২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও ১৯৭১ এর ইতিহাস


২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও ১৯৭১ এর ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্য জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই নিয়ে সঠিক সন্ধান পেতে আপনি একদম ঠিক জায়গাতেই এসেছেন। আমরা আজকের এই ব্লগ পোষ্টে আপনাদের সুবিধার কথা ভেবেই ২৬ শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস ও ২৬ মার্চ ১৯৭১ এর ইতিহাস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
২৬-শে-মার্চ-স্বাধীনতা-দিবস-ও-১৯৭১-এর-ইতিহাস
আপনি যদি আজকের সম্পন্ন ব্লগ পোষ্ট জুড়ে আমাদের সাথে শুরু থেকে একেবারে শেষ অবদি থাকেন, তাহলে ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও ১৯৭১ এর ইতিহাস জেনে নেওয়ার পাশাপাশি স্বাধীনতা দিবস কি, স্বাধীনতা দিবস কিভাবে পালন করা হয় ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন। তো আপনি যদি স্বাধীনতা দিবস নিয়ে ক্লিয়ার ধারণা পেতে চান তাহলে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পেইজ সূচিপত্রঃ ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস–১৯৭১ এর ইতিহাস

স্বাধীনতা দিবস কি

স্বাধীনতা দিবস হচ্ছে কোন দেশ বা জাতির স্বাধীনতা অর্জনের মুহূর্তকে স্মরণ করার জন্য বাৎসরিকভাবে উৎযাপিত একটি দিন। সাধারণত যে দেশ অন্য কোন দেশ বা রাজ্য থেকে যেদিন স্বাধীন হয় সেই দিনটিকে বোঝানো হয়ে থাকে। ২৬ শে মার্চ দিনটি বাঙালি জাতির জন্য অনেক তাৎপর্যের। এই দিনের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। সেই ঘোষণা কে কেন্দ্র করে আজ আমরা স্বাধীন জাতি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ১৯৭২ হতে প্রতিবছর ২৬ মার্চ তারিখে উদযাপিত বাংলাদেশের জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে (কাল রাত) তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করে। ২৫ মার্চ রাতে গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

২৬ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে এম. এ. হান্নান চট্টগ্রামের কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণের ঘোষণা পত্র পাঠ করেন। পরে ২৭ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান একই কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।

১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশের ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে এবং হাজার হাজার মা-বোনেরা ইজ্জত দিতে হয়েছে। শুধু মাত্র স্বাধীন বাংলাদেশ লাভের আশায়। এর কারণে ২৬শে মার্চ দিনটি অনেক তাৎপর্য।

২৬ শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস

২৬ শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস তা জানতে চেয়েছেন অনেকেই। ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না কেন ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস। তাই আজ আমি আপনাদের জানাতে চাই কেন ২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বা পালন করা হয়। তাছাড়া ২৬শে মার্চ সম্পর্কে আপনাদের কাছে কিছু অজানা তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি। এখন পর্যন্ত আমরা সবাই জানি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬শে মার্চ পালিত হয়।

বাংলাদেশের সংগ্রাম শুরু হয় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে যখন পাকিস্তানিরা বাঙালিদের উপর বে-সরকারী গণহত্যা চালায় এবং ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন। এরপর মেজর জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণা সবার কাছে পৌঁছে যায়।১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান পৃথক হওয়ার পর পাকিস্তান দুটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়।

একটি পূর্ব পাকিস্তান এবং অন্যটি পশ্চিম পাকিস্তান। পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশ। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে জাতিগত, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অধিকারগত পার্থক্য ছিল। তাদের মধ্যে এই মতানৈক্য ছিল মূলত ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত এবং নানান পর্যায়ে সংঘর্ষ ও গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল।

এই নির্যাতন ও গণহত্যা থেকে বাংলাদেশ তথা পূর্ব পাকিস্তানকে মুক্ত করার দাবি আদায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ শীর্ষস্থানীয় নেতা-কর্মী ও শীর্ষ পেশাজীবীরা বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করেন। আর এই প্রতিবাদ অনেক কঠিন পর্যায়ে যাওয়ার ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যথাযম্ভব যত দ্রুত সম্ভব এই দেশে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।

