খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য থাকছে এই
পোস্টে। খতিয়ান হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমি সংক্রান্ত দলিল, যা জমির মালিকানা,
সীমানা, আয়তন, প্রকৃতি এবং অন্যান্য বিবরণ সংরক্ষণ করে। এটি ভূমি ব্যবস্থাপনা
এবং আইনগত প্রক্রিয়ায় অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।
খতিয়ান জমির মালিকানা নিশ্চিত করে এবং জমি সংক্রান্ত যেকোনো আইনগত
প্রক্রিয়ায় প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি জমির সঠিক ব্যবহার, কর নির্ধারণ
এবং উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করে। তাহলে চলুন আর বেশি কথা না
বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম।
ক. আয়তাকার জমির পরিমাণ বের করার সূত্রঃ
- পরিমাণ = দৈর্ঘ্য × প্রস্থ
উদাহরণস্বরূপ, যদি জমির দৈর্ঘ্য ২০ ফুট এবং প্রস্থ ১৫ ফুট হয়, তাহলে
জমির পরিমাণ হবেঃ
- পরিমাণ = ২০ ফুট × ১৫ ফুট = ৩০০ বর্গফুট
খ. বর্গাকার জমির পরিমাণ বের করার সূত্র:
- পরিমাণ = এক পাশ × এক পাশ (এটি একটি বর্গক্ষেত্র হলে)
উদাহরণস্বরূপ, যদি জমির এক পাশ ২০ ফুট হয়, তাহলেঃ
- পরিমাণ = ২০ ফুট × ২০ ফুট = ৪০০ বর্গফুট
গ. অসম আকারের জমিঃ
-
যদি জমি অযৌক্তিক আকারে থাকে, তবে ত্রিভুজের সূত্র বা অপরিমিত
আকারের ভূগোলের সূত্র ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের জমির পরিমাণ বের
করার জন্য সাধারণত সরকারি ভূমি জরিপ বিভাগ বা জমির সীমানা পরীক্ষক
দ্বারা মাপজোখ করতে হয়।
৩. জমির পরিমাণ বের করার জন্য একক রূপান্তরঃ খতিয়ানে জমির
পরিমাণের একক স্থানভেদে এবং সময়ভেদে বিভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণত
ব্যবহৃত এককগুলোর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য একক হলোঃ
শতকঃ
- ১ শতক = ১/১০০ একর = ৪৩৫.৬ বর্গফুট
-
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, শতক এককটি জমির পরিমাণ পরিমাপের জন্য
প্রচলিত।
বিঘাঃ
-
১ বিঘা (বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে) = ২০ শতক (এই পরিমাণ কিছু অঞ্চলে
পরিবর্তিত হতে পারে)
-
১ বিঘা = ১,০০০ বর্গফুটের একটি অঞ্চল হিসেবে গণনা করা হয়, তবে এর
মান নির্ভর করে স্থানভেদে।
কাঠাঃ
- ১ কাঠা = ৭২০ বর্গফুট = ০.০১৪৭ একর
-
কাঠা এককটি বাংলাদেশে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, বিশেষত গ্রামীণ এলাকায়।
একরঃ
- ১ একর = ৪৩,৫৬০ বর্গফুট = ৪০৪৬.৮৬ বর্গমিটার
-
একর এককটি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবহৃত হয়, এটি বড় জমির পরিমাণ মাপতে
ব্যবহার করা হয়।
৪. একক রূপান্তরঃ প্রায়শই জমির পরিমাণ একক থেকে আরেক এককে
রূপান্তর করা দরকার হতে পারে। এখানে কিছু সাধারণ রূপান্তর আলোচনা করা
হলোঃ
শতক থেকে একরঃ
- ১ একর = ১০০ শতক
-
অর্থাৎ, শতককে একরে রূপান্তর করতে শতকের সংখ্যা ১০০ দিয়ে ভাগ করতে
হবে।
বিঘা থেকে শতকঃ
- ১ বিঘা = ২০ শতক
-
অর্থাৎ, বিঘা থেকে শতক রূপান্তর করতে বিঘার সংখ্যা ২০ দিয়ে গুণ
করতে হবে।
কাঠা থেকে একরঃ
- ১ কাঠা = ০.০১৪৭ একর
-
অর্থাৎ, কাঠাকে একরে রূপান্তর করতে কাঠার সংখ্যা ০.০১৪৭ দিয়ে গুণ
করতে হবে।
৫. জমির পরিমাণ বের করার উদাহরণঃ
উদাহরণ ১ঃ
ধরা যাক, খতিয়ানে জমির পরিমাণ ২০ শতক উল্লেখ করা হয়েছে, তাহলে:
- ২০ শতক = ২০ × ৪৩৫.৬ বর্গফুট = ৮৭১২ বর্গফুট
-
২০ শতক = ১ বিঘা (এটি অনেক অঞ্চলে একরকম হতে পারে, তবে ২০ শতক = ১
বিঘা অনেক ক্ষেত্রে হয়)।
উদাহরণ ২ঃ
ধরা যাক, জমির পরিমাণ ৩ কাঠা উল্লেখ করা হয়েছে:
- ৩ কাঠা = ৩ × ৭২০ বর্গফুট = ২১৬০ বর্গফুট
- ৩ কাঠা = ০.০৪৪১ একর
উদাহরণ ৩ঃ
ধরা যাক, জমির পরিমাণ ৫ বিঘা উল্লেখ করা হয়েছেঃ
- ৫ বিঘা = ৫ × ২০ শতক = ১০০ শতক
- ৫ বিঘা = ১০০ × ৪৩৫.৬ বর্গফুট = ৪৩,৫৬০ বর্গফুট = ১ একর
৬. স্থানভেদে রূপান্তরের প্রক্রিয়াঃ খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার সময় অবশ্যই জমির অবস্থান এবং স্থানীয় প্রশাসনিক নিয়মকানুন লক্ষ্য রাখতে হবে, কারণ বিভিন্ন অঞ্চলে জমির পরিমাণের একক ভিন্ন হতে পারে এবং এককের মানও পরিবর্তিত হতে পারে। সুতরাং, স্থানীয় ভূমি দপ্তর বা ভূমি জরিপ বিভাগের সহায়তা নেয়া উচিৎ।
খতিয়ানের প্রকারভেদ ও বিস্তারিত বিশ্লেষণ
খতিয়ানের বিভিন্ন ধরন রয়েছে, যা বিভিন্ন সময়ে তৈরি হয়েছে এবং বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। খতিয়ান হলো ভূমির মালিকানা ও অধিকার সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। নির্দিষ্ট ভূমির মালিকানা, পরিমাণ, অবস্থান, দখলদারিত্ব, শ্রেণিবিন্যাস ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ সংরক্ষণের জন্য তৈরি করা একটি সরকারিভাবে অনুমোদিত নথি। এটি ভূমির মালিকানা নির্ধারণ ও আইনগত সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে প্রতিটি খতিয়ানের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো।
