার স্ক্রাবটি তৈরি করতে
এক চা চামচ কালোজিরার গুঁড়ো এবং এক চা চামচ দুধের প্রয়োজন পড়বে। উপাদান
দুটি ভাল করে মিশিয়ে নিন এবং মিশ্রণটি মুখ এবং ঘাড়ে লাগান। আলতোভাবে
ম্যাসাজ করুন এবং কিছুক্ষণ পর সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর করতে কালোজিরার ব্যবহারঃ কালোজিরা ব্রণের
সমস্যার চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি তৈলাক্ত ত্বকে ব্যবহারের জন্য
সর্বোত্তম এবং ব্রণের ফলে মুখের ত্বকে সৃষ্ট দাগ কমাতেও কার্যকর। এক চা
চামচ কালোজিরার গুঁড়ো, এক চা চামচ লেবুর খোসার গুঁড়ো এবং আধা চা-চামচ
আপেল সিডার ভিনেগার একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এই মিশ্রণটি ব্যবহার
করলে এটি আপনার ত্বকের পিএইচ স্কেলকে ভারসাম্যপূর্ণ করতে সহায়তা করবে।
মিশ্রণটি মুখে লাগান, বিশেষত আক্রান্ত জায়গাগুলিতে এবং তারপরে সাধারণ
পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মুখের ত্বক দূষণমুক্ত করতে কালোজিরার ব্যবহারঃ আপনি এখন থেকে
মুখের ত্বক দূষণমুক্ত করতেও কালোজিরার ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষত যাদের
ত্বক তৈলাক্ত, তাদের জন্য এটি খুব প্রয়োজনীয়। অন্যথায় এটি আরও বেশি
পিম্পল এবং ব্রণ সৃষ্টির কারণ হতে পারে। কালোজিরার অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল
বৈশিষ্ট্য সমূহ ত্বককে ডিটক্সিফাই বা দূষণমুক্ত করে এবং সিবামের উত্পাদন
হ্রাস করতে সহায়তা করে। ডিটক্সিফায়িং মাস্ক তৈরি করতে আপনার প্রয়োজন
পড়বে এক চা চামচ কালোজিরার গুঁড়া, এক চা চামচ অ্যালোভেরা জেল, এবং
কিছুটা স্কিমড মিল্ক (চর্বিমুক্ত দুধ)। সমস্ত উপাদান একসাথে মিশিয়ে একটি
পেস্ট তৈরি করুন এবং সেটি ফেসমাস্ক হিসেবে ব্যবহার করুন। মুখ ধোয়ার পর
নিজেই পার্থক্য অনুভব করতে পারবেন।
রুপচর্চায় কালোজিরার তেলের উপকারিতা
রুপচর্চায় কালোজিরার তেলের উপকারিতা রয়েছে প্রচুর। প্রাচীন কাল থেকেই
কালোজিরার তেল স্বাস্থ্য উপকারিতায় ও রূপচর্চায় ব্যবহার হয়ে আসছে। এতে
বিদ্যমান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
কালোজিরার তেলে আরও আছে লিনোলিক এসিড, অলিক এসিড, ক্যালসিয়াম,
পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক ইত্যাদি। চুলের যত্নেও এটি বেশ কার্যকরী ভূমিকা
পালন করে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাকঃ
ত্বকের সংক্রমণ এবং ব্রণর প্রকোপ কমায়ঃ কালো জিরার তেলে মজুত
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ত্বকের ভিতরে
প্রবেশ করা মাত্র রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলিকে মেরে ফেলে। ফলে
ব্রণর প্রকোপ তো কমেই, সেই সঙ্গে ত্বকের সংক্রমণের মতো সমস্যার
খপ্পরে পড়ার আশঙ্কাও আর থাকে না। এত উপকার পেতে কীভাবে এই তেল মুখে
লাগাতে হবে? অল্প পরিমাণে কালো জিরার তেলের সঙ্গে পরিমাণ মতো জল
মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে মিনিট খানেক মালিশ করুন। নিয়মিত এই
ভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলে দেখবেন ব্রণর পিছু ছাড়াতে সময়ই লাগবে না।
তবে ভুলেও এই তেল সরাসরি মুখে লাগালে চলবে না। তাতে ত্বকের ক্ষতি হয়ে
যেতে পারে।
ত্বকের বয়স কমায়ঃ নিয়মিত এই তেল মুখে লাগিয়ে মালিশ করলে
ত্বকের ভিতরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়াতে শুরু করবে। তাতে কী
উপকার মিলবে? এতে ত্বকের ভিতরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানগুলি মারা যাবে।
সেই সঙ্গে বলিরেখাও মিলিয়ে যেতে শুরু করবে, যে কারণে ত্বকের (Skin)
সৌন্দর্য বাড়তে সময়ই লাগবে না। আর যদি নিয়ম করে কালো জিরার তেল খেতে
পারেন, তাহলে তো কোনও কথাই নেই! এক কাপ গরম জলে এক চামচ তেল মিশিয়ে
খাওয়া শুরু করলে রক্তে মিশে থাকা দূষিত উপাদানগুলি শরীর থেকে বেরিয়ে
যেতে বাধ্য হয়। ফলে ছোট-বড় নানা রোগ-ব্যাধির প্রকোপ তো কমেই, সেই