এবং নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। তাই ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের মূল কারণ হলো পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদারদের হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করা এবং স্বাধীনতা লাভ করা।

প্রতিবছর মার্চ মাসের ২৬ তারিখে উদযাপিত হয় বাংলাদেশের জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে (কাল রাত) তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করে। ২৫ মার্চ রাতে গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। ২৬ শে মার্চ ইতিহাসের একটি টার্নিং পয়েন্টের প্রতিনিধিত্ব করে, স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা অগণিত ব্যক্তিদের ত্যাগের স্মারক হিসাবে পরিবেশন করে। এটি নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ঐক্য ও জাতীয় পরিচয়ের বিজয় নির্দেশ করে ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের মাধ্যমে।

বাংলাদেশের মতো আরও অন্যান্য দেশ রয়েছে যেগুলো দেশ তাদের সার্বভৌমত্বের সাহসিকতা এবং সংকল্পকে সম্মান করে থাকে এবং এর পাশাপাশি তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মূল্যবোধকে মূল্যায়ন করে রাখতে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করে।

২৬ মার্চ ১৯৭১ এর ইতিহাস

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান সরকার গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) নিরীহ জনগণের উপর হামলা চালায়। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গোলাবর্ষণ করা হয়, অনেক স্থানে নারীদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয় এবং অনেক স্থানে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। এমতাবস্থায় অনেক স্থানেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা না করেই অনেকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।

পরবর্তিতে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাবার পর আপামর বাঙালি জনতা পশ্চিম পাকিস্তানি জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। উত্তর ভারতে পাকিস্তানের বিমান হামলার পর ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা ডিসেম্বর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধে যোগদান করে। ফলশ্রুতিতে পূর্ব ও পশ্চিম— দুই ফ্রন্টে আরেকটি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সূচনা ঘটে।

উপর্যুপরি বিমান হামলা ও বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর তৎপরতায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়ে। অবশেষে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে দীর্ঘ নয় মাসের এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে এবং পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটায়।

যুদ্ধের ফলে বিশ্বের সপ্তম-জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্থান ঘটে, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক দৃশ্যপট বদলে দেয়। জটিল আঞ্চলিক সম্পর্কের কারণে যুদ্ধটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের মধ্যে চলমান স্নায়ুযুদ্ধের অন্যতম প্রধান পর্ব ছিল। জাতিসংঘের অধিকাংশ সদস্যরাষ্ট্র ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যেই বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। নিচে ২৬ মার্চ ১৯৭১ এর ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করা হলো

৭০ এর সাধারণ নির্বাচনঃ ২৫শে মার্চ ৬৯ সারা দেশে সামরিক শাসন জারির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তর হলেও সামরিক সরকার গণ-দাবিকে উপেক্ষা করার মত শক্তি সঞ্চয় করতে পারেনি। তাই প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান সারা দেশে এক ব্যক্তি এক ভোটের নীতিতে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হন। ৭ই ডিসেম্বর '৭০ থেকে ১৯শে ডিসেম্বর' ৭০ এর মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে তফসিল ঘোষণা করা হয় এবং শান্তিপূর্ণভাবে দেশব্যাপী এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচনে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ৬ দফা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের পক্ষে রায় প্রদান করে। এই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদে ৩১০ আসনের মধ্যে ১৬৭ আসনে জয়লাভ করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের ম্যান্ডেট লাভ করে। বাঙালির শাসন মেনে নেওয়া যায় না' এই নীতিতে পাকিস্তানি সামরিক শাসকগণ নির্বাচিত এই জন প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিবন্ধক হয়ে উঠে।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলার জাতীয় নেতৃবৃন্দ এর প্রতিবাদে রুখে দাঁড়ায়। শুরু হয় অধিকারের সংঘাত। ছাত্র সমাজ এই আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। ৭০ এ বঙ্গবন্ধু এক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে পূর্ব বাংলার ম্যাপ অংকিত একটি পতাকা প্রদান করেন। এই পতাকাই পরবর্তীতে বাংলাদেশের পতাকা হিসাবে গৃহীত হয়। ছাত্রদের এই সংগঠন প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রস্ত্ততি গ্রহণ করে প্রতিটি জেলা ও মহকুমা শহরে শুরু হয় সামরিক প্রশিক্ষণের মহড়া। জাতীয়তাবাদী এই আন্দোলনে ছাত্র ও যুব সমাজের অংশগ্রহণ জন সমাজকে আরো উৎসাহিত করে তোলে।

