ড্রপশিপিং বিজনেস করে ইনকাম করার উপায় জেনে নিন
ড্রপশিপিং বিজনেস করে ইনকাম করার উপায় রয়েছে যার সাহায্যে আপনি ২-৩ ঘন্টা
অনলাইনে কাজ করে ঘরে বসে ইনকাম করতে পারবেন। ড্রপশিপিং বিজনেস অনলাইন আয়ের
জন্য একটি দুর্দান্ত অপশন, যা আপনি আপনার ফোন, ল্যাপটপ ও কম্পিউটারের মাধ্যমে
করতে পারেন।
আজকের ব্লগ পোস্টে আমি আপনাকে ড্রপশিপিং কি, কীভাবে ড্রপশিপিং কাজ করে, কীভাবে
ড্রপশিপিং শুরু করতে হয়, কীভাবে ড্রপশিপিং থেকে আয় করতে হয় এবং
ড্রপশিপিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দিবো। ড্রপশিপিং বিজনেস
করে ইনকাম করার উপায় জেনে নিন।
পেইজ সূচিপত্রঃ ড্রপশিপিং বিজনেস করে ইনকাম করার উপায়
- ড্রপশিপিং বিজনেস কি
- ড্রপশিপিং বিজনেস করে ইনকাম করার উপায়
- ড্রপশিপিং কিভাবে কাজ করে
- ড্রপশিপিং বিজনেস কেন করবেন
- কিভাবে ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করবেন
- ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করতে কি কি লাগে
- ড্রপশিপিং বিজনেস করার কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট
- ড্রপশিপিং বিজনেস এর সুবিধা
- ড্রপশিপিং বিজনেস এর অসুবিধা
- ড্রপশিপিং বিজনেস সম্পর্কে শেষকথা
ড্রপশিপিং বিজনেস কি
ড্রপশিপিং (Dropshipping) হলো একটি ই-কমার্স ব্যবসায় মডেল, যেখানে আপনি
নিজস্ব স্টক বা ইনভেন্টরি ছাড়াই পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে,
আপনাকে একজন বিক্রেতার ভূমিকা পালন করতে হয়। ক্রেতা আপনার অনলাইন স্টোর থেকে
পণ্য অর্ডার করলে, আপনি সেই অর্ডারটি সরাসরি একজন সাপ্লায়ার বা
ম্যানুফ্যাকচারারের কাছে পাঠিয়ে দেন, এবং সাপ্লায়ার সেই পণ্য সরাসরি
ক্রেতার কাছে পাঠিয়ে দেয়।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি একটি অনলাইন স্টোর খুলেছেন। আপনি আপনার অনলাইন স্টোরের
মাধ্যমে একজন বিক্রেতার একটি টি-শার্টের প্রচার করছেন এবং সেই টি-শার্টের দাম
হলো ২০০ টাকা। তবে আপনি সেই টি-শার্টের সাথে আরো ১০০ টাকা যোগ করে আপনি আপনার
গ্রাহকের কাছে ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে পারেন। এতে আপনার লাভ হয় ১০০
টাকা। এই ব্যবসার পুরো প্রক্রিয়াটি মূলত তিনটি পক্ষের সমন্বয়ে চলেঃ
- ক্রেতা (Buyer): যিনি আপনার স্টোর থেকে পণ্য ক্রয় করেন।
- বিক্রেতা (Seller/You): আপনার স্টোর পরিচালনা করেন এবং ক্রেতার কাছ থেকে অর্ডার সংগ্রহ করেন।
- সাপ্লায়ার (Supplier): যিনি পণ্য সরবরাহ করেন এবং ক্রেতার কাছে সরাসরি পাঠান।
এক কথায় বলতে গেলে, পাইকারি বিক্রেতার কাছ থেকে সরাসরি কাস্টমারের কাছে পণ্য
পৌঁছে দেয়ার নামই ড্রপ শিপিং। সহজ করে বললে, আপনি সাপ্লায়ার বা উৎপাদনকারীর
সাথে একটা চুক্তি করলেন। তারপর সাপ্লায়ার বা উৎপাদনকারীর যে পণ্যগুলো নিয়ে
আপনি কাজ করবেন সেগুলোর তথ্য, ছবি ইত্যাদি নিয়ে অনলাইনে একটি স্টোর (
ই-কমার্স ওয়েব সাইট) তৈরি করলেন। আপনার সাইটে একজন ক্রেতা কিছু অর্ডার করলে
আপনি সেই অর্ডারের ডিটেইলস আপনার সাপ্লায়ার বা উৎপাদনকারীকে জানিয়ে দিলেন।
তিনি আপনার কোম্পানীর লগো, ঠিকানা ইত্যাদি ব্যবহার করে তা প্যাকেজ করে
ক্রেতার নিকট পাঠিয়ে দিবে।
ড্রপশিপিং বিজনেস করে ইনকাম করার উপায়
ড্রপশিপিং বিজনেস করে ইনকাম করার উপায় রয়েছে বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে।
ড্রপশিপিং একটি জনপ্রিয় অনলাইন ব্যবসার মডেল যেখানে আপনি পণ্য নিজের কাছে
মজুদ না রেখে সরাসরি সরবরাহকারীর কাছ থেকে গ্রাহকের কাছে পাঠান। এটি কম
মূলধন দিয়ে শুরু করা সম্ভব এবং আপনি বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে এটি
পরিচালনা করতে পারেন। ড্রপশিপিং ব্যবসা করে ইনকাম করার উপায় নিচে
আলোচনা করা হলো।
ড্রপশিপিং থেকে ইনকাম করতে, আপনাকে আপনার অনলাইন স্টোর তৈরি করতে হবে, এবং
আপনার মার্জিন যোগ করে এতে অন্য বিক্রেতার পণ্য এড করতে হবে। ড্রপশিপিং-এ, আপনি কতটা মার্জিন যোগ করতে চান তা আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত
নিতে পারেন। আমি শুরুতেই টি-শার্টের উদাহরণ দিয়ে বলেছি, কিভাবে আপনি আপনার মার্জিন
হিসাবে ১০০ টাকা যোগ করে ২০০ টাকা মূল্যের টি-শার্টটি ৩০০ টাকায় বিক্রি
করতে পারেন। ২০০তে কিনে নিজের স্টোরে ৩০০টাকায় বিক্রি করা মূলত ড্রপশিপিং
বা মার্জিন ।
যখনই কোনো গ্রাহক আপনার অনলাইন স্টোর থেকে কোনো পণ্যের অর্ডার দেবে, আপনার অনলাইন স্টোর অটোমেটিক সেই অর্ডার অন্যর বিক্রেতার কাছে পাঠায়। এর পরে সেই বিক্রেতা পণ্যটি গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয় এবং পণ্যের প্রকৃত মূল্য রেখে আপনার কাছে একটা amount লাভ থাকে। ড্রপশিপিং ব্যবসায় আপনি যত বেশি অর্ডার পাবেন, আপনি তত বেশি আয় করতে পারবেন। তাহলে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন ড্রপশিপিং বিজনেস করে ইনকাম করার উপায় কি সে সম্পর্কে।
