লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা


লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা ও এটি কীভাবে কাজ করে অনলাইনে অনেকেই এ সম্পর্কে জানতে চান। লাইসিভিন মূলত একটি পুষ্টিকর সম্পূরক, যা শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহে সহায়তা করে। এটি সাধারণত বিভিন্ন পুষ্টিহীনতা দূর করতে এবং শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে ব্যবহৃত হয়। 
লাইসিভিন-ট্যাবলেট-খাওয়ার-উপকারিতা
অনেক ক্ষেত্রে এটি চুলের গঠন উন্নত করতে, ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। এটি প্রোটিন গঠনে সাহায্য করে, যা শরীরের কোষ ও টিস্যু পুনর্গঠনে সহায়ক। কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে, যা ত্বক, চুল এবং নখকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান করে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা

লাইসিভিন ট্যাবলেট কিসের ঔষধ

লাইসিভিন ট্যাবলেট কিসের ঔষধ তা জানতে চেয়েছেন অনেকে। লাইসিভিন (Lysivin) ট্যাবলেট সাধারণত একটি ভিটামিন ও মিনারেল সম্পূরক হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা মূলত শরীরে ভিটামিন B complex, ভিটামিন C, এবং লাইজোজাইম (Lysozyme) সরবরাহ করে। লাইসিভিন ট্যাবলেট মূলত স্কয়ার কোম্পানির একটি মাল্টিভিটামিন প্রজাতির ঔষধ । এই ঔষধ খাওয়ার ফলে সেবনকারীর শরীরে অনেক ধরনের পরিবর্তন আসবে।
আপনার ওজন বাড়াতে হলে কিংবা খাওয়ার রুচি বৃদ্ধি করতে হলে আপনি এই ঔষধ খেতে পারবেন নিশ্চিন্তে। এছাড়াও যদি আপনার শরীরের মধ্যে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করতে চান তাহলেও ওষুধটি খেতে পারেন। হারপিস ভাইরাসে আক্রান্ত রোগের সমাধান সহ মানুষের হাইপার টেনশন এবং উচ্চ রক্তচাপ এর মত মারাত্মক সমস্যা গুলোর সমাধান এটি দিয়ে থাকে। এটি মানুষের শরীরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং হজম শক্তি বৃদ্ধির একটি কার্যকরী ঔষধ।

লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা

লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা অনেক। এটি একটি সাপ্লিমেন্ট এবং থেরাপিউটিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে ইনফেকশন প্রতিরোধ পর্যন্ত অনেক কাজে ব্যবহৃত হয়। লাইসিভিন একটি মাল্টিভিটামিন জাতীয় ঔষধ। যেহেতু এটি ভিটামিন জাতীয় ঔষধ তাই এটি ভিটামিন এর কাজ সহ আরো বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে শরীরের জন্য। লাইসিভিন এর উপকারিতা সম্পর্কে ভালোমতো জেনে নিনঃ

১.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (immunity) বাড়াতে কার্যকর। এটি ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর ভেঙে ফেলে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। এতে থাকা Vitamin C ও Lysozyme শরীরকে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে ঠান্ডা, ফ্লু, ও গলা ব্যথার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে।

২. উচ্চতা বৃদ্ধি করেঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট উচ্চতা বৃদ্ধি করে কি না এই প্রশ্নটি অনেকের মনে ঘুরপাক খায়। লাইসিভিনে থাকা Vitamin B complex ও Vitamin C শরীরের সার্বিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এগুলো কোষ গঠন, হাড়ের গঠন ও পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে। আপনার বয়স যদি এখনো ১২–১৮ বছরের মধ্যে হয়, তাহলে সঠিক পুষ্টি ও লাইফস্টাইল অনুসরণ করলে উচ্চতা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩. পেশী বৃদ্ধি করেঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট মূলত একটি ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট, যা শরীরকে ভিতর থেকে সুস্থ রাখে। লাইসিভিন সরাসরি পেশী বাড়ায় না, তবে শরীরের পুষ্টি ও শক্তি সরবরাহ করে, যা পেশী বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। এতে Vitamin B Complex, Vitamin C এবং Lysozyme থাকে আর এগুলোর কিছু উপাদান পেশী বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