৭১ এর অসহযোগ আন্দোলনঃ নির্বাচনে জয়লাভের পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সরকার গঠনে মত দিতে অস্বীকার করেন। একটি রাজনৈতিক দল জনগণের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের ম্যান্ডেট পেয়েছে। তারা সরকার গঠন করবে, এটাই ছিল বাস্তবতা। কিন্তু সামরিক শাসকগণ সরকার গঠন বা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে এক আলোচনা শুরু করে।

কিসের জন্য আলোচনা, এটা বুঝতে বাঙালি নেতৃবৃন্দের খুব একটা সময় লাগেনি। জাতীয় সংসদের নির্ধারিত অধিবেশন স্থগিতের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু ১লা মার্চ ১৯৭১ দেশব্যাপী অসহযোগের আহবান জানান। সর্বস্তরের জনগণ একবাক্যে বঙ্গবন্ধুর এই আহবানে সাড়া দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের সমস্ত প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে অচল করে তোলে। ২রা মার্চ ৭১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা প্রদর্শিত হয়।

৩রা মার্চ '৭১ এ রমনা রেসকোর্স (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এর পক্ষ থেকে 'স্বাধীনতার ইসতেহার' পাঠ করা হয়। এই ইসতেহারে 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি' গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

পাকিস্তান সামরিক বাহিনী পরিচালিত সরকার জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে কোন সমাধান না দেওয়ায়, ৭ই মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু রহমান রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সমগ্র বাঙালি জাতিকে এক দিকনির্দেশনী ভাষণে সর্বপ্রকার পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্ত্তত হতে আহবান জানান।

এই ভাষণে তিনি বলেন, আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল, ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ পৃথিবীতে উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দের ভাষণগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হিসাবে বিবেচিত।

৭ই মার্চের এই ভাষণে বঙ্গবন্ধুর এই নির্দেশ কোন দলীয় নেতার নির্দেশ ছিল না। ছিল একজন জাতীয় নেতার নির্দেশ। এই নির্দেশ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র, জনতা ও বুদ্ধিজীবীদের সাথে বাঙালি সামরিক, বেসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী সকলকেই সচেতন করে তোলে। ২রা মার্চ ৭১ থেকে পূর্ব বাংলার সমস্ত প্রশাসনিক কাজকর্ম চলতে থাকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে।

২৩শে মার্চ ৭১ সকালে পল্টন ময়দানে জয় বাংলা বাহিনীর এক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে এই বাহিনীর নেতৃবৃন্দ মিছিল সহকারে বাংলাদেশের পতাকাসহ বঙ্গবন্ধু ভবনে প্রবেশ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাড়িতে এই পতাকা উত্তোলন করেন। একই সাথে বঙ্গবন্ধুর গাড়িতে এই পতাকা লাগান হয়। ২৩শে মার্চ পূর্ব বাংলার প্রতিটি শহরে পাকিস্তান দিবসের অনুষ্ঠান বর্জিত হয় এবং পাকিস্তানের পতাকার পরিবর্তে বাংলাদেশের পতাকা উড়তে দেখা যায়।

অন্যদিকে ক্ষমতার হস্তান্তরের নামে এই আলোচনা চলা অবস্থায় পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জনাব জুলফিকার আলী ভুট্টো সৃষ্ট সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের পরিবর্তে নতুন করে সংকটের সৃষ্টি করে। অযৌক্তিক দাবি উপস্থাপনের ফলে সুষ্ঠু রাজনৈতিক সমাধানের পথ এক সময় রুদ্ধ হয়ে পড়ে। পাকিস্তান সামরিক শাসকগণ স্বার্থান্বেষী মহলের সাথে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সামরিক ক্ষমতা প্রয়োগের প্রস্ত্ততি গ্রহণ করে।

একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের জন্য রাজনৈতিক আলোচনার আড়ালে সামরিক বাহিনী মাত্র ২২ দিনে দুই ডিভিশন অবাঙালি সৈন্য পাকিস্তান থেকে পূর্ব বাংলায় স্থানান্তরে সক্ষম হয়। বাস্তবতায় এটিই ছিল তাদের আলোচনার নামে কালক্ষেপণের মূল উদ্দেশ্য। ২৪শে মার্চ ৭১ সামরিক শাসকগণ হেলিকপ্টার যোগে সমস্ত সেনানিবাসে এই আক্রমণের পরিকল্পনা হস্তান্তর করে। বাঙালি জাতির উপর পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর এই কুখ্যাত হত্যাযজ্ঞের নির্দেশ নামা ''অপারেশন সার্চ লাইট'' নামে পরিচিতি।

২৫শে মার্চ ৭১ রাত্র ১১টায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিত আক্রমণের প্রস্ত্ততি নিয়ে সেনানিবাস অথবা আক্রমণ প্রস্ত্ততিস্থানগুলি ত্যাগ করে। একই সাথে ঢাকাসহ দেশের সমস্ত বড় শহর ও সেনানিবাসের বাঙালি রেজিমেন্টসমূহ আক্রান্ত হয়। সেনাবাহিনীর হাতে বঙ্গবন্ধু রাত ১২টা ৩০ মিনিটে ধানমন্ডি বাসভবন থেকে বন্দী হবার পূর্বে তিনি দলীয় নেতৃবন্দেকে করণীয় বিষয়ে যথাযথ নির্দেশ দিয়ে অবস্থান পরিবর্তনের কথা বলেন। একই সাথে তিনি বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত হয়।

অপারেশন সার্চলাইট ও ২৫শে মার্চের গণহত্যাঃ ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের বড় শহরগুলোতে গণহত্যা শুরু করে। তাদের পূর্বপরিকল্পিত এই গণহত্যাটি ''অপারেশন সার্চলাইট'' নামে পরিচিত। এ গণহত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগে থেকেই পাকিস্তান আর্মিতে কর্মরত সকল বাঙালি অফিসারদের হত্যা কিংবা গ্রেফতার করার চেষ্টা করা হয়। ঢাকার পিলখানায়, ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের ই বি আর সিসহ সারাদেশের সামরিক আধাসামরিক সৈন্যদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

এই হত্যাকান্ডের কথা যেন বহির্বিশ্ব না জানতে পারে সে জন্য আগেই সকল বিদেশি সাংবাদিকদের গতিবিধির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয় এবং অনেককে দেশ থেকে বের করে দেয়া হয়। তবে ওয়াশিংটন পোস্টের বিখ্যাত সাংবাদিক সাইমন ড্রিং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের রিপোর্ট প্রকাশ করেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব এই গণহত্যা সম্পর্কে অবগত হয়। আলোচনার নামে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার কালক্ষেপণও এই গণহত্যা পরিকল্পনারই অংশ ছিল।

২৫ মার্চ রাত প্রায় সাড়ে এগারোটার দিকে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। পাকিস্তানিদের অপারেশনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ঢাকা বিশববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হল এবং জগন্নাথ হলের ছাত্রদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়। ঢাকা বিশববিদ্যালয় ও আশেপাশের বহু সংখ্যক শিক্ষক ও সাধারণ কর্মচারিদেরও হত্যা করা হয়। পুরোনো ঢাকার হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেও চালানো হয় ব্যাপক গণহত্যা।

রাজারবাগ পুলিশ লাইনে আক্রমণ করে হত্যা করা হয় পুলিশ বাহিনীর বহু সদস্যকে। পিলখানার ইপিআর-এর কেন্দ্রে আচমকা আক্রমণ চালিয়ে নির্বিচারে হত্যা করা হয় নিরস্ত্র সদস্যদের। কয়েকটি পত্রিকা অফিস ভস্মীভূত করা হয়। দেশময় ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে নির্বিচারে হত্যা করা হয় বিভিন্ন এলাকায় ঘুমন্ত নর-নারীকে। হত্যা করা হয় শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদেরও। ধারণা করা হয়, সেই রাত্রিতে একমাত্র ঢাকা ও তার আশে পাশের এলাকাতে প্রায় এক লক্ষ নিরীহ নর-নারীর জীবনাবসান ঘটে।

