টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায়
টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায় নির্ভর করে আপনার সৃজনশীলতা ও দক্ষতার উপর।
টেলিগ্রাম মূলত একটি মেসেজিং অ্যাপ, যেটি ব্যবহার করে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করা
যায় এবং কথা বলা যায়। পাশাপাশি টেলিগ্রামের ব্যবহার করে আপনি চ্যাটিং অথবা
মেসেজিং করতে পারবেন।
টেলিগ্রাম শুধুমাত্র ম্যাসেজিং অ্যাপ নয়, এই অ্যাপটি ব্যবহার করে ইনকাম করা যায়। অর্থাৎ আপনি টেলিগ্রাম ব্যবহার করে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন এবং পাশাপাশি বিভিন্ন উপায়ে টেলিগ্রাম থেকেই আয় করতে পারবেন। যেমন- এফিলিয়েট মার্কেটিং, প্রোডাক্ট স্পন্সর, পণ্য বিক্রি, মনিটাইজেশন, কনটেন্ট ইত্যাদি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায়
- টেলিগ্রাম কি
- টেলিগ্রাম থেকে কি ইনকাম করা সম্ভব
- টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায়
- টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে যা দরকার
- টেলিগ্রাম একাউন্ট তৈরি করার নিয়ম
- টেলিগ্রাম চ্যানেল তৈরি করার নিয়ম
- টেলিগ্রাম গ্রুপ তৈরি করার নিয়ম
- টেলিগ্রাম চ্যানেলে মেম্বার বাড়ানোর উপায়
- টেলিগ্রাম থেকে ইনকামকৃত অর্থ উইথড্র করার নিয়ম
- শেষকথাঃ টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায়
টেলিগ্রাম কি
টেলিগ্রাম হলো একটি ফ্রি, ক্লাউড-ভিত্তিক মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন, যা আপনি
অ্যান্ড্রয়েড, আইফোন, উইন্ডোজ, ম্যাক এবং ওয়েবে ব্যবহার করতে পারবেন। এটি ২০১৩
সালে পাভেল দুরভ নামক একজন রাশিয়ান উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠা করেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে
ব্যবহারকারীরা একে অপরের কাছে বার্তা, ছবি, ভিডিও, স্টিকার, অডিওসহ যেকোন
প্রকারের নথি পাঠাতে পারে। এটি নিরাপদ যোগাযোগ, বড় ফাইল শেয়ারিং, এবং বড় গ্রুপ বা
চ্যানেল পরিচালনার জন্য খুবই জনপ্রিয়।
টেলিগ্রাম সাধারণত নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত। এটি ক্লায়েন্ট-সার্ভার এনক্রিপশন
ব্যবহার করে এবং সিক্রেট চ্যাটের জন্য এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন প্রদান করে।
টেলিগ্রাম বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছে, যার কারণে এই
অ্যাপটি বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি ডেস্কটপ, মোবাইল (Android, iOS) ও
ওয়েব প্ল্যাটফর্মে কাজ করে এবং বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। টেলিগ্রাম অ্যাপটি
গুগল প্লে স্টোরে পেয়ে যাবেন।
টেলিগ্রাম থেকে কি ইনকাম করা সম্ভব
টেলিগ্রাম থেকে কি ইনকাম করা সম্ভব, এই প্রশ্নটি অনেকের মনে ঘুরপাক খায়।
টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করা সম্ভব, তবে এটি সরাসরি ইনকাম দেওয়ার অ্যাপ নয়, যেমন
YouTube-এর মতো। কিন্তু আপনি টেলিগ্রামকে একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে
বিভিন্নভাবে আয় করতে পারেন। আপনার যদি সঠিক গাইডলাইন ও উপায় জানা থাকে তাহলে
আপনি অবশ্যই টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
কারণ টেলিগ্রাম থেকে আয় করার বৈধ ও কার্যকরী উপায় রয়েছে। আপনি যদি সঠিক
গাইডলাইন জানেন তাহলে অবশ্যই টেলিগ্রাম থেকে আয় করতে পারবেন। উপায় গুলো জানার
পরে আপনাদেরকে সেই উপায় গুলো অনুসরণ করে পরিশ্রম করতে হবে তাহলেই ইনকাম করা
সম্ভব হবে। অন্যথায় আপনি শুধুমাত্র উপায় গুলো জানলেন কিন্তু পরিশ্রম ও কাজ
করলেন না তাহলে কখনোই অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন না।
অনলাইন মাধ্যমে ইনকাম করতে হলে কিছুটা পরিশ্রম করতে হয়, তারপরেই ইনকাম করা সম্ভব
হয়। সত্যি কথা বলতে গেলে টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করা খুবই সহজ যদি আপনি আজকের
আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়েন। আমরা এমন কিছু বৈধ উপায় আপনাদের মাঝে শেয়ার করব
যেগুলো অবলম্বন করে আপনি টেলিগ্রাম থেকেই হাজার হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক টেলিগ্রাম থেকে ইনকামের বিস্তারিত উপায়।
টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায়
টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায় রয়েছে প্রচুর। টেলিগ্রাম এখন শুধু একটি মেসেজিং
অ্যাপই নয়, এটি একটি ডিজিটাল বিজনেস প্ল্যাটফর্ম। যদি আপনি সময় দেন, ধৈর্য ধরে
কাজ করেন এবং ভালো কনটেন্ট তৈরি করেন তাহলে সত্য়ি সত্যিই এখান থেকে ইনকাম করা
সম্ভব। কিভাবে টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করা যাই সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা
করা হলোঃ
১. টেলিগ্রাম মনিটাইজেশন থেকে ইনকামঃ আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল থাকলে আপনি
সেখান থেকে মনিটাইজেশনের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। টেলিগ্রাম মনিটাইজেশনের
মাধ্যমে ইনকাম করার জন্য একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল থাকতে হবে। এর জন্য সরাসরি
টেলিগ্রাম অ্যাপটি ডাউনলোড করে ফ্রিতেই টেলিগ্রাম চ্যানেল খুলে নিন। টেলিগ্রাম
চ্যানেলে আপনার কন্টেন্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য ও ছবি যোগ করুন।
আপনার চ্যানেলের বিষয় অনুযায়ী প্রতিদিন কনটেন্ট আপলোড করতে থাকবেন। আপনি চাইলে
ভিডিও, কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি শেয়ার করতে পারেন। যখন আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে
১০০০ সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ হবে তখন আপনি মনিটাইজেশনের মাধ্যমে অ্যাড দেখিয়ে আয়
করতে পারবেন।মনিটাইজেশন পেলে আপনি অ্যাড দেখানো সুযোগ পাবেন। তারা আপনার চ্যানেলে
বিভিন্ন ধরনের এড দেখাবে এবং আপনাকে ইনকাম প্রদান করবে।
আপনার ইনকাম করা অর্থ টেলিগ্রাম ওয়ালেটে TON কয়েন হিসেবে জমা হবে। যা পরবর্তীতে
ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি উত্তোলন করতে পারবেন। এই উপায়ে সহজে
মাসে ২০-৩০ হাজার টাকার বেশি ইনকাম করতে পারা যায়। আপনার যদি কোন ইউটিউব চ্যানেল অথবা ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম থাকে
তাহলে সেখানে টেলিগ্রাম চ্যানেলের লিংক শেয়ার করে টেলিগ্রাম চ্যানেলের
সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করুন। এভাবে চ্যানেলের মেম্বার বা
সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা সহজেই বাড়ানো যায়।
২. পেইড সাবস্ক্রিপশন চ্যানেল চালিয়ে ইনকামঃ পেইড সাবস্ক্রিপশন
চ্যানেল হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ফি
প্রদানকারী ব্যক্তিরা আপনার বিষয়ভিত্তিক কনটেন্ট দেখতে পাবে। সাধারণত
এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট, কোচিং, ট্রেনিং, ট্রেডিং সিগন্যাল, গোপন টিপস,
স্ট্র্যাটেজি বা স্পেশাল কমিউনিটি তৈরি করতে এটি ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে
টেলিগ্রাম থেকে ইনকামের একটি জনপ্রিয় ইনকাম সোর্স হলো পেইড চ্যানেল বা গ্রুপ
চালানো।
আপনি যদি ভালো মানের কনটেন্ট দিতে পারেন, তাহলে সহজেই আপনার চ্যানেলের
মেম্বারদের থেকে পেইড সাবস্ক্রিপশন এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন। এই ভাবে
ইনকাম করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল বা গ্রুপ তৈরি করতে হবে।
এটি প্রাইভেট রাখতে হবে যাতে নতুন সদস্যরা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ফি পরিশোধের পর
যোগ দিতে পারে। যেহেতু টেলিগ্রামে ডিরেক্ট কোনো পেমেন্ট অপশন নেই তাই বিকাশ,
নগদ, রকেট, পেপাল ইত্যাদি মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন।
এরপর আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল বা গ্রুপে নতুন নতুন মেম্বার যোগ করতে হবে। আপনি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং অথবা ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে নতুন মেম্বার আনতে
পারবেন।এছাড়াও পুরাতন মেম্বারদের জন্য রেফারেল বোনাস সিস্টেম চালু করতে পারেন,
যাতে তারা নতুন সদস্যদের যুক্ত করার বিনিময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পেতে পারে।
অনেকেই এভাবে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করছেন।
৩. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকামঃ টেলিগ্রাম থেকে টাকা ইনকাম করার
একটি সহজ ও লাভজনক উপায় হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং। তবে এর জন্য আপনার চ্যানেলে
বিশাল অডিয়েন্স থাকতে হবে। বর্তমানে ঘরে বসে অনলাইনে কেনাকাটা করার জন্য
ইন্টারনেটে হাজার হাজার ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে। বড় বড় ইকমার্স ওয়েবসাইটগুলোতে
affiliate program নামে একটি সিস্টেম রয়েছে। এখানে আপনি এফিলিয়েট একাউন্ট তৈরি
করতে পারেন।
আপনি যখন কোনো একটি e-commerce website এর এফিলিয়েট প্রোগ্রামে register করবেন,
তখন আপনি সেই ওয়েবসাইটের প্রতিটি প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক সংগ্রহ করতে
পারবেন। এরপর প্রোডাক্টের affiliate link আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার করতে
হবে। আপনার চ্যানেলের মেম্বাররা এই লিংকে ক্লিক করে প্রোডাক্টটি কিনতে পারবে।
কেউ সেই লিংকের মাধ্যমে পণ্যটি ক্রয় করলে আপনি প্রোডাক্টের মূল্যের উপর ভিত্তি
করে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কমিশন হিসেবে পেতে পারবেন।
যদি আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রচুর মেম্বার থাকে, তাহলে affiliate marketing
এর মাধ্যমে খুব সহজেই ঘরে বসে টেলিগ্রাম থেকে রোজগার করতে পারবেন। আপনি নিচে
দেওয়া ই-কমার্স ওয়েবসাইটসমূহের এফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে এফিলিয়েট
মার্কেটিং করতে পারেন যেমন–Amazon affiliates, Flipkart affiliate program,
eBay partner network ইত্যাদি
এগুলো ছাড়াও আরও অনেক সাইটের এফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করতে
পারেন।
৪. স্পন্সরশিপ প্রোমোশনাল পোস্ট করে ইনকামঃ যদি আপনার চ্যানেল বা গ্রুপে প্রচুর পরিমাণে মেম্বার থাকে তাহলে আপনি
স্পন্সরশিপ ও বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার দারুণ সুযোগ
পাবেন। কেননা বড় বড় কোম্পানি, ব্র্যান্ড বা ব্যক্তিরা তাদের পণ্য বা
পরিষেবা প্রচারের জন্য জনপ্রিয় টেলিগ্রাম চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী
হয়। আপনার চ্যানেলে যদি বিশাল অডিয়েন্স থাকে (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ১০,০০০+
মেম্বার), তাহলে বিভিন্ন কোম্পানি বা ব্যক্তি আপনাকে টাকা দিয়ে তাদের
বিজ্ঞাপন পোস্ট করতে বলবে। এর বিনিময়ে তারা আপনাকে ভালো পরিমাণে টাকা পে
করবে।
স্পন্সরশিপ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে আপনি কোনো ব্র্যান্ড বা কোম্পানির
দীর্ঘমেয়াদী প্রচার প্রচারণা চালাবেন, এর বিনিময়ে তারা মাসিক বা নির্দিষ্ট
সময়ের জন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করবে। একবারের জন্য কোনো প্রোডাক্ট, সার্ভিস
বা ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন পোস্ট করলে সেটিকে পেইড প্রোমোশন বলা হয়। টেলিগ্রাম
থেকে স্পন্সরশিপ ও বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে আয় করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য
সহকারে কাজ করতে হবে। যদি আপনার চ্যানেলের ভালো মেম্বারবেস থাকে, তাহলে এটি
আপনার জন্য একটি দুর্দান্ত আয়ের সুযোগ হতে পারে।
৫. ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করেঃ টেলিগ্রামের মাধ্যমে
বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করে ইনকাম করা যায়। আপনি যদি কোনো
নির্দিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন, তাহলে টেলিগ্রামে একটি পেইড চ্যানেল বা
গ্রুপ খুলতে পারেন। যেমন- স্টক মার্কেট রিসার্চ, ডিজিটাল মার্কেটিং গাইড,
ফ্রিল্যান্সিং শেখানো, এক্সক্লুসিভ ই-কমার্স টিপস ইত্যাদি। আপনি সদস্যদের
এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট প্রদানের বিনিময়ে একটি সাবস্ক্রিপশন ফি নিতে পারেন।
এছাড়াও টেলিগ্রামের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ডিজিটাল প্রোডাক্ট যেমন- ই-বুক,
অনলাইন কোর্স, সফটওয়্যার, স্ক্রিপ্ট, ডিজিটাল টেমপ্লেট ইত্যাদি বিক্রি করে
ইনকাম করতে পারবেন। তাছাড়া আপনার যদি কোনো স্কিল থাকে, তাহলে টেলিগ্রামের
মাধ্যমে ক্লায়েন্ট পেতে পারেন। যেমন- গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, কনটেন্ট
রাইটিং, এসইও সার্ভিস, কোডিং বা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি।
ড্রপশিপিং বিজনেসের মাধ্যমে ইনকামঃ টেলিগ্রামের মাধ্যমে
ড্রপশিপিং ব্যবসা
করে ঘরে বসে ইনকাম করা সম্ভব। এজন্য আপনাকে প্রথমে একটি নিস (niche)
নির্বাচন করতে হবে। এরপর টার্গেটেড অডিয়েন্সের জন্য একটি টেলিগ্রাম
চ্যানেল বা গ্রুপ তৈরি করতে হবে, যেখানে আকর্ষণীয় প্রোডাক্ট লিস্টিং,
রিভিউ, এবং অফার শেয়ার করতে হবে। ড্রপশিপিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া
যেখানে আপনাকে পণ্য উৎপাদন করতে হবে না।
আপনি শুধু পণ্য সরবরাহকারী বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে প্রোডাক্ট সংগ্রহ
করে টেলিগ্রামের মাধ্যমে অর্ডার নিবেন এবং কাস্টমার পেমেন্ট করার পর
সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ক্রেতার ঠিকানায় প্রোডাক্ট পাঠিয়ে দেবে। ফেসবুক ও
ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং বা স্পন্সরড পোস্টের মাধ্যমে আপনি নিজের টেলিগ্রাম