৪. রুচি বাড়ায়ঃ যদি আমাদের খাওয়ার রুচি না থাকে তাহলে আমরা বেশি পরিমাণে খাদ্য খেতে পারব না এবং শরীরের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে না। লাইসিভিনে থাকা ভিটামিন B1, B6 ও B12 হজম ক্ষমতা বাড়ায় এবং খাওয়ার ইচ্ছা বৃদ্ধি করে। এই কারণে যদি কেউ খাওয়ার রুচি বাড়াতে চায় তাহলে সে চাইলেই lysivin ট্যাবলেট খেতে পারে। খাওয়ার রুচি বাড়াতে এটি বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে এটা প্রমাণিত।

৫. ওজন বাড়াতে সহায়তা করেঃ যখন আপনি lysivin ট্যাবলেট খাবেন তখন আপনার খাওয়ার রুচি বেড়ে যাবে এবং বেশি পরিমাণে খাদ্যগুলো খেতে পারবেন নিয়মিত। আর বেশি পরিমাণে খাদ্য খেলে দেহের ওজনও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে। যদি আপনার ওজন কম হয় তাহলে অবশ্যই lysivin ট্যাবলেট খেতে থাকবেন আপনার ওজন আস্তে আস্তে বাড়বে।

৬. মুখের ঘা বা ইনফেকশন সারাতে সাহায্য করেঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট মুখের ঘা বা ইনফেকশন সারাতে খুবই কার্যকর। বিশেষ করে Vitamin B2 (Riboflavin) এবং B12 এর অভাবেও মুখে ঘা হতে পারে, যেটা লাইসিভিন পূরণ করে। এটি মুখের ভিতরের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং ঘা বা ইনফেকশন দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে। মুখে ঘা, আলসার, ইনফেকশন বা লালচে জ্বালাপোড়া হলে এটি প্রশমনে সাহায্য করে।

৭. গলা ব্যথা ও টনসিলের সমস্যা কমায়ঃ লাইসিভিন গলার ইনফেকশন, ব্যথা ও টনসিলের ফোলাভাব কমাতে নিরাপদ, কার্যকর ও প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ একটি সাপ্লিমেন্ট। এতে বিদ্যমান Lysozyme একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এনজাইম, যা গলা ও টনসিলের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করে। গলা খুসখুসে ভাব, ব্যথা, বা টনসিল ইনফেকশন হলে এটি উপশমে কাজ করে।

৮. শরীরকে চাঙ্গা রাখেঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট শরীরকে ভিতর থেকে পুষ্টি দিয়ে, শক্তি জোগায় এবং শরীরকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত Vitamin B1, B2, B6, B12 শরীরে খাবার থেকে শক্তি উৎপাদন করে। এই ভিটামিনগুলো স্নায়ু, পেশী ও মস্তিষ্ক সচল রাখতে সাহায্য করে। ফলে আপনি কম ক্লান্ত হন, এবং সারাদিন বেশি শক্তিশালী বোধ করেন। এটি কোন শক্তিশালী এনার্জি বুস্টার না হলেও ধীরে ধীরে শরীরকে ব্যালান্সড এবং সতেজ রাখে।

৯. স্নায়ুতন্ত্র ঠিক রাখেঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট স্নায়ুতন্ত্রকে ভিতর থেকে মজবুত ও সচল রাখতে সহায়তা করে, বিশেষ করে যদি আপনার শরীরে Vitamin B-এর ঘাটতি থাকে। Vitamin B1, B6, ও B12 স্নায়ু কোষে শক্তি সরবরাহ করে এবং নার্ভ সংকেত ঠিকভাবে পাঠাতে সাহায্য করে। এগুলো নার্ভের চারপাশের প্রোটেক্টিভ লেয়ার (Myelin sheath) ঠিক রাখে, যাতে স্নায়ু ঠিকমতো কাজ করতে পারে।