ড্রপশিপিং কিভাবে কাজ করে
ড্রপশিপিং কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে আর্টিকেলের এই অংশে জানতে পারবেন। ড্রপশিপিং ব্যবসার সাথে অনলাইনে পণ্য ক্রয় এবং বিক্রয় জড়িত। ড্রপশিপিং (Dropshipping) একটি অনলাইন ব্যবসায়িক মডেল, যেখানে বিক্রেতা নিজের কাছে পণ্য মজুদ না রেখে সরাসরি সরবরাহকারীর কাছ থেকে ক্রেতার কাছে পণ্য পাঠায়। এটি একটি সহজ এবং ঝুঁকিমুক্ত ব্যবসায়িক মডেল, যা নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বেশ জনপ্রিয়।
এই ব্যবসায়, একজন খুচরা বিক্রেতা থাকেন যিনি তার অনলাইন স্টোরের মাধ্যমে
পণ্যের প্রচার করেন। আপনি যদি ড্রপশিপিং ব্যবসা করছেন, তাহলে আপনি নিজেই
খুচরা বিক্রেতা। একজন খুচরা বিক্রেতাকে ড্রপশিপারও বলা হয়। খুচরা বিক্রেতা
নিজের জন্য একটি জন্য ভালো স্টোর খুঁজে, যার পণ্যের মান ভাল এবং সময়মতো
গ্রাহকের কাছে পণ্য সরবরাহ করে। এর পর নিজের কাস্টমারের জন্য পণ্য ক্রয়
করেন। ড্রপশিপিংয়ের কাজ করার প্রক্রিয়া নিচে তুলে ধরা হলোঃ
নিশ সিলেকশনঃ বিজনেসের অনলাইন স্টোরের জন্য একটি স্পেসিফিক নিশ বাছাই
করে নিতে হয়। এক্ষেত্রে একটি প্রফিটেবল নিশ খুঁজে পেতে আপনার টার্গেটেড
অডিয়েন্স এর আগ্রহ, প্রেফারেন্স, বর্তমান বাজারের অবস্থা বিবেচনা করে নিশ
সিলেক্ট করা উচিত। তাছাড়া, ট্রেন্ডি কিংবা এমন কিছু যা মানুষ নিত্যদিনের কাজে
আসে এমন কিছু সিলেক্ট করা বেশি কার্যকর।
মার্কেট রিসার্চ করাঃ এবার মার্কেটে পূর্বে নির্বাচিত নিশের মধ্যে
সম্ভাব্য প্রডাক্ট এবং সাপ্লায়ারদের নিয়ে গবেষণা করা হয়। বেশি চাহিদা এবং কম
প্রতিযোগিতা সম্পন্ন এমন প্রোডাক্ট গুলো বাছাই করতে হয়। তাছাড়া, কম্পিটিটর রা
কিভাবে মার্কেটিং করছে, প্রাইস কেমন রাখছে, কোথা থেকে ভাল পন্য আমদানি করছেন
এই বিষয় গুলে খুঁজে বের করতে হয়।
স্টোর সেট আপ করাঃ Dropshipping এর গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি হল একটি অনলাইন
স্টোর সেট আপ করা। সাধারণত শপিফাই, WooCommerce বা অন্যদের মতো একটি ই-কমার্স
প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে স্টোর সেট করা। এখানে আপনার বিজনেসের সকল প্রোডাক্ট
গুলো প্রাইজ সহ ডিসপ্লে করা থাকবে এবং কাস্টমাররা অনলাইনে প্রোডাক্ট গুলো
দেখতে পারবে।
সাপ্লায়ার নির্বাচন করাঃ ড্রপশিপাররা মূলত যেসব পণ্য বিক্রি করতে
চায় সেগুলো নির্ধারিত সাপ্লায়ার এর কাছ থেকে নিয়ে আসে৷ এক্ষেত্রে এমন
সাপ্লায়ার সিলেক্ট করতে হবে যারা পন্যের কোয়ালিটি ও ক্রেডিবিলিটি ধরে রাখতে
পারে। নতুবা আপনার ড্রপশিপিং বিজনেস এ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। AliExpress,
SaleHoo, এবং Oberlo এর মত জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলি আপনাকে প্রোডাক্ট এবং
সাপ্লায়ার খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারে।
প্রোডাক্ট সিলেক্ট করাঃ এবার নির্বাচিত সাপ্লায়ারদের ক্যাটালগ থেকে
আপনি আপনার দোকানে যে পণ্যগুলি বিক্রি করতে চান সেগুলো সিলেক্ট করুন। এরপর
আপনার ওয়েবসাইটে এই প্রোডাক্টের লিস্ট এড করুন। যথাসম্ভব আকর্ষণীয় এবং হাই
কোয়ালিটি ইমেজ বাছাই করার চেষ্টা করুন।
মূল্য নির্ধারণ করাঃ পণ্যের মূল্য, শিপিং ফি এবং প্রোফিট মার্জিন সহ
আপনার মূল্য নির্ধারণের স্ট্র্যাটেজি সেট করতপ হবে। এক্ষেত্রে একটা জিনিস
নিশ্চিত রাখার ট্রাই করুন যে, আপনার পণ্যের দাম আপনার টোটাল খরচ কভার করে এবং
লাভের জন্য আলাদা করে ইনকাম নিয়ে আসতে পারে। পাশাপাশি অতিরিক্ত প্রাইস ও
কাস্টমারদের আগ্রহ কমিয়ে ফেলে। তাই, পন্যের কোয়ালিটির সাথে তাল মিলিয়ে প্রাইস
সেট করুন।
স্টোর এর মার্কেটিং করাঃ সম্ভাব্য গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে মার্কেটিং
স্ট্র্যাটেজি এপ্লাই করুন। এর মধ্যে এসইও, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং,
কন্টেন্ট মার্কেটিং এবং পেইড অ্যাডভার্টাইজিং এর মত অপশন গুলো ব্যবহার করতে
পারেন। এছাড়াও অনলাইন ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং ও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে
আজকাল।
অর্ডার রিসিভ করাঃ যখন একজন গ্রাহক ড্রপশিপারের দোকানে কোনো অর্ডার
দেয়, তখন ড্রপশিপার সরবরাহকারীর সাথে যোগাযোগ করে। ম্যানুয়ালি বা
স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি API এর মাধ্যমে এটি করা হয়। তাই, যখন গ্রাহকরা আপনার
ওয়েবসাইটে কোনো প্রোডাক্ট অর্ডার দেয়, তখন আপনি সেই অর্ডারগুলি আপনার
সাপ্লায়ার এর কাছে ফরোয়ার্ড করুন। এখানে আপনি পণ্যের জন্য সাপ্লায়ার কে
পাইকারি মূল্য পরিশোধ করবেন। আর আপনার কাস্টমার থেকে খুচরা বিক্রির পেমেন্ট
নিবেন।
সাপ্লাই ফুলফিলমেন্ট করাঃ সাপ্লায়ার পণ্যটি সরাসরি গ্রাহকের ঠিকানায়
পাঠিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে আপনি নির্দিষ্ট সময় পর এটা নিশ্চিত করুন যে আপনার
সরবরাহকারী নির্ভরযোগ্য এবং সময়মত শিপিং কমপ্লিট করেছে। নতুবা, লেট শিপিং,
প্রোডাক্ট ড্যামেজ ও ডেলিভারি সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার জন্য আপনার স্টোর কে
নেতিবাচক ভাবে দেখা হবে। এধরণের সমস্যার সমাধান করতে বর্তমানে শিপিং ট্র্যাক
করার অপশন চালু করা হয়েছে। এখানে বিজনেসের মালিক, সাপ্লায়ার, ডেলিভারিম্যান
থেকে শুরু করে কাস্টমার সবার কাছে পন্য শিপিং সম্পর্কিত আপডেট থাকবে।
কাস্টমার হেল্পলাইনঃ কাস্টমারের যেকোনো সমস্যা, প্রশ্ন, রিভিউ এবং
রিটার্ন নিজে থেকে ম্যানেজ করুন। যেহেতু স্টোর ও প্রোডাক্ট শিপিং আলাদা ভাবে
থাকলেও, সব রকম একটিভিটি আপনার বিজনেস কে রিপ্রেজেন্ট করবে। সেহেতু,
কাস্টমারদের যেকোনো সার্ভিস দেয়ার আগে সেগুলো ভালভাবে যাচাই করুন। এবং শিপিং
এর পরেও যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য পাশে থাকুন। এক্ষেত্রে লাইভ চ্যাটবট,
মেসেজ, ফোন ও ইমেল এর ব্যবস্থা রাখতে পারেন।
মনিটর এবং অপ্টিমাইজঃ নিয়মিত আপনার স্টোরের কর্মক্ষমতা অপটিমাইজ করুন।
সেলস, ডেটা এনালাইসিস, মার্কেটিং কৌশল, অফার ডিসকাউন্ট, ওভারঅল প্রোফিট,
বিজনেস গ্রোথ ইত্যাদি মনিটর করুন। সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে ট্রেন্ড ও
সাম্প্রতিক বিষয় গুলো সম্পর্কে ধারনা রাখার চেষ্টা করুন।
বিজনেস গ্রো করাঃ ফাইনালি, ব্যবসার ওভারঅল বৃদ্ধির সাথে সাথে পণ্যের
পরিসর, মার্কেটিং কৌশল, এবং বিজনেসের অফার গুলোকে আরো ডাইভারসিফাইড করার জন্য
একাধিক সাপ্লায়ারদের সাথে কাজ করার চেষ্টা করতে হবে। এতে বিজনেস এর পরিসর ও
প্রোফিট দুটোই বৃদ্ধি পাবে।
মুনাফা অর্জনঃ আপনার স্টোরের তালিকাভুক্ত মূল্যের সাথে সরবরাহকারীর
মূল্যের পার্থক্য আপনার লাভ। উদাহরণস্বরূপ, যদি সরবরাহকারীর থেকে একটি পণ্য
$10-এ কিনে $20-এ বিক্রি করেন, তাহলে আপনার মুনাফা $10।
ড্রপশিপিং বিজনেস কেন করবেন
ড্রপশিপিং বিজনেস কেন করবেন জানতে আর্টিকেলের এই অংশটি পড়ুন। ড্রপশিপিং ই-কমার্স বিজনেস মডেলে আপনি কোনো ইনভেন্টরি না রেখেই গ্রাহকদের কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারেন। ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে, যার কারণে এটি অনেকের জন্য একটি আকর্ষণীয় ব্যবসার মডেল হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কেন ড্রপশিপিং বিজনেস করবেন সে সম্পর্কে।
কম ইনিশিয়াল ইনভেস্টমেন্টঃ ড্রপশিপিংয়ের জন্য ন্যূনতম অগ্রিম
ক্যাপিটাল প্রয়োজন। কারণ এখানে আপনার ইনভেন্টরি কেনার কোনো দরকার নেই। তাই
Dropshipping নতুন ও কম বাজেটের উদ্যোক্তাদের জন্য অ্যাক্সেসযোগ্য এবং বেশ
কার্যকরী।
কম ঝুঁকিঃ যেহেতু আপনাকে পণ্য কিনতে হয় না, তাই অর্ডার না হলে
কোনো ক্ষতির মুখে পড়বেন না। শুধু গ্রাহকের অর্ডার আসলেই পণ্য সরবরাহ করবেন।
আপনি বিক্রয় না করা পর্যন্ত পণ্য কিনবেন না তাই আপনি অনসোল্ড ইনভেন্টরি
সমস্যায় আটকে থাকবেন না। এটি ট্রেডিশনাল খুচরা বিক্রয়ের তুলনায় আর্থিক
ঝুঁকি হ্রাস করে।
বিস্তৃত প্রোডাক্ট রেঞ্জঃ আপনি কোনো ধরনের স্টোরেজ লিমিটেশন ছাড়াই
বিভিন্ন ধরণের পণ্য আপনার স্টোরে অফার করতে পারবেন। যা আপনাকে বাজারের
প্রতিযোগিতা এবং গ্রাহকের প্রেফারেন্স এর সাথে তাল মিলিয়ে বিজনেস গ্রো করতে
সাহায্য করবে।
লোকেশন ইন্ডিপেন্ডেন্সঃ আপনি পৃথিবীর যেকোনও জায়গা থেকে ইন্টারনেট
সংযোগের সাহায্যে একটি ড্রপশিপিং বিজনেস ম্যানে করতে পারবেন। এখানে আপনাকে
বিজনেসের জন্য আলাদা করে স্টোর সেট আপ করা, লোকেশন সিলেকশন করার ঝামেলায়
পড়তে হচ্ছে না।
স্কেলেবিলিটিঃ ড্রপশিপিং ব্যবসায় স্কেল করা তুলনামূলকভাবে সহজ।
কারণ আপনি অনেক ঝামেলা ছাড়াই নতুন পণ্য স্টোরে এড করতে বা বিভিন্ন নিশ
বৃদ্ধি করতে পারবেন।
মার্কেটিং এর উপর ফোকাসঃ ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট আউটসোর্স করার
কারণে, আপনি মার্কেটিং, গ্রাহক পরিষেবা এবং আপনার ব্র্যান্ড বৃদ্ধিতে বেশি
ফোকাস করতে পারবেন। ফলে পণ্যের ও স্টোরের জনপ্রিয়তা, রিচ ও কাস্টমার বাড়বে।
কম ওভারহেডঃ পণ্য সংগ্রহ, প্যাকেজিং বা শিপিংয়ের জন্য আপনাকে কোনো
শ্রমিক বা বড় পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয় না। সেগুলো সরবরাহকারী বা শিপিং
কোম্পানি পরিচালনা করবে।
পণ্য বা নিশ টেস্ট করাঃ কোনো রকমের বিনিয়োগ না করেই আপনি একটি নতুন
পন্য সম্পর্কে কিংবা নিশ সম্পর্কে আইডিয়া নিতে পারবেন। যেহেতু আপনার কোনো
অগ্রিম ফি দিতে হবে না সেহেতু নতুন নতুন নিশ বা প্রোডাক্ট নিয়ে ড্রপশিপিং
করে মোস্ট ইফেক্টিভ নিশ সিলেক্ট করতে পারবেন।
কিভাবে ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করবেন
