বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে করণীয়
বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে করণীয় কি এটা নিয়ে অনেক মা-বাবা তাদের সন্তানকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। বাচ্চাদের
মুখে ঘা বা আলসার একটি সাধারণ সমস্যা, যা তাদের অসুবিধা ও অস্বস্তির কারণ হয়ে
দাঁড়ায়। এই সমস্যা শিশুদের জন্য খুবই যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে এবং খাবার গ্রহণ,
কথা বলা, এমনকি ঘুমের সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে।
দুর্ঘটনাজনিত কামড়, আঘাত, পুষ্টির ঘাটতি বা ভাইরাল সংক্রমণ শিশুর মুখে ঘায়ের
কারণ হতে পারে। এগুলো ক্যানকার সোর বা অ্যাফথাস আলসার নামেও পরিচিত। এটি শিশুদের
জন্য সাধারণ এক অসুখ। যদিও বেশিরভাগ মুখের ঘা এমনিতেই সেরে যায়, আবার কিছু ঘা
সারাতে ওষুধের প্রয়োজন হয়। কখনও কখনও এটি শিশুর বিকাশের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
পোস্ট সূচীপত্রঃ বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে করণীয়
- বাচ্চাদের মুখে ঘা হওয়ার কারণসমূহ
- বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে করণীয়
- মুখের ভিতর সাদা ঘা হলে করণীয়
- মুখের ঘা এর প্রকারভেদ
- মুখের ঘা এর জন্য কোন ডাক্তার দেখাবো
- বাচ্চাদের গলায় ঘা হলে করণীয়
- কোন ভিটামিনের অভাবে জিভে ঘা হয়
- বাচ্চাদের জিহ্বায় সাদা হলে করণীয়
- মুখের ঘা এর জেলের নাম
- মুখের ঘা বিষয়ক সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
- বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে করণীয় সম্পর্কে শেষকথা
বাচ্চাদের মুখে ঘা হওয়ার কারণসমূহ
বাচ্চাদের মুখে ঘা হওয়ার কারণসমূহ অনেকেই হয়তো জানেন না। মুখের ঘা বা আলসার হলো
একটি প্রকার ক্ষত, যা সাধারণত মুখের অভ্যন্তরের নরম টিস্যুতে হয়ে থাকে। এটি এক
ধরনের প্রদাহজনিত অবস্থা, যা লাল রঙের হয়ে থাকে এবং মাঝখানে সাদা বা হলুদ রঙের
হয়। এটি সাধারণত কয়েকদিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, তবে কিছু
ক্ষেত্রে এটি আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
বাচ্চারা অনেক সময় আজে-বাজে জিনিস মুখে নিয়ে থাকে। যার ফলে তাদের মুখে জীবাণু
ঢুকতে পারে সহজেই। এ ছাড়াও বাচ্চারা বিভিন্ন জিনিস হাত দিয়ে ধরে এরপর মুখে নেয়।
এসব কারণে তাদের মুখে সহজেই জীবাণু ঢুকে সংক্রমণ ঘটায়। বিশেষ করে মুখের আলসারে
সব শিশুরাই কম-বেশি ভুগে থাকে। বেশ কয়েকটি কারণে শিশুর মুখের আলসার বা ঘা হতে
পারে। যেমন- আঘাত, ভিটামিন বা খনিজ পদার্থের অভাব ইত্যাদি। বাচ্চাদের মুখে ঘা
হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। প্রধান কয়েকটি কারণ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
১. আঘাতজনিত কারণঃ দাঁতের কামড় লেগে বা খাবার চিবানোর সময় মুখের ভেতরের
অংশে আঘাত লাগতে পারে। শক্ত খাবার (যেমন চিপস, বাদাম) খাওয়ার সময় মুখে চোট লেগে
ক্ষত সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ব্রাশ করার সময় অতিরিক্ত চাপ বা ভুল পদ্ধতিতে আঘাত লেগে
সেখান থেকে মুখে ঘা হতে পারে।শিশুর মুখে ঘা হলে স্থানটি পরিস্কার রাখতে হবে।
হালকা গরম পানি দিয়ে শিশুর মুখ ধুয়ে নিন। কোনো ধরনের ক্ষতিকারক কেমিক্যাল বা
হার্শ মাউথওয়াশ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। শিশুদের মুখে আঘাতজনিত ঘা হলে এটি
দ্রুত সেরে ওঠার জন্য উপযুক্ত যত্ন এবং চিকিৎসা প্রয়োজন।
২. ফাঙ্গাল ইনফেকশনঃ নবজাতক ও ছোট শিশুর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা পুরোপুরি
গড়ে ওঠে না। ফলে তারা সহজেই ফাঙ্গাল সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকে। ক্যান্ডিডা নামক
ফাঙ্গাসের কারণে মুখে সাদা স্তর ও ঘা দেখা যায়। এটি সাধারণত নবজাতক বা দুর্বল
ইমিউন সিস্টেমযুক্ত বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যায়। ফাঙ্গাল সংক্রমণ সাধারণত
চিকিৎসার মাধ্যমে সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। তবে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি
আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে, তাই সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
গুরুত্বপূর্ণ।
৩. পুষ্টিহীনতাঃ বাচ্চাদের খাদ্যতালিকায় যদি যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন
বি১২, আয়রন বা ফোলেটের অভাব থাকে, তবে তাদের মুখে ঘা হতে পারে। এ ধরনের
পুষ্টির অভাবে মুখের টিস্যুগুলো দুর্বল হয়ে যায় এবং সহজেই সংক্রমণের শিকার
হয়। ভিটামিন বি-২, বি-৩, বি-৯, এবং বি-১২ এর অভাবে শিশুদের মুখে ঘা হওয়ার
ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। পুষ্টিকর খাবারের অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে
যায়, ফলে মুখের ভিতরে সহজেই ঘা বা আলসার সৃষ্টি হতে পারে
৪. দাঁত ও মুখের সঠিক যত্নের অভাবঃ দাঁতের যত্নের অভাব বা দাঁত ব্রাশ
করার সময় অসতর্কতার কারণে মুখের অভ্যন্তরে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া,
যদি মুখ এবং দাঁতের সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া না হয়, তাহলে মুখের ভিতরের
টিস্যুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং ঘা সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া, দাঁতের
সঠিকভাবে যত্ন না নেওয়া বা নোংরা ব্রাশ ব্যবহার করাও মুখের ঘা হওয়ার কারণ
হতে পারে।
৫. ভাইরাল সংক্রমণঃ অনেক সময় ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকেও
মুখে ঘা হতে পারে। হার্পিস সিম্পলেক্স ভাইরাস বা অন্য কোনো সংক্রমণ শিশুদের
মুখে ঘা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া স্ট্রেপ্টোকক্কাল ব্যাকটেরিয়া এবং অন্য
কিছু ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও শিশুদের মুখে ঘা সৃষ্টি করতে পারে। সংক্রমণের
কারণে মুখের আলসার হওয়া একটি সাধারণ ব্যাপার এবং এর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ
নেওয়া জরুরি।
৬. আলসারিক স্টমাটাইটিসঃ এটি এক ধরনের ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, যা সাধারণত
ছোট বাচ্চাদের মুখে হয়। এতে মুখে অনেক ছোট ছোট ঘা হয় এবং এর সাথে জ্বরও
থাকতে পারে।