১০. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করেঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট একটি কার্যকর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সাপ্লিমেন্ট। এর ভিতরে থাকা উপাদানগুলো শরীরের কোষগুলোকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে এবং শরীরকে ভিতর থেকে সুস্থ রাখে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো এমন কিছু উপাদান যা শরীরের ক্ষতিকর পদার্থ (যেমন: ফ্রি র‍্যাডিক্যালস) কে ধ্বংস করে। এগুলো না থাকলে কোষ ক্ষয় হয়, চুল-চামড়া বিবর্ণ হয়, এমনকি ক্যানসারসহ বড় অসুখও হতে পারে।

লাইসিভিন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়

লাইসিভিন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় এটা অনেকের খুব পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। লাইসিভিন হলো একটি মাল্টিভিটামিন ও ভিটামিন B কমপ্লেক্স সাপ্লিমেন্ট, যা সাধারণত শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। লাইসিভিন ট্যাবলেট নিজে ওজন বাড়ানোর ওষুধ নয়, তবে ক্ষুধা বাড়ায় এবং পুষ্টি শোষণ বাড়ায়, যার কারণে পরোক্ষভাবে ওজন বাড়তে পারে।
লাইসিভিন সরাসরি ওজন বাড়ায় না, তবে এতে এমন কিছু উপাদান আছে যা শরীরকে ওজন বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত করে। এটি বিশেষ করে যাদের ওজন কম বা দুর্বল শরীর তাদের জন্য সহায়ক হতে পারে। এতে থাকা ভিটামিন B1, B6 ও B12 হজম ক্ষমতা বাড়ায় এবং খাওয়ার ইচ্ছা বৃদ্ধি করে। ফলে কেউ কেউ বেশি খেতে শুরু করেন। এটা শরীরে পুষ্টি শোষণ ভালো করে, ফলে খাদ্য বেশি কার্যকরভাবে কাজে লাগে, এতে পেশী বা চর্বি কিছুটা বাড়তে পারে।

অপুষ্টিজনিত কারণে যাদের ওজন কম ছিল, তারা লাইসিভিন খেলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ওজন ফিরে পেতে পারেন। লাইসিভিন এমন একটি সহায়ক সাপ্লিমেন্ট যা সঠিকভাবে ও সুষম খাবারের সঙ্গে খেলে ধীরে ধীরে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। এটি পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে। ওজন বাড়াতে গিয়ে অতিরিক্ত খাওয়া বা সাপ্লিমেন্ট ডোজ বাড়ানো ঠিক নয়। যাদের লিভার, কিডনি বা হরমোনাল সমস্যা আছে, তারা আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

লাইসিভিন ট্যাবলেট এর কাজ

লাইসিভিন ট্যাবলেট এর কাজ হচ্ছে শরীরের ক্ষুধা বাড়াতে এবং পরিপাকতন্ত্রের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে । রুগ্ন ও ভাংগা স্বাস্থ্য সুগঠিত করে এবং ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। লাইসিভিন ট্যাবলেট মাসল এর প্রোটিন গঠনে সহায়তা করে। যার ফলে পেশি হয় আরো শক্তিশালী এবং আরো উজ্জীবিত। lysivin ট্যাবলেট এর উপাদান খাবার থেকে শরীরকে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে। ফলে শরীরকে করে বলবান এবং শক্তিশালী।

লাইসিভিন একটি পরিচিত সাপ্লিমেন্ট, যা শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করতে সহায়ক। এই সাপ্লিমেন্টটি মূলত লিসিন নামক একটি অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা শরীরের প্রোটিন সংশ্লেষণ, হাড়ের গঠন, এবং ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে সহায়ক। Lysivin এর প্রধান উপকারিতা হলো শরীরের প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিডের ঘাটতি পূরণ করা, যা স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।