চ্যানেল বা গ্রুপে মেম্বার বাড়িয়ে নিয়ে পণ্যের বিক্রির পরিমাণ আরও বাড়াতে
পারবেন। এভাবে আপনি টেলিগ্রামের সাহায্যে ড্রপশিপিং ব্যবসা করে ইনকাম
করতে পারবেন।
কনটেন্ট লিখে ইনকামঃ যদি আপনি লেখালেখিতে পারদর্শী হয়ে থাকেন
অথবা লেখালেখি করা আপনার শখ হয়ে থাকে, তাহলে আপনি নিজের টেলিগ্রাম
চ্যানেলে ভালো মানের কনটেন্ট লিখে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। টেলিগ্রামের
মাধ্যমে কনটেন্ট লিখে ইনকাম করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট
বিষয়ের ওপর টেলিগ্রাম চ্যানেল বা গ্রুপ তৈরি করতে হবে। যেমন – প্রযুক্তি,
ফিনান্স বা লাইফস্টাইল। এরপর আকর্ষণীয়, মানসম্পন্ন এবং প্রাসঙ্গিক
কনটেন্ট তৈরি করে নিয়মিত আপনার চ্যানেলে পোস্ট করতে হবে।
এরপর আপনি অ্যাফিলিয়েট লিংক, স্পন্সরশিপ এবং পেইড সাবস্ক্রিপশন এর
মাধ্যমে আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি
ফ্রি কনটেন্ট অফার করে প্রিমিয়াম কনটেন্ট বা কোর্স বিক্রি করেও আয়ের
সুযোগ তৈরি করতে পারেন। এভাবে কনটেন্ট মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
এবং স্পন্সরড পোস্টের মাধ্যমে টেলিগ্রাম থেকে নিয়মিত ইনকাম করা সম্ভব।
ইউটিউব ভিডিও এবং ব্লগ পোস্ট শেয়ার করেঃ আপনার যদি একটি ব্লগ
ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল থাকে, তাহলে আপনার ওয়েবসাইট বা চ্যানেলের
ইনকাম বাড়ানোর জন্য টেলিগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য প্রথমে একটি
টেলিগ্রাম চ্যানেল বা গ্রুপ তৈরি করে ইউটিউব ভিডিও বা ব্লগ পোস্টের লিংক
শেয়ার করতে হবে, যেখানে টার্গেট অডিয়েন্সের আগ্রহের বিষয় নিয়ে কনটেন্ট
থাকবে। আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ভিডিও বা ব্লগ পোস্টের
মধ্যে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের এফিলিয়েট লিংক সংযুক্ত করতে পারেন,
যার মাধ্যমে প্রতিটি ক্লিক বা সেল থেকে কমিশন পাওয়া যাবে।এছাড়া আপনার
চ্যানেল বা গ্রুপে যথেষ্ট ফলোয়ার বা মেম্বার থাকলে স্পন্সরশিপ ও বিজ্ঞাপন
প্রচারের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব।
অনলাইন কোর্স বিক্রি করে ইনকামঃ আপনার বিশাল অডিয়েন্স থাকা
একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল বা গ্রুপ থাকলে আপনি অনলাইন কোর্স বানিয়ে বিক্রি
করে ইনকাম করতে পারবেন। টেলিগ্রামের মাধ্যমে অনলাইন কোর্স বিক্রির জন্য
প্রথমে একটি নিশ নির্ধারণ করে উন্নতমানের কোর্স তৈরি করতে হবে। আপনার
তৈরি করা কোর্স ভিডিও, পিডিএফ বা অডিও ফরম্যাটে হতে পারে। এরপর
টেলিগ্রামে একটি চ্যানেল বা গ্রুপ তৈরি করে নিয়মিত শিক্ষামূলক কনটেন্ট
শেয়ার করে সম্ভাব্য শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করতে হবে।
বিনামূল্যে ডেমো কনটেন্ট প্রদান, ওয়েবিনার আয়োজন বা ফ্রি রিসোর্স শেয়ার
করে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। পেমেন্ট নেয়ার জন্য বিকাশ, নগদ,
পেপাল ইত্যাদি পেমেন্ট অপশন ব্যবহার করা যায়। একবার একটি ভালো কমিউনিটি
তৈরি হলে এবং কার্যকর মার্কেটিং কৌশল প্রয়োগ করলে টেলিগ্রামের মাধ্যমে
অনলাইন কোর্স বিক্রি করে ভালো পরিমাণে ইনকাম করা সম্ভব।
টেলিগ্রাম চ্যানেল বিক্রি করে ইনকামঃ আপনার একটি বড় টেলিগ্রাম চ্যানেল
থাকলে সেই চ্যানেল বিক্রি করে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন। টেলিগ্রাম
চ্যানেল বিক্রি করে ইনকাম করতে হলে প্রথমে একটি নির্দিষ্ট টপিকের ওপর ভিত্তি
করে চ্যানেল তৈরি করতে হবে এবং চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর জন্য কয়েক মাস
মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে হবে। ক্রেতারা সাধারণত সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা, এনগেজমেন্ট
রেট ও কন্টেন্টের মান দেখে চ্যানেলের মূল্য নির্ধারণ করে থাকে। বিশ্বস্ত
ক্রেতার কাছে বিক্রি নিশ্চিত করে পেমেন্ট নেওয়ার মাধ্যমে সহজেই টেলিগ্রাম
চ্যানেল বিক্রি করে ভালো আয় করা সম্ভব।
রেফারেল লিংক শেয়ার করেঃ আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে যদি প্রচুর মেম্বার
থাকে, তাহলে বিভিন্ন অনলাইন আর্নিং সাইট বা অ্যাপসের রেফারেল লিংক শেয়ার করে
খিব সহজেই ইনকাম করতে পারবেন। আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল বা গ্রুপটি অনলাইন ইনকাম
রিলেটেড হলে এই পদ্ধতিতে আয়ের দারুণ সুযোগ রয়েছে। টেলিগ্রামের মাধ্যমে অনলাইন
আর্নিং প্ল্যাটফর্মের রেফারেল লিংক বা কোড শেয়ার করে ইনকাম করতে হলে প্রথমে
আপনাকে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর চ্যানেল বা গ্রুপ তৈরি করতে হবে। যেমন
ফ্রিল্যান্সিং, ক্রিপ্টো ট্রেডিং, অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট বা প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া।
এরপর Fiverr, Upwork, Binance, Coinbase, TimeBucks বা Swagbucks-এর মতো
প্ল্যাটফর্মের রেফারেল লিংক সংগ্রহ করে সেটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার করতে
হবে। এইসব লিংকে ক্লিক করে নতুন ইউজার সেই প্লাটফর্মে সাইন আপ করলে আপনি কমিশন
পেতে পারবেন। এভাবে বিভিন্ন অনলাইন আর্নিং অ্যাপস বা সাইটের রেফারেল লিংক বা
রেফার কোড নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার করে ইনকাম করা যায়।
টেলিগ্রাম বট তৈরি করে ইনকামঃ আপনি যদি কোডিং বা প্রোগ্রামিং জেনে
থাকেন তাহলে টেলিগ্রাম বট তৈরি করে ইনকাম করতে পারবেন। আপনি বিদেশী
ক্লাইন্টের টেলিগ্রাম বট তৈরি করে দিয়ে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে পারেন।
এই কাজগুলো ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের বেশি পাওয়া যায়, যেখানে আয় করা
সম্ভাবনা বেশি থাকে। টেলিগ্রাম বট তৈরি করার জন্য কোডিং বিষয়ে নলেজ থাকা
জরুরী। এছাড়া বর্তমানে ফ্রীতে বিভিন্ন সাইট ব্যবহার করে টেলিগ্রাম বট তৈরি
করা যায়।
টেলিগ্রাম বট তৈরি করার সাইটগুলো হলঃ Manybot, Chatfuel, Bots.Business,
Tidio, Flow XO ইত্যাদি।এবার আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, টেলিগ্রাম বট
বানালে সেগুলো কোথায় বিক্রি করব। যেখানে বট সার্ভিস অফার করবেন-Fiverr,
Upwork, Freelancer, Facebook Groups (Telegram Bot Developer), নিজের
ওয়েবসাইট বা ব্লগ, YouTube টিউটোরিয়াল বানিয়ে ক্লায়েন্ট জোগাড় করা,Reddit
ইত্যাদি। এই প্ল্যাটফর্ম গুলোতে আপনি টেলিগ্রাম বট সার্ভিস অফার করতে পারেন।
এই টেলিগ্রাম বট সার্ভিস দিয়ে প্রতি মাসে কমপক্ষে 1000 ডলারের বেশি ইনকাম
করা সম্ভব। এছাড়াও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন প্রচার কিংবা API-based
বট তৈরি করে API অ্যাক্সেস বিক্রি করেও আয় করা সম্ভব। নিজের টেলিগ্রাম
চ্যানেল বা গ্রুপ খুলে বিভিন্ন ফ্রি টুল অফার করে প্রিমিয়াম ফিচারের জন্য
সাবস্ক্রিপশন চালু করাও একটি ভালো ইনকামের উপায় হতে পারে। টেলিগ্রাম বট