৭. আবহাওয়ার পরিবর্তনঃ অতিরিক্ত গরম বা শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে অনেক
সময় শিশুদের মুখে ঘা হতে পারে, কারণ এর ফলে মুখের ভেতরের ত্বক শুষ্ক হয়ে
যায়। শীতকালে বা শুষ্ক আবহাওয়ায় মুখের ভেতরের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, যার
ফলে মুখে ঘা হতে পারে। এ সময় আর্দ্রতার অভাব মুখের ঘা বা আলসারের ঝুঁকি
বাড়িয়ে দেয়।
৮. মানসিক চাপ ও উদ্বেগঃ শিশুদের মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বা অতিরিক্ত
দুশ্চিন্তায় মুখের ঘা হতে পারে। যদিও শিশুরা সাধারণত অতিরিক্ত মানসিক চাপ
অনুভব করে না, তবে পরিবারে সমস্যা, স্কুলের চাপ, বা নতুন পরিবেশের সাথে খাপ
খাওয়ানোর ক্ষেত্রে কিছু শিশু উদ্বিগ্ন হতে পারে। মানসিক চাপ শিশুর শরীরে
একধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যা তাদের মুখের আলসারের দিকে নিয়ে যেতে
পারে।
৯. অ্যালার্জি ও খাবারের প্রতিক্রিয়াঃ শিশুরা অনেক সময় বিভিন্ন
খাবারে এলার্জির কারণে মুখে ঘা হতে পারে।কিছু খাবার যেমন চকলেট, বাদাম,
টমেটো, সাইট্রাস জাতীয় ফল এবং মসলাযুক্ত ইত্যাদি খাবার অনেক সময় শিশুর মুখে
ঘা সৃষ্টি করতে পারে। শিশুরা যদি এই ধরনের কোনো খাবারের জন্য সংবেদনশীল হয়,
তাহলে সেই খাবার খাওয়ার পর মুখে ঘা হতে পারে। এছাড়াও, বাচ্চাদের মধ্যে দুধ
ও দুগ্ধজাত খাবারের প্রতি অসহিষ্ণুতা থাকলে তা থেকেও মুখে ঘা হওয়ার সম্ভাবনা
থাকে।
১০. অটোইমিউন রোগঃ কিছু অটোইমিউন রোগ, যেমন ক্রোনস ডিজিজ বা বিহসেটস
ডিজিজ, মুখে ঘা সৃষ্টি করতে পারে। এই ধরনের রোগে শরীরের রোগ প্রতিরোধ
ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যায় এবং শরীরের স্বাভাবিক কোষগুলোকে আক্রমণ করে। এর
ফলে মুখে আলসার বা ঘা হতে পারে, যা শিশুর জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর হয়।
অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে ঘা সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং
চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
১১. হরমোনের পরিবর্তনঃ যদিও হরমোনের পরিবর্তন সাধারণত কিশোর-কিশোরীদের
জন্য প্রযোজ্য, তবে কিছু ক্ষেত্রে হরমোনের পরিবর্তন শিশুদের ক্ষেত্রেও মুখের
ঘা সৃষ্টি করতে পারে। সাধারণত হরমোনের পরিবর্তনের ফলে মুখের অভ্যন্তরের ত্বকে
কিছু প্রতিক্রিয়া ঘটে যা ঘা হিসেবে প্রকাশ পায়।
১২. জেনেটিক প্রভাবঃ কিছু বাচ্চার মুখে ঘা হওয়ার প্রবণতা তাদের
পারিবারিক ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত থাকতে পারে। অর্থাৎ, যদি পরিবারে কারো
মুখে ঘা হওয়ার সমস্যা থাকে, তাহলে শিশুটিরও একই ধরনের প্রবণতা দেখা দিতে
পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, জেনেটিক কারণে অনেক সময় বাচ্চাদের মুখে ঘা হওয়ার
সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
১৩. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
হিসেবেও শিশুদের মুখে ঘা হতে পারে। যেমন অ্যান্টিবায়োটিক,
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস, এবং কিছু কেমোথেরাপি ওষুধ মুখের ভিতরে ঘা
সৃষ্টি করতে পারে। শিশুদের কোনো নতুন ওষুধ শুরু করলে যদি মুখে ঘা দেখা যায়,
তবে ডাক্তারকে জানানো উচিত।
বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে করণীয়
বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে করণীয় কি এটা নিয়ে অনেক বাবা-মা জানতে চান। মুখের
ভেতরের নরম ত্বকে লালচে রঙের ক্ষত বা ফোসকা দেখা দিলে তাকে সাধারণত মুখের ঘা
বলা হয়। এটি কয়েকদিনের মধ্যে সেরে যায়, তবে কখনও কখনও ঘাটি দীর্ঘস্থায়ী
হলে শিশুর জন্য খাওয়া, কথা বলা, এবং এমনকি ঘুমানোর সময়ও সমস্যার সৃষ্টি
করতে পারে। এর ফলে শিশুর স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। নিচে
বাচ্চাদের মুখের ঘা হলে কী করবেন তার প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা
হলো।
১. পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাঃ মুখের ঘা দ্রুত নিরাময় করতে এবং সংক্রমণ
প্রতিরোধ করতে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের মুখের
ঘা হলে দৈনিক অন্তত দুবার নরম ব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা উচিত। ব্রাশ করার
সময় মুখের ভেতরের ঘা যেন আরও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য নরম ব্রাশ ব্যবহার
করা প্রয়োজন। এছাড়া, প্রতিবার খাওয়ার পর মুখ ধুয়ে ফেলতে বলা উচিত, যাতে
মুখে কোনও খাদ্যকণা আটকে না থাকে।
২. লবণ পানি দিয়ে গার্গল করাঃ লবণ এবং হালকা গরম পানি দিয়ে গার্গল
করলে মুখের ঘা দ্রুত নিরাময় হতে পারে। লবণ প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে
কাজ করে, যা মুখের জীবাণু ধ্বংস করে এবং ঘার প্রদাহ কমায়। এটি মুখের ঘা
পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত দুই থেকে তিনবার লবণ পানি দিয়ে
গার্গল করা উচিত।
৩. পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করাঃ মুখের ঘা থাকলে পর্যাপ্ত পরিমাণ
পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে, যা
মুখের ভেতরের টিস্যুগুলোকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়ক। শুষ্ক মুখে ঘা দ্রুত
বাড়তে পারে, তাই শিশুকে নিয়মিত পানি পান করানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত।
প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি খাওয়া হলে মুখের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং ঘা দ্রুত
আরোগ্য লাভ করে।
৪. মধু প্রয়োগ করাঃ মধু একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক এবং
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা মুখের ঘায়ে প্রয়োগ করলে দ্রুত আরাম
পাওয়া যায়। মধুর মধুরতা ঘার ব্যথা কমায় এবং এটি দ্রুত সেরে ওঠার জন্য
কার্যকর। ঘুমানোর আগে অথবা দিনে দুই থেকে তিনবার মধু সরাসরি মুখের ঘায়ে
লাগানো যেতে পারে। এটি মুখের ঘায়ে জীবাণু বিস্তার রোধ করে এবং আরোগ্যের
প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।
৫. যষ্টিমধু খাওয়াঃ ২ কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ যষ্টিমধু ভেজাতে পারেন
এবং মুখের আলসার নিরাময় করতে আপনার সন্তানকে প্রতিদিন কয়েকবার এই পানি দিয়ে
কুলকুচি করাতে পারেন। যদি শিকড়টি আপনার কাছে গুঁড়া আকারে থাকে, তবে সর্বোত্তম