সঙ্গে ত্বকের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে।
চুল পড়ার হার কমায়ঃ অল্প বয়সেই ময়দান খালি হয়ে যাওয়ার ভয়ে কি
রাতের ঘুম উড়েছে? তাহলে তো কালো জিরার তেলের উপর ভরসা না রেখে কোনও
উপায় নেই। তাতে কি সত্যিই উপকার মিলবে? আলবাত! কেন জানেন? এতে উপস্থিত
Nigellone এবং Thymoquinone নামে উপাদান চুলের গোড়ায় প্রদাহের মাত্রা
কমায়, সঙ্গে hair follicle-এর শক্তি বাড়াতেও নানা ভাবে সাহায্য করে।
ফলে চুল পড়ার হার কমতে সময় লাগে না। শুধু কী তাই, নিয়মিত এই তেল
স্ক্যাল্পে লাগিয়ে মিনিট পাঁচেক মালিশ করলে নতুন চুল (Hair) গজানোর
সম্ভাবনাও বাড়ে।
খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবেঃ এই তেলে এমন কিছু উপকারী
উপাদান রয়েছে, যা অল্প দিনেই স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। আর
স্ক্যাল্প যখন সুস্থ হয়ে ওঠে, তখন খুশকির সমস্যা কমতেও সময় লাগে না।
শুধু তাই নয়, নিয়মিত এই তেল চুলে লাগিয়ে মাসাজ করলে নাকি অকালে চুল
সাদা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে।
সোরিয়াসিস এবং eczema চিকিৎসায় কাজে আসেঃ এমন ধরনের ত্বকের
সমস্যায় আক্রান্ত হওয়া মাত্র ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিতে ভুলবেন
না। তবে কিছু দিন কালো জিরার তেল লাগিয়েও দেখতে পারেন। এতে রয়েছে নানা
ধরনের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান, যা অল্প
দিনেই সংক্রমণের প্রকোপ কমায়। ফলে এমন ধরনের ত্বকের রোগের খপ্পর থেকে
নিস্তার পাওয়ার সম্ভবনা বাড়ে। ত্বককে আর্দ্র রাখতেও এই তেলটির জুড়ি
মেলা ভার। তাই তো এই মরসুমে নিয়মিত কালো জিরার তেল হাতে-মুখে লাগিয়ে
মালিশ করলে ড্রাই স্কিনের সমস্যা থেকে যে মুক্তি মিলবেই, তাতে কোনও
সন্দেহ নেই।
কালোজিরা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃ প্রতিদিন কতটুকু কালোজিরা খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ খালি পেটে প্রতিদিন এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা এক
গ্লাস পানির সাথে সকালবেলা খাওয়া উচিত। গরম ভাতের সাথে কালোজিরার ভর্তা ও
রং চার সাথে শুকনো কালোজিরা মিশিয়ে দিনে ২ বার খেলে ভালো উপকার পাবেন।
ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এই কালোজিরা পুরুষ-নারী
উভয়ের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন যৌন সমস্যা প্রতিরোধে
সাহায্য করে।
আপনারা যারা প্রতিদিন কালোজিরা খেয়ে থাকেন, তাদের নির্দিষ্ট পরিমাণে
খাওয়া উচিত। মাত্রাতিরিক্ত বা পরিমাণের বেশি খেলে বিভিন্ন
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়। কালোজিরা খাওয়ার
পরিমাণ শরীরের হজমশক্তির উপর নির্ভর করে থাকে। যদি হজমশক্তি বেশি থাকে,
তবে দুই চামচ খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু হজমশক্তি কম থাকলে দৈনিক এক চামচের
বেশি কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না। যদি কেউ প্রথম প্রথম খাওয়া শুরু করে,
তাহলে কম করে খাওয়াই ভালো। ফলে দ্রুত ফলাফল পাওয়া যাবে।
প্রশ্নঃ কালোজিরা কখন খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ হজমশক্তি ও কোলেস্টেরল বাড়াতে সকাল বেলা খালি পেটে এক
কাপ দুধের সাথে এক চা চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার
খাওয়া উচিত। এছাড়া, এক চামচ কালোজিরা তেলের সাথে এক চা চামচ খাঁটি মধুর
সাথে মিশিয়ে দিনে প্রায় ১ থেকে ৩ বার খেতে পারলে ভালো হয়। ঠিক এভাবে নিয়ম
করে খেতে থাকলে এক-দুই সপ্তাহের মধ্যেই গ্যাসের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
কিন্তু যদি আপনার ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে
পরামর্শ করে খেতে হবে। নইলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
প্রশ্নঃ কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়?