হোস্টিং ও মেইনটেন্যান্স সার্ভিস অফার করেও টেলিগ্রাম থেকে নিয়মিত আয় করা
সম্ভব।
টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে যা দরকার
টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বা উপকরণ দরকার হয়,
যেগুলো ইনকামের ভিত্তি গড়ে তোলে। এগুলো ছাড়া টেলিগ্রামে সফলভাবে ইনকাম করা বেশ
কঠিন। তবে মনে রাখা দরকার, এটি সরাসরি ইনকাম করার প্ল্যাটফর্ম না, বরং আপনি এটি
ব্যবহার করে নিজের বিজনেস, সেবা, বা কনটেন্টের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন।
টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি ও কৌশল আছে। নিচে
বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলোঃ
১. টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টঃ টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে হলে,
টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট একেবারে বাধ্যতামূলক ও অপরিহার্য। টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট
হলো আপনার টেলিগ্রাম প্ল্যাটফর্মে নিজস্ব পরিচয়। এটি একটি ইউনিক প্রোফাইল যা
দিয়ে আপনি চ্যাট করতে পারেন, চ্যানেল বা গ্রুপ খুলতে পারেন, কনটেন্ট শেয়ার করতে
পারেন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, ইনকামের পথ খুলে যায়। অনলাইনে মানুষ আপনার নাম,
ছবি ও ইউজারনেম দেখেই আপনাকে বিশ্বাস করবে। তাই, টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে
চাইলে, প্রথম ও অপরিহার্য ধাপ হলো একটি প্রোফেশনাল টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট তৈরি
করা।
২. চ্যানেল ও গ্রুপঃ আপনি যদি টেলিগ্রাম থেকে আয় করতে চান, তাহলে
আপনাকে অবশ্যই একটি Channel বা Group খুলতে হবে। টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে
গেলে আপনাকে অন্যদের কাছে নিজের কনটেন্ট, সেবা বা প্রোডাক্ট পৌঁছাতে হবে। আর
এই পৌঁছানোর মাধ্যম হলো, চ্যানেল বা গ্রুপ। যেমন বাস্তব জীবনে আপনি দোকান
খুলে জিনিস বিক্রি করেন, ঠিক তেমনি টেলিগ্রামে চ্যানেল বা গ্রুপ মানেই হলো,
আপনার ইনকামের হেডকোয়ার্টার। আপনি টাকা আয় করতে পারবেন তখনই, যখন আপনার
কন্টেন্ট কেউ দেখবে। আর যারা দেখবে, তারা থাকবে আপনার চ্যানেলে যেখানে আপনি
পোস্ট করেন আর গ্রুপে যেখানে তারা প্রশ্ন করবে, আলোচনা করবে। এই দুই জায়গা না
থাকলে কেউ আপনার অফার বা কনটেন্ট দেখতে পারবে না ইনকামও হবে না।
৩. নির্দিষ্ট টপিকঃ টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে হলে নির্দিষ্ট
টপিক (Niche Topic) বাছাই করাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এটাই ঠিক করে
দেবে আপনার চ্যানেল বা গ্রুপের সফলতা কত দূর যাবে, আপনি কত টাকা আয় করতে
পারবেন। আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল বা গ্রুপ যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক না
হয়, তাহলে মানুষ বুঝবে না আপনি কোন বিষয়ে কনটেন্ট দিচ্ছেন। যদি আপনার
চ্যানেলের কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য না থাকে, তাহলে দর্শক বুঝবে না আপনি কী নিয়ে
কথা বলছেন। তারা সরে যাবে কেউ আপনাকে বিশ্বাস করবে না ইনকামও হবে
না। একটা নির্দিষ্ট টপিক মানে হচ্ছে আপনার পরিচয়, আপনার দক্ষতা, আর
মানুষ কেন আপনাকে ফলো করবে তার কারণ।
৪. মানসম্মত কনটেন্টঃ টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে মানসম্মত কনটেন্ট এর
প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মানসম্মত কনটেন্ট সৃষ্টির মাধ্যমে আপনি
বিশ্বাস এবং দর্শকদের সঙ্গতিপূর্ণ এনগেজমেন্ট অর্জন করতে পারেন। একে প্রাথমিক
ভিত্তি হিসেবে ভাবা যেতে পারে, যা আপনার ইনকামের রাস্তা তৈরি করে। টেলিগ্রামে
ইনকাম করতে হলে আপনাকে আগে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে হবে। আপনি যদি নিজের
চ্যানেল বা গ্রুপে মানসম্মত কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন, তবে আপনি বিশ্বাস এবং
প্রশংসা অর্জন করতে পারবেন, যা শেষ পর্যন্ত আপনার ইনকামকে ত্বরান্বিত করবে।
যতটা মানসম্মত কনটেন্ট আপনি শেয়ার করবেন, দর্শকরা আপনাকে তত বেশি বিশ্বাস করবে।
বিশ্বাস অর্জন করার পরই আপনার পণ্য বা সেবা বিক্রি করা সম্ভব হয়।
৫. মার্কেটিং কৌশলঃ টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে মার্কেটিং কৌশল
(Marketing Strategy) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আপনি যত ভালো কনটেন্টই তৈরি
করুন না কেন, সেটি যদি মানুষের কাছে না পৌঁছে তাহলে ইনকামও হবে না। মানুষের
কাছে পৌঁছানো বা দর্শক বাড়ানো ও বিক্রি নিশ্চিত করা—এসব কিছুই সম্ভব হয় সঠিক
মার্কেটিং কৌশল অনুসরণ করলে। সঠিক মার্কেটিং কৌশল আপনাকে বেশি মানুষের কাছে
পৌঁছাতে সাহায্য করে ও নতুন দর্শক, সাবস্ক্রাইবার ও ক্লায়েন্ট আনে সাহায্য
করে।উদাহরণ: আপনি যদি ইংরেজি শেখার ফ্রি গাইড বানান, সেটি ফেসবুক, ইউটিউব বা
অন্যান্য চ্যানেলে প্রচার না করলে কেউ জানবেই না। সঠিক মার্কেটিং কৌশল
আপনাকে নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষকে লক্ষ্য করে কনটেন্ট বা পণ্য পৌঁছাতে সাহায্য
করে।
৬. ধৈর্য ও বিশ্বাসযোগ্যতাঃ অনলাইনে সফল হতে হলে আপনাকে ধৈর্য ও
বিশ্বাসযোগ্যতা (Trust) তৈরি করতে হবে। কারণ অনলাইন ইনকাম কখনই রাতারাতি আসে
না। আপনি হয়তো নতুন চ্যানেল বা গ্রুপ খুলেছেন, কিন্তু প্রথম কিছু সপ্তাহ বা
মাসে খুব একটা মেম্বার বা রেসপন্স পাবেন না। অনেকেই এই পর্যায়ে হাল ছেড়ে দেন,
আর এখানেই যারা ধৈর্য ধরে চালিয়ে যায় তারাই সফল হন। এটা এক ধরনের ধাপে ধাপে গড়ে
তোলা সফলতা, যেখানে সময়ের সাথে সাথে মানুষ আপনাকে বিশ্বাস করতে শেখে, এবং তখনই
আপনি আয় শুরু করতে পারেন। আপনি যদি সত্যতা, স্বচ্ছতা এবং মানসিকতা দেখাতে
পারেন, তাহলে মানুষ আপনাকে বিশ্বাস করবে। যারা বিশ্বাস করে, তারাই আপনার
প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কিনবে অথবা আপনার লিংকে ক্লিক করবে। একবার কেউ বিশ্বাস
করলে, তারা ভবিষ্যতেও আপনার চ্যানেল/গ্রুপে থাকতে চায় এবং অন্যদের রেফারও করে।
৭. কাস্টমার হেল্পে সময় দেওয়াঃ টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে হলে কাস্টমার
হেল্পে সময় দেওয়া বা গ্রাহক সাপোর্টে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ
এটি সরাসরি আপনার চ্যানেল বা গ্রুপের বিশ্বাসযোগ্যতা, ব্র্যান্ড ভ্যালু এবং
ভবিষ্যৎ আয় নির্ধারণ করে। যখন আপনি গ্রাহকের প্রশ্নের উত্তর দেন, তাদের সমস্যায়
সাহায্য করেন, তারা বুঝতে পারে আপনি একজন রিয়েল, কেয়ারিং মানুষ। এই বিশ্বাস
পরবর্তীতে কনভার্সনে (বিক্রি) রূপান্তর হয় লং-টার্ম সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং
রেফারাল বাড়ায়। উদাহরণ: কেউ আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে একটি কোর্স কিনতে
চায়, কিন্তু কিছু বুঝতে পারছে না। আপনি যদি তৎক্ষণাৎ রিপ্লাই করেন, সে আপনার