বিকল্পটি হলো অল্প হলুদ বা মধুতে এটি মেশাতে হবে এবং তারপর প্রভাবিত এলাকায়
এটি প্রয়োগ করতে হবে। যষ্টিমধু আলসারের চারপাশে ব্যথা হ্রাস করতে এবং ফোলা
কমাতে সাহায্য করে। মুখের আলসার খুব খারাপ অবস্থায় থাকাকালীন প্রয়োগ করলেও
আপনি তাৎক্ষণিক ফল দেখতে পাবেন।
৬. কমলালেবু খাওয়ালেই উপকার মিলবেঃ কমলালেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি-এর
ভাণ্ডার যা কিনা ইমিউনিটি বাড়াতে পারে। এমনকী এই ফলের ব্যাকটেরিয়ানাশক
ক্ষমতাও রয়েছে। তাই মাউথ আলসারের ফাঁদে পড়লে বাচ্চাকে নিয়মিত কমলালেবু
খাওয়ান। সন্তান গোটা ফল খেতে না চাইলে তাকে লেবুর রস করে খাওয়াতে পারেন।
ব্যস, তাহলেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।
৭. এলোভেরা জেল ব্যবহারঃ এলোভেরা একটি প্রাকৃতিক উদ্ভিজ্জ উপাদান, যা
মুখের ঘায়ে ত্বকের প্রদাহ কমাতে এবং আরোগ্য প্রক্রিয়ায় সহায়ক। এলোভেরা
জেল মুখের ঘায়ে প্রয়োগ করলে তা শীতলতার অনুভূতি প্রদান করে এবং ব্যথা কমাতে
সাহায্য করে। এলোভেরা জেলের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণাবলী মুখের ঘায়ে
প্রদাহ কমিয়ে দেয়। এটি দিনে দুই থেকে তিনবার প্রয়োগ করা যেতে পারে।
৮. পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ নিশ্চিত করাঃ শিশুদের মুখে ঘা হলে তাদের
খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন বি, আয়রন,
এবং ফোলেটের অভাবে মুখের ঘা হতে পারে, তাই এ ধরনের ঘাটতি পূরণের জন্য
পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো প্রয়োজন। সুষম খাদ্য শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়ায় এবং মুখের ঘা দ্রুত নিরাময় করতে সহায়তা করে। শিশুর খাবারে ফল,
শাকসবজি, এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখা উচিত।
৯. ঠান্ডা এবং নরম খাবার খাওয়াঃ মুখের ঘা থাকলে গরম ও মসলাযুক্ত
খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এটি মুখের ঘায়ের যন্ত্রণা বাড়াতে পারে। বরং
ঠান্ডা এবং নরম খাবার খাওয়ানো ভালো, যেমন দই, পুডিং, ঠান্ডা ফলের রস
ইত্যাদি। এই ধরনের খাবার মুখের ঘায়ে আরাম দেয় এবং খাওয়ার সময় যন্ত্রণা
কমাতে সহায়ক হয়।
১০. দুধ ও মধুর মিশ্রণঃ দুধ ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে শিশুদের খাওয়ালে
এটি মুখের ঘা নিরাময়ে উপকারী হতে পারে। দুধ মুখের টিস্যুগুলোকে হাইড্রেটেড
রাখে এবং মধু মুখের ভেতরের ঘায়ে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে।
এই মিশ্রণ মুখের ঘায়ে আরাম দেয় এবং দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে সাহায্য করে।
১১. বেকিং সোডাঃ অল্প পরিমাণে জল ও বেকিং সোডা একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে
একটা পেস্ট তৈরি করুন। এরপর সেই পেস্ট বাচ্চার মুখের আলসারের উপর লাগিয়ে দিন।
পেস্ট শুকিয়ে গেলে সন্তানকে ভালো করে মুখ কুলকুচি করে নেওয়ার পরামর্শ দিন।
আশা করছি, এই কাজটা করলেই সন্তানের মুখের ঘা দ্রুত সেরে যাবে। এমনকী কমবে
ব্যথা, যন্ত্রণা। তাই ছোট্টা সোনা খুব কষ্ট পেলে এই ঘরোয়া টোটকার শরণাপন্ন
হওয়ার চেষ্টা করুন।
১২. নারকেল তেল প্রয়োগঃ নারকেল তেল মুখের ঘায়ে প্রাকৃতিক
ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং এতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে। ঘায়ে নারকেল তেল প্রয়োগ করলে তা মুখের
শুষ্কতা দূর করে এবং আরোগ্যের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। দিনে দুই থেকে
তিনবার নারকেল তেল মুখের ঘায়ে লাগানো যেতে পারে।
১৩. হলুদঃ ঘরোয়া প্রতিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হলুদ ব্যবহার করা।
এটিতে প্রদাহবিরোধী, অ্যান্টিসেপটিক এবং ব্যাকটেরিয়াবিরোধী বৈশিষ্ট্য
রয়েছে, যা দ্রুত সব ধরনের ক্ষত ও কাটা নিরাময় করতে সহায়তা করে। হলুদের
প্রয়োগ সহজ করার জন্য শিশুকে দেওয়ার আগে এটি মধুর সঙ্গে মিশিয়ে দিতে পারেন।
১৪. ডাক্তার বা ডেন্টিস্টের পরামর্শ গ্রহণঃ যদি মুখের ঘা দীর্ঘস্থায়ী
হয় এবং ঘাটি এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের
পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ধারণ
করতে পারবেন এবং সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। শিশুদের মুখে ঘা থাকলে
অনেক সময় ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ ব্যবহারের
পরামর্শ দেন।
১৫. পর্যাপ্ত বিশ্রামঃ শিশুদের মুখে ঘা হলে তাদের পর্যাপ্ত বিশ্রাম
নিশ্চিত করা জরুরি। বিশ্রামের সময় শরীরের কোষগুলো নিজের ক্ষত সারানোর জন্য
কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শিশুর পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম ঘাটি
দ্রুত আরোগ্য লাভে সহায়ক।
মুখের ভিতর সাদা ঘা হলে করণীয়
মুখের ভিতর সাদা ঘা হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে জানা জরুরি একটি বিষয়। মুখের
ভিতর সাদা ঘা, যা ক্যানকার সোর নামেও পরিচিত, একটি অত্যন্ত সাধারণ এবং
অস্বস্তিকর স্বাস্থ্য সমস্যা। সাদা ঘা শিশু থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের
মানুষের হতে পারে, এবং এর ফলে খাওয়া, কথা বলা এবং দৈনন্দিন কাজগুলো কঠিন
হয়ে পড়ে। সাদা ঘা হলে দ্রুত আরোগ্যের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
গ্রহণ করা দরকার। নিচে সাদা ঘা হলে করণীয় বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করা
হলো।
১. লবণ এবং গরম পানি দিয়ে গার্গলঃ লবণ এবং গরম পানি দিয়ে
গার্গল করা মুখের ভিতর সাদা ঘা নিরাময়ের জন্য অন্যতম কার্যকর পদ্ধতি। লবণ
একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে এবং মুখের ঘায়ে জীবাণু
ধ্বংস করে। এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং ব্যথা কমায়। এই পদ্ধতি
অনুসরণ করতেঃ
- এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মেশান।
- মিশ্রণটি দিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার গার্গল করুন।
- এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করলে মুখের ঘা দ্রুত শুকিয়ে যাবে এবং আরাম পাবেন।
২. মধু ব্যবহারঃ মধুতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক এবং
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ রয়েছে, যা মুখের ঘায়ে দ্রুত নিরাময় এনে