স্বাধীনতার ঘোষণাঃ তিনি পাকিস্তানি সশস্ত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সংগ্রামের জন্য বাংলার জনগণকে আহবান জানান। চট্ট্রগ্রামে তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে প্রচারের জন্য পাঠানো হয়। ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু ঘোষণাকে অবলম্বন করে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ নেতা এম. এ হান্নান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।

২৭ মার্চ অপরাহ্নে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ৮ম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার আরেকটি ঘোষণা পাঠ করেন। এই ঘোষণাটিতে তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশে শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে।

তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, নবগঠিত এই রাষ্ট্রের সরকার জোটবদ্ধ না হয়ে বিশ্বের অপর রাষ্ট্রগুলোর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টিতে আগ্রহী। এছাড়াও এ ঘোষণায় সারা বিশ্বের সরকারগুলোকে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলারও আহ্বান জানানো হয়।

স্বাধীনতা দিবস কিভাবে পালন করা হয়

স্বাধীনতা দিবস কিভাবে পালন করা হয় সে সম্পর্কে সকলেই জানেন। ২৬শে মার্চ মূলত আমাদের প্রতিটা বাঙালির জন্য একটি গর্বের দিন। বাংলাদেশের সূর্যোদয় মূলত এই দিনেই হয়েছিল। ২৬শে মার্চের স্বাধীনতা ভাষণের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তামান মানুষের মধ্যে মুক্তির চেতনা জাগ্রত করে। তার নেতৃত্বে আজ আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস করি। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কষ্টদায়ক দিন হচ্ছে ২৬শে মার্চ।
স্বাধীনতা-দিবস-কিভাবে-পালন-করা-হয়
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস বেশ বর্ণাঢ্য ভাবে উদ্‌যাপন করা হয়। জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে উদ্‌যাপন শুরু হয়। ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও বিভিন্ন রঙের পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়।

জাতীয় স্টেডিয়ামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে ও শরীরচর্চা প্রদর্শন করা হয়। এই দিনটিতে সরকারি ছুটি থাকে। পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র বের করে। বেতার ও টিভি চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে। বিশেষ করে এই দিনটি পালিত হয় আগামী পরজন্মের কাছে দেশত্ববোধ তুলে ধরার জন্য। তা না হলে তারা বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাস ভুলে যাবে।

বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের মধ্যে পার্থক্য

বিষয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের মধ্যে পার্থক্য কি বা কতো তারিখ সেইটা অনেকে বুঝতে পারে না। অনেকে মনে করে বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবস একই। কিন্তু বাঙালি জাতির জীবনী বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য এবং গুরুত্ব আলাদা। বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের পার্থক্যগুলো আলোচনা করা হলো।

বিজয় দিবসঃ বিজয় দিবস ১৬ই ডিসেম্বর। এই দিনে বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি পায়। এই দিন থেকে যুদ্ধ শেষ হয়। ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামে নতুন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। সেদিন থেকে বাংলাদেশ সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি রাষ্ট্র। তার নিজস্ব ভূখণ্ড রয়েছে। এখনো প্রতিটি বাঙালি জাতির মধ্যে বিজয় দিবসের আনন্দ বিদ্যমান। বাংলাদেশে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনে নানান প্রকারের কর্মসূচি মাধ্যমে পালন করা হয়।

স্বাধীনতা দিবসঃ স্বাধীনতা দিবস মূলত ২৬ শে মার্চকে বলা হয়। যদিও বাংলাদেশ এই দিনে স্বাধীনতা অর্জন করে নি। কিন্তু স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল স্বাধীনতা অর্জনের মূল ভিত্তি। আর সেই দিন থেকেই আমাদের দেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহীনির সাথে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। পাকিস্তানি বাহিনী ২৫ শে মার্চ রাতে গণঅত্যা চালায়। এজন্য বলা যায় সকল বাঙ্গালীর কাছে ২৬ শে মার্চ হচ্ছে একটি বিশেষ দিন।