ওপর ভরসা করবে এবং অর্ডার করবে। আপনি যদি কোর্স, ইবুক, অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট,
বা কোনো ডিজিটাল সার্ভিস বিক্রি করেন, তাহলে কাস্টমার হেল্প ছাড়া বিক্রি হবে
না। মানুষ আগে জানে – পরে কিনে। আপনাকে সময় দিতে হবে তাদের প্রশ্নের উত্তর
দিতে, যাতে তারা কিনতে আগ্রহী হয়।
৮. পেমেন্ট সিস্টেমঃ টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে পেমেন্ট সিস্টেম বা অর্থ
গ্রহণ ও প্রেরণের একটি নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা থাকা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, আপনি
যদি কোনো প্রোডাক্ট, সার্ভিস, অথবা কনটেন্টের বিনিময়ে অর্থ গ্রহণ করতে চান,
তাহলে ক্লায়েন্ট বা ফলোয়ার কীভাবে টাকা পাঠাবে, আপনি কীভাবে গ্রহণ করবেন—এটা
স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে। আপনি যদি নির্ভরযোগ্য ও পরিচিত পেমেন্ট অপশন
(যেমন বিকাশ, নগদ, পেওনিয়ার) ব্যবহার করেন, তাহলে ইউজার আপনার ওপর আস্থা রাখে
এবং ভয় না পেয়ে পেমেন্ট করতে আগ্রহী হয়। যখন পেমেন্ট পদ্ধতি স্পষ্টভাবে সাজানো
থাকে, তখন বারবার প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় না, কাস্টমার সহজেই বুঝে নেয় কিভাবে
পেমেন্ট করতে হবে। আপনি যদি আন্তর্জাতিক অডিয়েন্সের জন্য কাজ করেন, তাহলে
পেওনিয়ার, ওয়াইজ, গামরোড, বা ক্রিপ্টো পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে বৈশ্বিক অর্থ
গ্রহণ করতে পারবেন।
টেলিগ্রাম একাউন্ট তৈরি করার নিয়ম
টেলিগ্রাম একাউন্ট তৈরি করার নিয়ম খুবই সহজ এবং মাত্র কয়েক মিনিটেই একাউন্ট তৈরি
করা যায়। টেলিগ্রাম একাউন্ট তৈরি করা তেমন কঠিন কোন কাজ নয়। আপনার হাতে একটি
স্মার্টফোন ও একটি ফোন নাম্বার থাকলেই আপনি সহজেই নিচে দেখানো ধাপ গুলো অনুসরণ
করে নতুন একটি টেলিগ্রাম একাউন্ট তৈরি করতে বা খুলতে পারবেন। নিচে টেলিগ্রাম
অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণ গাইডলাইন দেওয়া হলো।
প্রথমে গুগল প্লে স্টোর এ গিয়ে সার্চ দিন ‘Telegram’ লিখে। প্রথমে যে এপসটি
আসবে ইনস্টল দিয়ে ওপেন করবেন। টেলিগ্রাম অ্যাপটি ওপেন করার পরে আপনার সামনে
একটি ইন্টারফেইস ওপেন হবে। একটু নিচের দিকে তাকালে ‘Start Messaging’ নামের
একটি অপশন পাবেন সেটিতে ক্লিক করবেন। এখানে আপনার কাছে কিছু পারমিশন চাইবে
সেগুলো Allow করে দিবেন। ‘Start Messaging’ অপশনে ক্লিক করার পরে আপনার সামনে
একটি ইন্টারফেইস আসবে।
সেখানে আপনি দেশের নাম ও ফোন নাম্বার দেওয়ার অপশন দেখতে পাবেন। এখানে প্রথমে
আপনি যে দেশে আছেন সেই দেশটি বা দেশের নামটি সিলেক্ট করে দিবেন। এবং একটি ফোন
নাম্বার দিবেন। তারপর নিচের দিকের ডান সাইডে থাকা অ্যারো বাটনে দেখতে পাবেন
সেটিতে ক্লিক করে দিবেন। এবার আপনার সামনে আবারো নতুন একটি পেজ আসবে। একটু
অপেক্ষা করলে আপনি যে ফোন নাম্বারটি দিয়েছিলেন সেই নাম্বারে ৫ ডিজিটের একটি
OTP আসবে সেটি এখানে বসিয়ে দিতে হবে।
ওটিপি বসিয়ে দিলেই আপনার সামনে পরবর্তী পেজ চলে আসবে। এখানে আপনাকে প্রথমে একটি
প্রোফাইল পিকচার আপলোড করতে হবে। তারপর আপনার নামের প্রথম অংশ ও দ্বিতীয় অংশ
দিতে হবে। তারপর নিচের দিকে একটি অ্যারো চিহ্ন দেখতে পাবেন সেটিতে ক্লিক করতে
হবে। ক্লিক করলেই আপনার নতুন টেলিগ্রাম একাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে। এখন
আপনি টেলিগ্রামে চ্যাট করতে পারবেন, গ্রুপ বা চ্যানেল তৈরি করতে পারবেন, এবং
অন্যান্য ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন।
টেলিগ্রাম চ্যানেল তৈরি করার নিয়ম
টেলিগ্রাম চ্যানেল তৈরি করা খুব সহজ। বর্তমানে মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম
হিসেবে টেলিগ্রাম বেশ জনপ্রিয়। অনেক বড় কমিউনিটি পরিচালনা করা, ইভেন্ট আয়োজন করা
ও তেমন বাধা ছাড়াই মানুষকে সংযোগ স্থাপনে সাহায্য করতে পারে টেলিগ্রাম। গ্রুপ
তৈরি করে মেসেজ পিন করা, বড় ফাইল শেয়ার করা থেকে শুরু করে রয়েছে এর নানা
সুবিধা। নিচে বিস্তারিতভাবে টেলিগ্রাম চ্যানেল ও গ্রুপ দুটোই কীভাবে তৈরি
করবেন, সেটি ধাপে ধাপে দেখানো হলো।
চ্যানেল হলো এমন
একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে একজন বা কয়েকজন অ্যাডমিন নিয়মিত আপডেট, বার্তা, ছবি,
ভিডিও ইত্যাদি শেয়ার করতে পারেন, আর বাকিরা শুধুমাত্র দেখবেন (কমেন্ট করতে
পারবেন না)। এটি একমুখী যোগাযোগের মাধ্যম। এই টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে
সাবস্ক্রাইবার বাড়িয়ে আপনি আপনার যে কোন মেসেজ, আর্টিকেল বিশাল সংখ্যক মানুষের
কাছে মুহূর্তেই পৌঁছে দিতে পারবেন। নতুন টেলিগ্রাম চ্যানেল খোলার নিয়ম নিচে
ধাপে ধাপে দেখানো হলোঃ
ধাপ ০১ঃ নতুন টেলিগ্রাম চ্যানেল খোলার জন্য প্রথমে আপনার মোবাইল
(Android/iPhone) অথবা ডেস্কটপে টেলিগ্রাম চালু করুন। আপনার সামনে একটি
ইন্টারফেইস চলে আসবে। ডানদিকে নিচে অথবা উপরে ডিভাইস অনুযায়ী পেন অইকন অথবা
“New Message” অপশন থাকবে, সেটিতে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ০২ঃ পেন অইকন অথবা “New Message” অপশনে ক্লিক করার পর আপনার সামনে
আরেকটি ইন্টারফেস চলে আসবে। এখানে বেশ কিছু অপশন আসবে, এখান থেকে আপনাকে ‘New
Channel‘ অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ০৩ঃ ‘New Channel’ অপশনে ক্লিক করার পর আপনার সামনে একটি পেজ ওপেন
হবে। এখানে ক্যামেরা চিহ্নটিতে ক্লিক করে একটি প্রোফাইল পিকচার আপলোড করে
দিবেন। Channel name এর জায়গায় আপনার পছন্দ মতোন একটি নাম দিবেন। এবং
Description বক্সে আপনি কি বিষয়ে বা কি সম্পর্কে টেলিগ্রাম চ্যানেলটি তৈরি
করবেন সে সম্পর্কে কিছু বর্ণনা দিন। তারপর স্ক্রিনের উপরের দিকে ডান পাশে
একটি টিক চিহ্ন দেখতে পাবেন সেটিতে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ০৪ঃ টিক চিহ্নতে ক্লিক করার পর আপনার সামনে আবারও একটি পেজ আসবে।
এখানে প্রথমে আপনার চ্যানেলটি কোন টাইপের তা সিলেক্ট করে দিন। Public Channel
এ সিলেক্ট করলে যে কেউ সার্চ করে আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলটি খুঁজে বের করতে
পারবে। আর Private Channel এ সিলেক্ট করলে আপনি যাকে Invite Link পাঠাবেন সেই
শুধু আপনার প্রাইভেট টেলিগ্রাম চ্যানেল এ যুক্ত হতে পারবে।
তারপর স্ক্রিনে একটু নিচের দিকে লক্ষ করলে সেখানে Public link নামের একটি
অপশন দেখতে পাবেন। আপনাকে এখানে একটি ইউনিক লিংক তৈরি করতে হবে। পরবর্তীতে এই
লিংকটি মানুষেকে পাঠিয়ে আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল এ জয়েন হতে বলতে পারবেন।
উদাহরণ স্বরূপঃ আমার টেলিগ্রাম চ্যানেলের Public link হচ্ছে
t.me/bdtechland.com। সবকিছু দেওয়া হয়ে গেলে স্ক্রিনের উপরের দিকে ডান পাশে
একটি টিক চিহ্ন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করবেন।
ধাপ ০৫ঃ টিক চিহ্নে ক্লিক করলে আপনার সামনে পুনরায় একটি পেজ ওপেন হবে।