দেয়। মধু প্রয়োগ করলে ঘা শীতল অনুভূতি দেয় এবং এর প্রদাহ কমায়। এটি
ব্যবহারের জন্যঃ
- মুখের ঘায়ে এক ফোঁটা মধু সরাসরি লাগিয়ে রাখুন।
- দিনে দুই থেকে তিনবার এটি প্রয়োগ করতে পারেন।
- রাতে ঘুমানোর আগে এটি প্রয়োগ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
৩. এলোভেরা জেল প্রয়োগঃ এলোভেরা একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা
ত্বকের প্রদাহ কমাতে এবং আরোগ্য প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। এলোভেরা জেল
মুখের ঘায়ে প্রয়োগ করলে ব্যথা কমায় এবং শীতলতার অনুভূতি দেয়। এটি
ব্যবহারের জন্যঃ
- তাজা এলোভেরা পাতা থেকে জেল সংগ্রহ করুন।
- মুখের ঘায়ে সরাসরি এলোভেরা জেল প্রয়োগ করুন।
- দিনে দুই থেকে তিনবার এটি ব্যবহার করলে দ্রুত সেরে ওঠার সম্ভাবনা থাকে।
৪. নারকেল তেল ব্যবহারঃ নারকেল তেল মুখের সাদা ঘায়ে প্রাকৃতিক
ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং এতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী রয়েছে। এটি ব্যবহারের জন্যঃ
- এক ফোঁটা নারকেল তেল মুখের ঘায়ে লাগান।
- দিনে দুই থেকে তিনবার এটি প্রয়োগ করুন।
- এটি মুখের শুষ্কতা দূর করে এবং ঘা নিরাময়ে সহায়ক।
৫. দুধ ও মধুর মিশ্রণঃ দুধ এবং মধুর মিশ্রণ মুখের ঘা নিরাময়ে
কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। দুধ মুখের টিস্যুগুলোকে আর্দ্র রাখে এবং মধু
মুখের ঘায়ে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। এটি ব্যবহারের জন্যঃ
- এক চামচ মধু এক গ্লাস দুধের সাথে মেশান।
- মিশ্রণটি দিনে একবার পান করুন।
- এটি মুখের ঘায়ে আরাম দেয় এবং দ্রুত আরোগ্য লাভে সহায়ক।
৬. ঠান্ডা এবং নরম খাবার খাওয়াঃ মুখের ঘা থাকলে গরম এবং
মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এগুলো ঘায়ের জ্বালা বাড়াতে পারে।
বরং ঠান্ডা এবং নরম খাবার খাওয়া উচিত। উদাহরণস্বরূপ, দই, ঠান্ডা ফলের রস,
এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে। এই ধরনের খাবার মুখের ঘায়ে
আরাম দেয় এবং খাওয়ার সময় অস্বস্তি কমায়।
৭. গ্লিসারিন প্রয়োগঃ গ্লিসারিন মুখের সাদা ঘায়ে আর্দ্রতা
প্রদান করে এবং এটি একটি প্রাকৃতিক সুরক্ষার স্তর তৈরি করে, যা প্রদাহ এবং
ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এটি ব্যবহারের জন্য:
- একটি কটন সোয়াব দিয়ে গ্লিসারিন মুখের ঘায়ে প্রয়োগ করুন।
- দিনে দুই থেকে তিনবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
- এটি মুখের ভিতরের ক্ষত দ্রুত নিরাময়ে সহায়ক।
৮. ওষুধ এবং চিকিৎসাঃ যদি মুখের সাদা ঘা দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং
কয়েক সপ্তাহ পরেও সেরে না ওঠে, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা
উচিত। ডাক্তার প্রয়োজনমতো অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ
বা অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ দিতে পারেন, যা মুখের ঘায়ের প্রদাহ কমাতে এবং
দ্রুত আরোগ্য লাভে সহায়ক।
৯. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত করাঃ শরীরের সার্বিক আরোগ্যের
জন্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের কোষগুলোকে পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করে
এবং মুখের ঘা দ্রুত সেরে ওঠে। তাই সাদা ঘা হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত
করা উচিত।
১০. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা পানি মুখের ভিতরের আর্দ্রতা
বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং এটি মুখের ঘা দ্রুত নিরাময়ে সহায়ক। মুখের
ভিতর যদি শুষ্কতা থেকে ঘা হয় তবে পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করলে মুখের শুষ্কতা দূর হয় এবং আরাম পাওয়া
যায়।
মুখের ঘা এর প্রকারভেদ
মুখের ঘা এর প্রকারভেদ সম্পর্কে আপনারা অনেকে জানতে চেয়ে আগ্রহী। মুখের ঘা
সাধারণত বিভিন্ন কারণে হতে পারে এবং এর বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। মুখের ঘা
বলতে সাধারণত মুখের ভেতরের নরম টিস্যুতে দেখা দেওয়া ক্ষত বা ফোসকাকে
বোঝায়।মুখের ঘা ভালোভাবে নির্ণয় করতে হলে পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যকর
খাদ্যাভ্যাস নিশ্চিত করা জরুরি। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিম্নে
মুখের ঘা-এর প্রধান প্রকারভেদ তুলে ধরা হলো
ক্যানকার সোর বা আলসারঃ এটি মুখের ভেতরে ক্ষতের সৃষ্টি করে এবং
সাধারণত ব্যথা ও অস্বস্তির কারণ হয়। এটি মুখের বিভিন্ন স্থানে হতে পারে
এবং সাদা বা হলুদ রঙের হয়। সাধারণত এটি কিছুদিনের মধ্যে নিজে নিজেই সেরে
যায়, তবে ব্যথাজনিত কারণে কখনও কখনও চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।
হার্পিস সোরঃ এটি হার্পিস সিম্পলেক্স ভাইরাসের কারণে হয় এবং সংক্রামক হতে পারে। এটি সাধারণত ঠোঁটের চারপাশে দেখা যায় এবং এটি যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। হার্পিস সোর সংক্রমণ এবং ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে হতে পারে।
লিউকোপ্লাকিয়াঃ এই অবস্থায় মুখের ভিতরে সাদা বা ধূসর দাগ তৈরি হয়। এটি অত্যধিক কোষের বিস্তারের ফলে উদ্ভূত হয়। এটি ধূমপান বা তামাক চিবানোর মতো জিনিস থেকে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের কারণে হতে পারে। কিন্তু কোন আপাত কারণ ছাড়া সময়ে সময়ে এটি ঘটে।
ওরাল লাইকেন প্লানাসঃ মৌখিক লাইকেন প্ল্যানাস নামক অবস্থা, একটি রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনা প্রতিক্রিয়া, আপনার মুখে জরির মতো, সাদা আলসার এবং সেইসাথে বিরক্তিকর ত্বকে ফুসকুড়ি হতে পারে। ৫০ বছরের বেশি বয়সী বেশিরভাগ মহিলাই প্রায়শই এতে আক্রান্ত হন।
এরিথ্রোপ্লাকিয়াঃ ধূমপান বা তামাক ব্যবহারের আরেকটি লক্ষণ হল এরিথ্রোপ্লাকিয়া। যাদের ইরিথ্রোপ্লাকিয়া আছে তাদের জিহ্বার নিচে বা সামনের নিচের দাঁতের নিচে লাল দাগ দেখা যায়।
মুখের ঘা এর জন্য কোন ডাক্তার দেখাবো
মুখের ঘা এর জন্য কোন ডাক্তার দেখাবো এটা নিয়ে বাবা-মায়েরা খুব চিন্তার
মধ্যে থাকেন। বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে করণীয় কি জানার পাশাপাশি কোন
ডাক্তার দেখাবো এটা নিয়েও অনেকেই কনফিউশনে থাকেন। মুখের ঘার ধরন এবং তার