১. সি এস (C S) খতিয়ানঃ ১৮৮৮ থেকে ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ আমলে প্রথমবার ভূমি জরিপ করে যে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়, তা সিএস খতিয়ান নামে পরিচিত। এটি বেশ পুরাতন এবং জমির মূল মালিকানা ও ব্যবহার সম্পর্কে প্রথমিক তথ্য সরবরাহ করে।এই সময়ে সরকারি আমিনগণ প্রতিটি ভু খন্ড পরিমাপ করে তার পরিমান, অবস্থান ও মৌজা নকশা এবং মালিক / দখলকারের বিররণ সংবলিত খতিয়ান তৈরি রেন যা সি এস খতিয়ান নামে অবিহিত। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচাইতে প্রাচীনতম খতিয়ান।
২. এস এ (S A) খতিয়ানঃ ভারত উপমহাদেশ ভাগ হবার পরে ১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাসের পর সরকার জমিদারি অধিগ্রহণ করেন। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ১৯৫৬ সালে সরকারের ভূমি ব্যবস্থাপনা কর্তৃক প্রদত্ত জরিপে দায়িত্বরত কর্মচারীগন সি এস খতিয়ান সংশোধন করে নতুন এক ধরনের খতিয়ান তৈরি করে, যা এস এ খতিয়ান নামে পরিচিত। এটি সি এস খতিয়ানের সংশোধিত সংস্করণ।
৩. আর এস (R S) খতিয়ানঃ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৭০ সালে পাকিস্তান আমলের প্রস্তুতকৃত এস এ খতিয়ানের বিভিন্ন ভুল সংশোধন করার লক্ষ্যে ভূমি জরিপ কার্যক্রম চালু করা হয়। উক্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে যে খতিয়ান তৈরি করা হয় সেটাই আর এইচ খতিয়ান নামে পরিচিত। পাকিস্তান আমলের প্রস্তুতকৃত ভূমি জরিপে বিভিন্ন ভুল পরিলক্ষিত হয়, কেননা তখনকার কর্মকর্তা কর্মচারীগণ সরজমিনে না গিয়েই কোনোভাবে খতিয়ান প্রস্তুত করে যা বিভিন্ন ধরনের ভুলে পরিলক্ষিত হয়, যেমন মালিকানা, জমির পরিমাপ কিংবা খতিয়ানের বিভিন্ন তথ্যে ভুল পাওয়া যায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার এটা সংশোধন করার জন্য ভূমি জরিপ চালু করে। বর্তমানে অনেকের কাছেই আরএস খতিয়ান বিএস খতিয়ান নামেই পরিচিত।
৪. বি এস (B S) খতিয়ানঃ ১৯৯৮ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত চলমান ভূমি জরিপ থেকে প্রস্তুতকৃত নথিকে বি এস খতিয়ান বলা হয়। ১৯৯৮ সালে ঢাকা মহানগর ভূমি জরিপ এর মাধ্যমে এই খতিনের উদ্বুদ্ধ হয়। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমি জরিপ চালু আছে এবং এই জমি জরিপের মাধ্যমে বিএস খতিয়ান প্রস্তুত হয়। যেহেতু বর্তমানে সমস্ত খতিয়ান গুলো বিএস খতিয়ান নামে অভিহিত। এটিই সর্বাধিক আধুনিক এবং নির্ভুল খতিয়ান।
৫. টিপিপি (T.P) খতিয়ানঃ টিপিপি (T.P) খতিয়ান বা Tenancy Preparation খতিয়ান হলো ভূমির ইজারাদারদের (ভাড়াটিয়া/কৃষি ভূমি ভোগকারীদের) জন্য তৈরি একটি বিশেষ খতিয়ান। এটি মূলত ব্রিটিশ আমলে প্রণয়ন করা হয়েছিল। জমিদারি প্রথার সময়, জমির প্রকৃত মালিকদের পাশাপাশি যারা ইজারার ভিত্তিতে বা স্থায়ী বন্দোবস্তে জমি ভোগ করতেন, তাদের তালিকা সংরক্ষণ করা হয়। ১৯৫০ সালে "জমিদারি প্রথা বিলোপ আইন" কার্যকর হওয়ার পর এই খতিয়ানের ব্যবহার সীমিত হয়ে যায়। আধুনিক ভূমি রেকর্ড ব্যবস্থায় এসএ, আরএস ও বিএস খতিয়ান বেশি গ্রহণযোগ্য, তাই টিপিপি খতিয়ান এখন তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে কিছু পুরনো জমির রেকর্ড যাচাই করতে এটি ব্যবহার হতে পারে।
৬. সিটি জরিপ খতিয়ানঃ ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোর জন্য সিটি জরিপ ১৯৮০-এর দশকের পর থেকে চালু হয়। সিটি জরিপ খতিয়ান হলো শহরাঞ্চলের ভূমি মালিকানা, সীমানা, শ্রেণিবিন্যাস, এবং দখলদারিত্ব সম্পর্কিত তথ্য সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত একটি বিশেষ ধরনের খতিয়ান। এটি মূলত সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার আওতাধীন এলাকাগুলোর ভূমির সঠিক রেকর্ড সংরক্ষণ করার জন্য তৈরি করা হয়। গ্রামাঞ্চলের ভূমির জন্য সাধারণত বিএস (Bangladesh Survey) খতিয়ান ব্যবহৃত হয়, কিন্তু শহর এলাকায় সঠিক রেকর্ড সংরক্ষণ করতে সিটি জরিপ খতিয়ান চালু করা হয়েছে। পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত হোল্ডিং ট্যাক্স ও অন্যান্য ভূমি সংক্রান্ত কর নির্ধারণের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
৭. ডিপি (D.P) খতিয়ানঃ ডিপি (D.P) খতিয়ান বা Demarcation Partition (সীমানা নির্ধারণ ও ভূমি বিভাজন খতিয়ান) হলো ভূমির সঠিক সীমানা নির্ধারণ ও মালিকানা বিভাজনের জন্য তৈরি একটি বিশেষ খতিয়ান। সাধারণত জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ থাকলে বা জমির সীমানা চিহ্নিত করার প্রয়োজন হলে এটি তৈরি করা হয়। এটি পূর্ববর্তী খতিয়ানের (যেমন CS, SA, RS) ভিত্তিতে সংশোধিত রেকর্ড তৈরি করে। পারিবারিক জমিজমা বা সম্পত্তি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আদালতের নির্দেশে অনেক সময় ডিপি খতিয়ান তৈরি করা হয়।