লাইসিভিন ট্যাবলেট এর অন্যতম প্রধান কাজ হলো পেশী বৃদ্ধি, উচ্চতা এবং ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এটি হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে, যা হাড়ের দুর্বলতা এবং অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। এছাড়া, লিসিন ক্যালসিয়ামের শোষণে সহায়ক, যা হাড়ের গঠন ও শক্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লাইসিভিন ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতেও সহায়ক। এটি বিভিন্ন ভাইরাল সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

বিশেষত, ঠান্ডা যন্ত্রণা এবং হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (HPV) এর সংক্রমণের ক্ষেত্রে Lysivin কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। লাইসিভিন ট্যাবলেট এর কাজ মূলত হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নতি, ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষা, এবং ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালীকরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এটি শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। তবে, যে কোনো সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।

লাইসিভিন ট্যাবলেটের উপাদানসমূহ

লাইসিভিন একটি মাল্টিভিটামিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড ভিত্তিক সাপ্লিমেন্ট, যা মূলত শরীরের পুষ্টি, ক্ষুধা, রোগ প্রতিরোধ এবং কোষ পুনর্গঠনে সহায়তা করে। এটি এমন একটি ভিটামিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট যা ক্ষুধা বাড়িয়ে, হজম উন্নত করে, ওজন বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ও সার্বিক পুষ্টি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এটি শরীরকে ভিতর থেকে মজবুত করে তোলে।নিচে এর সাধারণ উপাদানগুলো তুলে ধরা হলোঃ
উপাদান পরিমান
এল-লাইসিন ইউএসপি ৫০ মি.গ্রা.
ভিটামিন-এ বিপি ১৫০০ আই ইউ
ভিটামিন-বি১ বিপি ০.২৫ মি.গ্রা.
ভিটামিন-বি২ বিপি ০.২৫ মি.গ্রা.
ভিটামিন-বি৬ বিপি ০.২৫ মি.গ্রা.
ভিটামিন-বি১২ বিপি ২.০০ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন-সি বিপি ৫০ মি.গ্রা.
ভিটামিন-ডি৩ বিপি ১০০ আই ইউ
ভিটামিন-ই বিপি ১০ আই ইউ
নিকোটিনামাইড বিপি ২.৫০ মি.গ্রা.
ফলিক এসিড বিপি ০.২৫ মি.গ্রা.

লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও সঠিক ডোজ নির্ভর করে বয়স, শরীরের অবস্থা ও পুষ্টি চাহিদার উপর। lysivin ট্যাবলেট সাধারণত একটি করে ট্যাবলেট দিনে তিনবার খাওয়া হয়ে থাকে এছাড়া এই ট্যাবলেট গ্রহণের আগে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে পারেন কারণ তিনি আপনাকে আপনার বয়স এবং শরীরে কন্ডিশন এর উপর নির্ভর করে সঠিক ডোজ দিতে পারবেন। আপনার শরীরের পরিস্থিতির ওপর ডাক্তারগণ lysivin tablet খাওয়ার নিয়ম সাজেস্ট করে থাকে।
লাইসিভিন-ট্যাবলেট-খাওয়ার-নিয়ম
যারা প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ যাদের বয়স ১৮ বসর এর উপর তারা এই ট্যাবলেটটি দৈনিক তিনটি করে খেতে পারেন। অর্থাৎ সকালে খাওয়ার পর একটি দুপুরে একটি এবং রাতে আরেকটি। এইভাবে ট্যাবলেট টি নিয়মিত খেতে থাকলে অবশ্যই শরীরের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন এবং আপনার শরীরের উপকার হতে থাকবে। তবে হ্যাঁ যাদের বয়স ১৮ এর নিচে রয়েছে তারা যদি এই ট্যাবলেট খেতে চায় তাহলে অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