স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য

স্বাধীনতা শব্দটির তাৎপর্য গভীর ও ব্যাপক। স্বাধীনতা মানে নতুন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আয়োজন নয়। স্বাধীনতা হলো স্বাধীন রাষ্ট্রে সার্বভৌম জাতি হিসেবে টিকে থাকার আয়োজন। স্বাধীনতা মানে ইচ্ছার স্বাধীনতা, রাজনীতির স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক মুক্তি। একটি দেশের স্বাধীনতা সেদিনই সার্থক হয় যেদিন দেশের আপামর জনগণ প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক পরিবেশে, নিজেদের নাগরিক অধিকার নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার ক্ষমতা অর্জন করে।

২৬ মার্চ, ১৯৭১ সালে পৃথিবীর মানচিত্রে একটি দেশের নামের অন্তর্ভুক্তি ঘটে- বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস এ দিনটিকে ঘিরে রচিত হয়েছে। এ দিনের নবীন সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে আমাদের জাতীয় জীবনে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। এ স্বাধীনতা দিবসের আনন্দোজ্জ্বল মুহূর্তের মধ্যে প্রথমেই যে কথা মনে পড়ে, তা হলো এ দেশের অসংখ্য দেশপ্রেমিক শহীদের আত্মদান। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার মানুষ পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক স্বৈরশাসনের ২৪ বছরের গস্নানি থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পেয়েছিল। লাখ লাখ শহীদের রক্তে রাঙানো আমাদের স্বাধীনতার সূর্য। তাই এ দেশের জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবস সবচাইতে গৌরবময় ও পবিত্রতম দিন।

২৬ মার্চ, আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস। আমাদের হাজার বছরের ইতিহাসের রক্ত অক্ষরে লেখা অনন্য এক গৌরবোজ্জ্বল দিন। তবে এই দিনটি আসার পেছনের ইতিহাস বিশ্লেষণে দেখতে পাই ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী পূর্ব বাংলার মানুষ তথা বাঙালিদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু করে। প্রথমেই বাঙালিদের মাতৃভাষা ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানে।

সমগ্র পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে এককভাবে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়া হয়। গর্জে ওঠে বাঙালি, গড়ে তুলে ভাষা আন্দোলন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রম্নয়ারিতে বাংলার দামাল তরুণদের জীবন দেয়ার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বাঙালিদের রাজনৈতিক ঐক্য যুক্তফ্রন্ট বিজয় অর্জন করে। কিন্তু পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করে অল্পকালের মধ্যেই ভেঙে দেয় প্রাদেশিক যুক্তফ্রন্ট সরকার।

অল্পকালের মধ্যেই গড়ে ওঠে ছয় দফা ও এগার দফা আন্দোলন। আন্দোলন ক্রমেই গণআন্দোলনে রূপ লাভ করে। আর এরই মধ্যে আগুনে ঘি ঢালার মতো ঘটনা ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সংগঠিত হত্যাকান্ড। এবার গণআন্দোলন গণবিস্ফোরণে পরিণত হয়। আন্দোলনের মুখে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান পদত্যাগ করলেন। ক্ষমতায় আসলেন জেনারেল ইয়াহিয়া খান। ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় এসেই নির্বাচন দিলেন।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বাঙালিদের রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু বিজয়ী দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয় না। শুরু হয় ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র। ইয়াহিয়া তথা সরকারপক্ষ আলোচনায় বসতে চাইলেন এবং বসলেন। এবার শুরু হলো আলোচনার নামে কালক্ষেপণ। এতসব ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল জনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়ে বললেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ২৫ মার্চ রাতে শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত বাঙালিদের ওপর। পৃথিবীর ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকান্ড চালায় অপারেশন সার্চলাইট নাম দিয়ে। তখন থেকেই ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জন ও অসাম্প্রদায়িক, কল্যাণমুখী, মানবিক, প্রগতিশীল স্বতন্ত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। মানুষের মৌলিক অধিকার ও ন্যায়সংগত অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় প্রতিষ্ঠা, শোষণ, বৈষম্য, অন্যায়ের অবসান ঘটিয়ে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত একটি সুখীসমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।

জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য অপরিসীম। এই দিনটি বাঙালির জীবনে বয়ে আনে একই সঙ্গে আনন্দ-বেদনার অম্স্ন-মধুর অনুভূতি। একদিকে হারানোর কষ্ট অন্যদিকে প্রাপ্তির আনন্দ। তবে শেষ পর্যন্ত সর্বস্ব হারিয়েও স্বাধীনতা প্রাপ্তির অপার আনন্দই বড় হয়ে ওঠে প্রতিটি বাঙালির কাছে। গৌরবোজ্জ্বল এই দিনটি প্রতিবছর আসে আত্মত্যাগ ও আত্মপরিচয়ের বার্তা নিয়ে। স্মরণ করিয়ে দেয় আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য। নব উদ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা নিয়ে আসে এই দিন।

সংকট উত্তরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আশার কথা হলো, আমাদের বর্তমান প্রজন্ম স্বাধীনতার ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহী। এই প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার দীক্ষায় দীক্ষিত করতে হবে। এ জন্য এদের হাতে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে দেয়া জরুরি। জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে সঠিক ইতিহাস সংগ্রহের মাধ্যমে ইতিহাসবিকৃতি রোধের মাধ্যমে তা সম্ভব হতে পারে। দল কিংবা ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে ওঠে কল্যাণমুখী রাজনীতির চর্চা করতে হবে।

ইতিহাসের নতুন অধ্যায়টিতে প্রবেশ করতে গিয়ে নতুন প্রজন্মের বোঝা উচিত যে, স্বাধীনতা মানে শুধু পরাধীনতা থেকে মুক্তি নয়, নতুন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আয়োজন ও শুধু নয়। স্বাধীনতা হলো- স্বাধীন রাষ্ট্রে সার্বভৌম জাতি হিসেবে টিকে থাকার আয়োজন। স্বাধীনতা মানে ইচ্ছার স্বাধীনতা, রাজনীতির স্বাধীনতা এবং অবশ্যই অর্থনৈতিক মুক্তি। বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্পষ্টভাবেই উচ্চারণ করেছিলেন, 

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। এই মুক্তির সংগ্রামে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে আমাদের তরুণ প্রজন্ম একাত্তরের মুক্তিসংগ্রামীদের মতোই স্বপ্ন ও সাহস এগিয়ে আসুক, এটিই আমাদের প্রত্যাশা। স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য বেশি প্রয়োজন সংগ্রাম ও শক্তির। আর স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন প্রযুক্তি, কৌশল, ঐক্য ও ন্যায়বোধ। এ ছাড়া স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে জ্ঞান, বুদ্ধি, শিক্ষা ও সৎ বিবেচনাকে কাজে লাগানো একান্ত অপরিহার্য।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর


প্রশ্নঃ মুক্তিযুদ্ধ কি?

উত্তরঃ মুক্তিযুদ্ধ হলো এমন একটি যুদ্ধ, যা একটি দেশ বা অঞ্চলের মানুষের স্বাধীনতা এবং স্বাধীন বিচারের জন্য লড়াই। যেটা বাংলাদেশে সংঘটিত হয়েছিল ১৯৭১ সালে।

প্রশ্নঃ মুক্তিযুদ্ধের মূল কারণ কি ছিল?

উত্তরঃ মুক্তিযুদ্ধের মূল কারণ ছিল পূর্ব পাকিস্তানের শাসনামলে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি সঙ্গতি, সামাজিক, আর্থিক এবং রাজনৈতিক অসমব্যায়ের বিরুদ্ধে বাঙালি জনগণের একঘেয়ে অসন্তোষ।

প্রশ্নঃ স্বাধীনতা দিবসের স্লোগান কি?

উত্তরঃ বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো, এই একটি স্লোগান এর মধ্য দিয়ে ১৯৭১ এর এই দিনে বাঙালি জেগে উঠেছিল দেশ রক্ষার মহান দায়িত্বে। বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সেদিনের অন্ধকারাচ্ছন্ন জাতি পেয়েছিলো আলোর দিশা, ধীরে ধীরে যা ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের প্রতিটি অঞ্চলে।

প্রশ্নঃ মেজর জিয়া কে ছিলেন?

উত্তরঃ
জিয়াউর রহমান (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ৩০ মে ১৯৮১) ছিলেন বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন সেনাপ্রধান এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাঙালি জনগণের উপর আক্রমণ করার পর তিনি তার পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে বিদ্রোহ করেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

প্রশ্নঃ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী দেশ কয়টি?