৮. নামজারি খতিয়ানঃ নামজারি খতিয়ান হলো ভূমির মালিকানা হস্তান্তর বা পরিবর্তনের পর সরকারিভাবে ভূমি রেকর্ড হালনাগাদের একটি প্রক্রিয়া। যখন কোনো ব্যক্তি ভূমি ক্রয় করেন, উত্তরাধিকার সূত্রে মালিক হন বা আদালতের রায়ের মাধ্যমে মালিকানা পান, তখন নতুন মালিকের নামে ভূমির মালিকানা রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা নামজারি খতিয়ান নামে পরিচিত। এক্ষেত্রে বিএস (Bangladesh Survey) বা অন্যান্য বিদ্যমান খতিয়ানের তথ্য পরিবর্তন করে নতুন মালিকের নাম যুক্ত করা হয়। নামজারি ছাড়া ভূমির খাজনা (ভূমি উন্নয়ন কর) পরিশোধ করা যায় না এবং সরকারি খতিয়ান অনুযায়ী মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়। নামজারি সম্পন্ন হলে ভূমির নতুন মালিককে নামজারি সনদ এবং সংশোধিত খতিয়ান কপি প্রদান করা হয়।
খতিয়ানের বৈশিষ্ট্য
খতিয়ানের বৈশিষ্ট্যগুলো জমি ব্যবস্থাপনার একটি অপরিহার্য দলিলে পরিণত করেছে।
এটি জমির মালিকানা, সীমানা, আয়তন এবং ব্যবহার সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য সরবরাহ
করে। খতিয়ানের মাধ্যমে জমি সংক্রান্ত যেকোনো আইনগত প্রক্রিয়া সহজ এবং
স্বচ্ছ হয়। তাই জমির মালিকানা নিশ্চিত করতে এবং জমি সংক্রান্ত যেকোনো কাজে
খতিয়ানের গুরুত্ব অপরিসীম।খতিয়ান সাধারণত মৌজা ভিত্তিক প্রস্তুত করা হয়
এবং প্রতিটি জমির জন্য আলাদা দাগ নম্বর থাকে।
জমির মালিকানা নির্ধারণঃ খতিয়ান জমির মালিকের নাম ও মালিকানার
ধরন নির্ধারণ করে, যা ভূমির প্রকৃত মালিকানা প্রমাণের জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। এটি মালিকানা সম্পর্কে কোনো বিভ্রান্তি বা বিরোধ এড়াতে
সাহায্য করে। এটি জমির মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে এবং খাজনা পরিশোধের অধিকারও
নিশ্চিত করে।
মৌজা ও দাগ নম্বরঃ প্রত্যেকটি খতিয়ানে জমির সঠিক অবস্থান
চিহ্নিত করতে মৌজা (গ্রাম বা এলাকার নাম) এবং দাগ নম্বর উল্লেখ থাকে। দাগ
নম্বর জমির সীমানা চিহ্নিত করার জন্য ব্যবহৃত একটি নির্দিষ্ট নম্বর, যা
জমির সঠিক অবস্থান শনাক্ত করতে সাহায্য করে। এগুলো জমির সঠিক অবস্থান
চিহ্নিত করতে সহায়ক, যা ভূমি ব্যবহারকারীদের সহায়তা করে।
জমির পরিমাণঃ খতিয়ানে জমির আয়তন বা পরিমাণ বিঘা, কাঠা, শতাংশ
বা একর এককে উল্লেখ থাকে। এটি জমির প্রকৃত আয়তন নির্ধারণ করে, যা জমির
লেনদেনের জন্য অপরিহার্য। বিঘা ও কাঠা সাধারণত গ্রামীণ জমির পরিমাপের একক
হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ও একর শহর বা বাণিজ্যিক জমির পরিমাপের একক।
জমির শ্রেণিবিন্যাসঃ খতিয়ানে জমির ধরন যেমন কৃষি জমি,
বসতবাড়ি, খাস জমি, জলাশয় ইত্যাদি উল্লেখ করা হয়। সাধারণত জমির
শ্রেণীবিন্যাস নির্ধারণ করা হয় পরিমাপ, অবস্থান এবং ব্যবহারিক বৈশিষ্ট্যের
ভিত্তিতে। জমির শ্রেণীবিন্যাসের ভিত্তিতে সরকার ভূমি উন্নয়ন, ভূমি
পরিকল্পনা, এবং ভূমির মূল্যায়ন নির্ধারণ করে।
ভূমি কর ও খাজনাঃ খতিয়ানে জমির ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা)
সংক্রান্ত তথ্য থাকে, যা জমির মালিকের খাজনা পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয়।
ভূমির সীমানা ও শ্রেণী অনুযায়ী বিভিন্ন পরিমাণে জমির কর নির্ধারিত হয়। জমির
মালিকের জন্য খাজনা পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকে, যেটি নামজারি বা ভূমি
ট্রান্সফার সম্পন্ন না হলে পরিশোধ করা যায় না।
দখলদারিত্বের বিবরণঃ খতিয়ানে জমির দখলদারিত্বের তথ্য উল্লেখ
থাকে। এই তথ্য জমির মালিক, ভাড়াটিয়া বা অন্য কোনো ব্যক্তির দখল সংক্রান্ত
পরিস্থিতি পরিষ্কার করে। এটি নিশ্চিত করে যে, জমি বর্তমানে কার দখলে রয়েছে,
যাদের কাছে জমি ভাড়া দেওয়া হয়েছে, তাদের নাম, তথ্য ও যারা জমি লিজ নিয়েছে,
তাদের নাম।
আইনি স্বীকৃতিঃ খতিয়ান হলো সরকারি স্বীকৃত নথি, যা ভূমির
মালিকানা প্রমাণে ব্যবহৃত হয়। এটি আইনগত দলিল হিসেবে কাজ করে, যার মাধ্যমে
ভূমির মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা যায় এবং বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। খতিয়ান জমির
মালিকানা, দখল, এবং অন্যান্য বিবরণ নিশ্চিত করে, যা ভূমি বিরোধের ক্ষেত্রে
আদালতে ব্যবহার করা যায়। খতিয়ান ছাড়া জমি সংক্রান্ত কোনো সঠিক আইনি দাবি
করা যায় না।
নামজারি ও হালনাগাদঃ খতিয়ানে মালিকানা পরিবর্তন (যেমন জমি
বিক্রয় বা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত) হলে নামজারি (Mutation) প্রক্রিয়া
অনুসরণ করা হয়। এটি খতিয়ান হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া, যেখানে পুরনো মালিকের
নাম পরিবর্তন হয়ে নতুন মালিকের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। নতুন মালিক জমির
মালিকানা গ্রহণের পর নামজারি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। এটি করলে জমির