উত্তরঃ না, কালোজিরা খেলে গ্যাস হয় না। গবেষণায় দেখা যায়,
খালি পেটে কালোজিরা খেলে হজমে সাহায্য করে। কেননা এটি দেহের হজমকারী
এনজাইমের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। কালোজিরা পেটের ফোলাভাব ও গ্যাসের সমস্যা
কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, নিয়মিত সঠিক পরিমাণে কালোজিরা খাবার থেকে
পুষ্টি সংগ্রহ করতে সাহায্য করে। তবে, বেশি পরিমাণে খেলে উল্টো ক্ষতি হতে
পারে এবং অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
প্রশ্নঃ কালোজিরা খেলে কি হয়?
উত্তরঃ কালজিরা খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, হৃদরোগ
সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান করে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে, ত্বকের
সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পায় এবং আর্থ্রাইটিস ও পেশীর ব্যথা কমায়। কালোজিরা
কৃমি দূর করতে, পেটে ব্যথাসহ নানা রোগ ও গ্যাস দূর করতেও সাহায্য করে।
তাই এই নিয়মিত ও যথাযথ ব্যবহার দৈনন্দিন জীবনে বাড়তি শক্তি প্রদান করে।
কালোজিরা খেলে পেটফাঁপা, ফুসকুড়ি, অ্যালার্জি, এজমা, একজিমা, হাঁপানি বা
শ্বাসকষ্ট, ডাইরিয়া, আমাশয়, আলসার, জন্ডিসসহ নানা রোগের বিশেষ ওষুধ
হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও অতিরিক্ত মেদ সমস্যা, স্ট্রোক, স্থুলতা,
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, স্থুলতা নিরাময় করতে অনেক ভালো কাজ করে। গায়ের ব্যথা
দূর করতে ও ক্যান্সার প্রতিরোধেও কালোজিরার বেশ সুনাম রয়েছে। কালোজিরার
তেল খেলে হাইপারটেনশন, নিম্ন রক্তচাপ বা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে যায়।
প্রশ্নঃ রাতে কালোজিরা খেলে কি হয়?
উত্তরঃ প্রতি রাতে নিয়মিত কালোজিরা খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি
পায়, পেট ফাঁপাভাব ও ফোলাভাব কমে যায়, গ্যাস্ট্রিক ও আমাশয় নিরাময় করা
যায়, চুল পড়া রোধ করে, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে
সাহায্য করে, অ্যালার্জির সমস্যা সমাধান করে, রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে
যায় ও তেল ব্যবহার করলে মাথা ব্যথা কমে যায়।
কালোজিরার তেল খেলে ও চোখে লাগালে চোখের ব্যথা কমে যায়। রাতে অল্প পরিমাণ
কালোজিরা নিয়ে ১ টি পেঁয়াজ ও ২ চা চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে দেহের
সতেজতা ফিরে আসবে। হজমের সমস্যা সমাধানে এক থেকে দুই চা চামচ কালোজিরা
বেটে খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং পেটের ফোলাভাবও কমে যাবে।
প্রশ্নঃ কালোজিরা খেলে কি বাচ্চা হয়?