কিভাবে ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করবেন তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। আপনি দুটি উপায়ে ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন, প্রথম উপায়ে আপনি নিজের অনলাইন স্টোর তৈরি করে পণ্যটির প্রচার করতে পারেন এবং দ্বিতীয় উপায়ে আপনি অ্যামাজন, দারাজ, ইবে-এর মতো মার্কেটপ্লেসগুলিতে পণ্যটি বিক্রি করতে পারেন। এই দুটির মধ্যে, আপনার নিজস্ব অনলাইন স্টোর তৈরি করা ড্রপশিপিং ব্যবসার জন্য আরও উপকারী, কারণ এইভাবে আপনি নিজের ব্র্যান্ডও তৈরি করতে পারেন।
১. পণ্যের ক্যাটাগরি সিলেক্ট করুনঃ ড্রপশিপিং ব্যবসায় সাফল্য পাওয়ার
প্রথম ধাপ হল একটি সঠিক পণ্যের বিভাগ সিলেক্ট করা, আপনি একটি পণ্য ক্যাটাগরী
নির্বাচন করতে পারেন যা অনুযায়ী আপনি ভাল প্রচার করতে পারেন এবং আরও অর্ডার
আনতে পারেন। সঠিক পণ্যের বিভাগ নির্বাচন করতে, আপনাকে একটি পণ্যের চাহিদা
গবেষণা করতে হবে এবং দেখতে হবে কোন পণ্য লোকেরা বেশি কিনছে, বাজারে কোন
পণ্যটির চাহিদা বেশি ইত্যাদি।
ড্রপশিপিং-এ, আপনি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, রান্নাঘরের আইটেম, ফ্যাশন এবং
জুয়েলারি পণ্য, ইলেকট্রনিক আইটেম, হেলথ পণ্য, আসবাবপত্র, বই, স্পোর্ট পণ্য
ইত্যাদির মতো যেকোনো ধরনের পণ্য বিক্রি করতে পারেন। ড্রপশিপিং ব্যবসার জন্য পণ্য বিভাগ নির্বাচন করতে, আপনাকে কীওয়ার্ড
রিসার্চ করতে হবে । আপনি ফ্রি কিওয়ার্ড রিসার্চ টুল বা পেইড কিওয়ার্ড
রিসার্চ টুলের মাধ্যমে পণ্য বিভাগের জন্য রিসার্চ করতে পারেন । আপনি Google
Trends এর সাহায্যে ফ্রি ট্রেন্ডিং পণ্য সার্চ করতে পারেন ৷
২. প্রতিযোগিতার গবেষণা করুনঃ যেকোনো ব্যবসায় আপনার প্রতিযোগী
সম্পর্কে জানতে হবে। ড্রপশিপিং ব্যবসায় সাফল্য পেতে, আপনাকে আপনার
প্রতিযোগীর দিকেও নজর রাখতে হবে এবং দেখতে হবে তারা কী ধরনের মার্কেটিং কৌশল
ব্যবহার করে পণ্যটির প্রচার করছে। আপনার প্রতিযোগীকে খুঁজে পেতে, আপনি
Google-এ আপনার পণ্যের সম্পর্কে সার্চ করতে পারেন এবং তারপরে আপনি টপে যে
সমস্ত অনলাইন আছে সেগুলো দেখেন তা বিশ্লেষণ করতে পারেন।
৩. ভাল সাপ্লাইয়ার খুঁজুনঃ ড্রপশিপিং ব্যবসায় একটি ভাল বিক্রেতা
খুঁজে বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আপনার এমন একজন সাপ্লাইয়ার খুঁজে বের করা
উচিত যার কাছে ভাল মানের পণ্য রয়েছে এবং সময়মতো গ্রাহকদের কাছে পণ্য সরবরাহ
করতে পারে। যদি আপনার সাপ্লায়ার পণ্যগুলো ভাল না হয়, তবে আপনি গ্রাহকদের
কাছ থেকে প্রচুর অভিযোগ পাবেন, এবং যখন অতিরিক্ত অভিযোগ আসলে তখন পরিচালনা
করা আপনার পক্ষে কিছুটা কঠিন হবে।
৪. অনলাইন স্টোর তৈরি করুনঃ এখন আপনি পণ্যের বিভাগটিও নির্বাচন
করেছেন এবং একজন ভাল সরবরাহকারীও পেয়েছেন, এর পরে আপনাকে আপনার নিজস্ব
অনলাইন স্টোর তৈরি করতে হবে যেখানে আপনি সরবরাহকারীর পণ্য তালিকা করতে সক্ষম
হবেন। আপনি Amazon, Ebay এর মতো মার্কেটপ্লেসের সাথে ড্রপশিপিং ব্যবসাও করতে
পারেন, এতে আপনাকে আলাদা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে না।
অথবা আপনি যদি চান, তো আপনি Shopify বা WordPress- এ আপনার অনলাইন স্টোর তৈরি
করতে পারেন। আপনি যদি Shopify-এ নিজেকে অনলাইনে তৈরি করতে চান, তাহলে আপনাকে
একটি ইউনিক টপ লেভলের ডোমেইন নাম বেছে নিতে হবে , এই ডোমেইন নামটি হল আপনার
অনলাইন স্টোরের নাম যা ইন্টারনেটের মানুষ আপনার অনলাইন স্টোরকে খুঁজতে ইউজ
করবে।
৫. পণ্যের মার্কেটিং করুনঃ আপনি যখন একটি অনলাইন স্টোর তৈরি করবেন এবং
পণ্যের তালিকা করবেন, তখন আপনাকে আপনার স্তরের মার্কেটিং করতে হবে এবং
অনলাইনে এড করতে হবে যাতে আপনি অর্ডার পেতে পারেন। আপনাকে মার্কেটিংয়ের জন্য
একটি সঠিক কৌশল তৈরি করতে হবে, তবেই আপনি পণ্যটি এমন লোকদের কাছে পৌঁছে দিতে
পারবেন যারা আপনার পণ্যে আগ্রহী।
আপনি অর্গানিক এবং পেইড উভয় উপায়ে পণ্যের মার্কেটিং করতে পারেন, নিম্নলিখিত
মার্কেটিংয়ের কিছু উপায় রয়েছে-
- আপনি Facebook বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে Facebook এবং Instagram এ পণ্যটির প্রচার করতে পারেন, তবে এর জন্য আপনার Facebook Ads সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।
- আপনি Google বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে Google-এ পণ্যটির প্রচার করতে পারেন।
- আপনি অর্গানিক উপায়ে, আপনি যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আপনার স্টোরের নামে একটি পেজ তৈরি করতে পারেন এবং এতে নিয়মিত পোস্ট দেয়ার করে পণ্যটি মার্কেটিং করতে পারেন।
এইভাবে আপনি ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করার
জন্য এটি একটি বেসিক রোডম্যাপ।
ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করতে কি কি লাগে
ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করতে কি কি লাগে তা জানতে পারবেন আর্টিকেলের এই অংশ থেকে। একটি ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করার জন্য সাধারণত $200 থেকে $500 পর্যন্ত একটি প্রাথমিক বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়, যা ওয়েবসাইট হোস্টিং, প্ল্যাটফর্ম ফি এবং বিপণন ব্যয়ের মতো খরচগুলিকে কভার করে। নির্বাচিত প্ল্যাটফর্ম, বিপণন কৌশল এবং পণ্যের দামের উপর নির্ভর করে খরচ পরিবর্তিত হতে পারে। ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করতে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হবে যেমনঃ
নিশ নির্বাচন করাঃ প্রত্যেক ব্যবসার আগেই প্রথমে নিশ সিলেক্ট
করতে হয়। নিশ বলতে বোঝানো হচ্ছে আপনি যে ওয়েব সাইট নিয়ে কাজ করবেন সেখানে কোন
প্রোডাক্ট গুলো নিয়ে ব্যবসা করবেন সেটি। সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ট্রেন্ড
মেইনটেইন করতে হবে। অর্থাৎ ট্রেন্ডিং প্রোডাক্ট বা যে পন্য গুলো খুব বেশি
মানুষ খুজে সে গুলো খুঁজে নিয়ে সেগুলোর উপর রিসার্চ করবেন। এবং একটা বা দুটো
পন্য নিয়ে কাজ শুরু করবেন ।
প্রোডাক্ট নির্ধারণ করাঃ এটি সর্বপ্রথমে দরকার। আপনি যেই
প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা করবেন সে প্রোডাক্টটি কম দামে কোথায় পাওয়া যাবে সেটি
আগে আপনাকে রিসার্চ করে বের করতে হবে। আপনি যে সাইটে ড্রপশিপিং হিসেবে এড হয়ে
তাদের পন্য এড দিচ্ছেন তাদের পন্য বিক্রয় করতে হবে বিষয়টি এমন নয় । আপনি
যেখানে পন্যর দাম কম পাবেন সেখান থেকে আপনার কাস্টমারের জন্য পন্য সংগ্রহ
করবেন । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ড্রপশিপাররা আলি এক্সপ্রেসকে প্রোডাক্ট সোর্স
হিসেবে ব্যবহার করে।
ডোমেইন নির্বাচন করাঃ আপনি যেহেতু পুরোপরি ড্রপশিপিং এর জন্য
প্রস্তুত তাই এই ব্যবসাটি ভালো ভাবে এগিয়ে নিতে একটি ওয়েব সাইট খুলতে হবে ।
আপনার বিজনেসের একটি নাম সিলেক্ট করে সেই নামে একটি ডট কম ডোমেইন কিনে নিতে
হবে। এটি একটা ব্যবসার জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যেহেতু
ড্রপশিপিং বিজনেসটি পুরোই অনলাইন কেন্দ্রীক তাই আপনাকে অবশ্যই ডোমেইন কিনে
নিতে হবে।
ই- কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করাঃ ডোমেন নেওয়ার পর এবার আপনার
প্রয়োজন হবে একটি সুন্দর E-Commerce ওয়েবসাইটের। আপনাকে একটি প্রোফেশনাল লুকে
ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। আপনি যদি প্রথমিক আবস্থায় কম টাকায় শুরু
করতে চান তাহলে আপনি দুটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন শপিফাই অথবা
ওয়ার্ডপ্রেস।
সাপ্লায়ার নির্বাচন করাঃ ড্রপশিপিং সাপ্লায়ার নির্বাচন করা একটি
গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, কারণ আপনার ব্যবসার সাফল্য অনেকাংশে সঠিক সাপ্লায়ারের
ওপর নির্ভরশীল। ড্রপশিপিং ব্যবসায় একটি ভাল বিক্রেতা খুঁজে বের করা খুবই
গুরুত্বপূর্ণ, আপনার এমন একজন সাপ্লাইয়ার খুঁজে বের করা উচিত যার কাছে ভাল
মানের পণ্য রয়েছে এবং সময়মতো গ্রাহকদের কাছে পণ্য সরবরাহ করতে পারে। যদি
আপনার সাপ্লায়ার পণ্যগুলো ভাল না হয়, তবে আপনি গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রচুর
অভিযোগ পাবেন, এবং যখন অতিরিক্ত অভিযোগ আসলে তখন পরিচালনা করা আপনার পক্ষে
কিছুটা কঠিন হবে।
সোশ্যাল প্রোফাইল তৈরি করাঃ আপনার বিজনেসের নামে সব ধরনের
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। এটি আপনার প্রতি মানুষের আস্থা আরো
বাড়াবে। আপনি আপনার স্টোর প্রচারের জন্য বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতি
ব্যবহার করতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম), গুগল অ্যাডস,
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং, এবং SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) খুবই কার্যকর।
বিভিন্ন পেমেন্ট অপশন যেমন পেপাল, ক্রেডিট কার্ড এবং অন্যান্য সমর্থন যোগ
করুন। সোশ্যাল প্রোফাইল তৈরির সময় নিজের বিজনেসের লগো এবং ব্যানার যুক্ত করতে
হবে। সব মিলিয়ে আপনার প্রোফাইলটি প্রোফেশনাল হতে হবে।
পেমেন্ট গেটওয়ে সেটআপঃ পেমেন্ট গ্রহণের জন্য পেমেন্ট গেটওয়ে
যুক্ত করুন। আপনাকে যখন আপনার কাস্টমার পেমেন্ট করবে এবং এই পেমেন্ট আপনাকে
রিসিভ করতে হবে। কিন্তু হতে পারে কাস্টমার যে মেথডে পেমেন্ট করতে চায় আপনার
কাছে সেটি এভেইলএবেল নেই। তাহলে কি হবে? আবার এমনো হতে পারে আপনাকে পেমেন্ট
করার পরে আপনি প্রোডাক্ট দিলেন না। কিভাবে কাস্টমার আপনাকে বিশ্বাস করবে? এসব
সমস্যার সমাধান এর জন্য পেমেন্ট গেটওয়ে দরকার হয়।
পেমেন্ট গেটওয়ের কাজ হলো সে কাস্টমার থেকে পেমেন্ট নিবে এবং তাদের কাছে রাখবে
যখন কাস্টমার প্রডাক্ট রিসিভ এনসিউর করবে তখন পেমেন্টটা আপনার একাউন্টে চলে