খাজনা পরিশোধ করা সম্ভব হয় এবং সরকারি রেকর্ডে নতুন মালিকের নাম
অন্তর্ভুক্ত হয়।
সংশোধনযোগ্যতাঃ খতিয়ানে কোনো ভুল বা অসঙ্গতি থাকলে, সংশোধনের
মাধ্যমে তা নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী সংশোধিত করা যেতে পারে। কোনো ভুল
সীমানা, দখল বা অন্য কোনো তথ্য থাকলে, সংশোধনের জন্য রিভিশনাল সেটেলমেন্ট
বা জমির নতুন জরিপের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়।
খতিয়ানের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা
খতিয়ানের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা ভূমির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে
অপরিসীম। এটি জমির আইনি মালিকানা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে এবং জমির সকল
কার্যক্রমে আইনি স্বীকৃতি প্রদান করে। জমির কেনাবেচা, নামজারি, সরকারি
সুবিধা, বিরোধ নিষ্পত্তি সহ নানা ক্ষেত্রে খতিয়ান অপরিহার্য। জমির ন্যায্য
ব্যবহার ও সঠিক শ্রেণিবিন্যাস নিশ্চিত করতে খতিয়ান অপরিহার্য। নিচে খতিয়ানের
গুরুত্বের বিষয়গুলো আরও স্পষ্টভাবে আলোচনা করা হলোঃ
জমির মালিকানা প্রতিষ্ঠাঃ খতিয়ান ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত
সমস্ত তথ্য একটি আইনি দলিল হিসেবে ধারণ করে। এটি মূলত জমির মালিকের নাম,
পরিচয়পত্র নম্বর, এবং জমির সীমানার তথ্য নিশ্চিত করে, যা জমির প্রকৃত
মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করে। খতিয়ান জমির মালিকানা প্রতিষ্ঠা
করে, যা আদালতে আইনগত প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি জমির মালিকের সঠিক
পরিচয় এবং অধিকার সুরক্ষিত রাখে। খতিয়ান জমির প্রকৃত মালিক এবং তার অধিকার
সুরক্ষা করে, ফলে জমির মালিকানা নিয়ে কোন ধরনের বিরোধ থাকলে তা সহজে
নিষ্পত্তি করা সম্ভব।
ভূমি বিরোধের সমাধানঃ যখন জমির মালিকানা বা সীমানা নিয়ে বিরোধ
সৃষ্টি হয়, খতিয়ান একটি অত্যন্ত কার্যকর দলিল হিসেবে কাজ করে। এটি জমির
সীমানা, মালিক এবং দখলদারত্ব স্পষ্ট করে, যা বিরোধ সমাধানে সহায়তা করে।
জমির মালিক ও দখলদারের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে, খতিয়ান আদালতে প্রমাণ
হিসেবে কাজ করে। এটি মালিকানা সঠিকভাবে চিহ্নিত করে।
ভূমি কর ও খাজনা পরিশোধঃ খতিয়ান ভূমির খাজনা বা কর নির্ধারণে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কৃষি জমি, বাণিজ্যিক জমি, আবাসিক জমি, এবং
শিল্প জমির জন্য আলাদা আলাদা কর হতে পারে। জমির পরিমাণ, শ্রেণী, এবং
ব্যবহার অনুযায়ী খাজনা পরিশোধ করা হয়, যা জমির মালিকের দায়িত্ব।
সরকারি সুবিধা ও ভূমি উন্নয়নঃ খতিয়ান জমির ব্যবহার এবং
অবস্থান সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে, যা বিভিন্ন সরকারি সুবিধা
ও ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পে যেমন সড়ক নির্মাণ, স্কুল বা হাসপাতাল নির্মাণের
জন্য সঠিক জমি চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন সরকারী প্রকল্পে জমি
অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে খতিয়ান জমির সঠিক মালিক ও অবস্থান নিশ্চিত করে।
জমি বিক্রয় ও হস্তান্তরঃ খতিয়ান জমির বিক্রয় বা হস্তান্তর
প্রক্রিয়ার একটি অপরিহার্য দলিল। এটি বিক্রেতা এবং ক্রেতার মধ্যে জমির
প্রকৃত মালিকানা নিশ্চিত করে এবং জমির মালিকানা পরিবর্তন করার প্রক্রিয়া
সহজ করে। যখন জমি বিক্রয় করা হয়, তখন খতিয়ান হালনাগাদ হয় এবং নতুন মালিকের
নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আইনি সুরক্ষাঃ খতিয়ান জমির আইনি সুরক্ষা প্রদান করে এবং জমির
মালিকের অধিকার নিশ্চিত করে যাতে কেউ তার জমির মালিকানা দাবি করতে না পারে।
এটি জমির আইনগত বৈধতা সমর্থন প্রদান করে, যা আদালতে জমির আইনি সমস্যা বা
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করে।
জমির সীমানা নির্ধারণঃ খতিয়ান জমির সীমানা ও অবস্থান
নির্ধারণে সহায়তা করে, যা ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং উন্নয়ন প্রকল্পে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যা সরকারি বা বেসরকারি প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয়
তথ্য প্রদান করে।
নামজারিঃ জমির মালিকানা পরিবর্তন হলে, খতিয়ানে নতুন মালিকের
নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নতুন মালিকের নাম খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করতে
নামজারি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। খতিয়ান জমির মালিকানা পরিবর্তনের
সরকারি রেকর্ড হিসেবেও কাজ করে। কোন জমি বিক্রয়, উত্তরাধিকার, বা
ট্রান্সফারের মাধ্যমে নতুন মালিকের কাছে চলে গেলে, নামজারি প্রক্রিয়ার
মাধ্যমে এটি খতিয়ানে প্রতিফলিত হয়।
উন্নয়ন পরিকল্পনা ও ভবিষ্যৎ ব্যবহারঃ খতিয়ান জমির উন্নয়ন এবং