উত্তরঃ না, কালোজিরার সাথে সরাসরি বাচ্চা হওয়ার কোনো ধরনের
সম্পর্ক নেই। কিন্তু, যারা যৌন দুর্বলতায় ভুগছেন, তাদের জন্য এবং গর্ভবতী
মেয়েদের জন্য এই কালোজিরা ও কালোজিরার তেল খুবই উপকারী একটি উপাদান।
পুরুষদের জন্য কালোজিরা ও তেল স্পার্মের গুণমান এবং পরিমাণ উন্নত করতে
সাহায্য করে এবং মহিলাদের জন্য কালোজিরা PCOS (Polycystic Ovary
Syndrome) এর লক্ষণগুলো কমাতে এবং ডিম্বাণুর গুণমান উন্নত করতে সাহায্য
করে।
আরও পড়ুনঃ কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
ফলে, কালোজিরা অসুস্থতা বা প্রজনন সমস্যায় ভুগছেন এমন দম্পতিদের জন্য
বেশ সহায়ক হতে পারে। তবে, পাশাপাশি আপনাদের ডাক্তারের সাথে ভালোভাবে
পরামর্শ করে নিতে হবে। বাজে নেশা, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, অনিয়মিত
খাবার গর্ভধারণে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
কালোজিরা খাওয়ারর অপকারিতা
কালোজিরা খাওয়ার যেমন ভালো দিক রয়েছে, তেমনি কালোজিরার কিছু পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা খাওয়ার ফলে শরীরে
একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা সেবন করলে কি
কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা দেখা দিতে পারে, নিম্নে তার
বর্ণনা দেয়া হলো। আসুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক কালোজিরার অপকারিতা বা
ক্ষতিকর দিক গুলিঃ
অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়াঃ কিছু লোকের কালোজিরাতে অ্যালার্জির
প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এটি ত্বকের ফুসকুড়ি, চুলকানি এবং শ্বাস নিতে
অসুবিধার মতো উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। যাদের হাঁপানি বা অন্যান্য
শ্বাসকষ্ট আছে তারা এই প্রতিক্রিয়াগুলির জন্য বিশেষভাবে সংবেদনশীল হতে
পারে।
ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়াঃ কালোজিরা কিছু ওষুধে প্রতিক্রিয়া
করতে পারে, বিশেষ করে যেগুলি ডায়াবেটিস বা নিম্ন রক্তচাপের চিকিৎসায়
ব্যবহৃত হয়। আপনি যদি এই অবস্থার জন্য ওষুধ গ্রহণ করেন তবে কালোজিরা
খাওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।
রক্তপাতের ঝুঁকিঃ কালোজিরা রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কারণ
এটি রক্তকে পাতলা করতে পারে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে হস্তক্ষেপ করতে
পারে। আপনি যদি রক্ত-পাতলা করার ওষুধ গ্রহণ করেন বা আপনার রক্তপাতের
ব্যাধি থাকে তবে কালোজিরা খাওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা
গুরুত্বপূর্ণ।
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাঃ কালোজিরা কিছু লোকের মধ্যে বমি
বমি ভাব, বমি এবং ডায়রিয়ার মতো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা হতে
পারে। এটি বিশেষভাবে সত্য যদি এটি প্রচুর পরিমাণে বা বর্ধিত সময়ের
জন্য খাওয়া হয়।
পরিপূরকগুলির সাথে মিথস্ক্রিয়াঃ কালোজিরা কিছু পরিপূরকের সাথে
যোগাযোগ করতে পারে, বিশেষ করে যেগুলি আয়রনযুক্ত। এর ফলে শরীরে আয়রনের
মাত্রা বেশি হতে পারে, যা বিপজ্জনক হতে পারে।
লিভার এবং কিডনির উপর নেতিবাচক প্রভাবঃ দীর্ঘ সময়ের জন্য
কালোজিরা বেশি পরিমাণে খাওয়া লিভার এবং কিডনির কার্যকারিতার উপর
নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এর কারণ হল কালোজিরায় এমন যৌগ রয়েছে যা
অতিরিক্ত খাওয়া হলে এই অঙ্গগুলির জন্য বিষাক্ত হতে পারে।
সাধারণত ৩ মাসের অধিক সময় পর্যন্ত নিয়মিত কালোজিরা সেবন করলে শরীরে এ
সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই সঠিক নিয়মে স্বল্প সময়
সেবন করে কালোজিরার উপকারিতা পেতে পারেন।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে শেষকথা
কালোজিরা একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যার
সমাধানে সাহায্য করে।কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম বা সঠিক পদ্ধতি মেনে চললে
এর উপকারিতা আরো বেশি উপভোগ করা সম্ভব। চিবিয়ে খাওয়া কালোজিরার একটি
গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা শরীরের পুষ্টি শোষণ প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং
স্বাস্থ্যের সার্বিক উন্নতিতে ভূমিকা রাখে। সুতরাং প্রতিদিন অল্প
পরিমাণে কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন।
কালোজিরা তেল প্রাচীনকাল থেকে আমাদের সুস্থতা এবং সৌন্দর্যের জন্য একটি
অমূল্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এর নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা ও
প্রাকৃতিক গুণাবলী আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নানা সমস্যার সমাধান করতে
সহায়ক। তবে, এটি ব্যবহারের আগে ব্যক্তিগত প্রয়োজন এবং স্বাস্থ্যের
অবস্থা অনুযায়ী পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। কালোজিরা তেল আপনার জীবনকে
আরও সুস্থ ও সুন্দর করার এক অনন্য উপায় হতে পারে, তবে সঠিকভাবে ও
পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url