জটিলতার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ
নেওয়া জরুরি। মুখের ঘার সমস্যা নিয়ে নিম্নলিখিত বিশেষজ্ঞদের দেখাতে
পারেন।
১. জেনারেল প্র্যাকটিশনার বা পারিবারিক ডাক্তারঃ প্রাথমিকভাবে
মুখের ঘা হলে একটি সাধারণ চিকিৎসক বা পারিবারিক ডাক্তারকে দেখানো যেতে
পারে। তারা রোগের সাধারণ কারণ ও লক্ষণ পরীক্ষা করে প্রাথমিক চিকিৎসা
প্রদান করতে পারেন। এছাড়া, যদি ঘা খুব গুরুতর না হয়, তবে তারা ব্যথা
কমানোর জন্য কিছু অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ, অ্যান্টিবায়োটিক বা
ব্যথানাশক ওষুধ দিতে পারেন। তবে যদি ঘা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য
উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে পারিবারিক ডাক্তার অন্য বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার
করতে পারেন।
২. ডেন্টিস্ট বা দন্তচিকিৎসকঃ মুখের ঘা যদি দাঁত বা মাড়ির
সংক্রমণের কারণে হয়, তবে ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। মুখের ঘা
অনেক সময় দাঁতের সমস্যার কারণে হতে পারে, যেমন দাঁতের ধারালো প্রান্ত বা
ব্রেসের কারণে মুখের টিস্যুতে আঘাত লাগা। ডেন্টিস্ট এই ধরনের সমস্যা
সমাধান করতে পারেন এবং দাঁত ও মাড়ির সঠিক যত্ন সম্পর্কে পরামর্শ দিতে
পারেন। মুখের স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতার জন্যও ডেন্টিস্টের পরামর্শ
গুরুত্বপূর্ণ।
৩. গলা, নাক ও কান বিশেষজ্ঞঃ মুখের ঘা যদি গলার ভিতরে বা টনসিলে
দেখা দেয় এবং এর সাথে শ্বাসকষ্ট, গলাব্যথা বা গলার অন্য সমস্যা দেখা
দেয়, তবে ইএনটি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। ইএনটি বিশেষজ্ঞ
মুখ, গলা এবং সংলগ্ন স্থানের সংক্রমণ পরীক্ষা করে সঠিক চিকিৎসা প্রদান
করতে পারেন। যদি ঘার কারণে খাওয়ার বা গলাধঃকরণের সমস্যাও হয়, তাহলে
ইএনটি বিশেষজ্ঞ এ ব্যাপারে সহায়ক হতে পারেন।
৪. ডার্মাটোলজিস্ট বা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞঃ মুখের ঘা যদি ত্বকের কোনো
সমস্যা বা ভাইরাসের কারণে হয়, তবে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া যেতে
পারে। ডার্মাটোলজিস্ট মুখের ভেতরের চামড়া এবং ঠোঁটের সংক্রমণ নির্ণয়
করতে পারেন। তারা হার্পিস সোর বা অন্য ভাইরাসজনিত সংক্রমণ পরীক্ষা করে
প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করেন।
৫. ইমিউনোলজিস্ট বা ইমিউন সিস্টেম বিশেষজ্ঞঃ কিছু মুখের ঘা ইমিউন
সিস্টেমের দুর্বলতার কারণে হতে পারে, যেমন অটোমিউন রোগ (যেমন বিহসেটস
ডিজিজ, লুপাস, ক্রোনস ডিজিজ)। যদি মনে হয় মুখের ঘা ইমিউন সিস্টেমের
দুর্বলতার কারণে বারবার দেখা দিচ্ছে বা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, তবে
ইমিউনোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ইমিউনোলজিস্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা পরীক্ষা করেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
৬. গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট বা অন্ত্রের রোগ বিশেষজ্ঞঃ মুখের ঘা
কখনও কখনও অন্ত্রের সমস্যার কারণে হতে পারে, বিশেষ করে ক্রোনস ডিজিজ বা
অন্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে। যদি
মুখের ঘা হওয়ার পাশাপাশি হজমের সমস্যা, পেট ব্যথা, বা ডায়রিয়ার মতো
উপসর্গ দেখা দেয়, তবে গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
তারা হজমের সমস্যার সাথে সম্পর্কিত কারণগুলি নির্ধারণ করতে পারেন এবং
প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে পারেন।
৭. পুষ্টিবিদ বা নিউট্রিশনিস্টঃ অনেক সময় মুখের ঘা পুষ্টির
অভাবের কারণে হতে পারে, যেমন ভিটামিন বি, আয়রন এবং ফোলেটের ঘাটতি। সঠিক
খাদ্যাভ্যাস ও পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব মুখের ঘা সৃষ্টি করতে পারে। যদি মনে
হয় মুখের ঘা পুষ্টির ঘাটতির কারণে হচ্ছে, তবে পুষ্টিবিদের পরামর্শ
নেওয়া যেতে পারে। তারা প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি পূরণের জন্য
খাদ্য পরিকল্পনা করতে সহায়তা করেন।
বাচ্চাদের গলায় ঘা হলে করণীয়
বাচ্চাদের গলায় ঘা হলে করণীয় সম্পর্কে জেনে রাখা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চাদের গলায় ঘা হলে এটি বেশ অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে।
শিশুদের শরীর তুলনামূলকভাবে সংবেদনশীল হওয়ায় গলা ঘা খুব দ্রুতই
সমস্যা তৈরি করতে পারে। এখানে এই সমস্যার কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধমূলক
ব্যবস্থা এবং ঘরোয়া প্রতিকারের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আশা করি, এটি পড়ে আপনি বাচ্চাদের গলায় ঘা হলে কীভাবে যত্ন নেবেন সে
সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পাবেন।
গলা ঘা সাধারণত ভাইরাস বা
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে হয়। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ
কারণও রয়েছে, যেমন-
ভাইরাস সংক্রমণঃ ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে সাধারণ ঠান্ডা,
ইনফ্লুয়েঞ্জা বা হার্পিসের মতো সংক্রমণ বাচ্চাদের গলায় ঘা তৈরি করতে
পারে। বেশিরভাগ সময় গলায় ব্যথা ও সংক্রমণ এভাবে শুরু হয়।
ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণঃ স্ট্রেপথ্রোট নামক ব্যাকটেরিয়া
সংক্রমণের ফলে শিশুদের গলায় ফোলা ও ব্যথা দেখা যায়। এতে গলা লালচে
এবং সাদা ফোঁটা দেখা যেতে পারে।
শুষ্ক পরিবেশঃ শীতকালে বা শুষ্ক আবহাওয়ায় বাতাসের আর্দ্রতার
অভাবে গলা শুষ্ক হয়ে যায়, যা ঘা সৃষ্টি করতে পারে। শীতকালে ঘরের
বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকলে ঘা হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম খাবারঃ শিশুরা অনেক সময় অতিরিক্ত
ঠান্ডা বা গরম পানীয় পান করে, যা তাদের গলার নরম টিস্যুতে প্রভাব
ফেলে। এভাবে গলায় জ্বালাপোড়া ও ঘা দেখা দেয়।
খাদ্যাভ্যাসঃ কিছু মশলাযুক্ত, টক বা লবণাক্ত খাবার শিশুদের গলার সংবেদনশীল ত্বকে ক্ষতি করতে পারে, যার ফলে গলা ঘা দেখা দিতে পারে।
গলায় ঘা এর লক্ষণসমূহঃ
- গলায় তীব্র ব্যথা ও জ্বালাপোড়া
- গলায় লালচে ভাব এবং সাদা বা হলুদ রঙের ছোট ফোঁটা
- খাবার বা পানীয় গলায় গেলে ব্যথা অনুভব করা
- মাঝে মাঝে হালকা জ্বর বা শীত লাগা