ভবিষ্যৎ ব্যবহারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খতিয়ান জমির কার্যকর
ব্যবহারের জন্য সরকারের ভূমি পরিকল্পনা প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দলিল
হিসেবে কাজ করে। এটি সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় জমির সঠিক ব্যবহার নির্দেশ
করে এবং জমির প্রতি জনসাধারণের অধিকার নিশ্চিত করে।
নামজারি খতিয়ান চেক করার নিয়ম
নামজারি খতিয়ান চেক করার নিয়ম হলো জমির মালিকানা, সীমানা এবং অন্যান্য
তথ্য যাচাই করার একটি প্রক্রিয়া, যা জমির পরিবর্তন বা হস্তান্তর সম্পর্কিত
তথ্য দেখার জন্য প্রয়োজনীয়। নামজারি খতিয়ান সাধারণত জমির মালিকানা
স্থানান্তর বা জমির নতুন মালিকের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া। এটি
বাংলাদেশের ভূমি রেকর্ড সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এবং এর মাধ্যমে
জমির মালিকানা আইনিভাবে প্রমাণিত হয়। নামজারি খতিয়ান চেক করার জন্য আপনি
নিচের কিছু ধাপ অনুসরণ করতে পারেনঃ
১. ভূমি অফিসে গিয়ে নামজারি খতিয়ান চেক করাঃ যদি আপনি কোনো
নির্দিষ্ট জমির নামজারি খতিয়ান চেক করতে চান, তবে আপনাকে ভূমি অফিস বা
ডিস্ট্রিক্ট ল্যান্ড রেকর্ড অফিস এ যেতে হবে। এখানে আপনি জমির মালিকানা ও
সীমানার পরিবর্তন সম্পর্কিত তথ্য চেক করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় আপনাকে
নিম্নলিখিত তথ্য প্রদান করতে হতে পারেঃ
-
মৌজা নামঃ জমি যে এলাকার মধ্যে অবস্থিত, তার নাম।
-
খতিয়ানের নম্বরঃ জমির খতিয়ানের সুনির্দিষ্ট নম্বর (যা খতিয়ান দলিলে
উল্লিখিত থাকে)।
-
জমির মালিকের নামঃ জমির বর্তমান মালিক বা পূর্ববর্তী মালিকের নাম।
-
জমির সীমানাঃ জমির সীমানার বিবরণ বা সীমা চিহ্ন।
আপনার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জমির নামজারি খতিয়ান চেক করা হবে এবং
প্রয়োজনীয় কপি সংগ্রহের জন্য ভূমি অফিস থেকে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
২. অনলাইনে নামজারি খতিয়ান চেক করার পদ্ধতিঃ বর্তমানে জমির
তথ্য অনলাইনে পাওয়া সম্ভব হয়েছে, যা জমির মালিকদের জন্য সহজ এবং সুবিধাজনক।
বাংলাদেশে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট এবং ই-পর্চা পোর্টাল
থেকে আপনি নামজারি খতিয়ান চেক করতে পারেন। চলুন, কীভাবে এটি করা হয় তা
বিস্তারিত জানি:
ধাপ-১ঃ প্রথমে বাংলাদেশ ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের
ওয়েবসাইটে যান। এটি সাধারণত
www.dlr.gov.bd অথবা ই-পর্চা পোর্টাল মাধ্যমে প্রবেশ করা যায়।
ধাপ-২ঃ ওয়েবসাইটে গিয়ে "নামজারি খতিয়ান চেক করুন" অথবা "জমির
রেকর্ড চেক করুন" নামে একটি অপশন খুঁজে পাবেন। এখানে নামজারি বা খতিয়ান
নম্বর অনুযায়ী তথ্য খোঁজার ব্যবস্থা থাকে।
ধাপ-৩ঃ তথ্য অনুসন্ধানের জন্য আপনাকে কিছু মৌলিক তথ্য প্রদান
করতে হবে, যেমন:মৌজা নাম: জমি কোথায় অবস্থিত (এটি আপনার এলাকার নাম হতে
পারে)।
খতিয়ানের নম্বর: নামজারি খতিয়ানে উল্লেখিত খতিয়ানের নম্বর।
জমির মালিকের নাম: মালিকের নাম বা জমির পূর্ববর্তী মালিকের নাম (যদি জানা
থাকে)।
ধাপ-৪ঃ সঠিক তথ্য প্রদান করার পর, ওয়েবসাইটটি আপনার দেওয়া
তথ্য অনুযায়ী নামজারি খতিয়ান সম্পর্কিত ফলাফল দেখাবে। এতে জমির মালিকানা,
সীমানা, এবং অন্যান্য তথ্য প্রকাশিত হবে। আপনি সেগুলি যাচাই করে দেখতে
পারবেন।
ধাপ-৫ঃ এটি যদি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য থাকে, তবে আপনি ই-পর্চা
পোর্টাল থেকে ডাউনলোড করতে পারেন। এছাড়া, নামজারি খতিয়ান মুদ্রিত কপি
সংগ্রহ করতে চাইলে, সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে যোগাযোগ করে আইনি কপি গ্রহণ করা
যেতে পারে।
৩. নামজারি খতিয়ান চেক করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যঃ নামজারি
খতিয়ান চেক করতে কিছু মৌলিক তথ্য প্রয়োজন হয়। এটি জমির সঠিক তথ্য যাচাই
করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
-
মৌজা নামঃ জমির অবস্থান এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার নাম।
-
খতিয়ান নম্বরঃ জমির খতিয়ান বা রেকর্ড নম্বর যা খতিয়ান দলিলে উল্লেখিত
থাকে।
-
জমির মালিকের নামঃ জমির মালিক বা মালিকদের নাম (যদি থাকে)।
-
জমির সীমানাঃ জমির সীমানা চিহ্ন এবং গঠনের বিবরণ।
-
জমির পরিমাণঃ জমির পরিমাণ যেমন শতক, কাঠা, বিঘা বা একর ইত্যাদি।
৪. নামজারি খতিয়ান চেক করার পর যা জানতে পারবেনঃ নামজারি
খতিয়ান চেক করার মাধ্যমে আপনি নিচের বিষয়গুলি জানতে পারবেনঃ
-
জমির মালিকানাঃ জমির মালিকের নাম এবং জমি কিনে নেয়ার সময়ের তথ্য।
-
জমির সীমানাঃ জমির সীমানার চিহ্ন বা সীমানা সংক্রান্ত সঠিক তথ্য।
-
জমির পরিমাণঃ জমির পরিমাণ (যেমন বিঘা, শতক, কাঠা, একর)।
-
পূর্ববর্তী মালিক বা নাম পরিবর্তন: পূর্ববর্তী মালিকের নাম এবং জমির নাম
পরিবর্তন বা বিক্রির সম্পর্কিত তথ্য।
-