আসবে। এমন জনপ্রিয় দুটি পেমেন্ট গেটওয়ে হলো পেপাল এবং স্ট্রাইপ।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো এ দুটি পেমেন্ট গেটওয়ে বাংলাদেশ সাপোর্ট করে
না। আমি মনে করি বাংলাদেশর ড্রপশিপারদের জন্য এটি বেশ বিশাল একটি সমস্যা।
সেক্ষেত্রে অনেকে অন্য দেশের ভেরিফাইড পেপাল একাউন্ট কিনে নেই। তার সত্তেও
সেসব একাউন্ট অনেক দাম এবং ব্যান হওয়ার একটি ঝুঁকি তো থাকেই। আপনার যদি কেউ
দুবাই বা সিঙ্গপুর থাকে তাদের মাধ্যমে আপনি পেপাল একউন্ট খুলে পেমেন্ট গ্রহন
করতে পারেন।
আপনি যদি সরাসরি যাদের পন্য নিয়ে কাজ করেন তাদের কাছে সরাসরি আর্ডার করলে তা
তাদের পেমেন্ট লিংক ব্যবহার করে পেমেন্ট দিলে এ সমস্য আর হবে না । তারা আপনার
লাভের অংশ আপনার ব্যংক একউন্ট এ দিয়ে দিবে । আর কাস্টমার যদি বাংলাদেশের হয়
তাহলে আর কোন সমস্যা হবে না ।
মার্কেটিং স্কিল ডেভেলপ করাঃ ড্রপশিপিং মানেইতো আপনি বুঝেছেন
অন্যের পণ্য আপনি বেশি দামে বিক্রি করে মাঝখানে একটি প্রোফিট জেনারেট করবেন৷
কিন্তু আপনি কি ভেবে দেখেছেন কেন মানুষ কম দামে পণ্য না কিনে বেশি দামে আপনার
থেকে পণ্য কিনে আপনাকে লাভবান করবে? তার কারণ হলো মার্কেটিং স্কিল।
আপনার মধ্যে যেই মার্কেটিং স্কিল থাকবে আপনি সেটি দিয়েই কাস্টমার পাবেন বলতে
গেলে আপনি যার পণ্য বিক্রি করবেন তার চেয়ে আপনার মার্কেটিং স্কিল ভালো তাই সে
পণ্য বিক্রি করতে পারে না আপনি পারেন। আর যদি আপনার মার্কেটিং স্কিল না থাকে
তাহলে আপনি এই সেক্টরে হতাশ হবেন প্রচুর। আমি বলব ড্রপশিপিংয়ে আসার আগে আপনি
নিজের মার্কেটিং স্কিল ডেভেলপ করুন।
ড্রপশিপিং বিজনেস করার কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট
ড্রপশিপিং বিজনেস করার কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আপনি সহজেই পণ্য
নির্বাচন, সরবরাহকারীর সাথে যোগাযোগ এবং ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারেন। সাধারণত
অনলাইন কিংবা অফলাইনে যেকোন মাধ্যমেই ড্রপশিপিং ব্যবসা করা যায়। তবে অনলাইনে
ড্রপশিপিং ব্যবসা করার জন্য বিশেষভাবে ই কমার্স ওয়েবসাইটের পণ্য কেনা-বেচা
করা হয়। নিচে কিছু জনপ্রিয় ড্রপশিপিং প্ল্যাটফর্মের তালিকা দেওয়া হলোঃ
আলীএক্সপ্রেসঃ AliExpress চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট Alibaba
Group-এর একটি জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস। এটি ড্রপশিপিং ব্যবসায়ীদের
মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় কারণ এটি পণ্য সোর্সিংয়ের জন্য সহজ, সাশ্রয়ী এবং
বৈচিত্র্যময় একটি প্ল্যাটফর্ম। ফ্যাশন, ইলেকট্রনিক্স, গৃহস্থালি পণ্য,
গয়না, খেলনা থেকে শুরু করে হাজার হাজার ক্যাটাগরির পণ্য সহজেই পাওয়া যায়।
পণ্য সরাসরি প্রস্তুতকারকদের কাছ থেকে কেনা যায়, ফলে খুচরা মূল্যের চেয়ে
অনেক কম দামে পণ্য পাওয়া সম্ভব।
আলীবাবাঃ Alibaba হলো চীনের একটি বৃহত্তম ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম,
যা মূলত ব্যবসা থেকে ব্যবসা (B2B) ভিত্তিক। এটি একটি wholesale marketplace,
যেখানে আপনি বড় পরিমাণে পণ্য ক্রয় করতে পারেন, যা ড্রপশিপিং ব্যবসায়ীদের
জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হতে পারে। যদিও Alibaba সরাসরি ড্রপশিপিং
সুবিধা প্রদান করে না, তবে এখানে আপনি আপনার পণ্য সরবরাহকারী খুঁজে পেতে
পারেন, যারা ড্রপশিপিংয়ের জন্য প্রস্তুত।
Alibaba এ ব্যবসায়ীকে পণ্য বিক্রি করতে অনুরোধ করা হলে, আপনাকে সরাসরি
সরবরাহকারীদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এখানে অনেক বড় পরিমাণে পণ্য বিক্রি
করা হয় এবং আপনি সরাসরি ডিলিং করে ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
আমাজনঃ Amazon হলো বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এবং জনপ্রিয় ই-কমার্স
প্ল্যাটফর্ম, যা প্রাথমিকভাবে B2C (ব্যবসা থেকে গ্রাহক) ভিত্তিক হলেও, এটি
ড্রপশিপিং ব্যবসার জন্যও একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। যদিও Amazon সরাসরি
ড্রপশিপিংয়ের জন্য কোনো নির্দিষ্ট পদ্ধতি বা সেবা অফার করে না, তবে
বিক্রেতারা সাইটের মাধ্যমে ড্রপশিপিং করতে পারেন।
একজন ড্রপশিপার Amazon-এর মার্কেটপ্লেসে পণ্য তালিকাভুক্ত করে। যখন কোনো
গ্রাহক সেই পণ্য কিনে, ড্রপশিপার তৃতীয় পক্ষের সরবরাহকারীর কাছ থেকে পণ্য
অর্ডার করে এবং সরাসরি গ্রাহকের কাছে পাঠিয়ে দেয়। ড্রপশিপারের কাজ হচ্ছে
মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রি করা এবং সরবরাহকারীর মাধ্যমে সেই পণ্য শিপিং করা।
শপিফাইঃ Shopify একটি জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী ই-কমার্স
প্ল্যাটফর্ম যা ব্যবসায়ীদের নিজেদের অনলাইন স্টোর তৈরি, পরিচালনা এবং বিক্রি