লাইসিভিন ট্যাবলেট এর দাম

লাইসিভিন ট্যাবলেট এর দাম কত যদি আপনি না জানেন তাহলে কোন ফার্মেসিতে গেলে জানতে পারবেন। ​লাইসিভিন ট্যাবলেট একটি মাল্টিভিটামিন ও এল-লাইসিন সমন্বিত প্রস্তুতি, যা ক্ষুধা বৃদ্ধি, শারীরিক উচ্চতা ও ওজন বৃদ্ধি, মাসল প্রোটিন তৈরিতে সহায়তা, ক্যালসিয়ামের শোষণ বাড়ানো এবং শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।​ লাইসিভিন ট্যাবলেট বাংলাদেশের বিভিন্ন ফার্মেসি ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সহজলভ্য। প্রতিটি পটের মধ্যে মোট ৩০ টি ট্যাবলেট থাকবে।

স্থানীয় ফার্মেসি বা মেডিসিন দোকান যেমন- Lazz Pharma, Popular Pharmacy, Apollo Pharmacy ইত্যাদি বড় শহরের মেডিকেল মার্কেটগুলোতে সহজলভ্য। কিছু নির্ভরযোগ্য অনলাইন ফার্মেসিতে এর বর্তমান দাম MedEx প্রতি ট্যাবলেটের দাম ৪.০০ টাকা, ৩০ ট্যাবলেটের পটের দাম ১২০.০০ টাকা। ​Arogga ৩০ ট্যাবলেটের পটের দাম ১০৯.০৮ টাকা।​ ePharma ৩০ ট্যাবলেটের পটের দাম ১১৩.০০ টাকা।​ Shombhob দাম ১১০.৪০ টাকা থেকে ১২০.০০ টাকার মধ্যে।​

গর্ভাবস্থায় লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানাতে হলে, এর উপাদান এবং সেগুলোর গর্ভাবস্থায় কীভাবে কাজ করে, সেটা তুলে ধরা প্রয়োজন। লাইসিভিন মূলত Vitamin B complex, Vitamin C, এবং Lysozyme এর সমন্বয়ে তৈরি একটি সাপ্লিমেন্ট, যা বিভিন্ন উপকারিতা প্রদান করে। কিন্তু এটি খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ গর্ভাবস্থায় প্রতিটি নারীর শারীরিক অবস্থা ভিন্ন হয়।

১. স্নায়ুতন্ত্র ও শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করেঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট স্নায়ুতন্ত্র এবং শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক।গর্ভাবস্থায় মায়ের স্নায়ুতন্ত্র এবং শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে ভিটামিন B কমপ্লেক্স এবং অন্যান্য উপাদানগুলির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। লাইসিভিনে থাকা Vitamin B1 (Thiamine), Vitamin B6 (Pyridoxine), এবং Vitamin B12 (Cobalamin) গর্ভাবস্থায় বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়।

  • Vitamin B1 (Thiamine) স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি নার্ভ সেলের সঠিক যোগাযোগ বজায় রাখতে সহায়ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশের জন্য অপরিহার্য। গর্ভাবস্থায়, এটি শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের গঠন এবং বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ফলে শিশুর মস্তিষ্কের প্রাথমিক গঠন সঠিকভাবে ঘটতে পারে।
  • Vitamin B6 (Pyridoxine) স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রমের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার (যেমন: সেরোটোনিন, ডোপামিন) তৈরি করতে সাহায্য করে। এই নিউরোট্রান্সমিটারগুলোর মাধ্যমে মস্তিষ্কের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রিত হয় এবং শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গর্ভাবস্থায় Vitamin B6 মায়ের শরীরের অসুবিধা যেমন বমি বমি ভাব, অবসাদ এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে, যা মস্তিষ্কের সঠিক কাজকর্ম এবং স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক।
  • Vitamin B12 মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষ এবং মাইলিন শীথ গঠনে সহায়ক, যা স্নায়ু কোষকে ঘিরে থাকে এবং সঠিকভাবে সংকেত পাঠাতে সাহায্য করে। এটি স্নায়ুতন্ত্রের উন্নতি ও মস্তিষ্কের কার্যক্রমে সহায়ক। গর্ভাবস্থায়, Vitamin B12 শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখে।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট গর্ভাবস্থায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সহায়ক, কারণ এর ভিটামিন C, B Complex এবং Lysozyme শরীরের সুরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করে এবং বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। Vitamin C একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি শরীরের কোষকে রক্ষা করে এবং যে কোনো ধরনের ইনফেকশন বা সর্দি-কাশির বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করে।