উত্তরঃ ইসরাইল ছাড়া জাতিসংঘের সব সদস্য দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় । স্বাধীনতার পরপরই ইসরাইল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলেও ফিলিস্তিনের সমর্থনে বাংলাদেশ তা প্রত্যাখ্যান করে।

২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য/২৬ শে মার্চ এর ভাষণ

২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য বা ভাষণ সম্পর্কে আসন্ন মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আজ আমি আলোচনা করবো। এই দিনে আমাদের দেশে বিভিন্ন জায়গায় যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয় মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান। আর সেই অনুষ্ঠানে অনেককেই ২৬শে মার্চের বক্তব্য দিতে হয়। কিন্তু সবাই তো সুন্দর করে বক্তব্য দিতে পারেননা। তাই আজকে আমি ২৬শে মার্চের বক্তব্য বা ভাষণ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

২৬-শে-মার্চ-এর-বক্তব্য

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বক্তব্যের শুরুতে আমি মঞ্চের সামনে বসা মাননীয় প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, সম্মানিত সুধীজনদের প্রতি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। প্রিয় উপস্থিত সুধীবৃন্দ, আজ ২৬শে মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। আজকের এই দিনে, আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে স্মরণ করি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি।

আজ সেই মহান মানুষটিকে খুব মনে পড়ছে। যিনি পাকিস্তানি শাসনামলে জেলে থাকা, একাধিকবার ফাঁসির মঞ্চের মুখোমুখি, অসংখ্য মিথ্যা মামলায় অসংখ্যবার কারা বরণ করেও এদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যার অসীম সাহসিকতা, দৃঢ় মনোভাব ও আপসহীন নেতৃত্বে বাঙালি জাতিকে সংগ্রামে সাহস যুগিয়েছিলেন। সেই সাথে স্মরণ করছি, সেইসব শহীদদের প্রতি যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের আজকের এই স্বাধীনতা।

প্রিয় উপস্থিতি আমরা সকলেই জানি যে, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা আরও কঠিন। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের শৌর্য-বীর্যের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন আজ। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন আজ। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম জানান দেওয়ার দিন আজ।

তাই যদি আমরা আমাদের স্বাধীনতার আশা এবং আত্মত্যাগকে রক্ষা করতে চাই, তাহলে এই দেশকে অবশ্যই ভালবাসতে হবে। আমরা যদি সকলে মিলে একটি সংগথন গড়ে তুলতে পারি এবং আমরা যদি আমাদের নিজ নিজ দায়িত্ব নিয়ে কঠোর হতে পারি তাহলে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো ইনশাল্লাহ।

এই শুভদিন উপলক্ষ্যে, আমি আমাদের সমস্ত সশস্ত্র বাহিনী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং প্রত্যেক ব্যক্তিকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই যারা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় অক্লান্ত অবদান রেখেছেন। আমাদেরকে ঐক্যের নীতি, ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতা আরও উজ্জ্বল বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করুক।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে, বাঙালি জাতি একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। ৩০ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতার পর, বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে। তবে, আমাদের এখনো অনেক কাজ বাকি আছে। আমরা উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। এই লক্ষ্যে, আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে।

আশা করি, আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব। আমাদের এই বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক! ধন্যবাদ সবাইকে।
ধন্যবাদ, আসসালামু আলাইকুম,

২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে শেষকথা

সম্মানিত পাঠক আশা করছি আমার লেখা ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও ১৯৭১ এর ইতিহাস এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেলটিতে ২৬ শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস আলোচনা করার পাশাপাশি স্বাধীনতা দিবস কি, ২৬ মার্চ ১৯৭১ এর ইতিহাস এবং স্বাধীনতা দিবস কিভাবে পালন করা হয়, বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের মধ্যে পার্থক্য কি ইত্যাদি তুলে ধরেছি।

আপনাদের যদি এই ব্লগ পোষ্টটি ভালো লেগে থাকে কিংবা আপনাদের মাঝে কোন মতামত থাকে, তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং চাইলে শেয়ার করে অন্যদের জানানোর সুযোগ করে দিতে পারেন। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও ১৯৭১ এর ইতিহাস নিয়ে বিস্তারিত অনেক তথ্য আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url