করার সুযোগ দেয়। এটি বিশেষভাবে ড্রপশিপিং ব্যবসার জন্য উপযুক্ত কারণ এটি
পণ্য লিস্টিং, অর্ডার ম্যানেজমেন্ট, পেমেন্ট প্রসেসিং এবং অন্যান্য
ব্যবসায়িক কাজ সহজভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে।
Shopify আপনাকে আপনার পণ্য সরবরাহকারী থেকে ড্রপশিপিং শুরু করার জন্য
প্রয়োজনীয় সমস্ত সরঞ্জাম এবং সুবিধা প্রদান করে থাকে। গ্রাহক যখন অর্ডার
দেয়, তখন আপনি সরবরাহকারীকে অর্ডারটি প্লেস করবেন। সরবরাহকারী আপনার পণ্য
সরাসরি গ্রাহকের কাছে পাঠিয়ে দেবে। Shopify এই প্রক্রিয়াটি
স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।
দারাজঃ Daraz হলো একটি জনপ্রিয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যা দক্ষিণ
এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে, বিশেষত বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল,
এবং মিয়ানমারে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি B2C (ব্যবসা থেকে গ্রাহক)
ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস হিসেবে কাজ করে, যেখানে বিক্রেতারা তাদের পণ্য বিক্রি
করতে পারেন এবং গ্রাহকরা বিভিন্ন ধরনের পণ্য কিনতে পারেন। Daraz ড্রপশিপিংয়ের
জন্য একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হতে পারে, তবে কিছু নির্দিষ্ট শর্তাদি এবং
পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়।
প্রথমে Daraz-এর বিক্রেতা হিসেবে নিবন্ধন করতে হবে। বিক্রেতা হিসেবে নিবন্ধন
করার পর, আপনি আপনার পণ্য লিস্টিং করতে পারেন এবং ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
Daraz এ বিভিন্ন পণ্য উপলব্ধ থাকে, তবে আপনি যদি ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করতে
চান, তাহলে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট সরবরাহকারী খুঁজে বের করতে হবে, যারা
ড্রপশিপিং সেবা প্রদান করে। আপনি স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক সরবরাহকারী থেকে
পণ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
সালেহুঃ SaleHoo হলো একটি জনপ্রিয় পাইকারি সরবরাহকারী ডিরেক্টরি
এবং ড্রপশিপিং প্ল্যাটফর্ম যা উদ্যোক্তাদের জন্য বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার
বিশ্বস্ত সরবরাহকারী খুঁজে পাওয়ার সুবিধা দেয়। এটি একটি B2B (ব্যবসা থেকে
ব্যবসা) প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি পাইকারি দামে পণ্য কিনতে এবং ড্রপশিপিং
ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন। SaleHoo বিশেষভাবে ড্রপশিপিং এবং পাইকারি
ব্যবসার জন্য সুবিধাজনক এবং নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে
সহায়ক।
SaleHoo একটি সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক পরিষেবা। প্রথমে আপনাকে তাদের ওয়েবসাইটে
গিয়ে সাবস্ক্রাইব করতে হবে এবং একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। এর জন্য
এককালীন ফি নেওয়া হয়। SaleHoo-এর ডিরেক্টরি ব্যবহার করে আপনি বিশ্বব্যাপী
পাইকারি সরবরাহকারীদের খুঁজে পেতে পারেন। এটি তাদের বিশাল ডাটাবেস থেকে
ড্রপশিপিং ব্যবসার জন্য উপযুক্ত সরবরাহকারী নির্বাচন করতে সাহায্য করে।
ড্রপশিপিং বিজনেস এর সুবিধা
ড্রপশিপিং বিজনেস এর সুবিধা রয়েছে অনেক, তবে প্রতিযোগিতা, সরবরাহকারীর উপর নির্ভরশীলতা এবং পণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার প্রয়োজন পড়ে। আপনি যদি ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে সঠিক সরবরাহকারী বেছে নেওয়া এবং একটি কার্যকর মার্কেটিং কৌশল তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। ড্রপশিপিং বিজনেস এর অনেক সুবিধা রয়েছে যেমনঃ
- ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করার জন্য খুব বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই, আপনি ৪-৫ হাজার টাকার পরিমিত বিনিয়োগে ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন। পণ্য কেনা বা স্টক মজুদ করতে হয় না, শুধুমাত্র একটি অনলাইন স্টোর বা প্ল্যাটফর্ম সেটআপ করলেই হয়।
- পণ্য মজুদ বা অপ্রয়োজনীয় স্টকের কারণে আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি থাকে না। আপনি কেবল সেই পণ্যগুলো বিক্রি করবেন যা গ্রাহক অর্ডার করেছেন।
- আপনার নিজের কোনো পণ্য থাকার দরকার নেই।
- ড্রপশিপিং মডেলে একাধিক সরবরাহকারীর সাথে কাজ করে বিভিন্ন ধরণের পণ্য অফার করা সম্ভব। এটি গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন পছন্দের সুযোগ তৈরি করে।
- পণ্যের প্যাকেজিং এবং ডেলিভারি নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই। পণ্য প্যাকেজিং, শিপিং, এবং ইনভেন্টরি ব্যবস্থাপনা সরবরাহকারী পরিচালনা করে। ফলে, ব্যবসায়ীর কাজের চাপ কমে যায়।