৩. রক্তশূন্যতা কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় প্রায়ই রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া) দেখা দেয়। লাইসিভিন মূলত Vitamin B12, Vitamin B6, এবং Vitamin C এর সমন্বয়ে তৈরি, যা রক্তের গঠন এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। Vitamin B12 রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সহায়ক, যা রক্তে অক্সিজেন পরিবহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গর্ভাবস্থায় মায়ের রক্তশূন্যতা কমাতে Vitamin B12 খুবই কার্যকরী, কারণ এটি রক্তের গঠন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

৪. মুখের সমস্যা ও অরুচি কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় মুখে ঘা বা ক্ষত হতে পারে। Vitamin B Complex (বিশেষ করে Vitamin B12) এর উপস্থিতি মুখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক। Vitamin B12 ক্ষত বা ঘা সারানোর জন্য প্রয়োজনীয় এবং এটি মুখের মিউকাস মেমব্রেন (মুখের ভিতরের আবরণ) সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে, ফলে ঘা দ্রুত সেরে ওঠে। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের মুখের সমস্যা যেমন মুখে ঘা, মুখের শুষ্কতা, দাঁতের সমস্য এবং খাবারের প্রতি আগ্রহের অভাব দেখা দেয়। লাইসিভিনের উপাদানগুলো এই ধরনের সমস্যাগুলি কমাতে সাহায্য করে।

৫. মায়ের কোষ পুনর্গঠন এবং শক্তি বৃদ্ধি করেঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট মায়ের কোষের পুনর্গঠন ও শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, যখন শরীরে নতুন কোষ গঠনের চাহিদা বেড়ে যায় এবং অতিরিক্ত শক্তির প্রয়োজন হয়। Vitamin C কোষের পুনর্গঠন এবং মায়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় শক্তির অভাব হতে পারে, এবং Vitamin C সহ লাইসিভিন এই দুর্বলতা কাটাতে সহায়ক হতে পারে। Vitamin B1 (Thiamine), B2 (Riboflavin), B3 (Niacin), B5, B6, B12: এইসব ভিটামিন কোষে শক্তি তৈরি ও কোষের কার্যকারিতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৬. হরমোনাল ভারসাম্য বজায় রাখেঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট হরমোনাল ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার মতো সময়ে, যখন নারীর দেহে হরমোনের বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। এই সময় হরমোনাল ভারসাম্য ঠিক রাখা মায়ের এবং গর্ভস্থ শিশুর উভয়ের সুস্থতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। Vitamin B6 একটি প্রাকৃতিক হরমোন ব্যালেন্সার হিসেবে কাজ করে। এটি এস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা গর্ভাবস্থায় মুড সুইং, অরুচি, বমি বমি ভাব এবং ক্লান্তির মতো উপসর্গগুলো কমাতে সাহায্য করে।