এখানে আপনার চ্যানেলে মানুষকে এড করার অপশন দিয়েছে। এখান থেকে আপনার
চ্যানেলের লিংক মানুষকে পাঠাতে পারবেন। তারপর স্ক্রিনের নিচের দেখবেন একটি
তীর চিহ্ন দিয়ে Next বাটন রয়েছে। সেখানে ক্লিক করবেন।
ধাপ ০৬ঃ আপনার কন্টাক্ট লিস্ট থেকে আপনি চাইলে কিছু মানুষকে সরাসরি
অ্যাড করতে পারেন। না চাইলে Skip করুন। এবার আপনার চ্যানেলটি তৈরি হয়ে যাবে
এবং আপনার সামনে একটি ইন্টারফেইস আসবে। এখানে ‘Broadcast‘ অপশন থেকে আপনি
আপনার চ্যানেলের মেম্বারদের যে কোনো টেক্সট, লিংক অথবা ইমেজ সেয়ার করতে
পারবেন।
টেলিগ্রাম গ্রুপ তৈরি করার নিয়ম
টেলিগ্রাম গ্রুপ তৈরি করার নিয়মও সহজ। টেলিগ্রাম চ্যানেল ও গ্রুপ একইরকম দেখালেও কিছুটা পার্থক্য আছে। গ্রুপ হলো এমন জায়গা যেখানে অনেক মানুষ একসাথে আলোচনা করতে পারে। এখানে সবাই বার্তা পাঠাতে পারে। চ্যানেল সাধারণত অনেক মানুষকে একসঙ্গে বার্তা পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। চ্যানেলে শুধু মালিক বা অ্যাডমিন পোস্ট বা মেসেজ করতে পারেন। অন্যান্যরা, যাদের সাবস্ক্রাইবার বলা হয়, তারা কেবল বার্তাটি দেখতে ও পড়তে পারবেন।
অন্যদিকে টেলিগ্রাম গ্রুপ, বার্তা দেখা ও পড়ার পাশাপাশি মেম্বারদের বার্তা
পাঠানোরও সুযোগ দেয়। অর্থাৎ অনেকে একইসঙ্গে কথোপকথন করতে পারেন টেলিগ্রাম গ্রুপে।
কীভাবে টেলিগ্রাম গ্রুপ খুলবেন সে বিষয়ে একটি নির্দেশনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ
করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট অ্যান্ড্রয়েড পুলিস। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে একটি
নতুন টেলিগ্রাম গ্রুপ তৈরি করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
ধাপ ০১ঃ টেলিগ্রাম গ্রুপ তৈরি করার জন্য প্রথমে আপনার টেলিগ্রাম
একাউন্টে প্রবেশ করুন। প্রবেশের পর দেখবেন আপনার সামনে একটি ইন্টারফেইস আসবে।
সেখানে ডান সাইডে নিচের দিকে একটি পেন আইকন দেখতে পাবেন সেটিতে ক্লিক করবেন।
ধাপ ০২ঃ পেন আইকন চিহ্নটিতে ক্লিক করলে আপনার সামনে একটি পেইজ আসবে।
এখানে ‘New Group‘ নামের একটি অপশন দেখতে পাবেন সেটিতে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ০৩ঃ ‘New Group’ অপশনটিতে ক্লিক করার পর আপনার সামনে আরও একটি পেইজ
আসবে।এখানে আপনাকে দেখাচ্ছে যে আপনি একটি টেলিগ্রাম গ্রুপে সর্বোচ্চ ২ লাখ
মেম্বার যুক্ত করতে পারবেন। এবং নিচে আপনার ফ্রেন্ড তালিকার অনেকের টেলিগ্রাম
আইডি দেখাবে। আপনি চাইলে এখান থেকে যাকে প্রয়োজন আপনার টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত
হওয়ার জন্য ইনভাইট করতে পারবেন।তারপর নিচের দিকে একটি টিক চিহ্ন দেখতে পাবেন
সেটিতে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ০৪ঃ টিক চিহ্নটিতে ক্লিক করার পর একটি ইন্টারফেইস ওপেন হবে। এখানে
ক্যামেরা চিহ্নটিতে ক্লিক করে আপনার টেলিগ্রাম গ্রুপের জন্য একটি প্রোফাইল
পিকচার এড করে দিবেন এবং পাশে থাকা নামের অংশে আপনার গ্রুপের জন্য একটি নাম
দিবেন। আপনি যদি চান এক সপ্তাহ বা এক মাস পর আপনার গ্রুপের মেসেজ গুলো যেন অটো
ডিলিট হয়ে যায় তাহলে ‘Auto-Delete Messages‘ অপশনে ক্লিক করে সময় নির্বাচন করে
দিতে পারবেন।
আর যদি আপনি মেসেজ অটো ডিলিট করতে না চান তবে সেই অপশনটি অফ করেও রাখতে
পারবেন।এরপর নিচে থাকা টিক চিহ্নটিতে ক্লিক করতে হবে। টিক চিহ্নটিতে ক্লিক
করলেই আপনার টেলিগ্রাম গ্রুপটি তৈরি হয়ে যাবে। টেলিগ্রাম গ্রুপ তৈরি হয়ে গেলে
দেখবেন এড মেম্বার নাম একটি অপসন পাবেন । আপনি চাইলে এখানে ‘Add Members‘ ক্লিক
করে নতুন টেলিগ্রাম গ্রুপ মেম্বার এড করতে পারবেন। নিচে থাকা ‘Message‘ অপশনে
ক্লিক করে মেসেজও করতে পারবেন।
ধাপ ০৫ঃ আপনি যদি আপনার টেলিগ্রাম গ্রুপ সেটিংস পরিবর্তন করতে চান তাহলে
প্রথমে আপনার টেলিগ্রাম গ্রুপে প্রবেশ করুন। তারপর গ্রুপের নামের উপর ক্লিক
করুন। আপনার সামনে একটি ইন্টারফেস আসবে। এখানে উপরের দিকে পেন আইকন দেখতে পাবেন
সেখানে ক্লিক করবেন।
ধাপ ০৬ঃ পেন আইকন চিহ্নটিতে ক্লিক করার পরে আপনার সামনে আরো একটি পেজ
আসবে। এখান থেকে আপনি আপনার টেলিগ্রাম গ্রুপের নাম, ছবি, গ্রুপ টাইপ, গ্রুপ
ডিস্ক্রিপশন এড করতে বা পরিবর্তন করতে পারবেন। এবং পরিবর্তন করা শেষে উপরে বা
ডান দিকে থাকা টিক চিহ্নে ক্লিক করলেই পরবর্তন সেইভ হয়ে যাবে। ব্যাস এভাবেই
আপনার টেলিগ্রাম গ্রুপ তৈরি হয়ে যাবে।
টেলিগ্রাম চ্যানেলে মেম্বার বাড়ানোর উপায়
কিভাবে টেলিগ্রাম গ্রুপে মেম্বার বাড়ানো যায় এ সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে
চেয়েছেন বর্তমান সময়ে সব কাজই এখন সহজ হয়ে গিয়েছে। মানুষ তার জীবনের
বেশিরভাগ সময়ে অনলাইনে দিয়ে থাকে। বর্তমান যুগ যেহেতু অনলাইনের যুগ তাই
বেশিরভাগ লোকই অনলাইনে সময় দিয়ে থাকে অনেক। অনলাইনে আমরা অনেকেই বিভিন্ন
সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত থাকি। যেমন ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম
ইত্যাদি।
প্রথম প্রথম হয়তবা টেলিগ্রাম গ্রুপে মেম্বার এড করানো কষ্টকর হতে পারে। তবে
আস্তে আস্তে খুবই সহজেই আপনার টেলিগ্রামে অনেক মেম্বার বেড়ে যাবে। তার জন্য
অবশ্যই আপনাকে টেলিগ্রাম গ্রুপে একটিভ থাকতে হবে। এবং নিয়মিত পোস্ট অথবা ছবি
আপলোড করতে হবে। আর এই পোষ্ট এবং ছবি যেন মানুষের উপকারী হয়। তাহলে খুব সহজেই
আপনার টেলিগ্রামে কম সময়ে অধিক মেম্বার পেতে পারেন। নিচে আরো বিস্তারিত
ব্যাখ্যা করা হলোঃ
১. চ্যানেলের লিংক সব জায়গায় শেয়ার করাঃ আপনার চ্যানেলের লিংক যত
বেশি জায়গায় শেয়ার করবেন, তত বেশি মানুষ দেখতে পাবে এবং জয়েন করার সম্ভাবনা
বাড়বে। নিচে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করছি, কীভাবে এবং কোথায় আপনি আপনার
টেলিগ্রাম চ্যানেলের লিংক শেয়ার করতে পারেনঃ
- ইউটিউবের মাধ্যমেঃ ইউটিউব এর মাধ্যমেও আপনি চাইলে আপনার টেলিগ্রামের গ্রুপ অথবা চ্যানেলটি প্রচার করতে পারেন। তবে তার জন্য আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ভালো পরিমান ভিজিটর থাকা লাগবে। এবং আপনার টেলিগ্রাম গ্রুপ এ অথবা চ্যানেলে তাদের প্রয়োজনীয় ইনফর্মেশন দিতে হবে।তাদের দরকারি প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন গুলো তারা অবশ্যই আপনার টেলিগ্রাম গ্রুপ এ জয়েন হয়ে জানতে চাইবে নিশ্চয়ই। তাই আপনারা খুব সহজেই ইউটিউব এর মাধ্যমে আপনার টেলিগ্রামের গ্রুপ অথবা চ্যানেলটি প্রচার করে অল্প সময়ে ভালো পরিমাণ মেম্বার এড করতে পারেন।