- গলায় শুষ্কতা বা কর্কশ অনুভূতি
বাচ্চাদের গলায় ঘা হলে করণীয়
গলা ঘা হলে প্রথমে গলার ব্যথা এবং সংক্রমণ কমানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া
উচিত। নিচে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা ও ঘরোয়া প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করা
হলো-
১. গরম লবণ পানি দিয়ে গার্গলঃ গলা ঘা কমাতে গরম লবণ পানি দিয়ে
গার্গল করা খুবই কার্যকর। এটি ঘা নিরাময়ে সাহায্য করে এবং সংক্রমণ দূর
করতে সহায়তা করে। লবণের অ্যান্টিসেপটিক গুণাবলী রয়েছে, যা গলা
জীবাণুমুক্ত রাখতে সহায়ক। প্রতিদিন সকালে এবং রাতে গার্গল করতে বলুন।
এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চামচ লবণ মিশিয়ে বাচ্চাকে দিনে ২-৩ বার
গার্গল করতে দিন। তবে, পানি যেন অতিরিক্ত গরম না হয়, সেদিকে খেয়াল
রাখুন।
২. মধু ও আদাঃ মধু এবং আদা ব্যথা এবং সংক্রমণ কমাতে বিশেষভাবে
কার্যকর। মধুতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান রয়েছে, যা গলার
ইনফ্লেমেশন ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। সামান্য আদার রস এবং মধু
একসঙ্গে মিশিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ালে গলার সংক্রমণ এবং ব্যথা উপশম হয়।
সামান্য আদার রস এবং এক চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে বাচ্চাকে দিনে দুইবার
খাওয়াতে পারেন। এটি গলার সংক্রমণ হ্রাস করতে এবং ব্যথা কমাতে সহায়তা
করবে।
৩. গরম স্যুপ বা ব্রথ খাওয়ানোঃ গরম স্যুপ বা ব্রথ গলা নরম রাখে
এবং গলার ব্যথা কমাতে সহায়ক। এছাড়া এটি শিশুর শরীর আর্দ্র রাখে এবং
পুষ্টি দেয়। শাকসবজির স্যুপ বা মুরগির স্যুপ হলে ভালো হয়, কারণ এতে
প্রোটিন ও ভিটামিন রয়েছে। স্যুপে থাকা উপাদানগুলো যেমন প্রোটিন,
ভিটামিন ও মিনারেল শিশুর ইমিউনিটি বাড়ায় এবং ঘা দ্রুত সেরে ওঠার
সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
৪. পর্যাপ্ত জলপান নিশ্চিত করাঃ শরীর আর্দ্র রাখার জন্য
বাচ্চাদের পর্যাপ্ত পানি পান করতে উৎসাহিত করুন। ঠান্ডা পানি বা বেশি
গরম পানীয় এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি গলা ঘা আরও বাড়াতে পারে।পানি
ছাড়াও ফলের রস, স্যুপ এবং হারবাল চা শিশুদের গলা আর্দ্র রাখতে সহায়ক
হতে পারে। দিনে অন্তত ৬-৮ গ্লাস তরল পানীয় খাওয়ানো উচিত।
৫. হিউমিডিফায়ার বা বাষ্প শ্বাস গ্রহণঃ গলা ঘা হলে গরম পানির
বাষ্প শ্বাস নেওয়া অনেক উপকারী হতে পারে। এটি গলার শুষ্কতা দূর করতে
এবং ঘা কমাতে সহায়ক। বাষ্প গলায় ময়েশ্চার বৃদ্ধি করে, যা গলার
সংক্রমণ দূর করতে সহায়তা করে। গরম পানির বাষ্পের শ্বাস নিলে গলা শীতল
হয় এবং শুষ্কতা কমে। দিনে ১-২ বার বাষ্প শ্বাস নেওয়া উপকারী।
৬. পুষ্টিকর ও নরম খাবারঃ গলা ঘা হলে শিশুদের জন্য নরম এবং সহজে
হজমযোগ্য খাবার খাওয়ানো উচিত। দুধ, পুডিং, ফলের রস, এবং স্যুপ এই
ধরনের খাবার খাওয়ানো ভালো। গরম, মশলাযুক্ত, বা অতিরিক্ত ঠান্ডা খাবার
এড়িয়ে চলুন।
৭. হালকা ও আর্দ্র পরিবেশ নিশ্চিত করুনঃ শীতকালে গলা ঘা হলে ঘরে
একটি হিউমিডিফায়ার রাখতে পারেন, যাতে ঘরের বাতাস আর্দ্র থাকে এবং
শিশুর গলা শুষ্ক না হয়। শুষ্ক বাতাস গলার সংক্রমণ বাড়াতে পারে, তাই
শীতকালে ঘরের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
৮. লেবু ও মধুর মিশ্রণঃ লেবুতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে, যা
শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। মধু এবং লেবুর মিশ্রণ গলা ঘা
নিরাময়ে কার্যকর। অল্প লেবুর রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে দিনে ২ বার
খাওয়াতে পারেন। লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান গলা জীবাণুমুক্ত
রাখতে সহায়ক।
৯. চিকিৎসকের পরামর্শঃ যদি গলা ঘা থেকে দুই-তিন দিনের মধ্যেও
উন্নতি না হয় বা ব্যথা বাড়তে থাকে, তবে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
নেওয়া উচিত। অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণে
চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে। বাচ্চার যদি
গলায় ফোঁটা বা পুঁজ দেখা যায়, অথবা জ্বর ও শরীরে ব্যথা থাকে, তাহলে
একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
কোন কোন ভিটামিনের অভাবে জিভে ঘা হয়
কোন কোন ভিটামিনের অভাবে জিভে ঘা হয় এটা অনেকেই জানতে চান। জিভে ঘা
হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা, যা শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের মধ্যেই
দেখা দিতে পারে। এটি খাওয়া, কথা বলা এবং এমনকি স্বাভাবিক দৈনন্দিন
কাজকর্মকে ব্যাহত করে তোলে। অনেক সময় জিভে ঘা হওয়ার কারণ হিসেবে
ভিটামিনের অভাবকে চিহ্নিত করা হয়। সাধারণত, ভিটামিন বি১২, আয়রন,
ফোলেট এবং ভিটামিন সি-এর অভাব জিভে ঘাহয়। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা
হলো।
১. ভিটামিন বি১২-এর অভাবঃ ভিটামিন বি১২ জিহ্বার স্বাস্থ্যের
জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ভিটামিনটি দেহে লোহিত রক্তকণিকা তৈরি
করতে এবং স্নায়ুর কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়ক। ভিটামিন বি১২-এর
অভাবে এফথাস আলসার (Canker sores) হতে পারে। এটি জিভের পাশাপাশি
মুখগহ্বরের অন্য অংশেও দেখা যায়।
- লক্ষণসমূহঃ ভিটামিন বি১২-এর অভাবে জিভে ঘা দেখা দেওয়া ছাড়াও আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন - ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, জিভে ব্যথা, লালচে দাগ, এবং প্রদাহ দেখা দিতে পারে।
- কী খাওয়া উচিতঃ যকৃৎ, মাছ, মাংস, ডিম এবং দুগ্ধজাত খাদ্যে প্রচুর ভিটামিন বি১২ থাকে। যারা নিরামিষভোজী তাদের জন্য ফোর্টিফায়েড সিরিয়াল, সোয়া দুধ এবং নট্রিশনাল ইস্ট ভালো উৎস।
২. আয়রনের অভাবঃ আয়রন দেহে অক্সিজেন বহনকারী রক্তকণিকা তৈরি
করতে সাহায্য করে এবং কোষের কার্যক্ষমতা বজায় রাখে। আয়রনের অভাব
থাকলে মুখের ঘা এবং জিভে ঘা দেখা দিতে পারে।
- লক্ষণসমূহঃ আয়রনের অভাবে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, ত্বকের শুষ্কতা এবং মুখের অন্যান্য অংশেও ঘা দেখা যেতে পারে।
- কী খাওয়া উচিতঃ আয়রনের অভাব পূরণের জন্য ডাল, পালং শাক, ডিম, মাংস, কলা এবং শুকনো ফল খাওয়া যেতে পারে। আয়রন শোষণে সাহায্য করার জন্য ভিটামিন সি যুক্ত খাবারের সাথে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত।