আইনি বাধা বা পরিবর্তনঃ যদি জমিতে কোনো আইনি বাধা থাকে বা কোনো পূর্বের
নামজারি পরিবর্তন হয়েছে।
৫. আইনি কপি সংগ্রহ করাঃ নামজারি খতিয়ান চেক করার পর আপনি যদি
আইনি কপি প্রয়োজন মনে করেন, তবে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবেঃ
-
ভূমি অফিসে যোগাযোগ করুনঃ আপনি জমির নামজারি খতিয়ান অফিস
থেকে আইনি কপি সংগ্রহ করতে পারেন। সেখানে খতিয়ান সার্টিফিকেটটি অনুমোদিত
হবে এবং এটি আপনাকে জমির মালিকানা আইনি দলিল হিসেবে ব্যবহার করতে দিবে।
-
ডিজিটাল কপিঃ আপনি যদি ডিজিটাল কপি প্রয়োজন হয়, তবে ই-পর্চা
পোর্টাল থেকে এটি ডাউনলোড করতে পারবেন, তবে আইনি স্বীকৃতি না পাওয়ার
কারণে এটা শুধু তথ্য যাচাইয়ের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।
৬. নামজারি খতিয়ান চেক করার সুবিধাঃ
-
স্বচ্ছতাঃ নামজারি খতিয়ান চেক করার মাধ্যমে জমির মালিকানা নিশ্চিত করা
যায়, ফলে জমি সংক্রান্ত বিবাদ কমে যায়।
-
গতিঃ অনলাইনে বা অফিসে দ্রুত তথ্য পাওয়া যায়।
-
আইনি নিরাপত্তাঃ জমির মালিকানা সম্পর্কিত তথ্য যাচাই করা হলে আইনি সমস্যা
এড়ানো যায়।
-
অনলাইন সহজলভ্যতাঃ অনলাইনে নামজারি খতিয়ান চেক করার মাধ্যমে দ্রুত
যেকোনো সময় জমির তথ্য জানার সুবিধা।
ই-পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধান পদ্ধতি
ই-পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধান একটি ডিজিটাল পদ্ধতি, যা বাংলাদেশের জমির মালিকানা, সীমানা, জমির পরিমাণ এবং অন্যান্য ভূমি সংক্রান্ত তথ্য সহজভাবে অনলাইনে যাচাই করার প্রক্রিয়া। এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জমির বৈধ মালিকানা ও সীমানা নিশ্চিত করার একটি আধুনিক পদ্ধতি। ই-পর্চা খতিয়ান চেক করার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন জমির তথ্য জানতে পারেন। বিস্তারিত নিচে দেখে নিন।
ই-পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধানের পুরো প্রক্রিয়াঃ
১. ই-পর্চা পোর্টাল বা ভূমি রেকর্ড ওয়েবসাইটে প্রবেশঃ বাংলাদেশে ই-পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধান করতে হলে প্রথমে আপনাকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পোর্টালে প্রবেশ করতে হবে। ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটঃ
https://www.dlr.gov.bd। ই-পর্চা পোর্টালঃ
https://eparcha.gov.bd। এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি ই-পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।
২. খতিয়ান অনুসন্ধান অপশন নির্বাচনঃ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর, "নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান" বা "খতিয়ান চেক করুন" নামে অপশন নির্বাচন করুন। এখানে ক্লিক করার পর আপনি আরও বিস্তারিত তথ্য প্রদান করার জন্য প্রম্পট পাবেন।
৩. প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানঃ নামজারি খতিয়ান চেক করতে আপনাকে কিছু মৌলিক তথ্য প্রদান করতে হবে, যা সাধারণত নিম্নরূপঃ
- মৌজা নামঃ জমি যেখানে অবস্থিত, সেই এলাকার নাম যেমন ঢাকা, কুষ্টিয়া, সিলেট, চট্টগ্রাম ইত্যাদি।
- খতিয়ান নম্বরঃ জমির খতিয়ানের নম্বর, যা খতিয়ান দলিলে উল্লেখ থাকে। এটি যদি আপনি জানেন তবে প্রবেশ করান।
- জমির মালিকের নামঃ জমির বর্তমান মালিকের নাম (যদি জানা থাকে)।
- জমির সীমানাঃ জমির সীমানা বা আকারের বিবরণ (যদি জানা থাকে)।
- জমির পরিমাণঃ জমির পরিমাণ, যেমন একর, বিঘা, শতক বা কাঠা।
৪. অনুসন্ধান এবং ফলাফলঃ এখন আপনি প্রদান করা তথ্যের ভিত্তিতে "অনুসন্ধান" বা "সার্চ" অপশনটি ক্লিক করলে সিস্টেমটি আপনাকে জমির মালিকানা, সীমানা, পরিমাণ এবং অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য প্রদর্শন করবে। এতে আপনি জানতে পারবেন জমির মালিকের নাম, জমির বর্তমান অবস্থান, সীমানা এবং জমির সমস্ত আইনি তথ্য। যদি খতিয়ান সম্পর্কিত কোনো পরিবর্তন বা আপডেট হয়ে থাকে, তাও দেখা যাবে।
৫. কপি সংগ্রহঃ আপনি যদি ডিজিটাল কপি প্রয়োজন মনে করেন, তবে ই-পর্চা পোর্টাল থেকে তা ডাউনলোড করা যাবে। তবে, আইনি কপি সংগ্রহ করতে হলে আপনাকে স্থানীয় ভূমি অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে জমির খতিয়ানের আইনি কপি প্রদান করা হবে, যা আপনি জমি বিক্রয় বা অন্যান্য আইনি কাজের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন।
ই-পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধান করার সুবিধাঃ
১. স্বচ্ছতাঃ ই-পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধানের মাধ্যমে জমির মালিকানা, সীমানা এবং পরিমাণ সম্পর্কিত সঠিক তথ্য পাওয়া যায়। এটি জমি সংক্রান্ত সকল তথ্যকে আরো স্বচ্ছ করে তোলে, এবং জমির মালিকানার বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে দেয় না।