৭. বাড়তি স্নায়ুতন্ত্রের চাপ কমায়ঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট স্নায়ুতন্ত্রের ওপর বাড়তি চাপ (নিউরোলজিক্যাল স্ট্রেস) কমাতে সহায়ক হতে পারে। গর্ভাবস্থায়, শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের কারণে অনেক নারী স্নায়বিক দুর্বলতা, টেনশন, বা উদ্বেগ অনুভব করেন। লাইসিভিনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এই চাপ কমাতে কার্যকরভাবে কাজ করে। Vitamin B6 সেরোটোনিন, ডোপামিন এবং গ্যাবা (GABA) এর মতো “মুড নিয়ন্ত্রণকারী নিউরোট্রান্সমিটার” তৈরিতে সাহায্য করে। এটি স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত রাখতে এবং টেনশন বা উদ্বেগ কমাতে কার্যকরী। গর্ভাবস্থায় B6 ঘাটতি থাকলে মাথা ঘোরা, মানসিক অস্থিরতা বা অনিদ্রার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

লাইসিভিন ট্যাবলেটের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

লাইসিভিন ট্যাবলেটের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে, বিশেষত যাদের শরীর কিছু নির্দিষ্ট উপাদানে সংবেদনশীল। কারণ এটি বিভিন্ন ভিটামিন ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান (যেমন Lysozyme) সমৃদ্ধ একটি মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট। বিশেষ করে যারা অতিসংবেদনশীল বা দীর্ঘমেয়াদে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করছেন, তাদের ক্ষেত্রে কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। নিচে লাইসিভিন ট্যাবলেটের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো আলোচনা করা হলোঃ

১. পেটের সমস্যাঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার পর কিছু ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদিও এটি একটি ভিটামিন ও পুষ্টিসাপ্লিমেন্ট, তবুও উপাদানভেদে শরীরের উপর সাময়িক প্রভাব ফেলতে পারে। ভিটামিন B কমপ্লেক্স কিছু ব্যবহারকারীর হজমপ্রক্রিয়ায় হালকা অসুবিধা করতে পারে, ফলে বমি ভাব বা খাওয়ার অনিচ্ছা দেখা দিতে পারে।অতিরিক্ত ভিটামিন C বা B খেলে পাকস্থলীতে অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে পারে, যার ফলে পেটে গ্যাস তৈরি হয়। কিছু ভিটামিন অতিরিক্ত মাত্রায় শরীর শোষণ করতে না পারলে তা ডায়রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে খালি পেটে খেলে হালকা ব্যথা বা গ্যাসট্রিকের মতো অনুভূতি দেখা দিতে পারে।

২. মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরাঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট সাধারণত নিরাপদ হলেও, কিছু ব্যবহারকারীর শরীরে ভিটামিন ও খনিজের সংমিশ্রণে সাময়িক মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা দেখা দিতে পারে। এটি খুব সাধারণ নয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ করে অতিসংবেদনশীল বা ডোজ অনুযায়ী না খাওয়ার ফলে এই সমস্যা দেখা দেয়। খালি পেটে খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ কমে গিয়ে মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। শরীরে ভিটামিনের অতিরিক্ত উপস্থিতি কিছু ক্ষেত্রে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি বা ঝিমঝিম ভাব আনতে পারে। B12 বা B6 বেশি পরিমাণে নিলে স্নায়ু অতিরিক্ত উদ্দীপ্ত হয়ে এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

৩. ত্বকে অ্যালার্জি বা র‍্যাশঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট সাধারণত সহনশীল ও নিরাপদ একটি মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট হলেও, কিছু ব্যবহারকারীর শরীরে এর কিছু উপাদানের কারণে ত্বকে চুলকানি, র‍্যাশ বা ফুসকুড়ির মতো অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন-ত্বকে ছোট ছোট উঁচু গুটি বা ফোলা ভাব, হাত, পা বা মুখমণ্ডলে তীব্র চুলকানি ও শ্বাসকষ্ট বা গলা ফুলে যাওয়া, অ্যালার্জি গুরুতর হলে এটি হতে পারে। এসব উপসর্গ দেখা দিলে প্রথমেই খাওয়া বন্ধ করা উচিত। চুলকানির জায়গায় ঠাণ্ডা পানিতে ধোয়া বা অ্যান্টিহিস্টামিন ক্রিম ব্যবহার করলে স্বস্তি দেয়।