৩. ফোলেট বা ভিটামিন বি৯-এর অভাবঃ ফোলেট একটি গুরুত্বপূর্ণ
ভিটামিন যা নতুন কোষের বৃদ্ধিতে সহায়ক।ফোলেটের অভাবে মুখে ঘা হতে
পারে। এটি লোহিত রক্তকণিকা গঠনের সঙ্গে জড়িত এবং এর ঘাটতি হলে মুখ ও
জিভে আলসার তৈরি হতে পারে।
- লক্ষণসমূহঃ ফোলেটের অভাবে ক্লান্তি, মনোযোগের অভাব, এবং ত্বকে র্যাশ দেখা দিতে পারে।
- কী খাওয়া উচিত: ফোলেটের উৎস হিসেবে পালং শাক, ব্রকলি, মটরশুঁটি, এবং গরুর যকৃৎ বেশ কার্যকরী।
৪. ভিটামিন সি-এর অভাবঃ ভিটামিন সি দেহে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে
এবং ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি-এর অভাবে স্কার্ভি রোগ
দেখা দিতে পারে, যা মাড়ি এবং মুখগহ্বরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত বা ঘা
তৈরি করতে পারে।
- লক্ষণসমূহঃ ভিটামিন সি-এর অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া, মুখের ভেতরে ঘা, এবং ত্বকে ক্ষত দেখা যেতে পারে।
- কী খাওয়া উচিতঃ লেবু, কমলালেবু, আমলকী, এবং টমেটো ভিটামিন সি-এর সমৃদ্ধ উৎস।
বাচ্চাদের জিহ্বায় সাদা হলে করণীয়
বাচ্চাদের জিহ্বায় সাদা হলে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করব। বাচ্চাদের জিহ্বা সাদা হয়ে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা, যা মূলত অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মুখের পরিচ্ছন্নতার অভাব বা সংক্রমণের কারণে দেখা দিতে পারে। এই অবস্থাকে সাধারণত "মাউথ থ্রাশ" বা "ওরাল থ্রাশ" বলা হয়, যা ক্যান্ডিডা নামে এক ধরনের ফাঙ্গাস সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। নিচে এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করা হলো।১. বাচ্চার মুখের সঠিক পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাঃ জিহ্বার সাদা ভাব দূর করতে মুখের পরিচ্ছন্নতা খুবই জরুরি। নিয়মিতভাবে শিশুর মুখ পরিষ্কার করলে মুখের অভ্যন্তরীণ ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি কমে এবং জিহ্বা পরিষ্কার থাকে।
- কীভাবে করবেনঃ শিশুর জিহ্বা নরম কাপড় বা গজ দিয়ে প্রতিদিন মুছে পরিষ্কার করুন। প্রতিবার খাওয়ার পর মুখ পরিষ্কার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এছাড়াও গরম পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে আলতো করে জিহ্বা মুছে দিতে পারেন।
- কীভাবে ব্যবহার করবেনঃ এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চামচ লবণ মিশিয়ে শিশুকে দিনে দুইবার কুলি করান। তবে খুব ছোট বাচ্চা হলে তাদের কুলি করানো কঠিন হতে পারে, সেক্ষেত্রে একটি তুলো লবণ পানিতে ভিজিয়ে আলতো করে জিহ্বা মুছে দিতে পারেন।
- প্রয়োগ পদ্ধতিঃ এক চামচ বেকিং সোডা সামান্য পানিতে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। তারপর একটি তুলা দিয়ে এই পেস্ট আলতো করে শিশুর জিহ্বায় লাগিয়ে দিন। কয়েক মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দিনে একবার এটি প্রয়োগ করতে পারেন।
- প্রয়োগ পদ্ধতিঃ সামান্য হলুদের গুঁড়ো মধুর সাথে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন এবং খুব ছোট পরিমাণে এটি শিশুর জিহ্বায় লাগান। কয়েক মিনিট পর পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন। দিনে একবার এটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে খুব ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে মধু ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- কীভাবে প্রয়োগ করবেনঃ পরিষ্কার আঙুলে সামান্য নারকেল তেল নিয়ে শিশুর জিহ্বায় আলতো করে লাগান। এটি মাউথ থ্রাশ কমাতে এবং মুখের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সাহায্য করবে। দিনে একবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
- কীভাবে করাবেনঃ শিশুকে দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করান। শিশু যদি পর্যাপ্ত পানি পান করে তবে মুখের আর্দ্রতা বজায় থাকবে এবং ফাঙ্গাস জমার প্রবণতা কমবে।
- কী ধরনের খাবার দিবেনঃ শিশুদের খাদ্যতালিকায় দই, সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, দুধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। দইতে থাকা প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক।
- কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেনঃ যদি জিহ্বার সাদা ভাব দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকে এবং মুখের ভেতরে ব্যথা, লালচে ভাব বা জ্বর দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মুখের ঘা এর জেলের নাম
মুখের ঘা এর জেলের নাম নিয়ে আর বেশি চিন্তিত হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
আজকের এই হেডিং এ বেশ কিছু কার্যকরী জেল নিয়ে আলোচনা করব। বাচ্চাদের
মুখের ঘা একটি সাধারণ সমস্যা, যা মূলত জিহ্বা, ঠোঁট, বা মুখের
অভ্যন্তরে দেখা দিতে পারে। এটি শিশুদের জন্য কষ্টদায়ক হতে পারে এবং
খাওয়া-দাওয়া, কথা বলা এমনকি দৈনন্দিন কার্যক্রমে অসুবিধা সৃষ্টি করে।মুখের ঘা নিরাময়ে বাজারে বেশ কিছু কার্যকর জেল পাওয়া যায়।
মুখের ঘা সৃষ্টির কারণ হিসেবে সাধারণত ভিটামিনের অভাব, ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ এবং মুখে আঘাত পাওয়া দায়ী। আর্টিকেলের এই অংশে বাচ্চাদের মুখের ঘা নিরাময়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের জেল
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রয়োগ পদ্ধতি,
জেলগুলোর কার্যকারিতা এবং প্রয়োজনীয় যত্নের কথা বলা হয়েছে। তাহলে আর
দেরি না করে জেন নিন মুখের ঘা এর জেলের নাম সহ বিস্তারিত।
১. বোরোজেল (Boroglycerin Gel): বোরোজেল সাধারণত মুখের ঘা
নিরাময়ে ব্যবহৃত একটি জনপ্রিয় জেল। এতে উপস্থিত বোরিক অ্যাসিড মুখের
ঘায়ের জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং দ্রুত আরাম দেয়।
- প্রয়োগ পদ্ধতি: প্রথমে মুখ পরিষ্কার করে নিন। তারপর আঙুলে সামান্য বোরোজেল নিয়ে আক্রান্ত স্থানে আলতো করে লাগিয়ে দিন। দিনে ২-৩ বার এটি ব্যবহার করা যায়।
- সতর্কতা: এটি প্রয়োগ করার পর কিছুক্ষণ খাবার খাওয়া বা পানি পান থেকে বিরত থাকুন।
২. ওরা-জেল (Orajel): ওরা-জেল একটি ব্যথানাশক জেল, যা