২. সহজ প্রক্রিয়াঃ ই-পর্চা খতিয়ান অনলাইনে খুব সহজেই যাচাই করা সম্ভব। যে কেউ বাড়ি বসে বা অফিস থেকে অনলাইনে তথ্য চেক করতে পারবেন। এছাড়াও এটি সময় সাশ্রয়ী।
৩. আইনি নিরাপত্তাঃ ই-পর্চা খতিয়ান পোর্টাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য আইনি প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। জমির মালিকানা প্রমাণ করার জন্য এটি একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপকরণ।
৪. বিরোধ নিষ্পত্তিঃ জমির মালিকানা বা সীমানা নিয়ে কোনো বিরোধ থাকলে, ই-পর্চা খতিয়ান তা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। জমির সীমানা ও মালিকানা সঠিকভাবে চেক করে আপনি আইনি সমস্যাগুলি প্রতিরোধ করতে পারেন।
৫. ডিজিটাল কপিঃ আপনি ই-পর্চা পোর্টাল থেকে জমির খতিয়ান সম্পর্কিত তথ্য ডাউনলোড করে তা ডিজিটাল কপি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন, যা বিশেষ করে নির্দিষ্ট সময়ে জমির মালিকানা সম্পর্কিত তথ্যের জন্য দ্রুত এবং সহজে পাওয়া যায়।
জমির খতিয়ান সংগ্রহ করার পদ্ধতি
জমির খতিয়ান সংগ্রহ করা এখন সহজ ও ডিজিটাল হয়েছে। আপনি অনলাইনে (ই-পর্চা), ইউনিয়ন ভূমি অফিস, উপজেলা ভূমি অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অথবা আইনজীবীর মাধ্যমে খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারবেন। জমির মালিকানা নিশ্চিত করতে এবং আইনি প্রয়োজনে খতিয়ানের সত্যায়িত কপি সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভূমি সংক্রান্ত তথ্য যাচাই ও সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জেনে নিনজমির খতিয়ান সংগ্রহ পদ্ধতি।
১. অনলাইন থেকে খতিয়ান সংগ্রহঃ বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার ই-পর্চা চালু করেছে, যার মাধ্যমে অনলাইনে জমির খতিয়ান চেক ও সংগ্রহ করা যায়। এরজন্য প্রথমে আপনি
www.eporcha.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। ওয়েবসাইটে "সার্ভে খতিয়ান" মেন্যু থেকে আপনার জমির বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং খতিয়ানের ধরন (যেমন আর এস, বি এস, সি এস) নির্বাচন করুন।
নির্বাচিত তথ্যের ভিত্তিতে মৌজা নির্বাচন করুন। এরপর খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, মালিকের নাম বা পিতা/স্বামীর নাম দিয়ে অনুসন্ধান করুন। অনুসন্ধানের ফলাফল থেকে আপনার প্রয়োজনীয় খতিয়ানটি নির্বাচন করে বিস্তারিত তথ্য দেখুন। প্রয়োজনে "আবেদন করুন" বাটনে ক্লিক করে অনলাইন কপি বা সার্টিফাইড কপির জন্য আবেদন করতে পারেন।
উল্লেখ্য, অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধান ও সংগ্রহের জন্য জমির সঠিক ঠিকানা এবং খতিয়ানের প্রাসঙ্গিক তথ্য জানা আবশ্যক। অনলাইন কপি শুধুমাত্র তথ্য যাচাইয়ের জন্য, তবে আইনি প্রয়োজনে ভূমি অফিস থেকে সত্যায়িত কপি সংগ্রহ করতে হবে। এছাড়াও, মোবাইল ব্যবহারকারীরা "eKhatian" অ্যাপ ডাউনলোড করে একই প্রক্রিয়ায় খতিয়ান অনুসন্ধান ও সংগ্রহ করতে পারবেন। আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট পরিদর্শন করতে পারেন।
২. ইউনিয়ন ও উপজেলা ভূমি অফিস থেকে খতিয়ান সংগ্রহঃ যদি অনলাইনে তথ্য না পান বা সত্যায়িত কপি দরকার হয়, তাহলে ইউনিয়ন বা উপজেলা ভূমি অফিস থেকে খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারবেন।প্রথমে আপনার জমি যেই ইউনিয়ন বা উপজেলায় অবস্থিত সেই অঞ্চের ভূমি অফিসে (তহসিল অফিস) যান। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন-জমির মালিকের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র (NID), জমির দাগ নম্বর ও খতিয়ান নম্বর সঙ্গে নিয়ে যান।
ভূমি অফিস থেকে খতিয়ান কপি সংগ্রহের জন্য আবেদন ফরম সংগ্রহ করুন এবং সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করুন। নির্ধারিত ফি পরিশোধ করুন (সাধারণত ২০০-৫০০ টাকা, যা অঞ্চলভেদে ভিন্ন হতে পারে)। আবেদন জমা দেওয়ার পর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহসিলদার) যাচাই করবেন। অনুমোদন পাওয়ার পর নির্দিষ্ট সময় পর (সাধারণত ২-৭ দিন) অফিস থেকে খতিয়ানের কপি সংগ্রহ করুন।
৩. জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে খতিয়ান সংগ্রহঃ যদি ইউনিয়ন বা উপজেলা ভূমি অফিস থেকে খতিয়ান সংগ্রহ করা সম্ভব না হয়, অথবা অতীতে রেকর্ডকৃত কোনো পুরোনো খতিয়ান প্রয়োজন হয়, তাহলে জেলা প্রশাসকের (DC) কার্যালয়ে গিয়ে খতিয়ান সংগ্রহ করা যায়। এজন্য আবেদনপত্র জমা দিতে হয় এবং নির্ধারিত ফি সাধারণত ২০০-৫০০ টাকা, (তবে এটি সত্যায়িত কপি হলে বেশি হতে পারে) জমা দিয়ে রসিদ সংগ্রহ করুন।
আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর জেলা ভূমি অফিস আপনার আবেদন যাচাই করবে। অনুমোদন পেলে খতিয়ান কপি প্রস্তুত করা হবে। নির্ধারিত তারিখে জেলা ভূমি রেকর্ড শাখা থেকে খতিয়ান কপি সংগ্রহ করুন। যদি সত্যায়িত কপি প্রয়োজন হয়, তাহলে তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা জেলা প্রশাসক (DC) থেকে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। সাধারণত ৩-১০ দিন সময় লাগতে পারে, তবে পুরোনো রেকর্ড হলে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।
৪. আইনজীবীর মাধ্যমে খতিয়ান সংগ্রহঃ যদি আপনি নিজে জমির খতিয়ান সংগ্রহ করতে না পারেন অথবা প্রক্রিয়াটি আপনার জন্য কঠিন হয়ে থাকে, তাহলে আইনজীবীর মাধ্যমে খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারবেন। বিশেষত, যদি জমি সংক্রান্ত কোনো মামলা বা আইনগত জটিলতা থাকে, তাহলে একজন আইনজীবী এই প্রক্রিয়াটি দ্রুত এবং সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেন।
প্রথমে একজন আইনজীবী নিয়োগ করুন যিনি ভূমি আইন এবং রেকর্ড সংক্রান্ত কাজ জানেন।আইনজীবী আপনার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন এবং খতিয়ান সংগ্রহের প্রক্রিয়া সহজতর করবেন। আইনজীবীকে জমির দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর, মৌজা নাম এবং মালিকের নাম সম্পর্কিত তথ্য দিন। জমির মালিকানা সম্পর্কিত অন্য যে কোনো দলিল (যেমন: ক্রয় দলিল, রেজিস্ট্রেশন কপি, ইত্যাদি) প্রদান করুন।
আইনজীবী আপনার হয়ে আবেদন ফরম পূরণ করবেন এবং জমির খতিয়ান সংগ্রহের জন্য প্রক্রিয়া শুরু করবেন। এবং জমির প্রশাসনিক তথ্য যাচাই করে আবেদন প্রস্তুত করবেন।
জমির খতিয়ান সংগ্রহের জন্য সরকারি ফি ১০০-৫০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। আইনজীবী ফি জমা দেওয়ার পর রসিদ সংগ্রহ করবেন। আইনজীবী আপনার পক্ষে আবেদন জমা দেবেন সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে (ইউনিয়ন, উপজেলা বা জেলা প্রশাসন)।
ভূমি অফিস কর্তৃপক্ষ জমির খতিয়ান যাচাই করবেন এবং অনুমোদন শেষে খতিয়ানের কপি প্রস্তুত করবে। আইনজীবী আপনার পক্ষে খতিয়ান সংগ্রহ করবেন, এবং তা আপনাকে সরবরাহ করবেন।যদি খতিয়ানের সত্যায়িত কপি প্রয়োজন হয়, আইনজীবী তা সঠিকভাবে আইনানুগভাবে গ্রহণ করবেন।আইনজীবীর মাধ্যমে খতিয়ান সংগ্রহ করার ফলে আপনি খুব সহজে ও সঠিকভাবে জমির মালিকানা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য পেয়ে যাবেন।
৫. খতিয়ান সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ খতিয়ান সংগ্রহ করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র প্রয়োজন হয়, যা জমির মালিকানা প্রমাণ করতে এবং খতিয়ান সঠিকভাবে সংগ্রহ করতে সাহায্য করবে। নিচে খতিয়ান সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা দেওয়া হলোঃ
- জমির দাগ নম্বর জানাতে হবে, যেটি আপনার জমির রেকর্ডে পাওয়া যাবে।
- আপনার জমির খতিয়ান নম্বর (যদি জানা থাকে) প্রদান করুন।
- জমির মালিকের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্মনিবন্ধন সনদ।
- জমির সংশ্লিষ্ট মৌজা নামও জানাতে হবে।
- জমির মালিকের পূর্ণ নাম, পিতার নাম এবং ঠিকানা প্রদান করুন।
- যদি জমির কোন রেজিস্ট্রেশন বা দলিল থাকে, তবে তার কপি প্রয়োজন হতে পারে।
- যদি জমি সংক্রান্ত কোনো মামলা বা আদালতের নির্দেশ থাকে, তবে সেই কাগজপত্রও জমা দিতে হবে।
- আইনজীবী আপনার প্রতিনিধিত্ব করলে, একটি নিযুক্তি পত্র (Power of Attorney) দিতে হবে।
- আইনজীবীকে খতিয়ান সংগ্রহের জন্য তাদের আইনজীবী লাইসেন্স ও পরিচয়পত্র প্রদান করতে হবে।
জমির খতিয়ান সম্পর্কে শেষকথা
খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম বা জমির পরিমাণ বের করার জন্য জমির আয়তন বা সীমানা জানা প্রয়োজন। মাপের একক এবং রূপান্তরের নিয়মগুলি সঠিকভাবে জানলে, আপনি খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারবেন। খতিয়ান ভূমির মালিকানা ও জমির বিবরণ সংরক্ষণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি সরকারি রেকর্ড, যা ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ এড়াতে এবং জমির প্রকৃত মালিক নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। খতিয়ান যাচাই ও সংরক্ষণ করা প্রতিটি জমির মালিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জমির খতিয়ান জমি সংক্রান্ত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আইনগতভাবে স্বীকৃত দলিল, যা জমির মালিকানা, সীমানা, আয়তন, প্রকৃতি এবং অন্যান্য বিবরণ সংরক্ষণ করে। খতিয়ানের মাধ্যমে জমির মালিকানা নিশ্চিত করা যায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায় এবং সরকারি রাজস্ব আদায়ের ভিত্তি তৈরি করা যায়। এটি জমি ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধক, হস্তান্তর এবং উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অপরিহার্য। আশা করছি, খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম ও উপরে উল্ল্যেক্ষিত যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url