- ফেসবুকের মাধ্যমেঃ আমাদের জীবনের বেশিরভাগ সময় আমরা অতিবাহিত করি ফেসবুকে। কারন ফেসবুক সবচেয়ে বড় একটি সোশ্যাল মিডিয়া। ফেসবুক সারা বিশ্বের সাথে যোগাযোগ করার সবচেয়ে বড় একটি প্ল্যাটফর্ম। আর আমরা অনেকেই এই প্ল্যাটফর্মে সবচেয়ে বেশি সময় দিয়ে থাকি। এখন আপনারা আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল অথবা গ্রুপটি ফেসবুকের মাধ্যমে মেম্বার বাড়িয়ে নিতে পারেন।ফেসবুকে অনেক গ্রুপ বা পেজ রয়েছে। সেখানে আপনার টেলিগ্রামের গ্রুপ অথবা চ্যানেলের লিংক টি অন্য কারোর পোস্টে বা কমেন্টে শেয়ার করতে পারেন।তাছাড়া আপনি চাইলে নিজেও সুন্দর আকৃষ্ট করার মানুষের একটি পোস্ট অথবা ফটো আপলোড করার মাধ্যমে, বেশ ভালো পরিমাণে ফেসবুক থেকে আপনার টেলিগ্রাম গ্রুপ এ মেম্বার বাড়িয়ে নিতে পারেন।
- ইন্সটাগ্রাম এর মাধ্যমেঃ আপনারা চাইলে ফেসবুকের মতোই ইনস্টাগ্রামেও আপনার টেলিগ্রাম গ্রুপ টি শেয়ার করতে পারেন। এবং একইভাবে টেলিগ্রামে একটি আকৃষ্ট করার পোস্ট অথবা ছবি আপলোড করার মাধ্যমে ভালো পরিমাণ টেলিগ্রাম গ্রুপে মেম্বার এড করতে পারেন। তবে অবশ্যই এই কাজগুলো করার জন্য আপনার গ্রুপটি অবশ্যই মানুষের দরকারি প্রয়োজন হতে হবে। যাতে করে তারা প্রতিদিন আপনার গ্রুপটি ভিজিট করে এবং তাদের প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন খুঁজতে থাকে। তাহলে অবশ্যই এই সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে অল্প সময়ে অনেক মেম্বার আপনার গ্রুপে অ্যাড করতে পারবেন। আমি আবারো বলছি আপনার টেলিগ্রাম এর গ্রুপ অথবা চ্যানেল কি ইনফর্মেশন যুক্ত হতে হবে। যেগুলো মানুষের জানার ইচ্ছা বা মানুষ জানতে চাই বা মানুষের ভালো লাগে।
২. টেলিগ্রাম চ্যানেলের সদস্যদের গুরুত্ব বোঝাঃ টেলিগ্রাম চ্যানেলের
সদস্যরা যেকোনো চ্যানেলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সদস্যরা
হলেন সেই ব্যক্তি যারা স্বেচ্ছায় আপডেট, ঘোষণা এবং অন্যান্য সামগ্রী পেতে
একটি নির্দিষ্ট চ্যানেলে যোগদান করেন। একটি চ্যানেলের সদস্য সংখ্যা প্রায়শই
এর জনপ্রিয়তা এবং বিশ্বাসযোগ্যতার পরিমাপ হিসাবে দেখা হয়। সদস্য সংখ্যা যত
বেশি হবে, চ্যানেলের বিষয়বস্তুর সম্ভাব্য নাগাল এবং প্রভাব তত বেশি হবে।
চ্যানেলের বিপুল সংখ্যক সদস্য থাকা বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত, এটি সম্প্রদায়ের অনুভূতি তৈরি করতে এবং আরও সম্ভাব্য অনুসারীদের
আকর্ষণ করতে সহায়তা করে। যখন লোকেরা দেখে যে একটি চ্যানেলে উল্লেখযোগ্য
সংখ্যক সদস্য রয়েছে, তখন তারা এটিকে মূল্যবান এবং বিশ্বস্ত হিসাবে উপলব্ধি
করার সম্ভাবনা বেশি। সুপারিশ বা কৌতূহলের উপর ভিত্তি করে নতুন সদস্য যোগদানের
ফলে এটি জৈব বৃদ্ধির বৃদ্ধি ঘটাতে পারে।
দ্বিতীয়ত, যথেষ্ট সংখ্যক সদস্য থাকা জড়িত থাকার এবং মিথস্ক্রিয়া করার জন্য
একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে। চ্যানেলগুলি ব্যবহারকারীর সম্পৃক্ততায় উন্নতি
লাভ করে, কারণ এটি আলোচনা, মতামত ভাগ করে নেওয়া এবং একটি বিশ্বস্ত দর্শক
তৈরি করে৷ একটি বৃহৎ সদস্য বেস সহ, সম্প্রদায়ের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া এবং
অন্তর্দৃষ্টি পাওয়ার একটি বৃহত্তর সম্ভাবনা রয়েছে, যা বিষয়বস্তু উন্নত
করতে এবং দর্শকদের চাহিদা বোঝার জন্য অমূল্য হতে পারে।
সংক্ষেপে, টেলিগ্রাম চ্যানেলের সদস্যদের গুরুত্বকে অবমূল্যায়ন করা যায় না।
তারা চ্যানেলের বিশ্বাসযোগ্যতা, সম্ভাব্য নাগাল এবং ব্যস্ততার স্তরে অবদান
রাখে। চ্যানেল প্রশাসক হিসাবে, চ্যানেলের ক্রমাগত বৃদ্ধি এবং সাফল্য নিশ্চিত
করতে সদস্য বেসকে লালন ও সম্প্রসারণের উপর ফোকাস করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল প্রোফাইল অপ্টিমাইজ করাঃ আপনার টেলিগ্রাম
চ্যানেল প্রোফাইল আপনার ভার্চুয়াল স্টোরফ্রন্ট হিসাবে কাজ করে, সম্ভাব্য
গ্রাহকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং আপনার চ্যানেলের সারমর্ম প্রকাশ করে। আপনার
চ্যানেলের দৃশ্যমানতা বাড়ানো এবং সঠিক দর্শকদের আকর্ষণ করার জন্য একটি
আকর্ষক এবং অপ্টিমাইজ করা প্রোফাইল তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ একটি
মনোযোগ আকর্ষণকারী প্রোফাইল ছবি বা লোগো নির্বাচন করে শুরু করুন যা আপনার
চ্যানেলের থিম বা উদ্দেশ্য প্রতিফলিত করে। একটি উচ্চ-মানের চিত্র চয়ন করুন
যা দৃশ্যত আকর্ষণীয় এবং তাত্ক্ষণিকভাবে স্বীকৃত।
এরপরে, একটি সংক্ষিপ্ত এবং আকর্ষক চ্যানেলের বিবরণ তৈরিতে ফোকাস করুন। আপনার
চ্যানেল কী অফার করে এবং কেন ব্যবহারকারীদের যোগদান করা উচিত তার একটি
সংক্ষিপ্ত ওভারভিউ প্রদান করার এটি আপনার সুযোগ। আপনার চ্যানেলের অনন্য মূল্য
প্রস্তাব হাইলাইট করতে পরিষ্কার এবং সংক্ষিপ্ত ভাষা ব্যবহার করুন। যেকোন
একচেটিয়া কন্টেন্ট, বিশেষ সুবিধা বা সুবিধাগুলি উল্লেখ করার কথা বিবেচনা
করুন যা গ্রাহকরা পাওয়ার আশা করতে পারেন। মনে রাখবেন, সংক্ষিপ্ততা এখানে
মুখ্য, কারণ আপনি ব্যবহারকারীদের অতিরিক্ত বিবরণ দিয়ে অভিভূত না করে
যোগদানের জন্য প্রলুব্ধ করতে চান।
৪. আকর্ষনীয় এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়বস্তু তৈরি করাঃ আপনার টেলিগ্রাম
চ্যানেলের সাফল্যের জন্য আকর্ষণীয় এবং প্রাসঙ্গিক সামগ্রী তৈরি করা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে এবং তাদের আরও কিছুর জন্য
ফিরে আসতে রাখতে, আকর্ষণীয় এবং মূল্যবান উভয় বিষয়বস্তু প্রদান করা
গুরুত্বপূর্ণ। এটি অর্জন করার একটি উপায় হল আপনার লক্ষ্য দর্শকদের বিশ্লেষণ
করা এবং তাদের আগ্রহ, চাহিদা এবং পছন্দগুলি বোঝা। এটি আপনাকে আপনার
বিষয়বস্তুকে তাদের নির্দিষ্ট ইচ্ছা অনুযায়ী সাজাতে এবং তাদের জীবনের সাথে
প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহ করার অনুমতি দেবে।
উপরন্তু, আকর্ষণীয় এবং ইন্টারেক্টিভ বিষয়বস্তু তৈরিতে ফোকাস করা
গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার শ্রোতাদের আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা
করতে এবং তাদের চিন্তাভাবনা এবং মতামত শেয়ার করার জন্য উত্সাহিত করে করা
যেতে পারে। সম্প্রদায়ের অনুভূতি বৃদ্ধি করে এবং উন্মুক্ত যোগাযোগের জন্য
একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে, আপনি কেবল ব্যস্ততাই বাড়াবেন না বরং আপনার
দর্শকদের সাথে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। তদ্ব্যতীত, ছবি বা ভিডিওর
মতো ভিজ্যুয়ালগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে আপনার সামগ্রীর বিন্যাসের পরিবর্তন
নিশ্চিত করুন৷ ভিজ্যুয়াল বিষয়বস্তু আরও চিত্তাকর্ষক বলে পরিচিত এবং আপনার
বার্তাকে আরও প্রভাবশালী উপায়ে জানাতে সাহায্য করতে পারে৷
৫. অন্যান্য চ্যানেলের সাথে ক্রস-প্রমোশন ব্যবহার করাঃ অন্যান্য
চ্যানেলের সাথে ক্রস-প্রমোশন হল টেলিগ্রামে বৃহত্তর দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর
একটি কার্যকরী কৌশল। একই রকম টার্গেট অডিয়েন্স আছে এমন চ্যানেলগুলির সাথে
সহযোগিতা করে, আপনি তাদের বিদ্যমান সদস্য বেসে ট্যাপ করতে পারেন এবং আপনার
চ্যানেলের দৃশ্যমানতা বাড়াতে পারেন। এটি করার একটি উপায় হল একে অপরের
সামগ্রী বৈশিষ্ট্যযুক্ত করা বা আপনার নিজ নিজ চ্যানেলে প্রচারমূলক পোস্টগুলি
ভাগ করে নেওয়া৷ এটি আপনাকে সম্ভাব্য সদস্যদের কাছে পৌঁছানোর অনুমতি দেয়