- আপনি, যে কোনও ক্যাটাগরি নির্বাচন করে পণ্যটির প্রচার করতে পারেন।
- কোন পণ্যে কত মার্জিন যোগ করতে হবে তা আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
- ড্রপশিপিং ব্যবসার জন্য কোনও অফিসের প্রয়োজন নেই, আপনি আপনার অবসর সময়ে যে কোনও জায়গা থেকে এই কাজটি করতে পারেন।
- আপনি আপনার অন্যান্য কাজ করার সময় ড্রপশিপিং ব্যবসা করতে পারেন।
- ড্রপশিপিংয়ের মাধ্যমে আপনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারেন। এটি ব্যবসার সীমানা বাড়াতে সহায়ক।
- অনলাইনে প্যাসিভ ইনকাম করার এটি একটি ভালো উপায় ।
- ড্রপশিপিং ব্যবসায় দ্রুত নতুন পণ্য যুক্ত করা এবং বিভিন্ন মার্কেটে প্রবেশ করা সম্ভব। এটি ব্যবসার স্কেল বাড়াতে সহজ করে তোলে।
ড্রপশিপিং বিজনেস এর অসুবিধা
ড্রপশিপিং বিজনেসের কিছু সাধারণ অসুবিধা রয়েছে, যা আপনাকে এই ব্যবসা শুরু
করার আগে বিবেচনা করা উচিত। ড্রপশিপিং ব্যবসা হলো এমন একটি মডেল যেখানে
আপনি নিজে পণ্য মজুদ বা পরিচালনা না করেও ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন। এটি
ই-কমার্স ব্যবসার একটি সহজলভ্য এবং জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। নিচে ড্রপশিপিং বিজনেসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ
অসুবিধাগুলো উল্লেখ করা হলোঃ
১. লাভের পরিমাণ কমঃ ড্রপশিপিং মডেলে পণ্যের সরাসরি উৎপাদনকারী বা
সরবরাহকারীর সাথে কাজ করা হয়। ফলে, প্রতিটি পণ্যে লাভের মার্জিন কম থাকে কারণ
সরবরাহকারী এবং প্ল্যাটফর্ম উভয়েরই খরচ যুক্ত থাকে।
২. স্টক নিয়ন্ত্রণের অভাবঃ আপনার কাছে সরাসরি কোনো স্টক না থাকায় আপনি
জানেন না সরবরাহকারীর কাছে কোনো পণ্য কতদিন স্টকে থাকবে। সরবরাহকারীর স্টক
শেষ হলে কাস্টমারদের অর্ডার পূরণ করতে সমস্যা হতে পারে।
৩. ডেলিভারি সময়ের সমস্যাঃ ড্রপশিপিংয়ে সাধারণত সরাসরি সরবরাহকারীর
কাছ থেকে পণ্য পাঠানো হয়, যা বেশ সময় নিতে পারে। দীর্ঘ ডেলিভারি সময়
কাস্টমারদের অসন্তুষ্ট করতে পারে।
৪. পণ্যের মানের উপর নিয়ন্ত্রণ নেইঃ আপনি সরাসরি পণ্য তৈরি বা পরীক্ষা
করেন না, তাই সরবরাহকারীর দেওয়া পণ্যের মান কেমন হবে তা নিশ্চিত করা কঠিন।
পণ্যের মান খারাপ হলে আপনার ব্র্যান্ডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
৫. কাস্টমার সাপোর্টের চ্যালেঞ্জঃ যদি কাস্টমার কোনো সমস্যার সম্মুখীন
হয় (যেমন ডেলিভারি দেরি, ভুল পণ্য, ক্ষতিগ্রস্ত পণ্য), এর সমাধান করা জটিল
হতে পারে কারণ আপনাকে সরাসরি সরবরাহকারীর ওপর নির্ভর করতে হয়।
৬. প্রতিযোগিতা বেশিঃ ড্রপশিপিং সহজলভ্য হওয়ায় এই ব্যবসায় প্রতিযোগিতা
অনেক বেশি। একই পণ্য অনেক বিক্রেতা বিক্রি করে, যার ফলে দাম কমানো ছাড়া আপনার
জন্য আলাদা কিছু করার সুযোগ কম থাকে।
৭. রিটার্ন ও রিফান্ড প্রসেস জটিলতাঃ কাস্টমার যদি পণ্য রিটার্ন বা
রিফান্ড করতে চায়, তবে সেই প্রক্রিয়া বেশ জটিল হতে পারে। কারণ পণ্য সরাসরি
সরবরাহকারীর কাছে ফিরে যেতে হবে।
৮. ব্র্যান্ডিংয়ের অভাবঃ ড্রপশিপিংয়ে আপনি সরাসরি পণ্যে নিজের
ব্র্যান্ড লেবেল বা প্যাকেজিং যোগ করতে পারেন না। ফলে ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি
করা কঠিন হয়ে যায়।
৯. সরবরাহকারীর ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতাঃ সরবরাহকারীর ভুল বা
অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে। যেমন, দেরি করে ডেলিভারি, ভুল
পণ্য পাঠানো, বা স্টকের অভাব।
১০. মার্কেটিং খরচ বেশিঃ ড্রপশিপিংয়ে মূলত মার্কেটিং ও বিজ্ঞাপনের
মাধ্যমে বিক্রয় বাড়াতে হয়। তবে প্রতিযোগিতার কারণে এই খরচ অনেক সময় লাভের
তুলনায় বেশি হতে পারে।
ড্রপশিপিং বিজনেস সম্পর্কে শেষকথা
এই ব্লগপোস্টে আমি আপনাকে ড্রপশিপিং সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দিয়েছি , এটি কী
, কীভাবে ড্রপশিপিং শুরু করবেন, ড্রপশিপিং বিজনেস করে ইনকাম করার উপায় এবং কীভাবে ড্রপশিপিং থেকে আয় করবেন ইত্যাদি। আপনিও যদি অনলাইনে আয়ের একটি
প্রকৃত উপায় সার্চ করেন তবে ড্রপশিপিং আপনার জন্য একটি ভাল উপায় হতে পারে।
ড্রপশিপিং বিজনেস করে মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। কম ইনভেস্টমেন্টে, কম
পরিশ্রমে অধিক লাভবান হওয়া যাবে এমন একটি বিজনেস ড্রপশিপিং।
সুতরাং আপনার কাছে কেবল একটি কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই আপনি আজকে
থেকেই শুরু করতে পারেন আপনার অনলাইন বিজনেস। তাই বেকারত্ব থেকে নিজেকে মুক্তি
দিতে চাইলে ঘরে বসে না থেকে আজ থেকেই শুরু করুন ড্রপশিপিং বিজনেস নিয়ে
পড়াশোনা এবং উপরক্ত টিপস গুলো মাথায় রেখে নেমে পড়ুন বিজনেসে। আমি আশা করছি
ড্রপশিপিং বিজনেস করে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে খুব ভালভাবে বুঝতে পেরেছেন।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url