মুখের ঘা, মাড়ির ব্যথা এবং ঠোঁটের ফাটা নিরাময়ে সহায়ক। এতে বেনজোকেন
নামক উপাদান থাকে, যা আক্রান্ত স্থানে ব্যথা কমাতে কাজ করে।
- প্রয়োগ পদ্ধতি: বাচ্চার মুখ পরিষ্কার করে আঙুলে সামান্য ওরা-জেল নিয়ে ঘায়ের উপর আলতো করে লাগান। দিনে ৩ বার এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
- সতর্কতা: এই জেলটি প্রয়োগের পর অন্তত ৩০ মিনিট খাবার বা পানীয় গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
৩. ট্রায়ামসিনোলোন (Triamcinolone Acetonide Dental Paste): ট্রায়ামসিনোলোন ডেন্টাল পেস্ট সাধারণত বেশি ব্যথাযুক্ত ঘা বা
লাল ভাবের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি কর্টিকোস্টেরয়েড ওষুধ, যা
ঘায়ের প্রদাহ এবং সংক্রমণ কমাতে কার্যকর।
- প্রয়োগ পদ্ধতি: পরিষ্কার আঙুল দিয়ে খুব অল্প পরিমাণে পেস্ট আক্রান্ত স্থানে লাগান। দিনে একবার এটি প্রয়োগ করতে পারেন।
- সতর্কতা: শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শে এটি ব্যবহার করা উচিত, কারণ এটি স্টেরয়েড যুক্ত একটি পেস্ট।
৪. ড্যাকটিনোল (Daktarin Oral Gel): ড্যাকটিনোল একটি
অ্যান্টিফাঙ্গাল জেল, যা মুখের ফাঙ্গাল ইনফেকশনের জন্য কার্যকর। এটি
মুখে ক্যান্ডিডা সংক্রমণ রোধে সহায়ক এবং দ্রুত নিরাময়ে কার্যকর।
- প্রয়োগ পদ্ধতি: আঙুল বা তুলো দিয়ে সামান্য জেল মুখের ঘায়ে লাগান। দিনে ২-৩ বার এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
- সতর্কতা: প্রয়োগের পর কিছুক্ষণ মুখে রেখে খাবার বা পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
৫. কোরাসিল জেল (Curasil Gel): কোরাসিল জেল একটি সাধারণ
মুখের ঘা নিরাময়কারী জেল। এতে অ্যালোভেরা এবং অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান
রয়েছে যা মুখের ঘায়ে আরাম দেয় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- প্রয়োগ পদ্ধতি: পরিষ্কার আঙুল বা তুলা দিয়ে কোরাসিল জেল ঘায়ে লাগান। দিনে ২-৩ বার এটি প্রয়োগ করতে পারেন।
- সতর্কতা: বাচ্চারা যাতে এটি খেয়ে না ফেলে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৬. মৌমেন্টম (MouthMum Gel): মৌমেন্টম বাচ্চাদের মুখের ঘা
নিরাময়ে ব্যবহৃত একটি নিরাপদ ও জনপ্রিয় জেল। এটি অ্যালোভেরা এবং
ভিটামিন ই সমৃদ্ধ, যা মুখের ঘা দ্রুত নিরাময়ে সহায়ক।
- প্রয়োগ পদ্ধতি: আঙুলে সামান্য জেল নিয়ে ঘায়ের স্থানে লাগান। দিনে দুইবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
- সতর্কতা: জেল প্রয়োগের পর অন্তত ১৫-২০ মিনিট কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
যদি ঘরোয়া প্রতিকার এবং সাধারণ জেল ব্যবহারেও ঘা না সারে বা ঘায়ের
ব্যথা বাড়তে থাকে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
চিকিৎসক প্রয়োজনে উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ
দিতে পারেন।
বাচ্চাদের মুখে ঘা বিষয়ক সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
১. প্রশ্নঃ মুখে ঘা কেন হয়?
উত্তরঃ মুখে ঘা সাধারণত ভিটামিন বি১২, আয়রন, ফোলেটের অভাবে,
আঘাত, খাদ্য অ্যালার্জি, মানসিক চাপ, এবং ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াল
সংক্রমণের কারণে হতে পারে। এছাড়া দাঁতের ব্রাশ করার সময় মুখের ভেতরে
আঘাত পেলে ঘা হতে পারে।
২.প্রশ্নঃ জিহ্বায় ঘা হলে কি কি খাওয়া যাবে না?
উত্তরঃ মশলাদার এবং অ্যাসিডিক খাবার এড়িয়ে চলুন, ভাল মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন, লবণ জল দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং ওভার-দ্য-কাউন্টার ব্যথা উপশমকারী ব্যবহার করুন। যদি এটি একটি সংক্রমণের কারণে হয়, তাহলে আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে।
৩.প্রশ্নঃ মুখে ঘা নিরাময়ে কোন ওষুধ বা জেল প্রয়োগ করা যেতে পারে?
উত্তরঃ বাচ্চাদের মুখে ঘায়ের জন্য বোরোজেল, ওরা-জেল, ড্যাকটিনোল জেল ইত্যাদি প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৪.প্রশ্নঃ বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে কি ধরনের খাবার দেওয়া উচিত?
উত্তরঃ নরম এবং পুষ্টিকর খাবার দেওয়া উচিত, যেমন - স্যুপ, খিচুড়ি, দই, মধু মেশানো পানি ইত্যাদি। মশলাদার, অতিরিক্ত গরম বা খোসাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে ঘা আরো ব্যথাযুক্ত হতে পারে।
৫.প্রশ্নঃ বাচ্চাদের মুখে ঘা কেন বারবার হয়?
উত্তরঃ বাচ্চাদের মুখে ঘা বারবার হওয়ার কারণ হতে পারে পুনরাবৃত্ত পুষ্টির অভাব, দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, বা জিনগত কারণ। তাই মুখের ঘা বারবার হলে ডাক্তারি পরামর্শ নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো উচিত।
বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে করণীয় সম্পর্কে শেষকথা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা জানলাম বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে করণীয় কি। বাচ্চাদের মুখে, মাড়ি, ঠোঁট বা জিহ্বায় প্রায়ই ছোট ছোট ঘায়ের মতো দেখা যায়। অনেক সময় এ কারণে তাদের পানি পান করতে সমস্যা হয়। ব্যথায় ভুগতে থাকে শিশু। যাতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন বাবা-মায়েরা।দুর্ঘটনাজনিত কামড়, আঘাত, পুষ্টির ঘাটতি বা ভাইরাল সংক্রমণ শিশুর মুখে ঘায়ের কারণ হতে পারে। এগুলো ক্যানকার সোর বা অ্যাফথাস আলসার নামেও পরিচিত। যদিও বেশিরভাগ মুখের ঘা এমনিতেই সেরে যায়, আবার কিছু ঘা সারাতে ওষুধের প্রয়োজন হয়।শিশুদের মুখে ঘা বেশিরভাগই আঘাতের কারণে হয়ে থাকে। দেখা যায়, খেলনা দিয়ে খেলার সময়, গাল/জিহ্বা কামড়ানো এবং পোড়া, ব্রাশ করার সময় বা শক্ত খাবার খাওয়ার সময় আঘাত পাওয়া থেকে।এটি মুখের ঘা, যা ক্যানকার সোর বা অ্যাফথাস আলসার নামেও পরিচিত। এটি শিশুদের জন্য সাধারণ এক অসুখ। তবে কখনও কখনও এটি শিশুর বিকাশের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তাই এটি নিরাময় করতে হবে গুরুত্ব দিয়ে। সঠিক যত্ন ও ঘরোয়া প্রতিকার দিয়ে এটি কমানো সম্ভব। তবে দীর্ঘস্থায়ী হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। আশা করছি বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে করণীয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url