৪. ঘুমে সমস্যা বা অতিরিক্ত ঘুমঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট একটি মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট, যা সাধারণত শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফাংশন সঠিকভাবে চালু রাখে। তবে, কিছু ব্যবহারকারী বিশেষ করে যারা অতিরিক্ত ডোজ নেন, তাদের মাঝে ঘুমে সমস্যা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর সমস্যা দেখা দিতে পারে।Vitamin B6 ও B12 শরীরে নিউরোট্রান্সমিটার নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে ঘুমের প্যাটার্নে পরিবর্তন হতে পারে।এটি স্নায়ুতন্ত্রের জন্য উপকারী হলেও কিছু ব্যক্তির শরীরে অতিরিক্ত B12 সাময়িকভাবে অতিরিক্ত উত্তেজনা বা মাথা ঘোরা সৃষ্টি করতে পারে, যা পরবর্তীতে ক্লান্তি বা ঘুম ঘুম ভাব সৃষ্টি করতে পারে।

৫. অস্থিরতা বা মুড সুইংঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট সাধারণত একটি ভিটামিন এবং খনিজ সাপ্লিমেন্ট, তবে কিছু ব্যবহারকারী বিশেষ করে অতিরিক্ত বা নিয়মিত সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের কারণে অস্থিরতা বা মুড সুইং অনুভব করতে পারেন। এই সমস্যাগুলি সাধারণত সাময়িক এবং শরীরের উপাদানগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ার কারণে হতে পারে। সাপ্লিমেন্ট খালি পেটে গ্রহণ করলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যেতে পারে, যা মুড পরিবর্তন বা অস্থিরতার সৃষ্টি করতে পারে। লাইসিভিনে থাকা বিভিন্ন উপাদানগুলি একসাথে শরীরে শোষিত হতে সময় নেয়। কিছু ক্ষেত্রে শরীরের সাথে মানিয়ে নিতে সমস্যা হতে পারে, যা অস্থিরতার সৃষ্টি করতে পারে।

শেষকথাঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা

লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। এটি এমন একটি ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট, যা মূলত দেহের বিভিন্ন কার্যকলাপকে সুসংগঠিত রাখতে সাহায্য করে। এতে Vitamin B Complex, Vitamin C ও Lysozyme-এর মতো উপাদান রয়েছে, যা শরীরের ভেতর থেকে শক্তি জোগাতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, কোষ পুনর্গঠন করতে এবং স্নায়ুবিক চাপ কমাতে সহায়ক। লাইসিভিন ট্যাবলেট একটি মাল্টি-ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট।
 
যা গর্ভাবস্থাসহ বিভিন্ন শারীরিক দুর্বলতা, পুষ্টির ঘাটতি, স্নায়ুবিক চাপ এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এতে থাকা Vitamin B Complex, Vitamin C এবং Lysozyme শরীরের কোষ পুনর্গঠন, শক্তি বৃদ্ধি, স্নায়ুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা এবং হরমোনাল ব্যালেন্স বজায় রাখতে সহায়তা করে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় মা ও গর্ভস্থ শিশুর পুষ্টি ও সুরক্ষায় এটি কার্যকর হতে পারে। লাইসিভিন ট্যাবলেট একটি কার্যকর ও তুলনামূলক নিরাপদ ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট।

যা শিশু থেকে শুরু করে গর্ভবতী মা, সকলের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এটি ঔষধ নয়, বরং পুষ্টিসাপ্লিমেন্ট, তাই রোগ নিরাময়ে এর ব্যবহার নয়, বরং শরীরকে ভিতর থেকে সুস্থ রাখাই এর মূল উদ্দেশ্য। লাইসিভিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ প্রত্যেকের শরীরের চাহিদা ও অবস্থা ভিন্ন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url