যারা আগে আপনার চ্যানেল সম্পর্কে সচেতন ছিলেন না।
ক্রস-প্রমোশনের জন্য চ্যানেল নির্বাচন করার সময়, আপনার চ্যানেলের কুলুঙ্গি
বা বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমনগুলি বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এটি
নিশ্চিত করে যে ক্রস-প্রমোশনের মাধ্যমে আপনি যে শ্রোতাদের কাছে পৌঁছান তারা
আপনার সামগ্রীতে সত্যিকারের আগ্রহী। আপনার নিজের চ্যানেলের চেয়ে বৃহত্তর
মেম্বার বেস বা বেশি ব্যস্ততার হার আছে এমন চ্যানেলগুলির সাথে সহযোগিতা করাও
উপকারী, কারণ এটি নতুন সক্রিয় সদস্যদের আকর্ষণ করার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
ক্রস-প্রমোশনের মাধ্যমে অন্যান্য চ্যানেলের শক্তির ব্যবহার করে, আপনি আপনার
নাগালের প্রসারিত করতে পারেন এবং আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে আরও সদস্যদের
নিয়ে যেতে পারেন।
৬. প্রভাব বিস্তারকারী এবং সহযোগিতার শক্তি ব্যবহার করাঃ আজকের ডিজিটাল যুগে, প্রভাবশালীরা এবং সহযোগিতাগুলি সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে নাগালের প্রসার এবং ব্যস্ততা বাড়ানোর জন্য শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। প্রভাবশালী এবং সহযোগিতার শক্তিকে কাজে লাগানো আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলকে ব্যাপকভাবে উপকৃত করতে পারে, আপনাকে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে এবং ব্যাপক দর্শকদের আকর্ষণ করতে সহায়তা করে। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে অংশীদারিত্ব করে বা অন্যান্য চ্যানেলের সাথে সহযোগিতা করে, আপনি তাদের প্রতিষ্ঠিত ফলোয়ার বেসে ট্যাপ করতে পারেন এবং আপনার বিষয়বস্তু এবং চ্যানেলের প্রচারের জন্য তাদের প্রভাবকে কাজে লাগাতে পারেন।প্রভাবশালীদের সাথে কাজ করার এবং অন্যান্য চ্যানেলের সাথে সহযোগিতা করার মূল সুবিধাগুলির মধ্যে একটি হল লক্ষ্যযুক্ত দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর ক্ষমতা।
প্রভাবশালীরা তাদের মতামত এবং সুপারিশগুলিতে বিশ্বাস করে এমন একটি উত্সর্গীকৃত অনুসরণের জন্য পরিচিত। যখন একজন প্রভাবশালী আপনার বিষয়বস্তু শেয়ার করেন বা আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলকে অনুমোদন করেন, তখন তাদের দর্শকরা আপনার চ্যানেল চেক করে সক্রিয় সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। একইভাবে, অন্যান্য চ্যানেলের সাথে সহযোগিতা করা যার সাথে একই লক্ষ্য দর্শক রয়েছে আপনার চ্যানেলকে সম্ভাব্য সদস্যদের একটি নতুন পুলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারে যারা ইতিমধ্যেই আপনার সরবরাহ করা সামগ্রীতে আগ্রহী। এই ক্রস-প্রমোশনটি একটি জয়-জয় পরিস্থিতি, কারণ উভয় চ্যানেলই বর্ধিত দৃশ্যমানতা এবং নতুন অনুসরণকারীদের কাছে এক্সপোজার থেকে উপকৃত হয়।
টেলিগ্রাম থেকে ইনকামকৃত অর্থ উইথড্র করার নিয়ম
টেলিগ্রাম থেকে ইনকামকৃত অর্থ উইথড্র করার নিয়ম অনেকেই জানেন না। আপনি যদি
টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করেন, তাহলে সেটি কীভাবে উইথড্র করবেন (টাকা তুলবেন) সেটা
নির্ভর করে আপনি কোন পদ্ধতিতে ইনকাম করেছেন। কারণ টেলিগ্রামে সরাসরি পেমেন্ট বা
উইথড্রাল সিস্টেম নেই, কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট উপায়ে ইনকাম করা যায়, এবং সেগুলোর
মাধ্যমে টাকা তোলা সম্ভব। টেলিগ্রাম থেকে ইনকামের টাকা কীভাবে উইথড্র করবেন
নিচের ধাপগুলোতে দেওয়া হলো।
১. যদি আপনি TON Token, Telegram Ads Platform থেকে আয় করেনঃ টেলিগ্রাম
এখন TON কয়েনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন থেকে চ্যানেল মালিকদের অর্থ দিচ্ছে। আপনি যদি
এই ইনকামের অংশীদার হন, তাহলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন
৩. যদি আপনি বট, এফিলিয়েট,ক্লিক ভিত্তিক ইনকাম করেনঃ অনেক টেলিগ্রাম বট থাকে যারা বলে আপনি ক্লিক করে ইনকাম করতে পারেন কিন্তু ৯০% সময় এগুলো স্ক্যাম।
৪. টেলিগ্রাম গ্রুপ/চ্যানেল সাবস্ক্রিপশন থেকে ইনকাম করেনঃ আপনি যদি
টেলিগ্রাম চ্যানেল বা গ্রুপের সাবস্ক্রিপশন ফি রেখে আয় করেন – অর্থাৎ, কেউ টাকা
দিয়ে আপনার চ্যানেল/গ্রুপে জয়েন করে – তাহলে সেই আয় উইথড্র (তুলে নেওয়ার) পদ্ধতি
নির্ভর করে আপনি কীভাবে সেই সাবস্ক্রিপশন পেমেন্ট নিচ্ছেন।
শেষকথাঃ টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায়
টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায় নির্ভর করে আপনার সৃজনশীলতা ও দক্ষতার উপর।
টেলিগ্রাম আজকের ডিজিটাল যুগে শুধুমাত্র একটি যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং এটি একটি
সম্ভাবনাময় প্ল্যাটফর্ম, যেখানে চাইলেই আপনি নিজের দক্ষতা, জ্ঞান, ও সৃজনশীলতাকে
কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারেন। তবে এই আয়ের পথ সহজ নয়, যেমনটা অনেকেই মনে করেন। এটি
ধৈর্য, পরিশ্রম ও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ধাপে ধাপে গড়ে তোলা একটি যাত্রা।
টেলিগ্রাম থেকে আয় করা এখন আর কল্পনা নয়, বরং বাস্তবসম্মত একটি সুযোগ। তবে সফলতা
নির্ভর করে আপনার কাজের মান, ধৈর্য, ও সৃজনশীলতার উপর। টেলিগ্রামে আয় করতে চাইলে
আপনাকে শুরু করতে হবে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে, হোক তা একটি ইনফো বেইসড
চ্যানেল, একটি বিজনেস প্রোমোশন গ্রুপ, অথবা এমন একটি সেবা যা মানুষ ব্যবহার করবে।
নিয়মিত মানসম্মত কনটেন্ট, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং শ্রোতাদের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক
গড়ে তোলাই এই প্ল্যাটফর্মে দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকার চাবিকাঠি।
যারা ভাবছেন, আমি তো নতুন, আমি কীভাবে পারব? — তাদের বলব, শুরু না করলে কখনোই
পারবেন না। আজ যারা হাজার হাজার ফলোয়ার নিয়ে ইনকাম করছেন, তারাও একসময় এক বা
দুইজন সাবস্ক্রাইবার নিয়ে শুরু করেছিলেন। সফলতা সময় নেয়, কিন্তু যদি আপনি লক্ষ্য
ঠিক রাখেন, তাহলে সাফল্য আপনার হাতে ধরা দেবেই। যারা সত্যিকার অর্থে সময় ও
পরিশ্রম দিতে প্রস্তুত, তাদের জন্য টেলিগ্রাম হতে পারে একটি কার্যকর আয়ের মাধ্যম।
টেলিগ্রাম এখন শুধুই একটি মেসেজিং অ্যাপ নয় এটি একটি সম্ভাবনাময় প্ল্যাটফর্ম
যেখানে সৃজনশীলতা, উদ্যোগ এবং কৌশল ব্যবহার করে আয় করা সম্ভব।
সবশেষে বলি, টেলিগ্রাম কেবল একটি অ্যাপ নয়—এটি একটি সুযোগের দরজা। আপনি সেই দরজার
সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। এখন সিদ্ধান্ত আপনার, দরজাটা খুলবেন, নাকি শুধু বাইরে
দাঁড়িয়ে ভাববেন। তবে মনে রাখতে হবে, এটি কোনো রাতারাতি ধনী হয়ে যাওয়ার পন্থা নয়।
ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং সঠিক কৌশলের মাধ্যমে সফলতা অর্জন সম্ভব। আশা করছি, টেলিগ্রাম
থেকে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url